27-04-2025, 09:56 PM
(৪)
পূর্বকথন
সেদিন কলেজ থেকে ঈশিতা ফিরেইছিল কাঁপতে কাঁপতে। লাইব্রেরিতে দুলাল স্যারের চিৎকার রীতিমতো কাঁপিয়ে দিয়েছিল ওর সারা শরীর। ইসসস, কী লজ্জা! তার উপর ঘরে ঢুকেই দুই দিদি এবং দুই জামাইবাবুর পাশাপাশি বাড়িশুদ্ধু লোকের গোমড়া মুখ দেখে বুঝতে পেরেছিল, সর্বনাশ যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। সবাই জেনে গিয়েছে ব্যাপারটা। লজ্জায় মাথা তুলতে পারছিল না ও। তার পরের কয়েক ঘন্টা যেন ঝড় বয়ে গিয়েছিল বসার ঘরটায়। পরের পর চোখা চোখা প্রশ্ন, ভর্ৎসনা এবং শেষে একতরফা ভাবে বিয়ে এবং লেখাপড়া বন্ধের সিদ্ধান্তে কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল ঈশিতা। ওর বুঝতে অসুবিধা হয়নি, কী হতে চলেছে। কান্নায় ভেঙে পড়ে বারবার সবাইকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলেও লাভ হল না কিছুই। বরং দুই দিদি এবং মা ওকে একা ঘরে টেনে বললেন, ‘‘অনেক মুখ পুড়িয়েছিস, এ বার কথা না শুনলে বাড়িতেই হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখব। ঢলানি দু’দিনে ঘুচে যাবে, নোংরা মেয়েছেলে কোথাকার!’’ এই ঘটনার সপ্তাহ দেড়েকের মাথাতেই গুষ্টিশুদ্ধু আন্দামান যাত্রা এবং বিয়ে।
প্রথম থেকেই বয়সে অত বড় লোকটাকে মেনে নিতে পারেনি ঈশিতা। ও জানে, ও মোটের উপর সুন্দরী। ডানাকাটা না হলেও বেশ ভালই দেখতে। ফিগারও বেশ। শুধু রংটা সামান্য চাপা। চোখে হাজারো রঙীন স্বপ্ন। আর তার বর কিনা বড়দির বয়সী! নীরবে কেঁদে বালিশ ভেজাত রোজ। কিন্তু লোকটাকে প্রথম দেখাতেই পরিবারের বাকিদের মতো চমকে গিয়েছিল ঈশিতা নিজেও। ছিপছিপে কিন্তু মজবুত চেহারা। দেখে বয়স বোঝার উপায় নেই। পরিশ্রমী চেহারার আড়ালে দুটো বুদ্ধিদীপ্ত চোখ। গায়ের রং তামাটে হলেও সেটা এই সমুদ্র তীরে বহুদিন ধরে থাকার ফলে, সেটা ওকে বুঝিয়েছিল ওর মেজদি। মুখে সব সময়েই একটা হাসি। গলাটাও কী ভরাট। কথা বলে খুব আস্তে। এবং বেশ রসিক। ওর পরিবারে কে কে আছেন জিজ্ঞাসা করায় ‘গুপি গাইন-বাঘা বাইন’ সিনেমার একটা ডায়লগ প্রায় কপি করে বলে একরকম ফ্ল্যাট করে দিয়েছিল শ্বশুর বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী-সহ সবাইকেই। একটু মাথা চুলকে একগাল হেসে বাঘা বাইনের ঢঙে বলেছিল, ‘ইয়ে, মানে, আমার বাপ-মা-ভাই-বোন-বেয়াই-বোনাই-জগাই-মাধাই কেউ কোত্থাও নেই!’ বলে হেসে ফেলেছিল। সিনেমা হলে গিয়ে ওই সিনেমাটা সে সময় প্রায় একশো শতাংশ বাঙালি দেখে ফেললেও সৌমাভর কথাটা যে সেখান থেকে নেওয়া, সেটা না বুঝেই মাথা নেড়ে ‘বুঝে ফেলেছি’ গোছের একটা ভান করেছিলেন সকলে। তবে ওই একটি কথাতেই এত অল্প বয়সে সব হারানো ছেলেটির প্রতি মায়া পড়ে গিয়েছিল ওদের। মনটা একটু নরম হয়েছিল ঈশিতারও।
ধীরে ধীরে লোকটার স্বাধীনচেতা, দৃঢ এবং সৎ মনোভাব, রসিক-আড্ডাবাজ স্বভাব এবং পড়াশোনার পাশাপাশি বুদ্ধিদীপ্ত ব্যবহারে ও একরকম প্রেমেই পড়ে গেল সৌমাভর। সৌমাভর সবচেয়ে বেশি যে গুণটা ওকে টেনেছিল, তা হল অসাধারণ ভরাট, সুরেলা গানের গলা, সুর বোধ আর গানের বিশেষ করে রবীন্দ্রসঙ্গীতের ব্যাপারে বিস্তর পড়াশোনা। আর ছিল গাছের নেশা। অবশ্য সেটা পেশার কারণেও হতে পারে বলে ধরে নিয়েছিল ঈশিতা। তার উপর প্রথম শরীরি মিলনের দিনেই ঈশিতা বুঝল, তার স্বামী বিছানাতেও সুখ দিতে ওস্তাদ। ওর শরীরের তন্ত্রী তন্ত্রীতে সুরেলা ঝঙ্কার তুলে দিত রোজ। ঈশিতার চোখে একসময়ের ভিলেন থেকে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে হিরো হয়ে ওঠা সৌমাভকে বড় দুই দিদির বরের তুলনায় অনেক বেশি ভাল স্বামী বলে মনে হতে লাগল ওর। বারবার মনে হল, সৌমাভর কাছে ওই দুইজন স্রেফ কিস্যু না। আরও বুকে টেনে নিল বেশি করে। ঈশিতার মনে পড়ল, বিয়ের পরের দিন ফেরার আগে ওকে একপাশে ডেকে মেজদি বলেছিল, ‘‘তোর বরটা কিন্তু খুব হ্যান্ডসাম। আমারই ওর প্রেমে পড়ে যেতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু বেচারা খুব একা। যা শুনাম, তিন কূলে কেউ নেই। বরাবর হোস্টেলে থেকেছে, ফলে মনে হয় না কখনও প্রেমও করেছে। একটু দেখে রাখিস। আর শোন, আপাতত, একবছর মজা কর, এখনই বাচ্চাকাচ্চা পেটে ঢুকিয়ে ফেলিস না।’’ বলে হাতে একগাদা ওষুধ দিয়ে দিলেন সকলের আড়ালে। মুখপাতলা মেজদির কথায় তখন বেশ রাগ হলেও পরে নিজের মনেই ওটা নিয়ে ভাবতে ভাবতে হাসত ও।
পূর্বকথন
সেদিন কলেজ থেকে ঈশিতা ফিরেইছিল কাঁপতে কাঁপতে। লাইব্রেরিতে দুলাল স্যারের চিৎকার রীতিমতো কাঁপিয়ে দিয়েছিল ওর সারা শরীর। ইসসস, কী লজ্জা! তার উপর ঘরে ঢুকেই দুই দিদি এবং দুই জামাইবাবুর পাশাপাশি বাড়িশুদ্ধু লোকের গোমড়া মুখ দেখে বুঝতে পেরেছিল, সর্বনাশ যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। সবাই জেনে গিয়েছে ব্যাপারটা। লজ্জায় মাথা তুলতে পারছিল না ও। তার পরের কয়েক ঘন্টা যেন ঝড় বয়ে গিয়েছিল বসার ঘরটায়। পরের পর চোখা চোখা প্রশ্ন, ভর্ৎসনা এবং শেষে একতরফা ভাবে বিয়ে এবং লেখাপড়া বন্ধের সিদ্ধান্তে কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল ঈশিতা। ওর বুঝতে অসুবিধা হয়নি, কী হতে চলেছে। কান্নায় ভেঙে পড়ে বারবার সবাইকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলেও লাভ হল না কিছুই। বরং দুই দিদি এবং মা ওকে একা ঘরে টেনে বললেন, ‘‘অনেক মুখ পুড়িয়েছিস, এ বার কথা না শুনলে বাড়িতেই হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখব। ঢলানি দু’দিনে ঘুচে যাবে, নোংরা মেয়েছেলে কোথাকার!’’ এই ঘটনার সপ্তাহ দেড়েকের মাথাতেই গুষ্টিশুদ্ধু আন্দামান যাত্রা এবং বিয়ে।
প্রথম থেকেই বয়সে অত বড় লোকটাকে মেনে নিতে পারেনি ঈশিতা। ও জানে, ও মোটের উপর সুন্দরী। ডানাকাটা না হলেও বেশ ভালই দেখতে। ফিগারও বেশ। শুধু রংটা সামান্য চাপা। চোখে হাজারো রঙীন স্বপ্ন। আর তার বর কিনা বড়দির বয়সী! নীরবে কেঁদে বালিশ ভেজাত রোজ। কিন্তু লোকটাকে প্রথম দেখাতেই পরিবারের বাকিদের মতো চমকে গিয়েছিল ঈশিতা নিজেও। ছিপছিপে কিন্তু মজবুত চেহারা। দেখে বয়স বোঝার উপায় নেই। পরিশ্রমী চেহারার আড়ালে দুটো বুদ্ধিদীপ্ত চোখ। গায়ের রং তামাটে হলেও সেটা এই সমুদ্র তীরে বহুদিন ধরে থাকার ফলে, সেটা ওকে বুঝিয়েছিল ওর মেজদি। মুখে সব সময়েই একটা হাসি। গলাটাও কী ভরাট। কথা বলে খুব আস্তে। এবং বেশ রসিক। ওর পরিবারে কে কে আছেন জিজ্ঞাসা করায় ‘গুপি গাইন-বাঘা বাইন’ সিনেমার একটা ডায়লগ প্রায় কপি করে বলে একরকম ফ্ল্যাট করে দিয়েছিল শ্বশুর বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী-সহ সবাইকেই। একটু মাথা চুলকে একগাল হেসে বাঘা বাইনের ঢঙে বলেছিল, ‘ইয়ে, মানে, আমার বাপ-মা-ভাই-বোন-বেয়াই-বোনাই-জগাই-মাধাই কেউ কোত্থাও নেই!’ বলে হেসে ফেলেছিল। সিনেমা হলে গিয়ে ওই সিনেমাটা সে সময় প্রায় একশো শতাংশ বাঙালি দেখে ফেললেও সৌমাভর কথাটা যে সেখান থেকে নেওয়া, সেটা না বুঝেই মাথা নেড়ে ‘বুঝে ফেলেছি’ গোছের একটা ভান করেছিলেন সকলে। তবে ওই একটি কথাতেই এত অল্প বয়সে সব হারানো ছেলেটির প্রতি মায়া পড়ে গিয়েছিল ওদের। মনটা একটু নরম হয়েছিল ঈশিতারও।
ধীরে ধীরে লোকটার স্বাধীনচেতা, দৃঢ এবং সৎ মনোভাব, রসিক-আড্ডাবাজ স্বভাব এবং পড়াশোনার পাশাপাশি বুদ্ধিদীপ্ত ব্যবহারে ও একরকম প্রেমেই পড়ে গেল সৌমাভর। সৌমাভর সবচেয়ে বেশি যে গুণটা ওকে টেনেছিল, তা হল অসাধারণ ভরাট, সুরেলা গানের গলা, সুর বোধ আর গানের বিশেষ করে রবীন্দ্রসঙ্গীতের ব্যাপারে বিস্তর পড়াশোনা। আর ছিল গাছের নেশা। অবশ্য সেটা পেশার কারণেও হতে পারে বলে ধরে নিয়েছিল ঈশিতা। তার উপর প্রথম শরীরি মিলনের দিনেই ঈশিতা বুঝল, তার স্বামী বিছানাতেও সুখ দিতে ওস্তাদ। ওর শরীরের তন্ত্রী তন্ত্রীতে সুরেলা ঝঙ্কার তুলে দিত রোজ। ঈশিতার চোখে একসময়ের ভিলেন থেকে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে হিরো হয়ে ওঠা সৌমাভকে বড় দুই দিদির বরের তুলনায় অনেক বেশি ভাল স্বামী বলে মনে হতে লাগল ওর। বারবার মনে হল, সৌমাভর কাছে ওই দুইজন স্রেফ কিস্যু না। আরও বুকে টেনে নিল বেশি করে। ঈশিতার মনে পড়ল, বিয়ের পরের দিন ফেরার আগে ওকে একপাশে ডেকে মেজদি বলেছিল, ‘‘তোর বরটা কিন্তু খুব হ্যান্ডসাম। আমারই ওর প্রেমে পড়ে যেতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু বেচারা খুব একা। যা শুনাম, তিন কূলে কেউ নেই। বরাবর হোস্টেলে থেকেছে, ফলে মনে হয় না কখনও প্রেমও করেছে। একটু দেখে রাখিস। আর শোন, আপাতত, একবছর মজা কর, এখনই বাচ্চাকাচ্চা পেটে ঢুকিয়ে ফেলিস না।’’ বলে হাতে একগাদা ওষুধ দিয়ে দিলেন সকলের আড়ালে। মুখপাতলা মেজদির কথায় তখন বেশ রাগ হলেও পরে নিজের মনেই ওটা নিয়ে ভাবতে ভাবতে হাসত ও।


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)