Thread Rating:
  • 9 Vote(s) - 3 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica উত্তরণ না অবতরণ ( Remastered )
#6
এই গল্পলের সাথে বাস্তবের সঙ্গে কোনও মিল নেই, যদি কোনও ঘটনার সঙ্গে এই গল্পের মিল পাওয়া যায় তা শুধু কাকতালীয় মাত্র।

প্রথম পর্ব

দাম্পত্য সুখের অভাবে মনের মধ্যে কেমন অশান্তি নেমে আসতে পারে সেটা ঋতব্রত ভালোভাবেই বুঝেছে। নীলিমাকে বিয়ে করার ছ মাস হয়ে গেছে কিন্তু সে এখনো নীলিমার কাছে আসতে পারেনি। বলা ভালো নীলিমাই ঋতব্রতকে নিজের কাছে আসতে দেয়নি। বিয়ের পিঁড়িতে বসার আগে যখন মেয়ে দেখতে যায় ঋতব্রত তখন নীলিমাকে দেখে ওর খুব পছন্দ হয়েছিল। সাদামাটা দেখতে একটা মেয়ে কিন্তু তার পার্সোনালিটি তার আচার ব্যবহার তার দৈহিক গঠন সব কিছুর মধ্যেই কেমন একটা যেন বাঁধুনী আছে। ওকে দেখে খুবই পছন্দ হয়ে গেছিল ঋতব্রতর। ঋতব্রত একটা নামকরা কলেজে লেকচারার। মাস গেলে ভালোই টাকা ব্যাংক একাউন্টে ঢোকে। তাই চাকরি পাওয়ার দু'বছর হয়ে যাওয়ার পরে বাড়ি থেকেই তোড়জোড় শুরু করে। ঋতব্রত বাধা দেয়নি কারণ ভালো ছেলে বলতে যা বোঝায় সে হচ্ছে ওই টাইপের। আগে কোন মেয়ের সাথে ঘোরে নি, কোন মেয়েকে ছোঁয়া তো দূরের কথা। নীলিমাকে দেখেই ওর খুব পছন্দ হয়ে যায়। ওর বাড়ির লোকেরও পছন্দ হয়ে যায় নীলিমাকে এবং দুজনের বিয়ে ঠিক হয়ে যায়।

সমস্যা শুরু হয় ফুলশয্যার রাত থেকে। বিছানায় বসতে না বসতেই নীলিমা বলে “আজকে আমি খুব টায়ার্ড”

“হ্যাঁ ঠিকই তো তোমার উপর দিয়ে কম ধকল তো যায়নি আজকে” 

নীলিমা একটু হেসে পাস ফিরে শুয়ে পড়ে। ঋতব্রত চুপচাপ শুয়ে থাকে। খানিকটা মন খারাপ হয়ে যায় ওর।এই দিনটা নিয়ে কম স্বপ্ন দেখেনি সে। কিন্তু সে আবার ওই মেন্টালিটির লোক ও নয় যে স্ত্রীয়ের উপর জোর খাটাবে। মনে মনে নিজেকে সান্তনা দেয় সে আজকে ও সত্যি টায়ার্ড কালকে দেখা যাবে। নীলিমার জন্য এইটুকু স্যাক্রিফাইস সে করতেই পারবে। শুয়ে পড়ে ও।

কিন্তু পরের দিন রাতেও সেই একই ব্যাপার। ঘরে ঢুকে দেখে ও, নীলিমা শুয়ে পড়েছে। ওভাবে হয়তো ওর আসতে দেরি হচ্ছে দেখে নীলিমা শুয়ে পড়েছে।

“নীলিমা!”, খানিকটা উদ্বিগ্ন কন্ঠেই ডাকে ঋতব্রত ,যদি ঘুমিয়ে পড়ে ও।
নীলিমার দিক থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায় না। একবার ও ভাবে বউয়ের গায়ে হাত দিয়ে ডাকে। কিন্তু ওর যেন কেমন বাধো বাধো ঠেকে। আরেকবার ডাকে , কিন্তু কোন সাড়াশব্দ পাওয়া যায় না। এবারে খানিকটা হতাশ বোধ করে ঋতব্রত। বুঝতে পারেনা এমন হচ্ছে  কেন। পাশের বেড ল্যাম্পটা নিবিয়ে শুয়ে পড়ে ও।

পরের দিনও ঠিক করে নেয় নীলিমার ঘরে ঢোকার আগেই ও ঢুকে যাবে ঘরে। যেমন ভাবা তেমনি কাজ । নীলিমা ঘরে ঢুকে দেখে ঋতব্রত বিছানায় বসে আছে , একটা বই পড়ছে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে একটু পরিষ্কার হয়  নীলিমা।

“তুমি গতকাল ঘুমিয়ে পড়েছিলে”

“হ্যাঁ, কালকে একটু খাটনি হয়েছিল”

ঋতব্রত ভেবে পায় না একটা নতুন বিবাহিত বউয়ের এত খাটনি কিসের, কাজের লোক তো সব আছেই , রান্নার লোক আছে , ঘর পরিষ্কার করার লোক আছে তাহলে আর কাজের কিসের চাপ। ঋতব্রতর মায়ের শুধু তদারকি করাই কাজ। সেই কাজটাই ওর মা এখন নীলিমাকে শিখিয়ে দেবে। নীলিমা সাধারণ ঘর থেকে এসেছে তাই এসব কাজে ক্লান্তি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম ।

“ও আচ্ছা”, ঋতব্রত এই বিষয়ে আর কোনও কথা বাড়ায় না।

নীলিমা বিছানায় এসে বসে ।

“আজকে তোমার টায়ার্ড লাগছে না তো?”

নীলিমা খানিক অপ্রস্তুত, “না আজকে ঠিক আছে”

নিজের বউকে ভালো করে দেখে ঋতব্রত। খুব সুন্দরী নয়, কিন্তু একটা মিষ্টতা আছে ওর মধ্যে। নীলিমা এখনো শাড়ি পড়েই শোয়। শাড়ি ফাঁক দিয়ে বুকের অংশটা দেখা যাচ্ছে ।
স্বামীকে ওরকম ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে নিমার একটু অস্বস্তি হয় । অস্বস্তিটা কাটাতে নীলিমা জিজ্ঞাসা করে, “আজকে অফিস গেলে না?”
“না আমি তো সাত দিনের ছুটি নিয়েছি”
“ও”
ঋতব্রত ভেবেছিল এতে ওর স্ত্রী খুশি হবে। কিন্তু নীলিমার মুখ নিরুত্তাপ ।
খানিকটা অভিমান হয় ওর , সদ্য বিবাহিত স্বামীর প্রতি এত অবহেলা ওর গায়ে লাগে। তবুও সে কিছু বলে না, কি বলতে হবে সেটাই সে বুঝতে পারে না । স্বামীর অধিকার এত তাড়াতাড়ি কি করে সে তার স্ত্রীয়ের উপর ফলাবে। 

চুপচাপ শুয়ে পড়ে সে।নীলিমাও অন্য দিকে পাশে ফিরে শোয়।
“নীলিমা”
“হ্যাঁ বলো”, ওপাশ থেকেই উত্তর দেয় ও।  
কি বলবে ভেবে পায় না ঋতব্রত।
“কিছু কি বলবে?”
“না মানে, এমনি ভাবছিলাম কোথাও ঘুরে আসলে কেমন হয়?”
“এত তাড়াতাড়ি গিয়ে কি হবে? আরো কিছুদিন অপেক্ষা করা যাক”
“কিসের অপেক্ষা?”
এবারে নীলিমা ওর স্বামীর দিকে ফেরে, “দেখো ঋতব্রত তুমি কি বলতে চাইছো আমি বুঝতে পারছি। এই মুহূর্তে আমি রেডি নই, আমাকে একটু টাইম দাও”
“ও আচ্ছা আচ্ছা! ঠিক আছে কোন অসুবিধা নেই”, ঋতব্রত র মুখ দিয়ে স্বভাব সিদ্ধভাবে এই কথা বেরিয়ে যায়। কারণ কেউ কিছু এরকম ভাবে ওকে বললে ও এভাবেই বলে। বলেই ও বুঝতে পারে যে ভুল করেছে। কারণ নীলিমা হঠাৎ এরকম ভাবে ওর সঙ্গে কথা বলল কেন।

এরকম করে দিনের পর দিন কেটে যায় এমনকি ছমাস হয়ে গেল তবুও ঋতব্রত তার স্ত্রীকে কাছে পেল না। একদিন রাতে আর সে সহ্য করতে পারে না।
“তুমি কেন এরকম করছ বলোতো?”
নীলিমা চুপ করে থাকে ।
“কি সমস্যা হচ্ছে তোমার আমাকে খুলে বলো!”
তবুও নীলিমা কিছু বলে না।
“নীলিমা!”, বিয়ের দিনের পর, এই প্রথম বউয়ের হাত ধরে ও।
“আমি প্রত্যেক রাতে তোমার জন্য অপেক্ষা করে থাকি, তুমি বলতে পারো আর কতদিন আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করবো?” , আবেগরুদ্ধ কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করে ঋতব্রত।
হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে নিলিমা স্বামীর দিকে তাকিয়ে বলে, “দেখো আমি এখনই কিছু করতে পারবো না”
“কিন্তু কেন?”
“সে আমি তোমাকে বলতে পারব না”
“আমি তোমার স্বামী হই!”
এবার একটু কঠোর চোখে তাকায় নীলিমা ঋতব্রত দিকে।
“বিয়ের পিঁড়িতে বসে কয়েকটা মন্ত্র পড়লেই সারা জীবন একসঙ্গে থাকা যায় না!”
এরকম উত্তর পাবে আশা করেনি ঋতব্রত। খানিকক্ষণ হাঁ হয়ে থাকে ও।তারপর বলে “তুমি যদি আমাকে বিয়ে না করতেই চাও ,তাহলে তুমি এই সম্পর্কে রাজি হলে কেন?”
কিছু বলে না নীলিমা।

ঋতব্রত আর কথা বাড়ায় না ,ও পাশ ফিরে শুয়ে পড়ে । আজকে খুব কষ্ট হচ্ছে ওর। কলেজ লাইফ থেকে কোন মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জরায় নি ও। বন্ধুরা ক্ষেপাতো, তাও পাত্তা দেয়নি ,মনে মনে ঠিক করে নিয়েছিল সে বিয়ে করে স্ত্রীকে নিজের সমস্ত ভালোবাসা উজাড় করে দেবে। তাকে সে স্বর্গ সুখ দেবে। তাই জন্য অন্য কোন দিকে তাকাইনি ও, শুধু যথা শীঘ্র নিজের ক্যারিয়ারটা তৈরি করে নিয়েছে। কারণ সে জানে অর্থ ছাড়া সে যে স্বপ্ন দেখেছে তা কখনোই পূরণ হতে পারে না।
কিন্তু আজ তার স্ত্রীর কথায় তার সমস্ত স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে শেষ হয়ে গেল।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: উত্তরণ না অবতরণ ( Remastered ) - by domis - 27-04-2025, 09:46 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)