16-04-2025, 10:09 PM
দুপুরের খাবারের পর জিরিয়ে না নিতে নিতে হৈ হৈ পড়ে গেল। বাচ্চাদের হুটোপুটিতে একবিন্দু ঘুমানোর উপায় নেই। মাকে দেখা যাচ্ছে না এর মাঝে।
এদিকে দোতলার বড় ঘরের খাটটা সাজানো হয়েছে। বাগচী বাড়ির দামী সেকেলে মেহগিনী পালঙ্কের নরম গদির ওপর পাতা হয়েছে সাদা ধবধবে বিছানা চাদর। বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে গোলাপ পাঁপড়ি। রজনীগন্ধার মালা দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে মায়ের বাসর বিছানা। সব সাজিয়েছে নিজ হাতে জামিলা আর মনোয়ারা।
সন্ধে নামতেই অংশু দেখতে পেল সদ্য ঘুম ভেঙে ওঠা তার মাকে। এর হৈ হৈ এর মাঝে মা ঘুমিয়ে রয়েছিল, ব্যাপারখানা কেমন অদ্ভুত ঠেকল বটে, কিন্তু জামিলার ঠাট্টায় অংশু বুঝতে পারলে কেন মা দুপুরের খাওয়া সেরেই ঘুমোতে গিয়েছিল। জামিলা ঘুম ভাঙা মায়ের ফর্সা চশমাহীন মুখটার দিকে তাকিয়ে বললে---ঘুম ভালো হল তো ভাবি? সারারাত যে জাইগতে হবে।
নিরুত্তর রইলেও মুখে বয়ঃসন্ধির বালিকার মত লজ্জা। দ্রুত চলে গেল বাথরুমে।
বাগচী বাড়ির বিশাল বাগান, দীঘি ঘুরে ফিরে রশিদ আর মৌলবিকে দেখাচ্ছে গফুর আলী। গায়ের শেরওয়ানিটা খুলে ফেললেও এখনো তার পরনে নয়া লুঙ্গি। অংশু ইতস্তত ঘুরতে লাগলো ওদের নিকটে। কান পেতে শুনতে লাগলো ওদের কথা। মৌলবী সাহেব বললেন---আল্লার দোয়ায় তোর বাচ্চাদের সাতপুরুষ বসে খাবে গফুর।
গফুর বললে---আরো আছে। আমার শ্বশুর নিকুঞ্জ বাগচী কয়েক কাঠা ধান জমি আছে গোবিন্দপুরে। সেসব লোক ভোগ করছে।
---ছাড়িয়ে আনলে তো হয়। গেরামের প্রধান তপন মালিক বড্ড চশমখোর। কিছু ভাগ দিলে লেঠেল দিয়ে ছাড়িয়ে আনবে।
কথাটা বললে গফুরের ভগ্নীপতি রশিদ। মৌলবী বললে---হ্যা। ঠিকই তো তোমার শ্বশুরের জায়গা, লোক ভোগ করবে কেন?
অংশু দেখলে গফুর খুব একটা আগ্রহী নয়। এসব বিষয় আশয় নিয়ে সে নির্বিকার। বললে---আমি বাগচী বাড়ির জামাই বলে আমার এসব সম্পত্তি নাকি গো মৌলবী সাহেব? নিকুঞ্জ বাগচীর বিশ্বস্ত লোক ছিল আমার বাপ। আমি বেইমানি করব না।
---আঃ বেইমানি কেন? তুই তো এখন জামাই। তাছাড়া তোর ছেলেদের ভবিষ্যৎ তো আছে নাকি গফুর?
---সে তাদের মা আছে। সে যা মনে করবে সেটাই হবে।
রশিদ বললে---গফুর ভাই, মরদ মানুষ তুমি। শুধু বউকে বেঁধে রাইখলেই হবে না, তার সাথে জমি-জমা, টাকা পয়সা বুঝে লিতে হবে। ভাবির সে পক্ষেরও যে দুটা আছে খেয়াল আছে? আবার তো বাচ্চাকাচ্চা লিবে নাকি? তখুন?
গফুর মৃদু হাসলো। তারপর একটু থেমে বলল---মেয়েটার কথা মনে পড়ছে। কতদিন দিখিনি।
---মেয়ে? তোমার মেয়ে আছে নাকি? রশিদ, মৌলবী দুজনেই চমকে উঠল।
গফুর বিড়ি ধরালো। রশিদকে একটা ধরিয়ে দিল। তারপর বললে---রেশমী, আমার মেয়ে। নিকাহ হয়েছে বিহারে। জামাই বড় ভালো, নেশাভান করে না। কারখানায় কাজ করে পাটনায়। নাতিও হয়েছে। মুখ দেখিনি একবারও। বড্ড মন করে।
রশিদ বললে---যাও না তবে গফুর ভাই। ভাবিকে নিয়ে ঘুরে এসো মেয়ের দুয়ার থিকে।
এদিকে দোতলার বড় ঘরের খাটটা সাজানো হয়েছে। বাগচী বাড়ির দামী সেকেলে মেহগিনী পালঙ্কের নরম গদির ওপর পাতা হয়েছে সাদা ধবধবে বিছানা চাদর। বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে গোলাপ পাঁপড়ি। রজনীগন্ধার মালা দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে মায়ের বাসর বিছানা। সব সাজিয়েছে নিজ হাতে জামিলা আর মনোয়ারা।
সন্ধে নামতেই অংশু দেখতে পেল সদ্য ঘুম ভেঙে ওঠা তার মাকে। এর হৈ হৈ এর মাঝে মা ঘুমিয়ে রয়েছিল, ব্যাপারখানা কেমন অদ্ভুত ঠেকল বটে, কিন্তু জামিলার ঠাট্টায় অংশু বুঝতে পারলে কেন মা দুপুরের খাওয়া সেরেই ঘুমোতে গিয়েছিল। জামিলা ঘুম ভাঙা মায়ের ফর্সা চশমাহীন মুখটার দিকে তাকিয়ে বললে---ঘুম ভালো হল তো ভাবি? সারারাত যে জাইগতে হবে।
নিরুত্তর রইলেও মুখে বয়ঃসন্ধির বালিকার মত লজ্জা। দ্রুত চলে গেল বাথরুমে।
বাগচী বাড়ির বিশাল বাগান, দীঘি ঘুরে ফিরে রশিদ আর মৌলবিকে দেখাচ্ছে গফুর আলী। গায়ের শেরওয়ানিটা খুলে ফেললেও এখনো তার পরনে নয়া লুঙ্গি। অংশু ইতস্তত ঘুরতে লাগলো ওদের নিকটে। কান পেতে শুনতে লাগলো ওদের কথা। মৌলবী সাহেব বললেন---আল্লার দোয়ায় তোর বাচ্চাদের সাতপুরুষ বসে খাবে গফুর।
গফুর বললে---আরো আছে। আমার শ্বশুর নিকুঞ্জ বাগচী কয়েক কাঠা ধান জমি আছে গোবিন্দপুরে। সেসব লোক ভোগ করছে।
---ছাড়িয়ে আনলে তো হয়। গেরামের প্রধান তপন মালিক বড্ড চশমখোর। কিছু ভাগ দিলে লেঠেল দিয়ে ছাড়িয়ে আনবে।
কথাটা বললে গফুরের ভগ্নীপতি রশিদ। মৌলবী বললে---হ্যা। ঠিকই তো তোমার শ্বশুরের জায়গা, লোক ভোগ করবে কেন?
অংশু দেখলে গফুর খুব একটা আগ্রহী নয়। এসব বিষয় আশয় নিয়ে সে নির্বিকার। বললে---আমি বাগচী বাড়ির জামাই বলে আমার এসব সম্পত্তি নাকি গো মৌলবী সাহেব? নিকুঞ্জ বাগচীর বিশ্বস্ত লোক ছিল আমার বাপ। আমি বেইমানি করব না।
---আঃ বেইমানি কেন? তুই তো এখন জামাই। তাছাড়া তোর ছেলেদের ভবিষ্যৎ তো আছে নাকি গফুর?
---সে তাদের মা আছে। সে যা মনে করবে সেটাই হবে।
রশিদ বললে---গফুর ভাই, মরদ মানুষ তুমি। শুধু বউকে বেঁধে রাইখলেই হবে না, তার সাথে জমি-জমা, টাকা পয়সা বুঝে লিতে হবে। ভাবির সে পক্ষেরও যে দুটা আছে খেয়াল আছে? আবার তো বাচ্চাকাচ্চা লিবে নাকি? তখুন?
গফুর মৃদু হাসলো। তারপর একটু থেমে বলল---মেয়েটার কথা মনে পড়ছে। কতদিন দিখিনি।
---মেয়ে? তোমার মেয়ে আছে নাকি? রশিদ, মৌলবী দুজনেই চমকে উঠল।
গফুর বিড়ি ধরালো। রশিদকে একটা ধরিয়ে দিল। তারপর বললে---রেশমী, আমার মেয়ে। নিকাহ হয়েছে বিহারে। জামাই বড় ভালো, নেশাভান করে না। কারখানায় কাজ করে পাটনায়। নাতিও হয়েছে। মুখ দেখিনি একবারও। বড্ড মন করে।
রশিদ বললে---যাও না তবে গফুর ভাই। ভাবিকে নিয়ে ঘুরে এসো মেয়ের দুয়ার থিকে।