Thread Rating:
  • 38 Vote(s) - 3.03 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
ভুল by avi5774 completed
#49
থাক গিয়ে, আসুক ওয়াসিম, আসুক আকবর, আসুক রাজু, আমার কি তাতে। অধিকার ফলাতে গেছিলাম। খেয়েছি সপাটে জুতোর বাড়ি মুখের ওপর। মানুষের যদি আত্মাভিমান না থাকে তো সে কিসের মানুষ। স্বভিমান থাকে বলেই বিখ্যাত মানুষরা স্বতন্ত্র হয়। আর আমি স্বভিমানি। তাই যেখানে অসন্মানের গন্ধ সেখানে আমার ছায়াও পরেনা।
তুলিকে দোষ দিচ্ছি না। ও আর কি করবে। ওকে তো লোভ দেখানো হচ্ছে। কিন্তু কার দোষ। সত্যি আজকাল ভদ্রতার কোন দাম নেই। আমি হাসপাতালে যাতে নতুন কোন নাটক না হয়, তার জন্যে সযত্নে নিজের ভদ্রতার আবরনে মুড়িয়ে রাখলাম, আর ও ভদ্রবেশেই কতটা নোংরামো করে গেলো। দুজন হবু স্বামি স্ত্রীর মাঝে নিজেকে স্বামির থেকে বড় দেখানোর কি নিরলস নোংরা প্রচেষ্টা চালিয়ে গেলো। আমার রাগ উঠছে যে তুলি কেন বুঝতে পারলো না। ছেলেটা চামউকুনের মত গায়ে সেঁটে যাচ্ছে। তুলি বুঝতে পারছেনা। এতোটাই কি অপরিনত ও। নাকি সরকারি হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা মাকে দেখে ভালোমন্দের বিচার লোপ পেয়েছে।
এই এতো কথা বোঝালাম, এত ভালোবাসা দিলাম, এত সুন্দর মুহুর্ত কাটালাম দুজনে, ওকে পাওয়ার জন্যে কত নোংরামোই না করলাম, তুলির মাকে ফাঁদে ফেলে, তার শরীর ভোগ করলাম, তার দুর্বলতাকে ভাঙ্গালাম। সব কিছুর পরে আজকে কি পেলাম? তাও আমি মনে করি তুলির সরল মনে এত ভাবার ক্ষমতা নেই। কিন্তু আমি সরল সুমতি প্রতিমা নিয়ে কি করবো। যে নিজের লোককে চেনে না। যার কাছে বাইরের আবরনই সব, সে সংসার করবে কি করে?

রিরিরিং রিরিরিং। ফোন বেজে উঠলো। নিশ্চয় তুলি, নিশ্চয় জিজ্ঞেস করবে কেন চলে এলাম, কি হয়েছে আমার, এরকম রাগ করছি কেন। এমন ভাবে জিজ্ঞেস করবে যে আমার রাগ অভিমান সব জল হয়ে যাবে। থাক পরে সুযোগ পেলে ভালো করে বুঝিয়ে বলবো ওর রাজুস্যারের উদ্দেশ্য।
হ্যালো...।
ওপার থেকে গিটার বাজার আওয়াজ “শাঁসো কি জরুরত হ্যায় জ্যায়সে...।” কেউ কোন কথা বলছেনা।
আমি হ্যালো হ্যালো করে যাচ্ছি। কেউ একমনে গিটার বাজিয়ে যাচ্ছে।
মাথার মধ্যে দিয়ে খড়স্রোতা নদির মত রক্ত বইছে। হাত পা রাগে থর থর করে কাঁপছে। আমি জানি আমি গালাগালি হুরোহুরি যাই করিনা কেন সে নির্লিপ্তই থাকবে। ফোনের ওপারের সে যে হেরে যাওয়া ম্যাচে ফিরে এসেছে, বিপক্ষ কে চেপেও ধরেছে।

আমি ফোন রেখে তুলিদের বাড়িতে ফোন করলাম। ফোন ব্যাস্ত, ব্যস্ত ব্যস্ত। আধ ঘণ্টা এক ঘণ্টা। ফোন ব্যস্ত।
আর আমার বাড়িতে ঘন ঘন ফোন আসছে গিটার শোনাতে। ফোন ক্র্যাডেলে রাখতেই পারছিনা।
সারারাত এইভাবে চললো। একমুহুর্তের জন্যে না আমার ফোন রাখতে পারছি, না একবারের জন্যে তুলিদের ফোন ফ্রী পেলাম। কার সাথে এত কথা বলছে তুলি? কে এতো খোঁজ নিচ্ছে ওদের?
পরেরদিন আমি অফিসে চলে গেলাম। থাক যে যেভাবে ভালো থাকে সেই ভাবেই থাকুক। আমার কি মুল্য আছে। এর থেকে যারা আমাকে ভালোবাসে তাদের বেশী করে সময় দি। এতদিন তো ঠেকের বন্ধুবান্ধব, অফিসের বন্ধু, মা বাবা সবাইকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলাম, এখন এরাই আমার কাছের লোক।
অফিসের কাজে নিজেকে ডুবিয়ে দিলাম। আমি ব্যস্ত থাকতে চাই। এত কাজ চাই যাতে আমি অন্য কিছু চিন্তা করতে না পারি। অনেক চিন্তা করেছি সবার জন্যে। এবার আর সবার পালা। সবাই প্রাপ্তবয়স্ক, এবার যে যারটা বুঝে নিক। আমি মানসিক ভাবে বিশ্রাম চাই। তুলির জন্যে এই অভি না। এই সবের জন্যে অভি। যার জন্যে তার নাম জশ, খ্যাতি, সন্মান।
জুনিয়র ছেলেগুলো বার বার করে ঘুরে যাচ্ছে কোন কাজ থাকলে করবে ওরা। আমি নিজেই তো সব করবো, তোদের জন্যে কিছু বাঁচিয়ে রাখলে তো করবি। কি ভাবিস তোরা স্যার খালি অর্ডার দেয়?
কিছুক্ষন কাজ করার পরে কফি আর সিগেরেট খেতে বেরোলাম লবিতে। আবার ফিরতে হোলো কে যেন ফোন করেছে।
‘হ্যালো’
‘কি ব্যাপার তোমার?’ তুলির গলা।
‘তোমার কি ব্যাপার, হঠাত অফিসে ফোন করলে?’
‘কেন তোমার অসুবিধে হচ্ছে? নাকি পছন্দ হচ্ছেনা?’
‘আমার তো মনে উল্টোটা, তোমার অসুবিধে হচ্ছে।’
‘ফালতু কথা বলবে না, সারারাত আমি ট্রাই করেছি সারারাত তোমার ফোন এনগেজ এলো, সারারাত আমি ঘুমোই নি। কার সাথে কথা বলছিলে সারারাত।’
‘আমিও তো ট্রাই করছিলাম তোমার বাড়িতে, টানা এনগেজ আসছে।’
‘মিথ্যে কথা বোলো না, তোমার কি ব্যাপার বলোতো, কথায় কথায় রেগে যাচ্ছো, কালকে দুম করে চলে এলে, এখনো এইভাবে কথা বলছো। তোমার আমাকে পছন্দ না হয় তো বলে দাও না, যার সাথে সারারাত কথা বলেছো তার সাথে যদি তুমি ভালো থাকো তো আমি তোমাকে আটকাবো না। সারারাত, সারারাত আমি জেগে বসে আছি তোমার ফোনের জন্যে...।’ তুলির গলা বুজে এলো কান্নায়। ফোন রেখে দিলো।
যাহঃ শালা যার জন্যে করি চুরি সেই বলে চোর।
আমি আবার তুলিদের বাড়িতে ফোন লাগালাম।
কাঁন্না চাপার ব্যার্থ প্রচেষ্টা করে তুলি কোনরকমে বলে উঠলো ‘হ্যালো’
‘কি হোলো ফোন রেখে দিলে কেন?’
‘আমি সারারাত একা জেগে বসে আছি, মা হাসপাতালে, আর তুমি ফোনে গল্প করে যাচ্ছো...।’
‘আমিও তো তোমার ফোন এনগেজ পাচ্ছিলাম’
‘কেউ যদি আমার ফোনে গান শোনাতে চায় তো আমি কি করবো?’
‘গান শোনাতে?’
‘ছারো পরে বলবো। এখন তো কত কিছু শুনতে হবে।’
‘কে শোনাচ্ছে বুঝতে পারলে না। দেখো তোমার কোন বান্ধবি হবে।’ তুলির গলায় হাল্কা বিদ্রুপ।
‘বান্ধবি না বন্ধু না শত্রু সেটা সময় বলবে। কিন্তু তোমার ফোন এনগেজ ছিলো কেন?’
‘এনগেজ ছিলো কোই না তো? একটা ফোন এসেছিলো রঙ নাম্বার ব্যাস ওই। তারপর তো আমি তোমাকে ট্রাই করে যাচ্ছি। তোমার কি হয়েছে বলোতো এরকম করে কথা বলছো কেন তুমি?’
‘কি হয়েছে সেটা তুমি বুঝতে পারবেনা, না বুঝতে চাইছো, সেই ভেবেই আমি তোমার পাশে থাকার বদলে অফিস করছি। আমি শুনেছি পাগলেও নিজের ভালো বোঝে। আর তুমি তো সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ। তুমি যা করছো সেটা বুঝেশুনেই করছো নিশ্চয়...’
‘তুমি এমন করছো কেন? এটা তো সামান্য একটা ব্যাপার।’
‘সামান্য না, সামান্য না। আমার কাছে এটা সামান্য না। এরকম গায়ে পড়া উপকার নেওয়াও উচিৎ নয়, দেওয়াও নয়। মান না মান মেয় তেরি মেহমান। বলা নেই কওয়া নেই হঠাত করে উরে এসে জুরে বসলো।’
‘বাব্বা বাব্বাঃ তুমি একটা ছোট বিষয় নিয়ে এত ভাবতে পারো?’
‘ওই তো তুলি, এখানেই আমার আর অন্য ছেলেদের তফাৎ। তুমি সেটা বুঝবেনা। সবাই যেটাকে তুচ্ছ ভেবে সরিয়ে রাখে, আমি সেটা নিয়ে চিন্তা করি। ছোট্ট একটা আঁচর থেকে এইডস হয়ে যেতে পারে সেটা নিশ্চয় তুমি জানো।’
‘শোন মা নিজে বলেছে যে তোমার সাথে কথা না বলে কোন সিদ্ধান্ত না নিতে। পুরো ঘটনার ঝামেলা তুমি একা নিজের ঘারে নিয়েছো, সেখানে কেউ এরকম সিদ্ধান্ত নেবে সেটা মা মেনে নেয়নি। তাই মা এখনো এই হাসপাতালেই রয়েছে।’
‘তাহলে ভেবে দেখো, পরিনত মানুষের যে চিন্তাধারা এক হয় নিশ্চয় বুঝতে পারছো।’
‘আচ্ছা তুমি এরকম বলছো কেন বলোতো? তুমিও এরকম করছো সাথে মাও। আমিতো মা যাতে ভালো থাকতে পারে সেইজন্যে রাজুস্যারের কথায় রাজী হয়েছিলাম।’
‘আমি বিকেলে হাসপাতালে আসবো তখন কথা হবে অফিসের ফোন এতক্ষন এনগেজ রাখা যাবে না। আর শোনো। অচেনা কেউ ফোন করে সন্দেহজনক কিছু বললে সাথে সাথে আমাকে জানাবে। এমন কি কাকিমার কিছু হয়ে গেছে বললেও।’
‘এরকম বলছো কেন?’
‘সেরকম কিছু না, পুলিশ কেস হয়েছে তো তাই সব রকম ভাবে সাবধান থাকা ভালো। আমি ৫টা নাগাদ পৌছুবো।’

তরিঘরি কাজ শেষ করে রওনা দিলাম হাসপাতালে। তুলির মার ওপর প্রবল শ্রদ্ধা হচ্ছে। এই অবস্থাতেও উনি এরকম একটা কথা বলতে পেরেছেন সেটা কজন পারে। সত্যি মানুষ চেনা একটা বিড়াট জটিল বিষয়।
বিকেলে পৌছুতেই দেখি তুলি তখনো পৌছায়নি। আমি একটা সিগেরেট ধরিয়ে অপেক্ষা করছি কখন আসে। কিছুক্ষন পরে তুলি আর তুলির বাবা এসে হাজির, সাথে সেই বোকাচোদা রাজু। শালা বহুত চিপকু তো। সরাসরি যুদ্ধ ঘোষনা করছে। কাল রাতে এত কির্তি করেছে সেটা মুখ দেখে বোঝাই যায় না। সহজ সরল ভাবে আমার কুশল জিজ্ঞেস করছে। ওরা তিনজন একসাথেই এসেছে। নিশ্চয় এই রাজু বোকাচোদা আসার সময় নিয়ে এসেছে। কি বালের ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট কি জানি। কাজ নেই কর্ম নেই মাগিবাজি খালি।
আমি রাগ চেপে উত্তর দিলাম। আমার মুখ দেখে ও বুঝতেই পারছে যে ভিতরে কি চলছে আমার। আমাকে জিজ্ঞেস করলো ‘সব ঠিকঠাক তো?’
‘হ্যাঁ ঠিকঠাকী শুধু রাতে ঘুম হচ্ছেনা।’
‘সেকি কেন? এত বেশী চিন্তা করবেন না, শরীর খারাপ হয়ে যাবে যে।’
‘না না চিন্তায় কি আর ঘুম আসছে না? ঘুম আসছেনা, কোন এক উঠতি গায়ক আমার থেকে প্রশংসা শুনতে চেয়ে গান শোনাচ্ছে রাতের বেলা তাই। কি করি বলুন তো? না পারছি গালি দিতে, না পারছি বলতে যে যতই বাজা না কেন তোর দৌড় এইটুকুই, সেতো নিজেই নিজের পিঠ চাপরাচ্ছে মনে হয়, আমার কথা শোনার ধৈর্য্য আর কোথায় তার।’
‘যাক তাহলে আপনাকে কেউ গান শোনায় তাহলে। ভালোতো, রিলাক্স হয় তো গান শুনলে। আর আমাদের ফোন মানেই তো নানা ঝামেলা।’
‘যার যা কপাল বুঝলেন, কেউ গান শোনে আর কেউ মানঅভিমান।’
আমি তুলির মার ওয়ার্ডের দিকে হাঁটা দিলাম।
সবার আগেই আমি গিয়ে পৌছুলাম। এইটুকু সময়ের মধ্যেই তুলির মাকে বললাম যে মালটা কেমন আঁদাজল খেয়ে তুলির পিছনে পরেছে। তুলির মাও জানালো যে ও সব বুঝতে পারছে। আর কথা এগুনোর আগেই বাকি সবাই এসে পরলো। আমি যা করার করে দিয়েছি।
দেখাটেখা শেষ হলে আমি অপেক্ষা করতে থাকলাম ডাক্তারের সাথে কথা বলবো বলে।
ডাক্তার জানালো যে এমনিতে কোন বিপদ নেই। এখন ক্ষত শোকানোর ইঞ্জেকশান দেওয়া হচ্ছে আর ড্রেসিং করা হচ্ছে। আর দুএক দিনের মধ্যে ছাড়া যেতে পারে সেক্ষেত্রে, বাড়িতে বাকি পথ্যগুলো চালিয়ে যেতে হবে।
ডাক্তারের সাথে কথা বলে বেরোতে বেরোতে তুলি আমার দিকে এগিয়ে এলো ‘চলো গাড়ি করে চলে যাই...’
‘কেন তুমি গাড়ি চরোনি এর আগে?’
‘বাবা তুমি এরকম করে ঠ্যাশ মেরে কথা বলো না ...।’ মুখ গোমরা করে বললো।
‘আমি অপ্রয়োজনে মিষ্টি কথা বলি না, একটা মানুষ হাসপাতালে রয়েছে আর তোমরা পিকনিকের মুডে আছো তাই না। তোমার ইচ্ছে করলে তুমি যাও। আমিও ইচ্ছে করলে বাবার গাড়ি নিয়ে লোক দেখাতে হাসপাতালে আসতে পারতাম। আশা করি বাবার গাড়িটা তোমার রাজু স্যরের গাড়ির থেকে কমদামি না, ডাইরেক্ট ফোর্ড থেকে ইম্পোর্ট করা তো একটাই গাড়ি আছে কলকাতায়।’
‘কি কথার সাথে কি কথা বলছো। তুমি এরকম কেন করছো বলোতো। আমাদের জন্যে একদিনে তুমি অনেক করেছো। অনেক ক্ষতি হচ্ছে তোমার কাজেকর্মে, তুমি যা করেছো তা আর কেউ করতে পারতো না। কিন্তু তা বলে তুমি এরকম করবে? আমাকে যেন সহ্যই করতে পারছো না তুমি। কি করেছি আমি।’
‘তোমাকে না তোমার ওই রাজুস্যরকে আমি সহ্য করতে পারছি না। তুমি ওকে চলে যেতে বলো, আমার তোমার সাথে কথা আছে।’
আমি তুলির পিছনে পিছনে চললাম ও কি বলে সেটা শোনার জন্যে।
তুলি ওকে বললো ‘আপনি চলে যান আমি আর বাবা পরে যাবো।’
যেন আকাশ থেকে পরলো ও ‘কেন ইমারজেন্সি কিছু হয়েছে নাকি? আমি দরকার হলে পরে যাবো।’ গলায় দরদ উথলে পরছে।
আমি একটু নাক গলালাম ‘না ইমারজেন্সি কিছু না তবে হতে পারে। আমরা একটু ব্যক্তিগত কথাবার্তা বলবো তাই আপনাকে আটকে না রাখাই ভালো। আর আপনার মত ব্যাস্ত লোক এখানে এইভাবে সময় নষ্ট করছেন সেটা খুব অন্যায়, আপনি তো সারাদিন ব্যস্ত থাকেন, রাতেও তো ঠিক করে ঘুমোন না...।’ আমি বেশ রসিয়ে বসিয়ে ওকে পাঞ্চটা করলাম।
তবুও ভবি ভুলবার নয়। ‘আ... আমি অপেক্ষা করতে পারি’
আমি হেসে বললাম ‘সব অপেক্ষাই যে সফল হয় সেটা ভেবে নেবেন না। আপনি আসুন। অনেক ধন্যবাদ সাহাজ্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্যে। ভবিষ্যতে কোন প্রয়োজন হলে আপনাকে অবশ্যই জানাবো।’
সে মাল চলে যেতে আমি তুলির বাবাকে একটা ট্যাক্সি ধরিয়ে দিলাম। আমি আর তুলি হাঁটতে হাঁটতে রবিন্দ্রসদনে গিয়ে বসলাম।
তুলিকে সব কথা বুঝিয়ে বললাম। ফোনে গিটার বাজানোর কথা। তুলিও আমাকে এতক্ষন বলেনি সেটা বললো। কেউ কাল রাতে বারবার ফোন করে ওকে “আই লাভ ইউ” বলে যাচ্ছিলো। গলা চিনতে পারেনি ও।
আমি তুলিকে বললাম যে রাজু যা করছে তাতে বড়সর ঝামেলা লেগে যাবে। তুমি যদি ওর কোন কথায় সন্মতি দাও তাহলে ওর জোর কিন্তু অনেক বেরে যাবে।
যা হয় তাই হোলো। অনেক কাকুতি মিনতি করলো ও, বললো বুঝতে পারেনি যে রাজু কেন এরকম করছে। ও ভাবছিলো এমনি ভালো মানুষ হয়তো তাই খবর পেয়ে দৌড়ে এসেছিলো।
আমি তুলিকে রনির লোকজনের হুমকির কথাটাও বললাম। বললাম আমি গিয়ে পুলিশে পার্সোনালি কথা বলবো। তুলি একটু ভয়ই পেয়ে গেলো।
আমি বার বার করে বলে দিলাম কোন উরোফোন আসলেই যেন আমাকে জানায়। সেটা যদি আমি মারা গেছি এরকম খবরও হয় তাহলেও যেন আমাকে জানানো হয়।

পরের দিন অফিসে পৌছুতেই বস ডেকে পাঠালো। ঘরে যেতেই বস আমাকে বললো “শোন ভুটানে গুপ্তা ইন্ডাস্ট্রিজের একটা ফুড প্রসেসিং সেন্টার খুলছে, সেটার একটা ফিসিবিলিটি রিপোর্ট তৈরি করতে হবে।”
আমি অবাক হয়ে বললাম “ যেতে হবে নাকি?’
‘এখানে বসে করতে পারবি?’
‘না তা নয়। কিন্তু ...।’
‘কিন্তু কি?’
‘তুমি আমাকে চুস করলে কেন? কোন স্পেশাল রিকোয়েস্ট আছে?’
‘কেন বলছিস বল তো?’
‘সময় আছে তোমার?’
‘কতক্ষনের গল্প সেই বুঝে বলবো কতটা সময় দিতে পারবো’
‘বেশিক্ষন না তোমার যা গ্রে ম্যাটার তাতে দু মিনিট লাগবে’
‘বলে ফ্যাল।’
আমি সংক্ষেপে রাজুর কির্তিগুলো বসকে বললাম।
শুনে বসের প্রতিক্রিয়া “শুনেছিলাম মালটার সন্মন্ধে, কিন্তু অতি ঘোরেল মাল তো। এখন কি করা যায় বল তো? এতো চাল চেলেছে যে তোকে সরানোর জন্যে। কর্পোরেটের রেকমেন্ডেশান তোকে পাঠানোর জন্যে...।’
আমি চুপ করে রইলাম।
বস নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে বললো ‘এরকম মালকে ভাঙ্গা বেড়া দেখালে তো শেষ, এদের ছলনার অভাব হয়না। আর মেয়েদের মন তো সবসময়ই দুর্বল, কি ভাবে ফাঁসিয়ে দেবে বলা মুশকিল... তাহলে। এমন কিছু বলে ফাসিয়ে নিতে পারে যে তোর ছামটারও কিছু করার থাকবে না নিজের অনিচ্ছাতেও ওর ফাঁদে গিয়ে পরবে।’
বস এরকম পার্সোনাল নিয়েছে ব্যাপারটা দেখে আমার কৃতজ্ঞতায় গলা বুজে এলো।
হঠাত করে বস বলে উঠলো ‘তোর তো বাপের পয়সার অভাব নেই, তুই চাকরি যদি ছেড়ে দিস তাহলে কি হবে?’
‘মানে?’
‘মানে, এমনটা হোলো যে আমি তোকে ফোর্স করছি যাওয়ার জন্যে, তুই রাজী না ব্যক্তিগত সমস্যা আছে বলে। তাও আমি জোর করছি। তুই তাহলে কি আর করতে পারিস? রিজাইন দিতে পারিস্*। সেক্ষেত্রে আমি তোকে বাইরে পাঠাবো না। একমাস নোটিশ তোর। হ্যান্ডওভার করার জন্যে একমাস অফিসেই থাকতে হবে। তারমধ্যে আশাকরি তোর হবু শাশুড়ি বাড়ি চলে আসবে।’
‘মানে একমাস পর থেকে আমি বেকার?’
‘হ্যাঁ, তবে নাটকটা ভালো করে করতে পারলে সেটা নাও হোতে পারে, মানে ধর আমিই ঝাঁড় খেলাম যে তোর মত ভালো কর্মির সাথে চাপাচাপি করে, ব্যক্তিগত অসুবিধে না বুঝে চাপ দিয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য করার জন্যে।’
‘তুমি সত্যি গুরুদেব...।’
‘আরে দাড়া দাড়া এখনো শেষ হয়নি। তোর জ্বালা আমি বুঝি। তোদের ম্যাডামের পিছনেও এরকম অনেক শুয়োরের বাচ্চা পরেছিলো। সবকটা কে কি ভাবে ডজ মেরেছিলাম সেটা তোর বৌদি নিজেও জানেনা। সাধে কি কোম্পানি আমাকে রিজিওনাল বস করেছে। সব কিছু মেরেধরে হয়না ভাই। তুই অনেক সহজসরল ছেলে। সাথে মাথাগরম। আরে, জীবনটা চেন ভালো করে।’
মানুষের জীবনে অনেক সময় আপদ বিপদও অনেক কাজে লাগে। অনেক দুরের লোক কাছে আসে, আবার কাছের লোক বিপদের মধ্যে ফেলে দিয়ে চলে যায়। আজ অন্তত আমার এই অভিজ্ঞতা হোলো।

দিন চারেক পরে তুলির মাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিলো। রাজু হাল ছারেনি ফোনে যোগাযোগ রেখে চলেছে। দরকার হলে চলে আসবে। রনিরা এখনো পুলিশ হেফাজতে। স্বপন অনেক কিছু কবুল করেছে। নিজে রাজসাক্ষি হতে চায়। কবিরদার সাথে এখনো দেখা হয়নি, ট্রেনিং নিতে বম্বে গেছে। খুব দরকার পুলিশি বুদ্ধির সাহায্য নেওয়া। রনির বাবা বেশ চাঁপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, পুলিশ আর প্রশাসনের ওপর। পুলিশ আসতে আসতে অনেক কিছুই খুজে বের করেছে, তদন্তের স্বার্থে সব জানাচ্ছে না। এই জন্যে খুব বেশী করে কবিরদাকে দরকার ছিলো।

পরের মাসে কেসের ডেট আছে। এই এক উটকো ঝামেলা। তুলির মাকেও যেতে হবে। এখানেও রাজু নাক গলিয়েছে। বলেছে শহরের সেরা উকিল লাগিয়ে দেবে দরকার হলে। পিছন ফিরে তাকানোর যো নেই। শুধু লড়ে যাও। আর কত। মন যে ক্লান্ত হয়ে পরছে ক্রমশ।
মনের মাঝে একটা চাপ রয়েছে যে চাকরি তে রেজিগনেশান দিয়েছি। ফল কি হবে সেটা বলা যায় না। বসও ঠিক আত্মবিশ্বাসী নয় এ ব্যাপারে। ৫০-৫০ চান্স।
যাকগে আবার না হয় একটা চাকরি খুজতে হবে। কিন্তু এখানে সঠিক ভাবে না শোনা পর্যন্ত ঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছিনা। বসের মুখও কাঁচুমাচু হয়ে আছে। পুরো অফিসে ছরিয়ে পরেছে যে আমি চাকরি ছেড়ে দিচ্ছি।
আমাকে সংসার চালাতে হয়না। কিন্তু তাও এই বয়েসে বেকার বসে থাকা যে কি কষ্টকর সেটা কাউকে বুঝিয়ে বলতে হয়না।
তিরিশ দিন থেকে আর কিছুদিন বাকি মাত্র। বস একপ্রকার বুঝিয়েই দিলো যে কিছু হওয়ার নয়। আমাকে ডেকে একান্তে খুলে বললো, ‘তোর ওই ছামিয়ার প্রভাবেই এই খেলাটা হচ্ছে।’
‘কর্পোরেটে খেলা খেলেছে যে তোকে যেন ভবিষ্যতে ওদের কোম্পানিতে অডিট করতে পাঠানো না হয়।’
‘তাই নাকি।’
‘তাহলেই বুঝতে পারছিস যে কি করে তোকে এই কোম্পানিতে আটকে রাখবে সেটা চিন্তা করার কেউ নেই। সব রংচং মেখে বসে রয়েছে রেণ্ডির বাচ্চারা খদ্দেরের মন যুগিয়ে দিতে।’
‘যাই হোক ছার, এই কোম্পানি বা গুপ্তা ইন্ডাস্ট্রিজ ভারতবর্ষের শেষ কোম্পানি না। আমি তোকে একটা এড্রেস দিচ্ছি, সেটাতে যা তোর চাকরি হয়ে যাবে, খুব চ্যালেঞ্জিং কাজ। প্রোজেক্ট কন্ট্রাক্টসের ওপোর। মজা পাবি করে। আর ক্যারিয়ারও হবে। নেগোশিয়েট নিজের মত করে নিবি। ওই কোম্পানির বস আমার বন্ধু। দরকার না পরলে আমার নাম করতে হবেনা। ও তোর ব্যাপারে জানে।’
‘যাঃ শালা এমন সুখের চাকরিটা গেলো?’
‘এ আর এমন কি? মাত্র তো চাকরি। কত প্রান গেলো কত যুদ্ধ হোলো, এই নারীর জন্যে। শোন যাওয়ার সময় গুপ্তাদের গুপ্ত কথাগুলো একটু খোলসা করে বলে যাস আমাকে। এটা আমার প্রেস্টিজ ফাইট হয়ে গেছে। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ।’

নতুন চাকরি পেতে অসুবিধে হোলো না। নতুন বসও বেশ ইয়ং আর চনমনে ছেলে। রেকমেণ্ডেশান না, দুর্দান্ত আলাপ আলোচনা হোলো হবু বসের সাথে। বস আমার জ্ঞান দেখে বলেই ফেললো, আপনি কেন আগে এলেন না। বুঝলাম মনের সুখে কাজ করা যাবে। একটাই অসুবিধে এই যে অফিসটা ডালহৌসিতে। বেশ পাপর বেলতে হয় পৌছুতে। মোটামুটি সুখের দিন শেষ। এতোদিন হেলতেদুলতে অফিসের উদ্দেশ্যে বেরোতাম, এখন থেকে নাকে মুখে গুজেই দৌড়তে হবে।

কয়েক দিন নতুন অফিসের কাজে ব্যাস্ত হয়ে পরলাম। এটা আমার আরেকটা দিক। যতক্ষন না আমি কোনোকিছু করায়ত্ত করছি, ততক্ষন আমি সেটা ছারিনা। অনেক নতুন ধরনের আর মাল্টিফাংশানাল এরিয়াতে কাজ করতে হচ্ছে। একটা প্রোজেক্টের বিল অফ মেটেরিয়াল থেকে শুরু করে, বাজেট, কস্ট কন্ট্রোল, প্রফিটেবিলিটি এনালাইসিস, আরো অনেক কিছু। বেশ পেশাদার কম্পানি। শুনলাম কয়েকদিনের মধ্যেই আমাকে ল্যাপটপ দিয়ে দেবে। বস্*ও বেশ ভালো।পাগলের মত কাজ করে, সপ্তাহে বেশির ভাগ সময়ই বাইরে থাকে। সবসময় বলে আমি বলছি বালে ঘার নারবেন না। নিজের মতামত দিন। অনেক স্বাধিনতা আছে কাজের। আর সবাই খুব বন্ধুত্বপুর্ন। তবে হ্যাঁ এই কাজে মাঝে মাঝে টুর আছে। সে আর এমন কি।

এসবের মাঝে তুলির সাথে যোগাযোগের বহরটা কমে গেছিলো। রাতে ফোন করে কথা হোতো অবশ্যই। সেও টুকটাক। ওর মা ওকে বলেছে, রাতে বেশী কথা না বলতে, আমার নতুন চাকরি এখন খুব চাপ থাকবে তাই তুলিও বেশী কথা বলতে চাইলেও বলে না। সত্যি আমার শাশুড়ি মায়ের তুলনা হয়না। দিনে দিনে শ্রদ্ধা বেড়ে চলেছে।
এক শনিবার রাতে তুলি ফোন করলো, খুব মন খারাপ ওর।
‘কি যে বোর লাগে সারাদিন বাড়িতে বসে বসে কি বলবো।’
‘আমি ঠাট্টা করে বললাম ‘অভ্যেস করো, বিয়ের পরে তো বাড়িতেই থাকতে হবে।’
‘আরে সেটা তো তোমার মা থাকবে, বাবা থাকবে তাদের সাথে তো কথা বলে সময় কাটানো যায়, এখন চিন্তা করোতো সারাদিন ভুতের মত বাড়িতে বসে থাকি, মা প্রায় সারাক্ষনই ঘুমোয়, বাবা চলে যায় আড্ডা মারতে, তুমিও ব্যস্ত আসতে পারোনা আমআর সময় কি করে কাটে বলোতো।’
‘এইই জন্যে বলি মেয়েদের হবি থাকা অবশ্য কর্তব্য। যতই তুমি ভাবো কি বিয়ের পরে তুমি আর তোমার বর একসাথে ফুচকা খেতে বেরোবে, সিনেমা দেখে রাত করে বাড়ি ফিরবে, তারপর একসাথে চাঁদ আর তারা দেখবে, সেটা সম্ভব নয়। নিজের জগত না থাকলে, ভবিষ্যতে খুব মুস্কিলে পরবে তুলি। তোমাকে কতবার বলেছি, গল্পের বই পরো, সিনেমা দেখো, রান্না করো, তোমার কোন কিছুতেই ইচ্ছে না থাকলে আমি কি করবো বলোতো।’
‘তুমি না... যেগুলো আমি পছন্দ করিনা সেগুলো তুমি করতে বলো, সব মানুষ কি এক হয়, সবার কি বই পড়তে সিনামা দেখতে ভালো লাগে? আমার যেটা ভালো লাগে সেটা তুমি পছন্দ করোনা।’
‘কি পছন্দ করিনা?’
‘এই যে আমার নাচ করতে ভালো লাগে, আমার নাচ শেখাতে ভাল লাগে?’
‘সেটা কি সাধে আমি বারন করছি? সেখানে তো ওই শুয়োরের বাচ্চাটা বসে আছে। মনে হয় তুমি হাগতে গেলেও তোমার পিছে পিছে যাবে।’
‘ইস্* মুখের কি ভাষা তোমার, মেয়েদের সাথে কি করে কথা বলতে হয় জানো না।’
‘আবার কি বলবো, মুখখানা দেখেছো, কেতা করে থাকে বলে, নাহলে তো বিড়ির দোকানে বসেও বিক্রি করার যোগ্যতা ছিলো না।’
‘বাবা বাবা, এত রাগ তোমার।’
‘হবেনা এরকম ক্যালানে ছেলে দেখলে আমার মনে হয় মেরে নাকমুখ ফাটিয়ে দি।’
‘আচ্ছা দিও দিও, তাতে যদি তোমার শান্তি হয়। কিন্তু তুমি বলোতো আমাকে কি তুমি বোঝোনা?’
‘কেন বলছো?’
‘তুমি আমাকে ভরসা করোনা নিশ্চয়।’
‘এরকম কেন বলছো?’
‘নাহলে তুমি ওই রাজুর ভয়ে আমাকে ফাংশান পর্যন্ত করতে বারন করে দিলে, আমি কি নিয়ে থাকি বলোতো? তুমি কি ভাবলে যে ও ছলাকলা দেখালো আর আমি ওর বসে চলে এলাম। এইটুকু ভরসা করতে পারোনা আমার ওপরে, জীবনে প্রথম আআমি একটা প্রোগ্রাম লিড করছিলাম আর তুমি শুধু সন্দেহের বশে ...।’
‘শোনো তুলি জীবনে কটা শুয়োরের বাচ্চা দেখেছো তুমি, বললে তো ভাব বে যে আমি বারিয়ে বলছি বা যত দোষ নন্দ ঘোষ। আজকে আমার চাকরি ছেড়ে নতুন চাকরিতে জয়েন করতে হোলো তার পিছনে তোমার ঐ রাজুস্যার।’
‘সেকি কি ভাবে? তুমি বলনি তো আগে।’
‘সেটা আর সময় পেলাম কোথায়, কালকে যাবো তোমাদের বাড়িতে সব খুলে বলবো।’
‘কিন্তু তোমাকে একটা রিকোয়েস্ট করছি প্লিজ এটা রাখো।’
‘কি?’
‘আমাকে ফাংশানটা করতে দাও, ওই রাজুকে আমি ধারে কাছে ঘেষতে দেবো না দরকার হলে মুখের ওপর বলে দেবো যে আমি ওর এসব পছন্দ করছি না। ম্যাডামকেও দরকার হলে বলে দেবো। দরকার হলে তুমি ম্যাডামের সাথে কথা বলো।’
‘ঠিক আছে কালকে আসি তারপর ঠিক করবো।’
[+] 1 user Likes manas's post
Reply


Messages In This Thread
ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 03:32 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 03:43 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 03:44 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 03:46 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 03:49 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:10 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:11 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:13 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:13 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:14 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:14 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:15 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:16 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:16 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:17 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:17 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:18 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:18 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:19 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:19 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:20 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:21 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:21 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:22 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:23 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:23 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:23 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:24 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:25 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:26 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:26 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:29 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:29 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:30 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:31 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:31 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:32 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:39 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:39 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:40 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:41 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:41 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:42 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:42 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:43 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:44 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:44 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:45 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:45 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 31-12-2018, 04:47 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 03:29 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 03:30 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 03:31 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 03:32 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 03:33 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 03:34 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 03:36 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 03:37 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 03:38 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 03:38 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 03:39 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 03:40 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 03:41 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 03:42 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 04:30 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 04:30 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 04:31 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 04:31 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 04:32 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 04:33 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 04:33 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 04:33 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 04:34 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 04:35 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 04:37 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 04:38 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 04:40 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 04:40 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 04:41 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 04:42 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by manas - 01-01-2019, 04:43 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by arn43 - 23-08-2019, 08:37 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by arn43 - 30-08-2019, 02:04 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by Lucky sk - 31-08-2019, 05:07 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by dip55 - 03-09-2019, 05:32 AM
RE: ভুল by avi5774 completed - by bk1995 - 06-09-2019, 09:53 AM
RE: ভুল by avi5774 completed - by ddey333 - 21-04-2021, 10:43 AM
RE: ভুল by avi5774 completed - by Suntzu - 23-04-2021, 11:46 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by raja05 - 24-04-2021, 12:59 AM
RE: ভুল by avi5774 completed - by ddey333 - 21-04-2021, 11:35 AM
RE: ভুল by avi5774 completed - by Boti babu - 18-06-2022, 12:35 AM
RE: ভুল by avi5774 completed - by ddey333 - 04-07-2022, 02:58 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by ddey333 - 06-07-2022, 02:44 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by ddey333 - 16-11-2022, 10:09 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by bforb - 16-11-2022, 10:23 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by ddey333 - 02-03-2023, 09:28 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by ddey333 - 20-03-2023, 11:04 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by ddey333 - 07-04-2023, 01:18 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by Pmsex - 29-11-2023, 04:32 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by Pmsex - 29-11-2023, 04:38 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by Pundit77 - 06-12-2023, 08:26 PM
RE: ভুল by avi5774 completed - by Pmsex - 19-12-2023, 10:47 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)