31-12-2018, 04:42 PM
সুখ বা শান্তি দুটোই আমার জীবনে চিরস্থায়ি নয়। ভাবছি এবার কোন জ্যোতিষীকে দেখাবো, দেখতে চাই আমার কোণ কুলগ্নে জন্ম। সুখের, ভালোবাসার, ভালোলাগার যে মুহুর্তগুলোর যাবর কেঁটে মানুষ জীবন কাটিয়ে দিতে পারে, আমি সেগুলো নিয়ে যে অবসরে চিন্তা করবো, নিজেকে নিজে, জীবনকে ভালোবাসবো সে উপায় আর আমার এ জীবনে বোধহয় আসবেনা।
ফুরফুরে মন নিয়ে আড্ডা মেরে বাড়িতে ঢুকলাম। খেয়ে দেয়ে, সোফায় হেলান দিয়ে লম্বা একটা সুখটান দিয়ে ভাবলাম মনে কেন এত ফুর্তি।
উফ হবেনা। আজকে যা হোলো সেটা পানুগল্পেরও ওপর দিয়ে যায়। জীবনের প্রথম পায়ুমৈথুন করলাম, ভাবতেই পারছিনা যে সত্যি করেছি, তাও হবু শাশুড়ির সাথে। তুলির নিজের মা না হোলেও, হবু শাশুরিকে উদ্দাম চুদলাম। দুজনের মধ্যে ভালোই বোঝাপড়া হোলো। এবার থেকে তুলিকে সামলে রাখার দায়িত্ব আমার একার না। অনেক নিশ্চিন্ত বোধ করছি। ফুর্তি হবেনা?
ফোনের রিং বেজে উঠলো। তুলি ওপার থেকে কথা বলছে। আজকে মন খুলে ওর সাথে কথা বলবো। আর কোন বাঁধা নেই। সামনের বছরই পাগলিটাকে নিয়ে আসবো, আমার রাঙ্গাবউ হবে ও। বড় একটা সিঁদুরের টীপ পরলে ওকে কেমন লাগবে, নিশ্চয় রাঙ্গাবউ রাঙ্গাবউ লাগবে।
তুলির গলায় খুব উচ্ছাস আজকে।
‘জানো, আমি একটা চাকরির অফার পেয়েছি, ভালো মাইনে দেবে। খুব বড় কোম্পানি।’
‘সেকিগো, তুমি তো করতে গেছো ফাংশানের রিহার্সাল, সেখানে কে চাকরি দিলো।’
‘আছে আছে অনেক আছে। আমার ডিমাণ্ড তো জানো না ...।’
‘তাই নাকি? তো আমি আমার ডিমান্ড যাচাই করে দেখবো নাকি একবার?’
‘লাত্থি মারবো, অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকালে না...।’
‘বাহ আমি কেন তাকাবো, আমার দিকেই তো তাকায় ...।’
‘তুমি না দেখলে কি করে বোঝো যে তোমার দিকে তাকাচ্ছে।’
‘সেটা কাউকে বলে দিতে হয় নাকি? সেটা এমনিতেই বোঝা যায়।’
‘মেরে ফেলবো কিন্তু...’
‘বারে এই তো তুমি চ্যালেঞ্জ দিলে, যে তোমার অনেক ডিমান্ড।’
‘ইয়ার্কিও বোঝো না।’
‘ও তার মানে চাকরির ব্যাপারটাও ইয়ার্কি।’
‘এই শোনো না শোনো না’
‘শুনছি তো।’
‘আমাদের কলেজের প্রেসিডেণ্টের ছেলে ভালো গিটার বাজায়, ওদের সুত্রেই নেতাজি ইন্ডোর ভাড়া পাওয়া গেছে সস্তায়। গুপ্তা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের নাম শুনেছো?’
‘হ্যাঁ, আমরা তো ওদের অডিট করি।’
‘হ্যাঁ, ওদের কোম্পানি, খুব বড়।’
‘তো তোমাকে হঠাত চাকরি দিতে যাচ্ছে কেন?’
‘আরে না রাজু স্যার আজকে রিহার্সাল দেখতে এসেছিলো। আমি লিড করছি দেখে, আমার সাথে অনেক গল্প করলো। এই ধরো আমার দাদাদের থেকে একটু বড় হবে। কালো একটা শেরোয়ানি পরে এসেছিলো। মনে হয় একটু দোষ আছে। যে ভাবে দেখছিলো আমাকে। খারাপ ভাবে না কিন্তু মনে হচ্ছিলো প্রপোজ করে দেবে।’
‘যাক তুমি বুঝেছো তাহলে। তো তোমার কি ইচ্ছে, বড়লোকের ছেলে, বাড়ি গাড়ি চাকর বাকর সব আছে, রাজরানি করে রাখবে।’ বলতে বলতে বেশ রাগই হোলো।
‘বুঝবো না মেয়েরা সব বোঝে। আমার ওসবে কোন লোভ নেই, সেতো তোমারও আছে।’
‘তো আমাকে কি রকম বোঝো।’
‘তুমি বদ, আমাকে বাচ্চা পেয়ে কি কি না করেছো।’
‘ও আমি বদ হয়ে গেলাম আর তুমি বাচ্চা হয়ে গেলে তাই না। সত্যি... বেশ তো পা গুঁটিয়ে আরাম নিচ্ছিলে যখন বদামো করছিলাম।’
‘ছারোনা, শোনো না।’
‘আরে শুনছি তো।’
‘মালটা ভালো গিটার বাজায় বলে মায়া ম্যাডাম গিটার বাজিয়ে শোনাতে বললো। আর জানোতো, আশিকির সেই থিম মিউজিকটা আছে না, সাঁসো কি জরুরত হ্যায় য্যায়সে... সেটা বাজালো, আর আমার দিকে কি ভাবে দেখছে, বলে বোঝাতে পারবোনা। যেন আমার উদ্দেশ্যেই গানটা গিটারে বাজাচ্ছে। বাজানো শেষ করে আমাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলো কেমন বাজালো ও। আমি তো ভালো বললাম। ভালোতো বলতেই হবে। তারপর থেকে আমি যেখানে ওই মালও সেখানে। মাঝে মাঝে রাগ উঠে যাচ্ছিলো। এমন কী বাড়ি থেকে আলুরদম আর লুচি নিয়ে গেছি টিফিনে, খাচ্ছি যখন সেখানেও হাজির। বলেই দিলো একদিন বাড়িতে এসে মায়ের হাতের আলুরদম আর লুচি খাবে। ফোন নাম্বার চেয়েছিলো, আমি কোনোরকমে কাটিয়েছি, ফোন নাম্বার দিয়ে মরি আরকি। মনামি তো আমার পিছনে লাগা শুরু করে দিয়েছে। আমি মনে মনে ভাবছি শালা তুই যদি আমারটাকে দেখতি...। তুমি ওকে দেখলে তো মেরেই দিতে।’
‘তো এত বুঝলে তো ও চাকরির অফার দিলো কেন?’
‘ওদের অফিসে নাকি অফিস আসিস্টান্ট দরকার, ভালো লিডারশিপ কোয়ালিটি দরকার। আমার মধ্যে ও নাকি সেই গুন দেখেছে। মায়া ম্যাডামকে দিয়েই বলিয়েছে, মায়া ম্যাডাম তো আমাকে কংগ্রাচুলেশান পর্যন্ত জানিয়ে গেলো।’
‘গুন দেখেছে না অন্যকিছু, তোমার কথা শুনে তো মনে হচ্ছে তুমি বেশ ঢলে পরেছো।’ আমি সিরিয়াসলি তুলিকে বললাম।
‘আচ্ছা তুমি কেমন বলতো। তুমি আমাকে একদম বন্ধুর মত দেখোনা। তোমার সাথে বন্ধুর মত কথা বলা যায়না। এই কথাগুলো কি আমি আর কাউকে বলছি। সত্যি তুমি না।’
‘আমার জায়গায় তুমি হলে কি করতে।’
‘আমি কি ওর দিকে ঢলে পরেছি বলে মনে হচ্ছে? ভাবছিলাম একটা কাজ তো করতে হবে কলেজ থেকে বেরিয়ে, তাই এই চাকরিটা করতাম, আর অভিজ্ঞতা হয়ে গেলে ছেড়ে দিতাম।’
‘কি দরকার তোমার চাকরি করার? সামনের বছর তো বিয়ে করে নেবো।’
‘বারে তুমি এরকম কথা বলছো? আমি তো ভাবছিলাম তুমি খুশি হবে। আজকের দিনে মেয়েরা চাকরি করবে সেটা আর এমন কি কথা।’
‘তুলি, এত কথা বলার পরেও তুমি যদি এরকম করো তো আমার আর কিছু করার নেই।’
‘তুমি এরকম ভাবছো কেন। ও হ্যাংলামি করছে করুক না, আমি তো ঠিক আছি। আমি কি ওর দিকে ঢলে পরেছি নাকি। তুমি আমাকে কি ভাবো বলতো? কত ছেলেই তো এরকম করে।’
‘আমার এরকম কিছু হলে তুমি ঠিক এইভাবে মেনে নিতে পারতে। এরকম বারবার করে সমস্যা খাড়া করলে, সমস্যা সামলাতে সামলাতেই জীবন কেটে যাবে। এই কদিন আগে কত ঝগড়া হোলো দুজনের, তাও তুমি যে কি করে এরকম চিন্তাভাবনা করো আমি বুঝতে পারিনা। তুমি কবে ভালোমন্দ বুঝে কাজ করবে সেই অপেক্ষা করতে করতে আমার জীবন শেষ হয়ে যাবে।’
এই ভাবে বলছো কেন? তোমার সমস্যা কোথায়, ওই ছেলেটা না চাকরিটা।’
‘দুটোই। আমি জানি এই জিনিস পরবর্তি কালে বেড়ে যাবে। আমার মনেও খুঁতখুঁত থেকে যাবে। শুধু শুধু কেন নিজেদের মধ্যে সন্দেহ আনতে চাইছো।’
‘আচ্ছা আমি যদি অন্য কোথাও চাকরি পাই?’
‘সেটা ভেবে দেখবো। কিন্তু যাই হোক না কেন নিয়ের পরে কিন্তু তুমি চাকরি করতে পারবেনা। মা বাবা কিন্তু মেনে নেবে না। একবার কিন্তু ওদের মনে একটা দাগ পরেছে। আবার এরকম হলে কিন্তু...। এর থেকে তুমি বলো, যে তুমি নাচের কলেজ খুলবে, বিউটি পারলার খুলবে, আমি সমস্ত টাকাপয়সা খরচ করবো।’
‘বাবা কি হিংসে, আচ্ছা বাবা আচ্ছা। হুলোটা কেমন আছে।’
কি করে বলি ওকে যে হুলোটা ওদের বাড়ির বড় বেড়ালটাকে আদর করেছে আজকে। তবুও মুখে বললাম ‘উফ ব্যাথা করছে গোঁ তোমার পুসিটার কথা ভেবে, কতদিন পুসিটা এটাকে আদর করেনি।’
ফোনটা রাখার পরে মনটা খঁচ খঁচ করতে শুরু করলো। তুলির মাকে বলতে হবে। না থাক দেখিই না তুলি নিজে কি করে। এখন আবার দুম করে তুলির মা যদি সুর পালটায় তো তুলি অন্যরকম ভাবতে পারে। কিন্তু আমার চিন্তা তুলির থেকেও সেই রাজু স্যারকে নিয়ে। এই ধরনের গিটার বাজিয়েরা বেশ মাগিবাজ হয়। চিপকু টাইপের হয়। ফোন নাম্বার পেতে আর কতক্ষন। এ তো এবার তুলির জন্যে বারবার আসবে। শালা শান্তিতে আর থাকতে পারবো না।
চিন্তা করতে করতেই আবার ফোন বেজে উঠলো। মিলু মানে বিজয়ার মা। এত রাতে আবার কি হোলো। ব্রেন টিউমার কি এত তাড়াতাড়ি সারে নাকি?
-কি ব্যাপার এত রাতে।
-এত রাত কোথায়, মাত্র তো পৌনে এগারোটা বাজে।
-তাও ...
- কেন কথা বলতে ইচ্ছে করছে না।
-না না সেরকম কেন?
-না মনে হয় তো ইচ্ছে করছেনা।
-আরে তুমি না বড় হেয়ালি করো। খোলাখুলি বলো না।
-সেদিন এত কথা বললে আর আজকে আরেকজনের সাথে দেখলাম।
এইরে দেখেছে নাকি? কি করে, শালা তুলির মাও এত ধুমকিতে ছিলো যে একা ছাড়তে ঠিক সাহস হচ্ছিলো না, তাই আমি ট্যাক্সি করে বড় রাস্তায় ছেড়ে দিয়ে ওর পিছে পিছে আসছিলাম। মালটা বারবার করে ঘুরে ঘুরে আমার দিকে দেখছিলো আর দাড়িয়ে পরে কথা বলছিলো।
-ওঃ এই ব্যাপার। দেখলে মানে? দেখেছো তো কি হয়েছে।
-ওর সাথে দেখলাম বলেই বলছি।
-কার কথা বলছো বলতো? আমি জেনেশুনেই ইচ্ছে করে জিজ্ঞেস করলাম। দুজন তো একই ডালের পাখি।
-কেন তুমি যে ঝর্না বৌদির সাথে যাচ্ছিলে।
-আরে দূর ও তো আমার বাবার বন্ধুর বৌ। ওরা আমাদের বাড়িতেও তো আসে। দেখার কি হোলো। কি উল্টোপাল্টা বলছো।
-ঢপ দিচ্ছো তাই না। আমি কিন্তু সব খবর বের করে নেবো।
-ঢপ দেবো কেন? আমাকে দেখে মনে হয় আমি ঢপ দি?
-কি জানে সেদিন থেকে মনে হচ্ছে, যে তুমি আমাকে এড়িয়ে গেলে।
-নানা এড়িয়ে যাবো কেন? আচ্ছা বলত তুমি আর আমি যেভাবে করেছি সেরকম ভাবে কোন ছেলে পেলে কি তোমাকে ছেড়ে থাকতে পারতো।
-আবার বলছো তোমাদের বাড়িতেও যায়। তুমি যানোনা কি মাল ও। বিজয়ার মার মনে তুলির মার প্রভাব ভালোই পরেছে বুঝতে পারছি।
-কেন?
-আরে একদম রেন্ডি। সাবধানে থাকবে। যেখানে নিয়ে গেছিলাম তোমাকে সেখানের ও রেগুলার মাল।
মনে মনে ভাবছি এক রেন্ডি আরেক রেন্ডির নিন্দা করছে। তফাৎ কোথায় না একজন গলিতে রেগুলার আর একজন বাড়িতে রেগুলার।
-ওরে বাবা তাই নাকি, আগে জানলে তো কোনোদিন জেতাম না। ছারো আর তো যাচ্ছিনা। ধুর আমার এসবে ইন্টারেস্ট নেই। আমার মার খুব ইচ্ছে ওর মেয়ের সাথে আমার বিয়ে হোক। কিন্তু আমি চাই না। এরকম রোগ নিয়ে কেউ বিয়ে থা করতে পারে।
-তোমার সাথে ও। ওই রুগ্ন বাশের মত লম্বা মেয়েটাকে মানায় তোমার মত সুপুরুষের সাথে।
ঝাঁটটা জ্বলে যাচ্ছে। কিন্তু হেসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করছি।
-ধুর আমি ভালো করে দেখিও নি, ওকে, তুলি না কি যেন নাম মেয়েটার।
-আমি একটা কথা বলবো?
-কি?
-তুমি বিজয়াকে বিয়ে করো। খুব ভাল মেয়ে আমার। আমি তোমার রোগের কথাও ওকে বলে দেবো। ও আপত্তি করবে না দেখো।
-এটা হয় নাকি? তোমার সাথে এরকম রিলেশানের পরে মেয়ের সাথে বিয়ে? ভগবান পাপ দেবে। ছিঃ
-ধুর তুমি বড্ড ভালো ছেলে। বিজয়ার সাথে তোমার বিয়ে হলে আমি আর তুমি কাছাকাছি থাকতে পারবো সবসময়। সময় সুযোগ পেলে...।
-ছিঃ মা হয়ে এরকম ভাবলে কি করে? নিজের মেয়ের জামাইয়ের সাথে? শোন কোনকিছু চিরকাল গোপন থাকেনা। যেদিন জানতে পারবে ও তোমার আর আমার অবস্থা কি হবে বলোতো। আর ও তো গলায় দরি দেবে।
-বাবা বাবা। কত ভাবে ছেলে। ঠিক আছে। বিয়ের পরে আর কিছু করবো না আমরা। বিয়ের আগে পর্যন্ত তো আদর করবে তো? এখনই তো আমি তোমার শাশুড়ি হচ্ছি না।
মাথাটা গরম হয়ে গেলো।
-কি ব্যাপার বলো তো? তোমার ইচ্ছে হোলো আর বলে দিলে, আর আমাকে সেটা পালন করতেই হবে নাকি?
-রাগ করলে।
-এখন রাখো, আমার ঘুম পেয়েছে।
আমি ফোনটা সশব্দে রেখে দিলাম। শালি রেন্ডি। মান না মান ম্যায় তেরি মেহমান।
ফুরফুরে মন নিয়ে আড্ডা মেরে বাড়িতে ঢুকলাম। খেয়ে দেয়ে, সোফায় হেলান দিয়ে লম্বা একটা সুখটান দিয়ে ভাবলাম মনে কেন এত ফুর্তি।
উফ হবেনা। আজকে যা হোলো সেটা পানুগল্পেরও ওপর দিয়ে যায়। জীবনের প্রথম পায়ুমৈথুন করলাম, ভাবতেই পারছিনা যে সত্যি করেছি, তাও হবু শাশুড়ির সাথে। তুলির নিজের মা না হোলেও, হবু শাশুরিকে উদ্দাম চুদলাম। দুজনের মধ্যে ভালোই বোঝাপড়া হোলো। এবার থেকে তুলিকে সামলে রাখার দায়িত্ব আমার একার না। অনেক নিশ্চিন্ত বোধ করছি। ফুর্তি হবেনা?
ফোনের রিং বেজে উঠলো। তুলি ওপার থেকে কথা বলছে। আজকে মন খুলে ওর সাথে কথা বলবো। আর কোন বাঁধা নেই। সামনের বছরই পাগলিটাকে নিয়ে আসবো, আমার রাঙ্গাবউ হবে ও। বড় একটা সিঁদুরের টীপ পরলে ওকে কেমন লাগবে, নিশ্চয় রাঙ্গাবউ রাঙ্গাবউ লাগবে।
তুলির গলায় খুব উচ্ছাস আজকে।
‘জানো, আমি একটা চাকরির অফার পেয়েছি, ভালো মাইনে দেবে। খুব বড় কোম্পানি।’
‘সেকিগো, তুমি তো করতে গেছো ফাংশানের রিহার্সাল, সেখানে কে চাকরি দিলো।’
‘আছে আছে অনেক আছে। আমার ডিমাণ্ড তো জানো না ...।’
‘তাই নাকি? তো আমি আমার ডিমান্ড যাচাই করে দেখবো নাকি একবার?’
‘লাত্থি মারবো, অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকালে না...।’
‘বাহ আমি কেন তাকাবো, আমার দিকেই তো তাকায় ...।’
‘তুমি না দেখলে কি করে বোঝো যে তোমার দিকে তাকাচ্ছে।’
‘সেটা কাউকে বলে দিতে হয় নাকি? সেটা এমনিতেই বোঝা যায়।’
‘মেরে ফেলবো কিন্তু...’
‘বারে এই তো তুমি চ্যালেঞ্জ দিলে, যে তোমার অনেক ডিমান্ড।’
‘ইয়ার্কিও বোঝো না।’
‘ও তার মানে চাকরির ব্যাপারটাও ইয়ার্কি।’
‘এই শোনো না শোনো না’
‘শুনছি তো।’
‘আমাদের কলেজের প্রেসিডেণ্টের ছেলে ভালো গিটার বাজায়, ওদের সুত্রেই নেতাজি ইন্ডোর ভাড়া পাওয়া গেছে সস্তায়। গুপ্তা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের নাম শুনেছো?’
‘হ্যাঁ, আমরা তো ওদের অডিট করি।’
‘হ্যাঁ, ওদের কোম্পানি, খুব বড়।’
‘তো তোমাকে হঠাত চাকরি দিতে যাচ্ছে কেন?’
‘আরে না রাজু স্যার আজকে রিহার্সাল দেখতে এসেছিলো। আমি লিড করছি দেখে, আমার সাথে অনেক গল্প করলো। এই ধরো আমার দাদাদের থেকে একটু বড় হবে। কালো একটা শেরোয়ানি পরে এসেছিলো। মনে হয় একটু দোষ আছে। যে ভাবে দেখছিলো আমাকে। খারাপ ভাবে না কিন্তু মনে হচ্ছিলো প্রপোজ করে দেবে।’
‘যাক তুমি বুঝেছো তাহলে। তো তোমার কি ইচ্ছে, বড়লোকের ছেলে, বাড়ি গাড়ি চাকর বাকর সব আছে, রাজরানি করে রাখবে।’ বলতে বলতে বেশ রাগই হোলো।
‘বুঝবো না মেয়েরা সব বোঝে। আমার ওসবে কোন লোভ নেই, সেতো তোমারও আছে।’
‘তো আমাকে কি রকম বোঝো।’
‘তুমি বদ, আমাকে বাচ্চা পেয়ে কি কি না করেছো।’
‘ও আমি বদ হয়ে গেলাম আর তুমি বাচ্চা হয়ে গেলে তাই না। সত্যি... বেশ তো পা গুঁটিয়ে আরাম নিচ্ছিলে যখন বদামো করছিলাম।’
‘ছারোনা, শোনো না।’
‘আরে শুনছি তো।’
‘মালটা ভালো গিটার বাজায় বলে মায়া ম্যাডাম গিটার বাজিয়ে শোনাতে বললো। আর জানোতো, আশিকির সেই থিম মিউজিকটা আছে না, সাঁসো কি জরুরত হ্যায় য্যায়সে... সেটা বাজালো, আর আমার দিকে কি ভাবে দেখছে, বলে বোঝাতে পারবোনা। যেন আমার উদ্দেশ্যেই গানটা গিটারে বাজাচ্ছে। বাজানো শেষ করে আমাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলো কেমন বাজালো ও। আমি তো ভালো বললাম। ভালোতো বলতেই হবে। তারপর থেকে আমি যেখানে ওই মালও সেখানে। মাঝে মাঝে রাগ উঠে যাচ্ছিলো। এমন কী বাড়ি থেকে আলুরদম আর লুচি নিয়ে গেছি টিফিনে, খাচ্ছি যখন সেখানেও হাজির। বলেই দিলো একদিন বাড়িতে এসে মায়ের হাতের আলুরদম আর লুচি খাবে। ফোন নাম্বার চেয়েছিলো, আমি কোনোরকমে কাটিয়েছি, ফোন নাম্বার দিয়ে মরি আরকি। মনামি তো আমার পিছনে লাগা শুরু করে দিয়েছে। আমি মনে মনে ভাবছি শালা তুই যদি আমারটাকে দেখতি...। তুমি ওকে দেখলে তো মেরেই দিতে।’
‘তো এত বুঝলে তো ও চাকরির অফার দিলো কেন?’
‘ওদের অফিসে নাকি অফিস আসিস্টান্ট দরকার, ভালো লিডারশিপ কোয়ালিটি দরকার। আমার মধ্যে ও নাকি সেই গুন দেখেছে। মায়া ম্যাডামকে দিয়েই বলিয়েছে, মায়া ম্যাডাম তো আমাকে কংগ্রাচুলেশান পর্যন্ত জানিয়ে গেলো।’
‘গুন দেখেছে না অন্যকিছু, তোমার কথা শুনে তো মনে হচ্ছে তুমি বেশ ঢলে পরেছো।’ আমি সিরিয়াসলি তুলিকে বললাম।
‘আচ্ছা তুমি কেমন বলতো। তুমি আমাকে একদম বন্ধুর মত দেখোনা। তোমার সাথে বন্ধুর মত কথা বলা যায়না। এই কথাগুলো কি আমি আর কাউকে বলছি। সত্যি তুমি না।’
‘আমার জায়গায় তুমি হলে কি করতে।’
‘আমি কি ওর দিকে ঢলে পরেছি বলে মনে হচ্ছে? ভাবছিলাম একটা কাজ তো করতে হবে কলেজ থেকে বেরিয়ে, তাই এই চাকরিটা করতাম, আর অভিজ্ঞতা হয়ে গেলে ছেড়ে দিতাম।’
‘কি দরকার তোমার চাকরি করার? সামনের বছর তো বিয়ে করে নেবো।’
‘বারে তুমি এরকম কথা বলছো? আমি তো ভাবছিলাম তুমি খুশি হবে। আজকের দিনে মেয়েরা চাকরি করবে সেটা আর এমন কি কথা।’
‘তুলি, এত কথা বলার পরেও তুমি যদি এরকম করো তো আমার আর কিছু করার নেই।’
‘তুমি এরকম ভাবছো কেন। ও হ্যাংলামি করছে করুক না, আমি তো ঠিক আছি। আমি কি ওর দিকে ঢলে পরেছি নাকি। তুমি আমাকে কি ভাবো বলতো? কত ছেলেই তো এরকম করে।’
‘আমার এরকম কিছু হলে তুমি ঠিক এইভাবে মেনে নিতে পারতে। এরকম বারবার করে সমস্যা খাড়া করলে, সমস্যা সামলাতে সামলাতেই জীবন কেটে যাবে। এই কদিন আগে কত ঝগড়া হোলো দুজনের, তাও তুমি যে কি করে এরকম চিন্তাভাবনা করো আমি বুঝতে পারিনা। তুমি কবে ভালোমন্দ বুঝে কাজ করবে সেই অপেক্ষা করতে করতে আমার জীবন শেষ হয়ে যাবে।’
এই ভাবে বলছো কেন? তোমার সমস্যা কোথায়, ওই ছেলেটা না চাকরিটা।’
‘দুটোই। আমি জানি এই জিনিস পরবর্তি কালে বেড়ে যাবে। আমার মনেও খুঁতখুঁত থেকে যাবে। শুধু শুধু কেন নিজেদের মধ্যে সন্দেহ আনতে চাইছো।’
‘আচ্ছা আমি যদি অন্য কোথাও চাকরি পাই?’
‘সেটা ভেবে দেখবো। কিন্তু যাই হোক না কেন নিয়ের পরে কিন্তু তুমি চাকরি করতে পারবেনা। মা বাবা কিন্তু মেনে নেবে না। একবার কিন্তু ওদের মনে একটা দাগ পরেছে। আবার এরকম হলে কিন্তু...। এর থেকে তুমি বলো, যে তুমি নাচের কলেজ খুলবে, বিউটি পারলার খুলবে, আমি সমস্ত টাকাপয়সা খরচ করবো।’
‘বাবা কি হিংসে, আচ্ছা বাবা আচ্ছা। হুলোটা কেমন আছে।’
কি করে বলি ওকে যে হুলোটা ওদের বাড়ির বড় বেড়ালটাকে আদর করেছে আজকে। তবুও মুখে বললাম ‘উফ ব্যাথা করছে গোঁ তোমার পুসিটার কথা ভেবে, কতদিন পুসিটা এটাকে আদর করেনি।’
ফোনটা রাখার পরে মনটা খঁচ খঁচ করতে শুরু করলো। তুলির মাকে বলতে হবে। না থাক দেখিই না তুলি নিজে কি করে। এখন আবার দুম করে তুলির মা যদি সুর পালটায় তো তুলি অন্যরকম ভাবতে পারে। কিন্তু আমার চিন্তা তুলির থেকেও সেই রাজু স্যারকে নিয়ে। এই ধরনের গিটার বাজিয়েরা বেশ মাগিবাজ হয়। চিপকু টাইপের হয়। ফোন নাম্বার পেতে আর কতক্ষন। এ তো এবার তুলির জন্যে বারবার আসবে। শালা শান্তিতে আর থাকতে পারবো না।
চিন্তা করতে করতেই আবার ফোন বেজে উঠলো। মিলু মানে বিজয়ার মা। এত রাতে আবার কি হোলো। ব্রেন টিউমার কি এত তাড়াতাড়ি সারে নাকি?
-কি ব্যাপার এত রাতে।
-এত রাত কোথায়, মাত্র তো পৌনে এগারোটা বাজে।
-তাও ...
- কেন কথা বলতে ইচ্ছে করছে না।
-না না সেরকম কেন?
-না মনে হয় তো ইচ্ছে করছেনা।
-আরে তুমি না বড় হেয়ালি করো। খোলাখুলি বলো না।
-সেদিন এত কথা বললে আর আজকে আরেকজনের সাথে দেখলাম।
এইরে দেখেছে নাকি? কি করে, শালা তুলির মাও এত ধুমকিতে ছিলো যে একা ছাড়তে ঠিক সাহস হচ্ছিলো না, তাই আমি ট্যাক্সি করে বড় রাস্তায় ছেড়ে দিয়ে ওর পিছে পিছে আসছিলাম। মালটা বারবার করে ঘুরে ঘুরে আমার দিকে দেখছিলো আর দাড়িয়ে পরে কথা বলছিলো।
-ওঃ এই ব্যাপার। দেখলে মানে? দেখেছো তো কি হয়েছে।
-ওর সাথে দেখলাম বলেই বলছি।
-কার কথা বলছো বলতো? আমি জেনেশুনেই ইচ্ছে করে জিজ্ঞেস করলাম। দুজন তো একই ডালের পাখি।
-কেন তুমি যে ঝর্না বৌদির সাথে যাচ্ছিলে।
-আরে দূর ও তো আমার বাবার বন্ধুর বৌ। ওরা আমাদের বাড়িতেও তো আসে। দেখার কি হোলো। কি উল্টোপাল্টা বলছো।
-ঢপ দিচ্ছো তাই না। আমি কিন্তু সব খবর বের করে নেবো।
-ঢপ দেবো কেন? আমাকে দেখে মনে হয় আমি ঢপ দি?
-কি জানে সেদিন থেকে মনে হচ্ছে, যে তুমি আমাকে এড়িয়ে গেলে।
-নানা এড়িয়ে যাবো কেন? আচ্ছা বলত তুমি আর আমি যেভাবে করেছি সেরকম ভাবে কোন ছেলে পেলে কি তোমাকে ছেড়ে থাকতে পারতো।
-আবার বলছো তোমাদের বাড়িতেও যায়। তুমি যানোনা কি মাল ও। বিজয়ার মার মনে তুলির মার প্রভাব ভালোই পরেছে বুঝতে পারছি।
-কেন?
-আরে একদম রেন্ডি। সাবধানে থাকবে। যেখানে নিয়ে গেছিলাম তোমাকে সেখানের ও রেগুলার মাল।
মনে মনে ভাবছি এক রেন্ডি আরেক রেন্ডির নিন্দা করছে। তফাৎ কোথায় না একজন গলিতে রেগুলার আর একজন বাড়িতে রেগুলার।
-ওরে বাবা তাই নাকি, আগে জানলে তো কোনোদিন জেতাম না। ছারো আর তো যাচ্ছিনা। ধুর আমার এসবে ইন্টারেস্ট নেই। আমার মার খুব ইচ্ছে ওর মেয়ের সাথে আমার বিয়ে হোক। কিন্তু আমি চাই না। এরকম রোগ নিয়ে কেউ বিয়ে থা করতে পারে।
-তোমার সাথে ও। ওই রুগ্ন বাশের মত লম্বা মেয়েটাকে মানায় তোমার মত সুপুরুষের সাথে।
ঝাঁটটা জ্বলে যাচ্ছে। কিন্তু হেসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করছি।
-ধুর আমি ভালো করে দেখিও নি, ওকে, তুলি না কি যেন নাম মেয়েটার।
-আমি একটা কথা বলবো?
-কি?
-তুমি বিজয়াকে বিয়ে করো। খুব ভাল মেয়ে আমার। আমি তোমার রোগের কথাও ওকে বলে দেবো। ও আপত্তি করবে না দেখো।
-এটা হয় নাকি? তোমার সাথে এরকম রিলেশানের পরে মেয়ের সাথে বিয়ে? ভগবান পাপ দেবে। ছিঃ
-ধুর তুমি বড্ড ভালো ছেলে। বিজয়ার সাথে তোমার বিয়ে হলে আমি আর তুমি কাছাকাছি থাকতে পারবো সবসময়। সময় সুযোগ পেলে...।
-ছিঃ মা হয়ে এরকম ভাবলে কি করে? নিজের মেয়ের জামাইয়ের সাথে? শোন কোনকিছু চিরকাল গোপন থাকেনা। যেদিন জানতে পারবে ও তোমার আর আমার অবস্থা কি হবে বলোতো। আর ও তো গলায় দরি দেবে।
-বাবা বাবা। কত ভাবে ছেলে। ঠিক আছে। বিয়ের পরে আর কিছু করবো না আমরা। বিয়ের আগে পর্যন্ত তো আদর করবে তো? এখনই তো আমি তোমার শাশুড়ি হচ্ছি না।
মাথাটা গরম হয়ে গেলো।
-কি ব্যাপার বলো তো? তোমার ইচ্ছে হোলো আর বলে দিলে, আর আমাকে সেটা পালন করতেই হবে নাকি?
-রাগ করলে।
-এখন রাখো, আমার ঘুম পেয়েছে।
আমি ফোনটা সশব্দে রেখে দিলাম। শালি রেন্ডি। মান না মান ম্যায় তেরি মেহমান।