03-04-2025, 04:13 PM
পর্ব ৩৯
সমীরের চাকরি গ্যাছে বহুদিন হলো। ডাক্তারের পরামর্শে যদিও সে সুস্থ হয়ে উঠছে তবে এখনও নিজের পায়ে জোর দিয়ে দাঁড়াতে পারেনা। এদিকে জমানো টাকা প্রায় শেষের পথে। বলেনা কলসির জল গড়াতে গড়াতে একসময় শেষ হয়ে আসে। অভিজাত মল্লিকবাড়ির অবস্থা সেরকম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। অনুরিমা ভাবলো এই মুহূর্তে তাকেই হাল ধরতে হবে। সমীরের সুস্থ হওয়ার অপেক্ষায় আর বসে থাকলে চলবে না।
অনুরিমাও যথেষ্ট শিক্ষিত ছিল, তাই চেষ্টা করলে কোনো একটা কিছু জোগাড় হয়ে যাওয়ার আশা থাকেই। প্রাথমিকভাবে সমীর কিছুটা আপত্তি জানালেও সে জানতো আর কোনো উপায়ও তো নেই। বাবা মা বুড়ো হয়েছে, তিন্নি বড়ো হচ্ছে, তার নিজের চিকিৎসার খরচাও রয়েছে। বাঁধা দেবেই বা কোন জোরে? Fragile masculinity দিয়ে তো আর সংসার চলবে না।
![[Image: 426701298-17974491881655708-9200942319571565279-n.jpg]](https://i.ibb.co/QvWWzgkX/426701298-17974491881655708-9200942319571565279-n.jpg)
সমীর ও অনুরিমা - সমীনু
অনুরিমা সেইমতো বাড়ির গুরুজনেদের থেকে অনুমতি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিল চাকরির খোঁজে। অনেক জায়গায় চেষ্টা করলো, কিন্তু সবাই চায় কম বয়সী ফ্রেশার্স বা এক্সপিরিয়েন্সড কাউকে। ত্রিশোর্ধ অনুরিমার না ছিল যৌবনকালের বয়স না ছিল ওয়ার্ক এক্সপিরিয়েন্সড। তাহলে সে যাবে কোথায়? অগত্যা মনে পড়লো তার বান্ধবীর কথা, সুচরিতা। সে সুচরিতার সাথে যোগাযোগ করলো। দুজনে একদিন একটা ক্যাফেতে দেখা করলো। অনুরিমা সুচরিতাকে খুলে বললো সব কথা। সেসব শুনে সুচরিতা তখন তাকে আদিত্যর সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিলো।
সুচরিতা অনুরিমাকে জানায় যে আদিত্য এখন সেক্টর ফাইভের একটা বড়ো কোম্পানিতে as an executive manager হিসেবে জয়েন করেছে। আইটি সেক্টরে কাজ করার দরুন আদিত্যর অনেক জানা শোনা থাকতে পারে। সুচরিতার স্থির বিশ্বাস তার এক্স নিশ্চই অনুরিমার কোনো সাহায্য করে দিতে পারবে। হয়তো সে নিজের কোম্পানিতেই অনুরিমাকে হায়ার করে নেবে।
কিন্তু শেষমেশ সেই আদিত্য সেনগুপ্ত? যার সাথে কবেই অনুরিমা যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে, সেই দূর্ঘটনাময় ঘনিষ্ঠতাক ভুলে যাওয়ার জন্য। তার কাছে কি করে যাবে সে? খুব স্বার্থপর লাগবে তাকে। তাই অনুরিমা সুচরিতাকে অনুরোধ করতে লাগলো তাকে অন্য কোথাও কাজের খোঁজ দিতে। সুচরিতা বুঝতে পারছিলোনা কেন অনুরিমার এত আপত্তি আদিত্যর থেকে হেল্প নিতে? আসলে কয়েকমাস আগে ঘটে যাওয়া অনুরিমার ও আদিত্যর মধ্যেকার সেই দূর্বল মুহূর্তগুলোর কথা সুচরিতা জানতো না। না আদিত্য তাকে বলেছিলো আর না অনুরিমার বলার কোনো প্রশ্ন ছিল।
![[Image: 271936187-695312698294111-4518676621319867873-n.jpg]](https://i.ibb.co/DHxvBHWn/271936187-695312698294111-4518676621319867873-n.jpg)
অনুরিমা ও আদিত্য
সুচরিতা অনুরিমাকে পারসিস্ট করতে লাগলো আদিত্যর কাছে যাওয়ার জন্য চাকরির কারণে। সে তার বান্ধবীকে স্পষ্ট জানিয়ে দিলো তার কাছে আর কোনো আইডিয়া নেই আদিত্যর কাছে অনুরিমাকে পাঠানোর ছাড়া। এতে না পোষালে সুচরিতার আর কোনো কিছু করার নেই। সে নিজে যেখানে কাজ করে সেখানে তার অতো জোর খাটেনা। সুচরিতা নিজেই তার চাকরি বাঁচানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে, তাহলে সে কি করে অনুরিমার কোনো ব্যবস্থা করে দেবে নিজের অফিসে?
অফিস থিয়েটার দু'দিক সামলাতে গিয়ে সুচরিতা হিমশিম খাচ্ছে। তাই অফিসের কাজে গাফিলতিও হচ্ছে তার দ্বারা। সুতরাং সুচরিতার এখন প্রধান লক্ষ্য অফিসের তার ঠারকি বসের মন জুগিয়ে চলা। নাহঃ, শরীরের চুক্তি করতে হয়না, তবে একপ্রকার অফিসের টেম্পোরারি বউ হয়ে সব খেয়াল রাখতে হয় তাকে। যেমন সময়ে সময়ে বসের মুখের সামনে সিগারেট, চা ধরিয়ে দেওয়া, কখনো সখনো মাথা টিপে দেওয়া, বাইরে কোথাও থেকে মিটিং সেরে অফিসে এলে আদর করে স্যারের কপালের ঘাম মুছিয়ে দেওয়া।
হায় রে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ওমেন, সংসার ছেড়ে মুক্তির খোঁজে কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডে আসা তোমার স্বাধীনতা কত আপোষের মধ্যে দিয়ে নিজেকে উদযাপন করে। সুচরিতা চায়না, তার বসের কাছে অনুরিমার নাম সুপারিশ করে ওকে এই নর্দমায় টেনে আনতে। নো ডাউট অনুরিমা তার থেকে অনেক অনেক বেশি সুন্দরী, তাকে দেখলে তার ওড়িয়া বস জিতিন মহাপাত্র স্যার আরো বেশি এক্সপ্লইটেটিভ হয়ে যাবে, অনুরিমার মতো নরম স্বভাবের মেয়ে সেই এক্সপ্লয়টেশন নিতে পারবেনা।
তুলনামূলক ভাবে আদিত্যর কাছে পাঠালে অনুরিমা বেশি সিকিউরড্ থাকবে। যদিও সব কর্পোরেট অফিসেই মোর ওর লেস মেয়েদের একই হাল, তবু আদিত্য থাকায় অনুরিমা যথেষ্ট ভরসা পাবে। যতই হোক, তার প্রাক্তন স্বামী মানুষ হিসেবে যে খুব ভালো। আচ্ছা তাহলে কি সে নিজে আদিত্যর কাছে যেতে পারতো না? ওর অফিসেই চাকরি করতে পারতো না? নাহঃ! কারণ একদিন যে স্বাধীনতার খোঁজে সুচরিতা নিজের পরিচয় নিজে তৈরী করার তাগিদে আদিত্যর ঘর ছেড়েছিলো, তারই কাছে ফের আশ্রয় চাইতে যাবে কোন মুখে? তাহলে তো সেটা একপ্রকার পরাজয় যা সুচরিতার জাত্যাভিমান কিছুতেই মেনে নিতে পারবে না।
সুচরিতা থিয়েটারও করে, কিন্তু সেখানে সে অনুরিমার জন্য কিই বা চাকরির ব্যবস্থা করবে? হ্যাঁ, যদি বলতো সে অভিনয় করতে চায়, তাহলে একবাক্যেই তার রূপ দেখে টলিপাড়ার ডিরেক্টররা তাকে কাস্ট করে নিতো। কিন্তু অনুরিমার শশুরবাড়ি যা গোঁড়া তাতে তারা না খেতে পেয়ে মরে যাবে কিন্তু নিজের বাড়ির বউকে সিনেমাতে নামাবে না।
![[Image: 242111193-242783174519770-8026309988498115789-n.jpg]](https://i.ibb.co/QjYtHQ5X/242111193-242783174519770-8026309988498115789-n.jpg)
অনুরিমা বসু মল্লিক

![[Image: 401190281-327042616724288-1110227727468706144-n.jpg]](https://i.ibb.co/Y7JVrh6n/401190281-327042616724288-1110227727468706144-n.jpg)
তাই সুচরিতা অনুরিমাকে বুঝিয়ে বললো, "দেখ অনু, আমার কথাটা প্লিজ শোন্। আমি আদিত্যকে বলছি, তুই ওর অফিসে গিয়ে দেখা কর। ও নিশ্চই তোর একটা ব্যবস্থা করে দেবে। এর থেকে ভালো উপায় আর কিচ্ছু হয়না। আমার প্রাক্তন হয়েও বলছি, আদিত্য সত্যিই খুব ভালো ছেলে।"
"কিন্তু ওর কাছে কি মুখ নিয়ে দাঁড়াবো আমি? আমি তো.....", বলেই অনুরিমা থেমে গেলো।
"আমি তো.... কি?"
"কিছুনা..... আসলে আমি তো ওর সাথে কোনো যোগাযোগ রাখিনি। ও মাঝে মাঝেই আমাকে ফেসবুকে ম্যাসেজ করতো, নরম্যাল ম্যাসেজ। কিন্তু আমি কোনো রিপ্লাই করতাম না। তাই সেও যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিলো। এখন যদি ওর কাছেই চাকরি চাইতে যাই তাহলে ব্যাপারটা কিরকম দেখায় না! ও কি ভাববে, কতটা স্বার্থপর মহিলা আমি। আজ দরকারে ওর কাছে এসছি, তখন পাত্তাও দিইনি। ....."
আংশিক সত্যি বলে থামলো অনুরিমা। যোগাযোগ তো বন্ধ ছিল কিন্তু তার কারণ ছিল অন্য। সেই বৃষ্টিভেজা বিকেলের মনোরম মিলনকে অনুরিমা নিজের স্মৃতি থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিলো। তাই আদিত্যকে যোগাযোগ রাখতে বারণ করেছিলো। এখন তারই মুখাপেক্ষী হতে হবে অনুরিমাকে?? শুধু যে স্বার্থপর লাগবে নিজেকে সেই কারণে নয়, আবার যদি আদিত্যর সামনে সে কোনো এক দূর্বল মুহূর্তে দূর্বল হয়ে গিয়ে অঘটন ঘটিয়ে ফেলে, সেই ভয়টাও সমানভাবে অনুরিমার মনে কাজ করছিলো। সে যে সমীরকে কথা দিয়েছে, পুরোনো সবকিছু ভুলে তারা নতুন করে জীবন শুরু করবে, যেখানে আদিত্য, ডাক্তার রাজীব বা রাকিব কেউই থাকবে না, তাহলে ফের কেন ভাগ্য তাকে সেই তিনপুরুষের মধ্যে এক পুরুষের কাছে আবার ফিরিয়ে আনছে? কেন?
![[Image: Capture12a.png]](https://i.ibb.co/G3k4kpQs/Capture12a.png)
আদিত্য + অনুরিমা = আদিনু
এসব কিছু থেকে অজ্ঞাত সুচরিতা অনুরিমাকে বলতে লাগলো যে আদিত্য অত কুটিল মানসিকতার ছেলেই নয়। আদিত্য জানে অনুরিমা বিবাহিতা, ফলে ওর পক্ষে অন্য কোনো পুরুষের সাথে খাঁটি বন্ধুত্ত্ব রাখাও দুস্কর! সুচরিতা নিশ্চিত ছিল যে আদিত্য পুরো বিষয়টাকে সেভাবে দেখবেই না যেভাবে অনুরিমা কল্পনা করছে। অনুরিমাকে স্বার্থপর ভাববে না সে।
অনুরিমাকে সুচরিতা আরো জানায় যে অনুরিমা তাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ার পরও তাদের মধ্যে অনুরিমাকে নিয়ে প্রায়ই কথা হতো।..... অনুরিমা অবাক পানে সুচরিতার দিকে চেয়ে জানতে চাইলো কি এমন কথা হতো তাকে নিয়ে?
উত্তরে সুচরিতা বললো, "এমনিই, কোনো সিরিয়াস বিষয় নিয়ে নয়। Actually Aditya was concerned for you because of Somir's fantasy.... তাই মাঝে মাঝেই তোর হাল-হকিকত জানতে চাইতো। আমি বলতাম ওর মতো আমার সাথেও তুই আর যোগাযোগ রাখিস না। ডক্টর রাজীবের সাথে কনসাল্ট করাও ছেড়ে দিয়েছিস। শেষবার তোর বলা কথাগুলো অনুযায়ী you and Somir overcome that situation and Somir was starting to focus on the married life by forgetting his fantasy.. আমিও তাই সেইসব বিষয় নিয়ে তোকে আর বেশি ঘাটাইনি। If everything was ok between you and your husband, then why I need to bother.... তারপরও আদিত্য তোর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতো কিন্তু কোনো সদুত্তর পেতোনা আমার কাছ থেকে, কারণ আমার কাছে তোকে নিয়ে আর কোনো প্রপার ইনফরমেশন থাকতো না।..যদিও ও ইনসিস্ট করতো আমাকে তোর খোঁজ নেওয়ার জন্য কিন্তু আমি অপেক্ষা করছিলাম আবার তোর থেকে প্রথম কলটা আসার।.. বাট আমি বুঝতে পারিনি এরই মধ্যে তোর জীবনে এত প্রবলেম এসে যাবে, সমীরের অ্যাক্সিডেন্ট, ওর জব চলে যাওয়া, তোদের ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইসিস। তুই তো আরো আগে যোগাযোগ করতে পারতিস রে।...."
"সরি রে, আমার কোনো উপায় ছিলোনা। সমীরের অ্যাক্সিডেন্ট এর পর আমি আমার শশুরবাড়িতে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলাম। বিশেষ করে আমার শাশুড়ি মা আমার উপর literally মানসিক নির্যাতন করা শুরু করেছিলো। কারণ নাকি আমিই দায়ী এসব কিছুর জন্য। এখন অনেক দিন পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে বলে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে তোর সাথে দেখা করতে পেরেছি।"
"এইজন্যই মাঝে মাঝে মনে হয়, ডিভোর্স দেওয়াটা আমার জীবনের বেস্ট ডিসিশন ছিল। বিশেষ করে যখন তোকে দেখি....."
"কিন্তু সমীর কোনো দোষারোপ করেনি। সে যতটা সম্ভব আমাকে সাপোর্ট করেছে।"
"সে তো আমার সংসারে আমার স্বামী আদিত্যর মধ্যেও কোনো সমস্যা ছিলোনা, he is still a gem.. কিন্তু আমাদের মেয়েদের ক্ষেত্রে সংসার তো শুধু স্বামীকে কেন্দ্র করে গঠিত হয়না। পারিপার্শ্বিক মানুষ গুলো যদি ঠিক না থাকে তাহলে সংসার টিকিয়ে রাখা খুব মুশকিল।"
"তো তুই কি বলতে চাইছিস, এই খারাপ সময়ে আমি সমীরকে ছেড়ে চলে যাবো জাস্ট বিকজ আমার শাশুড়ি মা আমার সাথে ভালো ব্যবহার করেনা তাই!!"
"নাহঃ, আমি শুধু বলছি be a girl of your own terms.. এখন সংসারটা তোর উপর নির্ভরশীল। তাই অন্য আর কারোর ক্ষেত্রে না হলেও অন্তত নিজের ব্যাপারের সব সিদ্ধান্ত নিজে নিবি, কাউকে ইন্টারফেয়ার করতে দিবিনা। কোথায় চাকরি করবি, কি চাকরি করবি সেটা ঠিক করার অধিকার শুধু তোর, তুই চাইলে আমার সাথে থিয়েটারও করতে পারিস। তুই দেখতে খুব সুন্দরী, থিয়েটার করতে করতে কোনো পরিচালকের নজরে চলে এলে ভালো অভিনেত্রীও হতে পারিস।...."
![[Image: 367397746-276996575062226-6802996090324080565-n.jpg]](https://i.ibb.co/Z6Jh4ZYH/367397746-276996575062226-6802996090324080565-n.jpg)
"অভিনেত্রী, তাও আবার আমি?? পাগল!!"
"আমার যেটা ভালো মনে হলো আমি বললাম, বাকি তোর ডিসিশন।"
"হুমঃ!.... আচ্ছা আর কি কিছু কথা হতো তোর আর আদিত্যর মধ্যে, আমাকে নিয়ে? তুই আমাকে নির্দ্বিধায়ে বলতে পারিস।...."
"নাহঃ, কিন্তু তুই এত টেন্সড হয়ে জিজ্ঞেস করছিস কেন? হ্যাঁ রে, তোর আর আদিত্যর মধ্যে কি কোনো সিক্রেট আছে যেটা তুই চাইছিসনা আমি জেনে ফেলি? হি হি হি হি...."
মজার ছলে হলেও সুচরিতা সঠিক কথা বলেছিলো। আর সত্যিই অনুরিমাকে সেইজন্যই টেন্সড দেখাচ্ছিলো, পাছে তার বান্ধবীকে আদিত্য সব বলে দেয়নি তো! কিন্তু না, সুচরিতার মজা করার ছলে কথাটা বলার ভঙ্গি দেখে অনুরিমা বুঝলো সত্যিই সুচরিতা কিছু জানেনা। সে আদিত্যর সাথে যোগাযোগ ভঙ্গ করলেও আদিত্য তার বিশ্বাস ভাঙেনি।
তবু সে কপালের ঘাম মুছতে মুছতে সুচরিতার কথা বিরক্তির সাথে উড়িয়ে বললো, "ধ্যাৎ! তোর না সব বিষয়ে খালি মজা করার স্বভাব। দেখছিস আমি কিরকম বিপদে রয়েছি, তাতেও তুই মজা করার একটাও সুযোগ ছাড়িস না।"
অনুরিমাকে কারণে-অকারণে ঘাবড়ে যেতে দেখলেই সুচরিতার মজা করার প্রবণতা দ্বিগুন বেড়ে যায়, সেই কলেজ জীবন থেকেই। তা যতই পরিস্থিতি প্রতিকুল হোক না কেন।.....
"আরে আমি তো শুধু তোর মুডটা লাইট করার জন্য মজা করে থাকি। তুই তো জানিস আমার নেচার। আমার এই প্রিয় বান্ধবীটাকে সময়ে অসময়ে উত্যক্ত করতে আমার বেশ ভালোই লাগে। বাই দা ওয়ে, তুই চাইলে আদিত্যর সাথে প্রেম করতেই পারিস, আমার তাতে কোনো আপত্তি নেই। এমনিতেও সে তোর নামে অর্ধেক জল বেশি খায়!"
"মানে?"
"মানে হলো, তুই যোগাযোগ না রাখলেও আদিত্য তোর প্রশংসা করে করে হাঁপায়না। কি যে জাদু করেছিস ওর উপর কে জানে! তাই তো বলছি ওকে বললে তোর সব প্রবলেম তুড়ি মেরে সল্ভ হয়ে যাবে। He is literally your biggest admirer, তাই এই সুযোগটা কে কাজে লাগা।"
"আমি ওরকম সুযোগসন্ধানী হতে পারবো না।"
"আরে আমি কি তোকে আদিত্যকে এক্সপ্লয়েট বা ওর ভালোমানুষির ফায়দা তোলার কথা বলছি? আমি শুধু বলছি যে তোকে আমি আদিত্যর সাথে আবার কন্ট্যাক্ট করিয়ে দেব। ওকে বললে ও তখন তোর জন্য ভালো একটা চাকরি জোগাড় করে দেবে। তুই মন দিয়ে চাকরি করে সংসারের জন্য টাকা রোজগার করবি, তোর সব দুঃখ, অভাব-অনটন কেটে যাবে। ব্যাস! এতে সুযোগসন্ধানী হওয়ার কি আছে? তুই না প্রয়োজনের থেকে বড্ডবেশি ভালোমানুষী দেখাস। এখন তোর কাছে সবচেয়ে বেশি কি প্রায়োরিটি হওয়া দরকার, তোর সো কল্ড আত্মসম্মানবোধ নাকি তোর পরিবারের ভবিষ্যৎ?......."