31-12-2018, 04:31 PM
ঘরে ঢুকে আবার একটা সিগেরেট ধরিয়ে সোফায় বসে টিভি চালিয়ে দিলাম। কিছুই দেখছি না কিন্তু চলমান ছবিগুলো আমার নতুন কির্তি স্থাপনের উচ্ছাসের সাক্ষী যেন।
মনটা ফুর ফুর করছে। ফুঃ তুলি। নিজেই নিজের খুসির কারনগুলো ব্যাখ্যা করতে শুরু করলাম। কেন এত ভাল লাগছে। পরপর সাজালে এরকম দাড়ায়।
১। তুলির প্রভাব মন থেকে কমে গেছে। এখন তুলিকে নিয়ে ভাবছিনা। যেটা অনেক দুঃখ, বিরহের মধ্যে দিয়ে সময়ের সাথে সাথে আমাকে অর্জন করতে হোতো, সেটা অতি দ্রুত পেয়ে গেলাম।
২। তুলি এখন কারো সাথে সেক্স করলেও আমার কিছু যায় আসেনা। কারন যে ওকে করবে সে আমার এঁঠো করা মাল পাবে। আর আমি মুক্ত বিহঙ্গ, যা খুশি, যে নৌকায় খুশি চরতে পারি। তুলি একজনের সাথে করলে আমার কাছে দশজনের বিকল্প আছে।
৩। আমি রিতিমত সক্ষম। অতিরিক্ত উত্তেজনার বশে প্রথমবার দ্রুত বির্যপাত পুরুষদের খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। আর আমি প্রায় চল্লিশ মিনিট করেছি হয়তো আরো অনেকক্ষন করতে পারতাম। লোকের মুখে শুনেছি দশ পনের মিনিট করতে পারায় যথেষ্ট।
৪। একবার বির্যপাত হওয়ার পরেও আমার লিঙ্গ দৃঢ়তা হারায়নি।
৫। পিছন মারাতে অভিজ্ঞ একজনকে পেয়েছি, যাকে চাইলেই পিছন দিয়ে করতে পারি।
৬। তুলি অন্যকারো সাথে করছে, সেটা জোর করে মনে এনেও মন খারাপ হয়নি, রাগ হয়নি, হিংসে হয়নি।
আর স্লিপিং পিলস লাগলো না, চিন্তাহীন মনে ঘুমিয়ে পরলাম।
কয়েকদিন এই খুশির জের রইলো। তুলির চিন্তা আর আমাকে বিব্রত করছে না। একবারের জন্যেও মনে হয়নি যে তুলির বাড়িতে ফোন করি বা ওর সাথে কথা বলি। ওদিক থেকেও আমার খোঁজ খবরের নেওয়ার কোন লক্ষনই নেই। যাক গে, আমার হয়তো দ্বিতীয় সবকিছুই ভালো হয়। দেখা যাক দ্বিতীয় কাউকে পাই নাকি জীবনে। প্রথম প্রেম তো কুড়িতেই ঝরে গেলো।
পরের দিন অফিস যাওয়ার পথে সিগেরেট কিনতে কিনতে হঠাৎ চোখ আটকে গেলো একটা দাড়িয়ে থাকা টাটা সুমোতে। দেখছি তুলি খুব সেজেগুজে আছে আর সেই গাড়িতে গিয়ে উঠলো। ও একাই আছে গাড়িতে, আর ড্রাইভার বসে আছে ড্রাইভার সিটে। গাড়িটা স্টার্ট দিয়ে বেরিয়ে গেলো আমার চোখের সামনে দিয়ে। তুলি আমাকে দেখতে পায়নি। সকাল নটা বাজে এখন। এরকম সেজেগুজে কোন কাজে যাচ্ছে?
আবার, আবার তুলি আমার মনে একরাশ প্রশ্ন তুলে দিয়ে চলে গেল। বাসের সিটে বসে ভাবছি। তুলি আমার সাথে কি জন্যে রিলেশান করলো? ওর কি একবারের জন্যেও মনে পরছেনা আমাকে। শুনেছি দশ পা একসাথে হাঁটলে শ্ত্রুও বন্ধু হয়ে যায়। তুলি আমার কেউ হোলো না? মানুষ কি করে এত নিষ্ঠুর আর নির্লিপ্ত হতে পারে। ওর একটুও মনে পরছেনা আমার কথা? একটুও মনে পরছেনা একসাথে কাটানো আমাদের সেই সুখের সময়গুলো। মনের মধ্যে সেই ঘুমিয়ে থাকা প্রশ্নগুলো তোলপার শুরু করেছে। আবার তুলি ছেঁয়ে ফেলেছে আমার মন।
অফিসে ঢুকে তাড়াতাড়ি নিজের কাজ শেষ করে নিয়ে আর কিছু কাজ জুনিয়র ছেলেদের বুঝিয়ে দিয়ে, তুলিদের বাড়ি ফোন করলাম। অনেকবার করার পরেও কেউ ফোন তুললো না। তুলির বাবাও কি নেই?
সারাদিনে অনেকবার ট্রাই করলাম। কিন্তু কেউ ফোন তুললো না। তাহলে কি ফোন খারাপ। বাড়িতে ঢুকেও অনেকবার চেষ্টা করলাম। কিন্তু সেই একই ভাবে নিরলস বেজে চলেছে।
রাত সারে এগারোটা নাগাদ আবার তুলিদের বাড়িতে ফোন করলাম। তুলি হাঁপাতে হাঁপাতে ফোন ধরলো। তুলির গলা শুনে বুকটা কেমন মুচড়ে উঠলো। কেমন যেন অস্থির মনটা শান্ত হোল।
‘হ্যালো’
‘আমি অভি বলছি?’
একটু চুপ করে থেকে ‘কি ব্যাপার এতদিন পরে আবার?’
‘তোমার প্রবলেম হচ্ছে তাই না?’
তুলি চুপ। মনে মনে ভাবছি কি বোকাচোদা আমি, আর কত সন্মান নষ্ট করবি নিজের। ও শুধু তোর মুখের ওপর বলছেনা ব্যাস। এরপরেও তুই এর পিছনে ঘুরছিস্*।
‘কি হোলো চুপ করে আছো যে?’
‘দ্যাখো অনেক অশান্তি হয়েছে তোমাকে নিয়ে, আমার ভালো লাগেনা এসব, প্লিজ তুমি আর ফোন কোরো না।’
‘সে ঠিক আছে, আর করবোনা, কিন্তু সেদিন আমি যে কথাগুলো বলেছি তুমি শুনেছিলে?’
‘কি কথা?’
‘এই রনি আর তোমার মার ব্যাপারে?’
‘না আমি শুনিনি আর শুনতেও চাইনা।’
‘কেন শুনতে চাওনা তুমি? তুমি কি ভাবো তোমার মা ধোয়া তুলসি পাতা?’
‘আমি কিছু ভাবিনা, আমি আর আমার মা দুজনেই ধোয়া তুলসি পাতা না, তুমি কেন আমাদের মাঝখানে নিজেকে জড়াচ্ছো?’ প্রায় মুখঝামটা দিয়ে বলে উঠলো তুলি।
‘সে তো তোমাকে আজকে সকালে দেখেই বুঝেছি, যেরকম সেজেগুজে বেরিয়েছিলে তাতে তোমাকে যে চিনবে সেই বলে দেবে তুমি কি করতে বেরিয়োছো? পেটে গুঁতালে তো ABCD বেরোবে না, কিন্তু এমন হাবভাব করে যাচ্ছো যেন জম্মোকম্মো পার্কস্ট্রিটে।’
একটু চুপ করে থেকে তুলি বললো ‘বুঝতেই তো পারছো তাহলে আর এত কথা বলছো কেন? আমরা এত খারাপ জেনেও তুমি কেন আমাদের পিছনে পরে রয়েছো?’
‘পিছনে পরে রয়েছি একটাই কারনে, বোঝার চেষ্টা করছি, কি করে তোমার মত মেয়েও আমার সাথে খেলে চলে গেলো?’
তুলি চুপ করে আছে, তুলির এই ঔদাসিন্যে আর তাচ্ছিল্লে আমার মাথার ট্রিগার অন হয়ে গেছে, তাই মুখ দিয়েই বোমা বেরোতে শুরু করলো ‘আমি ইচ্ছে করলে তোমাদের বাড়ি গিয়ে তোমাকে আর তোমার মাকে চুলের মুঠি ধরে বের করে এনে তোমার পাড়ার লোকজনের সামনে বলতে পারি যে তোমার আর আমার মধ্যে কি কি হয়েছে। আমার সাথে এরকম করার জন্যে আমি তোমাদের ফুল ফ্যামিলিকে পার্টি অফিসে ডাকাতে পারি। কিন্তু আমি সেসব চাই না। আমি কয়েকটা উত্তর চাই তোমার থেকে।’
তুলি চুপ।
‘কি হোলো শুনতে পাচ্ছো?’
‘হ্যাঁ বলো। কি জানতে চাও?’
‘ফোনে না সামনাসামনি কথা বলতে হবে, কালকে সকালে আমার সাথে চলো?’
‘কোথায়?’
‘কোনো হোটেলে যাবো, বিকেলের মধ্যে ফিরে আসবো?’
‘আমার কাজ আছে কালকে। কালকে হবেনা।’
‘কাজের গুলি মারি, কি কাজ করো সেটা ভালো করেই বুঝি, ওসব গল্প ছারো, আসবে কিনা বলো? এখন থেকে আমি যখনই ডাকবো আসতে হবে। সে যে কারনেই হোক, নাহলে বুঝতেই পারছো... তুমি আর তোমার মা যা করেছো আমার সাথে সেসব আমি কোনোদিন ভুলবোনা। পাপ্পু আমাকে অনেকবার সাবধান করেছিলো তাও শালা কেন যে......’
কিছুক্ষন চুপ করে থেকে তুলি বললো ‘কোথায় আসবো?’
আমি শয়তানের মত হেসে বললাম ‘ভয় পেয়ে গেলে নাকি? আমি তো ভাবলাম তোমার রনি আঙ্কেলের... সরি এখন তোমার সাথে কি রিলেশান তা আমি জানিনা, তা ভাবলাম, ওর গরমে আমাকে চমকাবে, ...যাক গে ছারো ধর্মতলা থেকে বাস ধরবো কালকে ডায়মন্ডহারবার যাবো। সকাল আটটা নাগাদ গড়িয়াহাট মোরে দাড়াবে।’
‘ঠিক আছে আমারও তোমার সাথে অনেক কথা আছে। আর কালকেই শেষ, এর পরে তুমি আমাকে আর ডাকবে না।’
‘সেটা তো দরকার পরলেই ডাকবো, যতদিন না তুমি বিয়ে করে চলে যাচ্ছো এখান থেকে, ততদিন আমার দরকার হলেই তোমাকে ডাকবো। ঠিক আছে আমি এখন রাখছি অন্য একটা ফোন আসছে মনে হচ্ছে।’
‘এতো রাতে কে ফোন করছে তোমাকে?’
‘তা দিয়ে তোমার কি হবে?’
‘অন্য কেউ জুটে গেলো নাকি এখনই।’
‘তোমার আপত্তি কেন? তোমার সাথে থাকতে থাকতেই তো অন্য কেউ এসে জোটেনি। তুমি তো আমার সাথে থাকতে থাকতেই শুভ না কে তার সাথে ঘুরে বেরিয়েছো সবাইকে কি নিজের মত ভাবো নাকি?’
‘কে বলেছে তোমাকে এসব?’ তুলির গলায় চমক লাগার টোন।
‘যে হোক বলার বলেছে, আর আমি জানি সে আমাকে মিথ্যে কথা বলবে না?’
‘কে বলেছে? মনামি?’
‘নাহ, তবে তোমারই পিরিতের লোক বলেছে।’
‘কে বলবে তো?’
‘আমি এখন রাখছি?’
বলে তুলিকে ইচ্ছে করে সাস্পেন্সে রেখে ফোন কেটে দিলাম।
রাতে অনেকবার ফোন এলো, একটা করে রিং হচ্ছে আর কেটে যাচ্ছে। বাবা খুব বিরক্ত হয়ে গেলো, আমি ঊপরে গিয়ে ওদের রিংটা মিউট করে এলাম।
মনে মনে একটা খুশি রেশ চলছে। তুলিকে টেনশান দিতে পেরে। এতদিন তো আমি ভোগ করেছি এবার দ্যাখ ক্যামন লাগে। আমি ইচ্ছে করেই তুলিকে বলেছি যে কেউ আমাকে ফোন করছে। সেই জন্যেই ও বার বার করে ফোন করে দেখছে যে ফোন ব্যাস্ত কি না, আমি কারো সাথে কথা বলছি কিনা।
মনটা ফুর ফুর করছে। ফুঃ তুলি। নিজেই নিজের খুসির কারনগুলো ব্যাখ্যা করতে শুরু করলাম। কেন এত ভাল লাগছে। পরপর সাজালে এরকম দাড়ায়।
১। তুলির প্রভাব মন থেকে কমে গেছে। এখন তুলিকে নিয়ে ভাবছিনা। যেটা অনেক দুঃখ, বিরহের মধ্যে দিয়ে সময়ের সাথে সাথে আমাকে অর্জন করতে হোতো, সেটা অতি দ্রুত পেয়ে গেলাম।
২। তুলি এখন কারো সাথে সেক্স করলেও আমার কিছু যায় আসেনা। কারন যে ওকে করবে সে আমার এঁঠো করা মাল পাবে। আর আমি মুক্ত বিহঙ্গ, যা খুশি, যে নৌকায় খুশি চরতে পারি। তুলি একজনের সাথে করলে আমার কাছে দশজনের বিকল্প আছে।
৩। আমি রিতিমত সক্ষম। অতিরিক্ত উত্তেজনার বশে প্রথমবার দ্রুত বির্যপাত পুরুষদের খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। আর আমি প্রায় চল্লিশ মিনিট করেছি হয়তো আরো অনেকক্ষন করতে পারতাম। লোকের মুখে শুনেছি দশ পনের মিনিট করতে পারায় যথেষ্ট।
৪। একবার বির্যপাত হওয়ার পরেও আমার লিঙ্গ দৃঢ়তা হারায়নি।
৫। পিছন মারাতে অভিজ্ঞ একজনকে পেয়েছি, যাকে চাইলেই পিছন দিয়ে করতে পারি।
৬। তুলি অন্যকারো সাথে করছে, সেটা জোর করে মনে এনেও মন খারাপ হয়নি, রাগ হয়নি, হিংসে হয়নি।
আর স্লিপিং পিলস লাগলো না, চিন্তাহীন মনে ঘুমিয়ে পরলাম।
কয়েকদিন এই খুশির জের রইলো। তুলির চিন্তা আর আমাকে বিব্রত করছে না। একবারের জন্যেও মনে হয়নি যে তুলির বাড়িতে ফোন করি বা ওর সাথে কথা বলি। ওদিক থেকেও আমার খোঁজ খবরের নেওয়ার কোন লক্ষনই নেই। যাক গে, আমার হয়তো দ্বিতীয় সবকিছুই ভালো হয়। দেখা যাক দ্বিতীয় কাউকে পাই নাকি জীবনে। প্রথম প্রেম তো কুড়িতেই ঝরে গেলো।
পরের দিন অফিস যাওয়ার পথে সিগেরেট কিনতে কিনতে হঠাৎ চোখ আটকে গেলো একটা দাড়িয়ে থাকা টাটা সুমোতে। দেখছি তুলি খুব সেজেগুজে আছে আর সেই গাড়িতে গিয়ে উঠলো। ও একাই আছে গাড়িতে, আর ড্রাইভার বসে আছে ড্রাইভার সিটে। গাড়িটা স্টার্ট দিয়ে বেরিয়ে গেলো আমার চোখের সামনে দিয়ে। তুলি আমাকে দেখতে পায়নি। সকাল নটা বাজে এখন। এরকম সেজেগুজে কোন কাজে যাচ্ছে?
আবার, আবার তুলি আমার মনে একরাশ প্রশ্ন তুলে দিয়ে চলে গেল। বাসের সিটে বসে ভাবছি। তুলি আমার সাথে কি জন্যে রিলেশান করলো? ওর কি একবারের জন্যেও মনে পরছেনা আমাকে। শুনেছি দশ পা একসাথে হাঁটলে শ্ত্রুও বন্ধু হয়ে যায়। তুলি আমার কেউ হোলো না? মানুষ কি করে এত নিষ্ঠুর আর নির্লিপ্ত হতে পারে। ওর একটুও মনে পরছেনা আমার কথা? একটুও মনে পরছেনা একসাথে কাটানো আমাদের সেই সুখের সময়গুলো। মনের মধ্যে সেই ঘুমিয়ে থাকা প্রশ্নগুলো তোলপার শুরু করেছে। আবার তুলি ছেঁয়ে ফেলেছে আমার মন।
অফিসে ঢুকে তাড়াতাড়ি নিজের কাজ শেষ করে নিয়ে আর কিছু কাজ জুনিয়র ছেলেদের বুঝিয়ে দিয়ে, তুলিদের বাড়ি ফোন করলাম। অনেকবার করার পরেও কেউ ফোন তুললো না। তুলির বাবাও কি নেই?
সারাদিনে অনেকবার ট্রাই করলাম। কিন্তু কেউ ফোন তুললো না। তাহলে কি ফোন খারাপ। বাড়িতে ঢুকেও অনেকবার চেষ্টা করলাম। কিন্তু সেই একই ভাবে নিরলস বেজে চলেছে।
রাত সারে এগারোটা নাগাদ আবার তুলিদের বাড়িতে ফোন করলাম। তুলি হাঁপাতে হাঁপাতে ফোন ধরলো। তুলির গলা শুনে বুকটা কেমন মুচড়ে উঠলো। কেমন যেন অস্থির মনটা শান্ত হোল।
‘হ্যালো’
‘আমি অভি বলছি?’
একটু চুপ করে থেকে ‘কি ব্যাপার এতদিন পরে আবার?’
‘তোমার প্রবলেম হচ্ছে তাই না?’
তুলি চুপ। মনে মনে ভাবছি কি বোকাচোদা আমি, আর কত সন্মান নষ্ট করবি নিজের। ও শুধু তোর মুখের ওপর বলছেনা ব্যাস। এরপরেও তুই এর পিছনে ঘুরছিস্*।
‘কি হোলো চুপ করে আছো যে?’
‘দ্যাখো অনেক অশান্তি হয়েছে তোমাকে নিয়ে, আমার ভালো লাগেনা এসব, প্লিজ তুমি আর ফোন কোরো না।’
‘সে ঠিক আছে, আর করবোনা, কিন্তু সেদিন আমি যে কথাগুলো বলেছি তুমি শুনেছিলে?’
‘কি কথা?’
‘এই রনি আর তোমার মার ব্যাপারে?’
‘না আমি শুনিনি আর শুনতেও চাইনা।’
‘কেন শুনতে চাওনা তুমি? তুমি কি ভাবো তোমার মা ধোয়া তুলসি পাতা?’
‘আমি কিছু ভাবিনা, আমি আর আমার মা দুজনেই ধোয়া তুলসি পাতা না, তুমি কেন আমাদের মাঝখানে নিজেকে জড়াচ্ছো?’ প্রায় মুখঝামটা দিয়ে বলে উঠলো তুলি।
‘সে তো তোমাকে আজকে সকালে দেখেই বুঝেছি, যেরকম সেজেগুজে বেরিয়েছিলে তাতে তোমাকে যে চিনবে সেই বলে দেবে তুমি কি করতে বেরিয়োছো? পেটে গুঁতালে তো ABCD বেরোবে না, কিন্তু এমন হাবভাব করে যাচ্ছো যেন জম্মোকম্মো পার্কস্ট্রিটে।’
একটু চুপ করে থেকে তুলি বললো ‘বুঝতেই তো পারছো তাহলে আর এত কথা বলছো কেন? আমরা এত খারাপ জেনেও তুমি কেন আমাদের পিছনে পরে রয়েছো?’
‘পিছনে পরে রয়েছি একটাই কারনে, বোঝার চেষ্টা করছি, কি করে তোমার মত মেয়েও আমার সাথে খেলে চলে গেলো?’
তুলি চুপ করে আছে, তুলির এই ঔদাসিন্যে আর তাচ্ছিল্লে আমার মাথার ট্রিগার অন হয়ে গেছে, তাই মুখ দিয়েই বোমা বেরোতে শুরু করলো ‘আমি ইচ্ছে করলে তোমাদের বাড়ি গিয়ে তোমাকে আর তোমার মাকে চুলের মুঠি ধরে বের করে এনে তোমার পাড়ার লোকজনের সামনে বলতে পারি যে তোমার আর আমার মধ্যে কি কি হয়েছে। আমার সাথে এরকম করার জন্যে আমি তোমাদের ফুল ফ্যামিলিকে পার্টি অফিসে ডাকাতে পারি। কিন্তু আমি সেসব চাই না। আমি কয়েকটা উত্তর চাই তোমার থেকে।’
তুলি চুপ।
‘কি হোলো শুনতে পাচ্ছো?’
‘হ্যাঁ বলো। কি জানতে চাও?’
‘ফোনে না সামনাসামনি কথা বলতে হবে, কালকে সকালে আমার সাথে চলো?’
‘কোথায়?’
‘কোনো হোটেলে যাবো, বিকেলের মধ্যে ফিরে আসবো?’
‘আমার কাজ আছে কালকে। কালকে হবেনা।’
‘কাজের গুলি মারি, কি কাজ করো সেটা ভালো করেই বুঝি, ওসব গল্প ছারো, আসবে কিনা বলো? এখন থেকে আমি যখনই ডাকবো আসতে হবে। সে যে কারনেই হোক, নাহলে বুঝতেই পারছো... তুমি আর তোমার মা যা করেছো আমার সাথে সেসব আমি কোনোদিন ভুলবোনা। পাপ্পু আমাকে অনেকবার সাবধান করেছিলো তাও শালা কেন যে......’
কিছুক্ষন চুপ করে থেকে তুলি বললো ‘কোথায় আসবো?’
আমি শয়তানের মত হেসে বললাম ‘ভয় পেয়ে গেলে নাকি? আমি তো ভাবলাম তোমার রনি আঙ্কেলের... সরি এখন তোমার সাথে কি রিলেশান তা আমি জানিনা, তা ভাবলাম, ওর গরমে আমাকে চমকাবে, ...যাক গে ছারো ধর্মতলা থেকে বাস ধরবো কালকে ডায়মন্ডহারবার যাবো। সকাল আটটা নাগাদ গড়িয়াহাট মোরে দাড়াবে।’
‘ঠিক আছে আমারও তোমার সাথে অনেক কথা আছে। আর কালকেই শেষ, এর পরে তুমি আমাকে আর ডাকবে না।’
‘সেটা তো দরকার পরলেই ডাকবো, যতদিন না তুমি বিয়ে করে চলে যাচ্ছো এখান থেকে, ততদিন আমার দরকার হলেই তোমাকে ডাকবো। ঠিক আছে আমি এখন রাখছি অন্য একটা ফোন আসছে মনে হচ্ছে।’
‘এতো রাতে কে ফোন করছে তোমাকে?’
‘তা দিয়ে তোমার কি হবে?’
‘অন্য কেউ জুটে গেলো নাকি এখনই।’
‘তোমার আপত্তি কেন? তোমার সাথে থাকতে থাকতেই তো অন্য কেউ এসে জোটেনি। তুমি তো আমার সাথে থাকতে থাকতেই শুভ না কে তার সাথে ঘুরে বেরিয়েছো সবাইকে কি নিজের মত ভাবো নাকি?’
‘কে বলেছে তোমাকে এসব?’ তুলির গলায় চমক লাগার টোন।
‘যে হোক বলার বলেছে, আর আমি জানি সে আমাকে মিথ্যে কথা বলবে না?’
‘কে বলেছে? মনামি?’
‘নাহ, তবে তোমারই পিরিতের লোক বলেছে।’
‘কে বলবে তো?’
‘আমি এখন রাখছি?’
বলে তুলিকে ইচ্ছে করে সাস্পেন্সে রেখে ফোন কেটে দিলাম।
রাতে অনেকবার ফোন এলো, একটা করে রিং হচ্ছে আর কেটে যাচ্ছে। বাবা খুব বিরক্ত হয়ে গেলো, আমি ঊপরে গিয়ে ওদের রিংটা মিউট করে এলাম।
মনে মনে একটা খুশি রেশ চলছে। তুলিকে টেনশান দিতে পেরে। এতদিন তো আমি ভোগ করেছি এবার দ্যাখ ক্যামন লাগে। আমি ইচ্ছে করেই তুলিকে বলেছি যে কেউ আমাকে ফোন করছে। সেই জন্যেই ও বার বার করে ফোন করে দেখছে যে ফোন ব্যাস্ত কি না, আমি কারো সাথে কথা বলছি কিনা।