24-03-2025, 11:11 PM
ঊনপঞ্চাশতি পরিচ্ছেদ
কলেজ ছুটির পর বাড়ি ফেরার কথা মনে হতে অধ্যাপক সান্যালের ক্লান্ত মনে হয়।নীলু নেই বাড়ীটা খা-খা করছে।অনিচ্ছাকৃত পায়ে কলেজ প্রাঙ্গণ ছেড়ে বেরোতে হয়।মনে হল কে যেন পিছন থেকে ডাকছে।দাড়িয়ে পিছন ফিরে তাকাতে দেখলেন মি. এসবি মানে তার সহকর্মী সুকান্ত বোস হন্তদন্ত হয়ে আসছেন।কাছে এসে দুঃখিত গলায় বললেন,খবরটা শুনে মর্মাহত হয়েছি।
ফ্যাকাসে হাসি টেনে অধ্যাপক সান্যাল বললেন,খুবই ভুগছিল সংসার থেকে বিদায় নিয়েছে আগেই এখন পৃথিবী থেকে চলে গিয়ে আমাকে মুক্তি দিয়ে গেল।
কি বলছেন সান্যাল?বুকে হাত দিয়ে বলুন ত সব কিছু আপনার ফাকা লাগছে না?
মিনুর একেবারে অথর্ব হলে তার প্রতি নজর ছিল সর্বক্ষণ।বাস্তবিক মিনু থাকতে বোঝেন নি এখন বুঝতে পারছেন কতখানি জায়গা জুড়ে ছিল মিনু।
সামনে একটা বার রেস্তোরা সামনে পড়তে সুকান্তবাবু বললেন,চলুন একটু গলা ভিজিয়ে যাই।
আমার এসবে অভ্যেস নেই।
রাতারাতি ত অভ্যেস হয়না।চলুন এই অবস্থায় ভাল লাগবে।
এই অবস্থায় কথাটা সান্যালকে স্পর্শ করে।মনটা বিষণ্ণতায় ছেয়ে আছে।মেয়েটিকে আসতে বলেছিলেন, আসেনি। এখন বাড়ী ফিরেই বা কি করবেন।সুকান্ত বসুর সঙ্গে বারে ঢুকলেন।সুকান্ত বাবু নিয়মিত নেশা করেন।সান্যাল বললেন,আমার অভ্যেস নেই দেখবেন যেন বেসামাল হয়ে না যাই।
ধুর মশাই আমি ত আপনার কলিগ ,আমার একটা দায়িত্ব আছে না।
মিনু থাকলে মদ্যপানের কথা কল্পনাতেও আসতো না।মিনু কি সব দেখতে পাচ্ছে?মিনুর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে অনেক কাল, আলাদা খাটে ঘুমাতো কথা বলতে পারত না।কেবল চোখের দেখা হতো তাও কতক্ষণ।অথচ সেই মিনু এখন তার মন জুড়ে ভেবে সত্যপ্রিয় অবাক লাগে।
ইলিনা ব্রাউনের ক্লাস শেষ হতে স্টাফ রুমে এসে ব্যাগ গোছাতে থাকে।
এসএম এসে বললেন,মিস ব্রাউন ক্লাস শেষ,আপনার সঙ্গে একটু কথা আছে।
স্যরি ম্যাম আমার একটু তাড়া আছে।
আমি আপনাকে লাইব্রেরীতে নিয়ে মিটিং করব না,আপনি ত বাসস্ট্যাণ্ডে যাবেন।আমি টয়লেট থেকে এসে সঙ্গে যাবো।
কি ইঙ্গিত করলেন ইলিনা বুঝলেও বলল, আমিও টয়লেটে যাব।মনে মনে ভাবে লাইব্রেরীতে কি কথা হয়েছে সেসব বলার প্রশ্নই আসেনা।
টয়লেট থেকে বেরিয়ে মিসেস মুখার্জী হেসে বললেন,বিয়ে-থা করেন নি অথচ এমন ভাব করেন যেন বাড়ীতে বাচ্চা রেখে এসেছেন।
ইলিনা হাতের ব্যাগটা এসএমের হাতে ধরিয়ে দিয়ে টয়লেটে ঢুকে গেল।কাপড় তুলে কমোডে বসে ভাবে এরা জানে না সে বিবাহিত। তার স্বামীটা বাচ্চারও অধম।যদি পাস করে কি করে চাকরি করবে গড নোজ।
টয়লেট থেকে বেরোতে মিসেস মুখার্জি বললেন,শীত না যেতে কেমন গরম পড়ল দেখেছেন।জামা ভিজে গায়ে লেপটে যাচ্ছে।
কলেজ ছেড়ে রাস্তায় নামে,বাস স্টপএজ প্রায় দশ মিনিট।
কিছু মনে করবেন না মিস ব্রাউন।পলি সেদিন কি বলছিল?
ইলিনা এটাই আশঙ্কা করছিল।এক্টু ভেবে বলল,ভাল হয় আপনি পলির কাছে জেনে নেবেন।
মিস ব্রাউন কথা চালাচালি পছন্দ করেনা,মিসেস মুখার্জির ভাল লাগে। ঘটনাটা শেয়ার করার ইচ্ছে হয় কিন্তু বিদেশিনী মহিলা কিভাবে নেবে ভেবে আর বলেন না।
রাস্তার ধারে একটা দোকানে হ্যঙ্গারে ব্যাক ওপেন ব্লাউজ ঝুলতে দেখে মিসেস মুখার্জী এক মিনিট বলে দোকানে উঠে গেলেন।ইলিনার নজরেও পড়েছে।মিসেস মুখারজীর পিছে পিছে সেও উঠে।সোমা মুখার্জী একটা পিঠ খোলা নিয়ে বুকে লাগিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে দরদাম করে একজোড়া ব্লাউস নিলেন।ইলিনা পাশে দাঁড়িয়ে দেখছিল ব্লাউসের পিঠে কাপড় নেই দুটো ফিতে দিয়ে বাধা।সোমার দেখাদেখি ইলিনাও একজোড়া ব্লাউস নিল। খোলা পিঠ বেশ হাওয়া লাগবে।বাস্তবিক বেশ গরম পড়েছে।
দোকান থেকে বেরিয়ে সোমা বললেন,আপনি আনম্যারেড তাই বলছি না, সেদিন আশ্রমে এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হল।
ইলিনা বিরক্ত হয়ে বলল,বলতে পারেন আমি ম্যারেড।
সোমা ঘুরে দাঁড়িয়ে বললেন,জানি ইলিনা ব্রাউন সোম--এ্যাম আই কারেক্ট?
ইলিনা চমকে ওঠে।কি ভাবে জানলো?জেনেও না-জানার ভান করেছে এতদিন?বলল,আপনি জানেন?
জানি মানে শুনেছি কনফার্ম ছিলাম না।আপনি আবার জিজ্ঞেস করবেন কোথায় শুনেছি।
মঞ্জুলিকা ম্যাম বলে থাকবেন হয়তো।ইলিনা কোনো উচ্চবাচ্য নাকরে বলল,কি বলছিলেন?
দেখুন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মিলন হয়,মিলনে সন্তান হয় আমরা জানি।
ইলিনা ভাবে অদ্ভুত অভিজ্ঞতা কি?
কি বলব মিস ব্রাউন মিলনে এক আধ্যাত্মিক অনুভূতি মানে আই ক্যান নট এক্সপ্রেস--গুরুজীর সঙ্গে মিলিত হলে বুঝতেন মানে সারা শরীর মনে যেন অমৃত ধারা বয়ে যাচ্ছে--।
আপনি মিলিত হয়েছেন?
তাহলে কি বলছি।আপনি কাউকে বলবেন না জানি। এক বিন্দু বীর্য যোনীতে পড়েনি।উপরন্তু যোনী হতে রস শুষে নিলেন।মনে হল নতুন জীবন পেলাম। এটা আমি ব্যভিচার মনে করিনা, বরং বলা যায় সাধনা।
রেস্তোরা হতে বেরিয়ে সুকান্ত বোস বললেন,আর ইউ ওকে সান্যাল?
মৃদু হেসে সত্যপ্রিয় বললেন,মাথাটা একটু ভার-ভার লাগছে এমনি ঠিক আছে।
চলুন আপনাকে বাসে তুলে দিই।
একটু ভেবে সান্যাল বললেন,না থাক আমি একটা ট্যাক্সি ধরে নেবো।
দ্যাটস বেটার।সুকান্ত বোস হাত তুলে একটা ট্যাক্সি দাড় করিয়ে বললেন,নিন উঠুন।
সত্যপ্রিয় ট্যাক্সিতে উঠতে সুকান্ত বোসও উঠে বসে বললেন,আমি সামনে নেমে যাব।
সত্যপ্রিয় পিছনে এলিয়ে দিতে আরাম বোধ করেন।তার সহকর্মীটি নিয়মিত মদ্যপান করেন সত্যপ্রিয় জানেন।ভদ্রলোক বেশ জলি।বাড়ীর লোকেরা আপত্তি করেনা?অবশ্য মাতলামি করতে দেখেন নি।
কি ভাবছেন?
সত্যপ্রিয় পাশ ফিরে তাকিয়ে হেসে বললেন,একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
এনিথিং সিরিয়াস?
সত্যপ্রিয় ভাবেন ব্যক্তিগত ব্যাপারে কিছু বলা ঠিক হবে কিনা?
কি বলবেন বলছিলেন?
না মানে আপনি এই যে নেশা করে ফিরছেন ম্যাডাম কিছু--।
সেকথাই তো ভাবছি কি বলব?ওকে বাদ দিয়ে একা খেয়ে এলাম বিথীকে কিভাবে ম্যানেজ করব?
ম্যাডামও নেশা করেন?অবাক চোখে জিজ্ঞেস করেন।
আগে করত না।গৃহশান্তি বজায় রাখতে দলে টেনে নিতে হয়েছে।
সত্যপ্রিয়র বেশ মজা লাগে। ছেলে আপত্তি করেনা?
সুকান্ত কিছু না বলে জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকেন।কিছুক্ষণ পর বললেন,জানেন সান্যাল আজকালকার ছেলেরা অতীতকে মনে রাখে না।স্কলারশিপ পেয়ে এয়ামেরিকা যাবার আগে ওর হাবভাব দেখেই আমার সন্দেহ হয়েছিল।বিথীকে বলেছিলাম,তোমার ছেলে আর ফিরবে না।বিথী ছেলেকে জিজ্ঞেস করতেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠল।তিন বছরের কোর্স গেলাম না এরমধ্যেই ফেরার কথা আসছে কেন বুঝিনা।
তারপর আর ফেরেনি?
ফ্যাকাশে হেসে বললেন,দু-বার এসেছিল।একবার এসে বিয়ে করে বউ নিয়ে চলে গেল।আরেকবার মেয়ের অন্ন প্রাশণ দিতে--ভাইসাব অই গলির মোড়ে একটু দাড়াবেন।
ট্যাক্সি দাড়াতে সুকান্ত বোস নেমে বললেন,আসি,কাল কলেজে দেখা হবে।
ট্যাক্সি আবার চলতে শুরু করল।জানলা দিয়ে ফুরফুরে হাওয়া এসে চোখেমুখে লাগছে।আজকাল ছেলেরা অতীতকে মনে রাখেনা।বেশ বলেছেন কথাটা।সমর্পন মাঝে-মধ্যে মাকে দেখতে আসতো তাও একা।আর মনে হয় আসবেনা।মেনকার প্রতি কর্তব্যে কোনো ত্রুটি রাখেন নি।যখন যেটা দরকার হয়েছে করেছেন সাধ্যমত।তবু কেন যে ছেলের চক্ষুশূল কে জানে।রেবতীর ব্যাপারটা জানার কথা নয়।বাড়ির কথা মনে হতে মাথা ঝিমঝিম করে।একটা সব সময়ের রান্নার লোক রাখা দরকার।রান্নার মাসী রাজি হবে না ওর আলাদা সংসার আছে।একটা ছেলে রাখলে কেমন হয়?পরহূর্তে মনে হল কোনদিন বাসায় ফিরে দেখবেন সব সাফ।খবর কাগজে বেরিয়েছিল বৃদ্ধা মহিলাকে গলা টিপে খুন করে পালিয়েছে।আলমারি খোলা গয়নাগাটি লোপাট।গাড়ী পাড়ার রাস্তায় ঢুকছে।পকেটে হাত দিয়ে চাবির অস্তিত্ব অনুভব করেন। আজ রাতে খাবার-দাবার গরম করে খাওয়ার দরকার নেই।একবেলা না-খেলে কিছু হবে না।
ভাই সামনে ওই হলুদ রঙের বাড়ীটার সামনে দাড় করাবেন।বাইরে লাইট জ্বলছে না সামনেটা ঘুটঘুটে অন্ধকার।ট্যাক্সি রাস্তার ধার ঘেষে দাড়াতে সত্যপ্রিয় ভাড়া মিটিয়ে নেমে পড়লেন।
হাত কাপছে চাবিটা ছিদ্রপথে ঠিকমত ঢোকাতে পারছেন না।চোখের সামনে চাবিটা ধরে দেখলেন ঠিক চাবি ত?
দেন স্যার আমারে দ্যান।
সত্যপ্রিয়র হাত থেকে চাবি নিয়ে মেয়েটি নীচু হয়ে দরজা খুলতে থাকে।
চোখ টান টান করে মেয়েটিকে দেখে বলল,শ্যামলী না?কখন এলে?
মেয়েটি দরজা খুলে সোজা হয়ে বলল,সয়েলী।বিকেলে এসে দেখি দরজা বন্ধ তাই বসেছিলাম।স্যার আপনে মাল খেয়েছেন?
মাল না বল মদ।
ঐ হল চলেন ভিতরে চলেন।
সত্যপ্রিয় এগোতে গিয়ে টাল খেয়ে যান।সহেলী ধরে আমারে ধরে চলেন।সত্যপ্রিয় সহেলীর কাধে ভর দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলেন।ভিতরে ঢুকে লাইট জ্বেলে স্যারকে সোফায় বসিয়ে দিয়ে বলল,আপনে বসেন আমি চা করে আনছি।
এতরাতে চা করার দরকার নেই।
চা খেলি নেশা চটকে যাবে,বসেন ত।
তাহলে দুজনের জন্যই করবে।
কলেজ ছুটির পর বাড়ি ফেরার কথা মনে হতে অধ্যাপক সান্যালের ক্লান্ত মনে হয়।নীলু নেই বাড়ীটা খা-খা করছে।অনিচ্ছাকৃত পায়ে কলেজ প্রাঙ্গণ ছেড়ে বেরোতে হয়।মনে হল কে যেন পিছন থেকে ডাকছে।দাড়িয়ে পিছন ফিরে তাকাতে দেখলেন মি. এসবি মানে তার সহকর্মী সুকান্ত বোস হন্তদন্ত হয়ে আসছেন।কাছে এসে দুঃখিত গলায় বললেন,খবরটা শুনে মর্মাহত হয়েছি।
ফ্যাকাসে হাসি টেনে অধ্যাপক সান্যাল বললেন,খুবই ভুগছিল সংসার থেকে বিদায় নিয়েছে আগেই এখন পৃথিবী থেকে চলে গিয়ে আমাকে মুক্তি দিয়ে গেল।
কি বলছেন সান্যাল?বুকে হাত দিয়ে বলুন ত সব কিছু আপনার ফাকা লাগছে না?
মিনুর একেবারে অথর্ব হলে তার প্রতি নজর ছিল সর্বক্ষণ।বাস্তবিক মিনু থাকতে বোঝেন নি এখন বুঝতে পারছেন কতখানি জায়গা জুড়ে ছিল মিনু।
সামনে একটা বার রেস্তোরা সামনে পড়তে সুকান্তবাবু বললেন,চলুন একটু গলা ভিজিয়ে যাই।
আমার এসবে অভ্যেস নেই।
রাতারাতি ত অভ্যেস হয়না।চলুন এই অবস্থায় ভাল লাগবে।
এই অবস্থায় কথাটা সান্যালকে স্পর্শ করে।মনটা বিষণ্ণতায় ছেয়ে আছে।মেয়েটিকে আসতে বলেছিলেন, আসেনি। এখন বাড়ী ফিরেই বা কি করবেন।সুকান্ত বসুর সঙ্গে বারে ঢুকলেন।সুকান্ত বাবু নিয়মিত নেশা করেন।সান্যাল বললেন,আমার অভ্যেস নেই দেখবেন যেন বেসামাল হয়ে না যাই।
ধুর মশাই আমি ত আপনার কলিগ ,আমার একটা দায়িত্ব আছে না।
মিনু থাকলে মদ্যপানের কথা কল্পনাতেও আসতো না।মিনু কি সব দেখতে পাচ্ছে?মিনুর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে অনেক কাল, আলাদা খাটে ঘুমাতো কথা বলতে পারত না।কেবল চোখের দেখা হতো তাও কতক্ষণ।অথচ সেই মিনু এখন তার মন জুড়ে ভেবে সত্যপ্রিয় অবাক লাগে।
ইলিনা ব্রাউনের ক্লাস শেষ হতে স্টাফ রুমে এসে ব্যাগ গোছাতে থাকে।
এসএম এসে বললেন,মিস ব্রাউন ক্লাস শেষ,আপনার সঙ্গে একটু কথা আছে।
স্যরি ম্যাম আমার একটু তাড়া আছে।
আমি আপনাকে লাইব্রেরীতে নিয়ে মিটিং করব না,আপনি ত বাসস্ট্যাণ্ডে যাবেন।আমি টয়লেট থেকে এসে সঙ্গে যাবো।
কি ইঙ্গিত করলেন ইলিনা বুঝলেও বলল, আমিও টয়লেটে যাব।মনে মনে ভাবে লাইব্রেরীতে কি কথা হয়েছে সেসব বলার প্রশ্নই আসেনা।
টয়লেট থেকে বেরিয়ে মিসেস মুখার্জী হেসে বললেন,বিয়ে-থা করেন নি অথচ এমন ভাব করেন যেন বাড়ীতে বাচ্চা রেখে এসেছেন।
ইলিনা হাতের ব্যাগটা এসএমের হাতে ধরিয়ে দিয়ে টয়লেটে ঢুকে গেল।কাপড় তুলে কমোডে বসে ভাবে এরা জানে না সে বিবাহিত। তার স্বামীটা বাচ্চারও অধম।যদি পাস করে কি করে চাকরি করবে গড নোজ।
টয়লেট থেকে বেরোতে মিসেস মুখার্জি বললেন,শীত না যেতে কেমন গরম পড়ল দেখেছেন।জামা ভিজে গায়ে লেপটে যাচ্ছে।
কলেজ ছেড়ে রাস্তায় নামে,বাস স্টপএজ প্রায় দশ মিনিট।
কিছু মনে করবেন না মিস ব্রাউন।পলি সেদিন কি বলছিল?
ইলিনা এটাই আশঙ্কা করছিল।এক্টু ভেবে বলল,ভাল হয় আপনি পলির কাছে জেনে নেবেন।
মিস ব্রাউন কথা চালাচালি পছন্দ করেনা,মিসেস মুখার্জির ভাল লাগে। ঘটনাটা শেয়ার করার ইচ্ছে হয় কিন্তু বিদেশিনী মহিলা কিভাবে নেবে ভেবে আর বলেন না।
রাস্তার ধারে একটা দোকানে হ্যঙ্গারে ব্যাক ওপেন ব্লাউজ ঝুলতে দেখে মিসেস মুখার্জী এক মিনিট বলে দোকানে উঠে গেলেন।ইলিনার নজরেও পড়েছে।মিসেস মুখারজীর পিছে পিছে সেও উঠে।সোমা মুখার্জী একটা পিঠ খোলা নিয়ে বুকে লাগিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে দরদাম করে একজোড়া ব্লাউস নিলেন।ইলিনা পাশে দাঁড়িয়ে দেখছিল ব্লাউসের পিঠে কাপড় নেই দুটো ফিতে দিয়ে বাধা।সোমার দেখাদেখি ইলিনাও একজোড়া ব্লাউস নিল। খোলা পিঠ বেশ হাওয়া লাগবে।বাস্তবিক বেশ গরম পড়েছে।
দোকান থেকে বেরিয়ে সোমা বললেন,আপনি আনম্যারেড তাই বলছি না, সেদিন আশ্রমে এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হল।
ইলিনা বিরক্ত হয়ে বলল,বলতে পারেন আমি ম্যারেড।
সোমা ঘুরে দাঁড়িয়ে বললেন,জানি ইলিনা ব্রাউন সোম--এ্যাম আই কারেক্ট?
ইলিনা চমকে ওঠে।কি ভাবে জানলো?জেনেও না-জানার ভান করেছে এতদিন?বলল,আপনি জানেন?
জানি মানে শুনেছি কনফার্ম ছিলাম না।আপনি আবার জিজ্ঞেস করবেন কোথায় শুনেছি।
মঞ্জুলিকা ম্যাম বলে থাকবেন হয়তো।ইলিনা কোনো উচ্চবাচ্য নাকরে বলল,কি বলছিলেন?
দেখুন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মিলন হয়,মিলনে সন্তান হয় আমরা জানি।
ইলিনা ভাবে অদ্ভুত অভিজ্ঞতা কি?
কি বলব মিস ব্রাউন মিলনে এক আধ্যাত্মিক অনুভূতি মানে আই ক্যান নট এক্সপ্রেস--গুরুজীর সঙ্গে মিলিত হলে বুঝতেন মানে সারা শরীর মনে যেন অমৃত ধারা বয়ে যাচ্ছে--।
আপনি মিলিত হয়েছেন?
তাহলে কি বলছি।আপনি কাউকে বলবেন না জানি। এক বিন্দু বীর্য যোনীতে পড়েনি।উপরন্তু যোনী হতে রস শুষে নিলেন।মনে হল নতুন জীবন পেলাম। এটা আমি ব্যভিচার মনে করিনা, বরং বলা যায় সাধনা।
রেস্তোরা হতে বেরিয়ে সুকান্ত বোস বললেন,আর ইউ ওকে সান্যাল?
মৃদু হেসে সত্যপ্রিয় বললেন,মাথাটা একটু ভার-ভার লাগছে এমনি ঠিক আছে।
চলুন আপনাকে বাসে তুলে দিই।
একটু ভেবে সান্যাল বললেন,না থাক আমি একটা ট্যাক্সি ধরে নেবো।
দ্যাটস বেটার।সুকান্ত বোস হাত তুলে একটা ট্যাক্সি দাড় করিয়ে বললেন,নিন উঠুন।
সত্যপ্রিয় ট্যাক্সিতে উঠতে সুকান্ত বোসও উঠে বসে বললেন,আমি সামনে নেমে যাব।
সত্যপ্রিয় পিছনে এলিয়ে দিতে আরাম বোধ করেন।তার সহকর্মীটি নিয়মিত মদ্যপান করেন সত্যপ্রিয় জানেন।ভদ্রলোক বেশ জলি।বাড়ীর লোকেরা আপত্তি করেনা?অবশ্য মাতলামি করতে দেখেন নি।
কি ভাবছেন?
সত্যপ্রিয় পাশ ফিরে তাকিয়ে হেসে বললেন,একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
এনিথিং সিরিয়াস?
সত্যপ্রিয় ভাবেন ব্যক্তিগত ব্যাপারে কিছু বলা ঠিক হবে কিনা?
কি বলবেন বলছিলেন?
না মানে আপনি এই যে নেশা করে ফিরছেন ম্যাডাম কিছু--।
সেকথাই তো ভাবছি কি বলব?ওকে বাদ দিয়ে একা খেয়ে এলাম বিথীকে কিভাবে ম্যানেজ করব?
ম্যাডামও নেশা করেন?অবাক চোখে জিজ্ঞেস করেন।
আগে করত না।গৃহশান্তি বজায় রাখতে দলে টেনে নিতে হয়েছে।
সত্যপ্রিয়র বেশ মজা লাগে। ছেলে আপত্তি করেনা?
সুকান্ত কিছু না বলে জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকেন।কিছুক্ষণ পর বললেন,জানেন সান্যাল আজকালকার ছেলেরা অতীতকে মনে রাখে না।স্কলারশিপ পেয়ে এয়ামেরিকা যাবার আগে ওর হাবভাব দেখেই আমার সন্দেহ হয়েছিল।বিথীকে বলেছিলাম,তোমার ছেলে আর ফিরবে না।বিথী ছেলেকে জিজ্ঞেস করতেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠল।তিন বছরের কোর্স গেলাম না এরমধ্যেই ফেরার কথা আসছে কেন বুঝিনা।
তারপর আর ফেরেনি?
ফ্যাকাশে হেসে বললেন,দু-বার এসেছিল।একবার এসে বিয়ে করে বউ নিয়ে চলে গেল।আরেকবার মেয়ের অন্ন প্রাশণ দিতে--ভাইসাব অই গলির মোড়ে একটু দাড়াবেন।
ট্যাক্সি দাড়াতে সুকান্ত বোস নেমে বললেন,আসি,কাল কলেজে দেখা হবে।
ট্যাক্সি আবার চলতে শুরু করল।জানলা দিয়ে ফুরফুরে হাওয়া এসে চোখেমুখে লাগছে।আজকাল ছেলেরা অতীতকে মনে রাখেনা।বেশ বলেছেন কথাটা।সমর্পন মাঝে-মধ্যে মাকে দেখতে আসতো তাও একা।আর মনে হয় আসবেনা।মেনকার প্রতি কর্তব্যে কোনো ত্রুটি রাখেন নি।যখন যেটা দরকার হয়েছে করেছেন সাধ্যমত।তবু কেন যে ছেলের চক্ষুশূল কে জানে।রেবতীর ব্যাপারটা জানার কথা নয়।বাড়ির কথা মনে হতে মাথা ঝিমঝিম করে।একটা সব সময়ের রান্নার লোক রাখা দরকার।রান্নার মাসী রাজি হবে না ওর আলাদা সংসার আছে।একটা ছেলে রাখলে কেমন হয়?পরহূর্তে মনে হল কোনদিন বাসায় ফিরে দেখবেন সব সাফ।খবর কাগজে বেরিয়েছিল বৃদ্ধা মহিলাকে গলা টিপে খুন করে পালিয়েছে।আলমারি খোলা গয়নাগাটি লোপাট।গাড়ী পাড়ার রাস্তায় ঢুকছে।পকেটে হাত দিয়ে চাবির অস্তিত্ব অনুভব করেন। আজ রাতে খাবার-দাবার গরম করে খাওয়ার দরকার নেই।একবেলা না-খেলে কিছু হবে না।
ভাই সামনে ওই হলুদ রঙের বাড়ীটার সামনে দাড় করাবেন।বাইরে লাইট জ্বলছে না সামনেটা ঘুটঘুটে অন্ধকার।ট্যাক্সি রাস্তার ধার ঘেষে দাড়াতে সত্যপ্রিয় ভাড়া মিটিয়ে নেমে পড়লেন।
হাত কাপছে চাবিটা ছিদ্রপথে ঠিকমত ঢোকাতে পারছেন না।চোখের সামনে চাবিটা ধরে দেখলেন ঠিক চাবি ত?
দেন স্যার আমারে দ্যান।
সত্যপ্রিয়র হাত থেকে চাবি নিয়ে মেয়েটি নীচু হয়ে দরজা খুলতে থাকে।
চোখ টান টান করে মেয়েটিকে দেখে বলল,শ্যামলী না?কখন এলে?
মেয়েটি দরজা খুলে সোজা হয়ে বলল,সয়েলী।বিকেলে এসে দেখি দরজা বন্ধ তাই বসেছিলাম।স্যার আপনে মাল খেয়েছেন?
মাল না বল মদ।
ঐ হল চলেন ভিতরে চলেন।
সত্যপ্রিয় এগোতে গিয়ে টাল খেয়ে যান।সহেলী ধরে আমারে ধরে চলেন।সত্যপ্রিয় সহেলীর কাধে ভর দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলেন।ভিতরে ঢুকে লাইট জ্বেলে স্যারকে সোফায় বসিয়ে দিয়ে বলল,আপনে বসেন আমি চা করে আনছি।
এতরাতে চা করার দরকার নেই।
চা খেলি নেশা চটকে যাবে,বসেন ত।
তাহলে দুজনের জন্যই করবে।