31-12-2018, 04:17 PM
মনে মনে চিন্তা করতে করতে ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। ছঁকে নিলাম কি কি বলতে হবে। ভেবে নিলাম কোথায় কোথায় আমার চাপ আসতে পারে। চাবিটার একটা ব্যাবস্থা করে নিয়েছি, ভেবে নিয়েছি কি করতে বা বলতে হবে।
জীবনে প্রথম অপঘাতে মৃত্যু দেখলাম। এতক্ষন যেরকম তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে ভাবছিলাম ব্যাপারটা, নিজের চোখে দেখার পরে মনে হোলোএরকম যেন আমার শ্ত্রুরও না হয়। আমিই দায়ি এর জন্যে। দু দুটো প্রান চলে গেলো। হাবলুদার চোখগুলো প্রায় বেরিয়ে এসেছে কোঁঠর থেকে। খাঁটের ওপরে শোয়ানো দেহটা, গলার চাপে পায়জামায় পেচ্ছাপ করে দিয়েছে, অনেকটা যায়গা জুরে দাগ হয়ে রয়েছে দেখছি। আরেকটা ঘরের মেঝেতে সুদিপার লাশ বিছানার চাদর দিয়ে ঢাকা। হয়তো আমি ফিরে যাওয়ার কিছুক্ষনের মধ্যেই শেষ হয়ে গেছে। উলঙ্গ অবস্থাতেই যে মারা গেছে তা বুঝতে অসুবিধে হয় না। এই জন্যে রটেছে যে, ওকে রেপ করা হয়েছে। মা তো আমাকে তাই বললো। নিশ্চয় লোকের মুখে তাই রটেছে বলে বলেছে।
মুখটাও ভালো করে ঢাকেনি এরা। চোখমুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে কিরকম মানসিক অবস্থার মধ্যে ছিলো ওরা। আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে হয়ত দুজনেই পরম তৃপ্তিতে আরেকটা দিন শুরু করতে পারতো। কিন্তু এই ব্যাপারের জন্যে এই ভাবে নিজেদের শেষ করে দিলো। ভয় পেয়ে গেছিলো?
আরেকটু অপেক্ষা করতে পারতো। যদি রটনা সত্যি ঘটতো তাহলে না হয় করতে পারতো, ও তো মেয়েমানুষ কেউ কি বিশ্বাস করতো যে ও কোন পুরুষমানুষের সাথে জোর করে যৌনসম্ভোগ করতে চাইছিলো।
কে উদ্যোগ নিলো এসবের? হাবলুদা, এরকম নরমসরম লোক কি করে নিজের বৌয়ের খুন করে নিজে ঝুলে পরলো। অন্তত আমার তো তাই মনে হয়।
সত্যি, মানুষের খোলনলচে দেখে বোঝা যায়না যে সে ভিতরে ভিতরে কিরকম হতে পারে।
হাবলুদাকে দেখে তো কেউ ভাবতেই পারবেনা যে এরকম করতে পারে। কি পেত? নিজের বৌকে অন্য পুরুষের সাথে সম্ভোগ করতে দেখতে। কালকে কি আমাকেও দেখছিলো, সুদিপা তো আমার বাড়া বের করে চুষতে গেছিলো। তাহলে হাবলুদা কি ভাবে দেখছিলো। কোথা দিয়ে? হ্যাঁ ঘরের দরজা আটকানো ছিলোনা ঠিকই, তাও খুব বেশী আলোতো ছিলোনা যে আমাদের পরিস্কার দেখতে পাবে। এর আগে যারাই সুদিপার সাথে করেছে তাদের কি ভাবে দেখতো? তারা কি জানতো যে আর কেউ দেখবে ওদের?
নাঃ পরে চিন্তা করবো এখন যা যা করার দরকার করি। পুলিশের লোকজন বেশ খুটিয়ে খুটিয়ে চারপাশ দেখছে। আর জিজ্ঞেস করে চলেছে ওদের আশেপাশের বাড়ীর লোকজনকে জিজ্ঞেস করে চলেছে, অস্বাভাবিক কিছু দেখেছে নাকি।
টেলিফোনের ডিরেক্টরি দেখে পুলিশ দু একজনকে ফোন করেছে নিকটাত্মিয় কাউকে খোঁজ দেওয়ার জন্যে। হাবলুদার দেশের বাড়ি মেদিনীপুর, সুদিপাও মেদিনিপুরেরই মেয়ে। পুলিশ রিডায়াল করতে মেদিনিপুরের কোনো বাড়িতে সেটার সংযোগ হোলো।
কথপকথনে বোঝা যাচ্ছে যে এই নাম্বারে প্রায়ই এরা ফোন করতো, কিন্তু সরাসরি এদের সাথে কোন সম্পর্ক নেই, মানে এরা পাশের বাড়ি থেকে কাউকে ডেকে দেয় কথা বলার জন্যে।
আমি মাথা ঠান্ডা করে, নিজের উপস্থিতির ব্যাপারটা খুটিয়ে ভাবতে শুরু করলাম। গোয়েন্দা বই অনুযায়ি তদন্ত হলে সবার আগে উচিত আমার হাতের ছাঁপ ঘেঁটে দেওয়া। তাই সবার অলক্ষে হাচাকলটা আবার ভালো করে ধরে নিলাম, যেন আমিও মনের অজান্তেই সেটা ধরছি। উদ্দেশ্য এই যে অনেক হাতের ছাপের মধ্যে আমারটাও পরেছে।
সিনিয়র লেভেলের একজন অফিসার আসেপাসের লোকজনকে নিয়মমাফিক জিজ্ঞেস করছে, স্বাভাবিক সব প্রশ্ন। আমি ভেবে আর খুজে চলেছি যে আমার অস্তিত্ব কোথায় থাকতে পারে, কাল রাতের প্রায় পাপগমনের।
আমি ইচ্ছে করেই সেই ঘরটাই একবার ঢুকলাম, এক কনস্টেবল হা হা করে এগিয়ে এলো আমার দিকে, ‘কি করছেন টা কি দাদা? এই কেসে এরকম ঘুরে বেড়ায় নাকি? এক্ষুনি সব সিজ্* করা হবে...।‘
‘ওহ্* সরি, দাদা। বুঝতে পারিনি, আসলে ভাবতে পারছিনা যে এরকম হতে পারে, কাল তো আমিই বেরোলাম কত রাতে। এইটুকু সময়ের মধ্যে এরকম হয়ে যাবে ভাবতেও পারছিনা।‘
ইচ্ছে করে এসব বললাম যাতে অফিসারের নজর আমার দিকে পরে। আর আমার কথা শুনে সবাই আমার দিকে ঘুরে তাকালো। ওই অফিসার আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো আপনি এসেছিলেন কালকে রাতে এখানে।
বুঝলাম উদ্দেশ্য সফল।
‘হ্যাঁ। কালকে লক্ষ্মীপুজোর দিন বিজয়া করে অনেকে, সেরকম হাবলুদা আর বৌদিও আমাকে নিমন্ত্রন করেছিলেন।?
‘অ।‘
‘আপনার নাম?’
‘অভিষেক মুখার্জি।‘
‘একটু বলুন তো ভাই, কিছু অস্বাভাবিক দেখেছিলেন কিনা, আপনি নিশ্চয় বুঝতে পারছেন আমি কি বলতে চাইছি, এদিকে চলে আসুন একটু আলাদা করে কথা বলি আপনার সাথে আপত্তি নেই তো?’
বেশ ভদ্রলোক অফিসার, কথাবার্তাতেই বোঝা যায়।
লোকজন যাতে শুনতে না পায় সেরকম দুরত্বে আমি আর অফিসার গিয়ে দারালাম।
উনি নিজে সিগারেট ধরালেন আর আমার দিকে একটা এগিয়ে দিলেন। আমি চারিদিক দেখে টুক করে তুলে নিলাম সিগারেট, তা দেখে উনি হেসে দিলেন।
‘আসলে অনেক সিনিয়র লোকজন আছে তো তাই ...।‘
‘তাতে কি সিগেরেটের ধোঁয়ায় যদি সন্মান চলে যায় তাহলে সেরকম সন্মান না থাকায় ভালো, প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে, সিগেরেট খাবেনা, মেয়ে দেখবে না, মদ খাবেনা এসব হয় নাকি?’
বুঝলাম খাপে খাপ পঁঞ্চার বাপ। আমি হেসে দিলাম উনিও হেসে দিলেন।
আমি জিজ্ঞেস করলাম ‘কোন কলেজ আপনার?’
‘সেন্ট জেভিয়ার্স ১৯৮৮।‘
‘১৯৮৮!! সুবিরদাকে চেনেন?’
‘আরে দাড়া দাড়া সব চিনি, এ পাড়ারই তো হনু। বলবি কবিরের কথা?’
‘আরে না গুরু, তুমি সেই কবিরদা যে “সোহাগ চাঁদ বদনি” গেয়ে সোশ্যাল মাত করেছিলে? সুবিরদা বেশ বলে তোমার কথা।’
‘হ্যাঁ, ওই তখন একটু আধটু গাইতাম আরকি? ছার পরে হবে, লোকজন শুনতে পেলে বলবে কর্তব্যে গাফিলতি। এবার বলে ফেল তো কি কেস?’
মনে মনে ভাবলাম পুলিশ বহুরুপি হয়, তাই বেশী খোলসা না করে ওপর ওপর বলি।
আমি তুলিদের বাড়ি থেকে ফেরার পর থেকে প্রসাদ খাওয়া পর্যন্ত সব ঠিকঠাক বললাম, তারপরের ঘটনাগুলো স্বরচিত, নিজে বাঁচার তাগিদে।
‘প্রসাদ খেয়ে চলে যাওয়ার সময় বৌদি সিড়ির গেট খুলতে আমার সাথে নেমে এলো। নামতে নামতে, বৌদি সিড়িতে হোঁচট খেয়ে আমার গায়ের ওপরে এসে পড়লো। আমার মনে হয় দাদা সেটা বৌদির ইচ্ছেকৃত করা ভেবেছিলো। সত্যি বলছি, আমি বউদিকে কোনোরকমে সিড়ির ওপোরে বসিয়ে পা টা মুচকে গেছে কিনা বোঝার চেষ্টা করছি সেই সময় হাবলুদা এমন ভাবে তাকিয়ে ছিলো যে আমার ভয়ই লেগে গেছিলো, মনে হয় বৌদিকে সন্দেহ করতেন।‘
‘তোর কি মনে হয় বউদি ইচ্ছে করে পরেছে নাকি সত্যি হোঁচট খেয়েছিলো।‘ গম্ভিরভাবেই জিজ্ঞেস করলেন উনি।
‘সেটা আমি বলতে পারবোনা।‘
কারন হিসেবে আমি পুজোর এই সল্প সময়ের মধ্যে কি কি ঘটেছে তা পুঙ্খানুপুঙ্খুঃ অফিসারকে জানালাম।
‘তারপর?’ পেশাদার গলায় প্রশ্ন ভেসে এলো।
‘তারপর মনে হয় ঝগড়া একটা বেধেছিলো। সেটা আমি নিচে নামতে নামতেই শুনতে পেয়েছিলাম, ব্যাস এইটুকুই জানি। তারপর আজ সকালে তো এই কেস। কিন্তু বুঝতে পারছিনা, বৌদির শরীরে কাপড় নেই আর দাদা পাঞ্জাবি পায়জামা পরা। কেন?’
‘কি করিস তুই?’
‘একটা অডিট ফার্মে চাকরি করি আর সি.এ. পরছি।‘
‘গোয়েন্দা নয় তো?’
আমি বুঝেও বোকার মত ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলাম।
‘ছাড় না, এত চিন্তা করার কি আছে, কে ল্যাংটো হয়ে মরেছে আর কে জামা পরে তুই চিন্তা করছিস কেন, সে চিন্তা করার জন্যে কত লোক আছে। একটু হেল্প করিস, মাঝে সাঝে থানায় ডাক পড়তে পারে। দয়া করে পায়ের ধুলো দিস ভাই। শুনলাম তুইই তো হোতা এপাড়ার। আর তোর সুবিরদাকে বলিস ভাই আমার একটা মিউজিকাল লাইটার ঝেড়েছিলো সেটা ফেরত দিতে, ওতে আমার অনেক স্মৃতি আছে।‘
দেহগুলি পোষ্টমর্টেম এ নিয়ে যাবে একটা জাল দেওয়া পুলিশের গাড়িতে সেগুলো তুলে দেওয়া হোলো। খুব খারাপ লাগছে। আমি হয়তো ঝামেলা এড়িয়ে যেতে পারলাম, কিন্তু দুটো প্রান চলে গেলো, বিশেষ করে সুদিপার জন্যে খারাপ লাগছে। স্বামির বিকৃত যৌন কামনার স্বিকার সে। কোন মেয়ের যতই ছুকছুকানি থাকুক না কেন, তার স্বামি যদি তাকে প্রভাবিত করে নিজেকে পরপুরুষের শয্যাসঙ্গিনী হতে তাহলে তার মানসিক অবস্থা কিরকম হতে পারে। এই যে বিজয়ার মা, টুলটুলি, আরো অনেকে যে গাঁঢ় মারিয়ে বেড়ায়, তাড়া নিশ্চয় স্বামির চোখের সামনে যৌনসম্ভোগ করেনা। স্বামি কেন আরেকজনের সামনে কারো সাথে চোদাচুদি করা আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারিনা।
সত্যিই তো, তাহলে মানুষ আর কুকুরের মধ্যে পার্থক্য কি থাকে? ভাদ্র মাসের কুকুররা এরকম করে দেখি। একজন লাগাচ্ছে মাদি কুকুরকে তো আরো দুজন লাইন দিয়ে আছে, একজনের শেষ হলে আরেকজন লাগাবে বলে। এই জন্যেই তো কেউ যদি কাউকে ‘কুত্তার বাচ্চা’ বলে তাতে অসম্মান হয় কারন, কার বীর্যে জন্ম সেটা কেউ জানেনা, এমন কি কুত্তার বাচ্চার মাও না। মা কি করে বলবে? বাপ তো পিছে সে আয়া, পিছে সে গ্যায়া।
পাড়ার হোতা তাই অফিস কামাই। চললাম সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে। মোমিনপুর লাশকাটা ঘর থেকে ওদের শ্মশানে নিয়ে দাহ করতে। এদিকে আর নিয়ে আসা হবেনা, তাই সব ওদের আত্মিয়স্বজনকে মোমিনপুরেই আসতে বলা হয়েছে।
আমি বাড়িতে ঢুকলাম, ড্রেস চেঞ্জ করার জন্যে। প্রায় দশটা বাজে। মার ঘরে গিয়ে দেখি তুলি বসে আছে। আমাকে পাত্তাই দিলোনা। দেবে কেন? গাছের ডাল দিয়ে কি হবে, শিকর যার বন্ধু। মার সাথে এমন ভাবে কথা বলছে যেন সাত জন্মের দুই সই। অন্য সময় হলে বেশ ভালোই লাগতো। কিন্তু, ওকে দেখে মেজাজটা বিগরে গেলো। সেই সুদিপার কথাটা মাথার মধ্যে ঘুরছে ‘মেদিনিপুরের শ্যামল আর প্রকাশ ...।‘
তুলি মেদিনীপুর কি করতে গেছিলো? আবার ওর মাও ছিলো।
সুদিপা মরে গিয়ে আমার বুকে চিরদিনের মত একটা ঘা দিয়ে গেলো। কিন্তু আমি সুবিচারক হিসেবে খ্যাত। নিজের জীবনের ক্ষেত্রেও আমাকে সুবিচার করতেই হবে। কিন্তু এরকম একটা ঘটনার সত্যি কোথায় জানতে পারবো। তুলি নিশ্চয় নিজের মুখে খুলে বলবে না ওর লীলা খেলার কথা। আর শ্যামল আর প্রকাশকে আমি খুজে বের করতে পারলেও তারাও কি সত্যি কথা বলবে?
সুদিপা জানলো কি করে। শ্যামল আর প্রকাশ কি বলেছিলো ওকে? সুদিপা নিশ্চয় ওদের চিনতো। ওরাও তো মেদিনিপুরের। হয়তো সুদিপার সাথে এমন সম্পর্ক যে ওরা খোলাখুলি অনেক আলোচনাই করতো। যেমন পাপ্পু রিতু বোউদির সাথে করে। বিজয়ার মাকে চোদার ব্যাপারে অনেক টিপস নিতো পাপ্পু। বিজয়ার মাকে নাকি ঠান্ডা করা যায়না সহজে, পাপ্পুকে দু একবার হ্যাঁটাও করেছিলো। তাই বেশিক্ষন কিভাবে করা যায়, মেয়েদের শরীর বস করার ব্রহ্মাস্ত্র কি কি, এসব ব্যাপারে রিতু বৌদি অনেক টিপস্* দেয় পাপ্পু কে। যদিও রিতু বউদি জানে যে পাপ্পু এসব নিজের প্রেমিকার ওপর প্রয়োগ করে।
জীবনে প্রথম অপঘাতে মৃত্যু দেখলাম। এতক্ষন যেরকম তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে ভাবছিলাম ব্যাপারটা, নিজের চোখে দেখার পরে মনে হোলোএরকম যেন আমার শ্ত্রুরও না হয়। আমিই দায়ি এর জন্যে। দু দুটো প্রান চলে গেলো। হাবলুদার চোখগুলো প্রায় বেরিয়ে এসেছে কোঁঠর থেকে। খাঁটের ওপরে শোয়ানো দেহটা, গলার চাপে পায়জামায় পেচ্ছাপ করে দিয়েছে, অনেকটা যায়গা জুরে দাগ হয়ে রয়েছে দেখছি। আরেকটা ঘরের মেঝেতে সুদিপার লাশ বিছানার চাদর দিয়ে ঢাকা। হয়তো আমি ফিরে যাওয়ার কিছুক্ষনের মধ্যেই শেষ হয়ে গেছে। উলঙ্গ অবস্থাতেই যে মারা গেছে তা বুঝতে অসুবিধে হয় না। এই জন্যে রটেছে যে, ওকে রেপ করা হয়েছে। মা তো আমাকে তাই বললো। নিশ্চয় লোকের মুখে তাই রটেছে বলে বলেছে।
মুখটাও ভালো করে ঢাকেনি এরা। চোখমুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে কিরকম মানসিক অবস্থার মধ্যে ছিলো ওরা। আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে হয়ত দুজনেই পরম তৃপ্তিতে আরেকটা দিন শুরু করতে পারতো। কিন্তু এই ব্যাপারের জন্যে এই ভাবে নিজেদের শেষ করে দিলো। ভয় পেয়ে গেছিলো?
আরেকটু অপেক্ষা করতে পারতো। যদি রটনা সত্যি ঘটতো তাহলে না হয় করতে পারতো, ও তো মেয়েমানুষ কেউ কি বিশ্বাস করতো যে ও কোন পুরুষমানুষের সাথে জোর করে যৌনসম্ভোগ করতে চাইছিলো।
কে উদ্যোগ নিলো এসবের? হাবলুদা, এরকম নরমসরম লোক কি করে নিজের বৌয়ের খুন করে নিজে ঝুলে পরলো। অন্তত আমার তো তাই মনে হয়।
সত্যি, মানুষের খোলনলচে দেখে বোঝা যায়না যে সে ভিতরে ভিতরে কিরকম হতে পারে।
হাবলুদাকে দেখে তো কেউ ভাবতেই পারবেনা যে এরকম করতে পারে। কি পেত? নিজের বৌকে অন্য পুরুষের সাথে সম্ভোগ করতে দেখতে। কালকে কি আমাকেও দেখছিলো, সুদিপা তো আমার বাড়া বের করে চুষতে গেছিলো। তাহলে হাবলুদা কি ভাবে দেখছিলো। কোথা দিয়ে? হ্যাঁ ঘরের দরজা আটকানো ছিলোনা ঠিকই, তাও খুব বেশী আলোতো ছিলোনা যে আমাদের পরিস্কার দেখতে পাবে। এর আগে যারাই সুদিপার সাথে করেছে তাদের কি ভাবে দেখতো? তারা কি জানতো যে আর কেউ দেখবে ওদের?
নাঃ পরে চিন্তা করবো এখন যা যা করার দরকার করি। পুলিশের লোকজন বেশ খুটিয়ে খুটিয়ে চারপাশ দেখছে। আর জিজ্ঞেস করে চলেছে ওদের আশেপাশের বাড়ীর লোকজনকে জিজ্ঞেস করে চলেছে, অস্বাভাবিক কিছু দেখেছে নাকি।
টেলিফোনের ডিরেক্টরি দেখে পুলিশ দু একজনকে ফোন করেছে নিকটাত্মিয় কাউকে খোঁজ দেওয়ার জন্যে। হাবলুদার দেশের বাড়ি মেদিনীপুর, সুদিপাও মেদিনিপুরেরই মেয়ে। পুলিশ রিডায়াল করতে মেদিনিপুরের কোনো বাড়িতে সেটার সংযোগ হোলো।
কথপকথনে বোঝা যাচ্ছে যে এই নাম্বারে প্রায়ই এরা ফোন করতো, কিন্তু সরাসরি এদের সাথে কোন সম্পর্ক নেই, মানে এরা পাশের বাড়ি থেকে কাউকে ডেকে দেয় কথা বলার জন্যে।
আমি মাথা ঠান্ডা করে, নিজের উপস্থিতির ব্যাপারটা খুটিয়ে ভাবতে শুরু করলাম। গোয়েন্দা বই অনুযায়ি তদন্ত হলে সবার আগে উচিত আমার হাতের ছাঁপ ঘেঁটে দেওয়া। তাই সবার অলক্ষে হাচাকলটা আবার ভালো করে ধরে নিলাম, যেন আমিও মনের অজান্তেই সেটা ধরছি। উদ্দেশ্য এই যে অনেক হাতের ছাপের মধ্যে আমারটাও পরেছে।
সিনিয়র লেভেলের একজন অফিসার আসেপাসের লোকজনকে নিয়মমাফিক জিজ্ঞেস করছে, স্বাভাবিক সব প্রশ্ন। আমি ভেবে আর খুজে চলেছি যে আমার অস্তিত্ব কোথায় থাকতে পারে, কাল রাতের প্রায় পাপগমনের।
আমি ইচ্ছে করেই সেই ঘরটাই একবার ঢুকলাম, এক কনস্টেবল হা হা করে এগিয়ে এলো আমার দিকে, ‘কি করছেন টা কি দাদা? এই কেসে এরকম ঘুরে বেড়ায় নাকি? এক্ষুনি সব সিজ্* করা হবে...।‘
‘ওহ্* সরি, দাদা। বুঝতে পারিনি, আসলে ভাবতে পারছিনা যে এরকম হতে পারে, কাল তো আমিই বেরোলাম কত রাতে। এইটুকু সময়ের মধ্যে এরকম হয়ে যাবে ভাবতেও পারছিনা।‘
ইচ্ছে করে এসব বললাম যাতে অফিসারের নজর আমার দিকে পরে। আর আমার কথা শুনে সবাই আমার দিকে ঘুরে তাকালো। ওই অফিসার আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো আপনি এসেছিলেন কালকে রাতে এখানে।
বুঝলাম উদ্দেশ্য সফল।
‘হ্যাঁ। কালকে লক্ষ্মীপুজোর দিন বিজয়া করে অনেকে, সেরকম হাবলুদা আর বৌদিও আমাকে নিমন্ত্রন করেছিলেন।?
‘অ।‘
‘আপনার নাম?’
‘অভিষেক মুখার্জি।‘
‘একটু বলুন তো ভাই, কিছু অস্বাভাবিক দেখেছিলেন কিনা, আপনি নিশ্চয় বুঝতে পারছেন আমি কি বলতে চাইছি, এদিকে চলে আসুন একটু আলাদা করে কথা বলি আপনার সাথে আপত্তি নেই তো?’
বেশ ভদ্রলোক অফিসার, কথাবার্তাতেই বোঝা যায়।
লোকজন যাতে শুনতে না পায় সেরকম দুরত্বে আমি আর অফিসার গিয়ে দারালাম।
উনি নিজে সিগারেট ধরালেন আর আমার দিকে একটা এগিয়ে দিলেন। আমি চারিদিক দেখে টুক করে তুলে নিলাম সিগারেট, তা দেখে উনি হেসে দিলেন।
‘আসলে অনেক সিনিয়র লোকজন আছে তো তাই ...।‘
‘তাতে কি সিগেরেটের ধোঁয়ায় যদি সন্মান চলে যায় তাহলে সেরকম সন্মান না থাকায় ভালো, প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে, সিগেরেট খাবেনা, মেয়ে দেখবে না, মদ খাবেনা এসব হয় নাকি?’
বুঝলাম খাপে খাপ পঁঞ্চার বাপ। আমি হেসে দিলাম উনিও হেসে দিলেন।
আমি জিজ্ঞেস করলাম ‘কোন কলেজ আপনার?’
‘সেন্ট জেভিয়ার্স ১৯৮৮।‘
‘১৯৮৮!! সুবিরদাকে চেনেন?’
‘আরে দাড়া দাড়া সব চিনি, এ পাড়ারই তো হনু। বলবি কবিরের কথা?’
‘আরে না গুরু, তুমি সেই কবিরদা যে “সোহাগ চাঁদ বদনি” গেয়ে সোশ্যাল মাত করেছিলে? সুবিরদা বেশ বলে তোমার কথা।’
‘হ্যাঁ, ওই তখন একটু আধটু গাইতাম আরকি? ছার পরে হবে, লোকজন শুনতে পেলে বলবে কর্তব্যে গাফিলতি। এবার বলে ফেল তো কি কেস?’
মনে মনে ভাবলাম পুলিশ বহুরুপি হয়, তাই বেশী খোলসা না করে ওপর ওপর বলি।
আমি তুলিদের বাড়ি থেকে ফেরার পর থেকে প্রসাদ খাওয়া পর্যন্ত সব ঠিকঠাক বললাম, তারপরের ঘটনাগুলো স্বরচিত, নিজে বাঁচার তাগিদে।
‘প্রসাদ খেয়ে চলে যাওয়ার সময় বৌদি সিড়ির গেট খুলতে আমার সাথে নেমে এলো। নামতে নামতে, বৌদি সিড়িতে হোঁচট খেয়ে আমার গায়ের ওপরে এসে পড়লো। আমার মনে হয় দাদা সেটা বৌদির ইচ্ছেকৃত করা ভেবেছিলো। সত্যি বলছি, আমি বউদিকে কোনোরকমে সিড়ির ওপোরে বসিয়ে পা টা মুচকে গেছে কিনা বোঝার চেষ্টা করছি সেই সময় হাবলুদা এমন ভাবে তাকিয়ে ছিলো যে আমার ভয়ই লেগে গেছিলো, মনে হয় বৌদিকে সন্দেহ করতেন।‘
‘তোর কি মনে হয় বউদি ইচ্ছে করে পরেছে নাকি সত্যি হোঁচট খেয়েছিলো।‘ গম্ভিরভাবেই জিজ্ঞেস করলেন উনি।
‘সেটা আমি বলতে পারবোনা।‘
কারন হিসেবে আমি পুজোর এই সল্প সময়ের মধ্যে কি কি ঘটেছে তা পুঙ্খানুপুঙ্খুঃ অফিসারকে জানালাম।
‘তারপর?’ পেশাদার গলায় প্রশ্ন ভেসে এলো।
‘তারপর মনে হয় ঝগড়া একটা বেধেছিলো। সেটা আমি নিচে নামতে নামতেই শুনতে পেয়েছিলাম, ব্যাস এইটুকুই জানি। তারপর আজ সকালে তো এই কেস। কিন্তু বুঝতে পারছিনা, বৌদির শরীরে কাপড় নেই আর দাদা পাঞ্জাবি পায়জামা পরা। কেন?’
‘কি করিস তুই?’
‘একটা অডিট ফার্মে চাকরি করি আর সি.এ. পরছি।‘
‘গোয়েন্দা নয় তো?’
আমি বুঝেও বোকার মত ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলাম।
‘ছাড় না, এত চিন্তা করার কি আছে, কে ল্যাংটো হয়ে মরেছে আর কে জামা পরে তুই চিন্তা করছিস কেন, সে চিন্তা করার জন্যে কত লোক আছে। একটু হেল্প করিস, মাঝে সাঝে থানায় ডাক পড়তে পারে। দয়া করে পায়ের ধুলো দিস ভাই। শুনলাম তুইই তো হোতা এপাড়ার। আর তোর সুবিরদাকে বলিস ভাই আমার একটা মিউজিকাল লাইটার ঝেড়েছিলো সেটা ফেরত দিতে, ওতে আমার অনেক স্মৃতি আছে।‘
দেহগুলি পোষ্টমর্টেম এ নিয়ে যাবে একটা জাল দেওয়া পুলিশের গাড়িতে সেগুলো তুলে দেওয়া হোলো। খুব খারাপ লাগছে। আমি হয়তো ঝামেলা এড়িয়ে যেতে পারলাম, কিন্তু দুটো প্রান চলে গেলো, বিশেষ করে সুদিপার জন্যে খারাপ লাগছে। স্বামির বিকৃত যৌন কামনার স্বিকার সে। কোন মেয়ের যতই ছুকছুকানি থাকুক না কেন, তার স্বামি যদি তাকে প্রভাবিত করে নিজেকে পরপুরুষের শয্যাসঙ্গিনী হতে তাহলে তার মানসিক অবস্থা কিরকম হতে পারে। এই যে বিজয়ার মা, টুলটুলি, আরো অনেকে যে গাঁঢ় মারিয়ে বেড়ায়, তাড়া নিশ্চয় স্বামির চোখের সামনে যৌনসম্ভোগ করেনা। স্বামি কেন আরেকজনের সামনে কারো সাথে চোদাচুদি করা আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারিনা।
সত্যিই তো, তাহলে মানুষ আর কুকুরের মধ্যে পার্থক্য কি থাকে? ভাদ্র মাসের কুকুররা এরকম করে দেখি। একজন লাগাচ্ছে মাদি কুকুরকে তো আরো দুজন লাইন দিয়ে আছে, একজনের শেষ হলে আরেকজন লাগাবে বলে। এই জন্যেই তো কেউ যদি কাউকে ‘কুত্তার বাচ্চা’ বলে তাতে অসম্মান হয় কারন, কার বীর্যে জন্ম সেটা কেউ জানেনা, এমন কি কুত্তার বাচ্চার মাও না। মা কি করে বলবে? বাপ তো পিছে সে আয়া, পিছে সে গ্যায়া।
পাড়ার হোতা তাই অফিস কামাই। চললাম সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে। মোমিনপুর লাশকাটা ঘর থেকে ওদের শ্মশানে নিয়ে দাহ করতে। এদিকে আর নিয়ে আসা হবেনা, তাই সব ওদের আত্মিয়স্বজনকে মোমিনপুরেই আসতে বলা হয়েছে।
আমি বাড়িতে ঢুকলাম, ড্রেস চেঞ্জ করার জন্যে। প্রায় দশটা বাজে। মার ঘরে গিয়ে দেখি তুলি বসে আছে। আমাকে পাত্তাই দিলোনা। দেবে কেন? গাছের ডাল দিয়ে কি হবে, শিকর যার বন্ধু। মার সাথে এমন ভাবে কথা বলছে যেন সাত জন্মের দুই সই। অন্য সময় হলে বেশ ভালোই লাগতো। কিন্তু, ওকে দেখে মেজাজটা বিগরে গেলো। সেই সুদিপার কথাটা মাথার মধ্যে ঘুরছে ‘মেদিনিপুরের শ্যামল আর প্রকাশ ...।‘
তুলি মেদিনীপুর কি করতে গেছিলো? আবার ওর মাও ছিলো।
সুদিপা মরে গিয়ে আমার বুকে চিরদিনের মত একটা ঘা দিয়ে গেলো। কিন্তু আমি সুবিচারক হিসেবে খ্যাত। নিজের জীবনের ক্ষেত্রেও আমাকে সুবিচার করতেই হবে। কিন্তু এরকম একটা ঘটনার সত্যি কোথায় জানতে পারবো। তুলি নিশ্চয় নিজের মুখে খুলে বলবে না ওর লীলা খেলার কথা। আর শ্যামল আর প্রকাশকে আমি খুজে বের করতে পারলেও তারাও কি সত্যি কথা বলবে?
সুদিপা জানলো কি করে। শ্যামল আর প্রকাশ কি বলেছিলো ওকে? সুদিপা নিশ্চয় ওদের চিনতো। ওরাও তো মেদিনিপুরের। হয়তো সুদিপার সাথে এমন সম্পর্ক যে ওরা খোলাখুলি অনেক আলোচনাই করতো। যেমন পাপ্পু রিতু বোউদির সাথে করে। বিজয়ার মাকে চোদার ব্যাপারে অনেক টিপস নিতো পাপ্পু। বিজয়ার মাকে নাকি ঠান্ডা করা যায়না সহজে, পাপ্পুকে দু একবার হ্যাঁটাও করেছিলো। তাই বেশিক্ষন কিভাবে করা যায়, মেয়েদের শরীর বস করার ব্রহ্মাস্ত্র কি কি, এসব ব্যাপারে রিতু বৌদি অনেক টিপস্* দেয় পাপ্পু কে। যদিও রিতু বউদি জানে যে পাপ্পু এসব নিজের প্রেমিকার ওপর প্রয়োগ করে।