31-12-2018, 04:13 PM
তুলি আজকে আমাকে ভাসান ঘাটেই না জড়িয়ে ধরে, বলা যায় না। যেরকম বালখিল্যপনা করে।
ধীরে ধীরে নির্ঝঞ্ঝাটেই আমাদের ভাসান, নিরঞ্জন ঘাটে এসে পৌছুলো। রাস্তাই অনেকের সাথে বিজয়া হোলো। অনেকে চেনা, অনেকে অচেনা, পাশাপাশি ভাসান গেলেই এসব হয়।
শেষ মুহুর্তে, বাজনদারদের দম বেড়ে যায়, তাই ধামাকা বাজিয়ে চলেছে। আমি তুলিদের পাড়ার ভাসান খুজছি। হ্যাঁ, ওদেরটাও এসে গেছে। ওইতো তুলি। পাপ্পু অলরেডি খুজে পেয়েছে। আমার দিকে তাকিয়েই কথা বলছে। তুলি আমার দিকে কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে, যার মানে আমার পাশে এসে দাড়াতে চাইছে কিন্তু পারছেনা। চোখে হিংসে, মেয়েলি হিংসে, অন্য মেয়েরা আমার দিকে তাকিয়ে আছে তো। ওর পাশেই যারা দাড়িয়ে আছে তারাই।
আমাদের পাড়ার সিঁদুর খেলা শুরু হয়েছে। যে যাকে পারে মাখায়। আমাদের কেউ মাখাতে আসেনা, যানে খিস্তি দিয়ে দেবো। তাই আমারা ওদিকে নাক গলায় না।
আমি তুলির দিকে তাকিয়ে আছি, পাপ্পু বকবক করে চলেছে। তুলিও আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ছোট্ট করে ইশারা করলাম আমার কাছে আসার জন্যে। ও যেন অপেক্ষা করছিলো এর জন্যে। হুরমুর হুরমুর করে আমার দিকে এগিয়ে আসছে কেউ সামনে পরলে ঠেলে সরিয়ে দিচ্ছে। হঠাৎ আমার মুখের মধ্যে এক ঝাপ্টা, সামলে নিয়ে দেখি, সুদিপা বৌদি, আমার মুখে একগাদা তেল সিঁদুর মাখিয়ে দিলো, ‘উঃ লাটসাহেব, খালি মুখে ঘুরে বেরাবেন’ বলে সেই কামুক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। তুলি থমকে গেল। সুদিপা বলে চলেছে ‘ বৌদির হাত থেকে ছাড় নেই ......।‘ শুনতে পাচ্ছিনা ওর বকবক। দেখছি তুলি ঘুরে গেছে, চলে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে টের পাচ্ছি যে ও মাই ঘষে দিচ্ছে আমার অন্যমনস্ক শরীরে।
অনেকক্ষণ তুলিকে দেখতে পেলাম না। আমি ওকে খুজতেও যেতে পারছিনা। ইস এই সুদিপা মাগিটা তো আচ্ছা গায়ে পরা মাল্*। বরটার মতই কেলানে। আমার তুলিটা কোথায় গেলো।
ওদের ঠাকুরও ভাসান হবে বলে ঘোষনা হয়ে গেছে মাইকে। ওদের সবার নাচ শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু তুলি কোথায়। বেশ জম্পেস নাচ হছে ওদের, ভিড় হয়ে আছে, গোল হয়ে নাচ্ছে সবাই, অন্য সময় হলে ভালোই লাগতো, কিন্তু এখন তুলির চিন্তায় ভালো লাগছেনা। কোথায় গেল মেয়েটা?
ওহঃ মাই গড্*। তুলি তো নাচছে। ওকে ঘিরেই তো এতো ভিড়। হে ভগবান। একি শাস্তি দিলে আমাকে। আমার মান সন্মান নষ্ট করে......।
জানিনা কে কে দেখেছে। কেউ না দেখলেও, আমিতো দেখেছি। কি প্রতিক্রিয়া হওয়া উচিত আমার? নিজেই নিজেকে দোষ দিচ্ছি, আরেকটু দেখেশুনে নিলে হয়তো ভালো হোতো। আজ দুপুরে তো ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘোষনা হয়ে গেলো। আর এখন, এখন আমি কি করি। যে মেয়ে হাঁটেবাজারে নাচতে পারে সে কি না পারে। হতে পারে, ওই সুদিপা মাগিটার আচরনে তুলি দুঃখ পেয়েছে, ও হয়তো আমাকে ভুল বুঝছে, তা বলে এই ভাবে ...।
ভাসান শেষে, আনমনে হেঁটে চলেছি। পাশে সবাই আলোচনা করে চলেছে, ভাসানে কি কি হোলো। কে কে বেশী বাওয়াল দিলো। কিন্তু আমার মনে তুলির এই আচরন নিয়ে অনেক প্রশ্ন তোলাপার করে চলেছে। নিঃশব্দে হেটে চলেছি, ঝাঁকে মিশে। একা থাকার সব থেকে ভাল উপায় ঝাঁকে মিশে যাওয়া। কেউ খুজবেনা তোমাকে, যেহেতু সবাই দেখতে পাচ্ছে। তুলিদের ভাসান আমাদের আগেই হয়ে গেছিলো, তুলিকে চলে যেতেও দেখলাম, কিন্তু আমার দিকে একবারের জন্যে তাকায়নি। এত তেজ!
ইচ্ছে হচ্ছিলো যে গিয়ে ধরি আর জিঘ্যেস করি যে কেনো ও এরকম করলো। কি করে যেতাম। এই তো বালের সব লোকজন, কেউ যে দায়িত্ব নেবে সেরকম আছে নাকি। সামনের বছর এসবের মধ্যে একদম জড়াবো না নিজেকে।
আজকে আর বেশিক্ষন আড্ডা দেবো না, প্রতি বছরের মত। বাড়ি চলে যাবো। একদম ভাল লাগছেনা। এ কেমন বিজয়া এলো আমার?
হাতে একটা ঝটকা টানে, মাথা তুলে দেখি, সেই হাবলুদা। মুহুর্তের জন্যে ভেবেছিলাম তুলি। মনে একটা ১০০০ ওয়াটের আলো জ্বলে উঠেছিলো। শালা ঝাঁট জ্বলে গেল আমার। তবুও মুখে হাসি, ভদ্রলোকের ছেলে তো আমি তাই খিস্তি করতে পারলাম না।
‘শোন বিয়েতে আসিস নি, আসিস নি। ছেড়ে দিলাম। কিন্তু লক্ষ্মীপুজোর দিন আসতেই হবে, বিজয়াটা সেদিন হবে। না হোলে তোর বৌদি আর আমি দুজনেই আর কোনোদিন কথা বলবোনা।‘ আদিখ্যেতার চূড়ান্ত। আর বৌটা এখনো যে ভাবে দেখছে তাতে মনে হয় লক্ষ্মীপুজোর দিন আমি গেলে আমাকে উলঙ্গ হয়ে স্বাগত করবে। এই বোকাচোদা কি বুঝতে পারছেনা বৌয়ের কুটকুটানি। এমনিতে আচ্ছাকরে আমার গাঁঢ মেরে দিয়েছে, তারওপর এরকম আদেখলাপনা করে চলেছে। আর কেউ কিন্তু এরকম করছে না। অভিকে সবাইই ভালবাসে, কিন্তু সমান সমান ভাবে মেলামেশার চেষ্টা করে। এই যে মাসিমার ছেলে, পান থেকে চুন খস্*লে আমাদের খাণকির ছেলেও বলতে ছাড়েনা, তাস খেলা বা মাল খাওয়ার সময়। আমার এই রকম লোক খুব ভাল লাগে। কে বাজে বলবে। IIT + IIM. একটা পাব্লিক সেক্টর কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট। মাত্র ৪০ বছর বয়েশে। ঊনিও তো আমাকে কত ভালবাসে, আসলে আমার স্মার্ট লোকজন বেশী ভালো লাগে, বস যদি মানি, বড় যদি মানি তো যোগ্যতার দৌলতে। এরকম আদেখলাপনা করলে ভাল তো লাগেই না বরঞ্চ ঝাঁট জ্বলে যায়।
আমি শুধু হাসলাম কোন উত্তর দিলাম না। কি উত্তর দেবো?
তবু ভবি ভোলার নয়। এবার বৌএর পালা ‘না আসলে কিন্তু মনে থাকে যেন।’ আমার মুখ থেকে হ্যাঁ শুনেই ছারবে দেখছি। শালা এরা আমার ইমেজের, পারসোনালিটির মা চুদে ছেড়ে দিচ্ছে, এমন গায়ে পরেছে। কেউ সাহস পায়না আমি মাল খেয়ে থাকলে আলফাল বকবক করার, আর এরা সেই যে সকাল থেকে পিছু নিয়েছে আর ছারছেই না।
তাও মুখে হাসি, মনে রাগ নিয়ে বললাম ‘ দেখি সেদিন বাড়িতেও তো অনেকে আসবে, যদি বেরোতে পারি তো আসবো। আসছি দাড়া...।‘ মিথ্যে ডাক শোনার ভান করে চলে গেলাম ওদের সামনে থেকে, বুঝতে পারলে বুঝুক। ছেড়া গেছে আমার।
অনেকদিন পরে বাড়ির ভাত খেলাম। মা আমার একদম মনের কথা বোঝে। একদম হাল্কা নিরামিষ রান্না। মসুর ডাল, পোস্ত বড়া আর ছানার ডালনা। ছেলে কত রাজকার্জ করে এলো তো, তাই।
দুগাল খেতে খেতেই তুলির সেই নাচের দৃশ্য মনে পরলো, কি সেই নাচ, মা দুর্গা হয়ে অসুর বধ করছে, একটা বোকাচোদা আবার অসুর হয়ে নাচছে। একগাদা ছেলে ঘিরে ধরে নেচে চলেছে। শালি খান... । থাক থাক, তুলি থাক এখন, নিজের মনকে বললাম। কিন্তু তুলির সাথে সাথে খাবারগুলোও আর নামতে চাইলো না।
মা সামনে বসে আছে, কি বলি। মুখে তো মদের গন্ধ পাচ্ছেই। সে সব সয়ে নিয়েছে। জানে যে ছেলে বোতল ধরে খেয়ে নিলেও অসভ্যতা করবে না। মাতলামি করবে না।
‘আর খেতে পারছিনা মা।‘ অসহায় মুখে আমি বললাম।
‘সেকিরে? এক মুঠ তো তুললি সবে।‘ বলে কিছু বোঝার চেষ্টা করলো, মানে আমার নেশার পরিমান কতটা।
‘আর পারবোনা মা, প্লিজ, অনেক বোঁদে খেয়েছি আজকে, গা গুলাচ্ছে।‘ গা গুলানোর কথাটা এই সময় মোক্ষম অস্ত্র।
‘ঠিক আছে যা, একটা আমলকি মুখে দিয়ে শুয়ে পর। আর সিনেমা টিনেমা দেখতে বসিস না যেন। ভালো করে ঘুমো কদিন। কাল বাদে পরশু থেকে তো আবার অফিস।‘
সত্যি কেউ যদি নিরপেক্ষ ভাবে ভাবে তাহলে মায়ের মত কেউ হয় না।
সেই বিছানা, এই বিছানাতেই তো কালকে কত কি… ইস কেন করলাম। নিজেকে একটু সামলালে আজকে এই ধাক্কাটা খেতে হোতো না। তুলিই কি পৃথিবীর শেষ মেয়ে, যে আমার তর সইলো না। আমার কি করা উচিত আমি নিজেই বুঝতে পারছিনা। তুলিকে কি আমি ঘেন্না করতে শুরু করেছি, না তুলির ওপরে আমার শুধু রাগ হয়েছে? নিজেকে নিজে প্রশ্ন করছি নিজের মন বোঝার চেষ্টা করছি। ঘড়ির কাঁটা ঘুরে চলেছে, আমার দুচোখে তুলির সেই নাচ, যেন আমার মাথার মধ্যে নেচে চলেছে।
তুলি কি আমাকে ভুলে গেল, সুদিপা মাগির ওই দৃশ্য দেখে? পুজোর সময় তো এরকম কত কিছু হয়, তাবলে ও আমার ওপর শোধ নিতে গিয়ে এরকম করবে, যেখানে সকাল বেলাতেই ও যেরকম আদর, সন্মান, ভালোবাসা পেলো সেটা অন্য কোন ছেলের প্রেমিকা হয়ে কি ও পেত?
এর পরেও কি তুলিকে আমি ভালোবাসতে পারবো? আজকে নাচল, কালকে অন্য কিছু করবেনা তার কি ভরসা।
নাঃ ওর সাথে আমি আর যেচে কথা বলবো না। ও যদি আমাকে চেনাজানা স্বতেও এরকম করতে পারে আমি কেন আগ বাড়িয়ে মিটমাট করতে যাবো।
এতসত চিন্তা করতে করতে রাত প্রায় ভোর হয়ে এসেছে। দুচোখে একটু টান ধরে ঘুমিয়ে পরেছি, ঘুমের মধ্যেই মনে হোলো, কে যেন আমার কপাল ছুয়ে দিচ্ছে মাঝে মাঝে, চোখ খুলে দেখি তুলি, ওর ভেজা ঠোঁট দিয়ে আমার কপালে চুমু খাচ্ছে।
‘খুব রাগ না?’ চোখ পাকিয়ে আমাকে জিঘ্যেস করলো। ওর শরীরের গন্ধ আমার নাকে এসে আমাকে মাতাল করে তুলছে। পাতলা হাতের পাতা দিয়ে আমার কপালের ওপরে এসে পরা চুলগুলো সরিয়ে সরিয়ে চুমু খাচ্ছে আর আমার দিকে গভীরভাবে তাকিয়ে আছে।
আমি কেঁদেই দিলাম ওকে ধরে ‘এরকম কেন করলে?’
‘তুমি এরকম কেন করলে, আমিতো তোমার পাশেই দাড়িয়ে থাকবো বলে আসছিলাম...।‘
ধরমর করে উঠে বসলাম। কোথায় তুলি এত আমার স্বপ্ন। আর স্বপ্নের মধ্যেই আমি কাঁদছিলাম তাতে আমার চোখের পাতা এখনও ভেজা রয়েছে।
তুলি কে আমি সত্যি ভালবেসে ফেলেছি, তাই ওকে ছাড়া থাকতে হবে ভেবে আমার যন্ত্রনায় বুকে মোচর দিচ্ছে।
কিন্তু ও কেন এরকম বেলেল্লাপনা করলো। এটা যদি ও কোন ফাংশানে নাচতো তো আমি হয়ত নিজে বসে দেখতাম।
আমি কি করবো, কি করা উচিত আমার। এই চিন্তা করতে করতে আরো ঘন্টা খানেক কেটে গেল। আবার ঘুমিয়ে পরলাম। ঘুমের মধ্যে দেখতে শুরু করলাম যুবক সঙ্ঘের ক্লাবটা দারুন সাজানো, কারো বিয়ে হচ্ছে। ভালো করে তাকিয়ে দেখি লেখা ‘TULI WEDS RONY’ . বুকটা মুচড়ে উঠলো। একটা গাড়ি হর্ন দিচ্ছে আমার পিছনে, দারুন সাজানো একটা কনটেসা, গোলাপ ফুল দিয়ে সাজানো। খেয়াল করে দেখি, তুলি ভিতরে বসে আছে, কারো কথায় খুব হাসছে, আমার দিকে কি চোখ পরলো, মনে হয়তো পরলো, নাঃ, মনে হয় দেখেনি, নাহলে এরকম হাঁসতে পারতো নাকি। গাড়িটা আমাকে পাশ কাটিয়ে একটু এগিয়ে দাড়ালো, তুলির মা নেমে এলো, হাত ধরে বঁধুরুপে তুলি নেমে এলো, অসাধারন লাগছে ওকে, শরীর সাস্থ্য বেশ ভালোই হয়েছে, ঘুরে আমাকে দেখলো, ভাবলেশহীন মুখে এগিয়ে গেলো ভাড়ার অনুষ্ঠান বাড়িতে বৌ হয়ে সিংহাসনে বসবে বলে, আজকের রানি হয়ে, কারো স্বপ্নের নায়িকা হয়ে।
নাঃ আর ঘুমোনো যাবেনা, খালি এসব দেখছি। ভোরের স্বপ্ন শুনেছি সত্যি হয় তাহলে কি তুলি সত্যি......? নাঃ আর ভাবতে পারছিনা। বুকের ভিতরে খুব কষ্ট হচ্ছে, কেউ তো দেখছে না কাঁদলে কি হয়।
মনের মধ্যে কেউ যেন বলছে, নাচলে কি তার এমন শাস্তি হতে হবে, তুইও কি শালা ধোঁয়া তুলসি পাতা নাকি। মানসিক ভাবে তুইও তো বিকৃত কামের পুরুষ। মেয়েদের পোঁদ চাটিস, মনে মনে, বাড়ির কাজের লোকের ভড়াট পাছাও তোর খেঁচার বিষয়। তুই অন্যের দোষ খুঁজছিস। চুরি করিসনা তার কারন তোর চুরি করার সু্যোগ নেই। সুযোগ পেলে কি করতি না, তাহলে কিসের মহাপুরুষ তুই যে অন্যের দোষগুন খুজে বেড়াচ্ছিস।
নাঃ একটা সিদ্ধান্তে আস্তেই হবে। হ্যাঁ এখনো আমি তুলিকে ভালোবাসি, ওর শরিরটা নয়, ওকে। আমার জীবনের প্রথম নাড়ি ও। ওকে সুযোগ দিতেই হবে। কিন্তু, আমি ভাঙ্গবো তবু মঁচকাবো না। তুলিকে আসতে হবে আমার কাছে, আমি নিজে যাবো না। আর তুলি যদি না আসে তাহলে আমিও ওকে ভুলে যাবো, কষ্ট হবে জানি, তবুও যতই কষ্ট, হোক আমার ভিতরে ভিতরে যতই খারাপ হোই না আমি, এব্যাপারে আমি কোন নমনিয়তা দেখাবো না।
সারাদিনে আমি ঘর থেকে বেরোলাম না, দিনের বেলা বেশ খানিকটা ঘুমিয়ে নিলাম। আরো বেশী করে বাড়িতেই থেকে গেলাম কারন, তুলি যদি আসে আমাকে দেখতে পাবেনা, ওর মনেও নিশ্চয় কোনো প্রতিক্রিয়া হবে। নিশ্চয় আমাকে হারানোর ভয়ও ওর মধ্যে কাজ করবে যেমন আমার করছে। ও নিশ্চয় আমার মতনই ছটফট করবে।
আমাকে দেখতে না পেয়ে তুলির যে কষ্ট হবে, সেটা ভেবে আমার মধ্যে একটা ভালো লাগার অনুভুতির শুরু হোলো। ধীরে ধীরে আবার ঘুমিয়ে পরলাম রাত জাগার ক্লান্তিতে।
দুপুরে খেয়েদেয়ে উঠে মনটা উশখুশ করতে শুরু করলো কখন বিকেল হবে কখন বিকেল হবে, গিয়ে ঠেকে বসবো, আর কেউ না কেউ বলবে যে তুলি তোমাকে খুঁজতে এসেছিলো। তাহলে নিজের থেকে তুলির সাথে দেখা করার বাহানা পাওয়া যাবে। আমি গম্ভির ভাবেই থাকবো, বুঝতে দেবোনা আমার মনের দুর্বলতা।
ধীরে ধীরে নির্ঝঞ্ঝাটেই আমাদের ভাসান, নিরঞ্জন ঘাটে এসে পৌছুলো। রাস্তাই অনেকের সাথে বিজয়া হোলো। অনেকে চেনা, অনেকে অচেনা, পাশাপাশি ভাসান গেলেই এসব হয়।
শেষ মুহুর্তে, বাজনদারদের দম বেড়ে যায়, তাই ধামাকা বাজিয়ে চলেছে। আমি তুলিদের পাড়ার ভাসান খুজছি। হ্যাঁ, ওদেরটাও এসে গেছে। ওইতো তুলি। পাপ্পু অলরেডি খুজে পেয়েছে। আমার দিকে তাকিয়েই কথা বলছে। তুলি আমার দিকে কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে, যার মানে আমার পাশে এসে দাড়াতে চাইছে কিন্তু পারছেনা। চোখে হিংসে, মেয়েলি হিংসে, অন্য মেয়েরা আমার দিকে তাকিয়ে আছে তো। ওর পাশেই যারা দাড়িয়ে আছে তারাই।
আমাদের পাড়ার সিঁদুর খেলা শুরু হয়েছে। যে যাকে পারে মাখায়। আমাদের কেউ মাখাতে আসেনা, যানে খিস্তি দিয়ে দেবো। তাই আমারা ওদিকে নাক গলায় না।
আমি তুলির দিকে তাকিয়ে আছি, পাপ্পু বকবক করে চলেছে। তুলিও আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ছোট্ট করে ইশারা করলাম আমার কাছে আসার জন্যে। ও যেন অপেক্ষা করছিলো এর জন্যে। হুরমুর হুরমুর করে আমার দিকে এগিয়ে আসছে কেউ সামনে পরলে ঠেলে সরিয়ে দিচ্ছে। হঠাৎ আমার মুখের মধ্যে এক ঝাপ্টা, সামলে নিয়ে দেখি, সুদিপা বৌদি, আমার মুখে একগাদা তেল সিঁদুর মাখিয়ে দিলো, ‘উঃ লাটসাহেব, খালি মুখে ঘুরে বেরাবেন’ বলে সেই কামুক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। তুলি থমকে গেল। সুদিপা বলে চলেছে ‘ বৌদির হাত থেকে ছাড় নেই ......।‘ শুনতে পাচ্ছিনা ওর বকবক। দেখছি তুলি ঘুরে গেছে, চলে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে টের পাচ্ছি যে ও মাই ঘষে দিচ্ছে আমার অন্যমনস্ক শরীরে।
অনেকক্ষণ তুলিকে দেখতে পেলাম না। আমি ওকে খুজতেও যেতে পারছিনা। ইস এই সুদিপা মাগিটা তো আচ্ছা গায়ে পরা মাল্*। বরটার মতই কেলানে। আমার তুলিটা কোথায় গেলো।
ওদের ঠাকুরও ভাসান হবে বলে ঘোষনা হয়ে গেছে মাইকে। ওদের সবার নাচ শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু তুলি কোথায়। বেশ জম্পেস নাচ হছে ওদের, ভিড় হয়ে আছে, গোল হয়ে নাচ্ছে সবাই, অন্য সময় হলে ভালোই লাগতো, কিন্তু এখন তুলির চিন্তায় ভালো লাগছেনা। কোথায় গেল মেয়েটা?
ওহঃ মাই গড্*। তুলি তো নাচছে। ওকে ঘিরেই তো এতো ভিড়। হে ভগবান। একি শাস্তি দিলে আমাকে। আমার মান সন্মান নষ্ট করে......।
জানিনা কে কে দেখেছে। কেউ না দেখলেও, আমিতো দেখেছি। কি প্রতিক্রিয়া হওয়া উচিত আমার? নিজেই নিজেকে দোষ দিচ্ছি, আরেকটু দেখেশুনে নিলে হয়তো ভালো হোতো। আজ দুপুরে তো ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘোষনা হয়ে গেলো। আর এখন, এখন আমি কি করি। যে মেয়ে হাঁটেবাজারে নাচতে পারে সে কি না পারে। হতে পারে, ওই সুদিপা মাগিটার আচরনে তুলি দুঃখ পেয়েছে, ও হয়তো আমাকে ভুল বুঝছে, তা বলে এই ভাবে ...।
ভাসান শেষে, আনমনে হেঁটে চলেছি। পাশে সবাই আলোচনা করে চলেছে, ভাসানে কি কি হোলো। কে কে বেশী বাওয়াল দিলো। কিন্তু আমার মনে তুলির এই আচরন নিয়ে অনেক প্রশ্ন তোলাপার করে চলেছে। নিঃশব্দে হেটে চলেছি, ঝাঁকে মিশে। একা থাকার সব থেকে ভাল উপায় ঝাঁকে মিশে যাওয়া। কেউ খুজবেনা তোমাকে, যেহেতু সবাই দেখতে পাচ্ছে। তুলিদের ভাসান আমাদের আগেই হয়ে গেছিলো, তুলিকে চলে যেতেও দেখলাম, কিন্তু আমার দিকে একবারের জন্যে তাকায়নি। এত তেজ!
ইচ্ছে হচ্ছিলো যে গিয়ে ধরি আর জিঘ্যেস করি যে কেনো ও এরকম করলো। কি করে যেতাম। এই তো বালের সব লোকজন, কেউ যে দায়িত্ব নেবে সেরকম আছে নাকি। সামনের বছর এসবের মধ্যে একদম জড়াবো না নিজেকে।
আজকে আর বেশিক্ষন আড্ডা দেবো না, প্রতি বছরের মত। বাড়ি চলে যাবো। একদম ভাল লাগছেনা। এ কেমন বিজয়া এলো আমার?
হাতে একটা ঝটকা টানে, মাথা তুলে দেখি, সেই হাবলুদা। মুহুর্তের জন্যে ভেবেছিলাম তুলি। মনে একটা ১০০০ ওয়াটের আলো জ্বলে উঠেছিলো। শালা ঝাঁট জ্বলে গেল আমার। তবুও মুখে হাসি, ভদ্রলোকের ছেলে তো আমি তাই খিস্তি করতে পারলাম না।
‘শোন বিয়েতে আসিস নি, আসিস নি। ছেড়ে দিলাম। কিন্তু লক্ষ্মীপুজোর দিন আসতেই হবে, বিজয়াটা সেদিন হবে। না হোলে তোর বৌদি আর আমি দুজনেই আর কোনোদিন কথা বলবোনা।‘ আদিখ্যেতার চূড়ান্ত। আর বৌটা এখনো যে ভাবে দেখছে তাতে মনে হয় লক্ষ্মীপুজোর দিন আমি গেলে আমাকে উলঙ্গ হয়ে স্বাগত করবে। এই বোকাচোদা কি বুঝতে পারছেনা বৌয়ের কুটকুটানি। এমনিতে আচ্ছাকরে আমার গাঁঢ মেরে দিয়েছে, তারওপর এরকম আদেখলাপনা করে চলেছে। আর কেউ কিন্তু এরকম করছে না। অভিকে সবাইই ভালবাসে, কিন্তু সমান সমান ভাবে মেলামেশার চেষ্টা করে। এই যে মাসিমার ছেলে, পান থেকে চুন খস্*লে আমাদের খাণকির ছেলেও বলতে ছাড়েনা, তাস খেলা বা মাল খাওয়ার সময়। আমার এই রকম লোক খুব ভাল লাগে। কে বাজে বলবে। IIT + IIM. একটা পাব্লিক সেক্টর কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট। মাত্র ৪০ বছর বয়েশে। ঊনিও তো আমাকে কত ভালবাসে, আসলে আমার স্মার্ট লোকজন বেশী ভালো লাগে, বস যদি মানি, বড় যদি মানি তো যোগ্যতার দৌলতে। এরকম আদেখলাপনা করলে ভাল তো লাগেই না বরঞ্চ ঝাঁট জ্বলে যায়।
আমি শুধু হাসলাম কোন উত্তর দিলাম না। কি উত্তর দেবো?
তবু ভবি ভোলার নয়। এবার বৌএর পালা ‘না আসলে কিন্তু মনে থাকে যেন।’ আমার মুখ থেকে হ্যাঁ শুনেই ছারবে দেখছি। শালা এরা আমার ইমেজের, পারসোনালিটির মা চুদে ছেড়ে দিচ্ছে, এমন গায়ে পরেছে। কেউ সাহস পায়না আমি মাল খেয়ে থাকলে আলফাল বকবক করার, আর এরা সেই যে সকাল থেকে পিছু নিয়েছে আর ছারছেই না।
তাও মুখে হাসি, মনে রাগ নিয়ে বললাম ‘ দেখি সেদিন বাড়িতেও তো অনেকে আসবে, যদি বেরোতে পারি তো আসবো। আসছি দাড়া...।‘ মিথ্যে ডাক শোনার ভান করে চলে গেলাম ওদের সামনে থেকে, বুঝতে পারলে বুঝুক। ছেড়া গেছে আমার।
অনেকদিন পরে বাড়ির ভাত খেলাম। মা আমার একদম মনের কথা বোঝে। একদম হাল্কা নিরামিষ রান্না। মসুর ডাল, পোস্ত বড়া আর ছানার ডালনা। ছেলে কত রাজকার্জ করে এলো তো, তাই।
দুগাল খেতে খেতেই তুলির সেই নাচের দৃশ্য মনে পরলো, কি সেই নাচ, মা দুর্গা হয়ে অসুর বধ করছে, একটা বোকাচোদা আবার অসুর হয়ে নাচছে। একগাদা ছেলে ঘিরে ধরে নেচে চলেছে। শালি খান... । থাক থাক, তুলি থাক এখন, নিজের মনকে বললাম। কিন্তু তুলির সাথে সাথে খাবারগুলোও আর নামতে চাইলো না।
মা সামনে বসে আছে, কি বলি। মুখে তো মদের গন্ধ পাচ্ছেই। সে সব সয়ে নিয়েছে। জানে যে ছেলে বোতল ধরে খেয়ে নিলেও অসভ্যতা করবে না। মাতলামি করবে না।
‘আর খেতে পারছিনা মা।‘ অসহায় মুখে আমি বললাম।
‘সেকিরে? এক মুঠ তো তুললি সবে।‘ বলে কিছু বোঝার চেষ্টা করলো, মানে আমার নেশার পরিমান কতটা।
‘আর পারবোনা মা, প্লিজ, অনেক বোঁদে খেয়েছি আজকে, গা গুলাচ্ছে।‘ গা গুলানোর কথাটা এই সময় মোক্ষম অস্ত্র।
‘ঠিক আছে যা, একটা আমলকি মুখে দিয়ে শুয়ে পর। আর সিনেমা টিনেমা দেখতে বসিস না যেন। ভালো করে ঘুমো কদিন। কাল বাদে পরশু থেকে তো আবার অফিস।‘
সত্যি কেউ যদি নিরপেক্ষ ভাবে ভাবে তাহলে মায়ের মত কেউ হয় না।
সেই বিছানা, এই বিছানাতেই তো কালকে কত কি… ইস কেন করলাম। নিজেকে একটু সামলালে আজকে এই ধাক্কাটা খেতে হোতো না। তুলিই কি পৃথিবীর শেষ মেয়ে, যে আমার তর সইলো না। আমার কি করা উচিত আমি নিজেই বুঝতে পারছিনা। তুলিকে কি আমি ঘেন্না করতে শুরু করেছি, না তুলির ওপরে আমার শুধু রাগ হয়েছে? নিজেকে নিজে প্রশ্ন করছি নিজের মন বোঝার চেষ্টা করছি। ঘড়ির কাঁটা ঘুরে চলেছে, আমার দুচোখে তুলির সেই নাচ, যেন আমার মাথার মধ্যে নেচে চলেছে।
তুলি কি আমাকে ভুলে গেল, সুদিপা মাগির ওই দৃশ্য দেখে? পুজোর সময় তো এরকম কত কিছু হয়, তাবলে ও আমার ওপর শোধ নিতে গিয়ে এরকম করবে, যেখানে সকাল বেলাতেই ও যেরকম আদর, সন্মান, ভালোবাসা পেলো সেটা অন্য কোন ছেলের প্রেমিকা হয়ে কি ও পেত?
এর পরেও কি তুলিকে আমি ভালোবাসতে পারবো? আজকে নাচল, কালকে অন্য কিছু করবেনা তার কি ভরসা।
নাঃ ওর সাথে আমি আর যেচে কথা বলবো না। ও যদি আমাকে চেনাজানা স্বতেও এরকম করতে পারে আমি কেন আগ বাড়িয়ে মিটমাট করতে যাবো।
এতসত চিন্তা করতে করতে রাত প্রায় ভোর হয়ে এসেছে। দুচোখে একটু টান ধরে ঘুমিয়ে পরেছি, ঘুমের মধ্যেই মনে হোলো, কে যেন আমার কপাল ছুয়ে দিচ্ছে মাঝে মাঝে, চোখ খুলে দেখি তুলি, ওর ভেজা ঠোঁট দিয়ে আমার কপালে চুমু খাচ্ছে।
‘খুব রাগ না?’ চোখ পাকিয়ে আমাকে জিঘ্যেস করলো। ওর শরীরের গন্ধ আমার নাকে এসে আমাকে মাতাল করে তুলছে। পাতলা হাতের পাতা দিয়ে আমার কপালের ওপরে এসে পরা চুলগুলো সরিয়ে সরিয়ে চুমু খাচ্ছে আর আমার দিকে গভীরভাবে তাকিয়ে আছে।
আমি কেঁদেই দিলাম ওকে ধরে ‘এরকম কেন করলে?’
‘তুমি এরকম কেন করলে, আমিতো তোমার পাশেই দাড়িয়ে থাকবো বলে আসছিলাম...।‘
ধরমর করে উঠে বসলাম। কোথায় তুলি এত আমার স্বপ্ন। আর স্বপ্নের মধ্যেই আমি কাঁদছিলাম তাতে আমার চোখের পাতা এখনও ভেজা রয়েছে।
তুলি কে আমি সত্যি ভালবেসে ফেলেছি, তাই ওকে ছাড়া থাকতে হবে ভেবে আমার যন্ত্রনায় বুকে মোচর দিচ্ছে।
কিন্তু ও কেন এরকম বেলেল্লাপনা করলো। এটা যদি ও কোন ফাংশানে নাচতো তো আমি হয়ত নিজে বসে দেখতাম।
আমি কি করবো, কি করা উচিত আমার। এই চিন্তা করতে করতে আরো ঘন্টা খানেক কেটে গেল। আবার ঘুমিয়ে পরলাম। ঘুমের মধ্যে দেখতে শুরু করলাম যুবক সঙ্ঘের ক্লাবটা দারুন সাজানো, কারো বিয়ে হচ্ছে। ভালো করে তাকিয়ে দেখি লেখা ‘TULI WEDS RONY’ . বুকটা মুচড়ে উঠলো। একটা গাড়ি হর্ন দিচ্ছে আমার পিছনে, দারুন সাজানো একটা কনটেসা, গোলাপ ফুল দিয়ে সাজানো। খেয়াল করে দেখি, তুলি ভিতরে বসে আছে, কারো কথায় খুব হাসছে, আমার দিকে কি চোখ পরলো, মনে হয়তো পরলো, নাঃ, মনে হয় দেখেনি, নাহলে এরকম হাঁসতে পারতো নাকি। গাড়িটা আমাকে পাশ কাটিয়ে একটু এগিয়ে দাড়ালো, তুলির মা নেমে এলো, হাত ধরে বঁধুরুপে তুলি নেমে এলো, অসাধারন লাগছে ওকে, শরীর সাস্থ্য বেশ ভালোই হয়েছে, ঘুরে আমাকে দেখলো, ভাবলেশহীন মুখে এগিয়ে গেলো ভাড়ার অনুষ্ঠান বাড়িতে বৌ হয়ে সিংহাসনে বসবে বলে, আজকের রানি হয়ে, কারো স্বপ্নের নায়িকা হয়ে।
নাঃ আর ঘুমোনো যাবেনা, খালি এসব দেখছি। ভোরের স্বপ্ন শুনেছি সত্যি হয় তাহলে কি তুলি সত্যি......? নাঃ আর ভাবতে পারছিনা। বুকের ভিতরে খুব কষ্ট হচ্ছে, কেউ তো দেখছে না কাঁদলে কি হয়।
মনের মধ্যে কেউ যেন বলছে, নাচলে কি তার এমন শাস্তি হতে হবে, তুইও কি শালা ধোঁয়া তুলসি পাতা নাকি। মানসিক ভাবে তুইও তো বিকৃত কামের পুরুষ। মেয়েদের পোঁদ চাটিস, মনে মনে, বাড়ির কাজের লোকের ভড়াট পাছাও তোর খেঁচার বিষয়। তুই অন্যের দোষ খুঁজছিস। চুরি করিসনা তার কারন তোর চুরি করার সু্যোগ নেই। সুযোগ পেলে কি করতি না, তাহলে কিসের মহাপুরুষ তুই যে অন্যের দোষগুন খুজে বেড়াচ্ছিস।
নাঃ একটা সিদ্ধান্তে আস্তেই হবে। হ্যাঁ এখনো আমি তুলিকে ভালোবাসি, ওর শরিরটা নয়, ওকে। আমার জীবনের প্রথম নাড়ি ও। ওকে সুযোগ দিতেই হবে। কিন্তু, আমি ভাঙ্গবো তবু মঁচকাবো না। তুলিকে আসতে হবে আমার কাছে, আমি নিজে যাবো না। আর তুলি যদি না আসে তাহলে আমিও ওকে ভুলে যাবো, কষ্ট হবে জানি, তবুও যতই কষ্ট, হোক আমার ভিতরে ভিতরে যতই খারাপ হোই না আমি, এব্যাপারে আমি কোন নমনিয়তা দেখাবো না।
সারাদিনে আমি ঘর থেকে বেরোলাম না, দিনের বেলা বেশ খানিকটা ঘুমিয়ে নিলাম। আরো বেশী করে বাড়িতেই থেকে গেলাম কারন, তুলি যদি আসে আমাকে দেখতে পাবেনা, ওর মনেও নিশ্চয় কোনো প্রতিক্রিয়া হবে। নিশ্চয় আমাকে হারানোর ভয়ও ওর মধ্যে কাজ করবে যেমন আমার করছে। ও নিশ্চয় আমার মতনই ছটফট করবে।
আমাকে দেখতে না পেয়ে তুলির যে কষ্ট হবে, সেটা ভেবে আমার মধ্যে একটা ভালো লাগার অনুভুতির শুরু হোলো। ধীরে ধীরে আবার ঘুমিয়ে পরলাম রাত জাগার ক্লান্তিতে।
দুপুরে খেয়েদেয়ে উঠে মনটা উশখুশ করতে শুরু করলো কখন বিকেল হবে কখন বিকেল হবে, গিয়ে ঠেকে বসবো, আর কেউ না কেউ বলবে যে তুলি তোমাকে খুঁজতে এসেছিলো। তাহলে নিজের থেকে তুলির সাথে দেখা করার বাহানা পাওয়া যাবে। আমি গম্ভির ভাবেই থাকবো, বুঝতে দেবোনা আমার মনের দুর্বলতা।