31-12-2018, 03:40 PM
পর্ব ২৬ (খ)
সোফায় বসে পা’য়ের ওপরে পা তুলে দেয় পৃথা... চা’য়ের কাপে চুমুক দিয়ে সুশান্তকে ফের মৌসুমীর প্রসঙ্গ টেনে প্রশ্ন করে, ‘তোমাকে বললাম সাথে মৌসুমীকেও আনো, কেন আনলে না বলো তো... কতদিন দেখি নি মেয়েটাকে... বড্ড ভালো মেয়ে...’
‘না ভাবলাম এত বকে, তোমার শরীর খারাপ, তাই আর কি... আর এত মৌসুমী মৌসুমী করছ কেন বলো তো?’ উত্তর দেয় সুশান্ত, ‘কেন? আমি শুধু একা তোমার কাছে আসতে পারি না? নাকি আজকাল আর আমায় ভালো লাগছে না?’ গলায় আগের ক্ষোভ যেন ফিরে আসে সুশান্তর।
‘আরে, তুমি বন্ধু, তোমার আসায় কি অসুবিধা... কিন্তু সেটা নয়... ওর সাথেও একটু গল্প করা যেতো, এই আরকি...’ বলে পৃথা... ‘যাক, তোমাদের বিয়ের কত দূর?’
‘জানি না... সে নিয়ে ভাবছিও না কিছু এখন...’ বেজার মুখে উত্তর দেয় সুশান্ত।
‘কেন? তুমি তো বলেছিলে যে তোমাদের মোটামুটি সব কিছুই ঠিকঠাক হয়ে আছে, খুব শিগগিরি বিয়ে হবে... এখন আবার কি হলো? এনি প্রবলেম?’ ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করে পৃথা... চা’য়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে।
‘না, ওদের দিক থেকে কোন প্রবলেম নেই... আমিই ভাবছি...’ বলতে বলতে থামে সুশান্ত... নিজের কাপে চুমুক দিতে থাকে চুপ করে।
‘তোমার আবার কি প্রবলেম? দিব্বি তো সব কিছুই ঠিক ছিল? অফিসও তো ঠিকঠাকই আছে...’ প্রশ্ন করে পৃথা।
‘না, মানে...’ একটু ইতস্থত করে সুশান্ত... তারপর কেটে কেটে বলে, ‘তোমাকে... দেখার পর থেকে... আমি ঠিক... কি করবো বুঝতে পারছি না...’
‘হোয়াট ডু ইয়ু মিন আমাকে দেখার পর থেকে?’ ভুরু কোঁচকায় পৃথা... ‘বুঝলাম ঠিক...’
‘না, মানে, অ্যাকচুয়ালি... আই থিংক... আমাকে আরো একবার ভাবতে হবে... আদৌ মৌসুমীর সাথে সম্পর্কটা নিয়ে এগোবো কি না...’ চোখ নামিয়ে উত্তর দেয় সুশান্ত।
‘হোয়াট?’ একটু বেশ জোরেই কথাটা বলে পৃথা... ‘আর ইয়ু ম্যাড? হোয়াটস দ্য প্রবলেম উইথ দ্যাট গার্ল? অ্যান্ড হাউ অ্যাম আই প্লেসড্ হেয়ার?’
‘না, মানে, ইয়ু কান্ট সে দ্যাট আই অ্যাম আ ব্যাড চয়েস... ক্যান ইয়ু?’ পৃথার মুখের পানে তাকিয়ে প্রশ্ন করে সুশান্ত।
‘ঠিক বুঝলাম না, ব্যাড চয়েস বলতে হোয়াট ডু ইয়ু ওয়ান্ট টু মিন?’ প্রশ্ন করে পৃথা... হাতে ধরা চায়ের কাপটা টেবিলের ওপরে নামিয়ে সোজা হয়ে বসে।
‘সি পৃথা... দ্য ট্রুথ ইজ...’ বলতে গিয়ে থমকায় সুশান্ত।
‘কাম অন সুশান্ত... হোয়াট দ্য ট্রুথ ইজ... টেল মি...’ তিক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সুশান্তের পানে পৃথা।
‘না, মানে... মানে... অ্যাাকচুয়ালি...’ বলতে বলতে ফের থমকায় সুশান্ত।
সুশান্তর এই ব্যবহারে অধৈর্য হয়ে ওঠে এবার পৃথা... হাতের একটা আঙুল তুলে বলে সে, ‘লুক... ইয়ু মাস্ট স্পিক আউট দ্য ট্রুথ... আরে ইয়ার... উই আর ফ্রেন্ডস... দেন হোয়াই ইয়ু আর ফ্লাম্বলিং লাইক দ্যাট? কাম অন... টেল মি... আই অ্যাম ওলয়েজ দেয়ার টু হেল্প বোথ অফ ইয়ু... মৌসুমীর সাথে কোনো প্রবলেম হয়েছে?’ প্রশ্ন করে সে।
‘না, না... ওর সাথে কোন প্রবলেম হবে কেন...’ উত্তর দেয় সুশান্ত থেমে থেমে।
‘দেন? বাড়ির থেকে? শুড আই স্পিক ইয়ুথ ইয়োর পেরেন্টস?’ ফের জানতে চায় পৃথা।
‘না, সেটাও নয়... বাড়িতেও কোন প্রবলেম নেই...’ বলে সুশান্ত।
‘দেন হোয়ের ইজ দ্য প্রবলেম? হোয়াই আর ইয়ু বিহেভিং লাইক দিস?’ প্রশ্ন করে পৃথা... হাত দুটোকে দুই দিকে মেলে কাঁধ শ্রাগ করে।
উত্তর দেয় না কিছু সুশান্ত... চুপ করে চায়ের কাপে চুমুক দিতে থাকে... মাঝে মাঝে শুধু চোখ তুলে বারেক তাকায় পৃথার দিকে।
‘কি হলো? কিছু বলছো না?’ অধৈর্য পৃথা ফের জিজ্ঞাসা করে।
‘কি বলবো বলো তো...’ শেষ হয়ে যাওয়া চায়ের কাপটা টেবিলের ওপরে নামিয়ে রাখতে রাখতে উত্তর দেয় সুশান্ত।
‘কি বলবো মানে? হা... ইফ ইয়ু ডোন্ট ওয়ান্ট টু ইনভোল্ভ মী ইন দিস, দেন দ্যাটস ডিফারেন্ট, বাট ইয়ু হ্যাভ টোল্ড দ্যাট আই অ্যাম দ্য ইশু ফর ইয়োর প্রবলেম... ইন দ্যাট কেস...’ বলতে বলতে থামে পৃথা... একটা সিগারেট ধরাতে পারলে খুশি হতো, কিন্তু সে জানে, অর্নব তাকে এখন একটাও সিগারেট খেতে দেবে না... দেয়ও নি সকাল থেকে... দুপুরে খাবার পর অনেক রিকোয়স্ট করেছিল একটা সিগারেটএর জন্য, কিন্তু দৃঢ় গলায় অর্নব ওকে জানিয়ে দিয়েছিল যে আজ একটা সিগারেট পাবে না সে... রাগ করা দূরঅস্ত, খুশি মনে মেনে নিয়েছিল অর্নবের সে শাসন... কিন্তু, এখন এই পরিস্থিতিতে একটা সিগারেট হলে খুব ভালো হতো... যাক, কি আর করা যাবে, ও ভালো মতই জানে অর্নব আসে পাশেই আছে, সিগারেট ধরালে এখন কিছু বলতে পারবে না, কিন্তু পরে ভিষন বকবে... তাই আর চেষ্টা করে না সিগারেটের দিকে হাত বাড়াতে... ‘ইন দ্যাট কেস... অ্যাটলিস্ট ইয়ু মাস্ট ক্লিয়ার ইয়োর সেলফ...’ শেষ করে পৃথা নিজের কথা।
‘আই অ্যাম ইন লাভ উইথ ইয়ু পৃথা...’ মুখ তুলে কথাটাকে যেন বুকের মধ্যে থেকে ঠেলে বের করে দেয় সুশান্ত।
‘হোয়াট?’ প্রায় চেঁচিয়েই ওঠে পৃথা।
‘ঠিক শুনেছ... আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি পৃথা... অ্যান্ড আই ওয়ান্ট টু ম্যারি ইয়ু... শুধু তোমাকে...’ হাতদুটো জোড় করে বলে সুশান্ত।
‘ইয়ু আর নট সিরিয়াস... সুশান্ত... রাইট... ইয়ু আর জাস্ট জোকিং... তাই না?’ অবিশ্বাসী গলায় প্রশ্ন করে পৃথা... সুশান্তের বদল আগেই তার নজরে এসেছিল, বলেও ছিল অর্নবকে এই ব্যাপারে, কিন্তু সুশান্ত যে ওকে একেবারে প্রপোজ করে বসবে, এতটা আশা করে নি সে।
‘না পৃথা, জোক নয়... আমি সত্যিই বলছি... আই অ্যাম ইন লাভ উইথ ইয়ু...’ বোঝাবার আকুল চেষ্টা করে সুশান্ত।
মাথা নাড়ে পৃথা... ‘না না সুশান্ত... এটা হয় না... অলরেডি একটা মেয়ের সাথে তোমার জীবন জড়িয়ে গেছে... সে তোমার আশায় বসে আছে, আর তুমি...’
‘আই ডোন্ট কেয়ার অ্যাবাউট হার... লেট হার ফাইন্ড সাম আদার পার্সন... অ্যান্ড আই ডোন্ট থিংক শী কুড বী মাই টাইপ...’ নিজের সপক্ষে বলে সুশান্ত।
‘সেটা আগে বলো নি কেন তুমি?’ দৃঢ় স্বরে প্রশ্ন করে পৃথা... ‘তোমার তো এটা লাভ ম্যারেজ নয়... তাহলে যখন তোমার সম্বন্ধ দেখা হচ্ছিল, এই মেয়েটাকে তোমার বাড়ির লোক পছন্দ করেছিল, তুমিও পছন্দ করেছিলে... তখন কেন এটা ভাবো নি? আর আজ এমন কি হলো যে হটাৎ করে মনে হলো তোমার যে মৌসুমী ইজ নট অফ ইয়োর টাইপ? আর ইয়ু ম্যাড? একটা মেয়ের জীবন নিয়ে খেলা করার অধিকার কে দিলো তোমায়? হুঁ?’
‘তখন তো তোমায় দেখি নি আমি?’ ব্যাকুল গলায় বলে সুশান্ত।
‘ওহ! মাই গড! নট মী...’ সোফায় হেলান দিয়ে মাথা তুলে বলে ওঠে পৃথা... ‘সুশান্ত... ট্রাই টু আন্ডার্স্ট্যান্ড...’ ফের সোজা হয়ে বোঝাবার চেষ্টা করে পৃথা।
‘দেয়ার ইজ নাথিং টু আন্ডার্স্ট্যান্ড... আই হ্যাভ আলরেডি টোল্ড ইয়ু... আই অ্যাম ইন লাভ উইথ ইয়ু... অ্যান্ড দ্যাটস্ ফাইনাল...’ গলার স্বরে জোর বাড়ে সুশান্তর।
‘এটা হয় না সুশান্ত... হয় না...’ মাথা নাড়ায় পৃথা... ‘তুমি যেটা চাইছ, সেটা আমার পক্ষে কোনদিনই সম্ভব নয়...’
‘কিন্তু কেন?’ প্রায় জোরেই চেঁচিয়ে ওঠে সুশান্ত... ‘কেন নয়? আমি ছেলেটা খারাপ? আমার সম্বন্ধ কখনো, কোন দিন কিছু খারাপ শুনেছ? দেন? হোয়াই নট... অসুবিধা কোথায়? ইয়ু আর সিঙ্গল... আই অ্যাম অলস সেম... তাহলে?’ উত্তেজিত সুশান্ত হাত নাড়ে জোরে জোরে।
‘ইটস নট দ্যাট ইয়ু আর ব্যাড... সে প্রসঙ্গ আসছেই বা কেন... আই নো ইয়ু আর আ ভেরি গুড পার্সন... তোমার মত বন্ধু এই অচেনা শহরে এসে পেয়ে আমি সত্যিই ধন্য... আমি স্বীকারও করি সেটা... কিন্তু আমাদের মধ্যের সম্পর্কটা শুধু মাত্রই বন্ধুত্বের... উই আর গুড ফ্রেন্ডস... বাট ইয়ু কান্ট ফল ইন এনি রিলেশনশিপ... সেটা হয় না...’ শান্ত গলায় ফের বোঝাবার চেষ্টা করে পৃথা।
‘আই অ্যাম আ গুড পার্সন, আ গুড ফ্রেন্ড... তাহলে কিসের অসুবিধা? ভালো বন্ধু বা অফিসের কলিগ, তারা কি কখনও কোথাও রিলেশনএ বাঁধা পড়েনি? এটা কি নতুন?’ ঘুরিয়ে প্রশ্ন করে সুশান্ত।
ফের মাথা নাড়ায়... ‘তুমি আমাকে ভুল বুঝছ সুশান্ত... আমি সেটা বলতে চাই নি... আমি জানি কলিগ বা বন্ধুও একে অপরকে ভালোবাসতেই পারে, বিয়েও করে, এটা নতুন কিছু নয়... বাট ইন মাই কেস... আমার পক্ষে সম্ভব নয় সেটা... নট অ্যাট অল...’
‘কেন নয়... আমি সেটাই তো জানতে চাইছি... কোথায় অসুবিধা তোমার? মৌসুমীর কথা ভাবছ... আমি নিজে ওকে বলে দেবো যে ওকে আমার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব নয়... তাহলে তো কোন অসুবিধা নেই তোমার... বলো...’ মাথা নেড়ে সুশান্ত বোঝাবার চেষ্টা করে পৃথাকে।
‘দেখ সুশান্ত, মৌসুমী তো একটা ব্যাপার বটেই... আমি কখনই চাইবো না একটা মেয়ে হয়ে আর একটা মেয়েকে এই ভাবে ঠকাতে... সেখানে আমার পক্ষে তোমার সাথে রিলেশনশিপ তৈরী করার সুযোগ থাকলেও তোমায় ফিরিয়ে দিতাম... আমি কখনই এগোতে দিতাম না তোমায়, দ্যাটস ফর হান্ড্রেড পার্সেন্ট শিওর... কিন্তু এ ছাড়াও, আমি তো তোমাকে বলেই ছিলাম আগে, দ্যাট আই অ্যাম কমিটেড... আই আম ইন লাভ ইয়ুথ সামওয়ান এলস্...’ শান্ত গলায় বলে পৃথা।
‘আই ডোন্ট বিলিভ ইন ইয়োর স্টোরি... আমি বিশ্বাস করি না ইয়ু আর কমিটেড টু এনি বডি... ইটস্ অল বোগাস...’ উত্তেজিত সুশান্ত বলে ওঠে।
‘না সুশান্ত, এটাই সত্যি... বিলিভ মী...’ বোজাবার চেষ্টা করে পৃথা।
‘ইটস আ লাই... আই নো... সেদিন তুমি আমাকে বলার পর আই হ্যাভ স্পায়েড অন ইয়ু... কোনদিন তোমাকে অফিস থেকে বেরোবার পর কখনো কোথাও কারুর সাথে দেখা করতে দেখি নি... তুমি অফিস থেকে বেরিয়ে সোজা বাড়ি ফেরো... ইয়েস... আই নো... শুধু তাই নয়... অফিসেও সারা দিন আমি তোমার ওপরে লক্ষ রেখে গিয়েছিলাম, না, সেখানেও আজ অবধি এমন কারুর ফোন তুমি রিসিভ করো নি বা তুমি নিজেও করো নি যেখান থেকে বোঝা যায় যে ইয়ু আর ইন রিলেশন উইথ এনি ওয়ান... তাই বলছি... ডোন্ট ট্রাই টু মেক ফুল আউট অফ মী... ওকে? আমাকে বোকা বানাতে এসো না...’ চিবিয়ে চিবিয়ে বলে সুশান্ত।
‘আমি তোমায় বোকা বানাচ্ছি না সুশান্ত...’ হাত তুলে ফের বোঝাবার চেষ্টা করে পৃথা... ‘আমি জানি না কতটা তুমি দেখেছ, বা জেনেছ, কিন্তু আমি সত্যিই কমিটেড টু সাম ওয়ান...’
‘টু হেল উইথ ইয়োর কমিটমেন্ট...’ বলে হটৎ উঠে দাঁড়ায় সুশান্ত সোফার থেকে... এক লহমায় পৌছে যায় পৃথার সামনে... সামান্য ঝুঁকে ঝপ করে খামচে ধরে পৃথার কাঁধ দুখানি... ধরে ঝাঁকাতে থাকে পৃথার শরীরটাকে... ‘টু হেল উইথ ইয়োর কমিটমেন্ট... আই লাভ ইয়ু অ্যান্ড ইয়ু উইল বী ওনলি মাইন... ব্যস... দ্যাটস্ ইট... আর কিচ্ছু শুনতে চাইনা...’
পৃথা আশা করে নি সুশান্ত ওই ভাবে তার ওপরে ঝাপিয়ে পড়বে... চমকে গিয়ে পিছিয়ে যাবার চেষ্টা করে সোফার ওপরে... আর তার ফলে টান পড়ে সুশান্তর হাতের মুঠোয় ধরে থাকা পৃথার পরনের কুর্তিতে... একটানে পটাস্ করে জামার দুটো বোতাম ছিড়ে ছিটকে যায় শরীর থেকে... বুকের কাছটায় ফাঁক হয়ে যায় কুর্তিটা বেবাক... জামার আড়ালে থাকা ফর্সা শরীরটা বেরিয়ে পড়ে সুশান্তর চোখের সন্মুখে... কালো ব্রা’য়ে ঢাকা সুডোল স্তনের লোভনীয় বিভাজিকা তখন উন্মুক্ত... গলার সরু সোনার চেনটায় আটকানো ছোট্ট হৃদয়ের আদলের লাল পাথরের পেন্ডেন্টটা যেন দুটো নরম স্তনের আদর খেতে ব্যস্ত।
স্তব্দ হয়ে বসে থাকে পৃথা... কেমন যেন হতবাক হয়ে যায় এই অতকির্ত আক্রমনে... সেকেন্ড খানেক ভাবার চেষ্টা করে কি ঘটে গেল... আর সেই মুহুর্ত ধরে সুশান্তও চোখের মনিতে অসীম লোভ নিয়ে তাকিয়ে থাকে তার সামনে উন্মুক্ত পৃথার লোভনীয় স্তনবিভাজিকার দিকে... যেন নরম বুকদুটো সুশান্তকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে মনে হয় তার... তারপরই পৃথা কিছু করার আগেই ঝুঁকে পড়ে সামনের পানে... নিজের মুখটা গুঁজে দেয় পৃথার ওই আকর্ষনীয় বিভাজিকায়... ঘসতে থাকে মুখটা নরম বুকের ওপরে...
ছটফট করে ওঠে পৃথা নিজের শরীরের ওপরে সুশান্তের লোভী স্পর্শে... সম্বিত ফিরে আসে তার... দু হাত দিয়ে ঠেলে সরাবার চেষ্টা করে সে... কিন্তু এমন বেখাপ্পা ভাবে সোফার মধ্যে ঢুকে গিয়েছে যে কিছুতেই হাত দুটোকে ছাড়িয়ে ঠেলতে পারে না সুশান্তকে... অন্য সময় হলে খুব সহজেই হয়তো এই ধরণের আক্রমন প্রতিহত করত ক্যারাটে জানা পৃথা, কিন্তু এখন সেটাই করে উঠতে পারছে না বলে আরো বিরক্ত হয়ে ওঠে নিজের ওপরেই... এমনিতেই জ্বরে আক্রান্ত হবার পর একটু দুর্বলই বলা চলে, তারওপরে এই ভাবে বেকায়দায় ধরা পড়ে রয়েছে সে, বার বার করে অনুনয় করে সে, ‘এরকম কোরো না সুশান্ত... প্লিজ কোরো না... ছাড়ো আমায়... প্লিজ... আমাদের সুন্দর সম্পর্কটাকে এই ভাবে নষ্ট করে দিও না... ট্রাই টু আন্ডার্স্ট্যান্ড... প্লিজ... ছাড়ো আমায়...’
কে শোনে কার কথা... যত সময় গড়ায়, লোভ আরো চেপে বসে সুশান্তের ওপরে... স্তন বিভাজিকায় মুখ ঘসতে ঘসতে একটা হাত পৃথার কাঁধ থেকে নামিয়ে খপ করে চেপে ধরে নরম স্তন একটা... কচলাতে থাকে সেটাকে হাতের মুঠোয় ধরে... হাতের তেলোয় স্পর্শ লাগে পৃথার স্তনবৃন্তের।
হটাৎ করে ঘটে যায় ঘটনাটা যেন... সুশান্ত কিছু বোঝার আগেই সে ছিটকে গিয়ে পড়ে পাশের সোফার ওপরে... পৃথার শরীরের ওপর থেকে...
এই ভাবে দূরে গিয়ে ছিটকে পড়াতে প্রথমটায় একটু হকচকিয়ে যায় সুশান্ত... তারপর ভাবে নিশ্চয়ই পৃথা ওকে জোরে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে থাকবে... পৃথার থেকে আঘাত পেয়েছে ভেবে আরো ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠে মনে মনে... রাগে দাঁতে দাঁত চেপে ধরে ফের উঠে ঝাপিয়ে পড়ার চেষ্টা করে সে পৃথার ওপরে... কিন্তু এগোবার আগেই একটা সজোরে ঘুসি এসে পড়ে ওর চোয়ালে... যেন হাওয়ার থেকে কোন অশরীরি কঠিন হাতের আঘাত হানে তার মুখের ওপরে... এবার সে ছিটকে গিয়ে পড়ে সোফা আর সেন্টার টেবিলের মাঝে, মেঝের ওপরে... ঠোঁটের পাশটায় বেশ কেটে যায়... গড়িয়ে পড়ে রক্ত... নিমেশে কালশিটে পড়ে যায় গালের পাশটায়, হনুর ওপরে... হতদ্যম হয় বসে থাকে সে মেঝের ওপরে... ভাবার চেষ্টা করে ঘটনাটা কি... তখনই কানে আসে একটা গমগমে গলা... যেন ঘরের মধ্যেটায় বাজ পড়ে... ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হতে থাকে সে স্বর... ‘ডোন্ট ডেয়ার টু টাচ হার... আদার ওয়াজ আই’ল্ ব্রেক ইয়োর হেড... জাস্ট গেট আউট ফ্রম দিস প্লেস... আউট...’ শেষের ‘আউট’ কথাটা এতটাই জোরে যে প্রায় হৃদকম্প শুরু হয়ে যায় সুশান্ত... একবার তাকায় উল্টো দিকের সোফায় অপ্রস্তুত হয়ে বসে থাকা পৃথার দিকে, তারপর পড়ি কি মড়ি করে উঠে দৌড় লাগায় দরজার দিকে... কোনরকমে দরজাটা খুলে একেবারে ফ্ল্যাটের বাইরে... পেছন ঘুরে তাকাবার চেষ্টাও করে না সে... উর্ধশ্বাসে সিড়ি ভেঙে নামতে থাকে... এক একবারে দুটো তিনটে সিড়িও টপকায়... হোঁচট খায় ল্যান্ডিংএর কাছটায়... তবুও থামে না... উঠে ফের দৌড় মারে নীচের পানে... একেবারে রাস্তার দিকে।
অলোকবাবু পাশের ফ্ল্যাটের মধ্যে একটা ঝটাপটি শুনেছিলেন, তাই তাড়াতাড়ি নিজের দরজা খুলে বেরিয়ে এসেছিলেন ব্যাপারটা বোঝার আশায়, কিন্তু যে ভাবে হটাৎ করে পৃথার ফ্ল্যাটের দরজাটা খুলে ছেলেটি দৌড়ে বেরিয়ে এসেই দিগবিদিক না তাকিয়ে পালালো, হাঁ করে তাকিয়ে থাকেন সেই দিকে... ল্যান্ডিংএর পরে চোখের আড়ালে সুশান্তের দেহটা চলে গেলে মুখ ফেরান পৃথার খোলা দরজাটার দিকে... আগেও এই ফ্ল্যাটের সম্বন্ধে নানান কথা শুনেছেন উনি, কিন্তু কোনদিন নিজের থেকে দেখা বা অনুভব করা হয় নি তার... তাই ছেলেটিকে এই ভাবে উর্ধশ্বাসে পালাতে দেখে মনের মধ্যে নানান প্রশ্ন জেগে ওঠে তাঁর... তবে কি যেটা উনি শুনেছেন... কিন্তু পরক্ষনেই মনে হয় যে তাহলে মেয়েটি কি ভাবে রয়েছে, আবার একা!... গুলিয়ে যায় মাথার মধ্যে তাঁর... মেলে না কোন উত্তর... তাই আরো ভালো করে জানার আশায় সবে এক পা বাড়িয়েছিলেন, কিন্তু তার আগেই খোলা দরজাটা দুম্ করে বন্ধ হয়ে যায় তাঁর মুখের ওপরে... হতাশ হয়ে খানিক ওইখানে দাঁড়িয়ে থাকেন, তারপর যখন বোঝেন যে কিছু জানা যাবে না এখন, ধীর পায়ে নিজের ফ্ল্যাটে ঢুকে যান।
ক্রমশ...
সোফায় বসে পা’য়ের ওপরে পা তুলে দেয় পৃথা... চা’য়ের কাপে চুমুক দিয়ে সুশান্তকে ফের মৌসুমীর প্রসঙ্গ টেনে প্রশ্ন করে, ‘তোমাকে বললাম সাথে মৌসুমীকেও আনো, কেন আনলে না বলো তো... কতদিন দেখি নি মেয়েটাকে... বড্ড ভালো মেয়ে...’
‘না ভাবলাম এত বকে, তোমার শরীর খারাপ, তাই আর কি... আর এত মৌসুমী মৌসুমী করছ কেন বলো তো?’ উত্তর দেয় সুশান্ত, ‘কেন? আমি শুধু একা তোমার কাছে আসতে পারি না? নাকি আজকাল আর আমায় ভালো লাগছে না?’ গলায় আগের ক্ষোভ যেন ফিরে আসে সুশান্তর।
‘আরে, তুমি বন্ধু, তোমার আসায় কি অসুবিধা... কিন্তু সেটা নয়... ওর সাথেও একটু গল্প করা যেতো, এই আরকি...’ বলে পৃথা... ‘যাক, তোমাদের বিয়ের কত দূর?’
‘জানি না... সে নিয়ে ভাবছিও না কিছু এখন...’ বেজার মুখে উত্তর দেয় সুশান্ত।
‘কেন? তুমি তো বলেছিলে যে তোমাদের মোটামুটি সব কিছুই ঠিকঠাক হয়ে আছে, খুব শিগগিরি বিয়ে হবে... এখন আবার কি হলো? এনি প্রবলেম?’ ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করে পৃথা... চা’য়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে।
‘না, ওদের দিক থেকে কোন প্রবলেম নেই... আমিই ভাবছি...’ বলতে বলতে থামে সুশান্ত... নিজের কাপে চুমুক দিতে থাকে চুপ করে।
‘তোমার আবার কি প্রবলেম? দিব্বি তো সব কিছুই ঠিক ছিল? অফিসও তো ঠিকঠাকই আছে...’ প্রশ্ন করে পৃথা।
‘না, মানে...’ একটু ইতস্থত করে সুশান্ত... তারপর কেটে কেটে বলে, ‘তোমাকে... দেখার পর থেকে... আমি ঠিক... কি করবো বুঝতে পারছি না...’
‘হোয়াট ডু ইয়ু মিন আমাকে দেখার পর থেকে?’ ভুরু কোঁচকায় পৃথা... ‘বুঝলাম ঠিক...’
‘না, মানে, অ্যাকচুয়ালি... আই থিংক... আমাকে আরো একবার ভাবতে হবে... আদৌ মৌসুমীর সাথে সম্পর্কটা নিয়ে এগোবো কি না...’ চোখ নামিয়ে উত্তর দেয় সুশান্ত।
‘হোয়াট?’ একটু বেশ জোরেই কথাটা বলে পৃথা... ‘আর ইয়ু ম্যাড? হোয়াটস দ্য প্রবলেম উইথ দ্যাট গার্ল? অ্যান্ড হাউ অ্যাম আই প্লেসড্ হেয়ার?’
‘না, মানে, ইয়ু কান্ট সে দ্যাট আই অ্যাম আ ব্যাড চয়েস... ক্যান ইয়ু?’ পৃথার মুখের পানে তাকিয়ে প্রশ্ন করে সুশান্ত।
‘ঠিক বুঝলাম না, ব্যাড চয়েস বলতে হোয়াট ডু ইয়ু ওয়ান্ট টু মিন?’ প্রশ্ন করে পৃথা... হাতে ধরা চায়ের কাপটা টেবিলের ওপরে নামিয়ে সোজা হয়ে বসে।
‘সি পৃথা... দ্য ট্রুথ ইজ...’ বলতে গিয়ে থমকায় সুশান্ত।
‘কাম অন সুশান্ত... হোয়াট দ্য ট্রুথ ইজ... টেল মি...’ তিক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সুশান্তের পানে পৃথা।
‘না, মানে... মানে... অ্যাাকচুয়ালি...’ বলতে বলতে ফের থমকায় সুশান্ত।
সুশান্তর এই ব্যবহারে অধৈর্য হয়ে ওঠে এবার পৃথা... হাতের একটা আঙুল তুলে বলে সে, ‘লুক... ইয়ু মাস্ট স্পিক আউট দ্য ট্রুথ... আরে ইয়ার... উই আর ফ্রেন্ডস... দেন হোয়াই ইয়ু আর ফ্লাম্বলিং লাইক দ্যাট? কাম অন... টেল মি... আই অ্যাম ওলয়েজ দেয়ার টু হেল্প বোথ অফ ইয়ু... মৌসুমীর সাথে কোনো প্রবলেম হয়েছে?’ প্রশ্ন করে সে।
‘না, না... ওর সাথে কোন প্রবলেম হবে কেন...’ উত্তর দেয় সুশান্ত থেমে থেমে।
‘দেন? বাড়ির থেকে? শুড আই স্পিক ইয়ুথ ইয়োর পেরেন্টস?’ ফের জানতে চায় পৃথা।
‘না, সেটাও নয়... বাড়িতেও কোন প্রবলেম নেই...’ বলে সুশান্ত।
‘দেন হোয়ের ইজ দ্য প্রবলেম? হোয়াই আর ইয়ু বিহেভিং লাইক দিস?’ প্রশ্ন করে পৃথা... হাত দুটোকে দুই দিকে মেলে কাঁধ শ্রাগ করে।
উত্তর দেয় না কিছু সুশান্ত... চুপ করে চায়ের কাপে চুমুক দিতে থাকে... মাঝে মাঝে শুধু চোখ তুলে বারেক তাকায় পৃথার দিকে।
‘কি হলো? কিছু বলছো না?’ অধৈর্য পৃথা ফের জিজ্ঞাসা করে।
‘কি বলবো বলো তো...’ শেষ হয়ে যাওয়া চায়ের কাপটা টেবিলের ওপরে নামিয়ে রাখতে রাখতে উত্তর দেয় সুশান্ত।
‘কি বলবো মানে? হা... ইফ ইয়ু ডোন্ট ওয়ান্ট টু ইনভোল্ভ মী ইন দিস, দেন দ্যাটস ডিফারেন্ট, বাট ইয়ু হ্যাভ টোল্ড দ্যাট আই অ্যাম দ্য ইশু ফর ইয়োর প্রবলেম... ইন দ্যাট কেস...’ বলতে বলতে থামে পৃথা... একটা সিগারেট ধরাতে পারলে খুশি হতো, কিন্তু সে জানে, অর্নব তাকে এখন একটাও সিগারেট খেতে দেবে না... দেয়ও নি সকাল থেকে... দুপুরে খাবার পর অনেক রিকোয়স্ট করেছিল একটা সিগারেটএর জন্য, কিন্তু দৃঢ় গলায় অর্নব ওকে জানিয়ে দিয়েছিল যে আজ একটা সিগারেট পাবে না সে... রাগ করা দূরঅস্ত, খুশি মনে মেনে নিয়েছিল অর্নবের সে শাসন... কিন্তু, এখন এই পরিস্থিতিতে একটা সিগারেট হলে খুব ভালো হতো... যাক, কি আর করা যাবে, ও ভালো মতই জানে অর্নব আসে পাশেই আছে, সিগারেট ধরালে এখন কিছু বলতে পারবে না, কিন্তু পরে ভিষন বকবে... তাই আর চেষ্টা করে না সিগারেটের দিকে হাত বাড়াতে... ‘ইন দ্যাট কেস... অ্যাটলিস্ট ইয়ু মাস্ট ক্লিয়ার ইয়োর সেলফ...’ শেষ করে পৃথা নিজের কথা।
‘আই অ্যাম ইন লাভ উইথ ইয়ু পৃথা...’ মুখ তুলে কথাটাকে যেন বুকের মধ্যে থেকে ঠেলে বের করে দেয় সুশান্ত।
‘হোয়াট?’ প্রায় চেঁচিয়েই ওঠে পৃথা।
‘ঠিক শুনেছ... আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি পৃথা... অ্যান্ড আই ওয়ান্ট টু ম্যারি ইয়ু... শুধু তোমাকে...’ হাতদুটো জোড় করে বলে সুশান্ত।
‘ইয়ু আর নট সিরিয়াস... সুশান্ত... রাইট... ইয়ু আর জাস্ট জোকিং... তাই না?’ অবিশ্বাসী গলায় প্রশ্ন করে পৃথা... সুশান্তের বদল আগেই তার নজরে এসেছিল, বলেও ছিল অর্নবকে এই ব্যাপারে, কিন্তু সুশান্ত যে ওকে একেবারে প্রপোজ করে বসবে, এতটা আশা করে নি সে।
‘না পৃথা, জোক নয়... আমি সত্যিই বলছি... আই অ্যাম ইন লাভ উইথ ইয়ু...’ বোঝাবার আকুল চেষ্টা করে সুশান্ত।
মাথা নাড়ে পৃথা... ‘না না সুশান্ত... এটা হয় না... অলরেডি একটা মেয়ের সাথে তোমার জীবন জড়িয়ে গেছে... সে তোমার আশায় বসে আছে, আর তুমি...’
‘আই ডোন্ট কেয়ার অ্যাবাউট হার... লেট হার ফাইন্ড সাম আদার পার্সন... অ্যান্ড আই ডোন্ট থিংক শী কুড বী মাই টাইপ...’ নিজের সপক্ষে বলে সুশান্ত।
‘সেটা আগে বলো নি কেন তুমি?’ দৃঢ় স্বরে প্রশ্ন করে পৃথা... ‘তোমার তো এটা লাভ ম্যারেজ নয়... তাহলে যখন তোমার সম্বন্ধ দেখা হচ্ছিল, এই মেয়েটাকে তোমার বাড়ির লোক পছন্দ করেছিল, তুমিও পছন্দ করেছিলে... তখন কেন এটা ভাবো নি? আর আজ এমন কি হলো যে হটাৎ করে মনে হলো তোমার যে মৌসুমী ইজ নট অফ ইয়োর টাইপ? আর ইয়ু ম্যাড? একটা মেয়ের জীবন নিয়ে খেলা করার অধিকার কে দিলো তোমায়? হুঁ?’
‘তখন তো তোমায় দেখি নি আমি?’ ব্যাকুল গলায় বলে সুশান্ত।
‘ওহ! মাই গড! নট মী...’ সোফায় হেলান দিয়ে মাথা তুলে বলে ওঠে পৃথা... ‘সুশান্ত... ট্রাই টু আন্ডার্স্ট্যান্ড...’ ফের সোজা হয়ে বোঝাবার চেষ্টা করে পৃথা।
‘দেয়ার ইজ নাথিং টু আন্ডার্স্ট্যান্ড... আই হ্যাভ আলরেডি টোল্ড ইয়ু... আই অ্যাম ইন লাভ উইথ ইয়ু... অ্যান্ড দ্যাটস্ ফাইনাল...’ গলার স্বরে জোর বাড়ে সুশান্তর।
‘এটা হয় না সুশান্ত... হয় না...’ মাথা নাড়ায় পৃথা... ‘তুমি যেটা চাইছ, সেটা আমার পক্ষে কোনদিনই সম্ভব নয়...’
‘কিন্তু কেন?’ প্রায় জোরেই চেঁচিয়ে ওঠে সুশান্ত... ‘কেন নয়? আমি ছেলেটা খারাপ? আমার সম্বন্ধ কখনো, কোন দিন কিছু খারাপ শুনেছ? দেন? হোয়াই নট... অসুবিধা কোথায়? ইয়ু আর সিঙ্গল... আই অ্যাম অলস সেম... তাহলে?’ উত্তেজিত সুশান্ত হাত নাড়ে জোরে জোরে।
‘ইটস নট দ্যাট ইয়ু আর ব্যাড... সে প্রসঙ্গ আসছেই বা কেন... আই নো ইয়ু আর আ ভেরি গুড পার্সন... তোমার মত বন্ধু এই অচেনা শহরে এসে পেয়ে আমি সত্যিই ধন্য... আমি স্বীকারও করি সেটা... কিন্তু আমাদের মধ্যের সম্পর্কটা শুধু মাত্রই বন্ধুত্বের... উই আর গুড ফ্রেন্ডস... বাট ইয়ু কান্ট ফল ইন এনি রিলেশনশিপ... সেটা হয় না...’ শান্ত গলায় ফের বোঝাবার চেষ্টা করে পৃথা।
‘আই অ্যাম আ গুড পার্সন, আ গুড ফ্রেন্ড... তাহলে কিসের অসুবিধা? ভালো বন্ধু বা অফিসের কলিগ, তারা কি কখনও কোথাও রিলেশনএ বাঁধা পড়েনি? এটা কি নতুন?’ ঘুরিয়ে প্রশ্ন করে সুশান্ত।
ফের মাথা নাড়ায়... ‘তুমি আমাকে ভুল বুঝছ সুশান্ত... আমি সেটা বলতে চাই নি... আমি জানি কলিগ বা বন্ধুও একে অপরকে ভালোবাসতেই পারে, বিয়েও করে, এটা নতুন কিছু নয়... বাট ইন মাই কেস... আমার পক্ষে সম্ভব নয় সেটা... নট অ্যাট অল...’
‘কেন নয়... আমি সেটাই তো জানতে চাইছি... কোথায় অসুবিধা তোমার? মৌসুমীর কথা ভাবছ... আমি নিজে ওকে বলে দেবো যে ওকে আমার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব নয়... তাহলে তো কোন অসুবিধা নেই তোমার... বলো...’ মাথা নেড়ে সুশান্ত বোঝাবার চেষ্টা করে পৃথাকে।
‘দেখ সুশান্ত, মৌসুমী তো একটা ব্যাপার বটেই... আমি কখনই চাইবো না একটা মেয়ে হয়ে আর একটা মেয়েকে এই ভাবে ঠকাতে... সেখানে আমার পক্ষে তোমার সাথে রিলেশনশিপ তৈরী করার সুযোগ থাকলেও তোমায় ফিরিয়ে দিতাম... আমি কখনই এগোতে দিতাম না তোমায়, দ্যাটস ফর হান্ড্রেড পার্সেন্ট শিওর... কিন্তু এ ছাড়াও, আমি তো তোমাকে বলেই ছিলাম আগে, দ্যাট আই অ্যাম কমিটেড... আই আম ইন লাভ ইয়ুথ সামওয়ান এলস্...’ শান্ত গলায় বলে পৃথা।
‘আই ডোন্ট বিলিভ ইন ইয়োর স্টোরি... আমি বিশ্বাস করি না ইয়ু আর কমিটেড টু এনি বডি... ইটস্ অল বোগাস...’ উত্তেজিত সুশান্ত বলে ওঠে।
‘না সুশান্ত, এটাই সত্যি... বিলিভ মী...’ বোজাবার চেষ্টা করে পৃথা।
‘ইটস আ লাই... আই নো... সেদিন তুমি আমাকে বলার পর আই হ্যাভ স্পায়েড অন ইয়ু... কোনদিন তোমাকে অফিস থেকে বেরোবার পর কখনো কোথাও কারুর সাথে দেখা করতে দেখি নি... তুমি অফিস থেকে বেরিয়ে সোজা বাড়ি ফেরো... ইয়েস... আই নো... শুধু তাই নয়... অফিসেও সারা দিন আমি তোমার ওপরে লক্ষ রেখে গিয়েছিলাম, না, সেখানেও আজ অবধি এমন কারুর ফোন তুমি রিসিভ করো নি বা তুমি নিজেও করো নি যেখান থেকে বোঝা যায় যে ইয়ু আর ইন রিলেশন উইথ এনি ওয়ান... তাই বলছি... ডোন্ট ট্রাই টু মেক ফুল আউট অফ মী... ওকে? আমাকে বোকা বানাতে এসো না...’ চিবিয়ে চিবিয়ে বলে সুশান্ত।
‘আমি তোমায় বোকা বানাচ্ছি না সুশান্ত...’ হাত তুলে ফের বোঝাবার চেষ্টা করে পৃথা... ‘আমি জানি না কতটা তুমি দেখেছ, বা জেনেছ, কিন্তু আমি সত্যিই কমিটেড টু সাম ওয়ান...’
‘টু হেল উইথ ইয়োর কমিটমেন্ট...’ বলে হটৎ উঠে দাঁড়ায় সুশান্ত সোফার থেকে... এক লহমায় পৌছে যায় পৃথার সামনে... সামান্য ঝুঁকে ঝপ করে খামচে ধরে পৃথার কাঁধ দুখানি... ধরে ঝাঁকাতে থাকে পৃথার শরীরটাকে... ‘টু হেল উইথ ইয়োর কমিটমেন্ট... আই লাভ ইয়ু অ্যান্ড ইয়ু উইল বী ওনলি মাইন... ব্যস... দ্যাটস্ ইট... আর কিচ্ছু শুনতে চাইনা...’
পৃথা আশা করে নি সুশান্ত ওই ভাবে তার ওপরে ঝাপিয়ে পড়বে... চমকে গিয়ে পিছিয়ে যাবার চেষ্টা করে সোফার ওপরে... আর তার ফলে টান পড়ে সুশান্তর হাতের মুঠোয় ধরে থাকা পৃথার পরনের কুর্তিতে... একটানে পটাস্ করে জামার দুটো বোতাম ছিড়ে ছিটকে যায় শরীর থেকে... বুকের কাছটায় ফাঁক হয়ে যায় কুর্তিটা বেবাক... জামার আড়ালে থাকা ফর্সা শরীরটা বেরিয়ে পড়ে সুশান্তর চোখের সন্মুখে... কালো ব্রা’য়ে ঢাকা সুডোল স্তনের লোভনীয় বিভাজিকা তখন উন্মুক্ত... গলার সরু সোনার চেনটায় আটকানো ছোট্ট হৃদয়ের আদলের লাল পাথরের পেন্ডেন্টটা যেন দুটো নরম স্তনের আদর খেতে ব্যস্ত।
স্তব্দ হয়ে বসে থাকে পৃথা... কেমন যেন হতবাক হয়ে যায় এই অতকির্ত আক্রমনে... সেকেন্ড খানেক ভাবার চেষ্টা করে কি ঘটে গেল... আর সেই মুহুর্ত ধরে সুশান্তও চোখের মনিতে অসীম লোভ নিয়ে তাকিয়ে থাকে তার সামনে উন্মুক্ত পৃথার লোভনীয় স্তনবিভাজিকার দিকে... যেন নরম বুকদুটো সুশান্তকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে মনে হয় তার... তারপরই পৃথা কিছু করার আগেই ঝুঁকে পড়ে সামনের পানে... নিজের মুখটা গুঁজে দেয় পৃথার ওই আকর্ষনীয় বিভাজিকায়... ঘসতে থাকে মুখটা নরম বুকের ওপরে...
ছটফট করে ওঠে পৃথা নিজের শরীরের ওপরে সুশান্তের লোভী স্পর্শে... সম্বিত ফিরে আসে তার... দু হাত দিয়ে ঠেলে সরাবার চেষ্টা করে সে... কিন্তু এমন বেখাপ্পা ভাবে সোফার মধ্যে ঢুকে গিয়েছে যে কিছুতেই হাত দুটোকে ছাড়িয়ে ঠেলতে পারে না সুশান্তকে... অন্য সময় হলে খুব সহজেই হয়তো এই ধরণের আক্রমন প্রতিহত করত ক্যারাটে জানা পৃথা, কিন্তু এখন সেটাই করে উঠতে পারছে না বলে আরো বিরক্ত হয়ে ওঠে নিজের ওপরেই... এমনিতেই জ্বরে আক্রান্ত হবার পর একটু দুর্বলই বলা চলে, তারওপরে এই ভাবে বেকায়দায় ধরা পড়ে রয়েছে সে, বার বার করে অনুনয় করে সে, ‘এরকম কোরো না সুশান্ত... প্লিজ কোরো না... ছাড়ো আমায়... প্লিজ... আমাদের সুন্দর সম্পর্কটাকে এই ভাবে নষ্ট করে দিও না... ট্রাই টু আন্ডার্স্ট্যান্ড... প্লিজ... ছাড়ো আমায়...’
কে শোনে কার কথা... যত সময় গড়ায়, লোভ আরো চেপে বসে সুশান্তের ওপরে... স্তন বিভাজিকায় মুখ ঘসতে ঘসতে একটা হাত পৃথার কাঁধ থেকে নামিয়ে খপ করে চেপে ধরে নরম স্তন একটা... কচলাতে থাকে সেটাকে হাতের মুঠোয় ধরে... হাতের তেলোয় স্পর্শ লাগে পৃথার স্তনবৃন্তের।
হটাৎ করে ঘটে যায় ঘটনাটা যেন... সুশান্ত কিছু বোঝার আগেই সে ছিটকে গিয়ে পড়ে পাশের সোফার ওপরে... পৃথার শরীরের ওপর থেকে...
এই ভাবে দূরে গিয়ে ছিটকে পড়াতে প্রথমটায় একটু হকচকিয়ে যায় সুশান্ত... তারপর ভাবে নিশ্চয়ই পৃথা ওকে জোরে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে থাকবে... পৃথার থেকে আঘাত পেয়েছে ভেবে আরো ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠে মনে মনে... রাগে দাঁতে দাঁত চেপে ধরে ফের উঠে ঝাপিয়ে পড়ার চেষ্টা করে সে পৃথার ওপরে... কিন্তু এগোবার আগেই একটা সজোরে ঘুসি এসে পড়ে ওর চোয়ালে... যেন হাওয়ার থেকে কোন অশরীরি কঠিন হাতের আঘাত হানে তার মুখের ওপরে... এবার সে ছিটকে গিয়ে পড়ে সোফা আর সেন্টার টেবিলের মাঝে, মেঝের ওপরে... ঠোঁটের পাশটায় বেশ কেটে যায়... গড়িয়ে পড়ে রক্ত... নিমেশে কালশিটে পড়ে যায় গালের পাশটায়, হনুর ওপরে... হতদ্যম হয় বসে থাকে সে মেঝের ওপরে... ভাবার চেষ্টা করে ঘটনাটা কি... তখনই কানে আসে একটা গমগমে গলা... যেন ঘরের মধ্যেটায় বাজ পড়ে... ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হতে থাকে সে স্বর... ‘ডোন্ট ডেয়ার টু টাচ হার... আদার ওয়াজ আই’ল্ ব্রেক ইয়োর হেড... জাস্ট গেট আউট ফ্রম দিস প্লেস... আউট...’ শেষের ‘আউট’ কথাটা এতটাই জোরে যে প্রায় হৃদকম্প শুরু হয়ে যায় সুশান্ত... একবার তাকায় উল্টো দিকের সোফায় অপ্রস্তুত হয়ে বসে থাকা পৃথার দিকে, তারপর পড়ি কি মড়ি করে উঠে দৌড় লাগায় দরজার দিকে... কোনরকমে দরজাটা খুলে একেবারে ফ্ল্যাটের বাইরে... পেছন ঘুরে তাকাবার চেষ্টাও করে না সে... উর্ধশ্বাসে সিড়ি ভেঙে নামতে থাকে... এক একবারে দুটো তিনটে সিড়িও টপকায়... হোঁচট খায় ল্যান্ডিংএর কাছটায়... তবুও থামে না... উঠে ফের দৌড় মারে নীচের পানে... একেবারে রাস্তার দিকে।
অলোকবাবু পাশের ফ্ল্যাটের মধ্যে একটা ঝটাপটি শুনেছিলেন, তাই তাড়াতাড়ি নিজের দরজা খুলে বেরিয়ে এসেছিলেন ব্যাপারটা বোঝার আশায়, কিন্তু যে ভাবে হটাৎ করে পৃথার ফ্ল্যাটের দরজাটা খুলে ছেলেটি দৌড়ে বেরিয়ে এসেই দিগবিদিক না তাকিয়ে পালালো, হাঁ করে তাকিয়ে থাকেন সেই দিকে... ল্যান্ডিংএর পরে চোখের আড়ালে সুশান্তের দেহটা চলে গেলে মুখ ফেরান পৃথার খোলা দরজাটার দিকে... আগেও এই ফ্ল্যাটের সম্বন্ধে নানান কথা শুনেছেন উনি, কিন্তু কোনদিন নিজের থেকে দেখা বা অনুভব করা হয় নি তার... তাই ছেলেটিকে এই ভাবে উর্ধশ্বাসে পালাতে দেখে মনের মধ্যে নানান প্রশ্ন জেগে ওঠে তাঁর... তবে কি যেটা উনি শুনেছেন... কিন্তু পরক্ষনেই মনে হয় যে তাহলে মেয়েটি কি ভাবে রয়েছে, আবার একা!... গুলিয়ে যায় মাথার মধ্যে তাঁর... মেলে না কোন উত্তর... তাই আরো ভালো করে জানার আশায় সবে এক পা বাড়িয়েছিলেন, কিন্তু তার আগেই খোলা দরজাটা দুম্ করে বন্ধ হয়ে যায় তাঁর মুখের ওপরে... হতাশ হয়ে খানিক ওইখানে দাঁড়িয়ে থাকেন, তারপর যখন বোঝেন যে কিছু জানা যাবে না এখন, ধীর পায়ে নিজের ফ্ল্যাটে ঢুকে যান।
ক্রমশ...