Thread Rating:
  • 5 Vote(s) - 2 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Erotic Horror অন্ধকারের অভিশাপ
#8
অধ্যায়: রাতের ছায়া, আকরামের চোখ

অস্বস্তির গভীরতা

মীনার মনে আজকাল এক অদ্ভুত অস্বস্তি কাজ করছে। যেন ঘরের প্রতিটি কোণ থেকে কেউ তাকে দেখছে, নিঃশব্দে অনুসরণ করছে। রান্নাঘরে গেলে মনে হয়, ঠিক পেছনে কেউ দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু ঘুরে তাকালে কিছুই নেই। শোবার ঘরে আয়নার সামনে দাঁড়ালে মনে হয়, প্রতিচ্ছবিটা যেন তার নিজের নয়—কিংবা কারও নজরদারির আওতায় আছে।

শুভও লক্ষ্য করছিল, আকরামের আচরণ কেমন যেন অস্বাভাবিক হয়ে উঠছে। তার চোখের দৃষ্টি যেন শুধু তাদের মা মীনার দিকেই আটকে থাকে। প্রথমদিকে সে এটা বুঝতে পারছিল না, কিন্তু এখন স্পষ্ট লাগছে। আকরাম সুযোগ পেলেই মায়ের আশেপাশে ঘুরঘুর করে, মাঝেমধ্যে অদ্ভুতভাবে তার দিকে তাকিয়ে থাকে।

একদিন সকালে, মীনা বাগানে ফুল তুলছিলেন, শুভ জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। আকরাম তখন সামনের উঠোন পরিষ্কার করছিল। হঠাৎ শুভ লক্ষ্য করল, আকরাম একদৃষ্টিতে মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে—অসঙ্গতভাবে। তার চোখের দৃষ্টি যেন স্বাভাবিক মানুষের মতো নয়, বরং সেখানে এক ধরনের বিকৃতি কাজ করছে। শুভর সারা গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল।

আকরাম তখনই চমকে উঠে চোখ সরিয়ে নিল, যেন কিছু হয়নি। কিন্তু শুভ বুঝতে পারল, এটা কোনো সাধারণ ঘটনা নয়।

রাতের ভয়াল উপস্থিতি

সেদিন রাতে, শুভর ঘুম ভেঙে গেল হালকা ফিসফিস শব্দে। প্রথমে ভেবেছিল বাতাসের আওয়াজ, কিন্তু কিছুক্ষণ শুনে বুঝতে পারল, কেউ আস্তে আস্তে কথা বলছে।

সে উঠে দরজার কাছে গিয়ে বাইরে উঁকি দিল। করিডোর অন্ধকার, কেবল এক কোণে চাঁদের আলো এসে পড়ছে। কিন্তু হঠাৎই, সে দেখতে পেল—আকরাম ধীরে ধীরে মায়ের ঘরের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়াল।

শুভর শ্বাস আটকে গেল। আকরাম নিঃশব্দে দরজার কাছে মাথা ঝুঁকিয়ে কিছু শুনছে। তারপর, সে হাত বাড়িয়ে ধীরে ধীরে দরজার গায়ে হাত রাখল।

শুভর গা শিউরে উঠল।

আকরাম কি ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছে?

ঠিক তখনই, ঘর থেকে মায়ের আওয়াজ এলো, যেন তিনি কিছু অনুভব করেছেন। “কে ওখানে?”

আকরাম সঙ্গে সঙ্গে একপাশে সরে গেল, যেন কিছু হয়নি। শুভ দেখল, সে ধীরে ধীরে পেছন ঘুরে করিডোর ধরে হাঁটতে লাগল, কিন্তু তার হাঁটার ধরন কেমন যেন অস্বাভাবিক।

শুভ দরজা বন্ধ করে বিছানায় শুয়ে পড়ল, কিন্তু ঘুম আসছিল না। এই বাড়ির ভেতরে কিছু একটা ঘটছে। আকরামের চোখ, তার অদ্ভুত আচরণ—সব মিলিয়ে যেন কেমন একটা ভয় ছড়িয়ে আছে।

রঞ্জিতের অবিশ্বাস

পরদিন সকালে মীনা রঞ্জিতকে বললেন, “আকরাম লোকটা কেমন যেন অদ্ভুত। ওকে আমি ঠিক বিশ্বাস করতে পারছি না।”

রঞ্জিত কাগজ পড়ছিলেন। “কেন, কী করেছে ও?”

মীনা কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলেন। কী বলবেন? নির্দিষ্ট করে কিছু ধরতে পারছেন না, কিন্তু ভিতর থেকে একটা ভয় কাজ করছে।

“সে আমাকে মাঝে মাঝে এমনভাবে দেখে… বুঝতে পারি না, কিন্তু স্বাভাবিক লাগে না।”

রঞ্জিত হাসলেন, “তোমার মাথার ভুল। লোকটা বৃদ্ধ, এত কিছু ভাববে কেন?”

মীনা কিছু বললেন না, কিন্তু তার ভয় কমল না।

শুভও বাবার কাছে কিছু বলতে চেয়েছিল, কিন্তু পরে ভাবল, বাবার স্বভাব তো জানাই আছে—সে ভূত-প্রেত এসব বিশ্বাস করে না, তাছাড়া আকরামের ব্যাপারে তার কোনো সন্দেহও নেই। বরং উল্টো শুভকেই বলবে, এসব তার কল্পনা।

কিন্তু শুভ জানে, এটা কল্পনা নয়।

এই বাড়ির কিছু একটা আছে।

এই বাড়ির দেয়ালের মাঝে, বাতাসের মধ্যে, রাতের নীরবতার মধ্যে লুকিয়ে আছে এমন কিছু, যা ধীরে ধীরে তাদের গ্রাস করতে চাইছে।

(চলবে…)
[+] 6 users Like Toxic boy's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অন্ধকারের অভিশাপ - by Toxic boy - 04-03-2025, 11:40 PM



Users browsing this thread: 21 Guest(s)