04-03-2025, 11:38 PM
অধ্যায়: অস্বস্তির শুরু
বিকেলবেলা, মীনা রান্নাঘরে কাজ করছিল। রোদ মরে এসেছে, আকাশে একটা অদ্ভুত কমলা আভা ছড়িয়ে আছে। শুভ উঠোনে বসে কিছু একটা লিখছিল, আর রঞ্জিত বারান্দায় বসে চা খাচ্ছিল। সবকিছুই যেন স্বাভাবিক ছিল—কিন্তু মীনার মনে হচ্ছিল, কেউ যেন তাকে দেখছে।
সে থেমে গেল। ধীর গতিতে পিছন ফিরে তাকাল।
রান্নাঘরের দরজার সামনে আকরাম দাঁড়িয়ে ছিল।
সাধারণত সে কাজের সময় আসে না, কিন্তু আজ কেমন যেন স্থির হয়ে তাকিয়ে আছে। চোখেমুখে কোনো ভাব নেই, অথচ তার দৃষ্টি মীনাকে যেন কেটে ফেলার মতো গভীর।
“আ… আকরাম, কিছু দরকার?”
আকরাম কয়েক সেকেন্ড চুপ করে রইল। তারপর খুব ধীরে হাসল। সেই হাসি ছিল ঠোঁটের কোণে—কোনো উচ্ছ্বাসহীন, অনুভূতিহীন।
“বউমা, আপনার হাত কেটে গেছে।”
মীনা চমকে তাকাল। সত্যিই, সে খেয়ালই করেনি, ছুরি কাটতে গিয়ে সামান্য আঙুল ছুঁয়ে গেছে। সামান্য রক্ত বেরিয়েছে।
আকরাম ধীরে ধীরে তার দিকে এগিয়ে এল।
“রক্ত বড় অদ্ভুত জিনিস, না?” সে ফিসফিস করে বলল। “একবার বেরোলে আর ধরে রাখা যায় না…”
মীনার শরীর হিম হয়ে গেল।
সে পেছিয়ে গিয়ে বলল, “আমি ঠিক আছি। তুমি যাও, তোমার কাজ করো।”
আকরাম তখনও তাকিয়েই ছিল। তারপর ধীরে ধীরে পিছু হটে চলে গেল।
কিন্তু মীনা অনুভব করল, কিছু একটা ঠিক নেই। এই লোকটা… স্বাভাবিক না।
রঞ্জিত বিশ্বাস করে না
রাতে মীনা রঞ্জিতকে বলল, “এই আকরাম লোকটাকে আমি পছন্দ করতে পারছি না।”
রঞ্জিত পত্রিকা পড়ছিল। সে মাথা না তুলেই বলল, “হঠাৎ এটা কেন বলছো?”
“আমি জানি না… কেমন যেন অস্বস্তি লাগে ওর সামনে।”
“অস্বস্তি লাগছে? কীরকম?”
“ঠিক বলতে পারব না। কিন্তু ওর চোখে কিছু একটা আছে… যেন খুব কিছুর সন্ধান করছে। আর ওর কথা বলার ভঙ্গি, তাকানোর ধরন—কেমন যেন অদ্ভুত।”
রঞ্জিত এবার তাকাল। “শোনো, তুমি না হয় একটু বেশি ভাবছো। লোকটা বয়স্ক, গ্রাম থেকে এসেছে, এদের ভাষা আমাদের মতো হবে না। এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর কিছু নেই।”
“কিন্তু… আজ রান্নাঘরে ওর ব্যবহারটা কেমন ছিল। এমনভাবে তাকাচ্ছিল—”
“উফফ! এতসব ভাবার দরকার নেই, মীনা। তুমি বাড়তি কল্পনা করছো। আমি একেবারে বাজে লোক হলে তাকে কাজে রাখতাম না, বুঝলে?”
মীনা কিছু বলল না।
রঞ্জিত আবার পত্রিকায় মন দিল, আর মীনা জানত, সে যত কথাই বলুক, তার স্বামী এটা গুরুত্ব দেবে না।
ভয়ের অনুভূতি
সেই রাতে, শুভর হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল।
কেন জানি না, তার মনে হচ্ছিল, ঘরের বাইরে কেউ দাঁড়িয়ে আছে।
সে আস্তে করে দরজার কাছে গেল। কান পেতে শুনল—কেউ নিঃশ্বাস নিচ্ছে। ভারী, ধীর নিঃশ্বাস।
তারপর খুব হালকা একটা খটখট শব্দ।
শুভ দরজার নিচের ফাঁক দিয়ে উঁকি মারল।
জানালার বাইরে দিয়ে এক ছায়া চলে গেল।
শুভর পুরো শরীর কাঁপতে লাগল।
কে ছিল সেটা?
(চলবে…)
বিকেলবেলা, মীনা রান্নাঘরে কাজ করছিল। রোদ মরে এসেছে, আকাশে একটা অদ্ভুত কমলা আভা ছড়িয়ে আছে। শুভ উঠোনে বসে কিছু একটা লিখছিল, আর রঞ্জিত বারান্দায় বসে চা খাচ্ছিল। সবকিছুই যেন স্বাভাবিক ছিল—কিন্তু মীনার মনে হচ্ছিল, কেউ যেন তাকে দেখছে।
সে থেমে গেল। ধীর গতিতে পিছন ফিরে তাকাল।
রান্নাঘরের দরজার সামনে আকরাম দাঁড়িয়ে ছিল।
সাধারণত সে কাজের সময় আসে না, কিন্তু আজ কেমন যেন স্থির হয়ে তাকিয়ে আছে। চোখেমুখে কোনো ভাব নেই, অথচ তার দৃষ্টি মীনাকে যেন কেটে ফেলার মতো গভীর।
“আ… আকরাম, কিছু দরকার?”
আকরাম কয়েক সেকেন্ড চুপ করে রইল। তারপর খুব ধীরে হাসল। সেই হাসি ছিল ঠোঁটের কোণে—কোনো উচ্ছ্বাসহীন, অনুভূতিহীন।
“বউমা, আপনার হাত কেটে গেছে।”
মীনা চমকে তাকাল। সত্যিই, সে খেয়ালই করেনি, ছুরি কাটতে গিয়ে সামান্য আঙুল ছুঁয়ে গেছে। সামান্য রক্ত বেরিয়েছে।
আকরাম ধীরে ধীরে তার দিকে এগিয়ে এল।
“রক্ত বড় অদ্ভুত জিনিস, না?” সে ফিসফিস করে বলল। “একবার বেরোলে আর ধরে রাখা যায় না…”
মীনার শরীর হিম হয়ে গেল।
সে পেছিয়ে গিয়ে বলল, “আমি ঠিক আছি। তুমি যাও, তোমার কাজ করো।”
আকরাম তখনও তাকিয়েই ছিল। তারপর ধীরে ধীরে পিছু হটে চলে গেল।
কিন্তু মীনা অনুভব করল, কিছু একটা ঠিক নেই। এই লোকটা… স্বাভাবিক না।
রঞ্জিত বিশ্বাস করে না
রাতে মীনা রঞ্জিতকে বলল, “এই আকরাম লোকটাকে আমি পছন্দ করতে পারছি না।”
রঞ্জিত পত্রিকা পড়ছিল। সে মাথা না তুলেই বলল, “হঠাৎ এটা কেন বলছো?”
“আমি জানি না… কেমন যেন অস্বস্তি লাগে ওর সামনে।”
“অস্বস্তি লাগছে? কীরকম?”
“ঠিক বলতে পারব না। কিন্তু ওর চোখে কিছু একটা আছে… যেন খুব কিছুর সন্ধান করছে। আর ওর কথা বলার ভঙ্গি, তাকানোর ধরন—কেমন যেন অদ্ভুত।”
রঞ্জিত এবার তাকাল। “শোনো, তুমি না হয় একটু বেশি ভাবছো। লোকটা বয়স্ক, গ্রাম থেকে এসেছে, এদের ভাষা আমাদের মতো হবে না। এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর কিছু নেই।”
“কিন্তু… আজ রান্নাঘরে ওর ব্যবহারটা কেমন ছিল। এমনভাবে তাকাচ্ছিল—”
“উফফ! এতসব ভাবার দরকার নেই, মীনা। তুমি বাড়তি কল্পনা করছো। আমি একেবারে বাজে লোক হলে তাকে কাজে রাখতাম না, বুঝলে?”
মীনা কিছু বলল না।
রঞ্জিত আবার পত্রিকায় মন দিল, আর মীনা জানত, সে যত কথাই বলুক, তার স্বামী এটা গুরুত্ব দেবে না।
ভয়ের অনুভূতি
সেই রাতে, শুভর হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল।
কেন জানি না, তার মনে হচ্ছিল, ঘরের বাইরে কেউ দাঁড়িয়ে আছে।
সে আস্তে করে দরজার কাছে গেল। কান পেতে শুনল—কেউ নিঃশ্বাস নিচ্ছে। ভারী, ধীর নিঃশ্বাস।
তারপর খুব হালকা একটা খটখট শব্দ।
শুভ দরজার নিচের ফাঁক দিয়ে উঁকি মারল।
জানালার বাইরে দিয়ে এক ছায়া চলে গেল।
শুভর পুরো শরীর কাঁপতে লাগল।
কে ছিল সেটা?
(চলবে…)