Thread Rating:
  • 170 Vote(s) - 2.83 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery স্বামীর কল্পনা স্ত্রীয়ের যন্ত্রণা
স্বামীর কল্পনা স্ত্রীয়ের যন্ত্রণা পর্ব ৩৮

সমীর ধীরে ধীরে সুস্থ হতে লাগলো। ওদিকে শাশুড়ি, বউমার উপর ফতোয়া জারি করেছিল যতদিন না তার ছেলে হসপিটাল থেকে ছাড়া পাচ্ছে, ততদিন অনুরিমা বাড়ির বাইরে পা পর্যন্ত রাখবেনা, সমীরকে দেখতে যাওয়া তো দূরের কথা। রাকিবও ফোন করে করে অনুরিমাকে পাচ্ছিলো না, কারণ অপরাধবোধ ও শোকে কাতর হয়ে অনুরিমা সবার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিল।

বাড়িতে শশুর শাশুড়ি তাকে কোণঠাসা করে দিয়েছে। অনুরিমার শশুরমশাই ব্রজমোহন বাবু নেহাতই মাটির মানুষ। তার মন চাইছিলো না বউমার সাথে কথা বন্ধ করে তাকে বাড়িতেই বয়কট করতে। কিন্তু পরিবারে কাননবালা দেবীর উপর কারোর কথা চলেনা, স্বয়ং বাড়ির কর্তা ব্রজমোহন বাবুরও না। তিনি তাঁর স্ত্রীকে যথেষ্ট সমঝে চলেন।

বাড়িতে সমীরের খোঁজ নিতে তাদের অনেক আত্মীয় আসছে, তাদের সামনেও অনুরিমাকে বেরোতে দেয়া হচ্ছিলো না এই বলে যে স্বামীর অ্যাক্সিডেন্টের পর থেকেই বৌ শয্যা নিয়েছে। অনুরিমার বাড়ির লোক আসতে চাইছিলো সমীরের এই দুর্দিনে পাশে দাঁড়াতে কিন্তু বাপের বাড়ির কাউকে কাননদেবী অ্যালাও করছিলোনা অনুরিমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে।

[Image: Part-38-Pic-A.jpg]
একাকী অনুরিমা

[Image: Part-38-Pic-B.jpg]

এদিকে অনুরিমার জীবন চরম অবহেলায় যেন নরকে পরিণত হচ্ছিলো। তার আর বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করছিলোনা। তবুও সে মনে মনে নিজের স্বামীর সুস্থতার কামনা করে যাচ্ছিলো। নিজেকেই দায়ী করছিলো সমীরের অ্যাক্সিডেন্টের জন্য। ভাবছিলো সে এই শাস্তিটা সত্যি ডিজার্ভ করে শাশুড়ির থেকে।

এভাবেই কেটে যায় কয়েকদিন। সমীর অবশেষে ছাড়া পায় হাসপাতাল থেকে। ডাক্তাররা বলেন যে আপাতত সমীরের পক্ষে নিজের পায়ে দাঁড়ানো সম্ভব হবেনা। সে সাময়িকভাবে পঙ্গু হয়েগেছে। খবরটা যেন মাথার উপর বাজ পড়ার মতো আসে মল্লিকবাড়িতে। হাসপাতালে থাকা যাবৎ এত টাকার বিল, ওষুধপত্রের এত খরচ, এরপর গোদের উপর বিষফোঁড়া সমীরের চাকরি চলে যাওয়া ওর পঙ্গুত্বের কারণে।

চরম আর্থিক অনটন নেমে এলো মল্লিকবাড়িতে। বাড়ি ফিরে সমীর দেখে তার স্ত্রী বিহ্বল হয়েগেছে তার দূর্ঘটনার ফলে। মনে মনে এইটুকুই স্বস্তি যে চাকরি চলে গেলেও বউটা অন্তত তারই রয়েছে, কোথাও যায়নি তাকে ছেড়ে, যে আশংকা সে হসপিটালে থাকাকালীন করে আসছিলো। কারণ হাসপাতালে তাকে দেখতে সবাই এসেছিলো, শুধু তার সবচেয়ে আপন মানুষটা ছাড়া।

বাবা ব্রজমোহন বাবুকে জিজ্ঞাসা করায় তিনি বলেছিলেন যে তার মা তার স্ত্রীকে দণ্ডিত করেছে সঠিক সময় পত্নী ধ'র্ম পালন না করতে পারায়। সেই শুনে সমীর আরোই বিচলিত ও চিন্তিত হয়ে ওঠে অনুরিমার জন্য। মনে মনে ভাবে এত যাতনা সইতে না পেরে অনুরিমা তাকে ছেড়ে চলে যাবেনা তো? এখন তো তার যাওয়ার জায়গার অভাব নেই। সে-ই জানে সে এতদিন যাবৎ নিজের ফ্যান্টাসি পূরণের জন্য অনুরিমাকে কতোটা যন্ত্রণা দিয়েছে। এখন যদি তার মাও তাকে অন্যভাবে যন্ত্রণা দেয় তাহলে হয় মৃত্যু বা সংসার ত্যাগ ছাড়া অন্য কোনো পথ অনুরিমার জন্য খোলা থাকবে না।

[Image: Part-38-Pic-C.jpg]
বয়কট অনুরিমা??

সবাই তো শুধু অনুরিমার দোষটাই দেখছে যে কেন সে আপৎকালীন সময়ে ফোনটা ধরেনি! কিন্তু কেউ তো জানেই না এরকম একটা আপৎকালীন পরিস্থিতিতে অনুরিমার unavailable থাকার পিছনে মূল কান্ডারি ছিল দূর্ঘটনা কবলিত তাদের ছেলে সমীরই। সমীর এটা বুঝছিলো বলেই অনুরিমাকে অত যন্ত্রণা দিতে বারণ করছিলো নিজের বাবা মা কে। বাবা মেনে নিলেও, মা নাছোড়বান্দা ছিল এবিষয়ে। সমীর জেদ করলেও বউমাকে কাননবালা তার ছেলের কাছে ঘেঁষতে দেয়নি যতদিন সে হসপিটালে ভর্তি ছিল।

বাড়ি ফিরে সমীর অনুরিমার সাথে সবকথা খুলে বলে, তার আশা আশংকা ভালোবাসার কথা। হাত জোর করে ক্ষমা চেয়ে নেয় নিজের স্ত্রীয়ের থেকে, তার ফ্যান্টাসির কল্পনা তার স্ত্রীয়ের যন্ত্রণার কারণ হয়ে ওঠায়। অনুরিমাও সমীরের সামনে কাঁদতে কাঁদতে ক্ষমা চেয়ে নেয় তার ব্যাভিচারিতার জন্য। সে সকল কথা কনফেস করে সমীরের সামনে। নাহঃ, শুধু রাকিবের সাথে হওয়া ঘটনাসমূহ নয়, সুচরিতার প্রাক্তন স্বামী আদিত্য সেনগুপ্তর সাথে ঘটা বৃষ্টি ভেজা পড়ন্ত বিকেলের মিলনের কথাও।

[Image: Part-38-Pic-D.jpg]
সেদিন পড়ন্ত বিকেলে বৃষ্টিভেজা পরিবেশে একান্তে অনুরিমা ও আদিত্য

সেই অজানা ঘটনার কথা শুনে তো সমীরের চক্ষু চড়কগাছ! ভেবেই তার বুক কেঁপে উঠলো যে তার অনুরিমা তার ব্যতীত শুধু একজন নয় বরং দুজন পুরুষের সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছে। আর কাছাকাছি এসেছে আরো একজনের, ডাক্তার রাজীব! তার সাথে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের পার্কে বা মানি স্কোয়ারের পিভিআর সিনেমা হলে রিহার্সালের নামে হওয়া সেই মেক আউট, অনুরিমার কাছে আসা, সেগুলোও সমীর ভুলবে কি করে!

প্রাথমিক ভাবে আদিত্যর বিষয়টা শুনে সমীর খুব ভেঙে পড়েছিল। কল্পনাতেও ভাবতে পারেনি তার স্ত্রী তার ফ্যান্টাসি পূরণের জন্য এতদূর এগিয়ে যাবে। কিছুটা মনক্ষুন্ন হয়েছিল তার অনুরিমার উপর। কিন্তু অনুরিমা হাল না ছেড়ে বারংবার তাকে বোঝাতে থাকে যে সেসব শুধু সমীরের ইচ্ছেপূরণের একটা ধাপ হিসেবে দেখে সুচরিতার স্বামীর সাথে সে মিলনে লিপ্ত হয়েছিল। আরো বলে সে চাইলে এই বিষয়টা সমীরের থেকে আড়াল করে যেতে পারতো কিন্তু তা সে করেনি। কারণ সে এখন চায় সমীরের সাথে সবটা নতুন করে শুরু করতে। আর তাই পুরোনো সব পাপের কথা কবুল করে ক্ষমা চেয়ে তবেই সে পূনরায় আদর্শ পত্নী হয়ে উঠতে চায়।

[Image: Part-38-Pic-E.jpg]
নতুন স্বপ্ন চোখে মেখে.....

অনুরিমা তার আত্মপক্ষ সমর্থনে উদাহরণ দিয়ে নিজের স্বামীর সমীরকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলো তার করা সকল ব্যভিচারের কারণ ও উদ্দেশ্য। সে সমীরকে বোঝাতে চাইলো যে বিভিন্ন কারণে এক পবিত্র নারীর একাধিক পুরুষের সাথে সঙ্গমের উদাহরণ সেই মহাভারত কাল থেকে এই পবিত্র ভূমি দেখে এসেছে।

প্রথম উদাহরণ ধীবর কন্যা সত্যবতী, হস্তিনাপুর অধীশ রাজা শান্তনুর জায়া। যিনি রাজা শান্তনু সাথে বিবাহপূর্বক পরাশর নামক এক ঋষির সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হন, এবং তাদের একটি পুত্র হয় বেদব্যাস নামে যিনি পরবর্তীতে এই মহাভারতের ঘটনাসমূহকে লিপিবদ্ধ করে এক মহাকাব্যের রচয়িতা হন।

দ্বিতীয় উদাহরণ সেই কুরু বংশেরই আরেক রানীর, যাকে আমরা মাতা কুন্তী বলে চিনি। যিনি তার স্বামীর পিতামহীর মতোই আইবুড়ো কালে মা হয়েছিলেন। সূর্যদেবের সংস্পর্শে এসে কর্ণের জন্ম দিয়েছিলেন কুন্তী।

আর তৃতীয় উদাহরণ কুন্তীর পুত্রবধূ দ্রৌপদী, যিনি কুন্তীর আদেশেই কুন্তীর পাঁচ সন্তান কে বিবাহ করেছিলেন। এখন কথা হচ্ছে আমি এই তিনজনের নামই কেন নিলাম। কারণ এই তিন জন নারী একাধিক পুরুষের সাথে সহবাসের পরেও পবিত্র এবং কুমারীত্ব ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিল।

কুমারী সত্যবতীর রূপে মুগ্ধ হয়ে যখন ঋষি পরাশর তার সাথে সহবাস করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন তখন প্রাথমিকভাবে সত্যবতী রাজি হননি। কিন্তু ঋষি পরাশর তাকে বরদান করেন যে তাঁর সাথে মিলনের পরেও সত্যবতীর কুমারীত্ব অক্ষুন্ন থাকবে। পরবর্তীতে তাদের মিলনে জন্ম নেন মহাভারতের রচয়িতা বেদব্যাস।

দ্বিতীয় ঘটনায় কুন্তীর সেবায় তুষ্ট হয়ে দুর্বাসা মুনি তাকে বরদান করেন যে তিনি যেকোনো দেবতার সাথে মিলিত হয়ে পুত্রসন্তানের জন্ম দিতে পারবেন, তাতে তাঁর কুমারীত্ব হরণ হবেনা। এর ফলপ্রসূত তিনি বিবাহের পূর্বে সূর্যদেবের সন্তানের মা হন, এবং কর্ণের মতো এক বীরযোদ্ধার জন্ম দেন।

তৃতীয়ত কুন্তীর পাঁচ সন্তান অর্থাৎ পঞ্চ পান্ডবকে বিবাহের পর দ্রৌপদীর সতীত্ব রক্ষার জন্য নিয়ম করা হয় যে তিনি প্রত্যেক স্বামীর সাথে বারো বৎসর কাল দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করবেন, আর সেই সময়কালে তার অপর চার স্বামী তাঁর থেকে দূরে থাকবেন, এবং প্রতি বারো বৎসরের দাম্পত্য কালের শেষে তিনি পূনরায় কুমারীত্ব লাভ করবেন। এইভাবে দ্রৌপদী তাঁর পাঁচ স্বামীর কাছেই সতী রূপে বিরাজ করেন।

এর থেকে প্রমাণিত হয় কোনো ব্যভিচারিতা যদি কোনো কারণহেতু, বা মহৎ উদ্দেশ্য স্থাপনে, বা নিজ কর্তব্যের খাতিরে করা হয়, তাহলে তাকে ব্যভিচারিতা বলেনা, এবং পত্নীকেও ব্যভিচারিণী বলা যায় না। অনুরিমা আদিত্যর সাথে মিলিত হয়েছিল সমীরের ফ্যান্টাসি পূরণের প্রক্রিয়ার অনুশীলন হেতু। তার স্বামী যদি এধরণের নিয়মবিরুদ্ধ কল্পনা মনে পোষণ না করতো তাহলে অনুরিমার মতো পতিব্রতা স্ত্রীকে পরপুরুষের শয্যাসঙ্গিনী হওয়ার জন্য ছুটে যেতে হতোনা, তা সে আদিত্য হোক বা রাকিব, বা রাজীবের সাথে চুম্বনের আদান প্রদান। অতএব অনুরিমা ব্যভিচারিণী নয়, সে সমীরকে ঠকায়নি।

অনুরিমার এত যুক্তি শুনে সমীরও খানিকটা নিজের মনকে শান্ত করে। অনুরিমা বারবার তাকে অনুরোধ করে যে সামনে অনেক ঝড়ঝাপটা আসতে চলেছে। সমীরের চাকরি নেই, তিন্নির পড়াশুনা রয়েছে, শশুরমশাই এর পেনশনে গোটা পরিবার চলতে পারবে না। তাই এখন সব মান-অভিমান মুছে, অতীতে হওয়া সকল অনভিপ্রেত ঘটনা ভুলে সামনের দিকে তাকাতে হবে। আবার নতুন করে সবটা শুরু করতে হবে, ঠিক যেমন আগেকার সমীর অনুরিমা, যাদের জীবনে আর কোনো তৃতীয় ব্যক্তি থাকবে না, না আদিত্য না রাকিব না অন্য কেউ। এই বলে সে সমীরের সামনেই রাকিবের নম্বরটা ডিলিট করে ব্লক করে দিলো, কিন্তু মন থেকে কি করতে পারলো? তা স্বয়ং ঈ'শ্বরই জানেন।

[Image: Part-38-Pic-F.jpg]
সমীর-অনুরিমা

নতুন করে জীবন চলার পণ নিলো সমীর অনুরিমা, তবে তারা কি সফল হবে? নাকি অনুরিমার অতীত কালো ছায়ার মতো তার সাথে কোনো না কোনো ভাবে জুড়ে থাকবে?

জানতে হলে পড়তে থাকুন এবং অপেক্ষা করুন স্বামীর কল্পনা স্ত্রীয়ের যন্ত্রণার আগামী পর্বসমূহের। ......

নিজের মূল্যবান মতামত দিয়ে জ্ঞানের আলোয় থ্রেডটিকে আরো আলোকিত করে তুলুন এই আশাই লেখিকা হিসেবে পাঠকদের কাছে করি। ধন্যবাদ!......
Like Reply


Messages In This Thread
RE: স্বামীর কল্পনা স্ত্রীয়ের যন্ত্রণা - by Manali Basu - 26-02-2025, 05:42 AM



Users browsing this thread: 18 Guest(s)