21-02-2025, 05:21 AM
✪✪✪✪✪✪✪✪✪✪
ক্যাম্পাস ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরিটা হয়েই গেলো। লাস্ট সেমিস্টারের এখনো দু'মাস। এই দু'মাস মন দিয়ে পড়তে হবে। হোস্টেলে থেকে সম্ভব নয়। পড়ার চেয়ে অন্য কিছুতে মন যাবে বেশী। বাড়িতে গেলেও পাড়ার বন্ধুরা আছে। এমন কোথাও পালাতে হবে, যেখানে আমাকে খুব কম লোকই চেনে।
কদিন ধরে দেশের বাড়ির কথা খুব মনে পড়ছে। দেশের বাড়ি মানে পিসি ঠাম্মা। সেই ক্লাস টেনের পরীক্ষা দিয়ে কলকাতায় চলে এসেছিলাম; তারপর, আর যাওয়া হয়নি। আমি একটু বেইমানও বটে। যে পিসি ঠাম্মা ১৬টা বছর এই মা মরা নাতিটাকে বুকে আগলে বড় করলো তার কথা এই ৯ বছরে একদম ভুলে গেলাম।
ওহো! এতো কথার মধ্যে নিজের পরিচয়টা দিতেই ভুলে গেছি। আমি গৌতম, গৌতম অধিকারী, বয়েস ২৫, ইলেকট্রনিকসে বি.টেক করে এম.টেক করছি; ক্যাম্পাসিংয়ে চাকরিটা ভালোই বাগিয়েছি। শুরুতেই নাইন ল্যাখ পার অ্যানাম; স্টার্টিং স্যালারি হিসেবে বেশ ভালো। অবশ্য, বন্ধুরা আমাকে গোটি বলেই জানে। গৌতম থেকে গোটি, একমাত্র বন্ধুরাই রাখতে পারে৷
আমাকে জন্মের সময় আমার মা মারা যায়; বাবার বয়েস তখন মাত্র কুড়ি। বাবার বাল্য প্রেম। বিয়ে অবশ্য দু'বছরের। তাহলেও বাবা আর বিয়ে করেনি। আমার দেখাশোনার ভার নিজের পিসির ওপর দিয়ে, ব্যাবসার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। পিসি ঠাম্মা গ্রামের বাড়িতে থাকতো, যার জন্য আমার স্কু/লিং গ্রামেই। অবশ্য, বাবা উত্তম অধিকারী'র লেখাপড়াও ঐ স্কু/লেই। টেন অবধি আমি ঐ স্কু/লেই লেখাপড়া করেছি। পরবর্তী লেখাপড়া শহরের স্কু/লে। বাড়িতে দেখাশোনা করার লোক না থাকায় এই সময়টা আমি হোস্টেলেই থেকেছি।
চাকরির সূত্রে আমাকে বিদেশেও যেতে হবে। তবে আমি ঠিক করেছি আমার মেন অপারেশনটা গ্রাম থেকেই চালাবো। গ্রামের রাস্তাঘাট এখন ভালোই। গাড়িতে দু'আড়াই ঘন্টা। গ্রামে বি.এস.এন.এল.-এর অপ্টিক্যাল ফাইবার লাইন আছে; সুতরাং, হাই স্পীড কানেকশন পেতে কোনো অসুবিধে হবার কথা নয়।
✪✪✪✪✪✪✪✪✪✪
2,211