Thread Rating:
  • 0 Vote(s) - 0 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Non-erotic আমার পছন্দের ছোট গল্প গুলো ( অনেক আছে)
#3
গল্পঃমন_চুরি
পর্ব শেষ 
------------------------------
কে বলল তোমাকে? 

অসীমাদি ফোন করেছিলেন আজ।অসীমাদির বান্ধবীর মেয়ে । কলকাতায় থাকে । অনিরুদ্ধ ঠিক রাজি হয়নি । তবে আপত্তিও করেনি । দুই সপ্তাহ পর এনগেজমেন্ট ।ঐদিন রবিবার নেমন্তন্ন করেছেন আমাদের।

তুমি যেও । আমি যাব না।

মানে ? তোর বন্ধুর এনগেজমেন্ট তুই না গেলে হয় ! এতো অসামাজিক কেন তুই ? সেদিন তো দিব্যি খেয়ে এলি। যেতেই হবে তোকে ।আমি শুনবো না।

আদৃতা উঠে নিজের ঘরে গিয়ে কেঁদে ফেলে। এই কদিন ধরে কত স্বপ্ন দেখেছে অনিরুদ্ধকে নিয়ে। কতো আনন্দ পেয়েছে। কেন হলো এমন, ওর সঙ্গে।
কেন এমন করলো অনিরুদ্ধ!

সেদিন আর রাতে খেতে ওঠে না । মাথা ধরেছে বলে মাকে।
এই কদিন অনিরুদ্ধের মর্নিং মেসেজ ছাড়া আর কিছু মেসেজ আসে না ।

একদিন আদৃতা লেখে তোর গার্লফ্রেন্ড ছিল বলিস নি তো সেদিন। 

উত্তরে অনিরুদ্ধ "আমার কোন গার্লফ্রেন্ড ছিল না, এখনও নেই । মা ঠিক করেছে আমার বিয়ে। আমাদের অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ হবে। বিয়ের আগে আমার হবু বউয়ের সঙ্গে মিটও করবো না ।একেবারে এনগেজমেন্ট , তারপর বিয়ে। ফটোতে দেখেছি।"

আমাকে পাঠাবি তোর হবু বউয়ের ফটো?

মায়ের কাছে আছে । মাকে বলবো পাঠিয়ে দিতে।

নারে থাক।

সেই। একেবারে এনগেজমেন্টের দিন দেখবি। বেশি দেরি তো নেই। আমাদের গ্রুপের সবাইকে ইনভাইট করবো । সবাই আসবে ।আনন্দ হবে বেশ।

লেখাটা পড়ে আদৃতার চোখের জল বাধ মানে না । ওর ভালোবাসার মানুষের আশীর্বাদ হবে আর সেখানে আনন্দ করতে হবে ভেবে আবার কেঁদে ফেলে।ওর মনে হয় সময় যেন থমকে যায়। ঐ দিন না আসে। কিছু ভালো লাগে না আর । এতো কষ্ট কেন হচ্ছে ওর ? অনিরুদ্ধের সাথে আগে যোগাযোগ ছিল না। তাহলে এই কদিনে এতো ভালোবাসলো কেন? নিজের মনকে শক্ত করতে চাইলেও পারছে না। সেই নোনা জলের ধারা গড়িয়ে যাচ্ছে।

রাতে অর্পিতাদেবী, নির্মলবাবু ,আদৃতা খেতে বসেছে।
নির্মলবাবু বলেন কি রে মা ! খুব চাপ যাচ্ছে এখন? চোখমুখ বসে গেছে আর খুব ক্লান্ত দেখাচ্ছে কদিন ধরেই দেখছি।

 হ্যাঁ বাবা। সেমিস্টার চলছে। 

  হ্যাঁরে! মনে হচ্ছে রাতে যেন ঘুমাচ্ছিস না । চোখ মুখ বসে গেছে ।এতো চাপ নিস না ।

 আচ্ছা মা ।তারপর খেয়ে উঠে যায়।
অর্পিতাদেবী নির্মলবাবু দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে মুখ টিপে হেসে ফেলেন।

পনেরো তারিখ সকাল থেকেই বাড়িতে যেন ব্যস্ততা। তাড়াতাড়ি জলখাবার খেয়ে নিতে বলেন অর্পিতাদেবী। পার্লারের মেয়েটা আসবে। মা ডেকেছে । চুল বেঁধে দেবে আর হালকা মেকআপ হবে মায়ের।

 অর্পিতাদেবী পার্লারের মেয়েটাকে বলেন আদৃতাকে একটু ঠিক করে দাও তো। আমার মেয়েকে অনিরুদ্ধের হবু বৌয়ের থেকে যেন সুন্দরী লাগে, সেটা আমি দেখাতে চাই। নতুন কিনে আনা একটা সুন্দর শাড়ি , ব্লাউজ দেন ।
 
গাড়ি ভাড়া করে বেলা বারোটা নাগাদ পৌঁছে যায় ওরা। গাড়িতে যেতে যেতে সমানে আদৃতা চোখ মোছে মা বাবার চোখ এড়িয়ে। একটা লজের সামনে দাঁড়িয়েছে গাড়ি। খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে। গেটটা ফুল দিয়ে সুন্দর করে সাজানো আশীর্বাদ লেখা আছে। ভিতরে ঢুকে একটা রুম। দুটো সিংহাসনের রাখা। দেওয়ালে ফুল দিয়ে সাজিয়ে নাম দুটোর ওপর সাদা কাপড় দিয়ে ঢাকা। আশীর্বাদের মুহূর্তে খুলবে ঢাকাটা।

 গাড়ি থেকে নামতেই দেখে মাসীমা, মেসোমশাই ,অন্তরা ,অনিরুদ্ধ।
 
অনিরুদ্ধ আদৃতার কানের কাছে গিয়ে বলে দারুন লাগছে তোকে। ভয় হচ্ছে। তোকে না মালা দিয়ে ফেলি।
আদৃতার বুকটা হু হু করে ওঠে । মনে হচ্ছে মুখে বলে দেয় কেন এমন করলি অনিরুদ্ধ ? আমি কোথায় কম ছিলাম তোর কাছে? কিন্তু বলতে পারেনা। গলায় কষ্টটা দলা পাকিয়ে আছে।

চল্ আমাদের গ্রুপের সবাই এবার আসবে। দুপুরে একসঙ্গে খাবো সবাই।

তোর হবু বৌ কখন আসবে?

এসে যাবে। তোর চোখটা লাল কেন রে?

কাজল পড়াতে গিয়ে চোখে লেগেছিল তাই।

দুপুরে হইহই করে সকলে খেতে খেতে।
শুধু আদৃতা চুপচাপ থাকে। আদৃতা দেখছে ওর মা-বাবা অনিরুদ্ধর বাবা-মার সঙ্গে হেসে হেসে কথা বলছে আর ওর রাগে গা জ্বালা করছে।

অনিরুদ্ধ ঠিক আদৃতার কাছে বসেছে। বন্ধুরা ফটো তুললে অনিরুদ্ধ আরো আদৃতার কাছে সরে আসছে। মনের আরো কষ্ট বাড়ছে আদৃতার।

আদৃতা উঠে পড়েছে। না আর সহ্য হচ্ছে না।
হলের মধ্যে এখন জনা পনেরো আছে। কয়েকজন বন্ধু বান্ধবী । আর আছে দুজনের বাড়ির লোকজন। বাকিরা অনেকে রুমের বাইরের দিকে।

আদৃতা অনিরুদ্ধর দিকে তাকিয়ে বলে,
আমি কি খুব খারাপ ? তোর যে অপছন্দ তা তো মনে হয়না । তোর এনগেজমেন্টের আগেও আমার সঙ্গে এমন করে মিশছিস যেন আমি তোর প্রেমিকা। তাহলে কেন তুই আমাকে বিয়ে করবি না?
 ও মাসীমা আমার মধ্যে কি ছিল না, যে আপনি বান্ধবীর মেয়েকে বৌমা করবেন?
 বলেই আর সামলাতে পারে না নিজেকে, কেঁদে ফেলে আদৃতা।

অর্পিতাদেবী বলেন কি বলেছিলাম দিদি!
দেখুন ভেবে এখনো, সামলাতে পারবেন তো! স্পষ্ট কথা স্পষ্ট করে বলে দেবে কিন্তু।
সবাই হাততালি দিয়ে হেসে ওঠে।

অনিরুদ্ধ আদৃতাকে আনন্দে কোলে তুলে নিয়েছে। 

অন্তরা বলে দাদাভাই আমরা বাইরে চলে যাই।দাঁড়া একটু।
ফাঁকা রুমে অনিরুদ্ধ আদৃতাকে কোলে নিয়ে গিয়ে সাজানো চেয়ারে বসায় । সাদা কাপড়ে মোড়া নামদুটো সরিয়ে দেয়।
এনগেজমেন্টের দুটো নাম জ্বলজ্বল করছে অনিরুদ্ধ আদৃতা।
আবার কাঁদতে কাঁদতে কিল চড় ঘুষি মারতে থাকে অনিরুদ্ধকে।
আদৃতার দুটো হাত শক্ত করে ধরে রেখেছে অনিরুদ্ধ। গভীর চুম্বনে দুজন। বাইরে থেকে হইহই করে ছুটে এসেছে বন্ধুরা। সাদা পাঞ্জাবিতে লিপস্টিকের দাগ অনিরুদ্ধর। আদৃতার ঠোঁট একটু ফুলে উঠেছে। বন্ধুরা বলে সবে তো আশীর্বাদ । এখনই এমন ‌ । ফুলশয্যার রাতে আদৃতার ঠোঁট থেকে রক্ত বেরোবে রে অনিরুদ্ধ। লজ্জা পেয়ে গেছে দু'জন।

 
 আমাকে এমন সারপ্রাইজ দেবার মানে কি ?কতো কেঁদেছি জানিস তুই!
 
সব জানি। আর তুমিও যে সোনা আমাকে কাঁদিয়েছিলে। এটা আন্টি আর মায়ের প্ল্যান।
তোর বয়ফ্রেন্ড আছে মাকে বললে , অর্পিতাআন্টিকে ফোন করে জানে এসব কিছু না । তুই আমাকে জ্বালানোর জন্য মিথ্যা বলেছিস। আমার প্রতি তোর একটা টান আছে ‌ , তুই যে আমাকে ভালোবাসিস আর সেটা সত্যি কিনা দেখার জন্যএই প্ল্যান করা হয়। তারপর তোকে খুব পর্যবেক্ষণ করা হয়। দেখা যায় আমার বিয়ের কথা শুনে তোর পাগলপ্রায় অবস্থা।
আমার খুব কষ্ট হতো রে, মনে হতো তোকে বলে দিই। কিন্তু অন্তরা আর মা বলতে দেয়নি। তোর এই বিস্ফোরণটা দেখতে চেয়েছিলাম সবাই।
অর্পিতাআন্টি বলেছিলেন ওর নিজের মুখে স্বীকার করবে । যদি ভালোবাসে আর সেটাই দেখতে চেয়েছিলাম আমরা।
আই লাভ ইউ টু সোনা । সেই উচ্চমাধ্যমিক থেকে। যখন সৈকত বলেছিল তাকিয়ে লাভ নেই , এমন মোটু হলে মেয়েরা কেউ পাত্তা দেবে না । তখন থেকেই ভালোবেসেছি । তোর খোঁজখবর রেখেছি। বাড়িতে বলেছি বিয়ে করবো তো তোকেই।

সেই মুহূর্তে আদৃতার কাকু কাকিমা রজত এসে পৌঁছায় । সবাই জানতো। শুধু আমি জানতাম না।
নিজেকে খুব হাঁদা মনে হয় আদৃতার‌ । মনে হয় ওই সবথেকে বোকা‌ । ওর বোঝা উচিত ছিল ব্যাপারটা। 
মাকে তো চেনে নিশ্চয়ই কোনো প্ল্যান করেছে এটা আগে ভাবা উচিত ছিল।

অনিরুদ্ধ বলে সৈকতের আসার অপেক্ষায় আছি। ওর জন্য এটা সারপ্রাইজ।
একটু পরে বউ মেয়ে নিয়ে সৈকত আসে।
আদৃতা অনিরুদ্ধ কে একসাথে দেখে সৈকত বলে শালা সেই আদৃতাকেই। ধন্য তুই অনিরুদ্ধ।
তারপর সৈকতের হাঁ হয়ে যাওয়া মুখে একটা রসগোল্লা দিয়ে অনিরুদ্ধ বলে শোধ বোধ।
বন্ধুরা সবাই হো হো করে হেসে ওঠে।

___________________সমাপ্ত_গল্প_________________

 
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

[+] 1 user Likes Bangla Golpo's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: আমার পছন্দের ছোট গল্প গুলো ( অনেক আছে) - by Bangla Golpo - 15-02-2025, 07:58 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)