Thread Rating:
  • 170 Vote(s) - 2.83 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery স্বামীর কল্পনা স্ত্রীয়ের যন্ত্রণা
পর্ব ৩৬

ছদ্মনামে প্রেমিকার বাড়িতে প্রবেশ

বাড়ি ফিরে অনুরিমার মাথায় যেন বাজ পড়লো যখন সে জানতে পারলো সমীরের অ্যাক্সিডেন্টের ব্যাপারে। গোটা পৃথিবীটা তার অন্ধকার লাগছিলো। শাশুড়িমা কটু কথা বলে বলে একেবারে ধুয়ে দিচ্ছিলো। সে কিছু বলতে পারছিলোনা কারণ জানে সে দোষ করেছে। দোষ নয় একে পাপ বলে, মহাপাপ।

আরো চমকে গেলো অ্যাক্সিডেন্টের বিষয় বিস্তারিত ভাবে জেনে। লোকেশন ছিল বাসন্তী হাইওয়ে। তার মানে ঘুসিঘাটা থেকে বেড়িয়েই সমীরের গাড়িটা খালে গিয়ে পড়েছে। সমীর নিশ্চই খুব কষ্ট পেয়ে অন্যমনস্ক হয়ে গাড়ি চালাচ্ছিল, কারণ অনুরিমা জানে সমীরের পাকা হাত ড্রাইভিং-এ। ফাঁকা রাস্তায় ওভার-স্পীডিং করে টাল সামলাতে না পেরে সমীর কিছুতেই গাড়ি খালে ফেলে দিতে পারেনা, যদি না সে খুব রাগান্বিত বা অন্যমনস্ক হয়ে থাকে।

[Image: Porbo-36-A.jpg]
সমীর অনুরিমা

এতবছর মানুষটার সাথে সংসার করছে। ছোটখাটো ঠোকাঠুকি অন্য গাড়ির সাথে হয়েছে তবে বেশিরভাগ সেটা অন্যের দোষেই। সমীর নিজের দোষে ড্রাইভিং-এ এত বড়ো ব্লান্ডার করবে তা কল্পনাতীত। অনুরিমা ভাবলো এসবের জন্য সত্যিই সে নিজে দায়ী। তার কারণেই তার স্বামী আজ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে! ভাবতে ভাবতে অনুরিমার মাথা ঘুরে গেলো। মাটিতে লুটিয়ে পড়লো সে।

জ্ঞান ফিরলো পরের দিন সকালে। দেখলো মাথার সামনে তিন্নি বসে আছে। পাশের বাড়ির জেঠিমা এসছেন খোঁজ নিতে। তাঁর কাছ থেকে জানতে পারলো গত রাতে সে ভিরমি খেয়ে পড়ে যাওয়ার পর শোরগোল পরে যায়। পাশের কয়েকটা বাড়ি থেকে কয়েকজন ছুটে আসেন শাশুড়ীর চিৎকার শুনে। পাড়ার মেয়ে বউরাই অনুরিমাকে একসাথে কোলে তুলে বিছানায় শুইয়ে দেয়। তারপর ডাক্তার ডাকা হয়। ডাক্তার কিছু ওষুধ প্রেসক্রাইব করে যায়, যা অবচেতন অবস্থায় ঘোরের মধ্যে অনুরিমাকে কোনোমতে খাইয়ে দেওয়া হয়। ডাক্তারবাবু আশ্বাস দেন সকালের মধ্যেই অনুরিমার জ্ঞান ফিরে আসবে। হলোও তাই। ....

অনুরিমা সমীরের কথা জিজ্ঞেস করলে সে জানতে পারে সমীরের এখনও জ্ঞান ফেরেনি। সংকট কাটেনি। সে হসপিটালে যেতে চাইলো, কিন্তু সবাই মানা করলো তার এই শারীরিক অবস্থা দেখে। ওদিকে রাকিব বারবার ফোন করেও অনুরিমাকে পাচ্ছিলো না। চার্জ শেষ হয়ে অনুরিমার ফোন সুইচ অফ হয়েগেছিলো। বাড়ির ওই পরিস্থিতিতে কারোর খেয়ালও হয়নি ফোনটা চার্জে দেওয়ার, অনুরিমারও তো নয়ই। রাকিব টেনশনে পড়েগেছিলো অনুরিমাকে নিয়ে। না জানি বাড়িতে ওকে নিয়ে কি হচ্ছে! কাস্টমার থেকে কখন যে অনুরিমা তার প্রেমিকা হয়েগেছিলো সেটা সে বুঝতেও পারেনি।

[Image: Porbo-36-B.jpg]
রাকিবের প্রেমিকা অনুরিমা

আর থাকতে না পেরে রাকিব একটা বড়ো ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলো। সে ঠিক করলো ছদ্মনাম নিয়ে অনুরিমার শশুরবাড়ি যাবে তার খোঁজ নিতে। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। রাকিব সেই মোড়ের মাথায় এলো যেখানে সে আগের দিন অনুরিমাকে ড্রপ করেছিল। এক্সাক্ট ঠিকানাটা সে জানতো না। তাই অনুরিমার আর সমীরের নাম ধরে লোকাল লোকদের জিজ্ঞেস করে করে সে বাড়িটা খুঁজে পায়।

বাড়ির সামনে এসে রাকিব একবার থমকে দাঁড়ালো। রাকিবের বুকটা ধড়পড় করছিলো। না জানি কোন এক অজানা ঠিকানায় সে ঢুকছে। অনুরিমার বাড়ির লোক কিভাবে রিএক্ট করবে তার জানা নেই, সমীরবাবু বাড়িতে আছেন কিনা জানা নেই, সর্বোপরি যার জন্য সে এসছে, অনুরিমা, সে কিভাবে বিষয়টা দেখবে সেটাও জানা নেই তার। তাই অত সাত-পাঁচ না ভেবে রাকিব দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস ফেলে বাড়িতে প্রবেশ করলো।

কলিং বেল বাজালো। শাশুড়িমা দরজাটা খুললো। রাকিবকে দেখে তিনি যথারীতি চিনতে পারলেন না, "কে আপনি?"

রাকিব একটু ঘাবড়ে গিয়ে তোতলিয়ে উত্তর দিলো, "ননঃ ননন.. নমস্কার মাসিমা! আমি রাঃ.. রাকঃ.. রাকেশ... সমীরবাবুর পরিচিত। সমীরবাবু বা ওঁনার স্ত্রী বাড়িতে আছেন। উনিও মানে অনুরিমা দেবীও আমাকে চেনেন।....."

কাননবালা দেবী রাকিব ওরফে তার কাছে রাকেশ বলে পরিচয় দেওয়া লোকটিকে একবার আপাদমস্তক দেখলো। এই লোকটাকে তো তিনি আগে কখনও দেখেননি! নামও শোনেনি। তবুও তিনি ভদ্রতার খাতিরে রাকিবকে সমীরের বিষয়ে অবগত করলেন। বললেন, "আপনি জানেন না সমুর অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে?"

"কি?? সমু মানে সমীরের অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে? কখন, কোথায়??"

"আর বলবেন না, তরতাজা ছেলেটা আমার কালকে অফিসের জন্য বেড়োলো, তারপর কি যে হলো কে জানে। হঠাৎ বিকেলের দিকে খবর এলো সমু কোন বাসন্তী হাইওয়ের ধারে গাড়ি নিয়ে খালে পড়ে গ্যাছে! কি কুক্ষণে যে সে সেখানে গেছিলো, কেনই বা গেছিলো কে জানে!", এই বলে কানন দেবী কাঁদতে লাগলো।

রাকিব দুইয়ে দুইয়ে চার করে বুঝতে পারলো এই কারণে এই মহিলা এতবার অনুরিমাকে কল করছিলো। কাল ঘুসিঘাটা থেকে গাড়ি নিয়ে বেড়োনোর পর অনুরিমার হাসবেন্ডের অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে! অনুরিমার আশঙ্কাটাই সত্যি ছিল!

রাকিব মনে মনে ভাবলো, "ইস্স কেন যে আমি অনু-কে ফোনটা ধরতে দিলাম না! হায় আ'ল্লাহঃ! অনেক বড়ো গুনাহঃ হয়েগেছে আমার দ্বারা! আমি এবার কি করে অনুরিমাকে মুখ দেখাবো এখন। না জানি কি অবস্থায় রয়েছে সে! আমাকে দেখলে যদি সে রিএক্ট করে? নাহঃ নাহঃ তা সে করবে না, কারণ এটা তার শশুরবাড়ি। আমাকে দেখলেও সে তার শাশুড়ির সামনে মেপে মেপে কথাই বলবে বলে মনে হয়।"

অনুরিমার শাশুড়ি কাঁদছে দেখে রাকিব ওরফে রাকেশ শান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলো, "চিন্তা করবেন না মাসিমা, সব ঠিক হয়ে যাবে। আচ্ছা অনুরিমা আছে বাড়িতে? না মানে ওঁনার সাথে যদি সমীরের বিষয় নিয়ে একটু কথা বলা যেত, তাই আর কি!"

"আর বোলো না বাবা, বউমা তো কাল থেকে ভিরমি খেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। এই সবে জ্ঞান ফিরলো, ডাক্তার বলেছে রেস্ট নিতে।"

"কি অনুরিমা অজ্ঞান হয়েগেছিলো??" আঁতকে উঠে উচ্চস্বরে বলে উঠলো রাকিব। 

সমীরের অত বড়ো অ্যাক্সিডেন্টে রাকিব যতনা শক্ড হয়েছিল তার চেয়ে বেশি অনুরিমার অজ্ঞান হয়ে যাওয়াটা তাকে বিচলিত করেছিল। রাকিব আর কোনো পারমিশন না নিয়েই সোজা বাড়ির ভেতর ঢুকে পড়লো। রাকিব ওরফে রাকেশের এই ব্যবহার দেখে কাননবালা দেবী হতবাক রয়েগেলো!

"অনুরিমা! অনুরিমা!", রাকিব চিৎকার করে অনুরিমাকে ডাকতে লাগলো।

[Image: Porbo-36-C.png]
সঙ্গমের সময় অনুরিমার কান আন্দোলিত করছে রাকিবের শীৎকার

রাকিবের গলার আওয়াজ অনুরিমার কানে গিয়ে পৌঁছলো। এই স্বর তার চেনা। গতকালই এই স্বর তার কানের কাছে "আহ্হ্হঃ উহ্হ্হঃ" শীৎকার করেছে রমনের সময়। অনুরিমা তাই সেই শরীর নিয়েই সটান নিজের বিছানা থেকে উঠে বেরিয়ে এলো ঘর থেকে। দেখে রাকিব দাঁড়িয়ে ডাইনিং রুমে। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলোনা সে।

"রাকিব তুমি....?", নিম্নস্বরে মুখ ফস্কে রাকিবের আসল পরিচয় প্রকাশ করে ফেললো অনুরিমা। সে জানতো না তার প্রেমিক এখানে ভুয়ো পরিচয় দিয়ে এসছে। রাকিব নামটা কাননবালা দেবীর কানে গেলো। সে প্রশ্ন করলো, "এই ছোড়া তোমার নাম কি বলেছিলে যেন? বউমা যে বলছে রাকিব! তুমি তো আমাকে রাকেশ পরিচয় দিলে।..... তার মানে তুমি মু'সলমান! মিথ্যে পরিচয় দিয়ে এই মল্লিকবাড়িতে ঢুকে এসছো! ছ্যাঃ ছ্যাঃ ছ্যাঃ, মাগো! সব্বনাশ হলো! গোটা বাড়িটা এখন গোবরজল দিয়ে মুছতে হবে! তোমার মতলব কি হে যবনের ব্যাটা? আর বউমা তুমি এই ম্লেচ্ছ কে চেনো কি করে?"

শাশুড়ির রুদ্ররূপ দেখে অনুরিমা ঘাবড়ে গেলো। সে তো তার শাশুড়িকে চেনে, কতটা দজ্জাল জানে! তাই সবসময়ে অনুরিমা কাননবালা দেবীকে ভয়ে সমঝে চলে। সেইসময় অনুরিমা বুঝলো তাকে আগে তার পিঠ বাঁচাতে হবে। এখন ন্যায় অন্যায় দেখলে হবেনা। আপনি বাঁচলে তবে প্রেমিকের নাম! তাই স্বার্থপর তাকে হতেই হবে। অত বুল বা প্রেমিক নয়, তার শাশুড়ি যদি এইটুকুও জানে যে রাকিব বেশ ভালো মতো পরিচিত অনুরিমার কাছে তাহলে তার আর রক্ষে থাকবেনা। মল্লিকবাড়ির পাত তো তার উঠবেই, সাথে মান সম্মানও খোঁয়া যাবে।

তাই অনুরিমা aggressively (আগ্রাসী হয়ে) বললো, "জানিনা মা, এ কে! কোথা থেকে চলে এসছে!"

"অনুরিমা!", বলেই রাকিবের ডান চোখ থেকে দু'ফোঁটা জল টপ করে পড়লো।

কিন্তু জাঁদরেল শাশুড়ি এইটুকু থেকে ক্ষান্ত হয়নি। সে তার বউমা কে জিজ্ঞেস করলো, "তাহলে ও আমাদের বাড়ির ঠিকানা, তোমার আর সমুর নাম জানলো কি করে? সর্বোপরি তুমিই বা কি করে জানলে এ রাকেশ নয়, রাকিব??"

"আসলে .... আসলে .....", অনুরিমা বুঝে পাচ্ছিলোনা কি বলবে। সচরাচর সে মিথ্যে কথা বলেনা। তার উপর যেভাবে তার শাশুড়ি তাকে চেপে ধরে প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করছে তাতে সে আরোই ঘাবড়ে গ্যাছে। ঠিক সেই মুহূর্তে রাকিব নিঃস্বার্থ এক প্রেমিকের মতো ত্রাতা হয়ে উঠে অনুরিমাকে এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করলো। কারণ অনুরিমার স্বভাব বিপরীতে রাকিব বেশ ভালোই গুছিয়ে মিথ্যে কথা বলতে পারে। আসলে সে যে প্রফেশনে আছে সেখানে মাঝে মাঝেই স্ক্যান্ডেল হওয়ার ভয় থাকে। তাই উপস্থিত বুদ্ধির প্রয়োগ করে মিথ্যে কথা এমনভাবে সাজিয়ে বলতে হয় যেন তা সত্যি এবং বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় সকলের। এক্ষেত্রেও সে তাই করলো অনুরিমাকে বাঁচাতে ......

"আসলে আমি সমীরবাবুর অফিসে কাজ করি। কারণে অকারণে ওনার কাছ থেকে কিছু টাকা ধার চেয়ে থাকি। তিনি তাই আমায় এড়িয়ে চলেন। অনেকবার কল করতাম টাকার জন্য, বিভিন্নসময়ে সেই কারণে বিরক্তও হয়েছেন উনি। আমি গরিব মানুষ, টাকার খুব দরকার। তাই নিলজ্জ্যের মতো লোকের পিছু পিছু ঘুরি। অনুরিমা ম্যাডাম আমার অফিসের মনিব সমীরবাবুর স্ত্রী। তাই তাকে চিনবোনা, এমন দৃষ্টতা আমার কই। কিন্তু ম্যাডাম আমাকে চেনেনা এইকারণেই বলেছেন কারণ উনি জানেন আমি টাকার জন্য ওঁনার স্বামীকে কতোটা বিরক্ত করি। সমীরবাবুও অনেকদিন ধরে আমার ফোন ধরা বন্ধ করে দিয়েছিলেন, তাই আজ বাড়ি অবধি চলে এসছি টাকা ধার চাইতে। এসে শুনলাম আপনাদের পরিবারের এই দুর্যোগের খবর। আপনারা অভিজাত গোঁড়া হি'ন্দু পরিবার, তাই যদি রাকিব নাম শুনে ঢুকতে না দেন, সেই কারণেই এই নামবদল।"

"তা মনিবের স্ত্রীকে নাম ধরে ডাকছিলে কেন এতক্ষণ ধরে? এত সাহস পাও কোত্থেকে বাছা?"

"ভুল হয়েগেছে মাসিমা, আর হবেনা। আসলে আমি মুখ্যু-সুখ্যু মানুষ, অফিসে দারোয়ানের কাজ করি। তাই কখন স্যার/ম্যাডাম বলে ডাকতে হয়, আর কখন কাকে নাম ধরে, সেই জ্ঞান গম্মি আমাদের মতো মানুষদের সবসময় থাকেনা।"

"ঠিক আছে, ঠিক আছে, একটু সবুর করো এখানে। মল্লিকবাড়ি থেকে কোনো ভিখারীও খালি হাতে ফেরেনা। আমার ছেলেটা এখন হাসপাতালে, তাই কারোর উপকার করলে যদি পুণ্যি লাভ হয়, আর তা থেকে যদি আমার সমুটা সুস্থ হয়ে ওঠে তবে তার চেয়ে ভালো আর কিছু হতে পারেনা", এই বলে কাননবালা দেবী নিজের ঘরে গেলো ক্যাশ বাক্সটা খুঁজতে।

রাকিব অনুরিমার দিকে চেয়ে রইলো। কিন্তু অনুরিমার চোখ লজ্জা ও অপরাধবোধে নিম্নগামী হয়েগেছিলো। তার ধক্ ছিলোনা রাকিবের চোখে চোখ রাখার। রাকিব কি সত্যিই এই ব্যবহারটা ডিজার্ভ করতো? মনের ভেতর থেকে উত্তর এলো নাহঃ, করতো না ডিজার্ভ! অনুরিমা তাও সাহস করে চোখ তুলে এক পলক রাকিবের দিকে তাকালো। চোখে চোখ মিলতেই রাকিব দু'পা অনুরিমার দিকে এগিয়ে গেলো। তা দেখে ভয়ে অনুরিমা তিন পা পিছিয়ে এলো। রাকিব বুঝলো এটি সঠিক জায়গা নয় তার প্রেমিকার সাথে বার্তালাপ করার, তাও আবার তার শাশুড়ির সামনে! তাই সে আর এগোলো না। উল্টে নিজের কদম দু'পা পিছিয়ে পূনরায় পূর্বের স্থানে দন্ডায়মান হয়ে রইলো।

ঘর থেকে কাননবালা দেবী নিজের ক্যাশ বাক্স হতে কিছু টাকা নিয়ে এসে রাকিবকে দিয়ে বললো, "এই ধরো বাপু, হাজার পাঁচেক টাকা! আশা করছি এতে তোমার হয়ে যাবে। এবার মানে মানে বিদায় হও দেখি। তবে শোনো মল্লিকবাড়ি বলে পার পেয়ে গেলে, নাহলে মু'সলমান হয়ে হি'ন্দু নাম ধরে বাড়িতে ঢুকেছো জানতে পারলে পাড়ার লোক তোমার যে কি হাল করতো তা স্বয়ং ঈ'শ্বরই জানেন।"

"ধন্যবাদ মাসিমা। আপনি সত্যিই অনেক দয়ালু। আ'ল্লাহর কাছে দোয়া করি আপনার ছেলে এবং ওঁনার স্বামী সমীরবাবু যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠে। আপনার ছেলে বউয়ের জুটি সত্যি রা'ম-সী'তার জুটি, কেউ আলাদা করতে পারবে না তাদের।"

"বালাই ষাট! ওদের কোন আঁটকুড়ের ব্যাটা আলাদা করতে যাবে, তুমি?"

"নাঃ নাঃ, আমার অত ক্ষমতা কোথায়। আমি সামান্য একজন দারোয়ান, যে মানুষের ভালোলাগা ভালোবাসার অনুভূতি গুলো পাহাড়া দিই, যাতে কোনো দমকা হাওয়ায় সেগুলো নষ্ট না হয়ে যায়। আমার কি কারোর সম্পর্ক ভাঙা সাজে", ছল ছল চোখে কাঁদো কাঁদো গলায় অনুরিমার দিকে তাকিয়ে বললো রাকিব।

"তুমি কি বলছো বাপু, কিছুই বুঝতে পারছিনা। যাও তো এখন, বাজে বকে মাথা খারাপ করোনা। মেলা কাজ পরে আছে, তারপর ছেলেকে দেখতে হাসপাতালে যেতে হবে। তুমি এখন এসো, কেমন", এই বলে খানিকটা দূর দূর করে তাড়িয়ে দেওয়া হলো রাকিবকে মল্লিকবাড়ি থেকে।

[Image: Probo-36-D.jpg]
রাকিবের বিরহে বিছানায় মূর্ছা গ্যাছে অনুরিমার কোমল শরীর

রাকিবকে এইভাবে অপমানিত হয়ে চলে যেতে দেখে অনুরিমার অশ্রু কোনো বাঁধ মানছিলো না। নিঃশব্দে অঝোরে ঝরে পড়ছিলো চোখ দিয়ে। কিন্তু রাকিবকে আটকানোর বা রাকিবকে করা অপমানের প্রতিবাদ করারও তো উপায় নেই তার। তাই সে দৌড়ে নিজের ঘরে চলে গিয়ে দরজায় খিল দিয়ে দিলো। বিছানায় শরীরটা ফেলে দিয়ে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো। সে জানতো রাকিবের এত অপমান কোনোভাবেই প্রাপ্য ছিলোনা। তবু রাকিব তার আর ওর মধ্যেকার সম্পর্কের কোনো কথা ফাঁস করেনি। কি অদ্ভুত ও বৈচিত্রময় এই পুরুষ জাতি! একজন স্বামী হয়ে সব অধিকার পেয়েও তার স্ত্রীকে অন্যের বিছানায় দেখতে চায়। অপরজন কোনো অধিকার ছাড়াই নিস্বার্থভাবে ঢাল হয়ে দাঁড়ায়, ঠিক স্বামীর মতো।

[Image: Porbo-36-E.jpg]

সমীর ও অনুরিমার বিয়ের ছবি, তবে বর্তমানে অনুরিমার প্রকৃত স্বামীর অধিকার কার পাওয়া উচিত?
[+] 4 users Like Manali Basu's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: স্বামীর কল্পনা স্ত্রীয়ের যন্ত্রণা - by Manali Basu - 07-02-2025, 01:00 AM



Users browsing this thread: 33 Guest(s)