Thread Rating:
  • 110 Vote(s) - 2.97 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery জীবনচক্র-২ (নতুন আপডেট নং ১০ )
বাহিরে ঝড় শুরু হয়েছে, নিলা জানালা লাগানোর সময় ওড়না টা আবার মাথা থেকে পরে গেল। নিলা ওড়না ঠিক করে নিয়ে সুমনের সামনে বসে থাকা মহিলা কে বলল আপু, এখন কিছু খেতে দিব উনাকে? 

সুমনের শরীর প্রচুর ক্লান্ত, উঠে বসতে চেষ্টা করলো ও। শরীর সায় দিলো না, এমন কি চোখ খুলে রাখতেও কষ্ট হচ্ছে। কোনোমতে বললো, আমার সাইকেল টা? সাইকেলের জন্য চিন্তা হচ্ছে সুমনের, তার রোজগারের মাধ্যম হচ্ছে এই সাইকেল। সাইকেল হারিয়ে গেলে আবার সাইকেল কেনার মত পরিস্থিতিতে নাই সে। নিলা উত্তর দিলো, আপনার সাইকেল গ্যারেজে লক করা আছে, চিন্তা করবেন না। সুমন নিশ্চিন্ত হয়ে চোখ বুজলো। নীলার আপু বললো, চল, কিছুক্ষন ঘুমিয়ে নিক ও। পরে খাওয়া দাওয়ার ব্যাবস্থা করলেই হবে। 

নিলা নিজের রুমে এসে ব্যালকনির দরজা খুলে ব্যালকনিতে দাঁড়ালো। ক্ষনিক পর পর বাতাসের সাথে পানির ঝাপটা এসে লাগছে নিলার শরীরে। নিলা এক দৃষ্টিতে ক্ষুব্ধ আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। কি ভয়ংকর ভাবে গর্জন দিচ্ছে। আচ্ছা আকাশ টা কি তার উপর রেগে আছে? রাগ করবেই বা না কেন? দুপুরে কি অমানবিক হয়ে গিয়েছিল ও। এই কাকফাটা রোদে একটা ছেলেকে ১৫ তালায় উঠতে বলেছে সে। ছেলেটা যদি মারা যেতো? আর ভাবতে পারে না নিলা। ব্যালকনির দরজা লাগিয়ে পড়ার টেবিলে বসলো সে। 

কলমের উপরের অংশ শুধু কামড়ে যাচ্ছে নিলা, পড়ায় মন বসছে না। বার বার অপরাধ বোধ জেগে উঠছে। ছেলেটা সজাগ হলে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। তা না হলে অশান্ত মন টা আর শান্ত হবে না। বই বন্ধ করে পেন্সিল কাগজ নিয়ে বসলো সে। নিলার কিছু আকাঁর আগে কি আঁকবে তা ঠিক করতে হয় না, তার মনের অবস্থাই একটা ছবি দাঁড় করিয়ে দেয়। এখন যেমন পেন্সিলের খোঁচায় কালো মেঘে ঢাকা আকাশ স্পষ্ট হচ্ছে নিলার কাগজে।


আকাশ ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুঁকছে। রিমা বুঝেছে আকাশ রাগ করেছে তার কথায়। আসলে দোষ অনন্যার ও আছে। এভাবে আরেক ছেলের সাথে চিট করা কোনোভাবেই মানা যায় না। কিন্তু সুমনের মত ছেলেকে ছেড়ে কার প্রেমে মজেছিলো অনন্যা! জানতে মন নিশপিশ করছে রিমার। ব্যালকনিতে গিয়ে আকাশ কে বললো, আকাশ, অনন্যা কার সাথে কক্সবাজার গিয়েছে জানো?

কার সাথে আবার, নিজের নতুন নাগর ছাড়া আর কে?

আহা, ছবি আছে? দেখাও না…..

ছবি দেখে কি করবা????

আরে দেখাও না…… 

আকাশ ইনস্টা তে ঢুকে অনন্যার প্রোফাইল থেকে রকির সাথে অনন্যার একটা ছবি বের করে রিমার হাতে দিল। রিমা ছবিটা দেখেই একটা শক খেল। আশ্চর্য হয়ে বললো, রকি!!!!!!

তুমি চিনো রকিকে? কিভাবে চিনো?

রিমা চুপ থাকে, এতে আরো রাগ বাড়ে আকাশের। রিমার হাত ধরে ঝটকা দিয়ে বলে, বলো রকি কে, কিভাবে চিনো?

রিমা নিচ দিকে তাকিয়ে বললো, আমার ছবি যে তোমাকে পাঠিয়েছিলো ওগুলো রকিই তুলেছিলো। ওই তোমার কাছে পাঠিয়েছে……. 

শালা মাদারচোদ……… বলেই রুমে ঢুকে প্যান্ট পরতে লাগলো আকাশ। রিমা জিজ্ঞেস করলো কোথায় যাও, বাইরে ওয়েদার ভালো না। কক্সবাজার যাচ্ছি। অনন্যাকে আগে জেল থেকে বের করব। তুমি বাসাতেই থাকো। 

ফোন দিয়ে জানাবা আমাকে সব….. 

আচ্ছা, টাকা আছে তোমার কাছে?

রিমা নিজের ব্যাগ থেকে ক্রেডিট কার্ড বের করে দিলো আকাশ কে। আকাশ কার্ড নিয়েই বাসা থেকে বের হয়ে গেল। রকি কে দেখে নেয়ার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে সে।

কক্সবাজার পৌঁছাতে পৌঁছাতে শেষ রাত হয়ে গেল আকাশের। থানার কার্যক্রম শুরু হওয়ার অপেক্ষায় থেকে হাফ ডজন সিগারেট শেষ করেছে ও। থানায় ঢুকার আগে রিমার ক্রেডিড কার্ড আর নিজের কার্ড মিলিয়ে মোটামুটি বড় একটা এমাউন্ট নিয়ে নিয়েছে পকেটে। থানায় ঢুকে সাব ইনস্পেক্টর কে গিয়ে বললো কালকে আটককৃত একজনের ব্যাপারে কথা বলতে এসেছে ও।

কে আপনি, ওর গার্জিয়ান?

জি না স্যার, ওর ক্লাসমেট…… 

ক্লাসমেট হয়ে তুমি এসেছো, ওর গার্জিয়ান নেই?

স্যার, শুধু শুধু প্যাচিয়ে কি লাভ বলেন, আমরা একটা সমঝোতায় চলে আসতে পারি……..

কাকে সমঝোতার কথা বলছো ইয়াং ম্যান……

স্যার, দেখেন, একে আপনি একজন ভার্সিটি স্টুডেন্ট কে কোনো এভিডেন্স ছাড়া বিনা কারণে আটকে রেখেছেন, দ্বিতীয়ত গার্জিয়ানের কথা বলছেন, তাই বলছি ওর গার্জিয়ানদের ব্যাপারে খোঁজ খবর না নিয়ে ওকে তুলে আনা আপনাদের ঠিক হয়নি। পরে সব মিলিয়ে সামলাতে পারবেন না……..

আচ্ছা বলো তোমার সমোঝোতা টা কি…… আকাশ বুঝলো ফাপরে কাজ হয়েছে। 

অনন্যাকে যখন কনস্টেবল বের হতে বললো তখন অনন্যা ভাবছে কেউ এসেছে নাকি তাকে ছাড়াতে? নাকি অন্য কিছু। অনন্যা দূর থেকে আকাশকে বসে থাকতে দেখে একটা দীর্ঘশ্বাস নিল। আকাশকে সে আশা করে নি। তবুও আকাশ এসেছে। কিন্তু আকাশ খবর পেল কোথা থেকে।

অনন্যা কে নিয়ে থানার বাইরে বের হয়েই আকাশ বললো খেয়েছো কিছু?

না….. 

চলো আগে কিছু খেয়ে নেই……

হোটেলের টেবিলে বসে অনন্যা আকাশ কে কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। আকাশকে কি ধন্যবাদ দিবে নাকি বিষয়টি গোপন রাখতে বলবে। নাকি জিজ্ঞেস করবে ও খবর পেলো কিভাবে?

আকাশ তুমি এখানে এলে কেন? জানলে কিভাবে?

অনন্যার উপর ভিষণ রাগ আকাশের। এমনিতেই সুমনের সময় ভালো যাচ্ছে না এর মাঝে অনন্যা সুমন কে আরো বেশি কষ্টের দিকে ঠেলে দিয়েছে। তাই অনন্যাকে খোঁচা দেয়ার সুযোগটা হাতছাড়া করলো না আকাশ, 

তুমি হচ্ছে এখন সেলিব্রিটি। তোমার মত ফেমাস কাউকে পুলিশ কল গার্ল বলে এরেস্ট করলে সেটা নিউজ হবে না ভেবেছো? তুমি তো এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় হট কেক…..

লজ্জায় মুখ নিচে নামিয়ে নিলো অনন্যা। আকাশের সামনে কাঁদতে চায় না সে। প্রচন্ড ক্ষুধায় অনিচ্ছা সত্বেও কিছুটা খেয়ে নিল অনন্যা। আকাশ এতটা পথ জার্নি করে এসে আবার বাসে উঠতে ইচ্ছুক না। অনন্যা কে নিয়ে এয়ারপোর্টে গেল সে।

বিমানে ঢাকা পৌঁছাতে বেশি সময় লাগে না। এই সময় টা শুধু বিমানের জানালা দিয়ে মেঘ দেখেছে অনন্যা। তার জীবনে কোনো খারাপ সৃতি নেই। ইমতিয়াজ খানের কাছে বড় হতে কোনো কষ্ট বা খারাপ কিছুর মুখোমুখি হতে হয়নি কখনো অনন্যা কে৷ কিন্তু এখন, নিজের মান সম্মান, ভালোবাসা সবকিছু যেন এক নিমিষেই শেষ করে দিলো সে নিজেই।


অনন্যাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে ফেরার সময় আকাশ বললো, অনন্যা, মানুষ অনেক কিছু নিজের জন্য পছন্দ করে। তার মধ্যে কিছু ভালো হয় আর কিছু খারাপ। খারাপ পছন্দ গুলোকে দূরে সরিয়ে দিতে হয় যখন উপলব্ধি করা যায় যে পছন্দ টা ঠিক না। আর ভালো পছন্দ গুলোর মধ্যে যত সমস্যাই থাকুক, যাই হয়ে যাক সবসময় চেষ্টা করতে হয় ওগুলো কে আগলে রাখতে। সুমন তোমার জীবনের সেরা চয়েস ছিলো অনন্যা……..

আকাশ চলে যাওয়ার পর লিফটের দরজা বন্ধ হতেই অনন্যার চোখ দিয়ে নেমে এলো অশ্রু ধারা। ফ্ল্যাটের সামনে গিয়ে চাবি দিয়ে দরজা খুলবে সেই শক্তি টাও পাচ্ছে না সে৷ কোনমতে নিজের রুমে গিয়ে সোজা ওয়াশরুমে গেল অনন্যা। হরহর করে মুখ ভরে বমি করে ওয়াশরুমেই বসে পরলো ও। 

শাওয়ার থেকে ঠান্ডা পানি পরছে অনন্যার নগ্ন দেহে। পানির এই স্রোত ধারা কি তার শরীর কে পরিষ্কার করতে পারবে। নিজেকে নোংরা লাগছে অনন্যার। এই তো কিছুদিন আগেও তার শরীর টা কত পবিত্র ছিল। কিন্তু এই কয়দিন যতবার রকির সাথে দেখা হয়েছে রকি ওর দুধ লেহন করেছে। রেস্টুরেন্টে, পার্কের ঝোপে, গাড়িতে কোথাও বাদ থাকে নি। আর শেষবার বাসে ওর যোনিও লেহন করেছে রকি। শাওয়ারের পানির ধারার নিচে বসে দুই হাটুতে মাথা গুজে রাখলো অনন্যা। শাওয়ারের জলধারার কাছে অবশ্য ওর চোখের জল কিছুই না।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: জীবনচক্র - by Mairanur69 - 28-06-2024, 07:31 PM
RE: জীবনচক্র-২ (নতুন আপডেট নং৯) - by মিসির আলি - 05-02-2025, 11:02 PM



Users browsing this thread: tan007700, 4 Guest(s)