29-01-2025, 06:55 AM
(This post was last modified: 06-02-2025, 01:58 AM by Manali Basu. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
পর্ব ৩৫
নতুন সম্পর্কের সমীকরণ নাকি পুরোনোর টানাপোড়েন?
সমীরের মা কাননবালা দেবী বাইপাসের ধারে রুবী হাসপাতালে এসে পৌঁছলো। সমীর আইসিইউ তে ভর্তি। ডাক্তার যথারীতি বলেছে সিচুয়েশন খুব ক্রিটিক্যাল। ৪৮ ঘন্টা না গেলে কিচ্ছু বলা যাবেনা। সমীরের মা দিক্পানশূন্য হয়ে বসে পড়লো কাঁদতে। এরই মধ্যে পুলিশ এলো কানন দেবীর কাছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য, উনি সম্পর্কে কে হন? কোথায় থাকেন? ওখানে আহত ব্যক্তি কেন গিয়েছিলেন? কিছু কি তিনি জানতেন? ইত্যাদি ইত্যাদি। ....
সমীরের মা এক এক করে পুলিশের সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে থাকলেন। এই করে কেটে গেলো অনেকটা সময়। বাড়ি থেকে সমীরের বাবা ব্রজমোহন বাবু ফোন করেছিলেন। বাবার অ্যাক্সিডেন্ট এর খবর শুনে তিন্নি নাকি খুব কান্নাকাটি করছে, তার মা কে খুঁজছে, অথচ মা-কে ফোনে পাওয়া যাচ্ছেনা। বারবার সুইচ অফ বলছে। তখন সব দায়িত্ব কাননদেবীর উপর এসে পড়েছিল। ডাক্তারের সাথে কথা বলে জানলো এখন আর বিশেষ করার কিছু নেই, অপেক্ষা ছাড়া। পুলিশও রুটিনমাফিক তদন্ত করে চলে গ্যাছে। এদিকে বউমা-কে সে কোথায়ই বা খুঁজবে? যদি সামান্য দায়িত্ববোধ অবশিষ্ট থাকে তার মধ্যে তাহলে সে নিজেই যোগাযোগ করবে। সমীরের বাবা একা ছোট্ট মেয়েটাকে সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। এখন তাই কাননবালা দেবীর বাড়িই ফেরা উচিত, এই ভেবে তিনি হাসপাতাল থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন।
ওদিকে ঘুসিঘাটায় দুই নগ্ন শরীর অনেক রাউন্ড মিলনের পর ক্লান্ত হয়ে একে অপরের বক্ষে শান্তি খুঁজে নিয়ে ঘুমোচ্ছিলো। বিছানার চাদর একেবারে অগোছালো ওলোটপালোট হয়ে রয়েছিলো। বেশ ভালোই বোঝা যাচ্ছিলো কতো বড়ো ঝড় বয়ে গ্যাছে কিচ্ছুক্ষণ আগে। মেঝেতে তাদের এক একটা বস্ত্র একে অপরের সাথে জড়িয়ে লুটিয়ে ছিল। তখন সত্যিই সত্যিই ইশার নামাজের সময় হয়ে এসেছিলো। আবার আজানেই অনুরিমার ঘুম ভাঙলো। ঘুম থেকে উঠে শিশুদের মতো চোখ কচলাতে কচলাতে অনুরিমা ঘড়ির দিকে তাকালো। দেখলো প্রায় সাতটা বাজতে চলেছে সন্ধ্যের। স্বপ্নের জগৎ এর ঘোর কেটে বাস্তব সময়ের উপলব্ধি যখন ঘটলো, তখনই তড়িঘড়ি ওই অবস্থায় বিছানা থেকে উঠে পড়লো অনুরিমা।
![[Image: Part-35-A.png]](https://i.ibb.co/2724hBXr/Part-35-A.png)
নগ্নাবস্থায় শায়িত রাকিব অনুরিমা
![[Image: Part-35-B.png]](https://i.ibb.co/5g7W78rC/Part-35-B.png)
অনুরিমা
"ফোন.... আমার ফোনটা কোথায় গেলো?", নিজের মনে বিড়বিড় করে বলে মেঝেতে নেমে খুঁজতে লাগলো ফোনটা।
অনুরিমা দেখলো একদিকে মোবাইলের মেইন বডিটা পড়ে রয়েছে অপরদিকে ব্যাক প্যানেল তো আরেকদিকে ব্যাটারি আর সিম। রাকিব এমন জোড়ে ছুঁড়ে ফেলেছিলো যে ফোনের আর কিছু আস্ত ছিলোনা বলে মনে হয়না। তবুও অনুরিমা ফোনের সব পার্ট্স জড়ো করে লাগিয়ে সেটা চালানোর চেষ্টা করলো। প্রথমে কিছুক্ষণ চলছিলো না। অনেক কষ্ট করে এদিক-ওদিক চাপড় মারার পর অন হলো অবশেষে। দেখলো বাড়ি থেকে শ্বশুর ও শাশুড়ি উভয়ের নাম্বার থেকে অগন্তি মিস কল। ভয়ে গলা শুকিয়ে গেলো অনুরিমার।
"মা-বাবা এতোবার ফোন করেছে কেন? অথচ সমীরের নাম্বার থেকে একটাও ফোন আসেনি! সমীরের কিছু হয়নি তো?", ভেবেই মনটা ভয়ে আতঁকে উঠলো অনুরিমার। তাকে এখুনি বেড়োতে হবে। সে আর কোনোদিকে খেয়াল করলো না। ঝটপট নিজের প্যান্টি ব্রা সায়া ব্লাউজ শাড়ি এক এক করে নিয়ে পড়তে লাগলো।
![[Image: Part-35-C.jpg]](https://i.ibb.co/0VyMBJTN/Part-35-C.jpg)
![[Image: Part-35-D.jpg]](https://i.ibb.co/DfssTrb7/Part-35-D.jpg)
কিছুক্ষণ পর রাকিবের ঘুমটাও ভাঙলো। চোখ খুলে অনুরিমাকে সায়া ও ব্লাউজে আবিষ্কার করলো সে। ততোক্ষণে ভেতরে অন্তর্বাস অর্থাৎ ব্রা-প্যান্টি পড়া হয়েগেছে তার। তখন শুধু ব্লাউজে হুকটা লাগাচ্ছিলো। সেটাই বাকি ছিল। তারপর শাড়িটা গায়ে জড়িয়ে চলে যাবে। অনুরিমাকে এভাবে সায়া ও ব্লাউজে অসম্ভব কামনাময়ী লাগছিলো রাকিবের। মনে হচ্ছিলো আরো একবার ওকে জড়িয়ে ধরে বিছানায় ফেলে দিতে। এক এক করে পরিহিত সকল বস্ত্র ফের টেনে হিঁচড়ে খুলে দিতে। আবার ন্যাংটো করে রমন করতে। কিন্তু অনুরিমা এত তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে যাচ্ছে কোথায়? কথা তো ছিল ওকে সারারাত ধরে ভোগ করবে সে। প্রায় বাগে নিয়ে চলে এসছিল সমীরের বউটা-কে।
রাকিব প্ল্যান করেছিল ঘুম ভাঙলেই সে অনুরিমার কাছে এই আবদারটা রাখবে। রাতে থেকে যেতে বলবে। এমনিতেও ওর স্বামীর কাছে কিছু গোপন নেই আর। তাই ওই লুজার হাসবেন্ডের থেকে অনুরিমাকে দিয়ে পারমিশন আদায় করে নিতে খুব একটা কাঠ-খড় পোড়াতে হতো না তাকে। তাহলে এখন এরকম উলটপুরাণ হচ্ছে কেন? দেখে তো মনে হচ্ছে এখান থেকে বেড়োনোর তালে রয়েছে।
![[Image: Part-35-E.jpg]](https://i.ibb.co/NdSbBMRF/Part-35-E.jpg)
"সত্যিই এই মেয়েটা না খুব আনপ্রেডিক্টবেল, কখন মুড্ কোন দিকে ঘোরে বোঝা মুশকিল", বিরক্ত হয়ে মনে মনে ভাবলো রাকিব। তবু সে মুখে হালকা হাসি নিয়ে নম্রভাবে অনুরিমাকে জিজ্ঞেস করলো, "কোথায় যাচ্ছ তুমি?"
"কোথায় আবার? বাড়িতে! আমার বাড়িতে", ঝাঁঝিয়ে উঠে উত্তর দিলো অনুরিমা। অনুরিমার হটাৎ ভোলবদলে রাকিব অবাক হয়েগেলো। সে বুঝতে পারছিলোনা সে কি এমন করলো যার জন্য অনুরিমা এত রেগে আছে। সবতো ঠিকই ছিল। অনুরিমাকে চুদে চুদে জান্নাতের দর্শন করিয়ে দিয়েছিলো রাকিব। তাও কেন? তবু রাকিব মাথা ঠান্ডা রেখে জিজ্ঞেস করলো, "এরকম তো কথা ছিলোনা অনুরিমা। তখন তো বললাম তুমি তোমার হাসবেন্ড-কে ফোন করে জানিয়ে দেবে যে তুমি আজ রাতে ফিরছো না। সে যেন বাড়িতে কিছু একটা বলে ম্যানেজ করে দেয়। সে আমার কাছে বাজিতে হেরে গ্যাছে, আমি তোমায় ওর কাছ থেকে জিতে নিয়েছি। এখন তুমি আমার। তাহলে যাওয়ার কথা উঠছে কেন?"
"উঠছে কারণ, আমার শশুর শাশুড়ি দুজনেই অগন্তি বার ফোন করেছিলো, ফোন অফ ছিল বলে বুঝতে পাইনি। এখন অন করে দেখলাম মিসকল অ্যালার্ট ম্যাসেজ এসছে, শাশুড়ি মা এর প্রায় ২৫টা মিসকল, আর বাবার ১৪টা। এতবার কল তো ওঁনারা কখনো করেন না! অথচ সমীরের একবারও ফোন আসেনি! আমার মন খুব কু ডাকছে। মনে হচ্ছে কিছু একটা হয়েছে। ....."
"তাহলে সমীরবাবু কে একটা কল করে দেখে নাও....."
"তোমার কি মনে হয় আমি কল করিনি? এখন বেশ কয়েকবার করলাম, আনরিচেবেল বলছে বারবার।...."
"তা তুমি আমার উপর রাগ কেন দেখাচ্ছ? আমি কি করলাম?"
"তুমি কিছুই করোনি? সত্যি....?"
"কি করেছি বলো?"
"প্রথমবার যখন আমার ফোন বাজলো, তুমি আমাকে ধরতেই দিলে না। ইভেন দেখতেও দিলে না কে ফোন করেছিলো। বিরক্ত হয়ে সোজা মেঝেতে ফোনটা ফেলে দিলে। আমার ফোনটা ভেঙে গেলো। বিছানায় যতক্ষণ তুমি আমাকে নিজের কাছে রেখে আমার শরীরকে জিতে নিয়ে অধিকার ফলিয়েছো ততোক্ষণ আমার ফোনটা ওভাবে ডেড হয়ে মাটিতে পড়েছিল। কতবার আমার শশুড় শাশুড়ি ট্রাই করেছে, কেউ পায়নি ফোনে আমায়। শুধু তোমার জন্য ....."
রাকিব নিজের ভুল বুঝে মাথা নিচু করে চুপ হয়ে অনুরিমার সামনে দাঁড়িয়ে রইলো। আর অনুরিমা বলতে থাকলো ......
"এখন অনেক কষ্টে ফোনটা জোড়া লাগিয়ে অন করেছি। নাহলে জানতেও পারতাম না যে বাড়ি থেকে এত বার ফোন এসছে। তখন তুমি ওভাবে ফোনটা ছুঁড়ে না ফেললে আমি প্রথমবারে না হলেও দ্বিতীয়বারে ফোনটা ঠিক ধরতাম। অন্তত জানতে পারতাম কেন ফোন করেছে, যেখানে আমি তোমার উস্কানিতে বাড়িতে অলরেডি মিথ্যে কথা বলে রেখেছি, যে সুচরিতার শরীর খারাপ হয়েছে বলে ওকে নার্সিং হোমে নিয়ে এসছি। এখন জানিনা কার কি হয়েছে? কারোর সত্যিই শরীর খারাপ হয়েছে কিনা!!..... তুমি যদি ফোনটা না ভাঙতে তাহলে এত কিছু ভাবতে হতো না আমায়। এসবের মূলে তুমিই দায়ী।..... আচ্ছা, আমার মেয়েটা ভালো আছে তো? নাহঃ নাহঃ, আমাকে এক্ষুনি বাড়ি ফিরতে হবে, দেরি করলে চলবে না।"
"তুমি তোমার শশুর শাশুড়িকে ফোন করে একবার জেনে নাও কেন তারা এতবার কল করেছে?"
"না, ভয় করছে। না জানি কি বলবে ফোনে? এতবার করেছিল তখন তো সুইচ অফ ছিল। এখন ফোন করলে ফোনের ওপার থেকেই নির্ঘাত গর্দান নেবে আমার। তুমি তো আমার শশুড়বাড়ির লোকদের চেনোনা, বিশেষ করে আমার শাশুড়ি মা, প্রচন্ড কড়া মেজাজের মানুষ উনি। তার চেয়ে বরং সামনাসামনি গিয়ে কাচুমাচু মুখ করে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে জানবো তাদের এতবার ফোন করার পিছনের কারণ।...."
"ঠিক আছে আমি তোমাকে পৌঁছে দিচ্ছি গাড়িতে"
শাড়িটা ঠিক করতে করতে অন্যমনস্ক হয়ে সে বললো, "তার দরকার পড়বেনা, আমি নিজে একা চলে যাবো"
রাকিব বুঝলো অনুরিমার রাগ এখনও পড়েনি। সত্যিই ওভাবে ফোন ছুঁড়ে দিয়ে সে অন্যায়ই করেছিল। কিন্তু সে কিই বা করতো তখন। অনুরিমাকে পাওয়ার তাড়নায় উত্তেজনার পারদ এতোটাই মাথায় চড়ে গেছিলো যে পৃথিবীর বাকি সবকিছু তার কাছে নস্য লাগছিলো, ওই ফোনটাও।
![[Image: Part-35-F.png]](https://i.ibb.co/x8RnzQLR/Part-35-F.png)
বিছানায় কাটানো রাকিব অনুরিমার কিছু ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত
![[Image: Part-35-G.png]](https://i.ibb.co/bgXvyW1Q/Part-35-G.png)
রাকিব অনুনয় বিনয় করে অনুরিমার কাছে ক্ষমা চেয়ে রাগ প্রশমিত করার চেষ্টা করলো। অনুরিমারও রাকিবের প্রতি এক অজানা দূর্বলতার সৃর্ষ্টি হয়েছিল। সত্যি তো এটাই যে অনুরিমার এই কয়েকঘন্টা রাকিবের সাথে কাটানো উত্তেজক মুহূর্ত গুলোর কাছে সমীরের সাথে তার এত বছরের প্রকাশ হওয়া যৌন উদ্দীপনাকে একত্রিত করে মেলালেও তা কম পড়বে, রাকিবের আদরের সামনে।
কিই না করেছে রাকিব বিছানায় অনুরিমার সাথে। এই কিছু ঘন্টা হাতে পেয়ে রাকিব সেই সকল মুদ্রায় যৌন নৃত্য করেছে অনুরিমার সাথে যা অনুরিমার কল্পনাতীত ছিল। তাই না চাইতেও অনুরিমার মনে রাকিব কিছুটা হলেও দাগ কাটতে পেরেছিলো। সেই কারণে অনুরিমা নিজের রাগ প্রশমিত করতে বাধ্য হলো, অন্য কোনো কারণে নয়, শুধু মনের টানে।
![[Image: Part-35-H.jpg]](https://i.ibb.co/4RPXW9gL/Part-35-H.jpg)
ঠিক যেন রাকিব অনুরিমা.....
রাকিব বললো, "তুমি কি পাগল আছো? কোথায় এখন রয়েছো তার খেয়াল আছে? এটা হাড়োয়া। হাড়োয়ার বাসন্তি হাইওয়ের ধারে ঘুসিঘাটা নামক আনকোরা জায়গায় একটা পোড়োবাড়িতে রয়েছো। এই অঞ্চলে আসে পাশে বাসও সচরাচর পাবেনা তুমি, একা কি করে যাবে?"
রাকিব ভালোমতোই বুঝতে পারছিলো যে অনুরিমার এখন মাথার ঠিক নেই। সে শাড়িটাও যেমন তেমন করে পড়েছে। তাই সে অনুরিমার কাছে গেলো, গিয়ে শাড়ির আঁচলে হাত দিলো। অনুরিমা আঁতকে উঠে জিজ্ঞেস করলো, "কি করছো?"
"নিজের দিকে তাকিয়ে দেখেছো একবার? আয়নায় গিয়ে দেখো তুমি শাড়িটা কিভাবে পড়েছো! এই অবস্থায় বাড়ি গেলে সন্দেহ করবেনা তোমার শশুর শাশুড়ি? দাও তোমার শাড়িটা আগে আমি ঠিক করে পড়িয়ে দিই। তারপর আমি তোমাকে তোমার বাড়ির কাছে ড্রপ করে দেবো। টেনশনে তোমার মাথার ঠিক নেই তাই তুমি ঘুসিঘাটা থেকে একা একা ফেরার কথা ভাবছো।.... "
এই বলে রাকিব প্রথমে পরম স্নেহে শাড়িটা আঁচল ধরে টান মেরে খুলে দিলো। অনুরিমা ফের শুধু সায়া ব্লাউজে ছিল। রাকিবের মন তো করছিলো আরো এক দান লাগিয়ে দিতে। কিন্তু এবার সে নিজের উত্তেজনাকে কন্ট্রোল করলো। সে নতুন করে শাড়ি পড়াতে লাগলো অনুরিমাকে।
অনুরিমা অবাক হয়েগেলো। ভাবলো এই বুল শাড়িও পড়াতে জানে! রাকিব ভালো করে কুঁচি ধরে অনুরিমাকে শাড়ি পড়িয়ে দিলো। এতকিছুর মধ্যেও অনুরিমার এই ছিল স্বল্প ভালো লাগা। ভাবলো হয়তো সে সত্যিই রাকিবের উপর বেশি রিএক্ট করে ফেলেছে। ছেলেটার মধ্যে কোনো ইগো নেই। অপমান মুখ বুজে সহ্য করে নেয়। সমীর হলে কি পারতো এতটা ধৈর্য্য ও সহ্যশক্তি রাখতে তার প্রতি??
অনুরিমা রাকিবের কথা শুনে রাকিবের সাথেই পোড়োবাড়িটা থেকে বেড়োলো। মনোরম খুঁড়ো-কে রাকিব বাড়ির চাবিটা হ্যান্ডওভার করলো। সরল মনে মনোরম খুঁড়ো জিজ্ঞেস করলো শুটিং এর কাজ শেষ হয়েছে কিনা? হালকা হাসি দিয়ে রাকিব বললো, "আজকের মতো এতোটাই", বলেই সে এক পলক অনুরিমার দিকে তাকালো। আকারে ইঙ্গিতে অনুরিমাকে বোঝাতে চাইলো যে, যাচ্ছ যাও, তবে এই দেখাই শেষ দেখা নয়তো? মনে মনে তার খোদার কাছে অনুরোধ করলো, এই মিলন শেষ মিলন না হয় যেন!
রাকিবের গাড়ি স্টার্ট দিলো। সেই একই পথ দিয়ে তারাও ফিরছিলো যে পথে সমীরের দূর্ঘটনা ঘটে এবং এখন সে হসপিটালের বেডে শুয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। পুলিশ সমীরের দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া গাড়িটা ক্রেনে করে তুলে এনে থানায় নিজেদের জিম্মায় রেখেছিলো। ফলে দূর্ঘটনাস্থলে কোনো চিহ্ন সেভাবে মজুত ছিলোনা। যদিও বা গাড়ির কাঁচ-টাচ কিছু পড়ে থেকে থাকে তা আঁধারের ছায়ায় চোখের আড়াল হয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। মফস্সলের দিকে হাইওয়ে তে অহরহ স্ট্রিট লাইট থাকেনা। তাই দু'তিন ঘন্টা আগে সেই রাস্তায় কি হয়েছে না হয়েছে তা গাড়ির মধ্যে বসে থাকা সওয়ারীর জানা ততোটা সম্ভব নয়।
রাকিব অনুরিমার বাড়ির নিকটতম মোড়ের রাস্তায় তাকে ড্রপ করে দিলো। গাড়ি থেকে নেমেই অনুরিমা একপ্রকার দৌড় দিলো বাড়ির উদ্দেশ্যে। একবারও পিছনে ফিরে তাকালো না। বেচারা রাকিব! মনমরা হয়ে গাড়িতে বসে থাকলো ততোক্ষণ, যতক্ষণ না অনুরিমা মেইন রাস্তা থেকে বাঁক নিয়ে নিজের বাড়ির গলিতে ঢুকছে এবং রাকিবের চোখের আড়াল হচ্ছে। হয়তো রাকিব এই কয়েকমুহূর্তের মিলনে এবং অনুরিমার দাম্পত্য জীবনে কষ্ট দেখে সত্যিই ওকে ভালোবেসে ফেলেছিলো।
![[Image: Part-35-I.jpg]](https://i.ibb.co/PZTKjLWm/Part-35-I.jpg)
অনুরিমা
এতদিন তার কাছে যে সকল বিবাহিতা মেয়েরা এসেছে বিছানায় তার সঙ্গ পেতে, তারা প্রায় সবাই ফূর্তি করার জন্য বা নিজেদের conjugal life নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করার জন্য এসেছে কাছে। অনুরিমার মতো এত কমপ্লিকেটেড কেস সে সচরাচর দেখেনি। নিজের স্বামীর প্রতি এতটা দায়বদ্ধতা, নিষ্ঠা ও অসীম সমর্পন দেখে সেও অনুরিমার মনে ভাগ চাইতে উদ্যত হয়ে পড়েছিল। তাই সে ক্রমাগত অনুরিমার সামনে নিজেকে বুলের বদলে একজন প্রেমিক রূপে অবতীর্ণ করতে চেষ্টা করছিলো।
রাকিব চাতক পাখির মতো চেয়ে রইলো। যদি অনুরিমা একবার পিছন ফিরে তাকায়। কিন্তু সে আর তাকালো না। বলা ভালো তাকানোর মতো সময় বা পরিস্থিতি এখন কোনোটাই অনুরিমার কাছে ছিলোনা। সে রাকিবের প্রতি একটু দূর্বল হয়ে পড়েছিল ঠিকই, তবে তখনও তার প্রথম এবং একমাত্র প্রায়োরিটি ছিল তার স্বামী সংসার, অর্থাৎ সমীর ও তার বাড়ির লোকজন।
![[Image: Part-35-J.jpg]](https://i.ibb.co/jvKrWWJ1/Part-35-J.jpg)
স্বামী সমীরের সাথে অনুরিমা