Thread Rating:
  • 1 Vote(s) - 5 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Thriller সাজু ভাই সিরিজ নম্বর-০৫ গল্প: সরি আব্বাজান (২) সমাপ্ত
#8
 পর্বঃ- ০৮


সকাল বেলা সাজুর যখন ঘুম ভেঙ্গেছে নয়ন তখন ও অঘোরে ঘুমাচ্ছে। সাজু সবসময়ই যত গভীর রাতে ঘুমাক তবুও খুব সকালে ঘুম থেকে উঠবে এটাই তার অভ্যাস। 

সূর্য এখনো ওঠেনি, সাজু ওদের পুকুরপাড়ে হেঁটে হেঁটে কি যেন ভাবছে। রামিশা তার কাছে গিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে রইল তারপর বললো,

- কোনো সমস্যা হয়েছে নাকি? 

- না রামু, একটা বিষয় নিয়ে বেশ চিন্তিত আমি। 

- কি বিষয়? 

- আমি গোপনে গোপনে অনেক কিছু জানার জন্য লোক লাগিয়েছিলাম। সবগুলোই আমাদের দেশের মধ্যে, আজকে সকালে দেখি আমার করা সবগুলো প্রশ্নের উত্তর ঢাকা থেকে এসেছে। এখন যদি ইতালির সেই তথ্যের সঙ্গে এটা না মিলে তাহলে তো গোলমাল হবে। 

- দেশের মধ্যে কি কি জানার ছিল? 

- সেগুলো পরে বলবো, কারণ যদি এগুলো বৃথা সংগ্রহ করা হয়ে থাকে তাহলে শুধু শুধু তোমাকে জানিয়ে কি হবে? 

- আমি একটা জিনিস ভাবছি। 

- কি? 

- এই ছেলেটা আসলে নয়ন তো, নাকি অন্য কেউ নয়ন সেজে এসেছে। 

- এটাই নয়ন, আমি গতকাল সন্ধ্যা বেলা মিনহাজ এর কাছ থেকে নয়নের ছবি এনেছি। 

- তাহলে ঠিক আছে। 

- তুমি বাড়িতে থাকো, আমি একটু নয়নের নানা বাড়ির গ্রামে যাবো। হাজী ফজলুল সাহেবের সঙ্গে দেখা করতে হবে, তাকে তৈরি হতে বলবো। 

- আমি যাবো না? 

- না, তেমন কাজ নেই। আমি শুধু তার সঙ্গে দেখা করে সবকিছুর ব্যবস্থা করতে বলবো। 

- কখন ফিরবেন? 

- কাজ শেষ হলেই। 

হাজী ফজলুল সাহেবের কাছে সাজু গিয়ে বললো, রেবেকা আফরোজ সত্যিই খুন হয়েছে এবং তার ৯০% প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়ে গেছে। আপনি দ্রুত করে মনোয়ার হোসেন ও তার ভাই দেলোয়ার হোসেনকে বলেন সবাইকে নিয়ে যেন তাড়াতাড়ি গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসে। তারপর যখন সবাই আসবে তখন আপনি আমাকে একটু স্মরণ করে নিবেন, যদিও আমি খোঁজ রাখবো। 

হাজী সাহেব রাজি হলেন। তিনদিনের মধ্যে তিনি নয়নের বাবা ও কাকার সঙ্গে কথা বলে তাদের গ্রামের মধ্যে আনলেন। দেলোয়ার হোসেন এখন অনেকটা সুস্থ তবুও তাকে বেশ সাবধানে রাখা হয়েছে। 

কাজলকে কল দিয়ে বাগেরহাটে আনা হয়েছে, যেহেতু রামিশা তার বান্ধবী তাই বেশি ঝামেলা হবার সম্ভাবনা ছিল না। 

★★

রোজ বুধবার, সকাল দশটা। 

নয়নের দাদা বাড়ির সামনে দুই পরিবারের সকল মানুষ উপস্থিত। মিনহাজ তার মা-বাবাকে নিয়ে এসেছিল আরো আগেই। সাজু যখন নযন আর রামিশাকে নিয়ে বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করলো তখন কেউ কেউ অবাক হয়ে গেল। কারণ নয়ন যে আবার ফিরে এসেছে এবং সে সাজুর সঙ্গে এটা কেউ জানতেন না। 

সবার আগে কথা শুরু করলেন হাজী ফজলুল সাহেব। তিনি সাজুকে বললেন, 

- আপনার কথা রাখার জন্য আমি সবাইকেই এখানে হাজির করেছি। এবার আপনি আপনার কথা শুরু করেন, আশা করি সবকিছু যুক্তি দিয়ে সবাইকে বোঝাবেন। 

- জ্বি চেষ্টা করবো সবটা পরিষ্কার করতে। 

সাজু তার হাতের কাগজের দিকে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষণ। মামলার সবকিছু সে এখানে সুন্দর করে তুলে নিয়েছে। এর বললো, 

আমি চট্টগ্রামে বসে প্রথম যেদিন নয়নের মায়ের মৃত্যুর কাহিনি শুনেছি তখন প্রাথমিক সময় আমি নয়নের খালু ও খালাকে প্রথমে রাখি। কারণ সেই সময় তারা ছিলেন বাড়ির মধ্যে, ভোরবেলা খলিল সাহেব কিংবা নাস্তার মধ্যে রাবেয়া মেডাম। এদের দুজনকেই সন্দেহ করার বিশেষ কারণ ছিল তাই মার্ক করলাম। 

- খলিল সাহেব বললো, এসব কি বলছেন? আমি কেন তাকে মারতে যাবো। 

- আমি শুধু সন্দেহের তালিকায় রেখেছি, আপনি খুন করেছেন সেটা নিশ্চিত বলিনি। 

- হাজী সাহেব বললো, আপনি বলতে থাকুন।

- আমি যখন কাজলের সঙ্গে আফজাল সাহেবের বাসায় গেলাম সেখানে গিয়ে আফজাল সাহেবের ব্যবহার আমার কাছে অস্বাভাবিক লাগে। তাকে আমি সুইসাইড নোটের কথা জিজ্ঞেস করি সে মিথ্যা বলে, আরো কিছু প্রশ্ন করি কিন্তু তিনি তার জবাব দিতে গিয়ে বেশ ভিতু হলেন। 

- আফজাল খন্দকার সামান্য কাশলেন। 

- সাজু বললো, আমি একটা বিষয় বুঝতে পারছি না তখন যে বড় ভাই কি কারণে ছোটবোনকে খুন করবে? এর পিছনে একটা উপযুক্ত কারণ অবশ্য থাকতে হবে। তখনই চোখে পড়ে বাসার পরিবেশ। 
বাসার পরিবেশ লক্ষ্য করে আমি অনেকটা যেন ভাবতে লাগলাম, তখনই মনের মধ্যে কিছু প্রশ্ন তৈরী হয়ে গেল। তাদের বাসা থেকে বের হয়ে আমি সেই প্রশ্নগুলো তুলে রেখেছি সমাধান করার জন্য। 

আমি ঢাকা এলাম, এখানে এসে নয়নের কাকা মনোয়ার হোসেনের আচরণ আমাকে নতুন করে যেন ভাবতে বাধ্য করে। কিন্তু তাকে আমি কখনো খুনির তালিকায় আনিনি কারণ তিনি চাইলে তো এই বাড়িতে খুন করতে পারতেন। যদিও মাঝে মাঝে মনে হতো নিজের বাড়িতে খুন করলে বেশ ঝামেলা হবে তাই হয়তো তার বাবার বাড়িতে খুন করা হয়েছে। কিন্তু সেই সন্দেহ বেশি শক্তিশালী ছিল না, তবে নয়নের মায়ের ডায়েরি পড়ে আবার অনেকটা শক্তিশালী হয়ে যায়। 

- হাজী সাহেব বললো, কিরকম? 

- মৃত রেবেকা আফরোজ তার ডায়েরির মধ্যে বেশ কিছু গল্পের চরিত্র ও কাহিনি উল্লেখ করে গেছেন। আমি সবগুলো পড়েছি, যেগুলো জানা ছিল না সেগুলোও পড়ে জেনেছি। কিন্তু ডায়েরির সেই কথাগুলো আমি সবার সামনে তুলবো না, তবে শেষের ২/৩ টা কাহিনি তুলতে হবে। 

- আচ্ছা বলেন। 

- সাজু তখন দেলোয়ার হোসেনের দিকে তাকিয়ে বললো, আপনার দ্বিতীয় সংসারে এখন কত বছর রানিং চলছে? 

- দেলোয়ার হোসেন বললো, মানে? 

- মানে আপনি দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন কত বছর আগে? 

- রেবেকা যেদিন মারা গেছে তার একদিন আগে। 

- কেন বাচ্চাদের মতো বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা কথা বলছেন আপনি? আপনি আপনার পরিবার এবং নয়নের নানা বাড়ির সবাইকে মিথ্যা বলে ঠকিয়ে এসেছেন তাই না? 

- আপনি কিন্তু যা ইচ্ছে তা বলতে পারেন না। 

- আপনি সবার কাছে বলেছিলেন যে আপনার বৈধ কাগজ হচ্ছে না তাই দ্বিতীয় বিয়ে করবেন। আসলেই কি তাই? নাকি আপনার দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে আর চার বছর আগে থেকে প্রেম ছিল? 
দেখুন আমি ইতালিতে আপনার বিষয় সবকিছুর খবর নিয়ে তারপর এখানে এসেছি। আপনি সেখানে বিগত বছরগুলোতে কি কি করেছেন, কবে বিয়ে করেছেন কতদিন প্রেম, কতদিন ধরে সংসার সবটাই জেনেছি আমি। 

- দেলোয়ার হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী জাহানারা তখন বললো, হ্যাঁ মানছি আপনি অনেককিছু জানেন বা জেনেছেন। দুজন মানুষের একে অপরকে ভালো লাগতে পারে আর সেখানে তারা যদি বিয়ে করে এতে সমস্যার কি আছে? বাড়িতে পারিবারিক সমস্যা ছিল তাই আমরা বিয়ের সময় জানাইনি। তার মানে তো এটা নয় যে আমার স্বামী তার প্রথম স্ত্রীকে খুন করেছে। কারণ সে তখন ইতালিতে ছিল আর ওনার স্ত্রী খুন হয়েছে গ্রামে। 

- আমিও জানি তিনি খুন করেননি, আর তিনি তখন ইতালিতে ছিল সেটাও জানি। কিন্তু আপনি সেই সময় কোথায় ছিলেন? বাংলাদেশে তাই না? 

- মানে? 

- অবাক হয়ে লাভ নেই, আপনি বাংলাদেশ ছিলেন এটা যেমন সত্যি। আপনি যে খুন করেন নাই এটাও তেমন সত্যি, খুন করেছে আরেকজন। 

চলবে...

   
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

Like Reply


Messages In This Thread
RE: সাজু ভাই সিরিজ নম্বর-০৫ গল্প: সরি আব্বাজান (২) - by Bangla Golpo - 19-01-2025, 04:35 PM



Users browsing this thread: 7 Guest(s)