Thread Rating:
  • 1 Vote(s) - 5 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Thriller সাজু ভাই সিরিজ নম্বর-০৫ গল্প: সরি আব্বাজান (২) সমাপ্ত
#5
 পঞ্চম_পর্ব


- নয়ন বললো, বিশ্বাস করুন আমি বাবাকে গুলি করিনি। আমি অস্ত্র পাবো কোথায়? হয়তো সেদিন বিমানবন্দর যেতে পারলে কিছুক্ষণ বকাবকি করে ছেড়ে দিতাম। 

- সাজু বললো, কিন্তু কাজলের কাছে তো তুমি বলছো যে খুনাখুনি হবে তাই সে যেন তোমার মামাতো ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাহলে তুমি যদি সেরকম নিয়্যাত না করো তবে মোবাইল নাম্বার দিলে কেন? 

- ওটা রাগের মধ্যে বলেছি, তাছাড়া মানুষ কথার মধ্যে কতকিছুই বলে কিন্তু কাজে করতে পারে কতজন? 

- তুমি এখন কোথায়? 

- আমি নারায়ণগঞ্জ। 

- সেখানে কীভাবে? আর কেন? 

- আমি এখানেই পড়ে ছিলাম, কেউ হয়তো আমাকে বাসের মধ্যে নেশা জাতীয় কিছু করেছে। সাধারণত বাসের ভিতরে যেগুলোর মাধ্যমে যাত্রী অজ্ঞান করে সবকিছু নিয়ে যাওয়া হয়। আমার স্পষ্ট মনে আছে কুমিল্লা হোটেল পার হয়ে আমি কিছুটা ক্লান্ত বোধ করি। এরপরই আস্তে আস্তে আমি কোথায় হারিয়ে গেছি জানি না। যখন জ্ঞান ফিরেছে তখন আমি একটা লোকের বাসায়। 

- তুমি কি এখনো সেই বাসায়? 

- জ্বি, আমার মোবাইল মানিব্যাগ যাবতীয় কিছুই নেই আমার কাছে। কাজলের নাম্বার মুখস্থ ছিল তাকে কল দিলাম তারপর তার কাছ থেকে যতটা জানার তা জানলাম। আপনার নাম্বারটা আমি কাজলের কাছ থেকে নিয়েছি। 

- তুমি কি গ্রামের বাড়িতে আসবে? 

- আপনি বললে যাবো, তবে আমি কাজলকে বলেছি মিনহাজের নাম্বার দিতে। মামার কাছেও জিজ্ঞেস করে দেখি কি করতে বলে, তারপর যা করার করবো। 

- তোমার মামার সঙ্গে যোগাযোগ করার দরকার নেই তুমি বরং বাগেরহাট আসো। টাকা না থাকে তো আমি দিচ্ছি, তুমি সরাসরি আমাদের বাড়িতে আসো। আমি বিকেলে তোমার নানা বাড়িতে যাবো, তারপর তোমাদের থানার পুলিশের সঙ্গে কথা বলে সবটা ক্লিয়ার হই। 

- টাকা লাগবে না, কাজলের কাছ থেকে নিয়েছি টাকা, আপাতত চলবে। 

- তাহলে বাগেরহাট আসো, আজকে রাতে রওনা দাও আমি বরং বিকেলের দিকে দেখি কি করা যায়। 

- ঠিক আছে ভাই। 

★★

বিকাল ৩ঃ১০ 

রামিশার রুমের সামনে গিয়ে দরজা ধাক্কা দিয়ে দাঁড়িয়ে রইল সাজু। রামিশা দরজা খুলতেই সাজু বললো, 

- তাড়াতাড়ি তৈরি হও নয়নের গ্রামে যাবো। 

- এখনই? 

- হ্যাঁ কেন সমস্যা আছে নাকি? তাহলে বলো একা একা চলে যাবো তোমাকে যেতে হবে না। 

- আরে ধুর, আমি এসেছি আপনার সঙ্গে মামলার রহস্য দেখবো বলে আর আপনি বলেন কিনা যে আমি যাবো না। 

- তাহলে কথা না বলে তাড়াতাড়ি তৈরি হও। 

নিজের বাইক নিয়ে সাজু রওনা দিল। সে যখন শহরে থাকে তখন তার এই বাইক বাড়িতেই পরে থাকে। যখন বাড়িতে আসে তখন শুধু ব্যবহার করা হয়। রামিশাকে নিয়ে বাইকে করে তেরখাদা উপজেলার বাদালপুর গ্রামের দিকে ছুটে চলেছে সাজু। 

গ্রামের মধ্যে যখন পৌঁছালো তখন পাঁচটা পেরিয়ে গেছে, লোকের কাছে জিজ্ঞেস করে করে নয়নের নানা বাড়ি এসে উপস্থিত হলো তারা। নয়নের খালা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছেন, গ্রামের মহিলা তাই মনে মনে ভয় পাচ্ছে সেটা বোঝা যাচ্ছে। 

- সাজু বললো, আমি আপনার সঙ্গে নয়নের মায়ের বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই। আপনার বোন সম্পর্কে আপনি সবচেয়ে বেশি জানেন এটা আমার বিশ্বাস। 

- কিন্তু আপনারা? আর বুবুর বিষয় কি জিজ্ঞেস করবেন? 

- আপনার বোন যেদিন মারা গেছে সেদিন সকাল বেলা আপনার সঙ্গে তার কথা হয়েছিল? 

- হ্যাঁ, বুবু আমাকে বলেছিল যে নামাজ পড়ে তার রুমে এক কাপ চা দিয়ে আসতে। 

- আপনাদের বাড়িটা অনেক বড়, কাজের লোক নেই কেউ? 

- এখন নেই তবে একসময় ছিল, আমার বাবার সময় থেকে আমাদের রাশেদা খালা কাজ করতো। বাবার মৃত্যুর পরেও তাকে রাখা হয়েছে কারণ তিনি দীর্ঘদিন ধরে ছিলেন। আমাদের টাকা পয়সার সমস্যা ছিল তবুও তাকে রাখা হয়েছে। 

- এখন তিনি কোথায়? 

- বুবু মারা যাবার তিন মাস আগে তিনি ইচ্ছে করে চলে গেছেন। 

- কেন কোনো কারণ ছিল? 

- আসলে আমার স্বামী তাকে কিছু বকাবকি করে যেটা তিনি সহ্য করতে পারেননি। যদিও সামান্য বকাবকি তবুও তিনি সেটাই বড় করে দেখেছেন। রেবেকা বুবু অনেক চেষ্টা করছিল রাখার জন্য কিন্তু তিনি থাকেননি। 

- রামিশা বললো, আমরা তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে কোথায় গেলে পাবো? 

- শুনেছি তিনি ভিক্ষা করেন। 

- কি বলেন? তার পরিবারে তেমন কেউ নেই নাকি? 

- একটা নাতনী ছিল, তার বিয়ে হয়েছিল বু্ুর মৃত্যুর ছ'মাস আগে। নাতনীর বিয়ের পর থেকে তিনি এ বাড়িতে আর থাকতে চাননি৷ তার নাতনীর বিয়ের সকল খরচ বুবু দিয়েছিল, দুলাভাইর কাছ থেকে টাকা এনে বুবু নিজের হাতে বিয়ে দিয়েছেন। 

- সাজু বললো, আপনি কোন ক্লাস পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন? 

- ক্লাস এইট, কিন্তু কেন? 

- আর আপনার বুবু? 

- বুবু মেট্রিক পাশ করেছিল। 

- যেদিন রেবেকা আফরোজ খুন হয়েছে সেদিন আপনাদের বাড়িতে কে কে ছিলেন? আপনার স্বামী কি বাড়িতে ছিলেন? 

- খুন হয়েছে মানে? আপু তো আত্মহত্যা করেছে সেটা গ্রামের সবাই জানে। 

- হ্যাঁ আমিও জানি, আসলে যেকোনো ঘটনা সত্য কিংবা মিথ্যা। আমরা প্রথমে যেটা প্রচার করবো সেটাই প্রচলিত হয়ে যায়। এবার বলেন সেদিন কে কে ছিল আপনাদের বাসায়? 

- আমি আমার স্বামী আমার দুটো মেয়ে নয়ন আর বুবু। তবে ভোরবেলা বড়ভাইজান চট্টগ্রাম থেকে এসেছিলেন। 

- নয়নের মায়ের মৃত্যুর পরে এসেছিল নাকি তার আগেই এসেছিল? 

- মনে হয় পরেই হবে, কারণ আমরা যখন বুবুর লাশ নিয়ে কান্নাকাটি করি তখন তখন হঠাৎ করে দেখি ভাইজান সবার মধ্যে উপস্থিত। 

- আমরা একটু সেই ঘরটা দেখতে চাই। 

- সেই ঘর তো তালাবদ্ধ, রুমের চাবি একমাত্র ভাইজানের কাছে। বুবুর মৃত্যুর পর থেকে তালা মেরে আটকে রাখা হয়েছে ঘরটা। 

- এখন আমরা গেলে কি তালা ভেঙ্গে প্রবেশ করতে হবে? 

- হ্যাঁ কিন্তু সেটা আমি করতে দেবো না, কারণ আপনারা গোয়েন্দা বা আর যাই হোক কিন্তু এভাবে প্রবেশ করতে দেবো না। 

- রামিশা বললো, যদি পুলিশ নিয়ে আসি তাহলে ঢুকতে দেবেন? 

সাজু তখন রামিশাকে থামিয়ে দিয়ে বললো, 

- ঠিক আছে আপনাকে প্রবেশ করতে দিতে হবে না, আমরা আবার আসবো। তবে আরেকটা তথ্য দিয়ে একটু সাহায্য করবেন? 

- বলেন। 

- আপনাদের গ্রামের মধ্যে সম্মানিত এমন কোনো ব্যক্তি আছে যার কথা অত্র এলাকার সবাই মান্য করে চলে। এমনকি থানা পর্যন্তও যাদের কথার খুব মূল্য আছে এমন কেউ? 

- হাজী সাহেব আছে? 

- কে উনি? 

- খুব ভালো মানুষ, আমাদের এলাকার মধ্যে তার কথার দাম বেশি। হাজী ফজলুল সাহেব যেকোনো বিচার-আচার বা সামাজিক কাজের জন্য তাকে ডাকা হয়। 

- ঠিক আছে মেলা মেলা ধন্যবাদ। 

★★

বাইকে উঠে সাজু রামিশাকে বললো, 

- তুমি তখন সেই কাজের মহিলার সঙ্গে দেখা করার কথা বললে কেন? 

- কারণ একটা পরিবারের মধ্যে কার সঙ্গে কেমন সম্পর্ক, কে কেমন চরিত্রের, কে কাকে বন্ধু বা শত্রু মনে করে ইত্যাদি সবকিছু সেই বাসার কাজের মানুষ অবশ্যই কিছুটা জানে। তাই ভাবলাম যদি আমরা তার সঙ্গে দেখা করতে পারি তাহলে তার কাছ থেকে জানতে পারতাম। 

- কি জানতে পারতাম? আর তিনি সবকিছু যে বলবেন তার গ্যারান্টি কি? 

- নয়নের মায়ের কে কে খারাপ চাইতেন, কার সঙ্গে তার বেশি শত্রুতা ছিল এসব। যেহেতু নয়নের মা নিজে তার স্বামীর কাছ থেকে টাকা এনে নাতনীর বিয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সেহেতু সে অবশ্যই নয়নের মায়ের খুনিকে ধরার জন্য আমাদের সাহায্য করবে। 

- বাহহ বাহহ, তুমি তো দেখি রহস্যের গন্ধ বুঝতে শিখে গেছো। হঠাৎ করে যদি আমি মারা যাই, তাহলে তো তুমিও আমার পরিবর্তে মামলা নিয়ে লড়তে পারবে। 

- সাজু ভাই...? 

- কি হলো! 

- আপনি এমন কথা আর কখনো বলবেন না, আপনি কেন মরার কথা বলেন? খারাপ লাগে। 

- আচ্ছা আর বলবো না। 

- একটা কথা বলবো সাজু ভাই? 

- বলো। 

- আমরা সেই বিশিষ্ট ভদ্রলোকের কাছে গিয়ে কি করবো জানতে পারি? 

- সেখানে গেলেই বুঝতে পারবে। 

|
|
|

সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে, হাজী ফজলুল সাহেব তার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। ছোট্ট একটা মাঠ আর সেই মাঠের অদূরে পশ্চিমাকাশে সূর্য নিবুনিবু করে জ্বলছে। সাজু ও রামিশা আসার পরে তিনি তাদের নিয়ে বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করলেন। উঠোনে চেয়ার পাতা আছে সেখানে বসে বললেন, 

- আমি মসজিদে নামাজ পড়তে যাবার জন্য বের হয়েছিলাম। এখনো কিছুটা সময় বাকি আছে তাই সময় দিতে পারবো তবে বেশিক্ষণ নয়। অপেক্ষা করতে বলতাম কিন্তু আজ বৃহস্পতিবার মসজিদে হালাকা জিকির আছে। 

- আমি তেমন কিছু জিজ্ঞেস করবো না, শুধু দুটো প্রশ্ন করবো। 

- জ্বি। 

- আজ থেকে নয় বছর আগে দেলোয়ার হোসেন এর স্ত্রী রেবেকা আফরোজ যখন আত্মহত্যা করে তখন তার লাশ পোস্টমর্টেম করা হয়নি। এতটুকু আমি জানি, কিন্তু আমি জানতে চাই যে লাশ নেবার জন্য পুলিশ যখন এসেছিল তখন কি আপনার সঙ্গে কথা হয়েছে? 

- হ্যাঁ আফজাল খন্দকার এসেছিল আমার কাছে সঙ্গে তার ছোট বোনের স্বামী খলিল ও ছিল। 

- তারাই কি আপনাকে অনুরোধ করেছিল যেন লাশ পোস্টমর্টেম করা নাহয়? 

- হ্যাঁ, ওরা বলেছিল রেবেকা ধার্মিক একটা মেয়ে তাই তার লাশ নিয়ে কাটাছেঁড়া করার দরকার নেই আপনি পুলিশকে অনুরোধ করেন। আমরা তো আত্মীয়রা আছিই, তবুও আপনি একটু বলেন তবে কাজ হবে। 

- তারপর আপনার কথাতে কাজ হয়ে গেল? 

- সবটা নয় কিছুটা, আমি তাদের পরামর্শ দিলাম যে একটা সুইসাইড নোট লিখে সেটা রেবেকার বলে চালিয়ে দিতে। মৃতের বাড়িতে সবাই যখন কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে তখন আফজাল নিজে চিঠি লিখে সেটা আবার টেবিলে রাখে। তারপর সুযোগ বুঝে সেটা বাহির করে ততক্ষণে বেলা এগারোটা বেজে গেছে। তবুও আফজাল নিজে যখন চিঠি বের করেছে তখন কেউ কিছু বলে নাই। 

- আপনার কি মনে হয়নি যে কাজটা একদমই অনুচিত হয়েছে, রেবেকা আত্মহত্যা করেনি সে খুন হয়েছে এমন মনে হয়নি? 

- না মনে হয় নাই, কারণ রেবেকা যেদিন শশুর বাড়ি থেকে এখানে এসেছে সেদিন তার সঙ্গে পথে আমার দেখা হয়েছিল। তারপর তারপর কান্না করে করে বললো বাঁচার ইচ্ছে নেই, কপাল থেকে সবকিছু শেষ হয়ে গেছে ইত্যাদি ইত্যাদি। 

- তাই আপনিও ভাবলেন যে তিনি আত্মহত্যা করে মারা গেছে? 

- হ্যাঁ, হয়তো চিঠি লিখে যায় নাই ঠিকই কিন্তু সে আত্মহত্যা করেছে এটা নিশ্চিত ছিলাম। 

- মসজিদে আজান দিচ্ছে, আপনি বরং নামাজ পড়তে যান আমরা এ বিষয় নিয়ে আবার কথা বলবো। 

- মনে হয় দরকার নেই, কারণ সবকিছুই আমি বলে দিয়েছি। 

- সেটা সময় বলে দেবে। 

সাজু আর রামিশা হাঁটতে লাগলো, হাজী সাহেব এখনো বসে বসে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। এতটুকু ছোকরার এমন কঠিন কথার ধরণ দেখে অবাক হয়ে রইলেন। 

★★

গ্রাম থেকে বেরিয়ে মেইন রাস্তায় উঠতে উঠতে চারিদিকে অন্ধকার হয়ে গেল। বাইকের পিছন থেকে রামিশা বললো, 

- বুড়োকে কেমন সন্দেহ হচ্ছে সাজু ভাই। 

- কিরকম? 

- যা জিজ্ঞেস করা হয়েছে সবকিছুর ঝটপট করে জবাব দিয়ে দিল, মনে হয় যেন আগে থেকে তার মনের মধ্যে সকল উত্তর সাজানো ছিল। নাহলে কিছু উত্তর দেবার সময় তার ভাবনার দরকার ছিল। তারপর জিজ্ঞেস করতে পারতো তোমরা কারা? কিসের জন্য তোমাদের বলবো? 

- হুম সেটাই, তবে আমি চিন্তা করছি অন্য কিছু। 

- কি সেটা? 

- আমি ভেবেছিলাম নয়নের মায়ের খুন এবং তার বাবার উপর আক্রমণ দুটোই একই ব্যক্তির কাজ। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে দুটো ভিন্ন, নয়নের মায়ের খুন করেছে একজন। আর সেই সূত্র ধরে নয়নকে ফাঁসাতে অন্য কেউ তার বাবার উপর আক্রমণ করেছে। 

- তাহলে তো..... 


চলবে... 

 
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

[+] 1 user Likes Bangla Golpo's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: সাজু ভাই সিরিজ নম্বর-০৫ গল্প: সরি আব্বাজান (২) - by Bangla Golpo - 19-01-2025, 04:30 PM



Users browsing this thread: 6 Guest(s)