19-01-2025, 04:24 PM
(This post was last modified: 19-01-2025, 04:25 PM by Bangla Golpo. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
পর্ব:- দুই
নয়নের বাবা কিন্তু মারা যায়নি, তাকে গুলি করা হয়েছে ঠিকই কিন্তু তিনি মারা যাননি। মৃত্যুর খবর মূলত নয়নের দাদা বাড়ি থেকে পেয়েছিল নয়নের মামা। যেহেতু গ্রামের বাড়ি তাই শোনে এক আর বলে আরেক।
ঘটনাটা এমন।
আক্রমণকারীরা পরপর দুটো গুলি করে সেখান থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়। তারপরই সেখান থেকে কাছেই কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেবার ফাঁকে গ্রামের বাড়িতে কল কল করে রাতুল। রাতুল হচ্ছে নয়নের বড় কাকার ছেলে, সে ঢাকায় এসেছিল তাদের রিসিভ করে গ্রামের বাড়িতে নেবার জন্য।
রাতুল কল দিয়ে তার বাবাকে বলে,
- বাবা নয়ন তো চাচাকে গুলি করেছে, চাচার কি অবস্থা বুঝতে পারছি না। আমরা হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি আপনি তাড়াতাড়ি ঢাকায় আসুন।
এতটুকু, এরপর নয়নের চাচা মনোয়ার হোসেন তার স্ত্রীকে বললেন যে নয়ন তার বাবাকে গুলি করেছে। এরপর মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে এক কান দুই কান করতে করতে ছড়িয়ে গেল। সেখান হতে একজন কল করেছিল নয়নের মামার কাছে, এর কারণ হচ্ছে নয়ন তার মামার কাছে থাকে।
যিনি নয়নের মামার কাছে কল করেছেন তিনি সরাসরি বললেন যে নয়ন তার বাবাকে গুলি করে মেরে ফেলেছে। আর তারই কিছুক্ষন পরে যখন কাজল নয়নের মামাতো ভাইয়ের কাছে কল দিল তখন সেও বলে দিল মারা গেছে।
|
|
নয়ন যে খারাপ কিছু করতে পারে সেটা সকলের ধারণা ছিল কিন্তু তা অনেক আগে। নয় বছরের পুরনো ঘটনা অনেকেই ভুলে গেছে, কারণ জীবন পেরিয়ে যায় ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে। পুরনো ক্ষত হারিয়ে যায় নতুন কষ্টের ভিড়ে, দিন বদলায় তবু মাঝে মাঝে স্মৃতি কাঁদায়।
কিন্তু সকাল বেলার ওই একটা সংবাদে আবারও নড়েচড়ে ওঠে বাদালপুর ও মনিভাঙ্গা নামের গ্রাম দুটো। আস্তে আস্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে সম্পুর্ণ ইউনিয়নের মধ্যে। নয়নের নানা বাড়িতে খবর পৌঁছে গেল, তার খালা মাথায় হাত দিয়ে উঠোনে বসে পড়লেন। একটা মিথ্যা খবর প্রচার হতে লাগলো এলাকার মাঝে। বেলা দশটার দিকে যখন নয়নের বাবা সুস্থ আছেন সেই খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। ততক্ষণে মৃত্যুর খবর চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে প্রতিটি মানুষের কাছে।
এরপর যখন আবার সত্যিটা প্রচার হচ্ছে তখন কেউ বলে এক কথা আবার অন্যজন বলে আরেক কথা। সবমিলিয়ে একটা হুলস্থুল ঘটনা, কেউ কেউ নয়নের দাদা বাড়িতে আসছেন ঘটনা ভালো করে জানার জন্য।
★★
হাসপাতালে পুলিশ এসেছে।
মোটামুটি যা কিছু জিজ্ঞেস করার সবকিছু রাতুল এর কাছে জিজ্ঞেস করতে হবে। দারোগা সাহেব রাতুলকে এক সাইডে নিয়ে বললেন,
- আপনি তো সঙ্গে ছিলেন, যারা আক্রমণ করেছে তাদের চিনতে পেরেছেন?
- না স্যার চিনতে পারিনি, তবে তাদের মধ্যে নয়ন মানে আমার চাচাতো ভাই ছিল। ওর কণ্ঠ আমার কাছে পরিচিত তাই স্পষ্ট চিনতে পেরেছি, নয়ন হচ্ছে আমার চাচার প্রথম স্ত্রীর সন্তান।
- ছেলে তার বাবাকে খুন করার চেষ্টা করেছে?
- জ্বি স্যার, নয় বছর আগে নয়নের মা আত্মহত্যা করে মারা গেছে। চাচির মৃত্যুর জন্য নয়ন তার বাবাকে দায়ী করে তাই পুরনো প্রতিশোধ নিতেই এই আক্রমণ।
- আপনার চাচা সেটা জানতেন?
- জ্বি, কিন্তু তার ধারণা ছিল এত বছর পরে হয়ত সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে গেছে। নয়ন তার মামার কাছে চট্টগ্রামে থাকতো, তার সঙ্গে আমাদের কারো কোনো যোগাযোগ নেই।
- আপনার চাচিকে ডাকুন, তার সঙ্গে কিছু কথা বলতে হবে।
ভদ্রমহিলা কাঁদতে কাঁদতে ইতিমধ্যেই চোখ লাল করে ফেলেছেন। দারোগা সাহেবের সামনে এসে দাঁড়িয়ে ফোঁপাতে লাগলো,
- আপনার দেশে আসার আগে তার প্রথম সন্তান এর বিষয় কিছু বলতেন?
- হ্যাঁ সবসময়ই বলতেন, তিনি তার প্রথম স্ত্রীকে খুব ভালোবাসতেন। একটা সমস্যার জন্য আমার সঙ্গে তার বিয়ে হয় কিন্তু সেটা প্রথম স্ত্রী মানতে না পেরে আত্মহত্যা করে। তিনি তার সন্তানকে অনেক বোঝাতে চেষ্টা করতেন, কথা বলতেন কিন্তু ছেলের রাগ কমেনি।
- তাই যদি হয় তাহলে হঠাৎ করে দেশে আসার সিদ্ধান্ত নিলেন কেন? যেহেতু অনেক বছর নাকি আপনারা আসেননি।
- আমার শশুর অসুস্থ, বছর তিনেক আগে আমার শাশুড়ী মারা গেছে তখন আসিনি। মাস খানিক ধরে রাতুলের বাবা ও আমার শশুর বরাবর করে অনুরোধ করছেন তাই এসেছি। তারা বলেছিল যে ঢাকা থেকে একবার গিয়ে বাড়িতে উঠতে পারলে তারপর আর সমস্যা হবে না।
- আপনারা দেশে ফিরবেন সে কথা কি সেই ছেলে মানে নয়ন জানতো?
- জ্বি না শুধু শশুর বাড়িতে জানতো।
- আপনার কি মনে হয় যে এটা ওই ছেলেটারই কাজ নাকি অন্য কোনো শত্রু আছে?
- আমি কিছু বুঝতে পারছি না, আমার ধারণা ছিল ছেলে যতই রাগারাগি করুক কিন্তু নিজের বাবাকে খুন করবে না। কিন্তু এখন তো সবকিছু নিজের চোখে দেখলাম দারোগা সাহেব।
- যে গাড়িতে করে তারা এসেছিল সেই গাড়ির নাম্বার মনে আছে? কি কালারের গাড়ি তারপর কোন ব্রান্ডের এসব কেউ খেয়াল করেছেন?
- রাতুল বললো, সাদা কালারের গাড়ি ছিল তবে প্লেট নাম্বার দেখতে পারিনি।
- তারা ক'জন ছিল?
- তিনজন বের হয়েছিল গাড়ি থেকে, আর মনে হয় একজন গাড়ির ড্রাইভার ছিল।
- তাহলে মোট চারজন?
- জ্বি।
- আমি চারজন পুলিশ পাহারার ব্যাবস্থা করছি, আপনারা সাবধানে থাকবেন। আর এটা হচ্ছে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত হাসপাতাল তাই এখানে কেউ আক্রমণ করার সাহস পাবে না। তবুও আমি তাদেরকেও ইনফরমেশন দিয়ে রাখবো যাতে নতুন করে কোনো আপত্তিকর কিছু না ঘটে।
- ঠিক আছে স্যার ধন্যবাদ।
★★
বিমর্ষ দার্শনিকের মতো ঘরের সামনে হাতপা ছড়িয়ে বসে আছে নয়নের ছোট খালা রাবেয়া বেগম। তার সামনেই বসে আছে তার স্বামী খলিল আহমেদ শিকদার। খলিল সাহেব নিজের স্ত্রীকে বারবার বোঝাতে লাগলো যা হবার হবে এতো টেনশন করতে হবে না।
- রাবেয়া বললো, বুবু মারা যাবার পর থেকে নয়ন তার জীবনটা এলোমেলো করে দিল। এখন আবার কেন ঝামেলা করতে গেল বলেন তো?
- দেখো এসবে আমাদের হাত কি? তোমার ভাই নিজের কাছে তো রেখেছে ওকে, তারপরও যদি ভালো হতে না পারে আমরা কি করবো?
- কিন্তু মনকে কীভাবে বোঝাবো বলেন।
- সেদিন যদি তোমার বুবু আত্মহত্যা না করতেন তাহলে আজ তার সন্তান এভাবে বিপদের মধ্যে যেতো না৷ তিনি নিজে কিন্তু তার সন্তানকে ভালো ভাবে মানুষ করতে পারতেন। কতটা বছর ধরে তিনি স্বামী ছাড়া দেশে থাকতে পারলো আর যেই শুনলো বিয়ে করেছে অমনি মরে গেল।
বোনের আত্মহত্যার কথা শুনে হঠাৎ মুখের আকৃতি পরিবর্তন হয়ে গেল রাবেয়ার। হঠাৎ করে যেন নতুন অজানা কারণে তার মনের মধ্যে কিছু জেগে উঠলো। কিসের একটা ভয় যেন তার মুখের উপর ফুটে উঠেছে যেটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে।
|
|
ঠিক দুপুর একটার দিকে নয়নের কাকা মনোয়ার হোসেন কল দিলেন নয়নের মামার কাছে। তারপর উপহাস করে বললেন,
- নিজের বোনের গুন্ডা ছেলেকে দিয়ে তার বাবাকে খুন করার চেষ্টা করাচ্ছেন নাকি?
নয়নের মামা আফজাল খন্দকার বললেন,
- মানে কি? আমি কেন তাকে দিয়ে তার বাবাকে খুন করাতে যাবো। আমি তো জানতামই না সে ঢাকায় গেছে।
- কি জানেন আর কি জানেন না সেটা সময় বলে দেবে খন্দকার সাহেব। আমার ভাইটা আগে সুস্থ হয়ে বাড়িতে আসুক তারপর নাহয় হিসাবটা নিয়ে বসা যাবে।
- কিসের হিসাব?
- দেখুন আমার ভাই বিয়ে করেছে ঠিকই কিন্তু সে তো আপনার বোনকে ত্যাগ করেনি। জিদের জন্য আপনার বোন আত্মহত্যা করলো আর নিজের সন্তানকে বানিয়ে গেল শয়তানের দাদা। ভাবতেই আফসোস লাগে যে ওই কুলাঙ্গারে শরীরে আমার বংশের রক্ত।
- মুখটা একটু সংযত করেন, আর যা কিছু হচ্ছে সেটা কীভাবে সমাধান করা যায় ভাবুন। দরকার হলে আমিও গ্রামের বাড়িতে যাবো তবুও এসবের সমাধান করা দরকার। অবুঝ একটা ছেলে তার মনের মধ্যে পুষে রাখা রাগের জন্য ভুল করে জীবন নষ্ট করবে এটা কারোরই কামনা নয়।
- গ্রামের বাড়িতে আপনাকে তো আসতেই হবে, ইচ্ছা করে নাহলেও আইনের চাপে।
- আপনারাও কি পাগলামি করছেন নাকি?
- নাহলে তো শান্তিতে থাকা যাবে না।
★★
বিকাল ৪:১৭
জামাল রেস্টুরেন্টে, বাদামতলা, চট্টগ্রাম।
মুখোমুখি হয়ে বসে আছে কাজল ও রিহানুল ইসলাম সাজু। দুজনেই নিরব, কারণ সাজু তার মোবাইলে কিছু একটা নিয়ে ব্যস্ত আছে। কাজল এমন পরিস্থিতিতে কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না কারণ সাজু নামের এই মানুষটা তার অপরিচিত।
মোবাইল টেবিলের উপর রেখে সাজু সরাসরি কাজলের দিকে তাকিয়ে বললো,
- আপনিই রামিশার বান্ধবী তাই না?
- জ্বি ভাইয়া আমার নাম কাজল।
- বলেন কিসের জন্য দেখা করতে চেয়েছিলেন।
- আসলে আপনাকে বিষয়টা বলা ঠিক কিনা বুঝতে পারছি না। তবুও মনে হচ্ছে আপনাকে বলে যদি কিছু করতে পারি।
- সাহিত্যিকের মতো বিশাল আকারে বর্ননা না করে সরাসরি বলেন। কিছু খাবেন?
- না খাবো না। আসলে সাজু ভাই, আমার একটা বন্ধু তার বাবাকে আজকে সকালে খুন করেছে।
- মানে? নিজের বাবাকে খুন?
- জ্বি ভাই, তবে এর পিছনে অনেক কাহিনি আছে আপনি চাইলে সবটা বলবো।
- আচ্ছা বলেন তাহলে।
এরপর কাজল একনাগাড়ে নয়নের কাছ থেকে শোনা তার সম্পুর্ন অতীত এবং গতকাল রাতের ও আজকের সকালের সবকিছু বললো।
সবটা শুনে সাজু গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে গেল। মনে হয় যেন কোনো একটা রহস্যের মধ্যে ডুবে যাচ্ছে সাজু৷
- কাজল বললো, নয়ন যদি তার বাবাকে খুন করে তাহলে তার কোনো খোঁজ নেই কেন?
- সাজু বললো, হয়তো সে ভেবেছে পুলিশ তার নাম্বার দিয়ে তাকে খুঁজে বের করবে। তাই নিজের নাম্বার বন্ধ করে দিয়েছে।
- কিন্তু অন্য নাম্বার দিয়ে হলেও তো আমাকে তার জানানোর কথা ছিল।
- কেন আপনি কি তার বস? খুন করে আপনাকে কল দিয়ে জানাবে "অপারেশন সাকসেসফুল"।
- তবুও, আপনি তো গোয়েন্দা তাই যদি আমাকে একটু সাহায্য করতেন।
- দেখুন আপনি নিজেই জানেন খুন করার জন্য ছেলেটা চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় গেছে। তারপর সে আজ সকালে খুন করেছে, তাহলে আমি গিয়ে কি করবো সেখানে?
- ওকে যদি খুঁজে বের করতে পারতেন।
- যেহেতু খুন হয়েছে সেহেতু পুলিশ তাকে খুঁজে বের করবে চিন্তা করবেন না। তবে একটা কাজ করতে পারবেন?
- কি কাজ?
- আমি একটু নয়নের মায়ের সেই ডায়েরিটা পড়তে চাই আর তার মামার সঙ্গে বা মামাতো ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে চাই।
- আমি তাহলে কল দেবো?
- আচ্ছা কল দিয়ে জিজ্ঞেস করুন তাদের বাসা কোথায় আর একটু দেখা করতে পারবে কিনা।
কাজল কল দিলো মামাতো ভাইয়ের কাছে, সঙ্গে সঙ্গে রিসিভ করলো নয়নের মামাতো ভাই খালিদ মিনহাজ।
- মিনহাজ বললো, কে বলছেন?
- আমি কাজল নয়নের বন্ধু, সকাল বেলা আমি আপনার কাছে কল করেছিলাম।
- ওহ্ আচ্ছা এটা আপনার নাম্বার? আমি কিন্তু আপনার কাছে কল করতে চেয়েছিলাম কিন্তু সকাল থেকে এতো পরিমাণ অপরিচিত নাম্বারের কল এসেছে। তাই বুঝতে পারছিলাম না কোনটা আপনার নাম্বার, আচ্ছা শুনুন, নয়নের বাবা মারা যায়নি তিনি বেঁচে আছে। গুলি লেগেছিল কিন্তু মারা যায় নাই।
- তাহলে নয়ন কোথায়? ও কোনো যোগাযোগ করেনি আপনার সঙ্গে?
- না।
- আচ্ছা শুনুন, আমার এক পরিচিত মানুষ তিনি খুনের মামলার রহস্য বের করতে চেষ্টা করে৷ তার সঙ্গে আমি দেখা করেছি আর নয়নের সবকিছু বলার পরে সে আপনার সঙ্গে দেখা করতে চায়।
- নাম কি?
- সাজু।
- মানে সাজু ভাই?
- জ্বি আপনি চিনেন?
- হ্যাঁ চিনি, পুলিশের চাকরি করি আর একজন পরিচিত গোয়েন্দার নাম জানবো না। আপনারা চলে আসুন আমি বাসায় আছি, ঠিকানা টেক্সট করে দিচ্ছি চলে আসুন।
★★
মিনহাজদের বাসায় ড্রইং রুমে বসে আছে সাজু কাজল মিনহাজ ও তার বাবা। মিনহাজের বাবার দিকে তাকিয়ে সাজু বললো,
- আপনার বোন অনেক ধার্মিক মহিলা ছিলেন তাই না?
- জ্বি, কিন্তু একটা ভুল সিদ্ধান্তে বোনটা আমার তার জীবনের সকল আমল শেষ করে দিল। কেন আত্মহত্যা করে আল্লাহর নিষেধ অমান্য করে চলে গেল। (তিনি আফসোস করছেন)
- সাজু আস্তে আস্তে বললো, আসলেই কি সে আত্মহত্যা করেছে নাকি তাকে খুন করা হয়েছে সেই অনুসন্ধান করেছেন আপনারা?
চমকে গেল সবাই, আফজাল খন্দকার বিড়বিড় করে বললো,
- কি বলছেন আপনি?
- না তেমন কিছু না। কিন্তু আমি যতটা শুনলা তা থেকে এতটুকু ধারণা হচ্ছে যে তাকে খুন করা হয়েছে। যে মহিলা রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়লেন, সকাল বেলা ফজরের নামাজ পড়লো। সেই মহিলা কোনদিনই আত্মহত্যা করবে না।
- মানুষের মতামত পরিবর্তন হতে সময় লাগে না।
- আপনাদের গ্রামের বাড়ি কোথায়?
- খুলনা জেলার, তেরখাদা উপজেলায়।
- তারমানে আমার পাশাপাশি, আমি বাগেরহাটের সন্তান। আচ্ছা যাইহোক, নয়নের কাছে তার মা একটা ডায়েরি দিয়ে গেছিল সেটা কি আপনার বাসায় আছে?
- মিনহাজ বললো, হ্যাঁ আমাদের রুমে আছে।
- একটু কষ্ট করে নিয়ে আসবেন?
মিনহাজ চলে গেল ভিতরে, সাজু আবার জিজ্ঞেস করলো,
- আপনার বোন যে সুইসাইড নোট লিখে গেছে সেই নোটটা কি এখনো আছে?
- আফজাল সাহেব আমতাআমতা করে বললো, কত বছর আগের জিনিস এখনো থাকে নাকি?
- না তবুও এরকম জিনিস সবাই রেখে দেয় কারণ অনেকদিন পরে যদি পুলিশি ঝামেলা আসে তখন যেন দেখাতে পারে।
- তাহলে গ্রামের বাড়িতে থাকতে পারে।
মিনহাজ ডায়েরি নিয়ে প্রবেশ করলো, সাজু তার হাত থেকে ডায়েরি নিতে নিতে বললো,
- আরেকটা ছোট্ট উপকার করতে হবে মিনহাজ সাহেব।
- জ্বি বলেন সাজু ভাই।
- আপনার ফুপু মৃত্যুর আগে যে সুইসাইড নোট লিখে গেছে সেটা সংগ্রহ করতে হবে। আমার বিশ্বাস সেটা আপনি যোগাড় করতে পারবেন।
- মিনহাজ বললো, সেটা তো বাবার কাছে আছে, গত বছর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে বাবা নিয়ে এসেছে এখানে। নিয়ে আসবো?
- সাজু কিঞ্চিৎ হাসি দিয়ে বললো, হ্যাঁ নিয়ে আসুন।
মিনহাজ আবারও ভিতরে গেল, সাজু তখন আফজাল খন্দকারের দিকে তাকিয়ে রইল।
- বললো, নয়নের বাবাকে সে খুন করার চেষ্টা করেছে কিনা জানিনা। নয়ন কোথায় সেটাও আমি জানি না, জানতেও চাই না। তবে আমি এটা পরিষ্কার বুঝতে পারছি নয়নের মা আত্মহত্যা করে নাই তাকে খুন করা হয়েছে। আপনার সঙ্গে আবারও দেখা হবে, আমি আপাতত ডায়েরি আর চিঠি নিয়ে আপনার গ্রামের দিকে যাবো। একটু সতর্ক থাকবেন, কারণ সত্য একদিন বের হয়।
চলবে...
===========================
পড়তে থাকুন চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।
Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.
( Post By- Kam Pagol)