16-01-2025, 11:01 AM
রন সেদিন আর কলেজে যায়নি, রুমের মধ্যেই ডিভানে বসে থাকে আর কি করে তার মায়ের কাছে ক্ষমা চাইবে সে কথা নিয়ে প্রচণ্ড মানুষিক যন্ত্রণায় ভুগতে থাকে। তবে একটা সময় টের পায় তার প্রচণ্ড মাথা ব্যথা করছে, সাথে মাথা ভারীও হয়ে আছে। রন আর থাকতে না পেরে বিছানায় নিজেকে এলিয়ে দেয়।
নীরা রুম থেকে বের হয়ে রান্না ঘরে যেতেই দেখে মনা আর রজনীর আয়া হেমা কথা বলছে। নীরা কে দেখে মনা বলে, বৌদি ছোট বাবুর আজ কি হলো বলতো! আজ তো দেখছি ঘর থেকে বের হলো না! শরীর খারাপ করলো কিনা! তোমার রুমের সামনে অবশ্য ঘুরঘুর করছিল বাবু সকালে, এরপর গিয়ে যে দোর দিল, আর বের ই হলো না।
নীরা চমকে ওঠে, রন তার ঘরের সামনে এসেছিল! কেন! আবার কি কিছু বলতে এসেছিল! নীরার এমন চিন্তিত মুখ দেখে হেমা বলে, দিদি আপনাকে একটা কথা হয়নি।
হেমা আড়চোখে মনার দিকে তাকিয়ে ইতস্তত করতে থাকে, নিরা বুঝতে পেরে মনাকে সকালের নাস্তা টেবিলে দিতে বলে হেমা কে নিয়ে হলরুমে চলে যায়। হেমা সেখানে জয়িতার বলা সব কিছু বলে দেয়। নীহারিকার কথা অবশ্য হেমা জানে না, কারণ তখন সে বাড়ি চলে গিয়েছিল।
(হেমার সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত কাজ, যদিও তার প্রধান কাজ রজনীকে দেখে রাখা কিন্তু অন্যসব টুকিটাকি কাজও তাকে করতে হয়। মনা দি তিন বেলার রান্নায় কুটনা কাটনা সহ সব এগিয়ে যুগিয়ে সাহায্য করে, ঘর ঝাড়ু মোছা করে, বাসন ধোয়, আর অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজ ও করে। তবে মনা দি সকালে এসে কাজ শেষ করে কোনদিন সন্ধ্যায়ই চলে যায়, আবার কোনোদিন রাত ও হয়। এরা দুজন ছাড়াও রনদের একজন মালি আছে সে সকালে এসে সকালেই চলে যায়, দুজন দারোয়ান আছে দিন রাতের শিফটে, একজন ড্রাইভার আছে। তবে তারা কেউই বাসায় ঢোকে না।)
নীরার বুক মুচড়ে ওঠে। অজিত তখন অফিসের জন্য রেডি হয়ে নাস্তা করতে আসছিল কিন্তু হেনার শেষের কিছু কথা শুনে সে নিজেও হতবাক হয়ে যায়। অজানা আশঙ্কায় দৌড়ে রনের ঘরে ঢুকে দেখে রন নিস্তেজ হয়ে বিছানায় গুটিসুটি মেরে পড়ে আছে। ধীর পায়ে বেডের কাছে এসে রন কে দেখে চমকে ওঠে অজিত, পুরো চোখ মুখ ফুলে লাল হয়ে আছে। অজিত রনের কপালে হাত দিতেই আতকে ওঠে, প্রচণ্ড জ্বর । রন জ্বরের ঘোরে বিড়বিড় করছিল, মা আমায় ক্ষমা করো, আমি খুব খারাপ মা, সব দোষ আমার মা, আমি কেন তোমায় বুঝলাম না। তোমায় আমি কষ্ট দিয়েছি, আমি তোমায় কষ্ট দিয়েছি মা। আমায় ক্ষমা করো মা।
অজিত আর সহ্য করতে না পেরে নিরাকে এসে হাত ধরে টেনে ঝাকিয়ে বলল, নির এসব কি! রনের সাথে কি করেছ তোমরা!
এরপর হেমার দিকে তাকিয়ে বলে, রজনীর কাছে চলে যা, ও উঠে যাবে। এরপর নিরাকে টেনে নিজের স্টাডি রুমে এনে বলে, আমি আজ পর্যন্ত তোমার কোনকিছুতে বাধা দেইনি, নিজের অল্প বয়সের ভুলের জন্য সবসময় তোমার উপেক্ষা সহ্য করে গেছি, আমি জানি তুমি আমার সাথে সহজ হতে না পারলেও আমায় ভালোবাসো নীর, আমি বুঝি। কিন্তু রন! ওর কি আসলেই কোন ভুল ছিল? যা ও জানেই না, সেটা ও কি করে বুঝবে নীর! আর তুমি সত্যি করে বল তুমি কি ওকেও উপেক্ষা করো নি? আমার মত ওকেও দূরে সরিয়ে রাখোনি? 13টা বছর তো ওর সাথেও নির্লিপ্ত আচরণ করেছো নির, ওর সাথেও সহজ হতে পারো নি, অন্যান্য মায়ের মত কবে ওকে আদর শাহন করেছো নির? ও তো সব সময় তোমায় ভালোবেসে তোমার পিছনে ঘুর ঘুর করতো, তোমায় খুশি করার জন্য , তোমার একটু ভালবাসা পাবার জন্য বেস্ট বাচ্চা হয়ে থাকতো। বলো তো একটু নির, কবে ওকে আদর করে জড়িয়ে ধরেছো? কবে ওকে চুমু খেয়েছো? কবে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছো? কবে ওকে ঘুম পড়িয়ে দিয়েছো? বল! তাহলে তোমার পরিবার কেন আমার বাচ্চাকে এভাবে দোষারোপ করলো নির! ওর মধ্যে এখন কি ঝড় বইছে! আমি তোমাদের মা ছেলের মধ্যে বাবা হয়েও আসিনি, আমি চেয়েছি তোমরা নিজেরা নিজেদের বোঝো, অথচ বড় বৌদি কিনা আমার বাচ্চাকে এভাবে দোষ দিতে ওকে অপরাধী করে গেল!
নীরা তখন কেঁদেই যাচ্ছে, বুক পুড়ছে তার। অসহায় কন্ঠে বলে, সব আমার দোষ জিত, আমিই খারাপ, আমি কাউকে কিছুই বোঝাতে পারিনা, বলতে পারিনা। আমার জন্য আমার বাচ্চাটা এভাবে গুমরে কাদছে, আমি কিছুই করতে পারছি না!
অজিত হতাশ নিঃশ্বাস ফেলে, নীরকে আগলে ধরে বলে, নির রনের খুব জ্বর, তো তোমায় খুঁজছে। চলো ওর কাছে।
নীরা রুম থেকে বের হয়ে রান্না ঘরে যেতেই দেখে মনা আর রজনীর আয়া হেমা কথা বলছে। নীরা কে দেখে মনা বলে, বৌদি ছোট বাবুর আজ কি হলো বলতো! আজ তো দেখছি ঘর থেকে বের হলো না! শরীর খারাপ করলো কিনা! তোমার রুমের সামনে অবশ্য ঘুরঘুর করছিল বাবু সকালে, এরপর গিয়ে যে দোর দিল, আর বের ই হলো না।
নীরা চমকে ওঠে, রন তার ঘরের সামনে এসেছিল! কেন! আবার কি কিছু বলতে এসেছিল! নীরার এমন চিন্তিত মুখ দেখে হেমা বলে, দিদি আপনাকে একটা কথা হয়নি।
হেমা আড়চোখে মনার দিকে তাকিয়ে ইতস্তত করতে থাকে, নিরা বুঝতে পেরে মনাকে সকালের নাস্তা টেবিলে দিতে বলে হেমা কে নিয়ে হলরুমে চলে যায়। হেমা সেখানে জয়িতার বলা সব কিছু বলে দেয়। নীহারিকার কথা অবশ্য হেমা জানে না, কারণ তখন সে বাড়ি চলে গিয়েছিল।
(হেমার সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত কাজ, যদিও তার প্রধান কাজ রজনীকে দেখে রাখা কিন্তু অন্যসব টুকিটাকি কাজও তাকে করতে হয়। মনা দি তিন বেলার রান্নায় কুটনা কাটনা সহ সব এগিয়ে যুগিয়ে সাহায্য করে, ঘর ঝাড়ু মোছা করে, বাসন ধোয়, আর অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজ ও করে। তবে মনা দি সকালে এসে কাজ শেষ করে কোনদিন সন্ধ্যায়ই চলে যায়, আবার কোনোদিন রাত ও হয়। এরা দুজন ছাড়াও রনদের একজন মালি আছে সে সকালে এসে সকালেই চলে যায়, দুজন দারোয়ান আছে দিন রাতের শিফটে, একজন ড্রাইভার আছে। তবে তারা কেউই বাসায় ঢোকে না।)
নীরার বুক মুচড়ে ওঠে। অজিত তখন অফিসের জন্য রেডি হয়ে নাস্তা করতে আসছিল কিন্তু হেনার শেষের কিছু কথা শুনে সে নিজেও হতবাক হয়ে যায়। অজানা আশঙ্কায় দৌড়ে রনের ঘরে ঢুকে দেখে রন নিস্তেজ হয়ে বিছানায় গুটিসুটি মেরে পড়ে আছে। ধীর পায়ে বেডের কাছে এসে রন কে দেখে চমকে ওঠে অজিত, পুরো চোখ মুখ ফুলে লাল হয়ে আছে। অজিত রনের কপালে হাত দিতেই আতকে ওঠে, প্রচণ্ড জ্বর । রন জ্বরের ঘোরে বিড়বিড় করছিল, মা আমায় ক্ষমা করো, আমি খুব খারাপ মা, সব দোষ আমার মা, আমি কেন তোমায় বুঝলাম না। তোমায় আমি কষ্ট দিয়েছি, আমি তোমায় কষ্ট দিয়েছি মা। আমায় ক্ষমা করো মা।
অজিত আর সহ্য করতে না পেরে নিরাকে এসে হাত ধরে টেনে ঝাকিয়ে বলল, নির এসব কি! রনের সাথে কি করেছ তোমরা!
এরপর হেমার দিকে তাকিয়ে বলে, রজনীর কাছে চলে যা, ও উঠে যাবে। এরপর নিরাকে টেনে নিজের স্টাডি রুমে এনে বলে, আমি আজ পর্যন্ত তোমার কোনকিছুতে বাধা দেইনি, নিজের অল্প বয়সের ভুলের জন্য সবসময় তোমার উপেক্ষা সহ্য করে গেছি, আমি জানি তুমি আমার সাথে সহজ হতে না পারলেও আমায় ভালোবাসো নীর, আমি বুঝি। কিন্তু রন! ওর কি আসলেই কোন ভুল ছিল? যা ও জানেই না, সেটা ও কি করে বুঝবে নীর! আর তুমি সত্যি করে বল তুমি কি ওকেও উপেক্ষা করো নি? আমার মত ওকেও দূরে সরিয়ে রাখোনি? 13টা বছর তো ওর সাথেও নির্লিপ্ত আচরণ করেছো নির, ওর সাথেও সহজ হতে পারো নি, অন্যান্য মায়ের মত কবে ওকে আদর শাহন করেছো নির? ও তো সব সময় তোমায় ভালোবেসে তোমার পিছনে ঘুর ঘুর করতো, তোমায় খুশি করার জন্য , তোমার একটু ভালবাসা পাবার জন্য বেস্ট বাচ্চা হয়ে থাকতো। বলো তো একটু নির, কবে ওকে আদর করে জড়িয়ে ধরেছো? কবে ওকে চুমু খেয়েছো? কবে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছো? কবে ওকে ঘুম পড়িয়ে দিয়েছো? বল! তাহলে তোমার পরিবার কেন আমার বাচ্চাকে এভাবে দোষারোপ করলো নির! ওর মধ্যে এখন কি ঝড় বইছে! আমি তোমাদের মা ছেলের মধ্যে বাবা হয়েও আসিনি, আমি চেয়েছি তোমরা নিজেরা নিজেদের বোঝো, অথচ বড় বৌদি কিনা আমার বাচ্চাকে এভাবে দোষ দিতে ওকে অপরাধী করে গেল!
নীরা তখন কেঁদেই যাচ্ছে, বুক পুড়ছে তার। অসহায় কন্ঠে বলে, সব আমার দোষ জিত, আমিই খারাপ, আমি কাউকে কিছুই বোঝাতে পারিনা, বলতে পারিনা। আমার জন্য আমার বাচ্চাটা এভাবে গুমরে কাদছে, আমি কিছুই করতে পারছি না!
অজিত হতাশ নিঃশ্বাস ফেলে, নীরকে আগলে ধরে বলে, নির রনের খুব জ্বর, তো তোমায় খুঁজছে। চলো ওর কাছে।