15-01-2025, 04:43 PM
৯.
অনেক সময় সম্পর্কের দূরত্ব এত বেশি হয়ে যায় যে সব সামনে থাকলেও, সব ধরনের ভুল বোঝাবুঝি ক্লিয়ার হয়ে গেলেও সেই দূরত্ব মিটিয়ে সম্পর্ক আর ঠিক করা যায় না। অভিমানের পারোতে গড়া শক্ত দেয়াল চাইলেই ভেঙে কাছে এগোনো যায় না। জয়িতা সেদিন রন কে আরো অনেক কিছু বলে, সেসব শুনে রনের নিজেকে কেবল অবিবেচক আর স্বার্থপর মনে হয়, লজ্জায় সমাধিতে যেতে ইচ্ছে হয়। এক পর্যায়ে নিজের উপরই রাগ হয়, আগে না বুঝলেও এখন কেন সে নিজে বুঝলো না! নিজের মাকে এত ভুল কি করে বুঝলো! নিজের একমাত্র বোনকে আজ পর্যন্ত কোনো দিন কোলে নেয়া তো দুর ভালো করে তাকিয়ে চেহারাটা পর্যন্ত দেখেনি, তার মাকে কত দিন মা বলে ডাকেনি, মায়ের দিকে কত বছর ফিরেও তাকায়নি! সত্যিই তো তার মা তো তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছে, তার জন্য রাত জেগে বসে থাকে খবর নিতে, সকালেও তাড়াতাড়ি উঠে খাবার রেডি করে রাখে। রুমের দরজা খোলা থাকলে, এসে কত বার উকি দেয়, যে কোন অনুষ্ঠানে তার বাবা আলাদা দিয়ে রাখলেও তো তার মা নিজে থেকে ওর জন্য এটা ওটা কিনে রাখে, কিছু বলার আগেই ওর না সব গুছিয়ে রাখে। কই এসব কিছু তো আগে চোখে দেখেও চোখে পড়েনি, উল্টো ঢং, নাটক মনে হত। অথচ আজ একজন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়াতে নিজেকে কি অসহায় মনে হচ্ছে। তার মাকে সে কতটা কষ্ট দিয়েছে, ভাবতেই অসার লাগছে নিজেকে।
রাত হতে না হতেই মামা মামী চলে যায়। মাসি অবশ্য আরও কিছুক্ষণ ছিল তবে মায়ের কাছেই ছিল, ওর কাছে আসে নি। যাওয়ার আগে ক্ষিপ্ত কন্ঠে বলে গিয়েছিল, এতই যখন মায়ের উপর রাগ,পারলে মেরে ফেল তোর মাকে, মেয়েটার কপালটাই খারাপ! শেষ বয়সে আমার বাপের না ভিমরতি হত আর না তোর মা দুনিয়াতে আসতো। বেশি বয়সের বাচ্চা বিধায় মা ধকল নিতে না পেরে, ওকে সেই 5 বছরের রেখেই ওপারে পারি জমায়। নেহাল দার থেকে 21 বছরের ছোট তোর মা আর আমার থেকে 17 বছরের। নেহাল দার আগেই আমার অনার্স পড়া অবস্থায়ই বিয়ে দিয়ে দেয় মা বাবা, তাই তো মা মারা যাওয়ার পরপরই দাদাকে বিয়ে করিয়ে দেয় 17 বছরের জয়ীকে। কিন্তু জয়ী আসতে না আসতেই বিয়ের 4 মাসের মাথায়ই প্রেগনেন্ট। তোর মাকে আমরা কেউই কখনোই যত্ন নিয়ে দেখিনি, সব সময় নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। জয়ীও তখন ছোটই ছিল তবুও ওর অন্তত বিয়ের বয়স তো হয়েছিল, তাই নিজের যত্ন নেবে নাকি মায়ের? আর এই যে আমি, একান্নবর্তী পরিবারের বউ , তার উপর পড়াশুনা, চাকরি, সংসারকে আগলে রাখা, সব মিলিয়ে আমিও পারিনি। বাবা তো বৃদ্ধ তাকেই যত্ন করতে হয় তখন, মা মারা যাওয়ার আরো ভেঙে পড়েছিল। তাই তো মারা যাওয়ার আগে নিজের দায় মুক্ত হতেই বোধ হয় নিরকে এভাবে, কাকিয়া চাইতেই বিয়ে দিয়ে দেয়, অবশ্য আমাদেরও খুব একটা অমত ছিল না জানিস। আমার নিরটা খুব লক্ষ্মী জানিস, কখনও কাউকে না করতে পারে না, কারো কথার অবাধ্য হতে পারে না। বিয়ে দিয়ে নিজেরা বোঝা হালকা হয়ে তোর মায়ের মাথায় বোঝা চাপিয়ে দিয়েছি। তোর বাপ মায়ের সম্পর্ক কেমন সেটাও নিশ্চয়ই তুই আমার থেকে ভালো জানিস। অজিত আর ওর সম্পর্ক আর কেমন ফাঁপা, উপর থেকে মনে হয় কত সুন্দর, perfect অথচ একজন টাকা দিয়ে দায়িত্ব পালন করছে তো আরেকজন সংসার সামলিয়ে, ভালোবাসা যত্নের বড্ড অভাব ওদের মধ্যে, অবশ্য এ দোষ তোর মায়ের ওই নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে। চাইলেও মেলে দিতে পারেনি, অজিত যে চেষ্টা করেনি তা নয়, তবে নির অজিত কে ভালোবাসেনি কখনও। কিন্তু নির তোকে ভালোবাসে রন, খুব ভালবাসে। আর ছোট বেলায় তোর নিরার জন্য অমন টান দেখে ভাবতাম অবশেষে বোধ হয় ওকে যত্ন নেবার কেউ এসেছে। তোকে দিয়ে আশা ছিল, যে তুই অন্তত তোর মায়ের যত্ন নিবি , ওকে বুঝবি, অথচ তুই!
অনেক সময় সম্পর্কের দূরত্ব এত বেশি হয়ে যায় যে সব সামনে থাকলেও, সব ধরনের ভুল বোঝাবুঝি ক্লিয়ার হয়ে গেলেও সেই দূরত্ব মিটিয়ে সম্পর্ক আর ঠিক করা যায় না। অভিমানের পারোতে গড়া শক্ত দেয়াল চাইলেই ভেঙে কাছে এগোনো যায় না। জয়িতা সেদিন রন কে আরো অনেক কিছু বলে, সেসব শুনে রনের নিজেকে কেবল অবিবেচক আর স্বার্থপর মনে হয়, লজ্জায় সমাধিতে যেতে ইচ্ছে হয়। এক পর্যায়ে নিজের উপরই রাগ হয়, আগে না বুঝলেও এখন কেন সে নিজে বুঝলো না! নিজের মাকে এত ভুল কি করে বুঝলো! নিজের একমাত্র বোনকে আজ পর্যন্ত কোনো দিন কোলে নেয়া তো দুর ভালো করে তাকিয়ে চেহারাটা পর্যন্ত দেখেনি, তার মাকে কত দিন মা বলে ডাকেনি, মায়ের দিকে কত বছর ফিরেও তাকায়নি! সত্যিই তো তার মা তো তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছে, তার জন্য রাত জেগে বসে থাকে খবর নিতে, সকালেও তাড়াতাড়ি উঠে খাবার রেডি করে রাখে। রুমের দরজা খোলা থাকলে, এসে কত বার উকি দেয়, যে কোন অনুষ্ঠানে তার বাবা আলাদা দিয়ে রাখলেও তো তার মা নিজে থেকে ওর জন্য এটা ওটা কিনে রাখে, কিছু বলার আগেই ওর না সব গুছিয়ে রাখে। কই এসব কিছু তো আগে চোখে দেখেও চোখে পড়েনি, উল্টো ঢং, নাটক মনে হত। অথচ আজ একজন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়াতে নিজেকে কি অসহায় মনে হচ্ছে। তার মাকে সে কতটা কষ্ট দিয়েছে, ভাবতেই অসার লাগছে নিজেকে।
রাত হতে না হতেই মামা মামী চলে যায়। মাসি অবশ্য আরও কিছুক্ষণ ছিল তবে মায়ের কাছেই ছিল, ওর কাছে আসে নি। যাওয়ার আগে ক্ষিপ্ত কন্ঠে বলে গিয়েছিল, এতই যখন মায়ের উপর রাগ,পারলে মেরে ফেল তোর মাকে, মেয়েটার কপালটাই খারাপ! শেষ বয়সে আমার বাপের না ভিমরতি হত আর না তোর মা দুনিয়াতে আসতো। বেশি বয়সের বাচ্চা বিধায় মা ধকল নিতে না পেরে, ওকে সেই 5 বছরের রেখেই ওপারে পারি জমায়। নেহাল দার থেকে 21 বছরের ছোট তোর মা আর আমার থেকে 17 বছরের। নেহাল দার আগেই আমার অনার্স পড়া অবস্থায়ই বিয়ে দিয়ে দেয় মা বাবা, তাই তো মা মারা যাওয়ার পরপরই দাদাকে বিয়ে করিয়ে দেয় 17 বছরের জয়ীকে। কিন্তু জয়ী আসতে না আসতেই বিয়ের 4 মাসের মাথায়ই প্রেগনেন্ট। তোর মাকে আমরা কেউই কখনোই যত্ন নিয়ে দেখিনি, সব সময় নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। জয়ীও তখন ছোটই ছিল তবুও ওর অন্তত বিয়ের বয়স তো হয়েছিল, তাই নিজের যত্ন নেবে নাকি মায়ের? আর এই যে আমি, একান্নবর্তী পরিবারের বউ , তার উপর পড়াশুনা, চাকরি, সংসারকে আগলে রাখা, সব মিলিয়ে আমিও পারিনি। বাবা তো বৃদ্ধ তাকেই যত্ন করতে হয় তখন, মা মারা যাওয়ার আরো ভেঙে পড়েছিল। তাই তো মারা যাওয়ার আগে নিজের দায় মুক্ত হতেই বোধ হয় নিরকে এভাবে, কাকিয়া চাইতেই বিয়ে দিয়ে দেয়, অবশ্য আমাদেরও খুব একটা অমত ছিল না জানিস। আমার নিরটা খুব লক্ষ্মী জানিস, কখনও কাউকে না করতে পারে না, কারো কথার অবাধ্য হতে পারে না। বিয়ে দিয়ে নিজেরা বোঝা হালকা হয়ে তোর মায়ের মাথায় বোঝা চাপিয়ে দিয়েছি। তোর বাপ মায়ের সম্পর্ক কেমন সেটাও নিশ্চয়ই তুই আমার থেকে ভালো জানিস। অজিত আর ওর সম্পর্ক আর কেমন ফাঁপা, উপর থেকে মনে হয় কত সুন্দর, perfect অথচ একজন টাকা দিয়ে দায়িত্ব পালন করছে তো আরেকজন সংসার সামলিয়ে, ভালোবাসা যত্নের বড্ড অভাব ওদের মধ্যে, অবশ্য এ দোষ তোর মায়ের ওই নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে। চাইলেও মেলে দিতে পারেনি, অজিত যে চেষ্টা করেনি তা নয়, তবে নির অজিত কে ভালোবাসেনি কখনও। কিন্তু নির তোকে ভালোবাসে রন, খুব ভালবাসে। আর ছোট বেলায় তোর নিরার জন্য অমন টান দেখে ভাবতাম অবশেষে বোধ হয় ওকে যত্ন নেবার কেউ এসেছে। তোকে দিয়ে আশা ছিল, যে তুই অন্তত তোর মায়ের যত্ন নিবি , ওকে বুঝবি, অথচ তুই!