10-01-2025, 09:51 PM
সন্ধেবেলা টেলিফোনটা বেজেই চলছে। অংশু পড়ায় মগ্ন ছিল। কিছুক্ষণ আগেই তার অঙ্কের হোম টিউটর বেরিয়ে গেলেন। কয়েকটা অঙ্ক তারপরেও বসে সলভ করছিল ও'। বাবা ঘুমোচ্ছে। অংশু উঠে গিয়ে ফোনটা ধরল। ওপাশ থেকে মায়ের গলা---বাবু, জলখাবার খেয়েছিস?
---হ্যা। ছোট্ট করে উত্তর দিল অংশু।
---ছবি এসেছিল? রান্না করে দিয়ে গেছে?
---হ্যা। এই খানিক আগে গেল। তুমি কোথায়? কলেজ থেকে ফিরেছ?
---কোথায় আবার? এই সন্ধেবেলা কলেজে থাকবো নাকি! বাড়িতেই আছি। এখানকার কলেজটায় ছাত্র-ছাত্রী বড্ড কম রে। শিক্ষকও আমাকে নিয়ে মাত্র তিনজন। আমি একমাত্র শিক্ষিকা। তোর মাস্টারমশাই এসেছিলেন?
---হ্যা। ছুটি হয়ে গেল।
---তোর বাবা কোথায়?
---ঘুমোচ্ছে।
---ওমা! এই সন্ধেবেলা ঘুমোচ্ছে কেন? শরীর খারাপ নাকি?
---না না। ঠিকই তো আছে। তুমি ভালো আছো তো?
---হুম্ম। তোর দিদা কাল রাতে অসুস্থ হল আবার। কাছাকাছি একটা কোয়াক ডাক্তারও পাওয়া যায় না। তোর বাবাকে বলিস তো, ওই প্রেসার মেশিন কোথায় কিনতে পাওয়া যায়। একটা হাতে কাছে থাকলে সুবিধে।
---দিদা কি ঘুমিয়েছে?
---না। না। এই তো ডালিয়া খাইয়ে এলো। তোর কথা সবসময় বলে বেচারি। একদিন চলে আয় না আমার কাছে? বড্ড মনটা খারাপ করে রে বাবাসোনা আমার?
অংশু চুপ করে রইল। মা পুনরায় বললে---অংশু? কি রে এখনো রাগ হচ্ছে মায়ের ওপর?
---মা আমি তোমার ওপর রাগ করিনি। কারোর ওপর আমার রাগ নেই।
---তাহলে চলে আয় একদিন। সামনে ছুটি পেলেই চলে আয়। শনিবার দিন এলে পরে রবিবার থেকে চলে যাবি। কলেজও করতে পারবি।
মায়ের সাথে কথা বলা শেষ করতে দেখল বাবা ঘুম থেকে সবে উঠেছে। অংশুকে টেলিফোনে দেখে বলল---কে ফোন করেছিল? তোর মা?
---হুম্ম। দিদার শরীরটা আবার খারাপ হয়েছে। জিজ্ঞেস করছিল প্রেসার মেশিন কোথায় কিনতে পাওয়া যায়।
ডাক্তারের স্ত্রী হওয়ায়, সংসারে চিকিৎসা সংক্রান্ত অনেক কিছুই শিখে নিয়েছে সুচিত্রা। জয়ন্ত বললে---কোথায় আবার, যে কোনো ফার্মেসিতে খোঁজ করলে পাবে। অবশ্য গোবিন্দপুরে পাওয়া মুশকিল। জয়ন্ত চা করল নিজের জন্য। দেখল ছবি রান্না করে ঢেকে রেখে গেছে। জয়ন্ত চায়ে চুমুক দিতে লাগলো। খানিক মধ্যেই নিজের মোবাইল ফোনটি বেজে উঠল। ফোনটা র স্ক্রিনে সুচির নাম দেখে চমকে উঠল। ডিভোর্সের পর এই প্রথম সুচি ফোন করেছে। ফোনটা ধরতেই সুচি বললে---ঘুমোচ্ছিলে?
---হুম্ম। বলো।
---গলাটা ভারী ভারী ঠেকছে কেন বলতো?
রাগ হল জয়ন্ত। ইচ্ছে হল বলতে তোমার কি তাতে? বরং তোমার মাতাল নাগরের নেশায় কি রোগ বেঁধেছে তার খোঁজ নিও গিয়ে। কিন্তু সংযত হল সে। বলল---কিছু না। ঘুমোচ্ছিলাম, তাই। বলো, ফোন করলে কেন?
সুচিত্রার গলায় ক্ষণিকের নীরবতা শোনা গেল। তারপর বলল---মায়ের শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। এই ভালো তো আবার অসুস্থ।
---কলকাতা দেখিয়ে নিয়ে যাও তাহলে। কলকাতায় তো ডাক্তারের অভাব নেই।
---আমি বলেছিলাম। কাছে পিঠে একটা প্রেসার মেশিন থাকলে পরে দায়ে দরকারে চেক করে রাখতে পারতাম।
---ফার্মেসিতে খোঁজ করো।
---খোঁজ করলাম, পেলাম না। কলকাতায় যদি...
জয়ন্ত মনে মনে বললে তোমার ঐ মাতাল নাগরকে বলে আনিয়ে নিতে পারছ না? নাকি তার সেটুকু যোগ্যতাও নেই? তবু সুচির মায়ের প্রতি সম্মানার্থে সে বললে---দেখি। পাঠিয়ে দেব না হয় কুরিয়ার করে।
---ধন্যবাদ।
নিজের প্রাক্তন স্বামীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছে সুচিত্রা। ফোনে থাকলেও জয়ন্ত বুঝতে পারলো সুচি এতে বেশ খুশিই হয়েছে।
+++++
---হ্যা। ছোট্ট করে উত্তর দিল অংশু।
---ছবি এসেছিল? রান্না করে দিয়ে গেছে?
---হ্যা। এই খানিক আগে গেল। তুমি কোথায়? কলেজ থেকে ফিরেছ?
---কোথায় আবার? এই সন্ধেবেলা কলেজে থাকবো নাকি! বাড়িতেই আছি। এখানকার কলেজটায় ছাত্র-ছাত্রী বড্ড কম রে। শিক্ষকও আমাকে নিয়ে মাত্র তিনজন। আমি একমাত্র শিক্ষিকা। তোর মাস্টারমশাই এসেছিলেন?
---হ্যা। ছুটি হয়ে গেল।
---তোর বাবা কোথায়?
---ঘুমোচ্ছে।
---ওমা! এই সন্ধেবেলা ঘুমোচ্ছে কেন? শরীর খারাপ নাকি?
---না না। ঠিকই তো আছে। তুমি ভালো আছো তো?
---হুম্ম। তোর দিদা কাল রাতে অসুস্থ হল আবার। কাছাকাছি একটা কোয়াক ডাক্তারও পাওয়া যায় না। তোর বাবাকে বলিস তো, ওই প্রেসার মেশিন কোথায় কিনতে পাওয়া যায়। একটা হাতে কাছে থাকলে সুবিধে।
---দিদা কি ঘুমিয়েছে?
---না। না। এই তো ডালিয়া খাইয়ে এলো। তোর কথা সবসময় বলে বেচারি। একদিন চলে আয় না আমার কাছে? বড্ড মনটা খারাপ করে রে বাবাসোনা আমার?
অংশু চুপ করে রইল। মা পুনরায় বললে---অংশু? কি রে এখনো রাগ হচ্ছে মায়ের ওপর?
---মা আমি তোমার ওপর রাগ করিনি। কারোর ওপর আমার রাগ নেই।
---তাহলে চলে আয় একদিন। সামনে ছুটি পেলেই চলে আয়। শনিবার দিন এলে পরে রবিবার থেকে চলে যাবি। কলেজও করতে পারবি।
মায়ের সাথে কথা বলা শেষ করতে দেখল বাবা ঘুম থেকে সবে উঠেছে। অংশুকে টেলিফোনে দেখে বলল---কে ফোন করেছিল? তোর মা?
---হুম্ম। দিদার শরীরটা আবার খারাপ হয়েছে। জিজ্ঞেস করছিল প্রেসার মেশিন কোথায় কিনতে পাওয়া যায়।
ডাক্তারের স্ত্রী হওয়ায়, সংসারে চিকিৎসা সংক্রান্ত অনেক কিছুই শিখে নিয়েছে সুচিত্রা। জয়ন্ত বললে---কোথায় আবার, যে কোনো ফার্মেসিতে খোঁজ করলে পাবে। অবশ্য গোবিন্দপুরে পাওয়া মুশকিল। জয়ন্ত চা করল নিজের জন্য। দেখল ছবি রান্না করে ঢেকে রেখে গেছে। জয়ন্ত চায়ে চুমুক দিতে লাগলো। খানিক মধ্যেই নিজের মোবাইল ফোনটি বেজে উঠল। ফোনটা র স্ক্রিনে সুচির নাম দেখে চমকে উঠল। ডিভোর্সের পর এই প্রথম সুচি ফোন করেছে। ফোনটা ধরতেই সুচি বললে---ঘুমোচ্ছিলে?
---হুম্ম। বলো।
---গলাটা ভারী ভারী ঠেকছে কেন বলতো?
রাগ হল জয়ন্ত। ইচ্ছে হল বলতে তোমার কি তাতে? বরং তোমার মাতাল নাগরের নেশায় কি রোগ বেঁধেছে তার খোঁজ নিও গিয়ে। কিন্তু সংযত হল সে। বলল---কিছু না। ঘুমোচ্ছিলাম, তাই। বলো, ফোন করলে কেন?
সুচিত্রার গলায় ক্ষণিকের নীরবতা শোনা গেল। তারপর বলল---মায়ের শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। এই ভালো তো আবার অসুস্থ।
---কলকাতা দেখিয়ে নিয়ে যাও তাহলে। কলকাতায় তো ডাক্তারের অভাব নেই।
---আমি বলেছিলাম। কাছে পিঠে একটা প্রেসার মেশিন থাকলে পরে দায়ে দরকারে চেক করে রাখতে পারতাম।
---ফার্মেসিতে খোঁজ করো।
---খোঁজ করলাম, পেলাম না। কলকাতায় যদি...
জয়ন্ত মনে মনে বললে তোমার ঐ মাতাল নাগরকে বলে আনিয়ে নিতে পারছ না? নাকি তার সেটুকু যোগ্যতাও নেই? তবু সুচির মায়ের প্রতি সম্মানার্থে সে বললে---দেখি। পাঠিয়ে দেব না হয় কুরিয়ার করে।
---ধন্যবাদ।
নিজের প্রাক্তন স্বামীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছে সুচিত্রা। ফোনে থাকলেও জয়ন্ত বুঝতে পারলো সুচি এতে বেশ খুশিই হয়েছে।
+++++