17-12-2024, 11:04 PM
পরের পাতায় লেখা, দিন কয়েক পরের বোধ হয়;
গফুর দা'কে আজ বললাম আমি ডিভোর্স নিচ্ছি স্বামীর থেকে। গফুর দা'র কোনো মতামত নেই। গফুর দা কি আমাকে নিবিড় ভাবে একার মত পেতে চায় না? বড্ড রাগ হল। লাট্টুকে দুধ খাওয়ানোর সময় গফুর দা আচমকা আমার কপালে চুমু খেয়ে বলল ''আমাকে বিয়ে করবি সুচিত্রা?"
এই বয়সে বিয়ে সংসার। বড্ড লজ্জা হচ্ছে। শিহরণও হচ্ছে। মায়ের বাড়িতে ট্রান্সফার নিয়ে চলে গেলে এ' শহরের চেনা মুখগুলো থাকবে না। আমার আর গফুর দার সংসারে কোনো বাধা থাকবে না। আমি এই রগচটা বদমেজাজী লোকটাকে ঝুমুরের মত সামলাতে পারবো তো? পারতেই হবে। গফুর দা'কে আমি ভদ্র সভ্য করে তুলবই। না পারলেও গফুর দা যেমন, তেমনটিই আমার। গফুর দা, আমার মধ্যবয়সের ভালোবাসা, নতুন সহায়।
হ্যা, ঠিকই; অংশু-পিউ আমার সব, আমার জীবন ওরাই। মা ওদের সারা জীবন ভালোবাসবে। সবার ঊর্ধ্বে ওরা দুজনেই আমার কাছে সব। ওরা যদি না চায় তাদের মা তার সুখী জীবন না বেছে নিক, তাহলে আমি সিদ্ধান্ত বদল করব।
অংশু থমকে গেল। মা গফুরের প্রতি অনুরক্ত হয়েছে। মায়ের সমস্ত সুখ এখন এই গফুরকে ঘিরে। প্রায়শ্চিত্ত হোক কিংবা ভালোবাসা, মা এখন এই মানুষটাকে নিয়েই বাঁচতে চায়। ছেলে হয়ে তার আর কি করার আছে।
অংশুটা এখনো ছোট। আমার আদরের ছেলে। ও' আরেকটু বড় হলে নিশ্চই বুঝবে ওর মায়েরও আলাদা জীবন আছে। আমার মেয়ে পিউ যথেস্ট ম্যাচিওর। ওরা কেউ আপত্তি করেনি। ছেলেটার আমার মনটা বড্ড খারাপ। বুঝতে পারছি। ছেলেকে ছাড়া আমিও থাকবো কেমন? কিন্তু ছেলের এখন সামনে বিরাট ভবিষ্যত। মা কি সব সময় আগলে রাখতে পারবে। আমি দূর থেকেও আগলে রাখবো আমার ছেলেকে। আমার ছেলে-মেয়ে দুটোর উপরে আমার কাছে কেউ নয়। গফুর দা, ওদের বাবা কেউ নয়। আর কদিন পরেই চলে যাবো মায়ের কাছে। মা অশীতিপর। মাকে কিছুই বুঝতে দেওয়া যাবে না। আমি ডিভোর্স দিয়েছি পিউর বাবাকে, আলি চাচার ছেলে আমার বর, আমি .কে বিয়ে করেছি, এসব শুনলে মা মেনে নিতে পারবে না। আসলে বাগচী বাড়ির অহংকার রয়েছে যে তারও মধ্যে। ছেলেটার কাছ থেকে দূরে যাওয়ার যন্ত্রনা আমাকে বহন করতে হবে। ছেলেটাকে দেখলে বড্ড কষ্ট হয়। অংশু কি মাকে বুঝবে না? মাও যে রক্তমাংসের মানুষ, মায়ের জীবনেরও যে প্রয়োজন আছে ও' এখন বোধ হয় বুঝতে পারছে না।
মা যে তাকে নিয়ে চিন্তিত এটা জেনে মনটা কেঁদে উঠল অংশুর। হোক মা যা ভালো মনে করে করুক। মা যদি এতেই ভালো থাকে, তাতেই তার ভালো। চোখের কোনায় ভাসমান জল মুছে ফেলল সে। ডায়েরিটা বন্ধ করে যথাস্থানে আড়াল করে রাখলো।
বড্ড হালকা হয়েছে হৃদয়। অংশু একা ঘরে একবার চিৎকার করল। জানান দিল সে সব বোঝা নামিয়ে ফেলেছে। বড় হয়ে গেছে সে। অনেক বড়। আর সে কারোর জন্য এক বিন্দু চোখের জল ফেলবে না। কোনো অভিমান নেই তার।
চলবে।
গফুর দা'কে আজ বললাম আমি ডিভোর্স নিচ্ছি স্বামীর থেকে। গফুর দা'র কোনো মতামত নেই। গফুর দা কি আমাকে নিবিড় ভাবে একার মত পেতে চায় না? বড্ড রাগ হল। লাট্টুকে দুধ খাওয়ানোর সময় গফুর দা আচমকা আমার কপালে চুমু খেয়ে বলল ''আমাকে বিয়ে করবি সুচিত্রা?"
এই বয়সে বিয়ে সংসার। বড্ড লজ্জা হচ্ছে। শিহরণও হচ্ছে। মায়ের বাড়িতে ট্রান্সফার নিয়ে চলে গেলে এ' শহরের চেনা মুখগুলো থাকবে না। আমার আর গফুর দার সংসারে কোনো বাধা থাকবে না। আমি এই রগচটা বদমেজাজী লোকটাকে ঝুমুরের মত সামলাতে পারবো তো? পারতেই হবে। গফুর দা'কে আমি ভদ্র সভ্য করে তুলবই। না পারলেও গফুর দা যেমন, তেমনটিই আমার। গফুর দা, আমার মধ্যবয়সের ভালোবাসা, নতুন সহায়।
হ্যা, ঠিকই; অংশু-পিউ আমার সব, আমার জীবন ওরাই। মা ওদের সারা জীবন ভালোবাসবে। সবার ঊর্ধ্বে ওরা দুজনেই আমার কাছে সব। ওরা যদি না চায় তাদের মা তার সুখী জীবন না বেছে নিক, তাহলে আমি সিদ্ধান্ত বদল করব।
অংশু থমকে গেল। মা গফুরের প্রতি অনুরক্ত হয়েছে। মায়ের সমস্ত সুখ এখন এই গফুরকে ঘিরে। প্রায়শ্চিত্ত হোক কিংবা ভালোবাসা, মা এখন এই মানুষটাকে নিয়েই বাঁচতে চায়। ছেলে হয়ে তার আর কি করার আছে।
অংশুটা এখনো ছোট। আমার আদরের ছেলে। ও' আরেকটু বড় হলে নিশ্চই বুঝবে ওর মায়েরও আলাদা জীবন আছে। আমার মেয়ে পিউ যথেস্ট ম্যাচিওর। ওরা কেউ আপত্তি করেনি। ছেলেটার আমার মনটা বড্ড খারাপ। বুঝতে পারছি। ছেলেকে ছাড়া আমিও থাকবো কেমন? কিন্তু ছেলের এখন সামনে বিরাট ভবিষ্যত। মা কি সব সময় আগলে রাখতে পারবে। আমি দূর থেকেও আগলে রাখবো আমার ছেলেকে। আমার ছেলে-মেয়ে দুটোর উপরে আমার কাছে কেউ নয়। গফুর দা, ওদের বাবা কেউ নয়। আর কদিন পরেই চলে যাবো মায়ের কাছে। মা অশীতিপর। মাকে কিছুই বুঝতে দেওয়া যাবে না। আমি ডিভোর্স দিয়েছি পিউর বাবাকে, আলি চাচার ছেলে আমার বর, আমি .কে বিয়ে করেছি, এসব শুনলে মা মেনে নিতে পারবে না। আসলে বাগচী বাড়ির অহংকার রয়েছে যে তারও মধ্যে। ছেলেটার কাছ থেকে দূরে যাওয়ার যন্ত্রনা আমাকে বহন করতে হবে। ছেলেটাকে দেখলে বড্ড কষ্ট হয়। অংশু কি মাকে বুঝবে না? মাও যে রক্তমাংসের মানুষ, মায়ের জীবনেরও যে প্রয়োজন আছে ও' এখন বোধ হয় বুঝতে পারছে না।
মা যে তাকে নিয়ে চিন্তিত এটা জেনে মনটা কেঁদে উঠল অংশুর। হোক মা যা ভালো মনে করে করুক। মা যদি এতেই ভালো থাকে, তাতেই তার ভালো। চোখের কোনায় ভাসমান জল মুছে ফেলল সে। ডায়েরিটা বন্ধ করে যথাস্থানে আড়াল করে রাখলো।
বড্ড হালকা হয়েছে হৃদয়। অংশু একা ঘরে একবার চিৎকার করল। জানান দিল সে সব বোঝা নামিয়ে ফেলেছে। বড় হয়ে গেছে সে। অনেক বড়। আর সে কারোর জন্য এক বিন্দু চোখের জল ফেলবে না। কোনো অভিমান নেই তার।
চলবে।