17-12-2024, 10:56 PM
অংশুকে নামিয়ে দিল জয়ন্ত ঠিক মেইনরোডের বাঁ দিকে। দ্রুত পা চালাচ্ছে অংশু। মায়ের ডায়েরির কথা এ কদিনে ভুলে গেছিল সে। সে ডায়েরি যদি মা ফেলে গিয়ে থাকে নিশ্চিত তাতে কিছু কথা পাওয়া যাবে।
বাড়ির চাবি নিজেই খুলল অংশুমান। খাঁ খাঁ বাড়িতে কেউ নেই। অংশু জামা কাপড় না বদলে দ্রুত প্রবেশ করল মায়ের ঘরে। বিছানা চাদরের আড়ালে ছিল মায়ের ঐ নীল ডায়েরি।
হাতের নাগালে ডায়েরিটা পেয়ে উল্লসিত হয়ে উঠল সে। দ্রুত জামা কাপড় বদলে ডায়েরির পাতা এড়াতে লাগলো। ডট পেনের কালো কালিতে মায়ের হাতের গোটা গোটা সুসজ্জিত অক্ষর।
যেখান থেকে নতুন করে লিখেছে সেখান থেকেই পড়া শুরু করল সে।
ঝুমুর, মৃত মানুষকে হয়ত চিঠি লেখা যায় না। তবু তোকেই লিখছি। আর কাকে বলি মনের কথা। তোকেই তো আমার এই লেখা উৎসর্গীকৃত। পাপের প্রায়শ্চিত করতে গিয়ে আবার কোনো পাপ করলাম কিনা জানি না। তবে এই সময় আমি যে তীব্র যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম সে কালো মেঘ কেটে সূর্যের আলো হাসছে নাকি আরো জটিল হল অন্ধকার বুঝতে পারছি না। সারাজীবন আমি দায়ী থাকবো, তোর মৃত্যুর জন্য, তোর আর গফুর দা'র জীবনের পরিণতির জন্য। তুই তো চলে গেলি, কিন্তু গফুর দা? সে এখনো তোকে ভালবাসে। গফুর দা বদমেজাজী, বরাবরের অসংযত, কঠিন হৃদয়ের মানুষ। কিন্তু সে যে প্রেমের প্রতি এত আনুগত্য ভাবলে অবাক হই। গফুর দা এখনো ঝুমুর, তোকেই ভালোবাসে, এমনকি তার বিয়ে করা বউ, সন্তানের মা হাসিনাকেও নয়। হাসিনা যখন মরবার আগের দিনগুলিতে অভিমান করে বলেছিল, মানুষটাকে ভালোবাসা দিলে নাকি হয়ত বদলে ফেলা যায়, সেদিনই প্রশ্ন করি হাসিনাকে ও' কেন পারলো না তবে। তিনটি সন্তানের জন্ম দিয়েও ও' কেন গফুর দা'র মন হতে ঝুমুর নামক মেয়েটিকে মুছতে পারলো না। মৃদু হেসেছিল হাসিনা। সেই হাসিতে ওর দুঃখ ভারাক্রান্ত যন্ত্রনা ছিল। তার ভাগ্যকে বিড়ম্বনায় ফেলেছে সে। মুমূর্ষু হাসিনাকে যখন আমায় স্বামীর গাড়িতে তোলা হচ্ছিল তখন ও' বলেছিল ওর দুটো বাচ্চার কথা।
আমার স্বামী জয়ন্ত দাশগুপ্ত, যাকে আমি প্রাণপাত করে ভালোবেসেছি, এখনো ভালোবাসি। যে আমার দুই সন্তানের বাবা। সে আমাকে চিট করেছে। বিশ্বাস কর ঝুমুর, আমি ভেবেছিলাম তোর মত আত্মহত্যা করব। কিন্তু আমি এতটা সাহসী নই, তাই পারিনি। ভারী কষ্ট নিয়ে থাকতে থাকতে একসময় মনে হল পাপের ফল মানুষকে একদিন না একদিন ভোগ করতে হয়। তোর আর গফুর দা'র ভালোবাসা, ভবিষ্যৎ আমি নষ্ট করেছি। আজ এতদিন পরে আমি তার শাস্তি পাচ্ছি। আমার ভালোবাসার সংসারও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তোর মৃত্যুর জন্য মাঝেমধ্যে নিজেকে খুনির সমতুল্য মনে হয়। এই অপরাধ আমি কাউকে বলতে পারিনি কোনোদিন। আমার স্বামী, সন্তান কাউকে না। আমি আমার বাবার কথায় তোর চিঠি চেপে না গেলে তোর আর গফুর দা'র সংসার হত। আমি সব কিছু শুধু বাবার কথায়, পারিবারিক সম্মান রক্ষার স্বার্থে নষ্ট করেছি। এই সমাজ, সম্মান এসব আজকাল ঠুনকো মনে হয় ঝুমরি। আমি তো ভালোবেসে, বাড়ির দেখা যোগ্য ডাক্তারকে বিয়ে করেছি। কি পেলাম? এই বয়সে এসে বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া?
হাসিনার মৃত্যু, আমার স্বামীর চিট করা, তারপর মনে করলাম গফুর দাকে সবকিছু সত্য জানাবো। আমার অপরাধ জানিয়ে সেদিনের জন্য ক্ষমা চেয়ে নেব তার কাছে। মানুষটাকে দেখলে দুঃখ হয়, কেমন নোংরা থাকে, নেশা করে, শুনেছি নেশায় রাস্তায় পড়ে থাকে। গফুর দা গরীব কেয়ারটেকারের ছেলে হলেও সে ছিল দুরন্ত দুধর্ষ শক্তিশালী যুবক। সেই গফুর দা'কে এমন দেখে বড্ড কষ্ট হয়।
ক্ষমা চাওয়ার অভিপ্রায়ে গফুর দাকে ডেকে পাঠালাম গত চারদিন আগে। হাসিনার সস্তার মোবাইল ফোনটা গফুর দা'র কাছে আছে। একদিন বললাম গফুর দা ওটা আবার বিক্রি করে মদ খেয়ে নিও না। ওটা তোমার বউয়ের স্মৃতি। গফুর দা হেসেছিল, কোনো উত্তর করেনি। যে বউয়ের প্রতি গফুর দা'র ভালোবাসা নেই, সেই বউয়ের জিনিসের প্রতি মোহ থাকবে এমন তো নয়। সেই ফোনেই ফোন করলাম গফুর দা'কে। এসব কথা বলবার জন্য চেয়েছিলাম বাড়িতে কেউ না থাক। শুধু গফুর দা ছাড়া আর কেউ জানুক আমার অপরাধ, আমি চাইনি।
সকাল দশটা নাগাদ গফুর দা এলো। আমার ছেলে তখন কলেজ বেরিয়েছে সদ্য। গফুর দা'র ছেলে, বিট্টু-লাট্টু, যারা আমার গর্ভজাত না হলেও এখন আমারই সন্তান, শুধু ওরা ছিল ঘরে। গফুর দা এত নোংরা অপরিচ্ছন্ন থাকে, তাছাড়া যেভাবে মদ গিলে আসে, দোতলায় উঠতে দেওয়া যায় না। ও' এলে যেমন আমি নীচের ঘর খুলে দিয়ে বসতে দিই, সেদিনও বসতে দিলাম। বুঝলাম আজ মানুষটা নেশা না করলেও, কাল রাতের মদের গন্ধ যায়নি গা থেকে। প্রথমবার কাছাকাছি গিয়ে গফুর দা'র দুটো হাত চেপে ধরলাম। সব কথা খুলে বললাম গফুর দা'কে। তোর আত্মহত্যা, বাবার কথায় আমার চিঠি চেপে দেওয়া, আমার যা যা সব পাপবোধ। বিশ্বাস কর বড্ড হালকা লাগছিল। আমার স্বামী আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তার যন্ত্রনা নিয়ে এই কথাগুলি বলতে পারাটা আমার কাছে বড্ড স্বস্তির ছিল। কিন্তু এবারেও আমি স্বার্থপরের মত শুধু আমার স্বস্তির কথা ভেবে গেছি। খেয়াল করিনি গফুর দা কতটা যন্ত্রনা পাচ্ছে।
ঝুমরি তুই জানিস, গফুর দা'কে বরাবরই আমার ভয় করত। তুই কি করে এমন একটা রগচটা রাগী ধরনের ছেলের সাথে প্রেম করতিস বিস্মিত হতাম। গফুর দা'র চোখ দুটো দেখে বুঝতে পারছিলাম তার চোখে যেন আগুন সেই পুরোনো রগচটা যুবকটার মত। খুব ছোটবেলায় মায়ের হাতে পড়াশোনা বা সামান্য দুস্টুমির জন্য আমারা দুই বোন মার খেয়েছি। তবে তা অতি সামান্যই। বাড়িতে ছেলেমেয়েদের মারধরের প্রচলন ছিল না। মা যা বকবকিই করতেন। বাবা কখনো মারধর করেননি। পড়াশোনায় ভালো ছিলাম বলে, কলেজেও মাস্টারমশাইরা কখনো মারেননি। পিউর বাবা কখনো হাত তোলেনি আমার গায়ে। কিন্তু গফুর দা প্রচন্ড ক্রুদ্ধতায়, রাগে আমার গালে এভাবে সপাটে চড় মারবে ভাবতেও পারিনি।
গফুর দা লম্বা চওড়া মানুষ। নেশা করে ঘুরে বেড়িয়েও গায়ে ভীষণ জোর, এখনো সেই চেহারা ক্ষয়ে যায়নি। যে চেহারার প্রতি তুই আকর্ষিত হয়ে বলতিস, পুরুষ মানুষ এমন লম্বা চওড়া না হলে কেমন মিনমিনে লাগে। গফুর দা'র মত লোকের সাথে আমার মত মেয়েমানুষ কি পারে! গফুর দা তোকে এখনো ভালোবাসে, আর আমি তোদের জীবন নষ্ট করেছি এই ক্রোধে গফুর দা ঝাঁপিয়ে পড়ল আমার ওপর। ঝুমুর, বড্ড লজ্জা হচ্ছে, রাগ হচ্ছে নিজের ওপর; আমার হয়ত চিৎকার করা উচিত ছিল, উচিত ছিল নিজেকে বাঁচানোর। কিন্তু গফুর দা যেন অন্য এক পুরুষ। প্রায় একঘন্টা ধরে নীচতলার ঘরে বন্দী ছিলাম আমি গফুর দা'র বন্য চাহিদায়। আমার খাটো পাতলা শরীরটাকে নিয়ে গফুর দা যা ইচ্ছে তাই করে গেল। আমি যে ক্রমাগত বাধা দিচ্ছিলাম সেই বাধা খানিক পরে বশীভূত হয়ে গেল। আমি নিজেকেই চিনতে পারছিলাম না ঐ সময়টাতে। গফুর দা'র গায়ের ময়লা, নোংরা গন্ধ তাই অযোগ্যতা, আমার স্বামী-সন্তানদের মুখ, সামাজিক মর্যাদা সবকিছু ভুলে গেলাম আমি। আমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছি গফুর দা'র কাছে, তবু অদ্ভুত ভাবে নষ্ট হওয়ায় আনন্দে আমি যেন গফুর দা'র ইচ্ছের হাতে বন্দী।
বাড়ির চাবি নিজেই খুলল অংশুমান। খাঁ খাঁ বাড়িতে কেউ নেই। অংশু জামা কাপড় না বদলে দ্রুত প্রবেশ করল মায়ের ঘরে। বিছানা চাদরের আড়ালে ছিল মায়ের ঐ নীল ডায়েরি।
হাতের নাগালে ডায়েরিটা পেয়ে উল্লসিত হয়ে উঠল সে। দ্রুত জামা কাপড় বদলে ডায়েরির পাতা এড়াতে লাগলো। ডট পেনের কালো কালিতে মায়ের হাতের গোটা গোটা সুসজ্জিত অক্ষর।
যেখান থেকে নতুন করে লিখেছে সেখান থেকেই পড়া শুরু করল সে।
ঝুমুর, মৃত মানুষকে হয়ত চিঠি লেখা যায় না। তবু তোকেই লিখছি। আর কাকে বলি মনের কথা। তোকেই তো আমার এই লেখা উৎসর্গীকৃত। পাপের প্রায়শ্চিত করতে গিয়ে আবার কোনো পাপ করলাম কিনা জানি না। তবে এই সময় আমি যে তীব্র যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম সে কালো মেঘ কেটে সূর্যের আলো হাসছে নাকি আরো জটিল হল অন্ধকার বুঝতে পারছি না। সারাজীবন আমি দায়ী থাকবো, তোর মৃত্যুর জন্য, তোর আর গফুর দা'র জীবনের পরিণতির জন্য। তুই তো চলে গেলি, কিন্তু গফুর দা? সে এখনো তোকে ভালবাসে। গফুর দা বদমেজাজী, বরাবরের অসংযত, কঠিন হৃদয়ের মানুষ। কিন্তু সে যে প্রেমের প্রতি এত আনুগত্য ভাবলে অবাক হই। গফুর দা এখনো ঝুমুর, তোকেই ভালোবাসে, এমনকি তার বিয়ে করা বউ, সন্তানের মা হাসিনাকেও নয়। হাসিনা যখন মরবার আগের দিনগুলিতে অভিমান করে বলেছিল, মানুষটাকে ভালোবাসা দিলে নাকি হয়ত বদলে ফেলা যায়, সেদিনই প্রশ্ন করি হাসিনাকে ও' কেন পারলো না তবে। তিনটি সন্তানের জন্ম দিয়েও ও' কেন গফুর দা'র মন হতে ঝুমুর নামক মেয়েটিকে মুছতে পারলো না। মৃদু হেসেছিল হাসিনা। সেই হাসিতে ওর দুঃখ ভারাক্রান্ত যন্ত্রনা ছিল। তার ভাগ্যকে বিড়ম্বনায় ফেলেছে সে। মুমূর্ষু হাসিনাকে যখন আমায় স্বামীর গাড়িতে তোলা হচ্ছিল তখন ও' বলেছিল ওর দুটো বাচ্চার কথা।
আমার স্বামী জয়ন্ত দাশগুপ্ত, যাকে আমি প্রাণপাত করে ভালোবেসেছি, এখনো ভালোবাসি। যে আমার দুই সন্তানের বাবা। সে আমাকে চিট করেছে। বিশ্বাস কর ঝুমুর, আমি ভেবেছিলাম তোর মত আত্মহত্যা করব। কিন্তু আমি এতটা সাহসী নই, তাই পারিনি। ভারী কষ্ট নিয়ে থাকতে থাকতে একসময় মনে হল পাপের ফল মানুষকে একদিন না একদিন ভোগ করতে হয়। তোর আর গফুর দা'র ভালোবাসা, ভবিষ্যৎ আমি নষ্ট করেছি। আজ এতদিন পরে আমি তার শাস্তি পাচ্ছি। আমার ভালোবাসার সংসারও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তোর মৃত্যুর জন্য মাঝেমধ্যে নিজেকে খুনির সমতুল্য মনে হয়। এই অপরাধ আমি কাউকে বলতে পারিনি কোনোদিন। আমার স্বামী, সন্তান কাউকে না। আমি আমার বাবার কথায় তোর চিঠি চেপে না গেলে তোর আর গফুর দা'র সংসার হত। আমি সব কিছু শুধু বাবার কথায়, পারিবারিক সম্মান রক্ষার স্বার্থে নষ্ট করেছি। এই সমাজ, সম্মান এসব আজকাল ঠুনকো মনে হয় ঝুমরি। আমি তো ভালোবেসে, বাড়ির দেখা যোগ্য ডাক্তারকে বিয়ে করেছি। কি পেলাম? এই বয়সে এসে বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া?
হাসিনার মৃত্যু, আমার স্বামীর চিট করা, তারপর মনে করলাম গফুর দাকে সবকিছু সত্য জানাবো। আমার অপরাধ জানিয়ে সেদিনের জন্য ক্ষমা চেয়ে নেব তার কাছে। মানুষটাকে দেখলে দুঃখ হয়, কেমন নোংরা থাকে, নেশা করে, শুনেছি নেশায় রাস্তায় পড়ে থাকে। গফুর দা গরীব কেয়ারটেকারের ছেলে হলেও সে ছিল দুরন্ত দুধর্ষ শক্তিশালী যুবক। সেই গফুর দা'কে এমন দেখে বড্ড কষ্ট হয়।
ক্ষমা চাওয়ার অভিপ্রায়ে গফুর দাকে ডেকে পাঠালাম গত চারদিন আগে। হাসিনার সস্তার মোবাইল ফোনটা গফুর দা'র কাছে আছে। একদিন বললাম গফুর দা ওটা আবার বিক্রি করে মদ খেয়ে নিও না। ওটা তোমার বউয়ের স্মৃতি। গফুর দা হেসেছিল, কোনো উত্তর করেনি। যে বউয়ের প্রতি গফুর দা'র ভালোবাসা নেই, সেই বউয়ের জিনিসের প্রতি মোহ থাকবে এমন তো নয়। সেই ফোনেই ফোন করলাম গফুর দা'কে। এসব কথা বলবার জন্য চেয়েছিলাম বাড়িতে কেউ না থাক। শুধু গফুর দা ছাড়া আর কেউ জানুক আমার অপরাধ, আমি চাইনি।
সকাল দশটা নাগাদ গফুর দা এলো। আমার ছেলে তখন কলেজ বেরিয়েছে সদ্য। গফুর দা'র ছেলে, বিট্টু-লাট্টু, যারা আমার গর্ভজাত না হলেও এখন আমারই সন্তান, শুধু ওরা ছিল ঘরে। গফুর দা এত নোংরা অপরিচ্ছন্ন থাকে, তাছাড়া যেভাবে মদ গিলে আসে, দোতলায় উঠতে দেওয়া যায় না। ও' এলে যেমন আমি নীচের ঘর খুলে দিয়ে বসতে দিই, সেদিনও বসতে দিলাম। বুঝলাম আজ মানুষটা নেশা না করলেও, কাল রাতের মদের গন্ধ যায়নি গা থেকে। প্রথমবার কাছাকাছি গিয়ে গফুর দা'র দুটো হাত চেপে ধরলাম। সব কথা খুলে বললাম গফুর দা'কে। তোর আত্মহত্যা, বাবার কথায় আমার চিঠি চেপে দেওয়া, আমার যা যা সব পাপবোধ। বিশ্বাস কর বড্ড হালকা লাগছিল। আমার স্বামী আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তার যন্ত্রনা নিয়ে এই কথাগুলি বলতে পারাটা আমার কাছে বড্ড স্বস্তির ছিল। কিন্তু এবারেও আমি স্বার্থপরের মত শুধু আমার স্বস্তির কথা ভেবে গেছি। খেয়াল করিনি গফুর দা কতটা যন্ত্রনা পাচ্ছে।
ঝুমরি তুই জানিস, গফুর দা'কে বরাবরই আমার ভয় করত। তুই কি করে এমন একটা রগচটা রাগী ধরনের ছেলের সাথে প্রেম করতিস বিস্মিত হতাম। গফুর দা'র চোখ দুটো দেখে বুঝতে পারছিলাম তার চোখে যেন আগুন সেই পুরোনো রগচটা যুবকটার মত। খুব ছোটবেলায় মায়ের হাতে পড়াশোনা বা সামান্য দুস্টুমির জন্য আমারা দুই বোন মার খেয়েছি। তবে তা অতি সামান্যই। বাড়িতে ছেলেমেয়েদের মারধরের প্রচলন ছিল না। মা যা বকবকিই করতেন। বাবা কখনো মারধর করেননি। পড়াশোনায় ভালো ছিলাম বলে, কলেজেও মাস্টারমশাইরা কখনো মারেননি। পিউর বাবা কখনো হাত তোলেনি আমার গায়ে। কিন্তু গফুর দা প্রচন্ড ক্রুদ্ধতায়, রাগে আমার গালে এভাবে সপাটে চড় মারবে ভাবতেও পারিনি।
গফুর দা লম্বা চওড়া মানুষ। নেশা করে ঘুরে বেড়িয়েও গায়ে ভীষণ জোর, এখনো সেই চেহারা ক্ষয়ে যায়নি। যে চেহারার প্রতি তুই আকর্ষিত হয়ে বলতিস, পুরুষ মানুষ এমন লম্বা চওড়া না হলে কেমন মিনমিনে লাগে। গফুর দা'র মত লোকের সাথে আমার মত মেয়েমানুষ কি পারে! গফুর দা তোকে এখনো ভালোবাসে, আর আমি তোদের জীবন নষ্ট করেছি এই ক্রোধে গফুর দা ঝাঁপিয়ে পড়ল আমার ওপর। ঝুমুর, বড্ড লজ্জা হচ্ছে, রাগ হচ্ছে নিজের ওপর; আমার হয়ত চিৎকার করা উচিত ছিল, উচিত ছিল নিজেকে বাঁচানোর। কিন্তু গফুর দা যেন অন্য এক পুরুষ। প্রায় একঘন্টা ধরে নীচতলার ঘরে বন্দী ছিলাম আমি গফুর দা'র বন্য চাহিদায়। আমার খাটো পাতলা শরীরটাকে নিয়ে গফুর দা যা ইচ্ছে তাই করে গেল। আমি যে ক্রমাগত বাধা দিচ্ছিলাম সেই বাধা খানিক পরে বশীভূত হয়ে গেল। আমি নিজেকেই চিনতে পারছিলাম না ঐ সময়টাতে। গফুর দা'র গায়ের ময়লা, নোংরা গন্ধ তাই অযোগ্যতা, আমার স্বামী-সন্তানদের মুখ, সামাজিক মর্যাদা সবকিছু ভুলে গেলাম আমি। আমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছি গফুর দা'র কাছে, তবু অদ্ভুত ভাবে নষ্ট হওয়ায় আনন্দে আমি যেন গফুর দা'র ইচ্ছের হাতে বন্দী।