13-12-2024, 01:22 AM
(This post was last modified: 16-12-2024, 10:45 AM by শূন্যপুরাণ. Edited 6 times in total. Edited 6 times in total.)
সাজ্জাদ চোখ বন্ধ করে শুয়ে থেকে ধাতস্থ হওয়ার চেষ্টা করলো। মনে মনে আশা করেছিলো জেরিন ওর বুকের উপরে এসে শোবে। মেয়েটা সত্যিই বলেছিল। জেরিনের সাথে সেক্স করা মানে রাসেল শিকদারের মেয়ের সাথে সেক্স করা। আজ সে রাসেলের মুখোমুখি হতে পেরেছে। রাসেল শিকদারকে আর ভয় পাওয়ার কিছু নেই। রাসেল যেমন ওর মায়ের যোনী দখল করেছিলো। আজ সে রাসেল শিকদারের মেয়ের যোনী দখল করে নিয়েছে।
বেশ কিছুক্ষণ পেরিয়ে গেলেও জেরিন ওর কাছে এলো না।। খটকা লাগলো সাজ্জাদের। ওয়াশরুমে গেল কী? কোন একটা শব্দের কারণে সাজ্জাদ চোখ খুলতে বাধ্য হলো। উঠে বসলো বিছানায়। টেবিলের উপরে একটা ল্যাপটপে চলমান ভিডিও থেকে শব্দ আসছে। জেরিন ওর দিকে পিঠ দিয়ে চুপচাপ বসে আছে৷ সাজ্জাদ অবাক বিস্ময়ে দেখলো ল্যাপটপে চলমান ভিডিওতে একটা ঘর দেখা যাচ্ছে, ঠিক এই ঘরের মতই। ক্যামেরার ফোকাস মূলত ঘরের বিছানায়। ভিডিওর কোয়ালিটি নব্বই দশকের হ্যান্ডিক্যামগুলোতে তোলা ভিডিওর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
বিছানায় একজন নারীকে দেখা যাচ্ছে — গোলাপী রঙের শাড়ি পরা, এক মাথা খোলা চুল, মেয়েটা বিছানায় বসে সামনে দাঁড়ানো ছেলেটিকে অনুনয় করে বলছে,
""প্লিজ রাসেল ভাই। এবার কিন্তু বাড়াবাড়ি হচ্ছে।"
"বাড়াবাড়ির কী হলো? তুমি আমাকে বিশ্বাস করো না?"
"বিশ্বাস করবো না কেন?"
"না শায়লা। বিয়ের আগে যেমনটা আপন ভাবতে এখন আর তেমন ভাবো না।"
সাজ্জাদের মাথা ঘুরে ওঠে। এই দৃশ্য, এই কথাগুলো তার পূর্বপরিচিত। সে খুব ভালো করেই জানে এই লোকটা বিশ্বাসের নামে এই মেয়েটির সঙ্গে কী করতে যাচ্ছে। কারণ এই মেয়েটির নাম শায়লা চৌধূরী, আর সামনের লোকটি রাসেল শিকদার। সাজ্জাদ জোর গলায় জেরিনকে বলে, "এটা কী? কোথায় পেলে তুমি এই ভিডিও? বন্ধ করো প্লিজ।"
জেরিন কোন কথা বলে না, কেবল আঙ্গুল মুখে চেপে চুপ থাকার ইশারা করে। সাজ্জাদ জানে জেরিন চাইলে ওকে এই ভিডিও ইচ্ছে না করলেও দেখতে হবে। কিন্তু এই ভিডিও মেয়েটি পেলো কোথায়? এরকম ভিডিও যে আছে, এটাই তো সাজ্জাদ জানতো না। আরো অনেক প্রশ্ন ওর মাথায় ঘুরপাক খায়। এগুলোর উত্তর জানা প্রয়োজন।
ল্যাপটপে চলমান ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাসেল একটা পর্যায়ে ওর মায়ের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে খেতে বিছানায় গড়াগড়ি খায়, শরীর থেকে শাড়ি খুলে ছুঁড়ে ফেলে মেঝেতে। ওর মা রাসেলকে ধাক্কা দিয়ে বিছানা থেকে নেমে যায়, শাড়ি উঠাতে গেলেও ব্যর্থ হয়, রাসেল আবারো তাকে ধরে দেয়ালে চেপে ধরে। এই ঘটনাপ্রবাহগুলো সাজ্জাদের অজানা নয়, তবে একটা ব্যাপার স্মৃতির সঙ্গে মিলছে না, যতই ভিডিও সামনে যাচ্ছে ততই তার কাছে সেই অমিল স্পষ্ট হয়ে উঠছে। পরবর্তী বেশ সময় ধরে জেরিন সাজ্জাদকে আরো কিছু ভিডিও দেখায় — শায়লার সঙ্গে রাসেলের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও।
"I don't understand. I don't understand at all." ভিডিওগুলো দেখে মাথা চেপে ধরে সাজ্জাদ বিড়বিড় করে বলে।
"আমি জানি তুমি কী বুঝতে পারছো না। তোমার এতদিনের ধারণা ভুল ছিলো।" জেরিন ওর দিকে ফিরে বলে।
"হ্যাঁ। রাসেল ও আমার মায়ের মিলন মোটেও পারস্পরিক সম্মতিতে হয়নি। রাসেল শিকদার তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে এসব করতে বাধ্য করেছিলো। একবার নয়। একাধিকবার। এবং সবকিছুর ভিডিও প্রমাণ রেখে দিয়েছিলো।"
"হ্যাঁ। সে এই ভিডিওগুলো ব্যবহার করে তোমার বাবার কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। সে কখনোই মাকে ভালোবাসেনি। তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে তার শরীরটা নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে কেবল নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য। She was a victim too."
সাজ্জাদ মাথা নীচু করে বসে থাকে। "তুমি এই ভিডিওগুলো কোথায় পেলে?" একসময় জিজ্ঞেস করে সে।
জেরিন সহসা উত্তর দেয় না। বিছানা ছেড়ে উঠে গিয়ে দাঁড়ায় জানালার কাছে। অস্তায়মান সূর্যের আলো এসে পড়ে জেরিনের নগ্ন শরীরে। পেছন থেকে এই অপরূপ নারীর নগ্নমূর্তি দেখে সাজ্জাদের মনে হয় ঈশ্বর নিশ্চয়ই একজন শিল্পী। কারণ একজন শিল্পীর পক্ষেই এইরকম মানুষ গড়া সম্ভব। জেরিন ওর দিকে ফিরে তাকায়, সাজ্জাদের বুকটা ধক করে ওঠে। জেরিনকে প্রথমদিন দেখার পর আর ফটো এলব্যামে শায়লার তরুণী বয়সের ছবিগুলো দেখার সময়ে একটাই চিন্তা তার মনে ঘুরপাক খেয়েছিল। এরপর জেরিনের সঙ্গে ঘুরে বেড়াবার সময়ে বারবার এই ব্যাপারটি মনে এসেছে। আজকে ভিডিওতে পুরনো শায়লাকে দেখে, জেরিনকে নতুন করে দেখলো সে এবং তার কাছে অনেকটা পরিষ্কার হয়ে গেল সেই রহস্য।
"তোমার কী মনে হয় এই ভিডিওগুলো কোথায় পেয়েছি আমি? আমি কে?" জেরিন পালটা প্রশ্ন করলো ওকে।
"তুমি রাসেল শিকদারের মেয়ে।"
"আর?"
"তোমার মা শায়লা চৌধূরী। তুমি তাদের অবৈধ সন্তান। আমার মায়ের পেটে যেই দ্বিতীয় সন্তান এসেছিলো সেটি তুমি।"
জেরিন হাসলো শুধু। অর্থাৎ সাজ্জাদের অনুমান সঠিক।
"কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না ভিডিওগুলো কোথায় পেলে তুমি?" সাজ্জাদ জিজ্ঞেস করলো।
হঠাৎ জেরিন উদাসীন হয়ে তাকিয়ে রইলো জানালার বাইরে। তারপর দূর থেকে ভেসে আসা কণ্ঠে বললো, "রাসেল শিকদার আমার জন্মদাতা হতে পারে, কিন্তু সে আমার বাবা নয়। সে একটা নরপিশাচ। নিজের স্বার্থের জন্য, নিজের সুখের সব করতে পারে। ও শায়লাকে নিজের স্বার্থে পরিকল্পনা করে প্রেননেন্ট করে। পরে তোমার বাবাকে চিঠি আর ভিডিও এভিডেন্স পাঠিয়ে ব্লাকমেইল করে। এটা যখন করে তখন অলরেডি শায়লা কয়েক মাসের প্রেগনেন্ট। শায়লার ভুল ছিলো যে, সে বাচ্চা নষ্ট করার মতো সাহস করতে পারেনি। এটাও আশা করেছিলো হয়তো রাসেল তাকে মেনে নেবে। তাহলে আর বাচ্চা নষ্ট করতে হবে না। কিন্তু সে তো জানতো না রাসেল কখনোই তাকে ভালোবাসেনি। রাসেলের কাছ থেকে প্রমাণ পাওয়ার পরে তোমার বাবা আইজুদ্দিন সব দাবি পূরণ করে। তিনিও শায়লার পেটের বাচ্চা নষ্ট করতে পারেননি। আবার শায়লাকেও ত্যাগ করতে পারতেন না কারণ শ্বশুরের কাছে তিনি বাঁধা। রাজকন্যাকে ত্যাগ করলে রাজত্বও হারাতে হবে। তবে নিজের ঘরে কাকের বাচ্চা মানুষ করার মতো উদারতা তার ছিলো না। তাই সমাধান হিসেবে শায়লাকে পাঠিয়ে দেন ভারতে। সেখানেই ডেলিভারি হওয়া পর্যন্ত পরিচিত সবার থেকে বউকে আলাদা করে রাখেন। একসময় জন্ম হয় বাচ্চাটির। আইজুদ্দিন সেখানে লোক ঠিক করে রেখেছিলো যাতে জন্মাবার সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চাটিকে কেড়ে নেওয়া হয় শায়লার কাছ থেকে। লোকগুলো তার নির্দেশমত তাই করে। ওরা বাচ্চাটিকে নিয়ে যায় মুম্বাইয়ের এক বেশ্যালয়ে বিক্রি করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু আইজুদ্দিন বুঝতে পারেনি যে রাসেল শিকদারের পরিকল্পনা তখনো শেষ হয়নি। রাসেল আগে থেকেই নজর রাখছিলো সবকিছুর ওপর, সময়মতো লোকগুলোর কাছ থেকে বাচ্চাটিকে কিনে নেয় সে৷ চলে আসে আমেরিকায়, নাম রাখে জেরিন। আর সেই মেয়েটিই হলাম আমি।"
"কিন্তু ভিডিওগুলো..."
"আইজুদ্দিন শর্ত দিয়েছিলো টাকার বিনিময়ে সব ভিডিও দিয়ে দিতে হবে যাতে সেগুলো নষ্ট করে ফেলা যায়। রাসেল দিয়েছিলো ঠিকই, তবে একটা করে কপি নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলো। কারণ এটা তার ফ্যান্টাসি। সে শুধু শায়লাকে নষ্ট করেনি। আরো অনেক মেয়েকে নিজের বিছানায় নিয়েছে। তাদের টিস্যুর মত ব্যবহার করে ছুঁড়ে ফেলতো সে। তার আগে সেই মেয়েদের অন্তরঙ্গ ভিডিও, ছবি নিজের পার্সোনাল কালেকশনে রেখে দিতো। এমনকি সে নিজের মেয়েকেও..." সাজ্জাদ চমকে ওঠে শেষের কথা শুনে।
"কী বললে?"
"হ্যাঁ। প্রথমবার যখন তার লালসার স্বীকার হই তখন আমি বয়োঃসন্ধিতেও পৌছাইনি। আমার সাথে কী হচ্ছে সেটা বোঝার মতো জ্ঞানও আমার ছিলো না। তার অন্যান্য শিকার ছিলো সাময়িক, জামা পাল্টানোর মতো তাদের পাল্টাতো সে। কিন্তু আমি ছিলাম তার পার্মানেন্ট প্লেজার টুল। Yes, I was a tool to him. Or I should say I was just a fucking sex toy to that perverted demon.'' একটু দম নিলো জেরিন। "আমাকে কিনে নেওয়ার পেছনে এই লোকটার অন্য উদ্দেশ্য ছিলো। সে ভেবেছিলো আমাকে ব্যবহার করে ভবিষ্যতে আইজুদ্দিনের কাছ থেকে আরো সুবিধা আদায় করবে। সঠিক সময়ে আমাকে জনসম্মুখে হাজির করে সম্পত্তির ভাগ আদায় করে নেবে। সে উদ্দেশ্যেই আমাকে বড় করছিলো। কিন্তু বনের হিংস্র পশু কতদিন আর নিজের প্রবৃত্তিকে আটকাতে পারে! রাসেলও পারেনি আটকাতে।"
সাজ্জাদ নিরব হয়ে জেরিনের আত্মকথা শুনতে থাকে। এই মেয়েটি এতদিন ওর কাছ থেকে এতসব লুকিয়ে রেখেছিলো।
"বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমি বুঝতে পারি রাসেলের আসল চেহারা। সে আমাকে ঘরে আটকে রাখতে চাইতো। কিন্তু আমেরিকায় থাকার কারণে একটা সুবিধা ছিলো ঐ লোকটা চাইলেও আমাকে বাইরের পৃথিবী থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে রাখতে পারেনি। ইন্টারনেটে নিজে নিজে পড়াশোনা করে অনেক কিছু শিখে ফেলি আমি। আমার ব্যাপারে রাসেলের একটা বড় ভুল ধারণা ছিলো। সে ভেবেছিলো আমি শায়লার মতোই বশ্যতা স্বীকার করে নেবো। কিন্তু না। যেদিন থেকে বুঝেছিলাম রাসেল একটা নরপিশাচ সেদিন থেকেই আমি সিদ্ধান্ত নিই, I will be free from this hell as soon as possible. অতি বুদ্ধিমান শয়তানের একটা বড় দুর্বলতা হলো এরা নিজেকে এতটাই বুদ্ধিমান মনে করে অনেক সহজ প্লান এরা ধরতে পারে না। আমি ওর নাকের ডগায় বসে নিজেকে ধীরে ধীরে গড়ে তুললাম। প্রথমে এক্সারসাইজ করে নিজেকে ফিট করতে লাগলাম, আর ও ভেবেছিলো আমি ওর মনোরঞ্জনের জন্য এমন করছি। অনলাইনে ক্লাসের মাধ্যমে কলেজ শেষ করে সাইকোলজিতে পড়াশোনা করতে লাগলাম যাতে ওর মতো ক্রিমিন্যালদের সাইকোলজি বুঝতে পারি। এছাড়া ফ্রি ল্যান্সিং এর কাজ করে একটা ভালো এমাউন্টের ডলার জমিয়ে ১৮ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার পরে গোপনে একটা রিভলভার কিনে আনলাম৷ তুমি সেদিন অবাক হয়েছিলে না আমার কাছে বন্দুক এলো কী করে? আমি কীভাবে এত দক্ষভাবে গুলি করলাম? Now you have your answer. I have learnt to shoot to defend myself. So that nobody in this world can put a finger on me. আমি সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম এবং একদিন সেটা পেয়েও গেলাম। অতি সাবধানী শয়তানও ভুল করে। রাসেলের সেই ভুলটা ছিলো আমাকে আমার মায়ের মতোই দুর্বল মনে করা।"
"কী করেছিলে তুমি?"
জেরিন রহস্যময় ভাবে হাসে। বলে, ''দেখতে চাও? বেশ।" সে হেঁটে ল্যাপটপের কাছে এসে কোন একটি ফোল্ডার থেকে আরেকটি ভিডিও চালু করলো। কৌতূহলী সাজ্জাদ দেখতে লাগলো এক বৃদ্ধ রাসেল শিকদারকে, কাঁচা পাকা মাথা ও বুকের চুল, মুখের চামড়ায় ভাঁজ পড়ে গেছে, তবে শরীর এখনো মেদহীন ও ফিট, প্রথম দেখাতেই তাকে চিন্তে বিন্দুমাত্রা অসুবিধা হলো না৷ বক্সার আন্ডারওয়ার পরে রাসেল শিকদার বিছানায় শুয়ে আছে৷ তার হাত দুটো বিছানার সাথে দুটো হ্যান্ডকাফ দিয়ে বাঁধা, চোখে কালো পট্টি, কিন্তু তাকে দেখে মনে হচ্ছে সে বেশ খুশি খুশি। এই রহস্য কয়েক সেকেন্ড পরেই খোলাসা হলো। স্ক্রিনে জেরিনের আবির্ভাব হলো, ওর পরনে কালো রঙের চামড়ার Thong। সাজ্জাদের বুঝতে অসুবিধা হলো না কী হচ্ছে। ওর ভিতরে অস্বস্তি কাজ করতে লাগলো। কিন্তু ও যা ভেবেছিলো সেরকম কিছুই হলো না। জেরিনের হাতে তরলভর্তি একটি সিরিঞ্জ। সে রাসেলের গলার কাছে ক্যারোটিড ধমনীতে সম্পূর্ণ তরল ঢুকিয়ে দিলো। হাত, চোখ বাঁধা রাসেল কিছুই করতে পারলো না, এরপর ভিডিওটা জাম্প করে চলে গেলো অনেকটা সময় পরে, রাসেলের হাতের বাঁধন তখন খুলে দেওয়া হয়েছে, সে শ্বাস নিচ্ছে কিন্তু জড় পদার্থের মতো বিছানায় হেলান দিয়ে বসে আছে। জেরিন তার পাশে বসে ওর হাতে একটা রিভলভার ধরিয়ে দিয়ে মাথায় তাক করালো। ট্রিগারে রাসেলের আঙ্গুলের উপর জেরিনের আঙ্গুল চেপে বসলো — গুলির শব্দ — রাসেলের মাথার অন্য পাশ থেকে রক্ত আর মগজের টুকরা ছিটকে বেরিয়ে বিছানা, দেওয়ালে গিয়ে পড়লো, এলিয়ে পড়লো তার শরীর। অর্থাৎ জেরিন রাসেলের শরীরে ইনজেকশন দিয়ে অবশ করে আত্মহত্যার ঘটনা সাজিয়ে ছিল।
জেরিন ঘুরে তাকালো সাজ্জাদের দিকে, ওর একেবারে কাছে এসে বসলো বিছানায়৷ দুজনের কারো শরীরে কোন কাপড় নেই। সাজ্জাদ চেষ্টা করছে জেরিনের শরীরের দিকে না তাকাতে।
"তোমার জীবনটা অনেক কষ্টের ভিতর দিয়ে গেছে জেরিন। You don't deserve that life. আইজুদ্দিন, শায়লা, রাসেল কেউই তোমার কথা ভাবেনি। আমি তোমার বড় ভাই হিসেবে কিছুই করতে পারিনি। আমাকে ক্ষমা করে দিও।"
"না না তুমি ক্ষমা চাচ্ছো কেন? তোমার প্রতি আমার কোন রাগ নেই।" জেরিন ওর মুখটা দুহাতের নরম তালুতে নিলো। উষ্ণ, নরম এক জোড়া হাত। সাজ্জাদ জেরিনের চোখে চোখ রাখলো। জেরিনের চোখে এই প্রথম জল দেখতে পেল সে।
"তুমি ক্ষমা চাচ্ছো কেন! আমি আমার মায়ের পরিচয় খুঁজতে গিয়ে তোমার কথা জানতে পারি। আমি ঢাকায় এসেছিলাম শায়লা চৌধূরীর সাথে দেখা করতে। কিন্তু তোমার কথা জানার পর আমি খুব করে চাচ্ছিলাম তোমার সাথে দেখা হোক। তারপর যখন সত্যিই আমাদের দেখা হলো, আমি কিছুটা সময় নিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম ফিরে যাবো আমেরিকায়। কিন্ত আবার সিদ্ধান্ত পাল্টালাম। ভাবলাম ঢাকায় ঘোরার অজুহাতে তোমাকে আরেকটু কাছ থেকে দেখবো। এভাবে তোমার কাছাকাছি এসে বুঝেছিলাম তুমিও আমার মতোই একজন। We are on the same boat."
"কিন্তু কিন্তু জেরিন তুমি আমার সত্যিকারের পরিচয় জানার পরেও কেন এভাবে কাছে আসলে? After all we are siblings. আজকে আমাদের ভিতরে যা হলো...'' ব্যাকুল হয়ে বললো সাজ্জাদ।
"না। ভাইয়া। আমাদের ভিতরে যা হয়েছে এটাই প্রি ডিস্টাইন্ড ছিলো। আমি তো আমেরিকায় চলে যেতে পারতাম। ঐদিন আমাদের দেখা নাও হতে পারতো। আমাদের মনের ক্ষত কেবল একে অপরের পক্ষেই সারিয়ে তোলা সম্ভব। আমি জানি তুমি একমাত্র আমার কাছেই শান্তি পাও। আমিও পাই তোমার বুকে।''
"কিন্তু জেরিন আম...''
"শিসসসস...'' জেরিন ওর ঠোঁটের উপরে আঙ্গুল দিয়ে চুপ করিয়ে দেয়। ''আর কোন কথা নয়। আমরা আর পুরনো স্মৃতি নিয়ে বাঁচতে চাই না। এই হোটেল রুমে তোমাকে এনেছি কেন জানো? যাতে এখানে আমরা দুজন নতুন স্মৃতি তৈরি করতে পারি। আমরা আমাদের মতো জীবন গড়ে নেবো।"
জেরিন ওর কোলের উপরে উঠে দু দিকে পা দিয়ে বসে এক হাত দিয়ে বিচির থলিসহ নুয়ে পড়া লিঙ্গটাকে মুঠো করে ধরে, ছোট্ট একটা পাখিকে যেভাবে মানুষ হাতে নেয়, অন্য হাত দিয়ে সাজ্জাদের মাথার পেছনের চুল ধরে মুখটাকে টেনে আনে নিজের দুধের কাছে, শিশুর মুখে মায়েরা যেভাবে স্তনদান করে সেভাবে। বোটাসহ ঢুকিয়ে দেয় ওর মুখের ভিতরে। সাজ্জাদ নিবিষ্ট মনে চুষতে থাকে জেরিনের দুধের বোঁটা, আস্তে আস্তে কিন্তু সমস্ত মন প্রাণ দিয়ে, ওর লিঙ্গটাও শক্ত হয়ে উঠতে থাকে।
হ্যাঁ, জেরিন ঠিকই বলেছে। ওদের দুজনকেই যথেষ্ট মূল্য দিতে হয়েছে এই জীবনে। ওর কষ্ট এই পৃথিবীতে জেরিন ছাড়া কেউ বুঝবে না, জেরিনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এই পৃথিবীর মানুষ ওদের ভালো থাকার জন্য কিছুই করেনি। সুতরাং কে কী ভাবলো তাতে সাজ্জাদের কিচ্ছু যায় আসে না। জেরিনই ওর মা, জেরিনই ওর বোন, জেরিনই ওর ভালোবাসা। জেরিনকে নিয়েই ওর পৃথিবী।
''বল, তুই আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবি না।" ফিসফিস করে বলে সাজ্জাদ।
"হ্যাঁ, ভাইয়া। আমি কোথাও যাবো না তোমাকে ছেড়ে। কোথাও না।" জেরিন জবাব দেয়।
জেরিনের নিতম্বের নীচে ধরে উঁচু করে বিছানায় ফেলে ঠোঁটে ঠোঁট চেপে প্রবলভাবে আদর করতে থাকে সাজ্জাদ, দ্বিধা দ্বন্দ্বহীনভাবে প্রবল ভালোবাসা উগড়ে দিতে থাকে ওর যোনীতে। এই ভগ্নহৃদয়ের পাখিদুটি প্রবল ভালোবাসায় সিক্ত হয় একে অপরের আলিঙ্গনে।
বেশ কিছুক্ষণ পেরিয়ে গেলেও জেরিন ওর কাছে এলো না।। খটকা লাগলো সাজ্জাদের। ওয়াশরুমে গেল কী? কোন একটা শব্দের কারণে সাজ্জাদ চোখ খুলতে বাধ্য হলো। উঠে বসলো বিছানায়। টেবিলের উপরে একটা ল্যাপটপে চলমান ভিডিও থেকে শব্দ আসছে। জেরিন ওর দিকে পিঠ দিয়ে চুপচাপ বসে আছে৷ সাজ্জাদ অবাক বিস্ময়ে দেখলো ল্যাপটপে চলমান ভিডিওতে একটা ঘর দেখা যাচ্ছে, ঠিক এই ঘরের মতই। ক্যামেরার ফোকাস মূলত ঘরের বিছানায়। ভিডিওর কোয়ালিটি নব্বই দশকের হ্যান্ডিক্যামগুলোতে তোলা ভিডিওর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
বিছানায় একজন নারীকে দেখা যাচ্ছে — গোলাপী রঙের শাড়ি পরা, এক মাথা খোলা চুল, মেয়েটা বিছানায় বসে সামনে দাঁড়ানো ছেলেটিকে অনুনয় করে বলছে,
""প্লিজ রাসেল ভাই। এবার কিন্তু বাড়াবাড়ি হচ্ছে।"
"বাড়াবাড়ির কী হলো? তুমি আমাকে বিশ্বাস করো না?"
"বিশ্বাস করবো না কেন?"
"না শায়লা। বিয়ের আগে যেমনটা আপন ভাবতে এখন আর তেমন ভাবো না।"
সাজ্জাদের মাথা ঘুরে ওঠে। এই দৃশ্য, এই কথাগুলো তার পূর্বপরিচিত। সে খুব ভালো করেই জানে এই লোকটা বিশ্বাসের নামে এই মেয়েটির সঙ্গে কী করতে যাচ্ছে। কারণ এই মেয়েটির নাম শায়লা চৌধূরী, আর সামনের লোকটি রাসেল শিকদার। সাজ্জাদ জোর গলায় জেরিনকে বলে, "এটা কী? কোথায় পেলে তুমি এই ভিডিও? বন্ধ করো প্লিজ।"
জেরিন কোন কথা বলে না, কেবল আঙ্গুল মুখে চেপে চুপ থাকার ইশারা করে। সাজ্জাদ জানে জেরিন চাইলে ওকে এই ভিডিও ইচ্ছে না করলেও দেখতে হবে। কিন্তু এই ভিডিও মেয়েটি পেলো কোথায়? এরকম ভিডিও যে আছে, এটাই তো সাজ্জাদ জানতো না। আরো অনেক প্রশ্ন ওর মাথায় ঘুরপাক খায়। এগুলোর উত্তর জানা প্রয়োজন।
ল্যাপটপে চলমান ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাসেল একটা পর্যায়ে ওর মায়ের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে খেতে বিছানায় গড়াগড়ি খায়, শরীর থেকে শাড়ি খুলে ছুঁড়ে ফেলে মেঝেতে। ওর মা রাসেলকে ধাক্কা দিয়ে বিছানা থেকে নেমে যায়, শাড়ি উঠাতে গেলেও ব্যর্থ হয়, রাসেল আবারো তাকে ধরে দেয়ালে চেপে ধরে। এই ঘটনাপ্রবাহগুলো সাজ্জাদের অজানা নয়, তবে একটা ব্যাপার স্মৃতির সঙ্গে মিলছে না, যতই ভিডিও সামনে যাচ্ছে ততই তার কাছে সেই অমিল স্পষ্ট হয়ে উঠছে। পরবর্তী বেশ সময় ধরে জেরিন সাজ্জাদকে আরো কিছু ভিডিও দেখায় — শায়লার সঙ্গে রাসেলের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও।
"I don't understand. I don't understand at all." ভিডিওগুলো দেখে মাথা চেপে ধরে সাজ্জাদ বিড়বিড় করে বলে।
"আমি জানি তুমি কী বুঝতে পারছো না। তোমার এতদিনের ধারণা ভুল ছিলো।" জেরিন ওর দিকে ফিরে বলে।
"হ্যাঁ। রাসেল ও আমার মায়ের মিলন মোটেও পারস্পরিক সম্মতিতে হয়নি। রাসেল শিকদার তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে এসব করতে বাধ্য করেছিলো। একবার নয়। একাধিকবার। এবং সবকিছুর ভিডিও প্রমাণ রেখে দিয়েছিলো।"
"হ্যাঁ। সে এই ভিডিওগুলো ব্যবহার করে তোমার বাবার কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। সে কখনোই মাকে ভালোবাসেনি। তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে তার শরীরটা নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে কেবল নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য। She was a victim too."
সাজ্জাদ মাথা নীচু করে বসে থাকে। "তুমি এই ভিডিওগুলো কোথায় পেলে?" একসময় জিজ্ঞেস করে সে।
জেরিন সহসা উত্তর দেয় না। বিছানা ছেড়ে উঠে গিয়ে দাঁড়ায় জানালার কাছে। অস্তায়মান সূর্যের আলো এসে পড়ে জেরিনের নগ্ন শরীরে। পেছন থেকে এই অপরূপ নারীর নগ্নমূর্তি দেখে সাজ্জাদের মনে হয় ঈশ্বর নিশ্চয়ই একজন শিল্পী। কারণ একজন শিল্পীর পক্ষেই এইরকম মানুষ গড়া সম্ভব। জেরিন ওর দিকে ফিরে তাকায়, সাজ্জাদের বুকটা ধক করে ওঠে। জেরিনকে প্রথমদিন দেখার পর আর ফটো এলব্যামে শায়লার তরুণী বয়সের ছবিগুলো দেখার সময়ে একটাই চিন্তা তার মনে ঘুরপাক খেয়েছিল। এরপর জেরিনের সঙ্গে ঘুরে বেড়াবার সময়ে বারবার এই ব্যাপারটি মনে এসেছে। আজকে ভিডিওতে পুরনো শায়লাকে দেখে, জেরিনকে নতুন করে দেখলো সে এবং তার কাছে অনেকটা পরিষ্কার হয়ে গেল সেই রহস্য।
"তোমার কী মনে হয় এই ভিডিওগুলো কোথায় পেয়েছি আমি? আমি কে?" জেরিন পালটা প্রশ্ন করলো ওকে।
"তুমি রাসেল শিকদারের মেয়ে।"
"আর?"
"তোমার মা শায়লা চৌধূরী। তুমি তাদের অবৈধ সন্তান। আমার মায়ের পেটে যেই দ্বিতীয় সন্তান এসেছিলো সেটি তুমি।"
জেরিন হাসলো শুধু। অর্থাৎ সাজ্জাদের অনুমান সঠিক।
"কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না ভিডিওগুলো কোথায় পেলে তুমি?" সাজ্জাদ জিজ্ঞেস করলো।
হঠাৎ জেরিন উদাসীন হয়ে তাকিয়ে রইলো জানালার বাইরে। তারপর দূর থেকে ভেসে আসা কণ্ঠে বললো, "রাসেল শিকদার আমার জন্মদাতা হতে পারে, কিন্তু সে আমার বাবা নয়। সে একটা নরপিশাচ। নিজের স্বার্থের জন্য, নিজের সুখের সব করতে পারে। ও শায়লাকে নিজের স্বার্থে পরিকল্পনা করে প্রেননেন্ট করে। পরে তোমার বাবাকে চিঠি আর ভিডিও এভিডেন্স পাঠিয়ে ব্লাকমেইল করে। এটা যখন করে তখন অলরেডি শায়লা কয়েক মাসের প্রেগনেন্ট। শায়লার ভুল ছিলো যে, সে বাচ্চা নষ্ট করার মতো সাহস করতে পারেনি। এটাও আশা করেছিলো হয়তো রাসেল তাকে মেনে নেবে। তাহলে আর বাচ্চা নষ্ট করতে হবে না। কিন্তু সে তো জানতো না রাসেল কখনোই তাকে ভালোবাসেনি। রাসেলের কাছ থেকে প্রমাণ পাওয়ার পরে তোমার বাবা আইজুদ্দিন সব দাবি পূরণ করে। তিনিও শায়লার পেটের বাচ্চা নষ্ট করতে পারেননি। আবার শায়লাকেও ত্যাগ করতে পারতেন না কারণ শ্বশুরের কাছে তিনি বাঁধা। রাজকন্যাকে ত্যাগ করলে রাজত্বও হারাতে হবে। তবে নিজের ঘরে কাকের বাচ্চা মানুষ করার মতো উদারতা তার ছিলো না। তাই সমাধান হিসেবে শায়লাকে পাঠিয়ে দেন ভারতে। সেখানেই ডেলিভারি হওয়া পর্যন্ত পরিচিত সবার থেকে বউকে আলাদা করে রাখেন। একসময় জন্ম হয় বাচ্চাটির। আইজুদ্দিন সেখানে লোক ঠিক করে রেখেছিলো যাতে জন্মাবার সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চাটিকে কেড়ে নেওয়া হয় শায়লার কাছ থেকে। লোকগুলো তার নির্দেশমত তাই করে। ওরা বাচ্চাটিকে নিয়ে যায় মুম্বাইয়ের এক বেশ্যালয়ে বিক্রি করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু আইজুদ্দিন বুঝতে পারেনি যে রাসেল শিকদারের পরিকল্পনা তখনো শেষ হয়নি। রাসেল আগে থেকেই নজর রাখছিলো সবকিছুর ওপর, সময়মতো লোকগুলোর কাছ থেকে বাচ্চাটিকে কিনে নেয় সে৷ চলে আসে আমেরিকায়, নাম রাখে জেরিন। আর সেই মেয়েটিই হলাম আমি।"
"কিন্তু ভিডিওগুলো..."
"আইজুদ্দিন শর্ত দিয়েছিলো টাকার বিনিময়ে সব ভিডিও দিয়ে দিতে হবে যাতে সেগুলো নষ্ট করে ফেলা যায়। রাসেল দিয়েছিলো ঠিকই, তবে একটা করে কপি নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলো। কারণ এটা তার ফ্যান্টাসি। সে শুধু শায়লাকে নষ্ট করেনি। আরো অনেক মেয়েকে নিজের বিছানায় নিয়েছে। তাদের টিস্যুর মত ব্যবহার করে ছুঁড়ে ফেলতো সে। তার আগে সেই মেয়েদের অন্তরঙ্গ ভিডিও, ছবি নিজের পার্সোনাল কালেকশনে রেখে দিতো। এমনকি সে নিজের মেয়েকেও..." সাজ্জাদ চমকে ওঠে শেষের কথা শুনে।
"কী বললে?"
"হ্যাঁ। প্রথমবার যখন তার লালসার স্বীকার হই তখন আমি বয়োঃসন্ধিতেও পৌছাইনি। আমার সাথে কী হচ্ছে সেটা বোঝার মতো জ্ঞানও আমার ছিলো না। তার অন্যান্য শিকার ছিলো সাময়িক, জামা পাল্টানোর মতো তাদের পাল্টাতো সে। কিন্তু আমি ছিলাম তার পার্মানেন্ট প্লেজার টুল। Yes, I was a tool to him. Or I should say I was just a fucking sex toy to that perverted demon.'' একটু দম নিলো জেরিন। "আমাকে কিনে নেওয়ার পেছনে এই লোকটার অন্য উদ্দেশ্য ছিলো। সে ভেবেছিলো আমাকে ব্যবহার করে ভবিষ্যতে আইজুদ্দিনের কাছ থেকে আরো সুবিধা আদায় করবে। সঠিক সময়ে আমাকে জনসম্মুখে হাজির করে সম্পত্তির ভাগ আদায় করে নেবে। সে উদ্দেশ্যেই আমাকে বড় করছিলো। কিন্তু বনের হিংস্র পশু কতদিন আর নিজের প্রবৃত্তিকে আটকাতে পারে! রাসেলও পারেনি আটকাতে।"
সাজ্জাদ নিরব হয়ে জেরিনের আত্মকথা শুনতে থাকে। এই মেয়েটি এতদিন ওর কাছ থেকে এতসব লুকিয়ে রেখেছিলো।
"বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমি বুঝতে পারি রাসেলের আসল চেহারা। সে আমাকে ঘরে আটকে রাখতে চাইতো। কিন্তু আমেরিকায় থাকার কারণে একটা সুবিধা ছিলো ঐ লোকটা চাইলেও আমাকে বাইরের পৃথিবী থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে রাখতে পারেনি। ইন্টারনেটে নিজে নিজে পড়াশোনা করে অনেক কিছু শিখে ফেলি আমি। আমার ব্যাপারে রাসেলের একটা বড় ভুল ধারণা ছিলো। সে ভেবেছিলো আমি শায়লার মতোই বশ্যতা স্বীকার করে নেবো। কিন্তু না। যেদিন থেকে বুঝেছিলাম রাসেল একটা নরপিশাচ সেদিন থেকেই আমি সিদ্ধান্ত নিই, I will be free from this hell as soon as possible. অতি বুদ্ধিমান শয়তানের একটা বড় দুর্বলতা হলো এরা নিজেকে এতটাই বুদ্ধিমান মনে করে অনেক সহজ প্লান এরা ধরতে পারে না। আমি ওর নাকের ডগায় বসে নিজেকে ধীরে ধীরে গড়ে তুললাম। প্রথমে এক্সারসাইজ করে নিজেকে ফিট করতে লাগলাম, আর ও ভেবেছিলো আমি ওর মনোরঞ্জনের জন্য এমন করছি। অনলাইনে ক্লাসের মাধ্যমে কলেজ শেষ করে সাইকোলজিতে পড়াশোনা করতে লাগলাম যাতে ওর মতো ক্রিমিন্যালদের সাইকোলজি বুঝতে পারি। এছাড়া ফ্রি ল্যান্সিং এর কাজ করে একটা ভালো এমাউন্টের ডলার জমিয়ে ১৮ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার পরে গোপনে একটা রিভলভার কিনে আনলাম৷ তুমি সেদিন অবাক হয়েছিলে না আমার কাছে বন্দুক এলো কী করে? আমি কীভাবে এত দক্ষভাবে গুলি করলাম? Now you have your answer. I have learnt to shoot to defend myself. So that nobody in this world can put a finger on me. আমি সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম এবং একদিন সেটা পেয়েও গেলাম। অতি সাবধানী শয়তানও ভুল করে। রাসেলের সেই ভুলটা ছিলো আমাকে আমার মায়ের মতোই দুর্বল মনে করা।"
"কী করেছিলে তুমি?"
জেরিন রহস্যময় ভাবে হাসে। বলে, ''দেখতে চাও? বেশ।" সে হেঁটে ল্যাপটপের কাছে এসে কোন একটি ফোল্ডার থেকে আরেকটি ভিডিও চালু করলো। কৌতূহলী সাজ্জাদ দেখতে লাগলো এক বৃদ্ধ রাসেল শিকদারকে, কাঁচা পাকা মাথা ও বুকের চুল, মুখের চামড়ায় ভাঁজ পড়ে গেছে, তবে শরীর এখনো মেদহীন ও ফিট, প্রথম দেখাতেই তাকে চিন্তে বিন্দুমাত্রা অসুবিধা হলো না৷ বক্সার আন্ডারওয়ার পরে রাসেল শিকদার বিছানায় শুয়ে আছে৷ তার হাত দুটো বিছানার সাথে দুটো হ্যান্ডকাফ দিয়ে বাঁধা, চোখে কালো পট্টি, কিন্তু তাকে দেখে মনে হচ্ছে সে বেশ খুশি খুশি। এই রহস্য কয়েক সেকেন্ড পরেই খোলাসা হলো। স্ক্রিনে জেরিনের আবির্ভাব হলো, ওর পরনে কালো রঙের চামড়ার Thong। সাজ্জাদের বুঝতে অসুবিধা হলো না কী হচ্ছে। ওর ভিতরে অস্বস্তি কাজ করতে লাগলো। কিন্তু ও যা ভেবেছিলো সেরকম কিছুই হলো না। জেরিনের হাতে তরলভর্তি একটি সিরিঞ্জ। সে রাসেলের গলার কাছে ক্যারোটিড ধমনীতে সম্পূর্ণ তরল ঢুকিয়ে দিলো। হাত, চোখ বাঁধা রাসেল কিছুই করতে পারলো না, এরপর ভিডিওটা জাম্প করে চলে গেলো অনেকটা সময় পরে, রাসেলের হাতের বাঁধন তখন খুলে দেওয়া হয়েছে, সে শ্বাস নিচ্ছে কিন্তু জড় পদার্থের মতো বিছানায় হেলান দিয়ে বসে আছে। জেরিন তার পাশে বসে ওর হাতে একটা রিভলভার ধরিয়ে দিয়ে মাথায় তাক করালো। ট্রিগারে রাসেলের আঙ্গুলের উপর জেরিনের আঙ্গুল চেপে বসলো — গুলির শব্দ — রাসেলের মাথার অন্য পাশ থেকে রক্ত আর মগজের টুকরা ছিটকে বেরিয়ে বিছানা, দেওয়ালে গিয়ে পড়লো, এলিয়ে পড়লো তার শরীর। অর্থাৎ জেরিন রাসেলের শরীরে ইনজেকশন দিয়ে অবশ করে আত্মহত্যার ঘটনা সাজিয়ে ছিল।
জেরিন ঘুরে তাকালো সাজ্জাদের দিকে, ওর একেবারে কাছে এসে বসলো বিছানায়৷ দুজনের কারো শরীরে কোন কাপড় নেই। সাজ্জাদ চেষ্টা করছে জেরিনের শরীরের দিকে না তাকাতে।
"তোমার জীবনটা অনেক কষ্টের ভিতর দিয়ে গেছে জেরিন। You don't deserve that life. আইজুদ্দিন, শায়লা, রাসেল কেউই তোমার কথা ভাবেনি। আমি তোমার বড় ভাই হিসেবে কিছুই করতে পারিনি। আমাকে ক্ষমা করে দিও।"
"না না তুমি ক্ষমা চাচ্ছো কেন? তোমার প্রতি আমার কোন রাগ নেই।" জেরিন ওর মুখটা দুহাতের নরম তালুতে নিলো। উষ্ণ, নরম এক জোড়া হাত। সাজ্জাদ জেরিনের চোখে চোখ রাখলো। জেরিনের চোখে এই প্রথম জল দেখতে পেল সে।
"তুমি ক্ষমা চাচ্ছো কেন! আমি আমার মায়ের পরিচয় খুঁজতে গিয়ে তোমার কথা জানতে পারি। আমি ঢাকায় এসেছিলাম শায়লা চৌধূরীর সাথে দেখা করতে। কিন্তু তোমার কথা জানার পর আমি খুব করে চাচ্ছিলাম তোমার সাথে দেখা হোক। তারপর যখন সত্যিই আমাদের দেখা হলো, আমি কিছুটা সময় নিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম ফিরে যাবো আমেরিকায়। কিন্ত আবার সিদ্ধান্ত পাল্টালাম। ভাবলাম ঢাকায় ঘোরার অজুহাতে তোমাকে আরেকটু কাছ থেকে দেখবো। এভাবে তোমার কাছাকাছি এসে বুঝেছিলাম তুমিও আমার মতোই একজন। We are on the same boat."
"কিন্তু কিন্তু জেরিন তুমি আমার সত্যিকারের পরিচয় জানার পরেও কেন এভাবে কাছে আসলে? After all we are siblings. আজকে আমাদের ভিতরে যা হলো...'' ব্যাকুল হয়ে বললো সাজ্জাদ।
"না। ভাইয়া। আমাদের ভিতরে যা হয়েছে এটাই প্রি ডিস্টাইন্ড ছিলো। আমি তো আমেরিকায় চলে যেতে পারতাম। ঐদিন আমাদের দেখা নাও হতে পারতো। আমাদের মনের ক্ষত কেবল একে অপরের পক্ষেই সারিয়ে তোলা সম্ভব। আমি জানি তুমি একমাত্র আমার কাছেই শান্তি পাও। আমিও পাই তোমার বুকে।''
"কিন্তু জেরিন আম...''
"শিসসসস...'' জেরিন ওর ঠোঁটের উপরে আঙ্গুল দিয়ে চুপ করিয়ে দেয়। ''আর কোন কথা নয়। আমরা আর পুরনো স্মৃতি নিয়ে বাঁচতে চাই না। এই হোটেল রুমে তোমাকে এনেছি কেন জানো? যাতে এখানে আমরা দুজন নতুন স্মৃতি তৈরি করতে পারি। আমরা আমাদের মতো জীবন গড়ে নেবো।"
জেরিন ওর কোলের উপরে উঠে দু দিকে পা দিয়ে বসে এক হাত দিয়ে বিচির থলিসহ নুয়ে পড়া লিঙ্গটাকে মুঠো করে ধরে, ছোট্ট একটা পাখিকে যেভাবে মানুষ হাতে নেয়, অন্য হাত দিয়ে সাজ্জাদের মাথার পেছনের চুল ধরে মুখটাকে টেনে আনে নিজের দুধের কাছে, শিশুর মুখে মায়েরা যেভাবে স্তনদান করে সেভাবে। বোটাসহ ঢুকিয়ে দেয় ওর মুখের ভিতরে। সাজ্জাদ নিবিষ্ট মনে চুষতে থাকে জেরিনের দুধের বোঁটা, আস্তে আস্তে কিন্তু সমস্ত মন প্রাণ দিয়ে, ওর লিঙ্গটাও শক্ত হয়ে উঠতে থাকে।
হ্যাঁ, জেরিন ঠিকই বলেছে। ওদের দুজনকেই যথেষ্ট মূল্য দিতে হয়েছে এই জীবনে। ওর কষ্ট এই পৃথিবীতে জেরিন ছাড়া কেউ বুঝবে না, জেরিনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এই পৃথিবীর মানুষ ওদের ভালো থাকার জন্য কিছুই করেনি। সুতরাং কে কী ভাবলো তাতে সাজ্জাদের কিচ্ছু যায় আসে না। জেরিনই ওর মা, জেরিনই ওর বোন, জেরিনই ওর ভালোবাসা। জেরিনকে নিয়েই ওর পৃথিবী।
''বল, তুই আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবি না।" ফিসফিস করে বলে সাজ্জাদ।
"হ্যাঁ, ভাইয়া। আমি কোথাও যাবো না তোমাকে ছেড়ে। কোথাও না।" জেরিন জবাব দেয়।
জেরিনের নিতম্বের নীচে ধরে উঁচু করে বিছানায় ফেলে ঠোঁটে ঠোঁট চেপে প্রবলভাবে আদর করতে থাকে সাজ্জাদ, দ্বিধা দ্বন্দ্বহীনভাবে প্রবল ভালোবাসা উগড়ে দিতে থাকে ওর যোনীতে। এই ভগ্নহৃদয়ের পাখিদুটি প্রবল ভালোবাসায় সিক্ত হয় একে অপরের আলিঙ্গনে।
--সমাপ্ত--