Thread Rating:
  • 87 Vote(s) - 3.05 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery আগুণের পরশমণি;কামদেব
   ঊনচত্বারিংশতি পরিচ্ছেদ



আরণ্যক সাহসী ভয়ডর নেই যা মন চায় স্পষ্ট বলে দেয়।কিন্তু ইলিনা ব্রাউনের কাছে লাজুক মুখের উপর কিছু বলতে পারেনা। স্টাডি রুমে ঢুকে আরণ্যক একটা বই তুলে নিয়ে সমগ্র পরিস্থিতি আগাগোড়া ভাবতে থাকে।সকাল থেকে সে একরকম ভাবে ভেবেছে,এখন সব  তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে।কানাই ধর হয়তো আশা করে আছে।লিনা বলছিল কলেজে প্রিন্সিপালকে স্বামী হিসেবে পরিচয় দিয়েছে।লিনা মিথ্যে বলবে না তবু বিশ্বাস করতে মন চায়না।স্বর্গের অপ্সরার কথা শুনেছে।লিনা তার কাছে সেই অপ্সরাদের মত।মর্ত্য মানুষকে বিয়ে করতে তাদের বয়ে গেছে।ঘড়ির কাঁটা টিকটিক এগিয়ে চলেছে।এভাবে কতক্ষণ বসে থাকতে হবে বুঝতে পারে না।    
ওরা সবাই অফিস  থেকে ফিরে এসেছে।গোবের কাছে  এতক্ষণে সব শুনে থাকবে।ওদের কি প্রতিক্রিয়া হতে পারে আরণ্যক অনুমান করার চেষ্টা করে।পিকলুর খুব খারাপ লাগবে।পার্টি করলেও পিকলু অন্যদের মত অন্ধ নয়।নিজস্ব ভাবনা-চিন্তা আছে।
সারাদিন কি খেয়েছে কে জানে।ইলিনা ব্রাউন রুটিতে মাখন মাখাতে মাখাতে ভাবে।মনে পড়ল প্রিন্সিপাল ম্যামের কথা।একজন পুরুষসঙ্গী খুব দরকার।ওদের কি মেয়ে সঙ্গীর দরকার নেই।এতদিন হয়ে গেল একটু ছুয়ে দেখার আগ্রহ দেখল না।ওকি মন থেকে তাকে মেনে নিতে পারেনি?ইলিনা মনে মনে স্থির করে ও যদি চলে যেতে চায় যত কষ্ট হোক বাধা দেবেনা।জোর করে অনিচ্ছুক মনকে বেধে রেখেহ কি লাভ? লুঙ্গির বাধন আলগা হতে রুটি পাশে রেখে লুঙ্গিটা বেধে নিল।লিনেনের লুঙ্গি পরতে আরামদায়ক হলেও গিট আলগা হয়ে যায়।
ও ঘরে বসে কি করছে,কোনো সাড়াশব্দ নেই। বয়স হলেও অনুটা একেবারে ছেলেমানুষ,এত অলস যে বলে বলে সব করাতে হয়।দোকানের কাজটা আর নেই।ভালই হয়েছে,অমন কাজ থাকার চেয়ে না থাকাই ভাল।একহাতে প্লেটে খান কয়েক টোস্ট আরেক হাতে চায়ের কাপ নিয়ে স্টাডি রুমের দিকে গেল।মেঝেতে শতরঞ্চিতে আধশোয়া হয়ে আনু কিযেন ভাবছে। লুঙ্গির গিটটা সড়সড় করছে খুলে না যায়।ইলিনার দু-হাত জোড়া।গিটটা খুলে গেল মনে হচ্ছে ইলিনা দু-পা চেপে বলল,চা-টা ধরো-ধরো--।বলতে না বলতেই লুঙ্গিটা খুলে পায়ের কাছে পড়ল।এই ভয়টা পাচ্ছিল। উঠে বসে আরণ্যকের বিস্ময় বিহ্বল দৃষ্টি তলপেটের উপর লেপটে থাকে।কানাই ধরের মোবাইলে দেখা ভিডিওটা চোখের সামনে ভেসে উঠল।নাভি এবং যোণির মাঝে ফর্সা চামড়ায় জ্বল-জ্বল করছে ইংরেজি হরফে তার নাম।
দেখা হল?এবার চা-টা ধরো--।
লিনা সত্যি তাকে ভালবাসে?লিনার কথায় আরণ্যক হাত বাড়িয়ে চায়ের কাপ নিতে-নিতে  লাজুক গলায় বলল,আমার নাম লিখেছো?
ইলিনা নীচু হয়ে লুঙ্গিটা তুলে কোমরে বেধে বলল,তোমার নাম হবে কেন অনু আর কারো নাম হতে পারেনা।
যে লিখেছে সেও দেখেছে তাহলে?
লেডিস পার্লার।আমি কি খুলে দাঁড়িয়েছিলাম?প্যাণ্টিটা একটু নামিয়ে দিয়েছিলাম।দেখলে তোমার এত জ্বালা কিসের?
জ্বলা না মানে--লিনা তোমার চা কই?তুমিও তো কলেজ থেকে ফিরে কিছু খাওনি।
আমার চা রান্না ঘরে।--
এখানে নিয়ে এসোনা।চা খেতে খেতে কথা বলি।
ছেড়ে চলে যাচ্ছিল এখন কথা বলার ইচ্ছে হয়েছে রান্না ঘরে যেতে যেতে ভাবে ইলিনা।
মুগ্ধ বিস্ময়ে লিনা-র চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে আরণ্যক।নিজেকে গৌরবান্বিত বোধ করে।এতকাল কি আবোল-তাবোল ভেবে এসেছে।লিনা সত্যিই তাকে স্বামী মনে করে নাহলে কেঊ ওখানে নাম লিখে রাখে।তার বউ একটা পাগলি।
মনে হচ্ছে মাথার থেকে ভূত নেমেছে। ফরম ফিল আপ করে  বলে কিনা পরীক্ষা দেবোনা।বউ এবং অভিভাবিকা দুই দায়িত্বই তাকে পালন করতে হবে।একটা ব্যাপার আজ পরিষ্কার করে নেওয়া ভাল।চায়ের কাপ নিয়ে ফিরে এল ইলিনা ব্রাউন।
মেঝেতে মুখোমুখি বসে দুজনে চায়ে চুমুক দিতে থাকে।কেউ কোনো কথা বলেনা,গভীর নিস্তব্ধতা সারা ঘরে। 
বিশু পিকলুরা কেউ জানে না জানলে বলবে বাদরের গলায় মুক্তোর মালা ভেবে মনে মনে হাসে আরণ্যক।কিভাবে শুরু করবে ইলিনা ভাবে।কিছু সময় কেটে যাবার পর ইলিনা বলল,তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করি?
আরণ্যক মুখ তুলে তাকালো।
অনেক ঝড়-ঝাপটা পেরিয়ে বড় হয়েছি।যা সত্যি তা যত নির্মম হোক তাকে মেনে নিতে শিখেছি।
লিনা কি বলতে চাইছে বোঝার চেষ্টা করে।কি এমন সত্যের কথা বলবে।ঝড়-ঝাপটা তাকেও অনেক পেরোতে হয়েছে।চাকরি হতে অবসর নেবার আগেই বাবা চলে গেল,কয়েক বছর পর মাও।
আমাকে জীবন সঙ্গী হিসেবে মেনে নিতে তোমার মনে কোনো দ্বিধার ভাব নেই তো?
একী বলছে লিনা এ প্রশ্ন তো তারই গলার নীচে খুস-খুস  করছে। কৌতূহলী আরণ্যক বলল,এখন এ প্রশ্ন?
আরও পরে হয়তো তোমার মনে হতে পারে।   
মানে?পরে কি মনে হতে পারে?
নিশীথের সঙ্গে আমার সম্পর্ক তাছাড়া আমার জন্ম পরিচয়--তুমি নির্দ্বিধায় বলতে পারো।
ইচ্ছের বিরুদ্ধে কয়েকদিনের সম্পর্ক হয়েছিল আমি জানি--আর জন্ম পরিচয়-।
আরণ্যক বুঝতে পারেনা লিনা এসব কথা আজই কেন বলছে।
থামলে কেন বলো।
সে অনেক কথা--গুছিয়ে হয়তো বলতে পারব না।
তুমি বলো আমি শুনবো।
আরণ্যক মুগ্ধ দৃষ্টিতে ইলিনাকে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে।ইলিনা বলল,কি দেখছো?
জনম জনম অবধি হাম রূপ নেহারলু নয়ন না তিরপিত ভেল।লাখ লাখ যুগ হিয়ে হিয়ে রাখলু তব হিয়ে জুড়ন না গেল।
মূল প্রসঙ্গ কি এড়িয়ে যেতে চাইছে?ইলিনা যখন কথাটা তুলেছে শেষ না দেখে সরছে না।জিজ্ঞেস করল, কই বললে নাতো?
এতদিন পর আবার অতীত নিয়ে ঘাটাঘাটির কি কারণ বুঝতে পারেনা।চলে যাচ্ছি বলায় কি ওর মনে শঙ্কা জেগেছে?আরণ্যক শতরঞ্চিতে শরীর এলিয়ে দিয়ে বলল,অতীতের কথা তুললে যখন আমি তোমাকে আরও অতীতে যেতে বলব।ইতিহাসে পড়েছি আদিম যুগের কথা।মানুষ ছিল পশুর মতো বনচারী।গাছের ফল নদীর জল খেয়ে অবাধ স্বাধীন জীবন যাপন করত।পরস্পরে ছিলনা কোনো আত্মীয়তার সম্পর্ক।কেউ কারো নয় ছিল ক্ষিধে পেলে খেত ইচ্ছে হলে রমণ করত।বিবর্তনের মাধ্যমে একসময় তারা সমাজবদ্ধ হল।জাতপাত এল তৈরী হল পারস্পরিক সম্পর্ক।আরোপিত হল বিধি নিষেধ।লিনা আমরা তাদেরই বংশধর।তোমার জন্মের জন্য তুমি নও মিঃ ম্যাথু ব্রাউন দায়ী।আমি তোমার অতীত নিয়ে ভাবিনা এখন যে লিনাকে দেখছি আমি তাকেই ভালবেসেছি।
তা হলে আমাকে ফেলে চলে যাচ্ছিলে কেন?
বিশ্বাস করো লিনা আমার যা সামর্থ্য তাতে তোমাকে বউ হিসেবে ভাবতে পারিনি।
আমাদের ভাবতে শেখানো হয়েছে স্ত্রীর ভরণ পোষণের দায়িত্ব নিতে হবে স্বামীকে।কেন মেয়েরা কি সোশাল বার্ডন?তাকে বইতে হবে অন্য একজনকে?তোমাকে একটা কথা বলি,আমার যা আছে তোমার তা নেই আবার তোমার যা আছে আমার তা নেই।
আমার কি আছে?একটা দোকানে কাজ ছিল এখন তাও নেই।
তুমি জানো না তোমার কি আছে।এত মানুষের মধ্যে তোমাকে কেন বেছে নিলাম।কেন মনে হল আমার জন্যই ঈশ্বর একেই সৃষ্টি করেছে?এর মধ্যেই আমার ।নিরাপদ আশ্রয়।তোমার যা আছে তুমি দেবে আমার যা আছে আমি তাই দেব নিজেকে আলাদা ভাবনে না দুজনে মিলে আমরা এক।কি ভাবছো?
তোমার কথা শুনতে শুনতে  একটা কবিতার কথা মনে পড়ল।নহ মাতা নহ কন্যা নহ বধূ সুন্দরী হে নন্দন বাসিনী উর্বশী।
এত চমৎকার বুঝিয়ে দিল অনু আমি নিজে কখনো এমনভাবে ভাবিনি।লোক চিনতে ভুল করিনি আমি।পাগলটাকে সামলানোর দায়িত্ব আমার।ইলিনা ব্রাউন গভীর ভাবনায় ডুবে যায়।
সন্তোষ মাইতি চাবি দিয়ে গোবিন্দকে দোকান খুলে বসতে বলেছে।অনিচ্ছা সত্বেও গোবিন্দ বসেছে।সবাই জড় হয়েছে,কারো মন ভাল নেই।তাকে একবার বলে গেল না পিকলুর মনে অভিমাণ।কোথায় রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে কে জানে।
কিরে গোবে এখন থেকে তুই দোকানে বসবি নাকি?মান্তু বলল।
খেয়ে- দেয়ে কাজ নেই দোকানে বসব।আমার চাকরিটা তুই করে দিবি নাকি? 
বিমলি পিসি হাপাতে হাপাতে এসে বলল,রনো কইরে রনো কই?
বিমলা বোসবাড়ীতে রান্নার কাজ করে।গোবিন্দ জিজ্ঞেস করল,রনোকে কি দরকার?
একটু আগে ভোদা আমারে টানতি টানতি অন্ধকার গলির মধ্যে নিয়ে যাচ্ছিল,লাথি দিয়ে কোনোমতে ছাড়ায়ে চলে এসেছি।শালা মেয়ে দেখলি চোদার ইচ্ছে হয়,বাড়ীতে মা-বুন নাই।রনো কই?
ভদ্রভাবে কথা বলুন।পিকলু বলল।
অন্ধকারে কি জন্যি নিয়ে যাচ্ছেলো বুঝিনা কিছু।রনো কোথায়?
রনো কি করবে?আপনি বরং পার্টি অফিসে জানান।গোবিন্দ বলল।
পার্ট অফিসে বললি কিছু হবে না। যেমন ওল তেমনি বাঘা তেতুল দরকার।
পিকলু বলল,রনো আজ আসবে না।চলুন আমি আপনাকে পৌছে দিয়ে আসছি।আয়তো মান্তু।
বিমলাকে নিয়ে ওরা বোসবাড়ীতে পৌছে দিতে চলে গেল।চলতে চলতে ভাবে গরীব  মানুষগুলোর রনোর প্রতি কি গভীর আস্থা।এদের ছেড়ে কোথায় চলে গেল কে জানে।
বিশু বলল,কালাবাবুকে বলা দরকার।আপনার লোকজনের জন্য পার্টির বদনাম হয়ে যাচ্ছে ওদের সামলান।
আমি আজই দাদাকে ব্যাপারটা জানিয়ে দেব।গোবিন্দ বলল।
ইলিনা ব্রাউন আড়চোখে দেখল অনু ছাদের দিকে তাকিয়ে নিষ্পাপ শিশুর মত চুপচাপ।রাত হচ্ছে খাবারগুলো গরম করতে হয়।সারাদিন কি খেয়েছে কে জানে।কাল ফর্ম জমা দিতে যেতে হবে আর কি করতে হবে মনে মনে ছক কষে নেয়।পিছনে লেগে থাকতে হবে ঢিল দিলে চলবে না।ইলিনা বলল,ওখানে শুেয়ে আছো কেন,আমার কাছে এসো।
আরণ্যক উঠে বসে অপরাধী মুখ করে লিনার কাছে এসে বসল।ইলিনা ওকে জড়িয়ে বুকে চেপে ধরল।কেমন এক শিরশিরানি অনুভূত হয়।আরণ্যকের চোখ ঝাপসা হয়ে এল।কিছুক্ষণ পর ইলিনা জিজ্ঞেস করে,কি হল কিছু বলছো না,খারাপ লাগছে?
খারাপ নয়,কেমন যেন লাগে।
আগে কোনো মেয়ের সঙ্গে তোমার সম্পর্ক হয়নি?
আমি মেয়েদের সঙ্গে মিশতে পারিনা।বন্ধু বান্ধবদের বউদের সঙ্গে কথা হয়েছে এক-আধবার।আর একজন ছিল ঝর্ণাদি।আমাকে খুব ভালবাসত।কলেজের দিদিমণি দোকানে আসতো।বিয়ের পর আর তেমন দেখা হয়না।সবাই জানে তবে--।কথা শেষ না করে আরণ্যক বুকে মুখ গুজে দিল।
ইলিনা মুখটা তুলে চোখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল,তবে কি?
বানিয়ে কথা বলতে পারেনা এই তার দোষ।কি বলবে বুঝতে পারেনা।
অসুবিধে থাকলে বলতে হবে না।অভিমানী গলায় বলল ইলিনা।
কোনো সম্মানিত মহিলার মর্যাদাহানি হোক চাইনা এজন্য কথাটা কাউকে বলিনি।
ঠিক আছে আমি শুনতে চাইনা।
না না তোমাকে বলতে অসুবিধে নেই।কি জানো কোনো কিছু গোপন করলে তা অসত্য হয়ে যায়না।আমাদের অঞ্চলে একজন নামকরা ডাক্তার ছিলেন ডঃ মুখার্জী।ওর মৃত্যুর পর বিধবা মালা মুখার্জীকে ডাক্তারবাবুর বন্ধুরা অনেক প্ররোচনা দিলেও তিনি সেই ফাদে পা দেন নি।আসন-প্রাণায়াম করতেন।একদিন আমাকে যোগাসন শেখাবার জন্য বাড়ীতে ডেকে নিয়ে গেলেন।আরণ্যক ধীরে ধীরে আনুপূর্বিক ঘটনা বলতে থাকে।শুনতে শুনতে ইলনার মনে অনেকদিন আগে পড়া  তন্ত্রসার বইটার কথা।সাধনার মাধ্যমে কিভাবে আত্মায়-আত্মায়    
মিলন হয়।আরণ্যক কথা শেষ করে মাথা নীচু করে বসে থাকে।
ওই একবারই তারপর যাওনি?
উনি মেয়ের কাছে অ্যামেরিকা চলে গেলেন।আমি এয়ারপোর্টে পৌছে দিয়ে এসেছি।
তুমি বিশ্রাম করো।আমি এবার রান্না ঘরে যাই।
জানো লিনা এয়ারপোর্টে যেতে যেতে উনি একটা অদ্ভুত কথা বলেছিলেন।
ইলিনা যেতে গিয়ে ঘুরে দাড়ায়।
আরণ্যক বলল,উনি বলেছিলেন,আমাকে তোমার খারাপ মহিলা মনে হলেও একদিন তোমার এই ভ্রম ঘুচবে।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: আগুণের পরশমণি;কামদেব - by kumdev - 10-12-2024, 08:49 PM



Users browsing this thread: 9 Guest(s)