03-12-2024, 03:21 PM
(This post was last modified: 16-12-2024, 12:22 AM by শূন্যপুরাণ. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
বধূবেশে পরীর মতো সুন্দর চেহারার শায়লা চৌধূরী বসে আছে বিয়ের আসরে। এ সময়ে অনেকেই কনের পাশে ছবি তোলার জন্য বসেন। তেমনই একটি মুহূর্তের ছবিতে শায়লার পাশে একটি যুবক ছেলে বসে আছে। তখনকার সময়ের ফ্যাশন অনুযায়ী ছেলেটার নাকের নীচে পাতলা গোফ, ব্যাক ব্রাশ করা চুল, পরনে হাতা গোটানো নীল রঙের জিন্সের শার্ট, কালো রঙের প্যান্ট। সাজ্জাদ আরো কয়েকটি পাতা উল্টিয়ে আরো কিছু ছবিতে ঐ যুবককে শায়লার সঙ্গে দেখতে পায়। একটি ছবিতে সাদা রঙের ভক্সওয়াগন গাড়ির সামনে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে দুজনে। এই ছবিতে লাল রঙের লং স্কার্ট, কালো রঙের ভি নেক টি শার্ট, কালো পাম্প সু পরিহিত শায়লাকে একদমই কলেজ পড়ুয়া তরুণীর মতো দেখাচ্ছে। গ্রামে পুকুর পাড়ে বেশ দূর থেকে তোলা একটি ছবি রয়েছে। এছাড়া আরো কিছু গ্রুপ ছবি আছে। তবে একটি বিশেষ ছবিতে সাজ্জাদের চোখ আটকে যায়। এই ছবিটি কেবলই শায়লার। লোকেশন দেখেই অনুমিত যে দেশের বাইরের কোন স্থানে তোলা হয়েছে ছবিটি।
এখানে শায়লা পাথরের সিঁড়ির উপরে ক্যামেরার দিকে সামান্য মুখ ঘুরিয়ে বসে আছে। মাথায় গোলাকার চাইনিজ হ্যাট, চোখে সানগ্লাস, পরনে লাল রঙের টি শার্ট, নীল রঙের জিন্স প্যান্ট। শায়লার দৃষ্টি দূরে কোথাও নিবদ্ধ। ক্যামেরা যেদিকে, ঐদিকের হাতটা শরীরের পেছনে মেঝেতে ভর দিয়ে রাখা, অন্য হাতটি দিয়ে হ্যাটের কিনারা স্পর্শ করে আছে।
এক পাশ থেকে ছবি তোলার কারণে শায়লাকে সম্পূর্ণ অন্যরকম লাগছে। মনে হচ্ছে যেন নব্বই দশকের নায়িকাদের মতো কোন ট্যাবলয়েড পত্রিকার জন্য পোজ দিয়েছে সে। শায়লার স্ট্রেইট করা সিল্কি চুলে রোদের খেলা, গায়ের সাথে লেগে থাকা টি শার্ট আর উরুতে কামড়ে ধরা স্লিমকাট জিন্স সবকিছু মিলিয়ে এই ছবিটা যেন সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমি এক শায়লা চৌধূরীর প্রতিচ্ছবি। ওর মায়ের এমন ছবি কে তুলে দিয়েছিলো? কবে তোলা হয়েছিলো? সাজ্জাদের মনে নানান প্রশ্ন উঁকি দেয়। কী মনে করে ছবিটা এলবাম থেকে বের করে পেছনে উল্টায়। সেখানে শুকিয়ে যাওয়া বলপয়েন্টের কালিতে লেখা,
'The Grand Palace, Thailand,
Thanks for the gift.
Yours,
নীচে প্যাঁচানো হাতে সই করা। পুরো সই না পড়া গেলেও শুরুটা R দিয়ে সেটা বোঝা যাচ্ছে।
সাজ্জাদ পুনরায় ছবিটা যথাস্থানে রেখে এলবামটা বেড সাইড টেবিলের উপরে ছুঁড়ে ফেলে। সেটা পিছলে নীচে পড়ে গেলেও ফিরে তাকায় না। টেবিলের ড্রয়ার থেকে ঘুমের ঔষধের পাতা বের করে ২টা ট্যাবলেট খেয়ে ধপাস করে শুয়ে পড়ে বিছানায়।
শায়লার দাফনের পরে নানান ঝামেলায় দেরী হয়ে যাওয়ায় আজ রাতটা এই বাড়িতেই থেকে গেছে সে। বহুবছর পর নিজের রুমে রাত কাটাচ্ছে। যদিও এখন মনে হচ্ছে কাজটা ঠিক হয়নি। সারাক্ষণই মনের ভিতরে কেমন যেন অস্বস্তি কাজ করছে।
সিলিং এর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে নিজের মনকে নানাভাবে বুঝাতে থাকে সাজ্জাদ। প্রথমত ২টা ঘুমের ঔষধ খেয়েছে। শীঘ্রই এগুলো কাজ করা শুরু করবে। এক ঘুমেই রাত পার করে দেবে। তারপর আগামীকাল সকালেই এ বাড়ি থেকে বেরিয়ে সোজা নিজের আস্তানায় ফিরে যাবে। দ্বিতীয়ত, ঘুম আসার আগে নিজের মনকে ডাইভার্ট করা প্রয়োজন। এমনিতে পুরো বাড়ি যে একদমই ফাঁকা তা বলা যায় না। গেটে ১ জন দারোয়ান আছে। বাড়ির ভেতরে ১ জন কেয়ারটেকার ও ১ জন বাবুর্চি আছে। ভয়ের তেমন কিছুই নেই। তারপরেও অনেক বছর পর পুরানো বাড়িতে হুট করে রাত কাটাতে গেলে মনের ভিতর অজানা চাপ সৃষ্টি হয়। তাই মনকে ডাইভার্ট করার জন্য সাজ্জাদ অন্যকিছু নিয়ে ভাবার চেষ্টা করে। আচমকা জেরিনের কথা মনে এলো ওর। মেয়েটিকে খুব বেশিক্ষণ দেখার সুযোগ পায়নি। তাই চোখ বন্ধ করে জেরিনের চেহারাটা মনে করার চেষ্টা করে সে।
ফর্সা, সুন্দর, ডিম্বাকার মুখ,
কাজল দেওয়া টানা টানা চোখ,
গোলাপী বাঁকা ঠোঁট,
আর... আর...
টুকরো টুকরো ইনফো গুলো মিলিয়ে একটা ডিটেইলড চেহারা দাঁড় করানো যায় কি!
নাহ! ঠিক আসছে না।
কেবল সাদা রঙের সেলোয়ার কামিজ পরিহিত একটি শরীর দেখতে পাচ্ছে সাজ্জাদ। সুগঠিত, পরিপূর্ণ একটি রমণীর শরীর। গোল দুই উরুর মাঝে রহস্যময় সন্ধিক্ষণ, কলসীর কাঁধের মতো ঢেউ খেলা কোমর... বুকের উপর সাদা ওড়না...এই তো...এই তো... সাজ্জাদ আরেকটু চেষ্টা করে জেরিনের মুখটা দেখার জন্য।
কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সে যে মুখটা দেখতে পায় সেটা তার পূর্বপরিচিত! যেন বহুকাল ধরে এই মুখটাকে চেনে সে! এই মুখটি সাজ্জাদের মা, শায়লা চৌধুরীর। বিয়ের আসরে জবুথবু হয়ে বসে থাকা শায়লা চৌধুরী নয়। হ্যাট মাথায় মোহনীয় ভঙ্গীতে বসে থাকা সেই শায়লা চৌধুরী। সাজ্জাদ অস্বস্তিতে ছটফট করতে থাকে। জেরিনের মুখের জায়গায় শায়লাকে কেন দেখছে সে! কিছুক্ষণের মধ্যেই জেরিনের (কিংবা শায়লার) পাশে আরেকজনকে এসে দাঁড়াতে দেখে। একজন যুবক পুরুষ... জিন্সের শার্ট, কালো প্যান্ট, ফিনফিনে গোঁফ, ব্যাক ব্রাশ চুল... এই লোকটিকেও চেনে সাজ্জাদ। এই লোকটির নাম রাসেল। রাসেল শিকদার। জেরিনের বাবা। কিন্তু এখানে রাসেলকে মোটেও জেরিনের বাবার মতো লাগছে না। বরং লোকটা জেরিনের (না কি শায়লার) কোমরে হাত দিয়ে আছে, হাসছে দুজনে। সাজ্জাদ ছুটে পালাতে চাইলো ওদের কাছ থেকে। অনেক দূরে।
অনেক জোরে দৌড়াতে থাকলো সে। ওদের থেকে যত দূরে সম্ভব পালাতে চায়। অন্ধকার রাস্তায় দৌড়াতে দৌড়াতে সামনে একটা খোলা দরজা দেখতে পায়। ওখানেই পৌছাতে হবে তাকে। হঠাৎ পা পিছলে পড়ে যায় সে। সারা শরীরে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি খেয়ে চোখ খোলে সাজ্জাদ। বিছানায় উঠে বসে। চোখ খোলার পরেও বুঝতে পারছে না এখনো স্বপ্ন দেখছে না কি বাস্তবে ফিরে এসেছে? ঘরটা এমন দুলছে কেন!
সাজ্জাদের শরীরটা যেন তার নিজের নিয়ন্ত্রণে নেই। পায়ে পায়ে বিছানা থেকে নেমে ঘরের বাইরে চলে আসে সে। ওর শোবার ঘর থেকে বের হলে ছোট্ট একটি খোলা জায়গা পড়ে, যেটা একসময় লিভিং রুম ও পারিবারিক লাইব্রেরি হিসেবে ব্যবহার করা হতো। নিজের ঘরের সামনে থেকে লাইব্রেরির ঠিক অপর পাশেই বাবা মায়ের বেডরুমের দরজা দেখতে পাচ্ছে সাজ্জাদ। ঐ ঘরের আধ খোলা দরজা থেকে অল্প অল্প আলো এসে পড়ছে বাইরে। কিসের যেন শব্দও শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। কে আছে ও ঘরে? কে?
সাজ্জাদ কোন এক নিষিদ্ধ আকর্ষণের টানে ঐ ঘরের দিকে হাঁটতে থাকে, পা টিপে টিপে। শৈশবে অনেকসময় রাতে একা একা থাকতে ভয় লাগলে এভাবেই বাপ মায়ের ঘরে গিয়ে হাজির হতো। কিন্তু এখন কেন এরকম করছে সাজ্জাদ জানে না। ও যেন ঘোরের ভিতরে আছে।
দরজার কাছাকাছি আসার পর ঘরের ভেতরকার শব্দ আরো স্পষ্ট হয়। কয়েক ধরণের শব্দের মিশ্রণ বলা যায়। সাজ্জাদের মস্তিষ্ক বলছে এই শব্দ তার পূর্ব পরিচিত। দরজার কাছে পৌছে দরজাটা পূর্বের চেয়ে সামান্য সরিয়ে দিলো। ওর বাবা মায়ের বিশাল মাস্টার বেডরুমের ঠিক মাঝখানে অবস্থিত বিছানাসহ প্রায় সম্পূর্ণ ঘরটি দেখতে পাচ্ছে সে। ঘরে থাকা বিশাল এলইডি টিভি চালু আছে। কোন একটা গানের সুর বাজছে সেখানে।
"Kisses on the foreheads of the lovers
wrapped in your arms
You've been hiding them in hollowed out
pianos left in the dark"
সেই সুরের সাথে মিশে যাচ্ছে আরো কিছু শব্দ। বিছানার পায়ের কাছে মেঝেতে দাঁড়িয়ে আছে একজন লোক, লম্বা পেশিবহুল শরীর, গায়ে কোন কাপড় না থাকায় সাজ্জাদ তার পিছনের দিকটা আপাদমস্তক স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে। লোকটার সামনে বিছানায় একজন মেয়ে মানুষ নগ্ন হয়ে শুয়ে আছে — শঙ্খের মতো ফর্সা তার গায়ের রঙ, লম্বা খোলা চুল ছড়িয়ে আছে চারিদিকে। তার উলম্ব পা দুটি দু'হাতে শক্ত করে ধরে উলঙ্গ পুরুষ লোকটি সজোরে তালে তালে কোমর নাড়িয়ে যাচ্ছে সামনে পেছনে। মেয়েটির উরু ও নিতম্বের সঙ্গে পুরুষটির শরীরের ক্রমাগত আঘাতে শব্দ তৈরি হচ্ছে — থাপ! থাপ! থাপ! থাপ!
সাজ্জাদ পুরুষটির দুপায়ের ফাঁক দিয়ে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে যে মেয়েটির শরীরের ভেতরে কীভাবে একটা পুরুষাঙ্গ বার বার ঢুকছে, আর বের হচ্ছে...
আবার ঢুকছে,
আবার বের হচ্ছে।
যেন একটা মেশিন কাজ করে যাচ্ছে।
প্রতিবার লিঙ্গ সেঁধানোর সময়ে পুরুষটির পাছার মাংশ শক্ত হয়ে যাচ্ছে। আবার বের করার সময়ে শিথিল হচ্ছে। আবার শক্ত হয়ে প্রবল জোরে মাটি খোঁড়ার মেশিনের মতো নিজের লিঙ্গকে সেঁধিয়ে দিচ্ছে মেয়েটির যোনীতে। রুমের বাইরে থেকে যেই অদ্ভুত শব্দ শুনতে পেয়েছে সাজ্জাদ, সেটি ছিলো পুরুষ লোকটির কামাসোক্ত গর্জন, আর মেয়েটির উচ্ছ্বসিত শীৎকারের মিলিত রূপ। সাজ্জাদ হতবিহ্বলের মতো দাঁড়িয়ে থাকে দরজার কাছে। মস্তিষ্ক বলছে সামনে যা ঘটছে সেগুলো সব তার কল্পনা। এর কিছুই সত্যি নয়। সে জোরে জোরে দরজায় শব্দ করে। সঙ্গমরত পুরুষ লোকটি কেবল ঘাড় ঘুরিয়ে ওর দিকে ফিরে তাকায়। চমকে ওঠে সাজ্জাদ। চৌকো চোয়ালের মুখে ফিনফিনে গোঁফ, ব্যাকব্রাশ করা চুল — সাজ্জাদ এই লোকটিকে চেনে। লোকটির নাম রাসেল শিকদার। রাসেল ওর দিকে ফিরে তাকালেও কোমর নাড়ানো বন্ধ করে না। পূর্বের গতিতেই উলঙ্গ মেয়েলোকটার দু'পা ধরে তার শরীরকে খুঁড়তে থাকে, আর মুখে একটা কৌতূকপূর্ণ হাসি ঝুলিয়ে রাখে। শায়িত মেয়ে লোকটি রাসেলের দৃষ্টিকে অনুসরণ করে সাজ্জাদকে দরজার কাছে দেখতে পায়। মাথা উঁচু করে সাজ্জাদের চোখে চোখ রাখে। এতক্ষণ পরে সাজ্জাদ বুঝতে পারে মেয়েটির পরিচয়। সারা শরীর কাঁপতে থাকে ওর। মেয়েটিরও যেন হুঁশ ফেরে। এক ধাক্কায় রাসেলকে সরিয়ে দেয় সে। তারপর নগ্ন শরীরেই ছুটে আসতে থাকে ওর দিকে।
"দাঁড়া সাজুসোনা, শোন আমার কথা...''
মেয়েটি দরজায় পৌছানোর আগেই সাজ্জাদ ছুটে পালাতে চেষ্টা করে। কিন্তু সেটা সম্ভব হয় না। লাইব্রেরী রুমের কার্পেটে হোচট খেয়ে পড়ে জ্ঞান হারায় সে। পুরোপুরি জ্ঞান হারানোর ঠিক আগের মুহূর্তে কেবল অনেক দূর থেকে ম্রিয়মান শব্দে মেয়েলি কণ্ঠের 'সাজু, সাজু' ডাক শুনতে থাকে সে। কণ্ঠটি আর কারো নয় — তার মা, শায়লা চৌধূরীর।
****
মোবাইল ফোনের রিং টোনের শব্দে ঘুম ভাঙ্গে সাজ্জাদের। আধো ঘুম আধো জাগরণের মাঝে কল রিসিভ করে বলে, " হ্যালো।"
"সাজ্জাদ, আমি এডভোকেট হাসানুল করিম। তোমার হাসান আঙ্কেল।"
"স্লামালিকুম আঙ্কেল, কেমন আছেন?" ঘুম ঘুম কণ্ঠে উত্তর দেয় সে।
"ওয়ালাইকুম। ভালো আছি বাবা। তুমি কেমন আছো?''
" জ্বি। ভালো আছি।"
"বেশ। একটা জরুরি প্রয়োজনে তোমাকে কল দিলাম। প্রয়োজনটা আসলেই তোমারই। আমি কেবলই বার্তাবাহক।"
সাজ্জাদ ভ্রু কুঁচকে কয়েক মুহূর্ত চিন্তা করে। তেমন জরুরি কিছু ওর মনে পড়ে না।
ওপাশ থেকে এডভোকেট সাহেব বলতে থাকেন, "তোমার বাবা মারা যাওয়ার আগে নগদ কয়েক কোটি টাকা ব্যাঙ্কে রেখে গেছেন। এছাড়া বাড়ি, গাড়ি, ফ্যাক্টরি ও অন্যান্য সম্পদ মিলিয়ে প্রায় শ কোটি টাকার হিসাব নিকাশ আছে। তোমার মা যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন তিনিই এসব দেখেছেন। এখন তোমার বাবার একমাত্র সন্তান হিসেবে এগুলো বুঝে নেওয়ার সময় হয়েছে। তুমি এক কাজ করো। আজকে দুপুরে লাঞ্চের আগে আমার অফিসে চলে আসো। এখানেই লাঞ্চ করার ফাঁকে তোমাকে সমস্ত লিগ্যাল প্রসিডিউর সম্পর্কে বুঝিয়ে বলবো।"
সাজ্জাদের কাছে এই বিষয়টা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ছিলো। ছাত্রাবস্থায় মাসে একটা ভালো এমাউন্টের হাত খরচ পেয়েছে। এরপর নিজে ইনকাম করতে শুরু করলে নিজের মিনিমালিস্টিক লাইফে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে বাপের কোটি টাকার হিসেব নিয়ে কখনো মাথা ঘামাতে হয়নি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে না চাইতেও এসব বিষয়ে ঢুকতে হবে।
"জ্বি আচ্ছা আঙ্কেল। আমি আজকে চলে আসবো।"
''অল রাইট মাই বয়। টেক কেয়ার।"
ফোন রেখে বিছানায় উঠে বসতে গিয়ে টের পায় একটা হাত ওর কোমর জড়িয়ে আছে। পাশ ফিরে হাতের মালিককে লক্ষ করে সে। ঘুমের রেশ পুরোপুরি কাটেনি বলেই কী না সাজ্জাদের দৃষ্টিভ্রম হয়। চমকে ওঠে সে। ঘন চুলে মুখ ঢেকে থাকায় বিভ্রান্ত মন তাকে এমন একজনের চেহারা দেখায় যার এই মুহূর্তে ওর পাশে থাকা সম্ভব নয়। হাত বাড়িয়ে চুলগুলো সরিয়ে দেয় মুখের উপর থেকে। পরক্ষণেই ভুল ভাঙে তার।
এই মেয়েটির নাম শাহেনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্রী। সাজ্জাদ ঐ বিভাগে ছবি আঁকা শেখায়।
শাহেনা বেশ আদুরে ভঙ্গিতে ঘুমিয়ে আছে। টিন এজ বয়সের কচি একটা মুখ। গোল কপোল, আর ছোট্ট চিবুকের মাঝে কাটা কাটা নাক, চোখ। গায়ের বর্ণ ঠিক ফর্সাও নয়, আবার শ্যামলাও নয়। অনেকটা ল্যাটিনা মেয়েদের মতো ক্রিম কালারের। এই ধরণের গায়ের রঙের মেয়েদের ত্বক সাধারণত খুব মসৃণ হয়। এই মেয়েটিও তার ব্যতিক্রম নয়। মুখটা একদম দাগহীন, নিখুঁত। ধনুকের মতো বাঁকা পাতলা ঠোঁটের ফাঁকে সাদা দাঁত দেখা যাচ্ছে।
মন কেন এরকম বিভ্রান্তিতে ফেললো সাজ্জাদ জানে না। আপাতত নিজেকে শান্ত করা প্রয়োজন। সে নীচু হয়ে শাহেনার ঠোঁটে আলতো চুমু খেলো কয়েকটা। অচীরেই সেগুলো গাঢ় চুমুতে পরিণত হতে লাগলো। হাত বাড়িয়ে মেয়েটার শরীরের উপর থেকে পাতলা চাদর সরিয়ে ফেললো সে। কোমর ধরে নিজের কাছে টেনে আনলো। শাহেনার তরুলতার মতো শরীরে স্তনজোড়া ব্যতিক্রমভাবে বড় ও পরিপুষ্ট। সাজ্জাদের কাছে মনে হয় এই মেয়েটার শরীরের তুলনায় স্তনের বয়স অন্তত পাঁচ বছর বেশি। অর্থাৎ শরীরের বয়স যদি ২০ বছর হয়। তবে স্তনের বয়স হবে ২৫ বছর।
ঘুমন্ত অবস্থাতেও শাহেনার শরীর ওর স্পর্শে সাড়া দিচ্ছে। নিজের বুকে শাহেনার শক্ত হয়ে ওঠা স্তনবৃন্তের খোঁচা টের পেলো। ঠোঁট থেকে মুখ সরিয়ে শাহেনার স্তনের দিকে মনোযোগ দেয় সে। কাত হয়ে শুয়ে থাকার কারণে একটার উপরে অন্যটা তাল খেয়ে আছে। ক্রিম রঙের ত্বকের মাঝে খয়েরি রঙের বোঁটা, আর ঠিক পয়সার মতো গোলাকার এরিওলা। শুয়ে থাকা অবস্থাতেও স্তনগুলো যে বেশ পোক্ত বোঝা যায়। নিঃসন্দেহে যে কোন মেয়ের জন্য অনেক বড় প্রকৃতিপ্রদত্ত আশীর্বাদ। ক্লাসের প্রথম দিনেই অনেক মেয়ের মাঝে শাহেনার এই সম্পদগুলো বিশেষভাবে চোখে পড়েছিলো। যেহেতু সাজ্জাদ ছবি আঁকে। তাই যে কোন মানুষের "আউট অব অর্ডিনারি" কোন শারীরিক বৈশিষ্ট্য সহজেই তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
সাজ্জাদ ছোট্ট বাচ্চাদের মতো শাহেনার স্তনের বোঁটায় আলতো করে দাঁত কাটে। নরম করে কামড়ে ধরে ছেঁড়ে দেয়। 'ইশ' — চাপা শব্দ করে ওঠে শাহেনা। যদিও তার চোখ বন্ধ।
সাজ্জাদ পালাক্রমে স্তন দুটোর বোঁটাগুলোয় জ্বিভের ডগা দিয়ে সুড়সুড়ি দেয়। বাছুর যেভাবে গাভীর ওলানে ধাক্কা মারে সাজ্জাদও সেভাবে নাকের ডগা দিয়ে শাহেনার পুষ্ট স্তনের বোঁটায় ধাক্কা দেয়। ''আহহাহ! উফ!" — কামোত্তেজক আওয়াজ বের হয় শাহেনার মুখ দিয়ে।
শাহেনার স্তন নিয়ে খেলার সময়ে ওর উরুতেও হাত বুলাচ্ছিলো সাজ্জাদ। উরু থেকে পাছায়, পাছা থেকে উরুতে হাত বুলাতে বুলাতে দুই উরুর মাঝখানে আঙ্গুল দিয়ে স্পর্শ করে। একেবারে ভিজে গেছে জায়গাটা। অর্থাৎ সাজ্জাদের প্রাথমিক কাজ শেষ। এখন পরবর্তী ধাপে যাওয়ার সময় হয়েছে। কিন্তু সেটা না করে বিছানা ছেড়ে নেমে যায় সে। চোখ বন্ধ থাকা অবস্থাতেই ভ্রু কোঁচকায় শাহেনা। প্রত্যাশা অপূর্ণ থাকলে বিরক্ত হওয়ায় স্বাভাবিক।
সাজ্জাদের এপার্টমেন্টটা অনেকটা স্টুডিওর স্টাইলের। নিজের রুচি অনুযায়ী সম্পূর্ণ ইন্টেরিওরটা তৈরি করে নিয়েছে। জানালার পাশে ক্যানভাসের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো সে। ক্যানভাসে একটা অসম্পূর্ণ ছবি আঁকা রয়েছে। কেবল এক জোড়া চোখের ছবি স্পষ্ট হয়েছে রঙ তুলির আঁচড়ে। সাজ্জাদ অন্যমনস্ক হয়ে সেই ছবির দিকে তাকিয়ে রইলো।
শাহেনা উঠে এসে ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। নরম হাত দিয়ে বিলি কাটে সাজ্জাদের বুকে আর পেটের লোমের উপরে।
"কী ব্যাপার? চলে আসলে যে?"
সাজ্জাদ মৃদু হাসলো, কিন্তু উত্তর দিলো না।
"কার ছবি আঁকছো?"
"এখনো জানি না।"
"রেফারেন্স ছাড়াই এত সুন্দর এঁকেছো?"
"হ্যাঁ। বলতে পারো।"
"আমার সেটা মনে হয় না।"
"মানে?"
"এই চোখগুলো অসম্ভব জীবন্ত। তার মানে তুমি সচেতনভাবেই আঁকছো। তুমি জানো এগুলো কার চোখ। হয় তুমি বলতে চাচ্ছো না অথবা নিজের কাছেই লুকোচ্ছো।"
সাজ্জাদ ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে থাকে নিজের আঁকা ছবির দিকে। শাহেনার কথাটি কী সত্যি? ওর অবচেতন মন কী ওর কাছ থেকে কিছু লুকিয়ে রাখছে?
অন্যমনষ্ক সাজ্জাদ অনুভব করে ওর অর্ধ উত্থিত লিঙ্গটাকে শাহেনা মুঠ করে ধরেছে। ওর পিঠের সাথে বুক ঠেসে ধরে সামনের দিকে হাত উঠানামা করে ধীরে ধীরে লিঙ্গটাকে মন্থন করছে। আহ! বেশ আরাম অনুভব করে সাজ্জাদ। কাম-আবেশে চোখ বন্ধ করে সে। আবারো তার মন চাতুরী শুরু করে। শরীরে স্পর্শ অনুভব করছে শাহেনার। কিন্তু মানসপটে দেখছে অন্য এক নিষিদ্ধ রমণীর মুখ। এমন সময় কলিং বেল বেজে ওঠে। ধ্যান ভঙ্গ হয় দুই নরনারীর।
"কে আসলো এখন?" শাহেনার প্রশ্ন। সাজ্জাদও অনুমান করতে পারলো না। নিকট বন্ধুরা প্রয়োজন ছাড়া তার কাছে আসে না। তবে আসার আগে অন্তত কল দিয়ে জানায়।
এখানে শায়লা পাথরের সিঁড়ির উপরে ক্যামেরার দিকে সামান্য মুখ ঘুরিয়ে বসে আছে। মাথায় গোলাকার চাইনিজ হ্যাট, চোখে সানগ্লাস, পরনে লাল রঙের টি শার্ট, নীল রঙের জিন্স প্যান্ট। শায়লার দৃষ্টি দূরে কোথাও নিবদ্ধ। ক্যামেরা যেদিকে, ঐদিকের হাতটা শরীরের পেছনে মেঝেতে ভর দিয়ে রাখা, অন্য হাতটি দিয়ে হ্যাটের কিনারা স্পর্শ করে আছে।
এক পাশ থেকে ছবি তোলার কারণে শায়লাকে সম্পূর্ণ অন্যরকম লাগছে। মনে হচ্ছে যেন নব্বই দশকের নায়িকাদের মতো কোন ট্যাবলয়েড পত্রিকার জন্য পোজ দিয়েছে সে। শায়লার স্ট্রেইট করা সিল্কি চুলে রোদের খেলা, গায়ের সাথে লেগে থাকা টি শার্ট আর উরুতে কামড়ে ধরা স্লিমকাট জিন্স সবকিছু মিলিয়ে এই ছবিটা যেন সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমি এক শায়লা চৌধূরীর প্রতিচ্ছবি। ওর মায়ের এমন ছবি কে তুলে দিয়েছিলো? কবে তোলা হয়েছিলো? সাজ্জাদের মনে নানান প্রশ্ন উঁকি দেয়। কী মনে করে ছবিটা এলবাম থেকে বের করে পেছনে উল্টায়। সেখানে শুকিয়ে যাওয়া বলপয়েন্টের কালিতে লেখা,
'The Grand Palace, Thailand,
Thanks for the gift.
Yours,
নীচে প্যাঁচানো হাতে সই করা। পুরো সই না পড়া গেলেও শুরুটা R দিয়ে সেটা বোঝা যাচ্ছে।
সাজ্জাদ পুনরায় ছবিটা যথাস্থানে রেখে এলবামটা বেড সাইড টেবিলের উপরে ছুঁড়ে ফেলে। সেটা পিছলে নীচে পড়ে গেলেও ফিরে তাকায় না। টেবিলের ড্রয়ার থেকে ঘুমের ঔষধের পাতা বের করে ২টা ট্যাবলেট খেয়ে ধপাস করে শুয়ে পড়ে বিছানায়।
শায়লার দাফনের পরে নানান ঝামেলায় দেরী হয়ে যাওয়ায় আজ রাতটা এই বাড়িতেই থেকে গেছে সে। বহুবছর পর নিজের রুমে রাত কাটাচ্ছে। যদিও এখন মনে হচ্ছে কাজটা ঠিক হয়নি। সারাক্ষণই মনের ভিতরে কেমন যেন অস্বস্তি কাজ করছে।
সিলিং এর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে নিজের মনকে নানাভাবে বুঝাতে থাকে সাজ্জাদ। প্রথমত ২টা ঘুমের ঔষধ খেয়েছে। শীঘ্রই এগুলো কাজ করা শুরু করবে। এক ঘুমেই রাত পার করে দেবে। তারপর আগামীকাল সকালেই এ বাড়ি থেকে বেরিয়ে সোজা নিজের আস্তানায় ফিরে যাবে। দ্বিতীয়ত, ঘুম আসার আগে নিজের মনকে ডাইভার্ট করা প্রয়োজন। এমনিতে পুরো বাড়ি যে একদমই ফাঁকা তা বলা যায় না। গেটে ১ জন দারোয়ান আছে। বাড়ির ভেতরে ১ জন কেয়ারটেকার ও ১ জন বাবুর্চি আছে। ভয়ের তেমন কিছুই নেই। তারপরেও অনেক বছর পর পুরানো বাড়িতে হুট করে রাত কাটাতে গেলে মনের ভিতর অজানা চাপ সৃষ্টি হয়। তাই মনকে ডাইভার্ট করার জন্য সাজ্জাদ অন্যকিছু নিয়ে ভাবার চেষ্টা করে। আচমকা জেরিনের কথা মনে এলো ওর। মেয়েটিকে খুব বেশিক্ষণ দেখার সুযোগ পায়নি। তাই চোখ বন্ধ করে জেরিনের চেহারাটা মনে করার চেষ্টা করে সে।
ফর্সা, সুন্দর, ডিম্বাকার মুখ,
কাজল দেওয়া টানা টানা চোখ,
গোলাপী বাঁকা ঠোঁট,
আর... আর...
টুকরো টুকরো ইনফো গুলো মিলিয়ে একটা ডিটেইলড চেহারা দাঁড় করানো যায় কি!
নাহ! ঠিক আসছে না।
কেবল সাদা রঙের সেলোয়ার কামিজ পরিহিত একটি শরীর দেখতে পাচ্ছে সাজ্জাদ। সুগঠিত, পরিপূর্ণ একটি রমণীর শরীর। গোল দুই উরুর মাঝে রহস্যময় সন্ধিক্ষণ, কলসীর কাঁধের মতো ঢেউ খেলা কোমর... বুকের উপর সাদা ওড়না...এই তো...এই তো... সাজ্জাদ আরেকটু চেষ্টা করে জেরিনের মুখটা দেখার জন্য।
কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সে যে মুখটা দেখতে পায় সেটা তার পূর্বপরিচিত! যেন বহুকাল ধরে এই মুখটাকে চেনে সে! এই মুখটি সাজ্জাদের মা, শায়লা চৌধুরীর। বিয়ের আসরে জবুথবু হয়ে বসে থাকা শায়লা চৌধুরী নয়। হ্যাট মাথায় মোহনীয় ভঙ্গীতে বসে থাকা সেই শায়লা চৌধুরী। সাজ্জাদ অস্বস্তিতে ছটফট করতে থাকে। জেরিনের মুখের জায়গায় শায়লাকে কেন দেখছে সে! কিছুক্ষণের মধ্যেই জেরিনের (কিংবা শায়লার) পাশে আরেকজনকে এসে দাঁড়াতে দেখে। একজন যুবক পুরুষ... জিন্সের শার্ট, কালো প্যান্ট, ফিনফিনে গোঁফ, ব্যাক ব্রাশ চুল... এই লোকটিকেও চেনে সাজ্জাদ। এই লোকটির নাম রাসেল। রাসেল শিকদার। জেরিনের বাবা। কিন্তু এখানে রাসেলকে মোটেও জেরিনের বাবার মতো লাগছে না। বরং লোকটা জেরিনের (না কি শায়লার) কোমরে হাত দিয়ে আছে, হাসছে দুজনে। সাজ্জাদ ছুটে পালাতে চাইলো ওদের কাছ থেকে। অনেক দূরে।
অনেক জোরে দৌড়াতে থাকলো সে। ওদের থেকে যত দূরে সম্ভব পালাতে চায়। অন্ধকার রাস্তায় দৌড়াতে দৌড়াতে সামনে একটা খোলা দরজা দেখতে পায়। ওখানেই পৌছাতে হবে তাকে। হঠাৎ পা পিছলে পড়ে যায় সে। সারা শরীরে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি খেয়ে চোখ খোলে সাজ্জাদ। বিছানায় উঠে বসে। চোখ খোলার পরেও বুঝতে পারছে না এখনো স্বপ্ন দেখছে না কি বাস্তবে ফিরে এসেছে? ঘরটা এমন দুলছে কেন!
সাজ্জাদের শরীরটা যেন তার নিজের নিয়ন্ত্রণে নেই। পায়ে পায়ে বিছানা থেকে নেমে ঘরের বাইরে চলে আসে সে। ওর শোবার ঘর থেকে বের হলে ছোট্ট একটি খোলা জায়গা পড়ে, যেটা একসময় লিভিং রুম ও পারিবারিক লাইব্রেরি হিসেবে ব্যবহার করা হতো। নিজের ঘরের সামনে থেকে লাইব্রেরির ঠিক অপর পাশেই বাবা মায়ের বেডরুমের দরজা দেখতে পাচ্ছে সাজ্জাদ। ঐ ঘরের আধ খোলা দরজা থেকে অল্প অল্প আলো এসে পড়ছে বাইরে। কিসের যেন শব্দও শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। কে আছে ও ঘরে? কে?
সাজ্জাদ কোন এক নিষিদ্ধ আকর্ষণের টানে ঐ ঘরের দিকে হাঁটতে থাকে, পা টিপে টিপে। শৈশবে অনেকসময় রাতে একা একা থাকতে ভয় লাগলে এভাবেই বাপ মায়ের ঘরে গিয়ে হাজির হতো। কিন্তু এখন কেন এরকম করছে সাজ্জাদ জানে না। ও যেন ঘোরের ভিতরে আছে।
দরজার কাছাকাছি আসার পর ঘরের ভেতরকার শব্দ আরো স্পষ্ট হয়। কয়েক ধরণের শব্দের মিশ্রণ বলা যায়। সাজ্জাদের মস্তিষ্ক বলছে এই শব্দ তার পূর্ব পরিচিত। দরজার কাছে পৌছে দরজাটা পূর্বের চেয়ে সামান্য সরিয়ে দিলো। ওর বাবা মায়ের বিশাল মাস্টার বেডরুমের ঠিক মাঝখানে অবস্থিত বিছানাসহ প্রায় সম্পূর্ণ ঘরটি দেখতে পাচ্ছে সে। ঘরে থাকা বিশাল এলইডি টিভি চালু আছে। কোন একটা গানের সুর বাজছে সেখানে।
"Kisses on the foreheads of the lovers
wrapped in your arms
You've been hiding them in hollowed out
pianos left in the dark"
সেই সুরের সাথে মিশে যাচ্ছে আরো কিছু শব্দ। বিছানার পায়ের কাছে মেঝেতে দাঁড়িয়ে আছে একজন লোক, লম্বা পেশিবহুল শরীর, গায়ে কোন কাপড় না থাকায় সাজ্জাদ তার পিছনের দিকটা আপাদমস্তক স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে। লোকটার সামনে বিছানায় একজন মেয়ে মানুষ নগ্ন হয়ে শুয়ে আছে — শঙ্খের মতো ফর্সা তার গায়ের রঙ, লম্বা খোলা চুল ছড়িয়ে আছে চারিদিকে। তার উলম্ব পা দুটি দু'হাতে শক্ত করে ধরে উলঙ্গ পুরুষ লোকটি সজোরে তালে তালে কোমর নাড়িয়ে যাচ্ছে সামনে পেছনে। মেয়েটির উরু ও নিতম্বের সঙ্গে পুরুষটির শরীরের ক্রমাগত আঘাতে শব্দ তৈরি হচ্ছে — থাপ! থাপ! থাপ! থাপ!
সাজ্জাদ পুরুষটির দুপায়ের ফাঁক দিয়ে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে যে মেয়েটির শরীরের ভেতরে কীভাবে একটা পুরুষাঙ্গ বার বার ঢুকছে, আর বের হচ্ছে...
আবার ঢুকছে,
আবার বের হচ্ছে।
যেন একটা মেশিন কাজ করে যাচ্ছে।
প্রতিবার লিঙ্গ সেঁধানোর সময়ে পুরুষটির পাছার মাংশ শক্ত হয়ে যাচ্ছে। আবার বের করার সময়ে শিথিল হচ্ছে। আবার শক্ত হয়ে প্রবল জোরে মাটি খোঁড়ার মেশিনের মতো নিজের লিঙ্গকে সেঁধিয়ে দিচ্ছে মেয়েটির যোনীতে। রুমের বাইরে থেকে যেই অদ্ভুত শব্দ শুনতে পেয়েছে সাজ্জাদ, সেটি ছিলো পুরুষ লোকটির কামাসোক্ত গর্জন, আর মেয়েটির উচ্ছ্বসিত শীৎকারের মিলিত রূপ। সাজ্জাদ হতবিহ্বলের মতো দাঁড়িয়ে থাকে দরজার কাছে। মস্তিষ্ক বলছে সামনে যা ঘটছে সেগুলো সব তার কল্পনা। এর কিছুই সত্যি নয়। সে জোরে জোরে দরজায় শব্দ করে। সঙ্গমরত পুরুষ লোকটি কেবল ঘাড় ঘুরিয়ে ওর দিকে ফিরে তাকায়। চমকে ওঠে সাজ্জাদ। চৌকো চোয়ালের মুখে ফিনফিনে গোঁফ, ব্যাকব্রাশ করা চুল — সাজ্জাদ এই লোকটিকে চেনে। লোকটির নাম রাসেল শিকদার। রাসেল ওর দিকে ফিরে তাকালেও কোমর নাড়ানো বন্ধ করে না। পূর্বের গতিতেই উলঙ্গ মেয়েলোকটার দু'পা ধরে তার শরীরকে খুঁড়তে থাকে, আর মুখে একটা কৌতূকপূর্ণ হাসি ঝুলিয়ে রাখে। শায়িত মেয়ে লোকটি রাসেলের দৃষ্টিকে অনুসরণ করে সাজ্জাদকে দরজার কাছে দেখতে পায়। মাথা উঁচু করে সাজ্জাদের চোখে চোখ রাখে। এতক্ষণ পরে সাজ্জাদ বুঝতে পারে মেয়েটির পরিচয়। সারা শরীর কাঁপতে থাকে ওর। মেয়েটিরও যেন হুঁশ ফেরে। এক ধাক্কায় রাসেলকে সরিয়ে দেয় সে। তারপর নগ্ন শরীরেই ছুটে আসতে থাকে ওর দিকে।
"দাঁড়া সাজুসোনা, শোন আমার কথা...''
মেয়েটি দরজায় পৌছানোর আগেই সাজ্জাদ ছুটে পালাতে চেষ্টা করে। কিন্তু সেটা সম্ভব হয় না। লাইব্রেরী রুমের কার্পেটে হোচট খেয়ে পড়ে জ্ঞান হারায় সে। পুরোপুরি জ্ঞান হারানোর ঠিক আগের মুহূর্তে কেবল অনেক দূর থেকে ম্রিয়মান শব্দে মেয়েলি কণ্ঠের 'সাজু, সাজু' ডাক শুনতে থাকে সে। কণ্ঠটি আর কারো নয় — তার মা, শায়লা চৌধূরীর।
****
মোবাইল ফোনের রিং টোনের শব্দে ঘুম ভাঙ্গে সাজ্জাদের। আধো ঘুম আধো জাগরণের মাঝে কল রিসিভ করে বলে, " হ্যালো।"
"সাজ্জাদ, আমি এডভোকেট হাসানুল করিম। তোমার হাসান আঙ্কেল।"
"স্লামালিকুম আঙ্কেল, কেমন আছেন?" ঘুম ঘুম কণ্ঠে উত্তর দেয় সে।
"ওয়ালাইকুম। ভালো আছি বাবা। তুমি কেমন আছো?''
" জ্বি। ভালো আছি।"
"বেশ। একটা জরুরি প্রয়োজনে তোমাকে কল দিলাম। প্রয়োজনটা আসলেই তোমারই। আমি কেবলই বার্তাবাহক।"
সাজ্জাদ ভ্রু কুঁচকে কয়েক মুহূর্ত চিন্তা করে। তেমন জরুরি কিছু ওর মনে পড়ে না।
ওপাশ থেকে এডভোকেট সাহেব বলতে থাকেন, "তোমার বাবা মারা যাওয়ার আগে নগদ কয়েক কোটি টাকা ব্যাঙ্কে রেখে গেছেন। এছাড়া বাড়ি, গাড়ি, ফ্যাক্টরি ও অন্যান্য সম্পদ মিলিয়ে প্রায় শ কোটি টাকার হিসাব নিকাশ আছে। তোমার মা যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন তিনিই এসব দেখেছেন। এখন তোমার বাবার একমাত্র সন্তান হিসেবে এগুলো বুঝে নেওয়ার সময় হয়েছে। তুমি এক কাজ করো। আজকে দুপুরে লাঞ্চের আগে আমার অফিসে চলে আসো। এখানেই লাঞ্চ করার ফাঁকে তোমাকে সমস্ত লিগ্যাল প্রসিডিউর সম্পর্কে বুঝিয়ে বলবো।"
সাজ্জাদের কাছে এই বিষয়টা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ছিলো। ছাত্রাবস্থায় মাসে একটা ভালো এমাউন্টের হাত খরচ পেয়েছে। এরপর নিজে ইনকাম করতে শুরু করলে নিজের মিনিমালিস্টিক লাইফে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে বাপের কোটি টাকার হিসেব নিয়ে কখনো মাথা ঘামাতে হয়নি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে না চাইতেও এসব বিষয়ে ঢুকতে হবে।
"জ্বি আচ্ছা আঙ্কেল। আমি আজকে চলে আসবো।"
''অল রাইট মাই বয়। টেক কেয়ার।"
ফোন রেখে বিছানায় উঠে বসতে গিয়ে টের পায় একটা হাত ওর কোমর জড়িয়ে আছে। পাশ ফিরে হাতের মালিককে লক্ষ করে সে। ঘুমের রেশ পুরোপুরি কাটেনি বলেই কী না সাজ্জাদের দৃষ্টিভ্রম হয়। চমকে ওঠে সে। ঘন চুলে মুখ ঢেকে থাকায় বিভ্রান্ত মন তাকে এমন একজনের চেহারা দেখায় যার এই মুহূর্তে ওর পাশে থাকা সম্ভব নয়। হাত বাড়িয়ে চুলগুলো সরিয়ে দেয় মুখের উপর থেকে। পরক্ষণেই ভুল ভাঙে তার।
এই মেয়েটির নাম শাহেনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্রী। সাজ্জাদ ঐ বিভাগে ছবি আঁকা শেখায়।
শাহেনা বেশ আদুরে ভঙ্গিতে ঘুমিয়ে আছে। টিন এজ বয়সের কচি একটা মুখ। গোল কপোল, আর ছোট্ট চিবুকের মাঝে কাটা কাটা নাক, চোখ। গায়ের বর্ণ ঠিক ফর্সাও নয়, আবার শ্যামলাও নয়। অনেকটা ল্যাটিনা মেয়েদের মতো ক্রিম কালারের। এই ধরণের গায়ের রঙের মেয়েদের ত্বক সাধারণত খুব মসৃণ হয়। এই মেয়েটিও তার ব্যতিক্রম নয়। মুখটা একদম দাগহীন, নিখুঁত। ধনুকের মতো বাঁকা পাতলা ঠোঁটের ফাঁকে সাদা দাঁত দেখা যাচ্ছে।
মন কেন এরকম বিভ্রান্তিতে ফেললো সাজ্জাদ জানে না। আপাতত নিজেকে শান্ত করা প্রয়োজন। সে নীচু হয়ে শাহেনার ঠোঁটে আলতো চুমু খেলো কয়েকটা। অচীরেই সেগুলো গাঢ় চুমুতে পরিণত হতে লাগলো। হাত বাড়িয়ে মেয়েটার শরীরের উপর থেকে পাতলা চাদর সরিয়ে ফেললো সে। কোমর ধরে নিজের কাছে টেনে আনলো। শাহেনার তরুলতার মতো শরীরে স্তনজোড়া ব্যতিক্রমভাবে বড় ও পরিপুষ্ট। সাজ্জাদের কাছে মনে হয় এই মেয়েটার শরীরের তুলনায় স্তনের বয়স অন্তত পাঁচ বছর বেশি। অর্থাৎ শরীরের বয়স যদি ২০ বছর হয়। তবে স্তনের বয়স হবে ২৫ বছর।
ঘুমন্ত অবস্থাতেও শাহেনার শরীর ওর স্পর্শে সাড়া দিচ্ছে। নিজের বুকে শাহেনার শক্ত হয়ে ওঠা স্তনবৃন্তের খোঁচা টের পেলো। ঠোঁট থেকে মুখ সরিয়ে শাহেনার স্তনের দিকে মনোযোগ দেয় সে। কাত হয়ে শুয়ে থাকার কারণে একটার উপরে অন্যটা তাল খেয়ে আছে। ক্রিম রঙের ত্বকের মাঝে খয়েরি রঙের বোঁটা, আর ঠিক পয়সার মতো গোলাকার এরিওলা। শুয়ে থাকা অবস্থাতেও স্তনগুলো যে বেশ পোক্ত বোঝা যায়। নিঃসন্দেহে যে কোন মেয়ের জন্য অনেক বড় প্রকৃতিপ্রদত্ত আশীর্বাদ। ক্লাসের প্রথম দিনেই অনেক মেয়ের মাঝে শাহেনার এই সম্পদগুলো বিশেষভাবে চোখে পড়েছিলো। যেহেতু সাজ্জাদ ছবি আঁকে। তাই যে কোন মানুষের "আউট অব অর্ডিনারি" কোন শারীরিক বৈশিষ্ট্য সহজেই তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
সাজ্জাদ ছোট্ট বাচ্চাদের মতো শাহেনার স্তনের বোঁটায় আলতো করে দাঁত কাটে। নরম করে কামড়ে ধরে ছেঁড়ে দেয়। 'ইশ' — চাপা শব্দ করে ওঠে শাহেনা। যদিও তার চোখ বন্ধ।
সাজ্জাদ পালাক্রমে স্তন দুটোর বোঁটাগুলোয় জ্বিভের ডগা দিয়ে সুড়সুড়ি দেয়। বাছুর যেভাবে গাভীর ওলানে ধাক্কা মারে সাজ্জাদও সেভাবে নাকের ডগা দিয়ে শাহেনার পুষ্ট স্তনের বোঁটায় ধাক্কা দেয়। ''আহহাহ! উফ!" — কামোত্তেজক আওয়াজ বের হয় শাহেনার মুখ দিয়ে।
শাহেনার স্তন নিয়ে খেলার সময়ে ওর উরুতেও হাত বুলাচ্ছিলো সাজ্জাদ। উরু থেকে পাছায়, পাছা থেকে উরুতে হাত বুলাতে বুলাতে দুই উরুর মাঝখানে আঙ্গুল দিয়ে স্পর্শ করে। একেবারে ভিজে গেছে জায়গাটা। অর্থাৎ সাজ্জাদের প্রাথমিক কাজ শেষ। এখন পরবর্তী ধাপে যাওয়ার সময় হয়েছে। কিন্তু সেটা না করে বিছানা ছেড়ে নেমে যায় সে। চোখ বন্ধ থাকা অবস্থাতেই ভ্রু কোঁচকায় শাহেনা। প্রত্যাশা অপূর্ণ থাকলে বিরক্ত হওয়ায় স্বাভাবিক।
সাজ্জাদের এপার্টমেন্টটা অনেকটা স্টুডিওর স্টাইলের। নিজের রুচি অনুযায়ী সম্পূর্ণ ইন্টেরিওরটা তৈরি করে নিয়েছে। জানালার পাশে ক্যানভাসের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো সে। ক্যানভাসে একটা অসম্পূর্ণ ছবি আঁকা রয়েছে। কেবল এক জোড়া চোখের ছবি স্পষ্ট হয়েছে রঙ তুলির আঁচড়ে। সাজ্জাদ অন্যমনস্ক হয়ে সেই ছবির দিকে তাকিয়ে রইলো।
শাহেনা উঠে এসে ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। নরম হাত দিয়ে বিলি কাটে সাজ্জাদের বুকে আর পেটের লোমের উপরে।
"কী ব্যাপার? চলে আসলে যে?"
সাজ্জাদ মৃদু হাসলো, কিন্তু উত্তর দিলো না।
"কার ছবি আঁকছো?"
"এখনো জানি না।"
"রেফারেন্স ছাড়াই এত সুন্দর এঁকেছো?"
"হ্যাঁ। বলতে পারো।"
"আমার সেটা মনে হয় না।"
"মানে?"
"এই চোখগুলো অসম্ভব জীবন্ত। তার মানে তুমি সচেতনভাবেই আঁকছো। তুমি জানো এগুলো কার চোখ। হয় তুমি বলতে চাচ্ছো না অথবা নিজের কাছেই লুকোচ্ছো।"
সাজ্জাদ ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে থাকে নিজের আঁকা ছবির দিকে। শাহেনার কথাটি কী সত্যি? ওর অবচেতন মন কী ওর কাছ থেকে কিছু লুকিয়ে রাখছে?
অন্যমনষ্ক সাজ্জাদ অনুভব করে ওর অর্ধ উত্থিত লিঙ্গটাকে শাহেনা মুঠ করে ধরেছে। ওর পিঠের সাথে বুক ঠেসে ধরে সামনের দিকে হাত উঠানামা করে ধীরে ধীরে লিঙ্গটাকে মন্থন করছে। আহ! বেশ আরাম অনুভব করে সাজ্জাদ। কাম-আবেশে চোখ বন্ধ করে সে। আবারো তার মন চাতুরী শুরু করে। শরীরে স্পর্শ অনুভব করছে শাহেনার। কিন্তু মানসপটে দেখছে অন্য এক নিষিদ্ধ রমণীর মুখ। এমন সময় কলিং বেল বেজে ওঠে। ধ্যান ভঙ্গ হয় দুই নরনারীর।
"কে আসলো এখন?" শাহেনার প্রশ্ন। সাজ্জাদও অনুমান করতে পারলো না। নিকট বন্ধুরা প্রয়োজন ছাড়া তার কাছে আসে না। তবে আসার আগে অন্তত কল দিয়ে জানায়।