29-11-2024, 12:30 PM
পর্ব: ২৩
টেলিফোনটা এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বেজে উঠল। জয়ন্ত ধরতে পারছে না। ও তখন রেডি হচ্ছে। অংশুরও হুশ নেই, টেলিফোনের শব্দ শুনেও ও' নীরব মগ্ন পড়ার টেবিলে। বিট্টু বারবার সুচিকে বলছে---মা, মা... বাজছে...
সুচি বাথরুমের মেঝেতে তখন ডাঁই করে রাখা জামা-কাপড়গুলো সাবান জলে ডোবাতে ব্যস্ত। বিরক্ত কন্ঠে বলল---ফোনটা বাজছে ধরতে পারছো না কেউ?
জয়ন্ত জামার হাতার বোঁতাম আঁটছিল আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে। টেলিফোনটা ধরতে যেতেই দেখল সুচিত্রা ভেজা হাতে এসে কোনোরকমে ফোনটা ধরেছে।
জয়ন্ত নিজের জিনিস পত্র গুছিয়ে গটগট করে নেমে গেল সিঁড়ি দিয়ে। খেয়াল হল গাড়ির চাবিটাই নেওয়া হয়নি। আবার সিঁড়ি ভেঙে উঠে এলো সে। টিভি সেটের কাছে আলমারির তাকে রাখে চাবিটা। না পেয়ে বলল---সুচি, গাড়ির চাবি কোথায়।
সুচিত্রা টেলিফোন রেখে বেডরুম থেকে চাবিটা এনে দিয়ে গম্ভীর অথচ সংযত ভাবে বলল---মিতা ফোন করেছিল, বোধ হয় তোমাকেই ফোন করতে চেয়েছিল।
জয়ন্ত ভাবখানা এমন করল যেন, কোনো কিছুই ও' শোনেনি। সুচিত্রা পুনরায় বলল---ওরা চলে যাচ্ছে আসাম। ওখানেই নির্মল দা'র চিকিৎসা হবে।
জয়ন্ত কোনোরকম উত্তর দিয়ে নেমে যাচ্ছিল তৎক্ষনাৎ। সুচি রাগ দেখিয়ে বলল---নাটক করছ কেন? তুমি কি ভেবেছ? নির্মল ঘোষ তার স্ত্রীর এই কীর্তি জানেন না? তুমি একটা পঙ্গু লোকেরও জীবন নষ্ট করেছ।
হঠাৎ সুচির এমন তীব্র রাগান্বিত কণ্ঠস্বরে জয়ন্ত স্পষ্ট বিরক্ত কণ্ঠে জবাব দিল---আমার এখন তোমার সাথে ঝগড়া করার সময় নেই।
সুচিত্রা ঘৃণিত ভাবে তাকালো যে তার দিকে, জয়ন্তের চোখ এড়ালো না। সুচি বলল---যাবার সময় একবার দেখা করে যেও।
---কার সাথে?
জয়ন্ত খুব সহজাত ভাবে আগুপিছু না ভেবেই কথাটা বললে। সুচি যেন তাতেই তেলেবেগুনয় জ্বলে উঠল। বলল---কার সাথে মানে? তোমার রক্ষিতার কথা বলছি নাকি? নেহাত ভদ্র মানুষ বলে ওর সাথে ফোনে ভদ্রভাবে কথা বলেছি। লজ্জা নেই, আরও 'সুচি দি.. সুচি দি...'করে কথা বলে।
জয়ন্ত দাঁড়ালো না। গাড়িটা বার করে বেরিয়ে গেল কর্মস্থলের দিকে। দম বন্ধ হয়ে আসছিল তার। সত্যিই আজকাল বাড়িতে দমবন্ধ হয়ে আসছে জয়ন্তের। গলি পথ পেরিয়ে বড় রাস্তায় গাড়ি উঠতেই যেন সে হাঁফ ছাড়লো।
মনের অস্থিরতাকে দমন করতে তবু পারছে না জয়ন্ত। মিতার কি দরকার ছিল বাড়ির ল্যান্ডফোনে ফোন করার। যদি নেহাতই প্রয়োজন ছিল তার মোবাইলে করতে পারতো। পরক্ষণেই জয়ন্তের মনে হল, শুধুই প্রয়োজন? জয়ন্ত মিতার দেহটাকে ভোগ করতে চেয়েছে লম্পটের মত, হ্যা সে তো লম্পটের মতই উপভোগ করতে চেয়েছিল। মিতার জন্য স্ত্রী সন্তান ত্যাগের তো তার কোনো বাসনা নেই। মিতার স্বামীর কাছেও কি মিতা তার মত ছোট হয়ে গেছে? তাদের দুজনের জীবনেই কি বিষবৃক্ষ প্রোথিত হয়েছে?
জয়ন্তর ফোনটা বাজছে। গাড়ি চালালে জয়ন্ত ফোন ধরে না। পিউয়ের ফোন বলেই ধরল সে অগত্যা। পিউ বললে---বাবা, ডিউটিতে?
---না রে মা। ডিউটি যাচ্ছি।
---আচ্ছা শোনো, আমি না ফ্লাইটের টিকিট করেছি। মাকে বলবে না। ট্রেনে এত জার্নি করতে ইচ্ছে নেই।
জয়ন্ত হাসলো। বলল---তোর ফ্লাইট কবে।
--পরশু। দুপুরে ঢুকে যাবো। বাড়িতেই লাঞ্চ করব।
---হুম্ম। তোর মা তোকে কিছু বলেছে? খানিকটা ইতস্তত হয়ে জিজ্ঞেস করল জয়ন্ত।
---কি ব্যাপারে? তোমাদের ডিভোর্সের ব্যাপারে?
---ডিভোর্স? চমকে উঠল জয়ন্ত!
পিউ হয়ত জয়ন্তের মুখোমুখি হলে পরে বুঝতে পারতো তার পিতার বিস্মিত মুখখানি। সে বলল---মা জানিয়েছে, তোমাদের পার্সোনাল লাইফ। আমার এ ব্যাপারে কিছু বলার নেই। তবে মা খুব রেগে আছে তোমার ওপর বাবা। তাই বোধ হয় সেদিন রাগ করে আমাকে এমন ডিসিশনের কথা বলেছে। এখন বোধ হয় রাগ কমে গেছে।
মেয়ের ফিক করে হাসির শব্দ কানে এলো জয়ন্তের।বলল---হুম্ম। ঠিক আছে, তোর ক্লাস নেই।
---আছে। বেরোচ্ছি।
টেলিফোনটা এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বেজে উঠল। জয়ন্ত ধরতে পারছে না। ও তখন রেডি হচ্ছে। অংশুরও হুশ নেই, টেলিফোনের শব্দ শুনেও ও' নীরব মগ্ন পড়ার টেবিলে। বিট্টু বারবার সুচিকে বলছে---মা, মা... বাজছে...
সুচি বাথরুমের মেঝেতে তখন ডাঁই করে রাখা জামা-কাপড়গুলো সাবান জলে ডোবাতে ব্যস্ত। বিরক্ত কন্ঠে বলল---ফোনটা বাজছে ধরতে পারছো না কেউ?
জয়ন্ত জামার হাতার বোঁতাম আঁটছিল আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে। টেলিফোনটা ধরতে যেতেই দেখল সুচিত্রা ভেজা হাতে এসে কোনোরকমে ফোনটা ধরেছে।
জয়ন্ত নিজের জিনিস পত্র গুছিয়ে গটগট করে নেমে গেল সিঁড়ি দিয়ে। খেয়াল হল গাড়ির চাবিটাই নেওয়া হয়নি। আবার সিঁড়ি ভেঙে উঠে এলো সে। টিভি সেটের কাছে আলমারির তাকে রাখে চাবিটা। না পেয়ে বলল---সুচি, গাড়ির চাবি কোথায়।
সুচিত্রা টেলিফোন রেখে বেডরুম থেকে চাবিটা এনে দিয়ে গম্ভীর অথচ সংযত ভাবে বলল---মিতা ফোন করেছিল, বোধ হয় তোমাকেই ফোন করতে চেয়েছিল।
জয়ন্ত ভাবখানা এমন করল যেন, কোনো কিছুই ও' শোনেনি। সুচিত্রা পুনরায় বলল---ওরা চলে যাচ্ছে আসাম। ওখানেই নির্মল দা'র চিকিৎসা হবে।
জয়ন্ত কোনোরকম উত্তর দিয়ে নেমে যাচ্ছিল তৎক্ষনাৎ। সুচি রাগ দেখিয়ে বলল---নাটক করছ কেন? তুমি কি ভেবেছ? নির্মল ঘোষ তার স্ত্রীর এই কীর্তি জানেন না? তুমি একটা পঙ্গু লোকেরও জীবন নষ্ট করেছ।
হঠাৎ সুচির এমন তীব্র রাগান্বিত কণ্ঠস্বরে জয়ন্ত স্পষ্ট বিরক্ত কণ্ঠে জবাব দিল---আমার এখন তোমার সাথে ঝগড়া করার সময় নেই।
সুচিত্রা ঘৃণিত ভাবে তাকালো যে তার দিকে, জয়ন্তের চোখ এড়ালো না। সুচি বলল---যাবার সময় একবার দেখা করে যেও।
---কার সাথে?
জয়ন্ত খুব সহজাত ভাবে আগুপিছু না ভেবেই কথাটা বললে। সুচি যেন তাতেই তেলেবেগুনয় জ্বলে উঠল। বলল---কার সাথে মানে? তোমার রক্ষিতার কথা বলছি নাকি? নেহাত ভদ্র মানুষ বলে ওর সাথে ফোনে ভদ্রভাবে কথা বলেছি। লজ্জা নেই, আরও 'সুচি দি.. সুচি দি...'করে কথা বলে।
জয়ন্ত দাঁড়ালো না। গাড়িটা বার করে বেরিয়ে গেল কর্মস্থলের দিকে। দম বন্ধ হয়ে আসছিল তার। সত্যিই আজকাল বাড়িতে দমবন্ধ হয়ে আসছে জয়ন্তের। গলি পথ পেরিয়ে বড় রাস্তায় গাড়ি উঠতেই যেন সে হাঁফ ছাড়লো।
মনের অস্থিরতাকে দমন করতে তবু পারছে না জয়ন্ত। মিতার কি দরকার ছিল বাড়ির ল্যান্ডফোনে ফোন করার। যদি নেহাতই প্রয়োজন ছিল তার মোবাইলে করতে পারতো। পরক্ষণেই জয়ন্তের মনে হল, শুধুই প্রয়োজন? জয়ন্ত মিতার দেহটাকে ভোগ করতে চেয়েছে লম্পটের মত, হ্যা সে তো লম্পটের মতই উপভোগ করতে চেয়েছিল। মিতার জন্য স্ত্রী সন্তান ত্যাগের তো তার কোনো বাসনা নেই। মিতার স্বামীর কাছেও কি মিতা তার মত ছোট হয়ে গেছে? তাদের দুজনের জীবনেই কি বিষবৃক্ষ প্রোথিত হয়েছে?
জয়ন্তর ফোনটা বাজছে। গাড়ি চালালে জয়ন্ত ফোন ধরে না। পিউয়ের ফোন বলেই ধরল সে অগত্যা। পিউ বললে---বাবা, ডিউটিতে?
---না রে মা। ডিউটি যাচ্ছি।
---আচ্ছা শোনো, আমি না ফ্লাইটের টিকিট করেছি। মাকে বলবে না। ট্রেনে এত জার্নি করতে ইচ্ছে নেই।
জয়ন্ত হাসলো। বলল---তোর ফ্লাইট কবে।
--পরশু। দুপুরে ঢুকে যাবো। বাড়িতেই লাঞ্চ করব।
---হুম্ম। তোর মা তোকে কিছু বলেছে? খানিকটা ইতস্তত হয়ে জিজ্ঞেস করল জয়ন্ত।
---কি ব্যাপারে? তোমাদের ডিভোর্সের ব্যাপারে?
---ডিভোর্স? চমকে উঠল জয়ন্ত!
পিউ হয়ত জয়ন্তের মুখোমুখি হলে পরে বুঝতে পারতো তার পিতার বিস্মিত মুখখানি। সে বলল---মা জানিয়েছে, তোমাদের পার্সোনাল লাইফ। আমার এ ব্যাপারে কিছু বলার নেই। তবে মা খুব রেগে আছে তোমার ওপর বাবা। তাই বোধ হয় সেদিন রাগ করে আমাকে এমন ডিসিশনের কথা বলেছে। এখন বোধ হয় রাগ কমে গেছে।
মেয়ের ফিক করে হাসির শব্দ কানে এলো জয়ন্তের।বলল---হুম্ম। ঠিক আছে, তোর ক্লাস নেই।
---আছে। বেরোচ্ছি।