Thread Rating:
  • 97 Vote(s) - 2.54 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery দীক্ষা লাভ - এক মায়ের পরিবর্তন
Update :17(A)


সোমবার সকাল;অজয় বড় ব্যস্ত।তাড়াতাড়ি বাড়ি থেকে বেরতে পারলেই কাজে যোগ দিতে পারবে।তাই একবার ঘরে গিয়ে নিজের টোপলায় এটা সেটা ভরছে আবার রান্না ঘরে এসে বউকে এটা কই ওটা কই জিজ্ঞেস করছে।ঊষা একটু বিরক্তই বলা যায় স্বামীর এই তাড়াহুড়োতে।সকাল থেকে তারও একদণ্ড বিশ্রাম নেই- ঝাড় দাওরে, থালা বাসন মাজও রে,রান্না বসাও রে তার সাথে এটা কই ওটা কই!ধুর ব্যাঙ

অজয় ঘরে গেছে খেতে বসার আগে শেষবারের মতো কিছু ভুলে গেল নাকি তা ঘেটে দেখতে, হ্যাঁ গামছা ভুলে গেছে আর ওই ব্রাশ।অজয় একটু গলা বাড়িয়ে বউকে বলল- 
-' ওইইইইই হুনচাও নাআআআ.....গামচা আর বিরাশডা দিয়া যাআআআও নাআআআআআ।'

কিন্তু বউয়ের থেকে কোন উত্তর পেল না। উত্তর না পেয়ে তাই আবার বলল-
--' কি কইইইইইইইইইইইইইইই...।'
-- 'হ, হুনচি তুমার ফরমাইইইইশ....খাইবার আসা বাদ দিয়ে ঢং করতেচে... অত কি নিতেচাও  অ্যাঁ...।
বউয়ের বড় গলার উত্তর শুনে অজয় একটু থতমত খেয়ে গেল।আজ একটু অন্যরকম লাগছে তার বউকে।এর আগে যাবার সময় নিজেই সব গোছগাছ করে দিত এবং কিছু ভুলে গেল কিনা তার তদারকি করত বারবার।কিন্তু আজ গোছগাছ তো দূর কিছু জিজ্ঞেস করাই মুশকিল হয়ে পরেছে।এই মুহুর্তে ব্রাশ আর গামছা ভুলে খেতে যাওয়াটাই উত্তম ভেবে অজয় রান্না ঘরের দিকে রওনা দিল।


ভাতের দলা চিবোতে চিবোতে অজয় স্ত্রীকে বলছে

--' বুঝচাও না,তুমি আইজ গগন কাকার কাচে যাইও....।'

গগনের নাম শুনে আঁতকে উঠল ঊষা।গগন মানেই হারামখোর- সুদখোর,একটু চরিত্রেরো দোষ আছে।তার কাছে যেতে বলছে!  তাছাড়া এর আগে মাত্র হাজার বারোশ টাকা সুদে নিয়েছিল অজয় ঠেকায় পরে সেই টাকা যত দেয় ততই যেন বাড়ে,কি সব প্যাঁচালো বৃদ্ধি- সরল সুদ তার আবার চক্রবৃদ্ধি বাপ রে বাপ!স্বামীর মুখে ও নাম শুনেই সেই পুরনো দাগ মনে পরে গেল।ঊষা বলে উঠল
- 'ক্যা ক্যা উনার কাছে ক্যা..।'
বউয়ের এই ভয়মাখা গলার স্বরে অজয় একটু হেসে উঠল।এই ভয়ের কারণটা তারও জানা, তবু পুরুষমানুষ সংসার চালাতে কত কি করতে হয় ভয় পেলে চলে?দরকারে ধার করবে আবার শোধও করবে। কই গতবারের সেই ধার কি সে শোধ করেনি!

অজয় স্ত্রীর ভয়মাখা মুখপানে একচিলতে মুচকি হেসে বলল-
- যাইবা আর ক্যা, কয়ডা টাহা ধার করবার এই কয়দিন তো চলা লাইগব.....বেশি না হাজার তিনেক আনলেন হইবেনে- ওই পুইজার জইন্যে পুনেরশ আর বিয়া বাড়ি দুই তিনশ'র মধ্যে কিছু এটা দিও বুঝচাও আর বাকিডা হাত খরচা.,.গুরুদেবের যাইবার সময়ও তো কিছু দকখিনা দেওয়া লাগবেনে.....।

একটু বিরতি নিয়ে অজয় আবার বলল-

 --আর বিছানার তলে হাজারডা টাহা রাখচি,সব মিলায় ঝুইলায় কইরও...।

স্বামী হাসছে কিন্তু ঊষার বুক দুরদুর করছে স্বামীর হাসিও যে নিছক শুধু তাও ঊষা বুঝতে পারছে। কেমন একটা হতাশার স্বরে ঊষা তার স্বামীকে বলে উঠল-
' তাই বইলা ধার করবা এই অসুমায়ে?
- কি করুম কও? দেখলাই তো সব.... আর কি করুম...।
--হুম বুইঝলাম, তা পুইজাডা কাইল করা গেলাই পারতা।
--ও নিয়া চিইন্তা কইরও না, কাইল গুরুদেবের সাথে কথা হইচে কইল বাড়ির গারজিয়ান একজন থাইকলেই হইল, কয় তুমি থাইকলে ভালো হইত এই আর কি।
অজয় ভাতের শেষ গ্রাসটা মুখে তুলছে তখনই ঊষা বলল-
-- আর বিয়াডা?কতদিন পর একখান বিয়া পাড়ায় হইতেছে তুমি থাকপানা?

-- আর বিয়া!প্যাট চলে না..........  হিহিহিহিহি...।
বউয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখল কেমন পাংশু হয়ে আছে তাই তাড়াতাড়ি হাসি থামিয়ে বলল- আরে তুমি আচাও বাবা আচে অমর আচে সবাই তো যাইবা  তুমরা যাওয়া মানেই তো আমার যাওয়া.......।ও হ্যাঁ বিয়া কিন্তু বুধবার না বিষুদবারে, বুধবার কালীপুইজা মানাত ছিল।
বলেই ওম্ম ওম্মম করে ভাত চিবতে লাগল অজয়।
- কি কও তুমি উনি(মন্টু) যে কইল বুধবার বিয়া,আর পুইজার কথা তো কিছু কইল না।

-- আরে বাদ দাও মন্টু কাকার কথা ভুইলা যায় বেটায়,কাইলার গোয়ামিলে সব শুনলাম তাই কইলাম, বিয়া ওই বিষুদবারেই।আর পুইজার নিমুন্তন দিয়া দিচে কাইল, তুমি সবাইরে নিয়া যাইও বুঝচাও।

- হ বুঝচি,সব ঠেকা আমার... 
বলেই একটু ভেঙচি কেটে ঊষা বেরিয়ে গেল রান্না ঘর থেকে।





অজয়ের যাবার সময় হয়ে এসেছে।গুরুদেবের ঘরে গেল প্রণাম করতে। এখনও উনি উঠেননি।অজয় পা ছুয়ে প্রণাম করে শুধু বলল- 'আমি আসি বাবা, আপনে আবার আসপেন, এই গরীবের বাড়ি মেলা কষ্ট করলেন, আপনে সুযোগ বুইঝা মাঝে মাঝে আসপেন কিন্তু, আর সবাইরে দেইখা রাইহেন এই কয়দিন। 

- তুমি কি আর আসপা না এর মধ্যে...।
 
-- না বাবা আর আসা মনে হয় হইবেনে না, তবে চেষ্টা করুম যদি কাজের চাপ না থাহে আর মালিকে যদি আসপার দেয়।

-- আইচ্ছা বাবা সাবধানে যাইও, দেখখ্যা শুইনা কাজ কইরো।
বলেই আশির্বাদের হাতখানা মাথায় রাখলেন।অজয় আবার প্রণাম করে ছেলের রুমে এসে ছেলেকে টেনে তুলল

- এই বেটা তুই উঠপি না? আমি যাইতেচি কিন্তু...। 
 বাপের কথা কানে যেতেই ধড়ফড়িয়ে উঠে পরল অমর। 
- উম্মম, কনে যাও তুমি...?
-- বেটা কামে যাই রে হিহিহিহিহি।
হাসতে লাগল অজয়।অমরের শুকনো গলা আরও শুকিয়ে গেল।বাবাও যে ছেড়ে যাচ্ছে তাকে।ছেলে থুম ধরে আছে দেখে অজয় বলল
- যা চোখে মুখে জল দিয়ায়, তোর ঘুম এহনো ভাঙে নাই, যা...। 

অমর বাইরে বেরিয়ে গেল।অজয় টোপলা টাপলি নিয়ে বেরতে বেরতে বিনোদকে প্রণাম করল- আসি বাবা....।




অজয় আগে আগে তার পাশে অমর,এবং একটু পিছে ঊষা।স্বামীকে রাস্তা অবধি এগিয়ে দিতে এসেছে।অজয় ছেলেকে এটা সেটা বোঝাচ্ছে। সেই কদম গাছটার কাছে গিয়ে অজয় দুম করে থেমে গেল নিচে দিকে চোখ করে।অমরের চোখও সেখানেই আটকে আছে, স্বামী ও ছেলে কি দেখছে?  এটা ভেবেই ঊষা দ্রুত এগিয়ে গেল,স্বামী ও ছেলে যা দেখছে তা দেখে ঊষার শ্বাস থেমে গেল।

-- এইডা এহানে ছিঁড়া পইরা রইচে ক্যা।'

ধুলোবালিতে গড়াগড়ি খাওয়া অসহায়   ব্লাউজের ছেঁড়া এক টুকরোর দিকে আঙুলের ইশারায় দেখিয়ে  অজয় বলল।অমরেরও গলা শুকিয়ে উঠল। কারণ সব সে জানে, মায়ের পরণ থেকে মাগির বাচ্চা বুড়োটা ফাৎ ফাৎ করে ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছিল।ঊষাও উপস্থিত,স্বামীর আঙুলের ইশারার দিকে আর প্রশ্নে থতমত খেয়ে আমতা আমতা করে বলতে লাগল

-- ওই তুমারে কইলাম না রাইতে পইরা যাইয়া ছিঁড়া গেচে,কত খুজলাম রাইতে আর পারলামই না।

স্বামীর প্রতি কথা গুলো বলল ঠিকই কিন্তু চোখ ছেলের দিকে- সে চোখে ঘৃনা রাগ ক্ষোভ এবং তীব্র শাসানি।অমর মায়ের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারল না নিচু করে নিল।একটা অপরাধবোধ ঘিরে ধরল যেন সাথে এই প্রথম ঘিনঘিন ভাব মায়ের প্রতি।তার মা নষ্টামি করে যেন ভুল করেনি কিন্তু তার দেখাটাই  মস্ত বড়ো  অন্যায়।অজয় আর ঊষা তখন আরও কিসব বলছিল কিন্তু অমর ডুবে ছিল গতরাতের ঘটনায়।সে ভাবনায় ছেদ পরল বাবার কথায়
-- দেইখ্যা শুইনা থাকিস সোনা, মায়রে, ঠাহুর দা, গুরুদেব সবাইরে দেইখ্যা রাখিস, কার কি নাগে আইনা দিস, আর আইজ কলেজ যাইস না হাটবার আইজ পুইজার বাজারটা কইরা নিয়া আসিস গুরুদেবের সাথে, কি পারবি তো?

অমর হ্যাঁ না কিছু বলবে তার আগে ঊষা বলল- না থাইক ওর হাটে যাওয়া লাইগব না,কলেজ যাইক...।'
বলেই সেই কটমট চোখে ছেলের দিকে তাকালো যেন ভস্ম করে দিবে।

- আইচ্ছা তুই ত্যালে কলেজেই যাই বাপ মেলা দিন তো হইল কলেজ কামাই গেল।আসি আমি দেরি হইয়া যাইতে ।'
বলেই গজগজ করে অজয় এগিয়ে চলল।
- সাবধানে যাইও, আর তাড়াতাড়ি আইস...।'
বলে ঊষা ঠায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে স্বামীর শেষযাত্রা দেখতে লাগল।

অমর আর কোন কথা না বলে বাড়ি ফিরে গেল।অমরের আর সাহস কুলাচ্ছিল না মায়ের সামনে দাঁড়ায়।গতরাতে তার বাবা যদি অমন অসময়ে তাকে না ডাকত তবে হয়ত রক্ষা পেত।'কিন্তু ললাটের লিখন কে খন্ডাতে পারে?উপায় না পেয়ে হাগতে বসেছি অজুহাত বাবার কাছে বলেছে কিন্তু অমরের দৃঢ় বিশ্বাস মা আর ওই বেজন্মাটা নিশ্চয় আসল কারণ বুঝতে পেরেছে কারণ রাতেই তার মা কেমন কটমট করে তাকে বারেবারে ঘুরছিল।একটা কথাও বলেনি,সকালে ঘুম থেকে ডাকেনি এপর্যন্ত টুশব্দটুকু না।কেন যে জেনে বুঝে অমন নিম্ন খেলা দেখতে গেলাম এই অনুশোচনাই অমরের মধ্যে কাজ করছে।সবই তো তার জানা।

অমর অনুশোচনা করলে কি হবে নিজের পরিবারের যে কেউই হোক না কেন যদি এমন অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পরেছে জানতে পারে তবে যে কেউই তা দেখা বা শোনার দেখে পিছু হটতে পারে না।পারা যায়ও না যেমন করেই হোক তা না দেখলে না শুনলে মন মানে না।অমরের ক্ষেত্রেও তাই।




     এদিকে  ঊষা শ্বশুরকে আর গুরুদেবকে খাইয়ে নিজে খেয়ে হাতের টুকটাক কাজ সেরে পরনের ময়লা শাড়িটা ছেড়ে বেরিয়ে পরল গগন পোদ্দারের বাড়ির উদ্দেশ্যে।তখন দুপুর গড়াচ্ছে,  পা'য় হেটে ঊষা চলেছে পাড়ার মাঝবরাবর মোটা রাস্তা ধরে। পূর্ব-দক্ষিণ কোণে মস্ত বড় দালান কোঠা।চারিদিক ঝা চকচকে।সিংহদ্বারের সামনে নাগকেশকের মস্ত বড় গাছ।এটাই গগন কাকার বাড়ি।ঊষা সেদিকেই যাচ্ছে।যাচ্ছে ঠিকই কিন্তু ঊষার পা যেন আর এগোচ্ছে না,মাথা ভারী হয়ে এসেছে কিলবিল করছে চিন্তা ঘৃনা  সব একসঙ্গে। চিন্তা -- স্বামী এই সময়ে ধার করছে কি করে দেনা শোধ করবে?
ঘৃনা- ছেলের জঘন্যতম কাজের জন্য। কি বেজন্মা সে পেটে ধরেছে! এতটুকু লজ্জা করল না লুকিয়ে লুকিয়ে সব দেখতে! হায় রে কেমন নির্লজ্জের মতো বলেছিল- আমি হাইগবার বইচি।   কিছুই আর বাদ নেই সব শেষ সব কিছু শেষ সব দেখেছে,সেদিন রান্না ঘরে আর গতকাল জোছনার ভরা আলোতে।ঊষা বার বার মনে হচ্ছে চাঁদের মতো সেও আজ কলঙ্ক। এখন কি করনীয় কি করে ছেলের সাথে একই বাড়িতে থাকব!!এই চিন্তার মাঝে ছেদ পরল মোটা ভের ভেরা এক কন্ঠে।
- 'কি লো উসা আইজ মেলা দিন পরে পাড়ায় ঢুকলি, ভুল কইরা আসস নাই তো হিহিহিহি।'
বাহির বেড়ার সামিনে দাঁড়িয়ে ঊষাকে হাত দেখিয়ে দাঁড় করালো পুষ্পমালা।পুষ্পমালা মন্টুর গিন্নি,তার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে সরলা, ঘোষ বাড়ির মেজো বউ।ঊষার সমবয়সীই হবে।সরলার রূপ নেই কিন্তু গুণ অনেক।তার মধ্য বিশেষ গুণ কথা পাঁচ কান করা।গ্রামের সব খবর তার নখদর্পনে।ঊষাকে কিন্তু উপরিউক্ত কথা মন্টু কাকার বউ পুষ্পমালা বলেছে।ঊষা একটু হেসে উত্তর দিল--

- না কাকি সময়ই পাই না বার হইবার।
 
পুষ্পমালা আরও কিছু বলবে মাঝখানে বলে বসল সরলা।সরলার স্বভাবই অমন বাড়া ভাতে বাঁ-হাত দেওয়া।নামেই সরলা কিন্তু বক্রতায় পরিপূর্ণ। 

-- তা সময় না পাওয়ারই কথা, গুরুদেবের সেবা চাড্ডিখানি কথা তো না,গুরুদেব ছাড়লি সে সময় পাবি।

সরলার কথা শুনে দু-কান দিয়ে ধুয়া বেরিয়ে গেল,মুহুর্তেই মুখখানা কালোজিরের মতো হয়ে উঠল ঊষার।এ বলে কি!তবে কি?পুষ্পমালা হয়ত ঊষার মুখের ভাব কিছুটা টের পেলেন তাই প্রসঙ্গ পালটে বলল

-তা কোনে যাস এই দুপুর বেলা?আর বিয়ায় কিন্তু আগাগোড়া থাকা চাই

 -আইচ্ছা কাকি থাকমেনে, আর গগন কাকার কাচে যাই   দরকার আচে অল্প।আসি কাকি দেরি হইয়া যাইতেচে।

 ঊষা চলে যাচ্ছিল।ভালো লাগছে না এদের সাথে এই ফালতু কথা বলতে।তখনই সরলা বলে উঠল।

- দাঁড়া লো দাঁড়া এত তাড়া কিসের? যাবিই তো দুইখান কথা তো কই।

- ক কি কবি তাড়াতাড়ি...।
বলে ঊষা ফিরে দাঁড়াল ওদের মুখোমুখি।

- তোর নাকি কোমর ভাঙছিল?এহন ঠিক আচাস?

- হ ঠিক আচি,নইলে হাটতেচি কেমন কইরা।

সরলা মুখ চেপে একটু হেসে বলল-
- 'তা ঠিক তা ঠিক মন্টু কাকা কইতেছিল গুরুদেব নাকি ডইলা ডইলা মালিশ কইরা দিচে, হাচাই?' 
 একথা শুনে ঊষার কি যে অবস্থা হলো বলে বোঝাতে পারব না।আকাশ ভেঙে পরল যেন।তারমানে পাড়ার সবাই সব জানে!এরা তিলকে তাল করতে পারে।আর এমন একটা মুখরোচক খবর কত কানে যে ঘুরে বেরাচ্ছে তার খবর নেই।ঊষা চুপ করে আছে দেখে পুষ্পমালা বলল
- তুই চুপ কর তো মুখপুড়ি, মুখে যা আসে তাই কয়,বিপদকাল উনি(গুরুদেব)চিকিৎসা করচে, উনি কত কিছু জানে তুই জানস?

-' হ হ জানি, জানুম না ক্যা, তা উসা লো শুধু কোমরেই মালিশ করচে নাকি অন্য কুনুখানেও হিহি হি হিহি হিহি হি......।'

সরলার এই কথায় আর ধৈর্য্য ধরে রাখতে পারল না ঊষা।প্রায় চিৎকার করে বলে উঠল
-- তুই মুখ সামলাই কথা ক সরলা,নইলে খারাপ হইয়া যাইব।
পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য পুষ্পমালা জোরসে ধমকে উঠল সরলাকে।
- ওই মাগি কি কস খেয়াল আচে? গুরুদেবের নামে যা মুহে আসে তাই কয়তেচাস নজ্জা করে না?

 ঊষা সেই রাগের সাথেই বলে উঠল
- আমি আসি কাকি.....।'
বলেই গজগজ করে গগনের বাড়ির দিকে পা বাড়াল।ঊষা একটু দূরে যেতেই সরলা বলে উঠল।
- দেখচাও কাকি মাগির দেমাগ কত,নস্টামি করতেচে তার বেলা কিছু না কইলেই মাগির গায়ে ঠুসা পরে।

- তুই চুপ চুপ বেহায়া ও শুনব।

সরলার শেষ কথা আর পুষ্পমালার শেষ কথা সবই ঊষা পষ্ট শুনতে পেল।যা কানের ভেতর দিয়ে কলিজায় গিয়ে ঢাক্কা দিলো, আজ পাড়ার সবাই তাকে মাগি বলে সম্বোধন করছে।এত দিন শুধু গবীর ছিল আজ কলঙ্কও সাথে জুড়ে গেল।ঝাপসা হয়ে এলো দুচোখ।রাস্তা আর চোখে পরে না, তবু এগিয়ে চলল  জোর করে পা দুটোকে।




এখন প্রায় সূর্য তার শেষ আভাটুকু সম্বল করে সারাদিনের পরিশ্রমে ঢলে পরেছে পশ্চিম আকাশে।ঊষাও ক্লান্ত তবু উঠোনটা ঝাড়ু দিচ্ছে। গুরুদেব গেছেন হাঁটে।ছেলে কলেজ থেকে ফেরেনি।এত দেরি তো কখনো হয়না।মাঝে মাঝে ছেলের চিন্তা হচ্ছে আবার ভাবছে না ফিরুক অমন ছেলে না ফেরাই ভালো। মনের মাঝে জ্বালাপোড়া করছে অনবরত, কটমট করে ছিঁড়ে ফেলতে মন চাইছে সব কিছু।সেই ফেরার পর থেকেই সরলার শেষ কথা গুলো ভেবে চলেছে, সারা রাস্তা ভেবে এসেছে এখনো ভাবছে তার সাথে ছেলের চিন্তা মাঝে মাঝে। এর সাথে গুরুদেব শয়তান।বলে ভালোবাসি, ভালোবাসি না ছাই।এতসব হয়ে গেল তবু কেমন বেহায়ার মতো জাপটে ধরেছিল হাটে যাবার আগে।ফাঁকা বাড়ি পেয়ে বলে একবার শুধু একবার করেই চলে যাবো। পারলে চুদেই দিচ্ছিল।একে তো মন খিটখিটে তার ওপর অমন জানোয়ারের মতো ব্যবহারে ঊষা শেষ পর্যন্ত খেপে গিয়ে প্রায় খড়্গ ধারন করেছিল।বলেছিল
-' ভালোয় ভালো হাটে জান নইলে আমার চেয়ে খারাপ কেউ হইব না।'
তবুও বেজন্মাটা ব্লাউজের ওপর দিয়েই পক পক করে দুধ টিপে দিয়েছিল।জোর করে গুরুদেবের কবল থেকে ছাড়িয়ে দুরদুর করে তাড়িয়ে দিয়েছে ঊষা।


প্রায় ঝাড়ু দেওয়া শেষ, গোধুলিবেলাও শেষের দিকে তখনই ঊষা দেখল সাদা ইউনিফর্ম গায়ে তার ছেলে হেলেদুলে বাড়ির দিকে ফিরছে।ছেলেকে দেখে এক মন কেন জানি না জলের মতো শীতল হয়ে উঠল আরেক মন বিষের মতো বিষাক্ত।ছেলে তার প্রায় সামনে চলে এসেছে, মাথা নিচু করে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিল ঘরে।ঊষা বাড়ি ফাঁকা পেয়ে এই সুযোগে মনের বদ্ধ কথা গুলো ছেলেকে বলার জন্য খস খস করতে রইল।বলব কি না বলব না এই দ্বিধা নিয়েই বলে ফেলল 
- 'ওই  দাঁড়া,এত দেরি হইল ক্যা আইজ?'
গতকালের ঘটনার পরে এই মাত্র কথা বলল ছেলের সাথে।অমরও প্রায় থমকে দাঁড়ালো মায়ের কথায়।অমর জানত যে তার মা তাকে গতরাতের কথা হয়ত জিজ্ঞেস করতে পারে,কি উত্তর দিব সারা ক্লাস এমনকি দূরের এক নদীর ধারে কলেজ ছুটির পর বসে বসে মনে বহু প্রশ্ন এবং তার চেয়েও বেশি উত্তর ভেবে রেখেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় একটাও মনের মতো উত্তর সে প্রায় নি।এই আসার সময়ও ভেবেছে মা তাকে জিজ্ঞেস করলে কি কি উত্তর দিব।

- 'ঘুরবার গেছিলাম বন্ধু গো সাথে।'
এই ছোট উত্তর দিয়েই সে ঘরে ঢুকে গেল।ছেলের উত্তরে ঊষার মন খুশি হলো না তাই সেও পিছু পিছু ঘরে ঢুকে গেল।দেখল ছেলে জামাকাপড় ছেড়ে এক গামছা জড়িয়ে নিয়েছে হাত মুখ ধুতে যাবে।কিন্তু ঊষার যেন আর তর সইছে না, এমন সুযোগ যে আর পাবেও না।গুরুদেব এখনো ফেরেনি শ্বশুর পাড়ায় গেছে ঘুরতে এই এলো বলে বুড়ো। তাই সময় নষ্ট না করে ঊষা কথা বাঁকা করে ছেলেকে বলল

--' তুই রাইতে বাইর হইচিলি ক্যান?'

- 'হা.. হা..হাগতে...।' 
ছেলের তোতলানো দেখেই ঊষা পুরোপুরি নিশ্চিত যে ছেলে মিথ্যে কথা বলছে।তাই একটু রাগের সাথে গম্ভীর হয়ে বলল--
--'তুই সত্যি কইরা ক কইতেচি,তুই হাগবার গেছিলি না অন্য কিছু?'
অমর মাথা একদম নিচু করে থোতলাতে থোতলাতে বলল
-- আ আ আআ আমিইইইইইইই সত্যিইইইইইই তো কইইইইতেচিইইইই।

ঊষার চোখ জ্বলজ্বল করছে অন্ধকারে।সন্ধ্যা হয়ে গেছে তবুও ঘরের বাতি জ্বলেনি।সে ভাবেই ছেলেকে আবার বলল
-- হাগবার বইছিলি তো অমন দৌঁড়াইতেছিলি ক্যা উম্ম?
এবার যেন অমরের মাথায় আকাশ ভেঙে পরল হা করা নিরব মুখে অন্ধকারেই মায়ের রুদ্রমূর্তির দিকে তাকিয়ে রইল।কিছু ফুটলই না ওর মুখে।নীরবতা শ্রেষ্ঠ জবাব।এর চেয়ে বড়ো উত্তর আর কিছু হতেই পারে না।


অমর মাথা নিচু করে  চুপ দেখে ঊষা দাউদাউ করে জ্বলে উঠল।বলল

- ওইইইই জানোয়ার চুপ কইরা রইলি ক্যা জবাব দেএএএএ......।

তবু কিছু বলছে না দেখে লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে ঊষা বলল
- দাঁড়া জানোয়ার  তোর বাপে বাড়ি আসুক তোরে ঝাটা মাইরা বিদায় করতেছি বাড়ি থিকা,বেশি পাইকা গেচাস না দেখ তোর কি করি - চা চা  চায়ের দুকানে পাঠুমু তোরে ত্যাইলে শিক্ষা হইবি।'

অমর চিৎকার করে বলে উঠল
- তাইইই পাঠাওওওওওওওওওওও  তাও তুমাগোঅওঅঅঅঅ নষ্টামিইইইই আমিইই দেখপার চাইইইইই নাআআআআ।

ছেলের চিৎকার আর ছেলের কথায় ঊষার ছলৎ করে পায়ের রক্ত মাথায় উঠে গেল।সেও ছেলের চেয়ে বেশি চিৎকার করে উঠল, সাথে এলোপাথারি চড় থাপ্পড় মারতে লাগল ছেলেকে।

-- কিইইইই কিইইইই কইইইইলিইইইইইইইইই আমি নষ্টামি করিইইইইইইইইইইই...... কিইইইই কইইইলি বেজন্মা, আমি মাগিইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইই।,
ওইইইইই  ওইই ওইইইইই আমিইইইইইইই  বেশ্যা? আমি বেশ্যা আমি নষ্টামি কইরা বেরাই?  তুইইইইই কইবার পারলি, ওই ওইইইইইই তু তু তুইইইইইই কইবার পারলি।'

চুলের মুঠি ধরে জোরসে এদিক ওদিক টেনে টেনে ছিঁড়ে ফেলছিল,সাথে নাকে মুখে চড় ঘুষি মারছে ছেলের চোখে মুখে।যে মার খাচ্ছে তার চোখে বিন্দুমাত্র জল নেই,কিন্তু যে মারছে তার চোখের দুকূল উপচে জল গড়িয়ে পরছে বর্ষার ভরা নদীর মতো। তবু হাত আর মুখ থেমে নেই ঊষার।মেরেই ফেলবে ছেলেকে আজ। এবার গলা টিপে আগের চেয়ে আরও কুৎসিত ভাষায় গালাগাল দিতে লাগল নিজের সম্পর্কে ছেলেকে
-- আ আ আ আমিইইই মাগিইইই নাহহ দেখ এই মা মা মা মাগিইইইইইই এহন থিকা কি করেএএএএএএএ।

অমরের চোখ বেরিয়ে এসেছে, দম বন্ধ হয়ে এসেছে আর মাত্র কিছুক্ষণ মাত্র কিছুক্ষণ তবেই অমরের ছোট তবে বড় মূল্যবান শ্বাসবায়ুটুকু বেরবে কিন্তু তার আগেই একটা শক্ত পুরুট হাত ঊষার নরম অথচ কঠিন হাতটাকে একটানে ছিটকে ছাড়িয়ে দিল।
-- এইইইইইইইইইইইই কি করস কি করস মইরা গেল রেএএএএ ছাড় ছাড় মাইর ফালাবি নাকি?

গুরুদেব এসে একঝটকায় ঊষাকে দূরে ঠেলে দিল, কিন্তু ঊষা থামবার নয় উলটে এলো আবারও মারতে।তার আগেই গুরুদেব আবার ঊষাকে টেনে ধরল একপ্রকার ধ্বস্তাধস্তি শুরু হয়ে গেল সেই অন্ধকারেই।গুরুদেব বেদিক দেখে ঠাস করে একটা চড় কষিয়ে দিলেন ঊষার গালে।
- তুইইইইই কি পাগল হইয়া গেলিইইইইই।
চড় খেয়ে ঊষার হুশ ফিরল 
- আমি পাগল নাহ পাগল না মাগি আমি মাগিইইইইই সবাই আমারে মাগি কয় মাগিইইইই।

বলেই ঊষা দৌড়ে গেল গুরুদেবের রুমে ধপাস করে আছড়ে পরল বিছানাতে।গুরুদেব টায় টায় ঊষার পিছু পিছু রুমে চলে গেলেন।অমরের শুকনো হৃদয় এই প্রথম ভিজতে শুরু করল।মা মেরেছে বলে নয়, তার মা মাগি বলেও নয়, যে বেজন্মাটা তাকে মাগিতে পরিনত করেছে আজ তার কাছেই তার মা সাফাই গাইছে,এমনকি সেই মাগির বাচ্চাটাই মায়ের হাত থেকে বাঁচাল।এটাই অমরের বড় দুঃখ,মরতেও দিল না আর একটু হলেই সব জ্বালা যন্ত্রণা মুছে যেত।


(চলবে)


#পরবর্তী পর্ব দু একদিনের মধ্যেই।
Mrpkk
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.


Messages In This Thread
RE: দীক্ষা লাভ - এক মায়ের পরিবর্তন - by Mr.pkkk - 28-11-2024, 11:11 AM



Users browsing this thread: 62 Guest(s)