Thread Rating:
  • 39 Vote(s) - 2.64 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Thriller অন্তরের বন্ধন- তমালের গোয়েন্দা গল্প
#98
তার আর গার্গীর কাম লীলা কে দেখছিলো সেটা পরিস্কার হলো এতোক্ষণে। সেই সাথে বন্দনার চরিত্র এবং তার বন্যতাও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। দর্শক তাহলে একজন ছিলো না, ছিলো দুজন? ভালোই হলো, দুজনই তাহলে তৈরি হয়ে আছে। কাকে আগে সামলাবে সেটাই এখন ঠিক করতে হবে। 


- তোমার খুব রাগ হচ্ছিলো বুঝি?

আবার প্রশ্ন করলো তমাল।

- রাগ হবে না! সব জায়গায় মাগীটা সময় অসময়ে ঢুকে পড়ে। উঁকি মারা ওর একটা স্বভাব। রাজীবদার ঘরেও উঁকি মারতো।

- সে তো তুমিও মারো বন্দনা? রাজীব আর অদিতির একান্ত সময়ে তুমি উঁকি মারোনি?

এবারে মাথা নীচু করে চুপ করে রইলো বন্দনা। পাছে সাধা লক্ষ্মী দূরে সরে যায়, তাই তেল মাখালো তমাল-

- অবশ্য তোমার আর মৌপিয়ার কথা আলাদা। তুমি অল্প বয়সী মেয়ে, তোমার কৌতুহল থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু মৌপিয়ার তো বয়স হলো, মেয়েও আছে একটা।

হাসি ফুটলো বন্দনার মুখে। তমাল তার কাছে সরে এলো আরও একটু। দুজনের থাই দুটো এবার পাশাপাশি মিশে আছে পরস্পরের সাথে। ভীষণ গরম আর ঈষৎ কাঁপুনি অনুভব করলো তমাল নিজের থাইয়ে। এই ধরনের মেয়ে খুবই কামুকী হয়। তমাল হাত রাখলো বন্দনার থাইয়ে। সারা শরীরে একটা ঝাঁকুনি খেলো বন্দনা। চোখ তুলে তাকালো তমালের দিকে। রাস্তার অল্প আলোতেও তার লাল হয়ে ওঠা চোখ আর সেখানে আমন্ত্রণের ভাষা গোপন থাকলো না।

- আচ্ছা, রাজীবকে কে ছুরি মারতে পারে বলে তোমার মনে হয়? 

হঠাৎ এই প্রশ্ন আশা করেনি বন্দনা, তার ভীষণ রকম চমকে ওঠা দেখেই অনুমান করলো তমাল। আমতা আমতা করে বললো, আ.. আমি কিভাবে বলবো? আমি জানি না।

- ঠিকই তো, তুমি কিভাবে জানবে। আচ্ছা ধরো যদি জানতে পারো কে মেরেছে, তুমি কি করবে?

- কি করবো আবার? সব ফুলে মধু খেতে গেলে কাঁটার খোঁচা লাগবেই। এরকম হবারই ছিলো।

- তুমি কোনো শব্দ শুনেছিলে সেদিন?

- কিসের শব্দ?

- ভারী কিছু পড়ার? 

- না... না তো... আমি কোনো শব্দ শুনিনি।

- তুমি কখন দেখতে পেলে ঘটনাটা?

- আমি একটা চিৎকার শুনে জেগে উঠি। কিছুক্ষণ বোঝার চেষ্টা করি, তারপর বাইরে এসে দেখি দাদার হাতে ছুরি ধরা, আর তার সামনে পড়ে আছে রাজীবদা। রক্তে ভেসে যাচ্ছে সিঁড়ি।

-তুমি যখন বাইরে আসো, তখন কে কে ছিলো রাজীবের কাছে? 


একটু ভেবে বন্দনা বললো-

- দাদা, অদিতিদি। আমি যখন গেলাম, প্রায় তখনি মা ঘর থেকে বের হলো।

- মৌপিয়া ছিলো না?

- না, সে এসেছিলো অনেক পরে।

- তারপর কি হলো মনে আছে তোমার?

কিছুক্ষণ চুপ করে ভাবলো বন্দনা। সম্ভবত মনে মনে গুছিয়ে নিলো কথা। তারপর বললো-

- আমি বেরিয়ে শুনি, অদিতিদি বলছে, এ তুই কি করলি দাদা? রাহুলদা চুপ করে ছুরি হাতে বসেছিলো, অদিতিদির কথা শুনে রেগে গেলো। বললো, চুপ কর! কি সব যা তা বলছিস? আমি কিছু করিনি। আমি তো বেরিয়ে দেখি ও পড়ে আছে এখানে। ততোক্ষণে মা ও বেরিয়ে এসেছেন, তিনি বললেন, চুপ করো তোমরা, কেউ একটা কথাও বলবে না। যা বলার আমি বলবো। তারপর মা অদিতিদি কে বললো বিনোদ কে ফোন করে ডাক্তার চৌধুরীকে নিয়ে আসার কথা বলতে।


সেই একই ঘটনার বিবরণ। বেশ কয়েকবার শুনেছে। কিন্তু কোথায় যেন একটা অসঙ্গতি রয়েছে বন্দনার বলা ঘটনা পরম্পরায়। তমাল তক্ষুণি ধরতে পারলো না। পরে ভেবে দেখবে, এখনি মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই। হঠাৎ সে প্রশ্ন করলো-

- আচ্ছা তুমি শার্ট প্যান্ট পরো?

- না তো! আমি সালোয়ার কামিজই পরি। মাঝে মাঝে স্কার্ট টপও পরি। রাতে ম্যাক্সি।

তমালের প্রশ্ন শুনে ভীষণ অবাক হলো বন্দনা।

- কে কে শার্ট পরে বাড়িতে? 

- রাহুল দাদা আর রাজীবদা তো পরে।

- আমি ওদের কথা বলিনি। মেয়েদের ভিতরে কে কে পরে?

- অদিতিদি আর বুড়ি মাগীটা দুজনেই পরে।

- হুম, মেরুন কালারের শার্ট কার আছে বলতে পারবে?

- মৌপিয়া মাগীটার আছে। অদিতিরও আছে তবে ঠিক মেরুন না, লাল রঙের।

তমাল ভাবতে লাগলো লাল রঙের শার্টকে কম আলোতে আড় চোখে দেখে মেরুন বলে ভুল হতে পারে না কি? তমাল মনের গভীরে তুলে রাখলো জিজ্ঞাসাটা।

এরপরে দুজনে ফুচকা খেয়ে ফিরে এলো বাড়িতে। রাত সবে সাড়ে আটটা বাজে, ঘন্টা দেড়েক বাইরে ছিলো সে আর বন্দনা। অদিতির ঘরে এসে দেখলো দুজনেই পাশাপাশি শুয়ে আছে। চুল এলোমেলো, মুখে চোখে ক্লান্তির ছাপ, পোশাক অবিন্যস্ত এবং বিছানা লণ্ডভণ্ড।  তমালকে ভুরু কুঁচকে তাকাতে দেখে লজ্জা পেলো দুজনেই। 

তমাল বললো, কিছুক্ষণের জন্য হোস্টেল জীবনের অসংযম ফিরে এসেছিলো মনে হচ্ছে পরিবেশ দেখে? অদিতি এই কথা শুনে লজ্জায় লাল হয়ে মুখ ঢাকলো দুহাতে। গার্গী হেসে বললো, গোয়েন্দার কাছে কি কিছু লুকানো যায়? আবার কবে দেখা হবে ঠিক তো নেই, তাছাড়া গিফট্‌ টার ব্যবহার বিধি শিখিয়ে দিতে হলো তো অদিতিকে?

অদিতি নিজের মুখ থেকে হাত সরিয়ে গার্গীর মুখ চাপা দিলো। তারপর মৃদু আদুরে ধমক দিয়ে বললো, চুপ করতো! মুখে কিছুই আটকায় না তোর।


তমাল হো হো করে হেসে উঠলো। তারপরে বললো, এতে লজ্জার কি আছে? আমি তো যাবার সময় ঘন্টাখানেক কথাটা সেই জন্যই বলেছিলাম যাতে হঠাৎ ফিরে আসতে পারি এই ভয় তোমাদের না থাকে।

গার্গী বললো, আমিও সেটাই বললাম অদিতি কে। ও রাজি হচ্ছিলো না তুমি চলে আসবে ভেবে। বললাম, তমালদা যখন ঘন্টাখানেক বলেছে, তার আগে কিছুতেই আসবে না। তারপর অদিতির দিকে ফিরে বললো, দেখলি তো, বলেছিলাম না তমালদা আমাদের সুযোগ করে দিয়ে গেলো? মিললো তো?

এবার অদিতির মুখেও হাসি ফিরে এলো। তমাল জিজ্ঞেস করলো, তা কেমন কাটলো সময়? ব্যবহারবিধি ঠিক ঠাক শেখানো হয়েছে তো? আমাকে বুঝিয়ে দিতে পারবে তো অদিতি?

গার্গী বললো, একদম! এখন তুমি অদিতিকে এ বিষয়ে এক্সপার্ট বলতে পারে। সামনে, পিছনে, ছোট, বড়, মাঝারি সব ব্যবহার শিখিয়ে দিয়েছি। দেখছো না শালির চোখ মুখের অবস্থা? এক ঘন্টায় চারবার জল খসিয়েছে মাগী। 

ইসসসসসস্‌...  বলে আবার মুখ ঢাকলো অদিতি। আর গার্গী তা দেখে দাঁত বের করে হাসতে লাগলো।

অদিতি উঠে বাথরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে। গার্গী শুয়েই রইলো বিছানায়। তমাল গিয়ে বসলো ড্রেসিং টেবিলের টুলটায়। সারি সারি প্রসাধনী সামগ্রী সাজানো ড্রেসিং টেবিলের উপরে। আনমনে তমাল ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারটা টানলো। ভিতরে রাখা রয়েছে গার্গীর দেওয়া ডিলডো বক্সটা। তমাল সেটা উঁচু করে গার্গীকে দেখালো। গার্গী মুচকি হেসে মাথা নাড়লো। 

তমাল বাক্সটা খুলে ফেললো। আলাদা আলাদা খোপে চুপচাপ শুয়ে আছে রাবারের বাঁড়া গুলো। তমাল একটা তুলে নিলো হাতে। তারপর হাত বোলালো সেটার উপর। এখনো ভিজে ভাবটা যায়নি, চটচটে আঠালো রস মেখে আছে গায়ে। তমাল নাকের কাছে নিয়ে শুঁকে দেখলো গুদের গন্ধে ম-ম করছে ডিলডো।  পরিস্কার করার সময় পায়নি অদিতি এখনো। হয়তো রাতে কোনো এক সময় ধুয়ে রাখবে।

গার্গী পাশ ফিরে শুয়ে তমালের কান্ড কারখানা দেখছিলো। নেড়েচেড়ে দেখে বাক্স বন্ধ করে জায়গা মতো রাখতে গিয়ে চমকে উঠলো তমাল। ড্রয়ায়ের পিছন দিকে কিছু একটা চকচক করছে। সে হাত বাড়িয়ে টেনে নিলো জিনিসটা। বাইরে আনতেই একটা অস্ফুট আর্তনাদ বেরিয়ে এলো গার্গীর গলা থেকে। একটা ছুরি। বাঁকানো, হাতির দাঁতের হাতলে সুন্দর কাজ করা। 

গার্গী বিস্ময়ে উত্তেজিত ভাবে কিছু বলতে যাচ্ছিলো। তমাল ঠোঁটে আঙুল রেখে তাকে চুপ থাকতে বললো। তারপর জায়গা মতো রেখে দিলো জিনিসটা। সবে ড্রয়ার বন্ধ করেছে তমাল, তখনি বাথরুম থেকে বাইরে এলো অদিতি।

তমাল গার্গীর দিকে ফিরে বললো, তোমাকে এগারোটার দিকে বেরোতে হবে। সব কিছু রেডি তো?


গার্গী বললো, ব্যাগপত্র তো রেডিই আছে। বেরিয়ে পড়লেই হলো। 

তমাল উঠে দাঁড়িয়ে বললো মদনকে বলে দাও তৈরি থাকতে। আমি ছেড়ে আসবো তোমাকে স্টেশনে।

অদিতি বললো, আমিও যাবো সঙ্গে। 

বেশ তো, চলো। অসুবিধা কিসের? উত্তর দিলো তমাল।

তমালকে উঠে দাঁড়াতে দেখে গার্গীও নেমে এলো বিছানা থেকে। তারপর দুজনে বেরিয়ে এলো বাইরে। তমাল তার ঘরে যাচ্ছিলো, গার্গী তার হাত ধরে নিজের ঘরের দিকে টানলো। ঘরে ঢুকেই দরজা বন্ধ করে দিলো, তারপর ষড়যন্ত্র করার মতো নীচু গলায় বললো-

- তমালদা, তাহলে অদিতি....

- ছুরিটা দেখে বলছো? ভুলে যাচ্ছো কেন একই রকম এক জোড়া ছুরি আছে রাহুলের কাছে। যে ছুরি দিয়ে খুনের চেষ্টা করা হয়েছে, সেটা এখন পুলিশের হেফাজতে। এটা সেই জোড়ার একটা হতে পারে।

অল্প হেসে বললো তমাল। গার্গী সেকথা শুনে চেপে রাখা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। বুকে হাত দিয়ে জোরে জোরে কয়েকটা শ্বাস নিয়ে বললো, যাক বাবা, আমি তো ছুরিটা দেখার পর থেকেই ভয়ে ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিলাম। 

এখনো গরম হবার মতো কিছু হয়নি। হতেও তো পারে যে চুরি করার সময় অদিতি একজোড়া ছুরি একই সঙ্গে চুরি করেছিলো? তার একটা ব্যবহার হয়েছে খুনের চেষ্টায়। অন্যটা রয়ে গেছে তার কাছে?

আবার মুখের প্রশান্তি মিলিয়ে গিয়ে দুশ্চিন্তার কালো মেঘ ঘনালো গার্গীর মুখে।

তমাল আবার হেসে সাহস জোগালো তাকে। বললো, আরে, এখনি কোনো সিদ্ধান্তে এসো না। অদিতি একজন প্রাইম সাসপেক্ট তাতে সন্দেহ নেই, ক্লিন চিট্‌ দেবার সময় আসেনি ঠিকই, কিন্তু কিছু অসংগতি আছে এক্ষেত্রে। 

ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞাসা করলো গার্গী, কি রকম?

- দেখো, কেউ যদি খুন করার উদ্দেশ্যে একজোড়া ছুরি চুরি করে এবং একটা ব্যবহার করে, তাহলে কি ঘটনার পরে একটা ছুরি সে যত্ন করে এমন জায়গায় রেখে দেবে যাতে সহজেই সবার চোখে পড়ে? ইনফ্যাক্ট আমি তো পুলিশের তদন্তেই গাফিলতি দেখতে পাচ্ছি। সবার ঘর সার্চ করা উচিৎ ছিলো, এবং এতোক্ষণে এই ছুরিটা তাদের পেয়ে যাবারও কথা ছিলো।

- হুম, ঠিক বলেছো তমালদা। সেটাই স্বাভাবিক ছিলো।

- সেটা হয়নি কারণ প্রভাবশালী পরিবার। আর হয়তো মাসোহারাও নিয়মিত পায় এই পরিবার থেকে। কেউ প্রভাব খাটিয়েও থাকতে পারে পুলিশের উপর। তাছাড়া-

- তাছাড়া কি তমালদা?

- এই ধরনের ছুরি, যা জোড়ায় বিক্রি হয়, সেগুলো সাধারণত কোনো নাইফ হোল্ডারে থাকে, অথবা গিফট্‌ বক্সে। একটা কিনলে নাও থাকতে পারে, কিন্তু জোড়া ছুরি সাধারণত ওভাবেই বিক্রি হয়। এই ছুরিগুলো ব্যবহারের জন্য বিক্রি হয়না, এগুলো স্যুভেনির বা গিফট আইটেম হিসাবেই বিক্রি হয়। সেক্ষেত্রে চুরি করার সময় কি তুমি গিফট বক্স খুলে বক্সটা রেখে দিয়ে শুধু দুটো ছুরি তুলে নেবে? হয় তুমি একটা ছুরিই নেবে, অথবা পুরো বক্সটাই গায়েব করে দেবে, তাই না?


হাসি ফুটলো গার্গীর মুখে, বললো-

- ঠিক বলেছো তমালদা। এভাবে ভেবে দেখিনি। আমার তো ছুরিটা দেখেই হাত পা পেটের ভিতরে সেঁদিয়ে গেছিলো। 

- সেটা পেটের ভিতরেই রাখো, যতোক্ষণ না জানা যাচ্ছে ছুরির বাক্সটা কোথায় আছে? যদি জানা যায় বাক্সটা রাহুলের ঘরেই আছে বা সে অদিতিকে একটা ছুরি  নিজেই দিয়েছিলো, ততোক্ষণ কোনো সিদ্ধান্তে আসা যাবে না। ভুলে যেওনা অদিতির কিন্তু স্ট্রং মোটিভ আছে।

গার্গী আবার কিছু বলতে যাচ্ছিলো, তমাল তাকে বাঁধা দিয়ে বললো, আর কোনো কথা নয় এ বিষয়ে। তুমি রেডি হয়ে নাও, প্রায় দশটা বাজতে চললো। তমাল গার্গীকে রেখে নিজের ঘরে চলে এলো। 

একটু পরেই ডিনার সেরে নিলো সবাই। গার্গী অবশ্য বিশেষ কিছু খেলো না, এতো সকালে খাবার অভ্যেস নেই বলে। সে রাতের খাবার প্যাক করে নিলো ট্রেনে খাবে বলে।
Tiger
[+] 4 users Like kingsuk-tomal's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অন্তরের বন্ধন- তমালের গোয়েন্দা গল্প - by kingsuk-tomal - 08-11-2024, 12:33 AM



Users browsing this thread: 6 Guest(s)