08-11-2024, 12:30 AM
গার্গীর ট্রেন বেশ রাত করেই আসবে আসানসোল স্টেশনে। গোছগাছ বেশি কিছু নেই তাই সন্ধ্যেটা গল্প করেই কাটালো তিনজনে। অদিতি যে তমাল আর গার্গীর কাম লীলা প্রত্যক্ষ করেনি সেটা তার স্বাভাবিক ব্যবহার দেখেই অনুমান করা যায়, বরং একটা দিবানিন্দ্রা তাকে বেশ ঝরঝরে করে তুলেছে। তমাল বললো, তোমরা দুজনে গল্প করো আমি ঘন্টাখানেক ঘুরে আসি, সিগারেট কিনতে হবে। দুই বান্ধবীকে নিজেদের ভিতরে সুখ দুঃখের গল্প করতে দিয়ে তমাল বেরিয়ে এলো বাইরে। দোতলায় নেমে এলো সে। কাউকে দেখলো না করিডোরে। সে এগিয়ে গেলো বন্দনার ঘরের দিকে।
মধুছন্দা দেবীর পাশের ঘরটাই বন্দনার। সে টোকা দিলো দরজায়। দরজা খুলে তমালকে দেখে বেশ অবাক হয়ে গেলো বন্দনা। অপ্রস্তুত ভাবটা কেটে যেতেই সেই ফিচেল হাসিটা ফিরে এলো তার মুখে। চোখের তারায় যেন বিদ্যুৎ ঝিলিক দিয়ে উঠলো, মুখে কিছু না বলে অভিব্যক্তিতে একটা জিজ্ঞাসা নিয়ে তাকিয়ে রইলো সে তমালের দিকে।
তমাল সহজ গলায় বললো, তোমার সাথে তো আলাপই হয়নি ভালো করে, তাই আলাপ করতে এলাম। বন্দনা একটু লাজুক হেসে বললো, আসুন, ভিতরে আসুন। দরজা থেকে সরে দাঁড়ালে তমাল ঘরের ভিতরে ঢুকলো, কিন্তু বসলো না, ঘুরে ঘুরে চারদিকটা দেখতে লাগলো। দেখার অবশ্য বিশেষ কিছু নেই ঘরে। চেয়ার, টেবিল, খাট, আলনা এইসব নিত্য ব্যাবহার্য জিনিসপত্রই রয়েছে সাজানো। ড্রেসিং টেবিলের উপরে একটা ছবি রাখা আছে। তমাল সেটা হাতে নিয়ে দেখতে লাগলো। বন্দনা কাছে এসে বললো, আমাদের হোমে তোলা। তারপর আঙুল দিয়ে দশ বারোটা মেয়ের ভিড়ে একজনকে নির্দেশ করে বললো, এটা আমি।
একটা গ্রুপ ফটো, পাঁচ ছয় বছরের অনেকগুলো মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভালো করে লক্ষ্য করলে বন্দনাকে চেনা যায়। গোলগাল, দুষ্টুমি ভরা চোখে দ্বিতীয় সারির চতুর্থ মেয়েটা বন্দনা। তমাল ছবিটা জায়গা মতো রাখতে রাখতে বললো, হোম থেকে নিয়ে এসেছো এটা? বন্দনা বললো, হ্যাঁ, চলে আসার সময় চেয়ে এনেছি, বন্ধুরা আছে তো, তাই।
কি নাম তোমাদের হোমটার? জানতে চাইলো তমাল।
আনন্দভবন... উত্তর দিলো বন্দনা।
-আনন্দভবন? নাকি আনন্দ আশ্রম?
- না, না... আনন্দ ভবন, আনন্দ আশ্রম না।
- হোমটা কোথায়?
- চিত্তরঞ্জনে।
- ঠিকানা জানো না?
- কেন জানবো না? এতোদিন রইলাম সেখানে, ঠিকানা না জানলে হয়? চিত্তরঞ্জনে ছাব্বিশ নম্বর রাস্তায়।
তমাল বললো, ওদের মিস্ করো খুব, তাই না? মুখ নীচু করে মাথা নাড়লো বন্দনা। তমাল আবার জিজ্ঞেস করলো, কোন জীবনটা ভালো লাগে তোমার? আগেরটা নাকি এখনকারটা? বন্দনা বললো, দুটোই ভালো। এখানে মা খুব যত্ন করে আমার।
শুধু মা? বাকী সবাই বুঝি ভালোবাসেনা তোমাকে?... জিজ্ঞাসা করলো তমাল।
কোনো উত্তর না দিয়ে চুপ করে রইলো মিষ্টি।
আচ্ছা হোমটা তো বেসরকারি হোম ছিলো, তাহলে তোমার খরচ কে চালাতো? প্রশ্ন করলো তমাল।
বন্দনা বললো, আমি ঠিক জানিনা।
তমাল বললো, ঘনশ্যাম বাবু তোমাকে খুব ভালোবাসেন তাই না?
মাথা নেড়ে বন্দনা বললো, হ্যাঁ উনিই তো মা কে বলে এখানে নিয়ে এলেন আমাকে।
তমাল প্রসঙ্গ পালটে বললো, তোমাদের নদীর ধারে খুব ভালো ফুচকা পাওয়া যায়, খেয়েছো?
সাথে সাথেই মাথা নেড়ে জানালো বন্দনা যে খেয়েছে।
- একাই যাও?
একটু ইতস্তত করে বন্দনা বললো, না, রাজীবদা নিয়ে গেছে কয়েকবার।
- হুম, আমারও খুব ভালো লেগেছে। যাবে নাকি ফুচকা খেতে?
- না, অদিতিদি রাগ করবে আপনার সাথে গেলে।
- কেন? অদিতি রাগ করবে কেন? আমি তো যেতে বলছি?
- অদিতিদি আমার উপর সব সময় রেগে যায়।
- কেন রেগে যায় বলোতো?
এবারে আর কোনো উত্তর দিলো না সে।
তমাল বললো, চলো কেউ কিছু বলবে না। বললে বলবে তমালদা জোর করে নিয়ে গেছে।
বন্দনা জামাকাপড় পালটানোর ঝামেলায় গেলো না। চুলে হালকা চিরুনী চালিয়ে ঠোঁটে একটু লিপস্টিক ঘষে নিয়েই বললো, চলুন।
দুজনে নেমে এলো রাস্তায়। হাঁটতে হাঁটতে তমাল আবার প্রশ্ন করলো, বললে না তো, কেন অদিতি অপছন্দ করে তোমাকে?
বন্দনা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো, হয়তো রাজীবদার জন্য।
- তুমি রাজীবকে পছন্দ করো?
আবার চুপ করে রইলো বন্দনা।
- তুমি অদিতির প্রেমিককে জোর করে পেতে চাইলে রাগ করা কি স্বাভাবিক নয়?
- চমকে একবার তমালকে দেখলো বন্দনা। তারপর মাথা নিচু করে বললো, জোর করে কেন চাইবো? রাজীবদা নিজেই বলেছে সে আমাকে ভালোবাসে। একদিন চা নিয়ে তার ঘরে যেতেই জোর করে আমাকে....!
- রাজীব জোর করেছে তোমাকে? তুমি রাজি হলে কেন? পিসিমাকে বলে দিলেই তো পারতে?
আবার সেই ফিচেল হাসি ফিরে এলো বন্দনার ঠোঁটে। অদ্ভুত একটা চাহুনি দিয়ে বললো, ভালো খাবার প্লেটে সাজিয়ে দিলে আপনি কি খাবেননা নাকি? আর সবকিছু থেকেই আমি বঞ্চিত হবো কেন? আমার যা পেতে ইচ্ছা করে আমি সেটা নিজেই নিয়েনি।
- হুম, বুঝলাম, তা খাবারটা যে ভালো সেটা বুঝলে কিভাবে?
- না খেলে বুঝবেন কিভাবে? ভালো খারাপ বোঝার জন্য তো মুখে তুলতে হবে?
- তা, কেমন ছিলো খাবার? ভালো না খারাপ?
- মোটামুটি। দেখতে যতো ভালো, খেতে ততো ভালো নয়।
বলেই খিল খিল করে এমন দুলে দুলে হাসতে শুরু করলো বন্দনা যে পথচলতি কয়েকজন ফিরে তাকালো তাদের দিকে।
- তুমি তো বেশ পাকা মেয়ে দেখছি!
- পাকা না কাঁচা, সেটাও কিন্তু খেয়ে বুঝতে হয়! অনেক সময় দেখে বোঝা যায় না।
- বাপরে! আমাকেও খেয়ে বুঝতে হবে নাকি!
সরাসরি তমালের চোখে চোখ রেখে বন্দনা বললো, আমার আপত্তি নেই! সেই চোখে ঝিলিক দিয়ে উঠলো আদিম লালসা। এক অমোঘ আকর্ষণ! এই টুকু মেয়ে এতো পরিনত কিভাবে হলো? তারপর মনে পড়লো প্রায় আঠারো উনিশ বছর বেসরকারি হোমে থেকেছে বন্দনা। বিভিন্ন চরিত্রের মেয়েদের সাথে মিশেছে। পুরুষসঙ্গও করেছে হয়তো। পরিবারের সযতন আগলে বড় হয়নি সে। বেড়ে ওঠার সময় কেউ তার অবাধ্য লাগামহীন ডালপালা ছেঁটে সুন্দর পরিমার্জনা করেনি। বড় হয়েছে এক অনিয়মে বেড়ে ওঠা জংলী গাছের মতো, তাই তার চাওয়া পাওয়া গুলোও মোটা দাগের, ভদ্রতা সেখানে বাহুল্য!
নিজেকে ধমক দিলো তমাল। মানুষের চরিত্র বিশ্লেষণ করতে আসেনি সে এখানে। আর এই মেয়ের তল পাওয়া এতো সহজ নয়। তল পেতে গেলে একান্তে নামতে হবে গভীরে! খুঁজে দেখতে হবে কি আছে সেখানে, অন্ধকূপ নাকি জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি!
একটা সিগারেট জ্বালিয়ে ধোঁয়া ছেড়ে তমাল বললো, আপত্তি আমারও নেই। ভালো ছেলের দলে আমিও পড়ি না।
- তাহলে রাতে দরজা খোলা রাখবেন।
ভনিতা ছাড়াই অভিসারের প্রস্তাব দিয়েই আবার খিলখিল করে হাসতে শুরু করলো বন্দনা।
- আজ নয়, অন্য সময়। আমি বলবো তোমাকে।
- জানি, আজ ক্লান্ত মনে হয় আপনি। দুপুর থেকেই পরিশ্রম করছেন!
মুখে হাত চাপা দিয়ে অদ্ভুত ভঙ্গি করলো বন্দনা।
- মানে? তুমি সব দেখেছো নাকি দুপুরে?
- ইচ্ছা ছিলো, কিন্তু বুড়ি মাগীটা এসে পড়ায় পুরোটা দেখা হলো না।
- বুড়ি মাগী আবার কে?
কথা বলতে বলতে তারা নদীর ঘাটে এসে বেঞ্চিতে বসলো। ফুচকাওয়ালার কাছে অনেক ভীড়, একটু ফাঁকা হবার অপেক্ষা করছে দুজনে।
- কে আবার? যে স্বামীর ঘর ছেড়ে বাপের বাড়িতে এসে উঠেছে। সব সময় ছুঁকছুঁক করে। ছেলে দেখলেই কুটকুটানি বেড়ে যায় মাগীর। ইস্ সবে জমে উঠেছিলো, তখনি দরজা খুলে বেরিয়ে এলো। আমার আর দেখা হলো না। কিন্তু মাগীটা পুরো শেষ পর্যন্ত দেখেছে। জানেন, দেখতে দেখতে কি করছিলো! আমি তো ভাবলাম থাকতে না পেরে ঢুকেই পড়বে আপনার ঘরে।
মধুছন্দা দেবীর পাশের ঘরটাই বন্দনার। সে টোকা দিলো দরজায়। দরজা খুলে তমালকে দেখে বেশ অবাক হয়ে গেলো বন্দনা। অপ্রস্তুত ভাবটা কেটে যেতেই সেই ফিচেল হাসিটা ফিরে এলো তার মুখে। চোখের তারায় যেন বিদ্যুৎ ঝিলিক দিয়ে উঠলো, মুখে কিছু না বলে অভিব্যক্তিতে একটা জিজ্ঞাসা নিয়ে তাকিয়ে রইলো সে তমালের দিকে।
তমাল সহজ গলায় বললো, তোমার সাথে তো আলাপই হয়নি ভালো করে, তাই আলাপ করতে এলাম। বন্দনা একটু লাজুক হেসে বললো, আসুন, ভিতরে আসুন। দরজা থেকে সরে দাঁড়ালে তমাল ঘরের ভিতরে ঢুকলো, কিন্তু বসলো না, ঘুরে ঘুরে চারদিকটা দেখতে লাগলো। দেখার অবশ্য বিশেষ কিছু নেই ঘরে। চেয়ার, টেবিল, খাট, আলনা এইসব নিত্য ব্যাবহার্য জিনিসপত্রই রয়েছে সাজানো। ড্রেসিং টেবিলের উপরে একটা ছবি রাখা আছে। তমাল সেটা হাতে নিয়ে দেখতে লাগলো। বন্দনা কাছে এসে বললো, আমাদের হোমে তোলা। তারপর আঙুল দিয়ে দশ বারোটা মেয়ের ভিড়ে একজনকে নির্দেশ করে বললো, এটা আমি।
একটা গ্রুপ ফটো, পাঁচ ছয় বছরের অনেকগুলো মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভালো করে লক্ষ্য করলে বন্দনাকে চেনা যায়। গোলগাল, দুষ্টুমি ভরা চোখে দ্বিতীয় সারির চতুর্থ মেয়েটা বন্দনা। তমাল ছবিটা জায়গা মতো রাখতে রাখতে বললো, হোম থেকে নিয়ে এসেছো এটা? বন্দনা বললো, হ্যাঁ, চলে আসার সময় চেয়ে এনেছি, বন্ধুরা আছে তো, তাই।
কি নাম তোমাদের হোমটার? জানতে চাইলো তমাল।
আনন্দভবন... উত্তর দিলো বন্দনা।
-আনন্দভবন? নাকি আনন্দ আশ্রম?
- না, না... আনন্দ ভবন, আনন্দ আশ্রম না।
- হোমটা কোথায়?
- চিত্তরঞ্জনে।
- ঠিকানা জানো না?
- কেন জানবো না? এতোদিন রইলাম সেখানে, ঠিকানা না জানলে হয়? চিত্তরঞ্জনে ছাব্বিশ নম্বর রাস্তায়।
তমাল বললো, ওদের মিস্ করো খুব, তাই না? মুখ নীচু করে মাথা নাড়লো বন্দনা। তমাল আবার জিজ্ঞেস করলো, কোন জীবনটা ভালো লাগে তোমার? আগেরটা নাকি এখনকারটা? বন্দনা বললো, দুটোই ভালো। এখানে মা খুব যত্ন করে আমার।
শুধু মা? বাকী সবাই বুঝি ভালোবাসেনা তোমাকে?... জিজ্ঞাসা করলো তমাল।
কোনো উত্তর না দিয়ে চুপ করে রইলো মিষ্টি।
আচ্ছা হোমটা তো বেসরকারি হোম ছিলো, তাহলে তোমার খরচ কে চালাতো? প্রশ্ন করলো তমাল।
বন্দনা বললো, আমি ঠিক জানিনা।
তমাল বললো, ঘনশ্যাম বাবু তোমাকে খুব ভালোবাসেন তাই না?
মাথা নেড়ে বন্দনা বললো, হ্যাঁ উনিই তো মা কে বলে এখানে নিয়ে এলেন আমাকে।
তমাল প্রসঙ্গ পালটে বললো, তোমাদের নদীর ধারে খুব ভালো ফুচকা পাওয়া যায়, খেয়েছো?
সাথে সাথেই মাথা নেড়ে জানালো বন্দনা যে খেয়েছে।
- একাই যাও?
একটু ইতস্তত করে বন্দনা বললো, না, রাজীবদা নিয়ে গেছে কয়েকবার।
- হুম, আমারও খুব ভালো লেগেছে। যাবে নাকি ফুচকা খেতে?
- না, অদিতিদি রাগ করবে আপনার সাথে গেলে।
- কেন? অদিতি রাগ করবে কেন? আমি তো যেতে বলছি?
- অদিতিদি আমার উপর সব সময় রেগে যায়।
- কেন রেগে যায় বলোতো?
এবারে আর কোনো উত্তর দিলো না সে।
তমাল বললো, চলো কেউ কিছু বলবে না। বললে বলবে তমালদা জোর করে নিয়ে গেছে।
বন্দনা জামাকাপড় পালটানোর ঝামেলায় গেলো না। চুলে হালকা চিরুনী চালিয়ে ঠোঁটে একটু লিপস্টিক ঘষে নিয়েই বললো, চলুন।
দুজনে নেমে এলো রাস্তায়। হাঁটতে হাঁটতে তমাল আবার প্রশ্ন করলো, বললে না তো, কেন অদিতি অপছন্দ করে তোমাকে?
বন্দনা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো, হয়তো রাজীবদার জন্য।
- তুমি রাজীবকে পছন্দ করো?
আবার চুপ করে রইলো বন্দনা।
- তুমি অদিতির প্রেমিককে জোর করে পেতে চাইলে রাগ করা কি স্বাভাবিক নয়?
- চমকে একবার তমালকে দেখলো বন্দনা। তারপর মাথা নিচু করে বললো, জোর করে কেন চাইবো? রাজীবদা নিজেই বলেছে সে আমাকে ভালোবাসে। একদিন চা নিয়ে তার ঘরে যেতেই জোর করে আমাকে....!
- রাজীব জোর করেছে তোমাকে? তুমি রাজি হলে কেন? পিসিমাকে বলে দিলেই তো পারতে?
আবার সেই ফিচেল হাসি ফিরে এলো বন্দনার ঠোঁটে। অদ্ভুত একটা চাহুনি দিয়ে বললো, ভালো খাবার প্লেটে সাজিয়ে দিলে আপনি কি খাবেননা নাকি? আর সবকিছু থেকেই আমি বঞ্চিত হবো কেন? আমার যা পেতে ইচ্ছা করে আমি সেটা নিজেই নিয়েনি।
- হুম, বুঝলাম, তা খাবারটা যে ভালো সেটা বুঝলে কিভাবে?
- না খেলে বুঝবেন কিভাবে? ভালো খারাপ বোঝার জন্য তো মুখে তুলতে হবে?
- তা, কেমন ছিলো খাবার? ভালো না খারাপ?
- মোটামুটি। দেখতে যতো ভালো, খেতে ততো ভালো নয়।
বলেই খিল খিল করে এমন দুলে দুলে হাসতে শুরু করলো বন্দনা যে পথচলতি কয়েকজন ফিরে তাকালো তাদের দিকে।
- তুমি তো বেশ পাকা মেয়ে দেখছি!
- পাকা না কাঁচা, সেটাও কিন্তু খেয়ে বুঝতে হয়! অনেক সময় দেখে বোঝা যায় না।
- বাপরে! আমাকেও খেয়ে বুঝতে হবে নাকি!
সরাসরি তমালের চোখে চোখ রেখে বন্দনা বললো, আমার আপত্তি নেই! সেই চোখে ঝিলিক দিয়ে উঠলো আদিম লালসা। এক অমোঘ আকর্ষণ! এই টুকু মেয়ে এতো পরিনত কিভাবে হলো? তারপর মনে পড়লো প্রায় আঠারো উনিশ বছর বেসরকারি হোমে থেকেছে বন্দনা। বিভিন্ন চরিত্রের মেয়েদের সাথে মিশেছে। পুরুষসঙ্গও করেছে হয়তো। পরিবারের সযতন আগলে বড় হয়নি সে। বেড়ে ওঠার সময় কেউ তার অবাধ্য লাগামহীন ডালপালা ছেঁটে সুন্দর পরিমার্জনা করেনি। বড় হয়েছে এক অনিয়মে বেড়ে ওঠা জংলী গাছের মতো, তাই তার চাওয়া পাওয়া গুলোও মোটা দাগের, ভদ্রতা সেখানে বাহুল্য!
নিজেকে ধমক দিলো তমাল। মানুষের চরিত্র বিশ্লেষণ করতে আসেনি সে এখানে। আর এই মেয়ের তল পাওয়া এতো সহজ নয়। তল পেতে গেলে একান্তে নামতে হবে গভীরে! খুঁজে দেখতে হবে কি আছে সেখানে, অন্ধকূপ নাকি জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি!
একটা সিগারেট জ্বালিয়ে ধোঁয়া ছেড়ে তমাল বললো, আপত্তি আমারও নেই। ভালো ছেলের দলে আমিও পড়ি না।
- তাহলে রাতে দরজা খোলা রাখবেন।
ভনিতা ছাড়াই অভিসারের প্রস্তাব দিয়েই আবার খিলখিল করে হাসতে শুরু করলো বন্দনা।
- আজ নয়, অন্য সময়। আমি বলবো তোমাকে।
- জানি, আজ ক্লান্ত মনে হয় আপনি। দুপুর থেকেই পরিশ্রম করছেন!
মুখে হাত চাপা দিয়ে অদ্ভুত ভঙ্গি করলো বন্দনা।
- মানে? তুমি সব দেখেছো নাকি দুপুরে?
- ইচ্ছা ছিলো, কিন্তু বুড়ি মাগীটা এসে পড়ায় পুরোটা দেখা হলো না।
- বুড়ি মাগী আবার কে?
কথা বলতে বলতে তারা নদীর ঘাটে এসে বেঞ্চিতে বসলো। ফুচকাওয়ালার কাছে অনেক ভীড়, একটু ফাঁকা হবার অপেক্ষা করছে দুজনে।
- কে আবার? যে স্বামীর ঘর ছেড়ে বাপের বাড়িতে এসে উঠেছে। সব সময় ছুঁকছুঁক করে। ছেলে দেখলেই কুটকুটানি বেড়ে যায় মাগীর। ইস্ সবে জমে উঠেছিলো, তখনি দরজা খুলে বেরিয়ে এলো। আমার আর দেখা হলো না। কিন্তু মাগীটা পুরো শেষ পর্যন্ত দেখেছে। জানেন, দেখতে দেখতে কি করছিলো! আমি তো ভাবলাম থাকতে না পেরে ঢুকেই পড়বে আপনার ঘরে।