27-10-2024, 05:12 PM
১.
ছোট্ট মফস্বল শহরের ৬ রাস্তার মোড়ে সুকুমারের চেম্বার।সাধারণ এমবিবিএস ডাক্তার সে।বিশেষজ্ঞ নয়।তাই হয়ত রোগীর ভিড় অন্য জায়গার তুলনায় কিছুটা কম এখানে।চেনা-পরিচিত বা বহু পুরনো সব রোগী।গত ২০ বছরে এই শহর অনেক বদলেছে। নতুন ডায়াগনস্টিক সেন্টার হয়েছে।ঢাকা থেকে সপ্তাহন্তে ডাক্তার আসে সেখানে।সুকুমারকেও সেরকম একটা জায়গায় বসবার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।কিন্তু রাজি হয়নি সে।তার এই চেম্বারে নিজের মত সে থাকে।কারো কাছে দায়বদ্ধতা বা জবাবদিহিতা নেই।এখান থেকে মাসে লাখের উপর কামাই হয় তার।দিব্যি চলে যায় তাতে।সকালে আর বিকালের দিকে একটু রোগীর ভিড় থাকে।দুপুরের দিকটা একদম ফাঁকা। সুকুমারের এসিট্যান্ট মহিলাটাকে ছুটি দিয়ে দেয় তখন সুকুমার। আবার বিকালে ফিরে আসে সে।
আজ ২৩ জুলাই। অনিমা-সুকুমারের বিবাহবার্ষিকী।সকাল থেকে সেটা নিয়ে বাসায় বিশেষ কোনো উচ্চবাচ্য হয়নি।যথারীতি, মেয়ে কলেজে গেছে। অনিমা রান্নায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। সুকুমারের যদিও ইচ্ছা আছে,সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার পথে অনিমার জন্য ফুল নিয়ে যাওয়ার।আর রাতে তিনজন মিলে বাইরে খাবে বলেও ঠিক করে রেখেছে। এই পরিকল্পনা নতুন কিছু নয়,গত কয়েক বছর ধরে এরকমই চলে আসছে।
দুপুর বারোটার পর আর কোনো রোগী আসেনি।প্রায় পৌনে একটা বাজে।বাসা থেকে সুকুমারের খাবার দিয়ে যায় যে ছেলেটা,নয়ন নাম।তারও পাত্তা নেই। অথচ তার এতক্ষণে চলে আসার কথা।১ টার দিকে মধ্যাহ্নভোজ সেরে নেয় সুকুমার।তার এসিডিটির সমস্যা আছে।তাই ঘড়ির কাটায় মেপে চলে খাওয়া দাওয়ার হিসাব।
এসির ঠান্ডায় সুকুমারের চোখ লেগে এসেছিল।হঠাৎ দরজা খোলার শব্দে চোখ তুলে তাকালো।ঘড়িতে বাজে ১২.৫৭। সুকুমারের এসিস্ট্যান্ট রত্না হাসি হাসি মুখ করে গলা দরজার ফাঁক দিয়ে বাড়িয়ে বলল, " স্যার, ম্যাডাম এসেছে।"
সুকুমার রীতিমতো অবাক! এই সময়ে! একটু পরেই অনিমা ঢুকল দুটো টিফিন ক্যারিয়ার নিয়ে।টেবিলের উপর সেদুটো রেখে সে দরজার ছিটকিনি আটকে এসে চেয়ারে বসল।
অ:রত্নাকে ছুটি দিয়ে দিয়েছি।
সু:ওর তো এই সময় এমনিই ছুটি।নয়ন কোথায়? তুমি এত কষ্ট করে আসতে গেলে কেন?
অ:নয়নকে আমিই নিষেধ করেছি আসতে।ভাবলাম আজ নিজেই আসি তোমার জন্য খাবার নিয়ে।খিদে পেয়েছে না তোমার?থালা কোথায় রাখা আছে?
ইশারায় খাবারের প্লেটের হদিশ দিয়ে সুকুমার অবাক হয়ে স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকে।লাল কালো একটা জামদানি পরেছে অনিমা আজ।কপালে লাল টিপ।লাল ব্লাউজ।হঠাৎ দেখে বোঝার উপায় নেই যে আজ অনিমা সেজেছে।ঠোঁটে হালকা একটু লিপস্টিক দিয়েছে না? চকচক তো করছে।যাই হোক।।
বিয়ের পর থেকে অনিমার মধ্যে এসব রোমান্টিসিজম সে খুব একটা খুঁজে পেয়েছে বলে মনে হয়না। অনিমার চেয়ে সে ১২ বছরের বড়। সবসময়ই একটা দূরত্ব ছিল বলে তার মনে হয়েছে।হঠাৎ ১৮ বছরের দাম্পত্য জীবনের সব অনুমান এলোমেলো হয়ে গেল তার। মহিলাটাকে কি সে সত্যিই চিনতে পারেনি!!
ছোট্ট মফস্বল শহরের ৬ রাস্তার মোড়ে সুকুমারের চেম্বার।সাধারণ এমবিবিএস ডাক্তার সে।বিশেষজ্ঞ নয়।তাই হয়ত রোগীর ভিড় অন্য জায়গার তুলনায় কিছুটা কম এখানে।চেনা-পরিচিত বা বহু পুরনো সব রোগী।গত ২০ বছরে এই শহর অনেক বদলেছে। নতুন ডায়াগনস্টিক সেন্টার হয়েছে।ঢাকা থেকে সপ্তাহন্তে ডাক্তার আসে সেখানে।সুকুমারকেও সেরকম একটা জায়গায় বসবার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।কিন্তু রাজি হয়নি সে।তার এই চেম্বারে নিজের মত সে থাকে।কারো কাছে দায়বদ্ধতা বা জবাবদিহিতা নেই।এখান থেকে মাসে লাখের উপর কামাই হয় তার।দিব্যি চলে যায় তাতে।সকালে আর বিকালের দিকে একটু রোগীর ভিড় থাকে।দুপুরের দিকটা একদম ফাঁকা। সুকুমারের এসিট্যান্ট মহিলাটাকে ছুটি দিয়ে দেয় তখন সুকুমার। আবার বিকালে ফিরে আসে সে।
আজ ২৩ জুলাই। অনিমা-সুকুমারের বিবাহবার্ষিকী।সকাল থেকে সেটা নিয়ে বাসায় বিশেষ কোনো উচ্চবাচ্য হয়নি।যথারীতি, মেয়ে কলেজে গেছে। অনিমা রান্নায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। সুকুমারের যদিও ইচ্ছা আছে,সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার পথে অনিমার জন্য ফুল নিয়ে যাওয়ার।আর রাতে তিনজন মিলে বাইরে খাবে বলেও ঠিক করে রেখেছে। এই পরিকল্পনা নতুন কিছু নয়,গত কয়েক বছর ধরে এরকমই চলে আসছে।
দুপুর বারোটার পর আর কোনো রোগী আসেনি।প্রায় পৌনে একটা বাজে।বাসা থেকে সুকুমারের খাবার দিয়ে যায় যে ছেলেটা,নয়ন নাম।তারও পাত্তা নেই। অথচ তার এতক্ষণে চলে আসার কথা।১ টার দিকে মধ্যাহ্নভোজ সেরে নেয় সুকুমার।তার এসিডিটির সমস্যা আছে।তাই ঘড়ির কাটায় মেপে চলে খাওয়া দাওয়ার হিসাব।
এসির ঠান্ডায় সুকুমারের চোখ লেগে এসেছিল।হঠাৎ দরজা খোলার শব্দে চোখ তুলে তাকালো।ঘড়িতে বাজে ১২.৫৭। সুকুমারের এসিস্ট্যান্ট রত্না হাসি হাসি মুখ করে গলা দরজার ফাঁক দিয়ে বাড়িয়ে বলল, " স্যার, ম্যাডাম এসেছে।"
সুকুমার রীতিমতো অবাক! এই সময়ে! একটু পরেই অনিমা ঢুকল দুটো টিফিন ক্যারিয়ার নিয়ে।টেবিলের উপর সেদুটো রেখে সে দরজার ছিটকিনি আটকে এসে চেয়ারে বসল।
অ:রত্নাকে ছুটি দিয়ে দিয়েছি।
সু:ওর তো এই সময় এমনিই ছুটি।নয়ন কোথায়? তুমি এত কষ্ট করে আসতে গেলে কেন?
অ:নয়নকে আমিই নিষেধ করেছি আসতে।ভাবলাম আজ নিজেই আসি তোমার জন্য খাবার নিয়ে।খিদে পেয়েছে না তোমার?থালা কোথায় রাখা আছে?
ইশারায় খাবারের প্লেটের হদিশ দিয়ে সুকুমার অবাক হয়ে স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকে।লাল কালো একটা জামদানি পরেছে অনিমা আজ।কপালে লাল টিপ।লাল ব্লাউজ।হঠাৎ দেখে বোঝার উপায় নেই যে আজ অনিমা সেজেছে।ঠোঁটে হালকা একটু লিপস্টিক দিয়েছে না? চকচক তো করছে।যাই হোক।।
বিয়ের পর থেকে অনিমার মধ্যে এসব রোমান্টিসিজম সে খুব একটা খুঁজে পেয়েছে বলে মনে হয়না। অনিমার চেয়ে সে ১২ বছরের বড়। সবসময়ই একটা দূরত্ব ছিল বলে তার মনে হয়েছে।হঠাৎ ১৮ বছরের দাম্পত্য জীবনের সব অনুমান এলোমেলো হয়ে গেল তার। মহিলাটাকে কি সে সত্যিই চিনতে পারেনি!!