18-09-2024, 08:56 PM
হ্যালো, রিলসটা ফাটিয়ে দিয়েছো। কিন্তু আমাকে আগে ভিডিও টা দিলে আমি এডিট করে দিতাম। ইফেক্ট এড আর ট্রেন্ডি না হলে রিলস ভাইরাল হয় না ভালো হলেও…..
কেমন ট্রেন্ড রকি? ড্রেস আপ ঠিক আছে না?
হুম, ড্রেস ঠিক আছে, বাট আরেকটু স্পাইসি দিতে হবে। ইন্সটা কিন্তু টিকটক না, এখানকার অডিয়েন্স ডিমান্ড অন্যরকম। একটা ভিডিও বানাও, প্রথম টি শার্ট আর সেলোয়ার পরে হালকা মিউজিক এ একদম সাদা মাটা স্লো মোশন। আরেকটা ভিডিও মিউজিক এর সাথে একদম ফুল মেক আপ শাড়ির দেশি লুকে। তারপর আমাকে দাও। আমি রিলস ক্রিয়েট করে দিচ্ছি…..
আচ্ছা, আমি বানিয়ে দিচ্ছি তোমায় রকি……
আর অনন্যা, কিভাবে বলি! কি মনে করবা আবার তুমি…..
কিছু মনে করবো না, বলো তুমি রকি……
শাড়ি একটু বোল্ড ভাবে পড়তে হয়……..
এর থেকে বোল্ড আবার কিভাবে পরবো! খারাপ দেখাবে?
দিশা পাটানি, কিয়ারা আদভানি কে খারাপ দেখায়? নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে মানুষ তোমাকে স্বপ্ন দেখবে, কিন্তু কখনো ছোঁয়ার সাহস করবে না…..
আচ্ছা, ঠিক আছে……
শাড়ি পরে পিক দাও আগে…….
এমন ভাবে শাড়ি পরা পিক চাচ্ছো, মনে হচ্ছে আমি তোমার গার্লফ্রেন্ড হই…….
ওহ সরি, আসলে নাই তো, তাই কখনো সুযোগ পেলে ছাড়ি না। তাই আবদার করে ফেলি…..
তোমার জি এফ নেই, এটাও আমাকে বিশ্বাস করতে হবে…..!!
সত্যিই নেই। আর থাকলে এত রাতে আরেকটা মেয়ের সাথে কথা বলতে দিতো……
আচ্ছা। ভিডিও বানিয়ে পাঠাচ্ছি তোমায়…..
আগে পিক পাঠাও……
ওয়েট করো……
অনন্যা ট্রান্সপারেন্ট শাড়ি বের করলো একটা। ম্যাচিং ব্লাউজ পরলো। নাভিটা বের করে একটা মিরর সেলফি তুলে সেন্ড করলো রকির কাছে। রকির কাছে প্রশংসা শোনার জন্য মনটা উন্মুখ হয়ে আছে। সাথে সাথে রকির মেসেজ আসলো, আঁচল টা পেঁচিয়ে বুকের মাঝে রেখে আরেকটা পিক দাও….
অনন্যা প্রথমে ভাবছিলো রাগ দেখাবে, কিন্তু তার রাগ হচ্ছে না। রকি ছেলেটাকে ভালো লেগে গিয়েছে। রকির সাথে তার মানসিকতা পুরো মিলে যাচ্ছে। নিজের সৌন্দর্য যদি ঢেকেই রাখা লাগে তাহলে মেয়ে হয়ে জন্মে লাভ কি? আর রকির মত হ্যান্ডসাম ছেলের সাথে আসলে রাগ টা ভিতর থেকে আসে না।
ছবি পাঠালো অনন্যা। দুই স্তনের ঠিক মাঝখানে আঁচল পেঁচিয়ে নাভি দেখানো পিক। পিক দেখে রকি শুধু চেয়েই রইলো। অনন্যা সিন হওয়ার পরও রকির তরফ থেকে রিপ্লে না পেয়ে লিখলো, কি ব্যাপার কিছু বলছো না যে?
রকি বললো, এই ফটো নিয়ে কিছু বলা যাবে না, রাগ করবা…….
রাগ করবো কেন আজব?
রকি লিখলো…… হট, সেক্সী, আগুন…….
অনন্যা কোনো রক্ষণশীল পরিবারে বড় হয় নি। ইমতিয়াজ খান ওকে অনেকটা স্বাধীনতার মধ্য দিয়েই বড় করেছেন। স্বাধীনচেতা অনন্যা এই সব শব্দ শুনে ব্যাকডেটেড মেয়েদের মত অপমানিতও হলো না, রাগ ও করলো না। উল্টো লেখলো, থ্যাংক্স রকি……..
সুমন রাতের খাওয়া দাওয়া শেষে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। কালকে শাওন আর বাবা কে নিয়ে বাড়ি যেতে হবে। অনন্যার জন্য মন খারাপ হয়ে আছে সুমনের। মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে এমন রাগ অভিমানের জন্য সে নিজেই দায়ী। শুধু র্যাগ ডে তে নাঁচ আর আরেকটা ছেলের সাথে ডুয়েট করার জন্য এত রাফ বিহেভ করা উচিত হয়নি ওর। আর অনন্যা তো আগে থেকেই ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরে। এখন এসব ড্রেস পরা স্বাভাবিক। কিন্তু সুমনের শুধু মনে হয় মেয়েরা এমন চলাফেরা করতে পারে না। ওই ছেলেটার সাথে এভাবে নাঁচা সে মানতে পারে না। অনন্যা কে নর্তকী বলেছে সে, ওই হিসেবে অনন্যা খুব বেশি রিয়্যাক্ট করে নি। অনন্যা কে ছাড়া থাকবে কিভাবে সে?
পিছন থেকে আকাশ এসে বললো কি রে অনন্যার সাথে দেখা হয়েছিলো?
হুম্ম…..
কি বললো অনন্যা আজকে?
আমি নাকি ব্যাকডেটেড……..
সুমন দোষ কিন্তু তোর ও আছে বুঝলি…….
আমি কি করলাম……..
অনন্যার যদি এগুলো ভালো লাগে তুই এসব করতে দে। ওর রিলস গুলো দেখেছিস? মিলিয়ন ভিউ পেরিয়ে গিয়েছে। ফেসবুকে মানুষ অনন্যার ছবি দিয়ে বলছে, কিউটের ডিব্বা……
মানুষ বলে এক আর অন্তরে ভাবে আরেক…….
মানুষের অন্তর দিয়ে তুই কি করবি? আর অনন্যা তোর থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যাওয়ার কারণ আছে……
কি কারণ, আমাকে ভালো লাগে না এই তো…..
জানি না কিভাবে নিবি আমার কথা। কিন্তু একটা মেয়ে রিলেশন এ যখন যায় তখন অনেক কিছু ভেবে রাখে। এরা মান্ধাতা আমলের মেয়ে না। এরা চায় বি এফ ওদের সাথে দুষ্টামি করবে। রিকশায় উঠে দুধ চেপে ধরবে। রেস্টুরেন্টে গিয়ে সুযোগ বুঝে চুষেও দিবে। আর একটা নিয়মিত বিরতিতে সেক্স না করলে এখনকার রিলেশন টিকেও না। তুই না করলেও অনন্যা খুব তাড়াতাড়ি অন্য কারো সাথে শুয়ে পরবে। তোর চাহিদা না থাকতে পারে ওর তো আছে?
ও তাহলে তুই বলতে চাচ্ছিস এসব নোংরামো ছাড়া প্রেম হয় না?
কিসের নোংরামো? গার্লফ্রেন্ড এর সাথে চিপকা চিপকি না করলে কার সাথে করবো…..
ভাই তুই যা তো এখানে, তোর এডভাইস দরকার নাই আমার……
ব্রেক আপ করে ফেল, এত নাটকের কি দরকার। বলেই ব্যলকনি থেকে চলে গেল আকাশ।
সকালে তল পেটের যন্ত্রনায় ঘুম ভাঙলো অনন্যার। ভ্যাজাইনার এখানে ভিজে ভাব থাকায় বুঝে গেল কি হয়েছে। কিন্তু আজ এত বেশি ব্যাথা করছে কেন? মাথাও ব্যাথা করছে, আবার বিরক্তিকর ওই মাইগ্রেন!
অনন্যা ফ্রেশ হয়ে এসে বিছানায় আবার শুয়ে পরলো। সঙ্গে সঙ্গে সাদিয়ার ফোন আসলো। সাদিয়া বললো,
শোন অনন্যা, আমরা মনে হয় আজও ফিরতে পারবো না, তুই তোর ফুপ্পির বাসায় চলে যা…..
অনন্যা ফোনে তার পাপার কন্ঠ পেল একটু দূর থেকে, জান, ফোনটা একটু রাখো না, আদর করতে মন চাচ্ছে…..
অনন্যা বিরক্তি নিয়ে ফোন কেটে দিলো। ফোন রেখে মাথা, তল পেটের ব্যাথা সহ্য করে ঘুমাতে চেষ্টা করলো ও। কিছুক্ষণ পর চোখজোড়ায় যেন হালকা ঘুম এসেও গেল। তখন আবার ফোন। ঘুমটা ভেঙে যেতেই মহা বিরক্তি নিয়ে ফোনের দিকে তাকালো অনন্যা, রকি ফোন করেছে।
হ্যালো অনন্যা, গুড মর্নিং, আসবে না আজকে?
না রকি, ভালো লাগছে না……
পোগ্রামের তো বেশিদিন নেই, রিহার্সেলই তো করা হয় নি। না আসলে কিভাবে হবে অনন্যা?
মহা বিরক্ত হয়ে অনন্যা উত্তর দিলো, বললাম না আসতে পারবো না আজকে। এত দরকার হলে অন্য কারো সাথে করো গিয়ে। বলেই ফোন কেটে দিলো অনন্যা। বিরক্তিতে মাইগ্রেনের ব্যাথাটাও যেন আরো বেড়ে গেল। কোলবালিশ তল পেটে চেপে ধরে শুয়ে থাকলো সে।
বেলা ১১ টার দিকে কলিং বেলের শব্দ শুনে দরজা খুললো অনন্যা। কেয়ার টেকার একটা র্যাপিং পেপারে মোড়ানো একটা পার্সেল দিয়ে বললো, ম্যাডাম একটা ছেলে দিয়ে গেল।
অনন্যা অবাক হয়ে দরজা লাগিয়ে দিয়ে রুমে এসে পেপার টা খুলতে লাগলো। প্যাকেট টা টানদিয়ে খুলতেই অনেকগুলো চকলেট বৃত্ত আকারে। তার মাঝে একটা কাগজ। কাগজটা টান দিতেই উপরের লেয়ারের চকলেট গুলো চারদিকে সরে গিয়ে ভিতর থেকে আরো চকলেট বেরিয়ে আসলো। অনন্যা অবাক হয়ে যাচ্ছে চকলেটের কারুকার্য দেখে। তার পর কাগজটা পড়তে শুরু করলো। খুব বেশি কিছু লেখা নেই,
অনন্যা, অন্য কিছু ভেবো না। তোমাকে এই কয়দিনে যতটুকু চিনেছে তাতে বুঝি যে অল্পতে বিরক্ত হওয়ার মত মেয়ে তুমি না। তাই তোমার বিরক্তির কারণটা আমি বুঝেছি। তোমাকে এমন সময় বিরক্ত করার জন্য সরি। এগুলো পাঠানোতেও হয়তো বিরক্ত হবে। কিন্তু আমি শুধু তোমাকে বিরক্ত করেছি এই খারাপ অনুভুতি টা থেকে মুক্তি পেতে চাচ্ছি।
রকি
অনন্যা মুচকি হেসে বললো পাগল ছেলে। তারপরে চোখ পরলো আরেকটা প্যাকেট ওই প্যাকেট টা খুলতেই চকলেট দিয়ে ঠাসা একটা স্যানিটারি ন্যাপকিন এর প্যাকেট। অনন্যা বললো, ধ্যাত, এটা কেন দিতে গেল! বাসায় নাই নাকি আমার!
অনন্যা রকি কে ফোন দিল। একবার রিং হওয়ার আফেই রিসিভ করলো রকি। যেন অনন্যার ফোনের অপেক্ষাতেই ছিল।
হ্যালো রকি, কোথায় তুমি?
তোমার বাসার নিচেই দাঁড়িয়ে আছি….
উপরে চলে আসো……
না না, সমস্যা নেই। তুমি রেস্ট নাও…..
আসো প্রবলেম নেই….. অনন্যা জানে খালি বাসায় রকিকে ইনভাইট করা যায়। রকির খালি বাসাতেই রকি কোনো অসভ্যতা করে নি।
আচ্ছা আসছি…..
অনন্যার তারপর খেয়াল হলো ও শুধু টিশার্ট আর শর্টস পরা। শর্টস পরে রকির সামনে যাওয়া যাবে না। শর্টস এর উপর ঢিলে একটা ট্রাউজার পরে নিলো সে।
রকি বাসায় ঢুকে বললো, বাসায় কেউ নেই?
না, ওরা একটু বাহিরে গিয়েছে? তুমি এড্রেস জানলে কিভাবে?
ওই যে ওইদিন ডেকোরেশন এর জন্য এড্রেস দিলে……
ওহ আচ্ছা বসো……
সোফায় কিছুক্ষণ বসার পর অনন্যার মনে হলো রকিকে ডেকে ভুলই করেছে। পেটের ব্যাথায় বসে থাকতে পারছে না আবার গিয়ে শুয়ে পরবে এটাও সম্ভব না। রকি হটাৎ বললো, সমস্যা হলে শুয়ে পরো অনন্যা, আর বাসায় হট ওয়াটার ব্যাগ নেই?
আছে, সমস্যা নেই থাক……
তুমি গিয়ে শুয়ে পরো, আমি কিচেনে পানি গরম করছি……
না গিজারেই পানি আছে……
তুমি খুব অলস অনন্যা, পানি টা ব্যাগে ভরে ইউজ করবে, এটাও পারো না……
আরে, মাথাটাও ব্যাথা করছে, মাইগ্রেন……
ওহ, তুমি শুয়ে পরো…..
অনন্যা বেডরুমে ঢুকে শুয়ে পরলো। রকি ব্যাগটা তে পানি ভরে বললো, দিয়ে রাখো। আর ফ্রিজে আইস আছে?
হুম…..
দাঁড়াও আনছি……
একটা বাটিতে কয়েক টুকরো বরফ নিয়ে অনন্যার মাথার পাশে একটা চেয়ার নিয়ে বসলো রকি।
অনন্যা আমি ম্যাসাজ করে দিচ্ছি, মাইগ্রেন জানালা দিয়ে পালাবে…..
অনন্যার রকির হাতের ঠাণ্ডা আঙুলের ছোঁয়া ভালো লাগছে। সত্যিই ব্যাথা অনেকটা উপশম হয়েছে। অনন্যা বললো, রকি কোথায় শিখলে এটা?
হুমায়ুন আহমেদের এই শুভ্র এই! এ এই টেকনিক পড়েছি…. আজই প্রথম এপ্লাই করলাম…….
বাবাহ, তুমি হুমায়ুন ও পড়ো…….!
কেন? আমাকে দেখে বই পড়তে পারি এমন মনে হয় না?
না তেমন না, তবুও বললাম আরকি……
বাহিরে যেতে পারবে? লাঞ্চের সময় হয়ে যাচ্ছে……
হ্যাঁ, এখন একটু ভালো লাগছে, চলো যাই…….
আচ্ছা রেডি হয়ে নাও….. আমি বাইরে বসছি…..
আচ্ছা পাঁচ মিনিট লাগবে…..
বিল্ডিং এর গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় রকি মাথা নিচু করে বের হলো। রকির গাড়ি বাহিরে পার্ক করা। গাড়ি পর্যন্ত যেতে যেতে অনন্যা ভাবলো কি লম্বা রকি, ৬ ফিট এর উপরে। নিচের টি শার্টের সাথে উপরের শার্ট টা এতটাই মানিয়েছে যে, যে কেউ রকির ড্রেস সেন্স এর প্রশংসা করবে।
রকি, তোমার তো জি এফ নেই, তাই না….?
স্টিয়ারিং ঘুরাতে ঘুরাতে রকি বললো, ছিল, ব্রেক আপ……
ওমা ব্রেক আপ কেন?
ও একটু রিলিজিয়াস ছিল। তাতে আমার কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু আমাদের বয়স টাই তো এমন তাই না? ওর হাত ধরলেও বলতো বিয়ের পর, লাস্ট ইয়ারে ভ্যালেন্টাইন্স ডে তেও আমার ওর জন্য উপোষ থাকতে হয়েছে…..
অনন্যা মুচকি হেসে বললো, আহারে বেচারা……
মজা নিচ্ছো, নাও……
অনন্যা ভাবছে সেম জিনিস তার সাথেও ঘটছে। সুমনের সাথে কোনো দিক দিয়েই বনিবনা হচ্ছে না তার। অনেকটা জোর করেই যেন রিলেশনশিপ টা কন্টিনিউ করছে দু'জন। সুমন ও বিয়ের পর বিয়ের পর করে শুধু। তারও তো কিছু ফিজিক্যাল নিড আছে নাকি….. অনন্যা একবার রকির দিকে তাকালো। তার বয়ফ্রেন্ড তো রকির মত আধুনিকমনা, মুক্ত চিন্তার অধিকারীও হতে পারতো……
কেমন ট্রেন্ড রকি? ড্রেস আপ ঠিক আছে না?
হুম, ড্রেস ঠিক আছে, বাট আরেকটু স্পাইসি দিতে হবে। ইন্সটা কিন্তু টিকটক না, এখানকার অডিয়েন্স ডিমান্ড অন্যরকম। একটা ভিডিও বানাও, প্রথম টি শার্ট আর সেলোয়ার পরে হালকা মিউজিক এ একদম সাদা মাটা স্লো মোশন। আরেকটা ভিডিও মিউজিক এর সাথে একদম ফুল মেক আপ শাড়ির দেশি লুকে। তারপর আমাকে দাও। আমি রিলস ক্রিয়েট করে দিচ্ছি…..
আচ্ছা, আমি বানিয়ে দিচ্ছি তোমায় রকি……
আর অনন্যা, কিভাবে বলি! কি মনে করবা আবার তুমি…..
কিছু মনে করবো না, বলো তুমি রকি……
শাড়ি একটু বোল্ড ভাবে পড়তে হয়……..
এর থেকে বোল্ড আবার কিভাবে পরবো! খারাপ দেখাবে?
দিশা পাটানি, কিয়ারা আদভানি কে খারাপ দেখায়? নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে মানুষ তোমাকে স্বপ্ন দেখবে, কিন্তু কখনো ছোঁয়ার সাহস করবে না…..
আচ্ছা, ঠিক আছে……
শাড়ি পরে পিক দাও আগে…….
এমন ভাবে শাড়ি পরা পিক চাচ্ছো, মনে হচ্ছে আমি তোমার গার্লফ্রেন্ড হই…….
ওহ সরি, আসলে নাই তো, তাই কখনো সুযোগ পেলে ছাড়ি না। তাই আবদার করে ফেলি…..
তোমার জি এফ নেই, এটাও আমাকে বিশ্বাস করতে হবে…..!!
সত্যিই নেই। আর থাকলে এত রাতে আরেকটা মেয়ের সাথে কথা বলতে দিতো……
আচ্ছা। ভিডিও বানিয়ে পাঠাচ্ছি তোমায়…..
আগে পিক পাঠাও……
ওয়েট করো……
অনন্যা ট্রান্সপারেন্ট শাড়ি বের করলো একটা। ম্যাচিং ব্লাউজ পরলো। নাভিটা বের করে একটা মিরর সেলফি তুলে সেন্ড করলো রকির কাছে। রকির কাছে প্রশংসা শোনার জন্য মনটা উন্মুখ হয়ে আছে। সাথে সাথে রকির মেসেজ আসলো, আঁচল টা পেঁচিয়ে বুকের মাঝে রেখে আরেকটা পিক দাও….
অনন্যা প্রথমে ভাবছিলো রাগ দেখাবে, কিন্তু তার রাগ হচ্ছে না। রকি ছেলেটাকে ভালো লেগে গিয়েছে। রকির সাথে তার মানসিকতা পুরো মিলে যাচ্ছে। নিজের সৌন্দর্য যদি ঢেকেই রাখা লাগে তাহলে মেয়ে হয়ে জন্মে লাভ কি? আর রকির মত হ্যান্ডসাম ছেলের সাথে আসলে রাগ টা ভিতর থেকে আসে না।
ছবি পাঠালো অনন্যা। দুই স্তনের ঠিক মাঝখানে আঁচল পেঁচিয়ে নাভি দেখানো পিক। পিক দেখে রকি শুধু চেয়েই রইলো। অনন্যা সিন হওয়ার পরও রকির তরফ থেকে রিপ্লে না পেয়ে লিখলো, কি ব্যাপার কিছু বলছো না যে?
রকি বললো, এই ফটো নিয়ে কিছু বলা যাবে না, রাগ করবা…….
রাগ করবো কেন আজব?
রকি লিখলো…… হট, সেক্সী, আগুন…….
অনন্যা কোনো রক্ষণশীল পরিবারে বড় হয় নি। ইমতিয়াজ খান ওকে অনেকটা স্বাধীনতার মধ্য দিয়েই বড় করেছেন। স্বাধীনচেতা অনন্যা এই সব শব্দ শুনে ব্যাকডেটেড মেয়েদের মত অপমানিতও হলো না, রাগ ও করলো না। উল্টো লেখলো, থ্যাংক্স রকি……..
সুমন রাতের খাওয়া দাওয়া শেষে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। কালকে শাওন আর বাবা কে নিয়ে বাড়ি যেতে হবে। অনন্যার জন্য মন খারাপ হয়ে আছে সুমনের। মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে এমন রাগ অভিমানের জন্য সে নিজেই দায়ী। শুধু র্যাগ ডে তে নাঁচ আর আরেকটা ছেলের সাথে ডুয়েট করার জন্য এত রাফ বিহেভ করা উচিত হয়নি ওর। আর অনন্যা তো আগে থেকেই ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরে। এখন এসব ড্রেস পরা স্বাভাবিক। কিন্তু সুমনের শুধু মনে হয় মেয়েরা এমন চলাফেরা করতে পারে না। ওই ছেলেটার সাথে এভাবে নাঁচা সে মানতে পারে না। অনন্যা কে নর্তকী বলেছে সে, ওই হিসেবে অনন্যা খুব বেশি রিয়্যাক্ট করে নি। অনন্যা কে ছাড়া থাকবে কিভাবে সে?
পিছন থেকে আকাশ এসে বললো কি রে অনন্যার সাথে দেখা হয়েছিলো?
হুম্ম…..
কি বললো অনন্যা আজকে?
আমি নাকি ব্যাকডেটেড……..
সুমন দোষ কিন্তু তোর ও আছে বুঝলি…….
আমি কি করলাম……..
অনন্যার যদি এগুলো ভালো লাগে তুই এসব করতে দে। ওর রিলস গুলো দেখেছিস? মিলিয়ন ভিউ পেরিয়ে গিয়েছে। ফেসবুকে মানুষ অনন্যার ছবি দিয়ে বলছে, কিউটের ডিব্বা……
মানুষ বলে এক আর অন্তরে ভাবে আরেক…….
মানুষের অন্তর দিয়ে তুই কি করবি? আর অনন্যা তোর থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যাওয়ার কারণ আছে……
কি কারণ, আমাকে ভালো লাগে না এই তো…..
জানি না কিভাবে নিবি আমার কথা। কিন্তু একটা মেয়ে রিলেশন এ যখন যায় তখন অনেক কিছু ভেবে রাখে। এরা মান্ধাতা আমলের মেয়ে না। এরা চায় বি এফ ওদের সাথে দুষ্টামি করবে। রিকশায় উঠে দুধ চেপে ধরবে। রেস্টুরেন্টে গিয়ে সুযোগ বুঝে চুষেও দিবে। আর একটা নিয়মিত বিরতিতে সেক্স না করলে এখনকার রিলেশন টিকেও না। তুই না করলেও অনন্যা খুব তাড়াতাড়ি অন্য কারো সাথে শুয়ে পরবে। তোর চাহিদা না থাকতে পারে ওর তো আছে?
ও তাহলে তুই বলতে চাচ্ছিস এসব নোংরামো ছাড়া প্রেম হয় না?
কিসের নোংরামো? গার্লফ্রেন্ড এর সাথে চিপকা চিপকি না করলে কার সাথে করবো…..
ভাই তুই যা তো এখানে, তোর এডভাইস দরকার নাই আমার……
ব্রেক আপ করে ফেল, এত নাটকের কি দরকার। বলেই ব্যলকনি থেকে চলে গেল আকাশ।
সকালে তল পেটের যন্ত্রনায় ঘুম ভাঙলো অনন্যার। ভ্যাজাইনার এখানে ভিজে ভাব থাকায় বুঝে গেল কি হয়েছে। কিন্তু আজ এত বেশি ব্যাথা করছে কেন? মাথাও ব্যাথা করছে, আবার বিরক্তিকর ওই মাইগ্রেন!
অনন্যা ফ্রেশ হয়ে এসে বিছানায় আবার শুয়ে পরলো। সঙ্গে সঙ্গে সাদিয়ার ফোন আসলো। সাদিয়া বললো,
শোন অনন্যা, আমরা মনে হয় আজও ফিরতে পারবো না, তুই তোর ফুপ্পির বাসায় চলে যা…..
অনন্যা ফোনে তার পাপার কন্ঠ পেল একটু দূর থেকে, জান, ফোনটা একটু রাখো না, আদর করতে মন চাচ্ছে…..
অনন্যা বিরক্তি নিয়ে ফোন কেটে দিলো। ফোন রেখে মাথা, তল পেটের ব্যাথা সহ্য করে ঘুমাতে চেষ্টা করলো ও। কিছুক্ষণ পর চোখজোড়ায় যেন হালকা ঘুম এসেও গেল। তখন আবার ফোন। ঘুমটা ভেঙে যেতেই মহা বিরক্তি নিয়ে ফোনের দিকে তাকালো অনন্যা, রকি ফোন করেছে।
হ্যালো অনন্যা, গুড মর্নিং, আসবে না আজকে?
না রকি, ভালো লাগছে না……
পোগ্রামের তো বেশিদিন নেই, রিহার্সেলই তো করা হয় নি। না আসলে কিভাবে হবে অনন্যা?
মহা বিরক্ত হয়ে অনন্যা উত্তর দিলো, বললাম না আসতে পারবো না আজকে। এত দরকার হলে অন্য কারো সাথে করো গিয়ে। বলেই ফোন কেটে দিলো অনন্যা। বিরক্তিতে মাইগ্রেনের ব্যাথাটাও যেন আরো বেড়ে গেল। কোলবালিশ তল পেটে চেপে ধরে শুয়ে থাকলো সে।
বেলা ১১ টার দিকে কলিং বেলের শব্দ শুনে দরজা খুললো অনন্যা। কেয়ার টেকার একটা র্যাপিং পেপারে মোড়ানো একটা পার্সেল দিয়ে বললো, ম্যাডাম একটা ছেলে দিয়ে গেল।
অনন্যা অবাক হয়ে দরজা লাগিয়ে দিয়ে রুমে এসে পেপার টা খুলতে লাগলো। প্যাকেট টা টানদিয়ে খুলতেই অনেকগুলো চকলেট বৃত্ত আকারে। তার মাঝে একটা কাগজ। কাগজটা টান দিতেই উপরের লেয়ারের চকলেট গুলো চারদিকে সরে গিয়ে ভিতর থেকে আরো চকলেট বেরিয়ে আসলো। অনন্যা অবাক হয়ে যাচ্ছে চকলেটের কারুকার্য দেখে। তার পর কাগজটা পড়তে শুরু করলো। খুব বেশি কিছু লেখা নেই,
অনন্যা, অন্য কিছু ভেবো না। তোমাকে এই কয়দিনে যতটুকু চিনেছে তাতে বুঝি যে অল্পতে বিরক্ত হওয়ার মত মেয়ে তুমি না। তাই তোমার বিরক্তির কারণটা আমি বুঝেছি। তোমাকে এমন সময় বিরক্ত করার জন্য সরি। এগুলো পাঠানোতেও হয়তো বিরক্ত হবে। কিন্তু আমি শুধু তোমাকে বিরক্ত করেছি এই খারাপ অনুভুতি টা থেকে মুক্তি পেতে চাচ্ছি।
রকি
অনন্যা মুচকি হেসে বললো পাগল ছেলে। তারপরে চোখ পরলো আরেকটা প্যাকেট ওই প্যাকেট টা খুলতেই চকলেট দিয়ে ঠাসা একটা স্যানিটারি ন্যাপকিন এর প্যাকেট। অনন্যা বললো, ধ্যাত, এটা কেন দিতে গেল! বাসায় নাই নাকি আমার!
অনন্যা রকি কে ফোন দিল। একবার রিং হওয়ার আফেই রিসিভ করলো রকি। যেন অনন্যার ফোনের অপেক্ষাতেই ছিল।
হ্যালো রকি, কোথায় তুমি?
তোমার বাসার নিচেই দাঁড়িয়ে আছি….
উপরে চলে আসো……
না না, সমস্যা নেই। তুমি রেস্ট নাও…..
আসো প্রবলেম নেই….. অনন্যা জানে খালি বাসায় রকিকে ইনভাইট করা যায়। রকির খালি বাসাতেই রকি কোনো অসভ্যতা করে নি।
আচ্ছা আসছি…..
অনন্যার তারপর খেয়াল হলো ও শুধু টিশার্ট আর শর্টস পরা। শর্টস পরে রকির সামনে যাওয়া যাবে না। শর্টস এর উপর ঢিলে একটা ট্রাউজার পরে নিলো সে।
রকি বাসায় ঢুকে বললো, বাসায় কেউ নেই?
না, ওরা একটু বাহিরে গিয়েছে? তুমি এড্রেস জানলে কিভাবে?
ওই যে ওইদিন ডেকোরেশন এর জন্য এড্রেস দিলে……
ওহ আচ্ছা বসো……
সোফায় কিছুক্ষণ বসার পর অনন্যার মনে হলো রকিকে ডেকে ভুলই করেছে। পেটের ব্যাথায় বসে থাকতে পারছে না আবার গিয়ে শুয়ে পরবে এটাও সম্ভব না। রকি হটাৎ বললো, সমস্যা হলে শুয়ে পরো অনন্যা, আর বাসায় হট ওয়াটার ব্যাগ নেই?
আছে, সমস্যা নেই থাক……
তুমি গিয়ে শুয়ে পরো, আমি কিচেনে পানি গরম করছি……
না গিজারেই পানি আছে……
তুমি খুব অলস অনন্যা, পানি টা ব্যাগে ভরে ইউজ করবে, এটাও পারো না……
আরে, মাথাটাও ব্যাথা করছে, মাইগ্রেন……
ওহ, তুমি শুয়ে পরো…..
অনন্যা বেডরুমে ঢুকে শুয়ে পরলো। রকি ব্যাগটা তে পানি ভরে বললো, দিয়ে রাখো। আর ফ্রিজে আইস আছে?
হুম…..
দাঁড়াও আনছি……
একটা বাটিতে কয়েক টুকরো বরফ নিয়ে অনন্যার মাথার পাশে একটা চেয়ার নিয়ে বসলো রকি।
অনন্যা আমি ম্যাসাজ করে দিচ্ছি, মাইগ্রেন জানালা দিয়ে পালাবে…..
অনন্যার রকির হাতের ঠাণ্ডা আঙুলের ছোঁয়া ভালো লাগছে। সত্যিই ব্যাথা অনেকটা উপশম হয়েছে। অনন্যা বললো, রকি কোথায় শিখলে এটা?
হুমায়ুন আহমেদের এই শুভ্র এই! এ এই টেকনিক পড়েছি…. আজই প্রথম এপ্লাই করলাম…….
বাবাহ, তুমি হুমায়ুন ও পড়ো…….!
কেন? আমাকে দেখে বই পড়তে পারি এমন মনে হয় না?
না তেমন না, তবুও বললাম আরকি……
বাহিরে যেতে পারবে? লাঞ্চের সময় হয়ে যাচ্ছে……
হ্যাঁ, এখন একটু ভালো লাগছে, চলো যাই…….
আচ্ছা রেডি হয়ে নাও….. আমি বাইরে বসছি…..
আচ্ছা পাঁচ মিনিট লাগবে…..
বিল্ডিং এর গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় রকি মাথা নিচু করে বের হলো। রকির গাড়ি বাহিরে পার্ক করা। গাড়ি পর্যন্ত যেতে যেতে অনন্যা ভাবলো কি লম্বা রকি, ৬ ফিট এর উপরে। নিচের টি শার্টের সাথে উপরের শার্ট টা এতটাই মানিয়েছে যে, যে কেউ রকির ড্রেস সেন্স এর প্রশংসা করবে।
রকি, তোমার তো জি এফ নেই, তাই না….?
স্টিয়ারিং ঘুরাতে ঘুরাতে রকি বললো, ছিল, ব্রেক আপ……
ওমা ব্রেক আপ কেন?
ও একটু রিলিজিয়াস ছিল। তাতে আমার কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু আমাদের বয়স টাই তো এমন তাই না? ওর হাত ধরলেও বলতো বিয়ের পর, লাস্ট ইয়ারে ভ্যালেন্টাইন্স ডে তেও আমার ওর জন্য উপোষ থাকতে হয়েছে…..
অনন্যা মুচকি হেসে বললো, আহারে বেচারা……
মজা নিচ্ছো, নাও……
অনন্যা ভাবছে সেম জিনিস তার সাথেও ঘটছে। সুমনের সাথে কোনো দিক দিয়েই বনিবনা হচ্ছে না তার। অনেকটা জোর করেই যেন রিলেশনশিপ টা কন্টিনিউ করছে দু'জন। সুমন ও বিয়ের পর বিয়ের পর করে শুধু। তারও তো কিছু ফিজিক্যাল নিড আছে নাকি….. অনন্যা একবার রকির দিকে তাকালো। তার বয়ফ্রেন্ড তো রকির মত আধুনিকমনা, মুক্ত চিন্তার অধিকারীও হতে পারতো……