14-09-2024, 04:56 PM
পর্ব: ৫
বাইরে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। সকাল বেলা অংশুর অঙ্কের হোম টিউটর সুখবিলাস বাবু এসেছেন। সুচিত্রা চা দিয়ে গেল সুখবিলাস বাবুকে।
জয়ন্তের মর্নিং ডিউটি আছে। সে সেই বেরিয়েছে ভোরে। পিউ ফোন করে জানিয়েছে সে হোস্টেলে সেটল হয়েছে। আজ চারদিন হল মেয়েটা বাড়িতে নেই। জয়ন্তের মনটা বিষন্ন হয়ে আছে। ছেলে-মেয়ে থাকলে বাড়িটা গমগম করে।
ডাঃ মিত্র বললেন---আজ হাসপাতাল পরিদর্শনে স্বাস্থ্য মন্ত্রী আসবেন। তার আগে সচিব আসবেন। ডাঃ মৃণ্ময় নাগের বিরুদ্ধে জানানো দরকার।
জয়ন্ত খুব একটা আগ্রহী হল না বিষয়টায়। এসব নেতা-মন্ত্রীদের সাথে মৃণ্ময় নাগের ওঠাবসা। তবু একটা লিখিত দেওয়ার প্রস্তাবে বহু ডাক্তার ঐক্যবদ্ধ। এ' বিষয়ে জয়ন্তকে উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে।
সাদা কাগজে এপ্লিকেশন লিখল জয়ন্ত। ডাক্তারদের সহি করিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব ডাঃ মিত্রের। জয়ন্ত মিত্রের হাতে এপ্লিকেশনটি দিয়ে বলল---গেলাম হে ডাঃ মিত্র, ২৭ নম্বর বেডের পেশেন্টটা এক্সপায়ার করেছে। তার ডেথ এনাউন্স দিতে হবে পরিজনদের।
২৭ নং বেডের রোগীর এক্সপায়ার করার কথা অনেক দিন আগেই। তাও কই মাছের মত কাটিয়ে দিল অনেক ক'টা দিন।
এই ডেথ এনাউন্স দেওয়াটা জয়ন্তের ডাক্তারির প্রথম জীবনে বড্ড কষ্টকর ছিল। কতটা মানবিক হয়ে দেওয়া যায়, রোগীর বয়স কত, সবটা নির্ভর করত। আজকাল আর সেসব আবেগ কাজ করে না। সব গা সওয়া হয়ে গেছে।
এ' রোগীর বয়স বেশি। কাজেই পরিবার-পরিজনও বিশেষ আশাবাদী ছিলেন না। এটা একটা সুবিধে। জয়ন্ত রোগীর পরিবারকে মৃত্যুর খবরটা জানিয়ে লাউঞ্জে ফিরল। এখানেই কথা হল জুনিয়র ডাক্তারদের সাথে। ওরাও সাহসিকতার সাথে বলল "মৃণ্ময় স্যারের বিরুদ্ধে একটা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার"।
***
হোম টিউটর চলে যেতেই অংশু বললে---মা খিদে পাচ্ছে।
সুচিত্রার কলেজ আছে। স্নান সেরে বেরিয়ে ও' শাড়ি পরছিল। চুলটা এখনো ওর দীঘল কালো। খোঁপা বা লম্বা বেণী করে বাঁধতে হয়। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুলটা বাঁধতে বাঁধতে বলল--- টেবিলে রাখা আছে, খেয়ে নে। আর দুপুরের খাবার বাবা এলে একসাথে খেয়ে নিস।
***
মা বেরিয়ে যাবার পর অংশু টিফিন করে বারান্দায় ক্রিকেটের শ্যাডো প্র্যাকটিস করছিল। বাড়িটা সত্যি এখন খাঁ খাঁ করছে। মায়ের কলেজ থেকে ফিরতে চারটা। এর মধ্যে অংশুর মাথায় এলো বাবার ল্যাপটপটা ঘরেই।
ল্যাপটপটা অন করে ফেসবুক চালু করল অংশু। বাবারও একটা ফেসবুক আইডি খুলে দিয়েছিল সে। বাবার ডাক্তার বন্ধুদের সাথে এড করে দিয়েছিল। কিন্তু বাবার তাতে বিশেষ আগ্রহ নেই। অংশু নিজের ইমেল, পাসওয়ার্ড দিয়ে ফেসবুক লগঅন করল। কয়েকটা চেনা বন্ধু ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠিয়েছে।
সিনু মাসি আমেরিকার নিউ জার্সির ছবি দিয়েছে। প্রায়শই অংশুকে বলে ওখানে নিয়ে যাবার কথা। পল্টুর জন্মদিনে ওরা ডিনারে যাবার ছবি দিয়েছে। পল্টুটা আমেরিকা গিয়েও সেই ভ্যাবলা থেকে গেল। মনে মনে হাসলো অংশু।
অনেকক্ষন ফেসবুক নিয়ে পড়ে থাকলো সে। অংশু নিজের প্রোফাইলটা লগ আউট করে, বাবারটি যেমন অন করা ছিল করে দিল। বাবার প্রোফাইলে পোস্ট করা শেষ ছবি, যেটা অংশু সেট করে দিয়েছিল সেটাই। মায়ের একটা প্রোফাইল দিদি খুলে দিয়েছিল। কোনোদিন ফেসবুকে আগ্রহ দেখায়নি মা। মাঝে মধ্যে দিদি কয়েকবার মাকে এটা ওটা বুঝিয়ে দিয়েছিল বটে।
***
বাইরে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। সকাল বেলা অংশুর অঙ্কের হোম টিউটর সুখবিলাস বাবু এসেছেন। সুচিত্রা চা দিয়ে গেল সুখবিলাস বাবুকে।
জয়ন্তের মর্নিং ডিউটি আছে। সে সেই বেরিয়েছে ভোরে। পিউ ফোন করে জানিয়েছে সে হোস্টেলে সেটল হয়েছে। আজ চারদিন হল মেয়েটা বাড়িতে নেই। জয়ন্তের মনটা বিষন্ন হয়ে আছে। ছেলে-মেয়ে থাকলে বাড়িটা গমগম করে।
ডাঃ মিত্র বললেন---আজ হাসপাতাল পরিদর্শনে স্বাস্থ্য মন্ত্রী আসবেন। তার আগে সচিব আসবেন। ডাঃ মৃণ্ময় নাগের বিরুদ্ধে জানানো দরকার।
জয়ন্ত খুব একটা আগ্রহী হল না বিষয়টায়। এসব নেতা-মন্ত্রীদের সাথে মৃণ্ময় নাগের ওঠাবসা। তবু একটা লিখিত দেওয়ার প্রস্তাবে বহু ডাক্তার ঐক্যবদ্ধ। এ' বিষয়ে জয়ন্তকে উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে।
সাদা কাগজে এপ্লিকেশন লিখল জয়ন্ত। ডাক্তারদের সহি করিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব ডাঃ মিত্রের। জয়ন্ত মিত্রের হাতে এপ্লিকেশনটি দিয়ে বলল---গেলাম হে ডাঃ মিত্র, ২৭ নম্বর বেডের পেশেন্টটা এক্সপায়ার করেছে। তার ডেথ এনাউন্স দিতে হবে পরিজনদের।
২৭ নং বেডের রোগীর এক্সপায়ার করার কথা অনেক দিন আগেই। তাও কই মাছের মত কাটিয়ে দিল অনেক ক'টা দিন।
এই ডেথ এনাউন্স দেওয়াটা জয়ন্তের ডাক্তারির প্রথম জীবনে বড্ড কষ্টকর ছিল। কতটা মানবিক হয়ে দেওয়া যায়, রোগীর বয়স কত, সবটা নির্ভর করত। আজকাল আর সেসব আবেগ কাজ করে না। সব গা সওয়া হয়ে গেছে।
এ' রোগীর বয়স বেশি। কাজেই পরিবার-পরিজনও বিশেষ আশাবাদী ছিলেন না। এটা একটা সুবিধে। জয়ন্ত রোগীর পরিবারকে মৃত্যুর খবরটা জানিয়ে লাউঞ্জে ফিরল। এখানেই কথা হল জুনিয়র ডাক্তারদের সাথে। ওরাও সাহসিকতার সাথে বলল "মৃণ্ময় স্যারের বিরুদ্ধে একটা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার"।
***
হোম টিউটর চলে যেতেই অংশু বললে---মা খিদে পাচ্ছে।
সুচিত্রার কলেজ আছে। স্নান সেরে বেরিয়ে ও' শাড়ি পরছিল। চুলটা এখনো ওর দীঘল কালো। খোঁপা বা লম্বা বেণী করে বাঁধতে হয়। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুলটা বাঁধতে বাঁধতে বলল--- টেবিলে রাখা আছে, খেয়ে নে। আর দুপুরের খাবার বাবা এলে একসাথে খেয়ে নিস।
***
মা বেরিয়ে যাবার পর অংশু টিফিন করে বারান্দায় ক্রিকেটের শ্যাডো প্র্যাকটিস করছিল। বাড়িটা সত্যি এখন খাঁ খাঁ করছে। মায়ের কলেজ থেকে ফিরতে চারটা। এর মধ্যে অংশুর মাথায় এলো বাবার ল্যাপটপটা ঘরেই।
ল্যাপটপটা অন করে ফেসবুক চালু করল অংশু। বাবারও একটা ফেসবুক আইডি খুলে দিয়েছিল সে। বাবার ডাক্তার বন্ধুদের সাথে এড করে দিয়েছিল। কিন্তু বাবার তাতে বিশেষ আগ্রহ নেই। অংশু নিজের ইমেল, পাসওয়ার্ড দিয়ে ফেসবুক লগঅন করল। কয়েকটা চেনা বন্ধু ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠিয়েছে।
সিনু মাসি আমেরিকার নিউ জার্সির ছবি দিয়েছে। প্রায়শই অংশুকে বলে ওখানে নিয়ে যাবার কথা। পল্টুর জন্মদিনে ওরা ডিনারে যাবার ছবি দিয়েছে। পল্টুটা আমেরিকা গিয়েও সেই ভ্যাবলা থেকে গেল। মনে মনে হাসলো অংশু।
অনেকক্ষন ফেসবুক নিয়ে পড়ে থাকলো সে। অংশু নিজের প্রোফাইলটা লগ আউট করে, বাবারটি যেমন অন করা ছিল করে দিল। বাবার প্রোফাইলে পোস্ট করা শেষ ছবি, যেটা অংশু সেট করে দিয়েছিল সেটাই। মায়ের একটা প্রোফাইল দিদি খুলে দিয়েছিল। কোনোদিন ফেসবুকে আগ্রহ দেখায়নি মা। মাঝে মধ্যে দিদি কয়েকবার মাকে এটা ওটা বুঝিয়ে দিয়েছিল বটে।
***