13-09-2024, 04:08 PM
চতুস্ত্রিংশতি পরিচ্ছেদ
বাস ভরে গেছে। বাসের একদিকে বয়স্করা অন্যদিকে বিশুর বন্ধুর লোকজন।পিকলু বুদ্ধিকরে জানলার ধারে রুমাল দিয়ে জায়গা রেখেছিল।আরণ্যক রুমাল সরিয়ে বসল।কিচির মিচির আলাপ চলছে।মেয়েরা থাকলে কিচির মিচির হবেই।আরণ্যকের পিছনে পিকলু তার বউকে নিয়ে বসেছে।ঘাড় ঘুরিয়ে রুমাল ফেরত দিতে গিয়ে বউয়ের সঙ্গে চোখাচুখি হল।পিকলু বলল,পারমিতা তুমি তো রনোকে চেনো।
পারমিতা মুচকি হেসে সম্মতি জানাল।
কিরে আর কেঊ বাকী নেইতো?পিছন থেকে কে যেন জিজ্ঞেস করল।
আমাদের সবাই উঠেছে।পিক্লু বলল।
বাস স্টার্ট নিয়ে চলতে শুরু করে।জানলা দিয়ে হাওয়া ঢোকে,বাসের গুমোটভাবটা কেটে যায়।
শালা দু-দুটো প্রেম কেটে গিয়ে শেষে এখানে বিয়ে হচ্ছে।পিকলু বলল।
ভগবান যা করে মঙ্গলের জন্য।পাশ থেকে পারমিতা বলল।
মঙ্গল কি অমঙ্গল জানিনা সবে তো দু-বছর হল।
কি বললে?তোমার কি অমঙ্গল হয়েছে শুনি?পারমিতা ফোস করে উঠল।
পিকলুর বিয়ে হয়েছে দু-বছর।বউকে রাগাবার জন্য মজা করে।স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে খুনসুটি আরণ্যক উপভোগ করে।
আমার কথা তো তুমি শুনলেই না,আমি বলতে চাইছি বিয়ে কার যে কোথায় হবে সব বিধাতার মর্জি।
পিকলুর কথাটা আরণ্যককে স্পর্শ করে।সেও কি কখনো কল্পনা করেছে ইলিনা ব্রাউন তার বউ হবে?যেমন রূপ তেমনি গুণ।যে করেই হোক তাকে লিনার যোগ্য হতেই হবে।আঙুলের আংটিটায় হাত বোলায়।
সানাইয়ের আওয়াজ কানে আসে।বিয়ে বাড়ীর কাছাকাছি এসে পড়েছে মনে হচ্ছে।রাস্তার একপাশে সারি সারি গাড়ী পার্কিং করা।মেয়ের বাড়ী অবস্থাপন্ন মনে হল।বাস থামতেই কয়েকজন লোক অভ্যর্থনা করতে এগিয়ে এল।
দোতলায় বিশাল ডাইনিং হল।তিন তলায় অভ্যাগতদের বসার জায়গা।একপাশে একটা ঘরে সাজানো চেয়ারে বসে আছে কনে।তাকে ঘিরে আছে কয়েকজন মহিলা।
মান্তু ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করল,বিশের বউয়ের নাম কি যেন--?
বৈশালী।এখনো বৌ হয়নি।আশিস বলল।
মেয়েরা সব বউয়ের ঘরে ঢুকে আলাপ শুরু করে দিল।
আশিস ভ্রু কুচকে কিছুক্ষণ বৈশালীকে দেখে বলল,আমার মনে হয় চিনির থেকে সুন্দরী,কিরে রনো তোর কি মনে হয়?
আচ্ছা যে এখানে নেই খামোখা তাকে টেনে আনা কেন?
কেন আনবে না কেন তুই তো জানিস বিশুকে কিভাবে চাকরের মত খাটিয়েছে।শালা বেইমান মাগী।
আজ একটা শুভদিনে কি এইসব আলোচনা করার সময়?
লিনার কথা মনে পড়ল।পরিচিতজনের কাছে স্বামীর কি পরিচয় দেবে।মনে মনে আরণ্যক প্রতিজ্ঞা করে যে করেই হোক লিনা এই লজ্জা ঘোচাবে।কলেজে যাতে বুক ফুলিয়ে বলতে পারে আমার স্বামী এই!
আচমকা সবার মধ্যে চঞ্চলতা লক্ষ্য করে।শাখ বাজছে উলুধ্বনি শোনা যাচ্ছে।খোজ নিয়ে জানা গেল বর এসেছে।বিশ্বনাথ চক্রবর্তী এসে গেছে।কনেবৌকে ফেলে সবাই নীচে চলে গেছে। বর দেখার তীব্র আকাঙ্খ্যা বুকে চেপে বসে কনে ,তার নীচে যাবার উপায় নেই।
আরণ্যক কি করবে একা একা দাঁড়িয়ে চারদিক দেখছে।শাখের আওয়াজ বাড়তে থাকে।টোপর মাথায় বিশুকে নিয়ে কয়েকজন মহিলা উপরে উঠে এল।চোখাচুখি হতে হাসল প্রমীলা বাহিনী এড়িয়ে কথা বলতে পারল না।বিয়ে বাড়ীতে মেয়েদের প্রাধান্য। একটা ঘরে বিছানা পাতা সেখানে বিশুকে বসিয়ে দিল।ধুতি-পাঞ্জাবীতে বিশুকে বেশ লাগছে।
একটি ভীড় থেকে বেরিয়ে কনেবৌয়ের কাছে নীচু গলায় বলল,ভালই হয়েছে মালটা।
বৈশালী লাজুক গলায় বলল,ধ্যেৎ।
মেয়েদের জটলার কাছে নজরে পড়ল শুভ দাড়িয়ে চা খাচ্ছে।মেয়েগুলো তার দিকে তাকাচ্ছে?আরণ্যক ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে দেখল কাকে দেখছে নিশ্চিত হবার জন্য।দাড়িয়ে থেকে অস্বস্তি বোধ হয়।একা আসলে খেয়েদেয়ে বেরিয়ে যেত।এখন খেলেও সবার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।কারো যাবার তাড়া নেই।বরযাত্রীর এই ঝামেলা সবাইকে যা করার একসঙ্গে করতে হবে।কোথায় গেল সবাই,শুভ ছাড়া কাউকে দেখতে পাচ্ছে না।নীচে খেতে বসে যায়নি তো?তা কিকরে হবে কয়েকজনের বউতো উপরে কনেবৌয়ের ঘরে গপ্পে মেতে আছে।
একবার নীচে যাবে কিনা ভাবে।মেয়েদের মধ্যে শুভটা কি করছে।তাকে দেখতে পাচ্ছে না নাকি?
মেয়েদের জটলা হতে এসে আরণ্যককে এককাপ চা এগিয়ে দিয়ে বলল,আমি সুদেষ্ণা মিত্র।বৈশালীর বন্ধু।
সুদেষ্ণা দেখতে মন্দ না,আরণ্যক হাত বাড়িয়ে চায়ের কাপ নিয়ে ভদ্রতার খাতিরে বলল,আমি আরণ্যক সোম বিশু মানে বরের বন্ধু।
সুন্দর নাম।খুব বোর লাগছে?
না না ঠিক আছে।আরণ্যক মৃদু হাসল।
সুদেষ্ণার যাবার লক্ষণ নেই।এতো দেখছি ঝামেলা,কি করবে আরণ্যক।চুপচাপ চায়ে চুমুক দিতে থাকে।
সুদেষ্ণা বলল,কোনো দরকার হলে বলবেন।যেতে গিয়ে ফিরে তাকিয়ে অদ্ভুত হাসল।
সুদেষ্ণা চলে যেতে শুভ এসে জিজ্ঞেস করে, কি বলছিল রে?
কে সুদেষ্ণা?
উরি শালা নামও জেনে গেছিস?
না জানার কি আছে এসে বলল,আমি সুদেষ্ণা।
অনেক্ষণ থেকে তোকে ঝারি করছিল।তোর প্রেমে পড়ে গেছে।বল কথা বলব?
হ্যা বল।একটা দোকানে পেটভাতায় কাজ করে কোনো উপার্জন নেই।
শুভ করুণ চোখে রনোকে দেখে।আরণ্যক মনে মনে হাসে।লিনার কথা জানলে কি হবে?
বর বিয়ের পিড়িতে বসে গেছে দু-আশে পুরোহিত আর মেয়ের বাবা।আরণ্যক স্বস্তি বোধ করে ,মেয়েরাও এসে জড়ো হয়েছে।শেখরকে দেখে একজন বলল,এইতো কবি এসে গেছে।
শেখর একটু কবিতা-টবিতা লেখে সেজন্য বন্ধুরা ওকে কবি বলে ডাকে।
তা কবি কোথায় ছিলি এতক্ষণ?
ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম ফুল বনে কাউকে লাগে কিনা মনে।
পাশেই ছিল শেখরের বউ শ্রীলেখা পিঠে চিমটি কেটে বলল,বাড়ী চলো ফুল বন দেখাচ্ছি।
মান্তু মজা করে বলল,বলেছিস বেশ বাড়ীর ফুলে মধু শেষ?
শ্রীলেখার মুখ লাল হয়।
শেখর বলে,বাড়ির ফুলে সুস্বাদু মধু আছে ভরা কিন্তু সর্বক্ষণ রয়েছে কড়া পাহারা।
সবাই হো-হো করে হেসে উঠল।শ্রীলেখাও সে হাসিতে যোগ দেয়।
উলু ধ্বনি উঠতে দেখা গেল কনেকে আনা হচ্ছে।বিয়ে শুরু হয়ে গেল।
রাত বাড়ছে সবাই খাবার জন্য নীচে নেমে গেল।আরণ্যকের কেউ ণেই সেজন্য বিশু রাতে থাকার জন্য বলেছিল।সকালে দোকান খুলতে হবে বলে এড়িয়ে গেল। ফেরার জন্য মন অস্থির। খাওয়া-দাওয়া শেষে বাসে উঠে দেখল রাত দশটা পেরিয়ে গেছে।
কে একজন বলল,কবি বউ কেমন দেখলে?
শেখর বলল,ওহে তাঁতি ভাই পেয়েছো এবার তাঁত চালাও সুখে মাকু সারারাত।
বাস ছেড়ে দিল। মাকু চালাও কথাটা বুঝতে পেরে ইলিনার কথা ভেবে আরণ্যকের কান লাল হয়।চালতা বাগানের মোড়ে নেমে দোকানে পৌছাতে পৌনে এগারোটা।মোবাইলে নম্বর টিপে কানে লাগায়।রিং হচ্ছে দ্রুত কেটে দিল।বিছানা করে আরণ্যক শুয়ে পড়ল।মনে ভাসে ইলিনা ব্রাউনের মুখ।লিনা তার বউ বিশ্বাস করতে পারছে না।ফোন বেজে উঠতে কানে লাগিয়ে শুনতে পেল,ফোন করে কেটে দিলে কেন?
না মানে এত রাতে--
যখন ইচ্ছে হবে ফোন করবে।বউ কেমন দেখলে?
ভালো।
তোমার চোখে খারাপ কোনোদিন শুনলাম না।রাত হয়েছে বিশ্রাম করো।গুড নাইট।
বাস ভরে গেছে। বাসের একদিকে বয়স্করা অন্যদিকে বিশুর বন্ধুর লোকজন।পিকলু বুদ্ধিকরে জানলার ধারে রুমাল দিয়ে জায়গা রেখেছিল।আরণ্যক রুমাল সরিয়ে বসল।কিচির মিচির আলাপ চলছে।মেয়েরা থাকলে কিচির মিচির হবেই।আরণ্যকের পিছনে পিকলু তার বউকে নিয়ে বসেছে।ঘাড় ঘুরিয়ে রুমাল ফেরত দিতে গিয়ে বউয়ের সঙ্গে চোখাচুখি হল।পিকলু বলল,পারমিতা তুমি তো রনোকে চেনো।
পারমিতা মুচকি হেসে সম্মতি জানাল।
কিরে আর কেঊ বাকী নেইতো?পিছন থেকে কে যেন জিজ্ঞেস করল।
আমাদের সবাই উঠেছে।পিক্লু বলল।
বাস স্টার্ট নিয়ে চলতে শুরু করে।জানলা দিয়ে হাওয়া ঢোকে,বাসের গুমোটভাবটা কেটে যায়।
শালা দু-দুটো প্রেম কেটে গিয়ে শেষে এখানে বিয়ে হচ্ছে।পিকলু বলল।
ভগবান যা করে মঙ্গলের জন্য।পাশ থেকে পারমিতা বলল।
মঙ্গল কি অমঙ্গল জানিনা সবে তো দু-বছর হল।
কি বললে?তোমার কি অমঙ্গল হয়েছে শুনি?পারমিতা ফোস করে উঠল।
পিকলুর বিয়ে হয়েছে দু-বছর।বউকে রাগাবার জন্য মজা করে।স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে খুনসুটি আরণ্যক উপভোগ করে।
আমার কথা তো তুমি শুনলেই না,আমি বলতে চাইছি বিয়ে কার যে কোথায় হবে সব বিধাতার মর্জি।
পিকলুর কথাটা আরণ্যককে স্পর্শ করে।সেও কি কখনো কল্পনা করেছে ইলিনা ব্রাউন তার বউ হবে?যেমন রূপ তেমনি গুণ।যে করেই হোক তাকে লিনার যোগ্য হতেই হবে।আঙুলের আংটিটায় হাত বোলায়।
সানাইয়ের আওয়াজ কানে আসে।বিয়ে বাড়ীর কাছাকাছি এসে পড়েছে মনে হচ্ছে।রাস্তার একপাশে সারি সারি গাড়ী পার্কিং করা।মেয়ের বাড়ী অবস্থাপন্ন মনে হল।বাস থামতেই কয়েকজন লোক অভ্যর্থনা করতে এগিয়ে এল।
দোতলায় বিশাল ডাইনিং হল।তিন তলায় অভ্যাগতদের বসার জায়গা।একপাশে একটা ঘরে সাজানো চেয়ারে বসে আছে কনে।তাকে ঘিরে আছে কয়েকজন মহিলা।
মান্তু ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করল,বিশের বউয়ের নাম কি যেন--?
বৈশালী।এখনো বৌ হয়নি।আশিস বলল।
মেয়েরা সব বউয়ের ঘরে ঢুকে আলাপ শুরু করে দিল।
আশিস ভ্রু কুচকে কিছুক্ষণ বৈশালীকে দেখে বলল,আমার মনে হয় চিনির থেকে সুন্দরী,কিরে রনো তোর কি মনে হয়?
আচ্ছা যে এখানে নেই খামোখা তাকে টেনে আনা কেন?
কেন আনবে না কেন তুই তো জানিস বিশুকে কিভাবে চাকরের মত খাটিয়েছে।শালা বেইমান মাগী।
আজ একটা শুভদিনে কি এইসব আলোচনা করার সময়?
লিনার কথা মনে পড়ল।পরিচিতজনের কাছে স্বামীর কি পরিচয় দেবে।মনে মনে আরণ্যক প্রতিজ্ঞা করে যে করেই হোক লিনা এই লজ্জা ঘোচাবে।কলেজে যাতে বুক ফুলিয়ে বলতে পারে আমার স্বামী এই!
আচমকা সবার মধ্যে চঞ্চলতা লক্ষ্য করে।শাখ বাজছে উলুধ্বনি শোনা যাচ্ছে।খোজ নিয়ে জানা গেল বর এসেছে।বিশ্বনাথ চক্রবর্তী এসে গেছে।কনেবৌকে ফেলে সবাই নীচে চলে গেছে। বর দেখার তীব্র আকাঙ্খ্যা বুকে চেপে বসে কনে ,তার নীচে যাবার উপায় নেই।
আরণ্যক কি করবে একা একা দাঁড়িয়ে চারদিক দেখছে।শাখের আওয়াজ বাড়তে থাকে।টোপর মাথায় বিশুকে নিয়ে কয়েকজন মহিলা উপরে উঠে এল।চোখাচুখি হতে হাসল প্রমীলা বাহিনী এড়িয়ে কথা বলতে পারল না।বিয়ে বাড়ীতে মেয়েদের প্রাধান্য। একটা ঘরে বিছানা পাতা সেখানে বিশুকে বসিয়ে দিল।ধুতি-পাঞ্জাবীতে বিশুকে বেশ লাগছে।
একটি ভীড় থেকে বেরিয়ে কনেবৌয়ের কাছে নীচু গলায় বলল,ভালই হয়েছে মালটা।
বৈশালী লাজুক গলায় বলল,ধ্যেৎ।
মেয়েদের জটলার কাছে নজরে পড়ল শুভ দাড়িয়ে চা খাচ্ছে।মেয়েগুলো তার দিকে তাকাচ্ছে?আরণ্যক ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে দেখল কাকে দেখছে নিশ্চিত হবার জন্য।দাড়িয়ে থেকে অস্বস্তি বোধ হয়।একা আসলে খেয়েদেয়ে বেরিয়ে যেত।এখন খেলেও সবার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।কারো যাবার তাড়া নেই।বরযাত্রীর এই ঝামেলা সবাইকে যা করার একসঙ্গে করতে হবে।কোথায় গেল সবাই,শুভ ছাড়া কাউকে দেখতে পাচ্ছে না।নীচে খেতে বসে যায়নি তো?তা কিকরে হবে কয়েকজনের বউতো উপরে কনেবৌয়ের ঘরে গপ্পে মেতে আছে।
একবার নীচে যাবে কিনা ভাবে।মেয়েদের মধ্যে শুভটা কি করছে।তাকে দেখতে পাচ্ছে না নাকি?
মেয়েদের জটলা হতে এসে আরণ্যককে এককাপ চা এগিয়ে দিয়ে বলল,আমি সুদেষ্ণা মিত্র।বৈশালীর বন্ধু।
সুদেষ্ণা দেখতে মন্দ না,আরণ্যক হাত বাড়িয়ে চায়ের কাপ নিয়ে ভদ্রতার খাতিরে বলল,আমি আরণ্যক সোম বিশু মানে বরের বন্ধু।
সুন্দর নাম।খুব বোর লাগছে?
না না ঠিক আছে।আরণ্যক মৃদু হাসল।
সুদেষ্ণার যাবার লক্ষণ নেই।এতো দেখছি ঝামেলা,কি করবে আরণ্যক।চুপচাপ চায়ে চুমুক দিতে থাকে।
সুদেষ্ণা বলল,কোনো দরকার হলে বলবেন।যেতে গিয়ে ফিরে তাকিয়ে অদ্ভুত হাসল।
সুদেষ্ণা চলে যেতে শুভ এসে জিজ্ঞেস করে, কি বলছিল রে?
কে সুদেষ্ণা?
উরি শালা নামও জেনে গেছিস?
না জানার কি আছে এসে বলল,আমি সুদেষ্ণা।
অনেক্ষণ থেকে তোকে ঝারি করছিল।তোর প্রেমে পড়ে গেছে।বল কথা বলব?
হ্যা বল।একটা দোকানে পেটভাতায় কাজ করে কোনো উপার্জন নেই।
শুভ করুণ চোখে রনোকে দেখে।আরণ্যক মনে মনে হাসে।লিনার কথা জানলে কি হবে?
বর বিয়ের পিড়িতে বসে গেছে দু-আশে পুরোহিত আর মেয়ের বাবা।আরণ্যক স্বস্তি বোধ করে ,মেয়েরাও এসে জড়ো হয়েছে।শেখরকে দেখে একজন বলল,এইতো কবি এসে গেছে।
শেখর একটু কবিতা-টবিতা লেখে সেজন্য বন্ধুরা ওকে কবি বলে ডাকে।
তা কবি কোথায় ছিলি এতক্ষণ?
ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম ফুল বনে কাউকে লাগে কিনা মনে।
পাশেই ছিল শেখরের বউ শ্রীলেখা পিঠে চিমটি কেটে বলল,বাড়ী চলো ফুল বন দেখাচ্ছি।
মান্তু মজা করে বলল,বলেছিস বেশ বাড়ীর ফুলে মধু শেষ?
শ্রীলেখার মুখ লাল হয়।
শেখর বলে,বাড়ির ফুলে সুস্বাদু মধু আছে ভরা কিন্তু সর্বক্ষণ রয়েছে কড়া পাহারা।
সবাই হো-হো করে হেসে উঠল।শ্রীলেখাও সে হাসিতে যোগ দেয়।
উলু ধ্বনি উঠতে দেখা গেল কনেকে আনা হচ্ছে।বিয়ে শুরু হয়ে গেল।
রাত বাড়ছে সবাই খাবার জন্য নীচে নেমে গেল।আরণ্যকের কেউ ণেই সেজন্য বিশু রাতে থাকার জন্য বলেছিল।সকালে দোকান খুলতে হবে বলে এড়িয়ে গেল। ফেরার জন্য মন অস্থির। খাওয়া-দাওয়া শেষে বাসে উঠে দেখল রাত দশটা পেরিয়ে গেছে।
কে একজন বলল,কবি বউ কেমন দেখলে?
শেখর বলল,ওহে তাঁতি ভাই পেয়েছো এবার তাঁত চালাও সুখে মাকু সারারাত।
বাস ছেড়ে দিল। মাকু চালাও কথাটা বুঝতে পেরে ইলিনার কথা ভেবে আরণ্যকের কান লাল হয়।চালতা বাগানের মোড়ে নেমে দোকানে পৌছাতে পৌনে এগারোটা।মোবাইলে নম্বর টিপে কানে লাগায়।রিং হচ্ছে দ্রুত কেটে দিল।বিছানা করে আরণ্যক শুয়ে পড়ল।মনে ভাসে ইলিনা ব্রাউনের মুখ।লিনা তার বউ বিশ্বাস করতে পারছে না।ফোন বেজে উঠতে কানে লাগিয়ে শুনতে পেল,ফোন করে কেটে দিলে কেন?
না মানে এত রাতে--
যখন ইচ্ছে হবে ফোন করবে।বউ কেমন দেখলে?
ভালো।
তোমার চোখে খারাপ কোনোদিন শুনলাম না।রাত হয়েছে বিশ্রাম করো।গুড নাইট।