08-09-2024, 08:03 AM
(07-09-2024, 02:35 PM)reigns Wrote:আর দশটি পরিবারের মতো নয় ঠাকুর পরিবার। একবিংশ শতাব্দীতেও এই পরিবার চলে কড়া নিয়মে। কেউই অমান্য করার সাহস করে না পারিবারিক এই নিয়ম ও ঐতিহ্যকে। ব্যবসায় পরিচালনা থেকে অবসরে গেলেও পরিবারের কর্তা অনিরুদ্ধ ঠাকুর এখনো শক্ত হাতে পরিচালনা করে যাচ্ছেন তার ঐতিহ্যবাহী বাড়ীটাকে। তার পিতামহের তৈরি করা বংশীয় নিয়ম-কানুনগুলো এখনো অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলে ঠাকুর পরিবার। প্রচণ্ড বদমেজাজি হওয়ায় ছেলেমেয়েরা কেউই এখনো অব্দি তার চোখে চোখ রেখে কথা বলার সাহস পায়নি।.সকালে সূর্যের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠে ঠাকুরবাড়ির সবচেয়ে আলিসান বিশ্রামঘরটি। রাতে ক্লান্ত হয়ে কিছুটা দেরিতে ঘুমানোয় একেবারে ভোরেই ওঠা হয় না এলাকায় ঠাকুরমশাই নামে পরিচিত অনিরুদ্ধের। তবে খুব যে দেরি করে ঘুম ভাঙলো তাও না। চোখ খুলতেই নিয়মে চলা বিপত্নীক ঠাকুরমশাই দেখলেন সকাল সাড়ে ৭টা। বিছানার অন্য পাশটা খালি। পাশের কেদারা থেকে ধুতিটা টেনে নিয়ে স্নানঘরে ঢুকতে ঢুকতে লক্ষ করলেন নেতিয়ে থাকা লিঙ্গে লেগে আছে শুকিয়ে পড়া বীর্য ও মেয়েলি রস। তাড়াতাড়ি পরিষ্কার করে হাঁটতে বের হতে হবে ভাবলেন তিনি। স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ায় ৭০ বছর বয়সেও এখনো তিনি শক্তপোক্ত। এক নজরে বয়সটা ঠাহর করা যায় না তবে নগ্ন হলে কিছুটা বের হয়ে থাকা ভুঁড়ি দেখে কিছুটা আঁচ করা যায়।.হাঁটাহাঁটি শেষ করে ঘেমে যাওয়া পোশাক পাল্টিয়ে সকালে খাওয়ার টেবিলে সবার পরে যোগ দেন অনিরুদ্ধবাবু। এখন বেশ ঝরঝরে লাগছে তার। জীবনে অনেক অর্থ উপার্জন করেছেন কিন্তু অর্থই সবকিছুর শেষ কথা নয়। শরীর ও মন চাঙ্গা থাকলেই বেঁচে থাকাটা উপভোগ্য হয়। তাই বয়সটা পঁয়ষট্টি ছুঁতেই ব্যবসায়গুলো পাকাপাকিভাবে বুঝিয়ে দেন বড় ছেলে চিন্ময় ঠাকুরকে। চিন্ময় ও ছোট ছেলে ধ্রুব ঠাকুরের ছেলেমেয়েরা সবাই আগেই নাস্তা সেরে যার যার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলে গেছে। টেবিলে দুই ছেলের সাথে খেতে বসলেন ঠাকুরমশাই। দুই পুত্রবধূ বর্ষা ও তারা নাস্তা পরিবেশন করলেন এবং তারপর নিজেরাও খেতে বসলেন। খাওয়া শেষে চিন্ময় ও ধ্রুববাবু বাবার ব্যবসায় দেখাশোনার কাজে চলে গেলেন।.নাস্তা শেষে উঠানে বসে আজকের পত্রিকায় চোখ বুলাতে শুরু করেন ঠাকুরমশাই। দুই পাতা পড়া শেষে ঘড়ির দিকে তাকালেন। নাহ, সময়টা কাটছে না। উঠে ছাদে গিয়ে ব্যায়াম করা শুরু করলেন তিনি। এজন্যই এখনো তার গায়ে অসুরের মতো শক্তি। ঘণ্টাখানেক পর ব্যায়াম শেষ করে বর্ষারাণীকে ডাক দিলেন ঠাকুরমশাই। বর্ষারাণী জানেন এখন তার শ্বশুরের নাস্তার সময়। পুষ্টিকর খাদ্য শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। তাই বেছে বেছে শরীরের জন্য উপকারী ফলফলাদি দিয়ে ঠাকুরমশাই নাস্তা সাড়েন। বর্ষারাণী সুন্দর করে থালে করে শ্বশুরের জন্য নাস্তা নিয়ে এলেন।."বৌমা, একি? আনারস কোথায়?""দুঃখিত বাবা। আমার মনেই ছিল না যে আনারস শেষ হয়ে গেছে। এখন ফল কাটার সময় মনে পড়লো।""তোমাকে কতোবার না বলেছি, যে কোন কিছু শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই আমাকে বলবে?""দুঃখিত বাবা। আর হবে না।""আরেকটু মনোযোগী হও ঘরের কাজকর্মে। বারবার তোমাকে বলেছি যে আভার (বর্ষার বড় মেয়ে) সিক্সথ সেন্স ভালো। আমি একদিন আনারস না খেলেই সে টের পেয়ে যায়। আর তারপর গিলে খেতে চায় না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে গিয়ে জিনিসটা মুখ থেকে বের করে ফেলে আর পুরো মজাটাই মাটি হয়ে যায়।""আমার মেয়েটাও বড্ডো খুঁতখুঁতে স্বভাবের হয়েছে। রোজ তো আদর করে এতোটা করে করে গেলাচ্ছেন, তাও এখনো আনারস ছাড়া পুরোটা সাবাড় করতে পারে না?""খবরদার, আমার আদরের নাতনিকে কিচ্ছু বলবে না।""বাবা, আমি বলছিলাম যে আপনার আরামটা তার দেখা উচিত। একদিন আনারস না খেলেই মুখ থেকে বের করে দেওয়া তো ঠিক না। এটা তো বড়দের অসম্মান। এমনিতেও ও আপনার পুরোটা বেশিক্ষণ মুখে রাখতে পারে না।""থাক, আস্তে আস্তে আনারস ছাড়াও অভ্যস্ত হয়ে যাবে। আর আমি আনারস খেলে এখন আর কোন সমস্যাই হয় না। ও এখন অনায়াসেই পুরোটা মুখে ঢুকিয়ে রাখতে পারে অনেকক্ষণ। খুব ভালোভাবে আরাম দিতে পারে। সবই প্র্যাকটিস, বুঝলে, প্র্যাকটিস।""এবার আনারস ছাড়াও প্র্যাকটিস করান। প্রতিদিন আনারস কুটতে কুটতে আর ভালো লাগে না।""অধৈর্য হলে চলবে? সময়ের সাথে অভ্যস্ত হয়ে যাবে। যাই, আমি এখনই আনারস নিয়ে আসি।"