02-09-2024, 11:04 PM
জয়ন্তের ঘুম ভাঙল মা-মেয়ের চেঁচামেচিতে। হাউসকোট পরা সুচিত্রা হন্তদন্ত হয়ে ঘরে ঢুকে বলল----তুমি ঘুমাচ্ছ! তোমার মেয়েকে দেখো, ভর সন্ধেবেলা সেজেগুজে কোথায় চলেছে!
জয়ন্ত ঘুম ভাঙা চোখে বালিশের তলা থেকে চশমাটা খুঁজে চোখে আটকে বেরিয়ে এলো ঘর থেকে। জিন্স আর টপ পরে পিউ তখন ঠোঁটে লিপস্টিক দিচ্ছে। জয়ন্ত কড়া গলায় বললে---কোথায় যাচ্ছিস রে?
---বাবা, আজ শিল্পার জন্মদিন। না গেলে খুব রাগারাগি করবে।
---কে শিল্পা? জয়ন্ত প্রশ্ন করল।
সুচি বললে---কে আবার, তোমার ঐ বন্ধু পুলিশে আছে...রজতাভর মেয়ে।
রজতাভ মল্লিক জয়ন্তের বন্ধু বলার চেয়ে বলা ভালো পেশেন্ট। সেই সূত্রে পরিচয়। ওর মেয়ে শিল্পা পিউর ক্লাসমেট। জয়ন্ত এবার সুচিত্রার দিকে তাকিয়ে বললে---আঃ, সুচি, যাক না মেয়ে বড় হয়েছে...।
---বড় হয়েছে বলেই তো চিন্তা। ছেলে-মেয়ে দুটো বড়ই খালি হয়েছে, বুদ্ধিশুদ্ধি বাড়েনি। ঝাঁঝিয়ে উঠল সুচি।
জয়ন্ত হেসে বলে---বুদ্ধিশুদ্ধি বাড়েনি বলছ মানে? আমাদের ছেলে মেয়ে দুটো পড়াশোনায় কম কে?
---পড়াশোনায় ভালো হলেই শুধু হয় না। আজকালকার দিনে চতুরও হতে হয়। তোমার কি? সংসারের সব দায় তো আমার।
পিউ আড়াল হতেই সুচির কাঁধে মুখ নামিয়ে জয়ন্ত বললে---আচ্ছা আচ্ছা রনচন্ডী দেবী, এবার চুপ করো। আমি রজতাভকে ফোন করে বলে দিচ্ছি। ও' যেন অনুষ্ঠান শেষে পিউকে পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করে।
***
অংশু বাড়ি ঢুকতেই ডালিয়া মাসি বললে---কোথায় গিয়েছিলি? আমি দুশ্চিন্তা করছি এতক্ষন! তোর মা যদি এখুনি ফোন করত কি জবাব দিতাম?
অংশু বলল---ঘুরে এলাম এলকাটা। মায়ের নতুন কলেজটাও দেখে এলাম।
----ওমা! সে কলেজ তো সামনে। সে আবার দেখতে যাবার কি দরকার?
---সে তো গিয়েই বুঝলুম। হোক, ডালিয়া মাসি কিছু খেতে দাও দেখি।
ডালিয়া মাসি গরম পেঁয়াজি ভেজেছে। সঙ্গে মুড়ি, ছোলা আর চানাচুর তেল মেখে খেতে খারাপ লাগলো না অংশুর।
অংশুরা শহরে জলখাবারে একেবারেই মুড়ি খায় না। কিন্তু গ্রামীন মানুষ যে মুড়িটাকেই আজও প্রেফার করে, সেটা অংশু জানে।
এর মাঝে একবার বাড়িতে ফোন করতে হবে। ঠিক তক্ষুনি ডালিয়া মাসি দাদুর বাড়ির বড় রান্না ঘর থেকে বললে---অংশু, টেলিফোনটা বাজছে। দেখ, তোর মা ফোন করেছে হয়ত।
***
পিউ যাবার পর জয়ন্ত টিভির চ্যানেল বদলে বদলে দেখছিল। ল্যান্ড ফোনটা বেজে উঠতেই রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে এলো সুচিত্রা। ফোনটা ধরে কার সাথে কথা বলছে বুঝতে পারছে না জয়ন্ত। প্রথমে ভাবলো অংশুর সাথে কথা বলছে হয়ত। কিন্তু এখুনি তো ছেলের সাথে কথা হল। এটুকু বোঝা যাচ্ছে কারোর শরীর খারাপ নিয়ে কথা হচ্ছে।
টেলিফোনটা রেখেই সুচি বললে---ঘোষ দা'র বোধ হয় প্রেসার ফল করেছে। মিতা ফোন করছিল, যাও না গো একটু।
মিতার বাড়ি যেতে হবে, কেমন একটা অনুভূতি হল জয়ন্তের। মিতার স্বামী অসুস্থ, এর চেয়ে মিতার কাছাকাছি যাবার সুযোগ যেন জয়ন্তকে শিহরিত করছে। অবশ্য উনপঞ্চাশ বছরের একজন ডাক্তার সে, তার তরুণের মত আবেগ দেখানো চলে না।
সে ট্রাউজারের উপর জামাটা চাপিয়ে নিল। স্টেথো, প্রেসার মাপার যন্ত্র সহ প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেল।
ঘোষ বাড়ির কলিং বাজাতেই সবার প্রথম বাজখাঁই শব্দে তেড়ে এলো জার্মান শেপার্ড কুকুরটা। পেছনে ওর চেন ধরে সামলাতে ব্যাস্ত মিতা।
---টনি...টনি... সাইলেন্ট...টনি...
কুকুরটা মিইয়ে গেল। জয়ন্ত ঢুকতেই আবার একবার সে তেড়ে আসার চেষ্টা করল বটে, কিন্তু মিতার অনুশাসনে সে পুনরায় মিইয়ে গেছে।
মিতার মুখে মৃদু সৌজন্যতার হাসি। সে বলল---আসুন।
জয়ন্ত ঘুম ভাঙা চোখে বালিশের তলা থেকে চশমাটা খুঁজে চোখে আটকে বেরিয়ে এলো ঘর থেকে। জিন্স আর টপ পরে পিউ তখন ঠোঁটে লিপস্টিক দিচ্ছে। জয়ন্ত কড়া গলায় বললে---কোথায় যাচ্ছিস রে?
---বাবা, আজ শিল্পার জন্মদিন। না গেলে খুব রাগারাগি করবে।
---কে শিল্পা? জয়ন্ত প্রশ্ন করল।
সুচি বললে---কে আবার, তোমার ঐ বন্ধু পুলিশে আছে...রজতাভর মেয়ে।
রজতাভ মল্লিক জয়ন্তের বন্ধু বলার চেয়ে বলা ভালো পেশেন্ট। সেই সূত্রে পরিচয়। ওর মেয়ে শিল্পা পিউর ক্লাসমেট। জয়ন্ত এবার সুচিত্রার দিকে তাকিয়ে বললে---আঃ, সুচি, যাক না মেয়ে বড় হয়েছে...।
---বড় হয়েছে বলেই তো চিন্তা। ছেলে-মেয়ে দুটো বড়ই খালি হয়েছে, বুদ্ধিশুদ্ধি বাড়েনি। ঝাঁঝিয়ে উঠল সুচি।
জয়ন্ত হেসে বলে---বুদ্ধিশুদ্ধি বাড়েনি বলছ মানে? আমাদের ছেলে মেয়ে দুটো পড়াশোনায় কম কে?
---পড়াশোনায় ভালো হলেই শুধু হয় না। আজকালকার দিনে চতুরও হতে হয়। তোমার কি? সংসারের সব দায় তো আমার।
পিউ আড়াল হতেই সুচির কাঁধে মুখ নামিয়ে জয়ন্ত বললে---আচ্ছা আচ্ছা রনচন্ডী দেবী, এবার চুপ করো। আমি রজতাভকে ফোন করে বলে দিচ্ছি। ও' যেন অনুষ্ঠান শেষে পিউকে পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করে।
***
অংশু বাড়ি ঢুকতেই ডালিয়া মাসি বললে---কোথায় গিয়েছিলি? আমি দুশ্চিন্তা করছি এতক্ষন! তোর মা যদি এখুনি ফোন করত কি জবাব দিতাম?
অংশু বলল---ঘুরে এলাম এলকাটা। মায়ের নতুন কলেজটাও দেখে এলাম।
----ওমা! সে কলেজ তো সামনে। সে আবার দেখতে যাবার কি দরকার?
---সে তো গিয়েই বুঝলুম। হোক, ডালিয়া মাসি কিছু খেতে দাও দেখি।
ডালিয়া মাসি গরম পেঁয়াজি ভেজেছে। সঙ্গে মুড়ি, ছোলা আর চানাচুর তেল মেখে খেতে খারাপ লাগলো না অংশুর।
অংশুরা শহরে জলখাবারে একেবারেই মুড়ি খায় না। কিন্তু গ্রামীন মানুষ যে মুড়িটাকেই আজও প্রেফার করে, সেটা অংশু জানে।
এর মাঝে একবার বাড়িতে ফোন করতে হবে। ঠিক তক্ষুনি ডালিয়া মাসি দাদুর বাড়ির বড় রান্না ঘর থেকে বললে---অংশু, টেলিফোনটা বাজছে। দেখ, তোর মা ফোন করেছে হয়ত।
***
পিউ যাবার পর জয়ন্ত টিভির চ্যানেল বদলে বদলে দেখছিল। ল্যান্ড ফোনটা বেজে উঠতেই রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে এলো সুচিত্রা। ফোনটা ধরে কার সাথে কথা বলছে বুঝতে পারছে না জয়ন্ত। প্রথমে ভাবলো অংশুর সাথে কথা বলছে হয়ত। কিন্তু এখুনি তো ছেলের সাথে কথা হল। এটুকু বোঝা যাচ্ছে কারোর শরীর খারাপ নিয়ে কথা হচ্ছে।
টেলিফোনটা রেখেই সুচি বললে---ঘোষ দা'র বোধ হয় প্রেসার ফল করেছে। মিতা ফোন করছিল, যাও না গো একটু।
মিতার বাড়ি যেতে হবে, কেমন একটা অনুভূতি হল জয়ন্তের। মিতার স্বামী অসুস্থ, এর চেয়ে মিতার কাছাকাছি যাবার সুযোগ যেন জয়ন্তকে শিহরিত করছে। অবশ্য উনপঞ্চাশ বছরের একজন ডাক্তার সে, তার তরুণের মত আবেগ দেখানো চলে না।
সে ট্রাউজারের উপর জামাটা চাপিয়ে নিল। স্টেথো, প্রেসার মাপার যন্ত্র সহ প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেল।
ঘোষ বাড়ির কলিং বাজাতেই সবার প্রথম বাজখাঁই শব্দে তেড়ে এলো জার্মান শেপার্ড কুকুরটা। পেছনে ওর চেন ধরে সামলাতে ব্যাস্ত মিতা।
---টনি...টনি... সাইলেন্ট...টনি...
কুকুরটা মিইয়ে গেল। জয়ন্ত ঢুকতেই আবার একবার সে তেড়ে আসার চেষ্টা করল বটে, কিন্তু মিতার অনুশাসনে সে পুনরায় মিইয়ে গেছে।
মিতার মুখে মৃদু সৌজন্যতার হাসি। সে বলল---আসুন।