02-09-2024, 11:00 PM
পর্ব: ২
অংশুকে ট্রেনে তুলে দিয়ে জয়ন্ত রওনা হল হাসপাতালের দিকে। ওর মা পই পই করে বলে দিয়েছে দিদার বাড়ি পৌঁছে যেন টেলিফোন করে।
জয়ন্ত হাসপাতালে ঢুকেই দেখল একটা গোলমাল বেঁধেছে। কোনো এক পেশেন্ট পার্টির দাবী ডাক্তারেরা তাদের রোগীকে মেরে ফেলেছে।
ভিড় সামলে ঢুকল জয়ন্ত। ডঃ মিত্র বললেন--সাবধান, ডঃ দাশগুপ্ত। পেশেন্ট পার্টি স্থানীয় বস্তি থেকে এসেছে। যে কোনো মুহূর্তে বাড়াবাড়ি করতে পারে।
জয়ন্ত ডঃ মিত্রকে জিজ্ঞেস করল---কোন ডাক্তার ছিলেন?
---ডঃ নাগ।
নামটা শুনে একটু বিরক্ত হল জয়ন্ত। এই নিয়ে তিনটে কেস হল ডঃ মৃণ্ময় নাগের। জয়ন্ত ঢুকে গেল ওয়ার্ডে। একের পর এক পেশেন্ট দেখছিল সে, ঠিক তক্ষুনি বাইরে একটা হল্লা। একজন জুনিয়র ডাক্তার বললেন---পুলিশ এসেছে।
জয়ন্ত দেখল পুলিশ পেশেন্ট পার্টিকে শান্ত করছে। সামনের ডেস্কেই প্রেসক্ৰিবশন রাখা। জয়ন্ত প্রেসক্ৰিবশন পড়ে বুঝতে পারছে ডাঃ নাগ আবার অতিরিক্ত কিছু ওষুধ দিয়েছেন। মেডিসিন কোম্পানির কমিশনের লোভে এমনটা বহু ডাক্তার করে থাকেন। তবে ডঃ নাগেরটা বাড়াবাড়ি। অবশ্য ডঃ নাগ খুব প্রভাবশালী। রাজনৈতিক শিবিরে ওঠাপড়া আছে। সব সামলে নেন। কিন্তু এর তো একটা প্রতিকার দরকার। বারবার এমন করে যাবেন, তা তো চলতে পারে না।
ডঃ মিত্র বললেন---কি করবেন, ওর যে মিনিস্ট্রিতে হাত রয়েছে। কাছের লোক কিনা।
জয়ন্ত গম্ভীর নিশ্বাস ফেলল, আর শব্দ করল---হুম্ম!
***
অংশু কতদিন পর দিদার বাড়ি এলো। ছোটবেলায় এখানে এলে তার যেতেই ইচ্ছে হত না। অংশুর দাদু যখন বেঁচে ছিলেন, বলতেন এই বাড়িটা নাকি অংশুর দাদুর ঠাকুরদা বানিয়েছিলেন। দেখলেই অবশ্য বোঝা যায়, সেকেলে আদলে বানানো দোতলা বাড়িটার দালান কোঠাগুলি মোটা মোটা।
দিদার কাছে গিয়ে অংশু বললে---দিদা কেমন আছো?
শায়িত বৃদ্ধা চিনতে পারলেন না নাতিকে। বললেন---কে বলতো?
---অংশু।
---অংশু? বৃদ্ধা এখন ভুলে যান সবকিছু। মনে করালে মনে পড়ে।
পাশেই ছিল সর্বক্ষণ দেখাশোনা করার জন্য অংশুর মায়ের এক এক দূর সম্পর্কের অবিবাহিতা পিসতুতো বোন ডালিয়া। অংশু শুনেছিল মায়ের কাছে ডালিয়া পিসির একটি দিদি ছিল তার নাম ঝুমুর। মায়ের সমবয়সী। সেই ঝুমুর মাসি নাকি মায়ের প্রানের বন্ধু ছিল ছোটবেলায়। মায়েরা যখন চন্দননগরে থাকতো, তখন নাকি ঝুমুর মাসি একদিন বাড়ির দীঘিতে স্নান করতে গিয়ে তলিয়ে যায়। মায়ের মুখে বহুবার সেই ঝুমুর মাসির স্মৃতিচারণ শুনেছে অংশু।
ডালিয়া মাসি অবশ্য মায়ের চেয়ে বছর ছয়-সাতেক ছোট। সে বললে---মামী, সুচি দি'র ছেলে গো।
---ও সুচির ছেলে..অংশু..! অংশুর হাতটা মুঠিয়ে ধরলেন বৃদ্ধা। তারপর বললেন---তোর মা আসেনি?
---আসবে। মায়ের ট্রান্সফার হয়েছে এখানেই গোবিন্দপুরের কলেজে।
ডালিয়া বলল---হ্যা রে অংশু, পিউ এলো না?
---দিদির তো সেমিস্টার। সামনে আইআইটির কাউন্সিলিং।
অংশুর মনে পড়ল মাকে একটা ফোন করে দিতে হবে। মা এখন কলেজে। সে দ্রুত দিদার বাড়ির ল্যান্ড ফোন থেকে মাকে জানিয়ে দিল পৌঁছে যাবার কথা।
***
অংশুকে ট্রেনে তুলে দিয়ে জয়ন্ত রওনা হল হাসপাতালের দিকে। ওর মা পই পই করে বলে দিয়েছে দিদার বাড়ি পৌঁছে যেন টেলিফোন করে।
জয়ন্ত হাসপাতালে ঢুকেই দেখল একটা গোলমাল বেঁধেছে। কোনো এক পেশেন্ট পার্টির দাবী ডাক্তারেরা তাদের রোগীকে মেরে ফেলেছে।
ভিড় সামলে ঢুকল জয়ন্ত। ডঃ মিত্র বললেন--সাবধান, ডঃ দাশগুপ্ত। পেশেন্ট পার্টি স্থানীয় বস্তি থেকে এসেছে। যে কোনো মুহূর্তে বাড়াবাড়ি করতে পারে।
জয়ন্ত ডঃ মিত্রকে জিজ্ঞেস করল---কোন ডাক্তার ছিলেন?
---ডঃ নাগ।
নামটা শুনে একটু বিরক্ত হল জয়ন্ত। এই নিয়ে তিনটে কেস হল ডঃ মৃণ্ময় নাগের। জয়ন্ত ঢুকে গেল ওয়ার্ডে। একের পর এক পেশেন্ট দেখছিল সে, ঠিক তক্ষুনি বাইরে একটা হল্লা। একজন জুনিয়র ডাক্তার বললেন---পুলিশ এসেছে।
জয়ন্ত দেখল পুলিশ পেশেন্ট পার্টিকে শান্ত করছে। সামনের ডেস্কেই প্রেসক্ৰিবশন রাখা। জয়ন্ত প্রেসক্ৰিবশন পড়ে বুঝতে পারছে ডাঃ নাগ আবার অতিরিক্ত কিছু ওষুধ দিয়েছেন। মেডিসিন কোম্পানির কমিশনের লোভে এমনটা বহু ডাক্তার করে থাকেন। তবে ডঃ নাগেরটা বাড়াবাড়ি। অবশ্য ডঃ নাগ খুব প্রভাবশালী। রাজনৈতিক শিবিরে ওঠাপড়া আছে। সব সামলে নেন। কিন্তু এর তো একটা প্রতিকার দরকার। বারবার এমন করে যাবেন, তা তো চলতে পারে না।
ডঃ মিত্র বললেন---কি করবেন, ওর যে মিনিস্ট্রিতে হাত রয়েছে। কাছের লোক কিনা।
জয়ন্ত গম্ভীর নিশ্বাস ফেলল, আর শব্দ করল---হুম্ম!
***
অংশু কতদিন পর দিদার বাড়ি এলো। ছোটবেলায় এখানে এলে তার যেতেই ইচ্ছে হত না। অংশুর দাদু যখন বেঁচে ছিলেন, বলতেন এই বাড়িটা নাকি অংশুর দাদুর ঠাকুরদা বানিয়েছিলেন। দেখলেই অবশ্য বোঝা যায়, সেকেলে আদলে বানানো দোতলা বাড়িটার দালান কোঠাগুলি মোটা মোটা।
দিদার কাছে গিয়ে অংশু বললে---দিদা কেমন আছো?
শায়িত বৃদ্ধা চিনতে পারলেন না নাতিকে। বললেন---কে বলতো?
---অংশু।
---অংশু? বৃদ্ধা এখন ভুলে যান সবকিছু। মনে করালে মনে পড়ে।
পাশেই ছিল সর্বক্ষণ দেখাশোনা করার জন্য অংশুর মায়ের এক এক দূর সম্পর্কের অবিবাহিতা পিসতুতো বোন ডালিয়া। অংশু শুনেছিল মায়ের কাছে ডালিয়া পিসির একটি দিদি ছিল তার নাম ঝুমুর। মায়ের সমবয়সী। সেই ঝুমুর মাসি নাকি মায়ের প্রানের বন্ধু ছিল ছোটবেলায়। মায়েরা যখন চন্দননগরে থাকতো, তখন নাকি ঝুমুর মাসি একদিন বাড়ির দীঘিতে স্নান করতে গিয়ে তলিয়ে যায়। মায়ের মুখে বহুবার সেই ঝুমুর মাসির স্মৃতিচারণ শুনেছে অংশু।
ডালিয়া মাসি অবশ্য মায়ের চেয়ে বছর ছয়-সাতেক ছোট। সে বললে---মামী, সুচি দি'র ছেলে গো।
---ও সুচির ছেলে..অংশু..! অংশুর হাতটা মুঠিয়ে ধরলেন বৃদ্ধা। তারপর বললেন---তোর মা আসেনি?
---আসবে। মায়ের ট্রান্সফার হয়েছে এখানেই গোবিন্দপুরের কলেজে।
ডালিয়া বলল---হ্যা রে অংশু, পিউ এলো না?
---দিদির তো সেমিস্টার। সামনে আইআইটির কাউন্সিলিং।
অংশুর মনে পড়ল মাকে একটা ফোন করে দিতে হবে। মা এখন কলেজে। সে দ্রুত দিদার বাড়ির ল্যান্ড ফোন থেকে মাকে জানিয়ে দিল পৌঁছে যাবার কথা।
***