28-08-2024, 11:52 PM
(This post was last modified: 28-08-2024, 11:54 PM by Henry. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
জয়ন্তর হাসপাতাল থেকে বেরোতে সন্ধে গড়ালো। গতকাল নাইট ডিউটি ছিল। বড্ড স্ট্রেস গেছে। এক্সিডেন্ট পেশেন্টদের ঐ এক সমস্যা, পেশেন্ট পার্টি, অমুক নেতা তমুক নেতা কত কি। ট্রাফিকের জট ছাড়িয়ে চন্দন গাড়ি বার করল নিয়ম ভেঙে।
সামনের ট্রাফিকে যথারীতি আটকা পড়ল সে। ট্রাফিক সার্জেন কোনোভাবেই ফাইন ছাড়া শুনবেন না। অন্যথায় কেস দেবেন। চন্দন তর্ক জুড়ে দিল ট্রাফিক সার্জেনের সাথে। জয়ন্ত এবার কড়া গলায় ধমক দিল চন্দনকে। বললে---চুপ কর, চন্দন।
ট্রাফিক সার্জেনকে চালান দিয়ে সে বললে---চল। কি দরকার ছিল এমন করে গাড়ি চালানোর?
চন্দন বিরক্ত স্বরে বলল---শালা! সিগন্যাল ফেলে রেখেছে এতক্ষন! এটা কোনো নিয়ম হল! বলুন সার?
হাসলো জয়ন্ত। চন্দন অনেকদিন গাড়ি চালাচ্ছে জয়ন্তের। ঠান্ডা মাথার ছেলে। আজ একটু বেশিই মাথা গরম করে ফেলেছে।
জয়ন্তদের বাড়ির গলি মুখে রাস্তাটা বেশ সরু। চন্দন বেশ দক্ষতার সাথে গাড়ি ঢোকায় ওখানে। জয়ন্ত গাড়ির দরজা খুলে নিজেই বাড়ির গ্রিল খুলে দিল। চন্দন গাড়ি গ্যারেজ করে বনেটে ঝাড়পোঁছ করতো লাগলো। গাড়ি গ্যারেজ করেই ও চলে যায় নিজের বাসায়, এখানেই ও তার মোটরবাইক রাখে সকালে।
সামনের বাড়ির কুকুরটা কি জানি জয়ন্তকে দেখে এমন চেঁচায় কেন! জয়ন্ত মনে মনে প্রায়শই ভাবে প্রতিবেশী বাড়িতে এবার জানিয়ে দেবে, আপনার এই বদ কুকুরটিকে সাবধান করুন, না হলে আমি কিন্তু ওকে পুলিশে দেব।
সিঁড়ির কাছে মোজা না খুলে ছাদে ওঠা বারণ। ঐ মোজা পায়ে দেখলেই সুচিত্রা তেড়ে আসে। একবার তো সুচিত্রার বোনপো পল্টু এসেছিল সটান মোজা পায়ে সোফায়। নিজের বোন পো হলেও ছাড় দেয়নি সূচি। খুলিয়ে নিয়েছিল তক্ষুনি ওর পা থেকে মোজা জোড়া।
সূচি রান্না ঘরে। পিউ ইয়ার ফোন এঁটে সোফায় বসে ল্যাপটপ নিয়ে ব্যস্ত। ফিজিক্সের ছাত্রীর আবার ল্যাপটপ কি কাজে লাগে বুঝতে পারে না জয়ন্ত। আসলে আজকালকার দিনে নাকি সবেতেই ল্যাপটপ লাগে। ঐ তো সেদিন মেডিক্যাল সায়েন্সে কি গবেষণা চলছে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ একটা সাইটে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দিল ডঃ মিত্র। সুবিধাই হয়েছে জয়ন্তর। এখন আর লাইব্রেরি ভরা বইয়ের দরকার নেই। অনলাইন লাইব্রেরির সম্ভার কম নয়। আর পিডিএফ, ই-বুক ক্রয় করে দিব্যি বই পত্র পড়া যায়।
বাবাকে দেখে পিউ কান থেকে ইয়ারফোন খুলে বললে---মা, বাবা এসছে।
জয়ন্ত ব্যাগটা নামিয়ে রেখে মেয়েকে বলল---রাঙ্ক কত হল রে?
ল্যাপটপ থেকে চোখ না সরিয়ে পিউ জবাব দিল---৯২। এদিকে সেমিস্টার শুরু আগামী সপ্তাহে।
মেয়ে আইআইটি এর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। জেইই এর পরীক্ষা দিয়েছে সে। আজ তার রেজাল্ট ছিল। তার সাথে তার ফিজিক্সের ফাইনাল ইয়ার চলছে এ বছরই। এসব বিষয় অবশ্য জয়ন্তের খুব একটা মনে থাকে না। তবে আজ সকালে সুচিই বলছিল মেয়ের রেজাল্টের কথা। ৯২ রাঙ্ক অবশ্য বেশ ভালো। পিউ কিংবা অংশু তার দুই ছেলেমেয়েই পড়া লেখায় ভালো।
জয়ন্ত জামার হাতা, বোতাম খুলতে খুলতে পেছন থেকে দেখতে পেল রন্ধনশালায় তার ব্যস্ত স্ত্রীকে। সুতির ফুলছোপ হাউসকোট পরে আছে সূচি।
জয়ন্ত জামা কাপড় বদলে স্নানে গেল। বাথরুমের ভেতর থেকেই সে বলল---পিউ, তোর মাকে ডাক তো।
---মা, বাবা ডাকছে। পুনরায় হাঁক দিল পিউ।
রান্না ঘরে ঘেমেনেয়ে একসা হয়ে আছে সুচিত্রা। তারওপরে মেয়ের এমন রুক্ষ হাঁকডাকে বিরক্ত হল সে। আজ ছবিও আসেনি যে তাকে সাহায্য করবে রান্নায়।
বিরক্ত হয়ে বেরিয়ে এলো সূচি। ঝাঁঝালো স্বরে মেয়েকে বলল---কি হল? চেঁচামেচি করছিস কেন?
---বাবা ডাকছে।
বাথরুম থেকে মুখ বাড়িয়ে জয়ন্ত বলল---কই গো? সাবান কোথায়?
----সাবানটাও খুঁজে নিতে পারো না।
স্বামীকে ঠেলে বাথরুমে ঢুকে পড়ল সুচিত্রা। থাকের আড়ালে নতুন সাবানের প্যাক কেটে বিরক্ত মুখে ধরিয়ে দিতে ঘুরে পড়ল সে জয়ন্তর দিকে। তৎক্ষনাৎ তার মুখে হাসি খেলে গেল। তার একুশ বছরের দাম্পত্য সঙ্গীর নগ্ন পুরুষালি দেহটা, দুই উরুর মাঝে ঝুলছে জয়ন্তের পুরুষাঙ্গ। বাথরুমের দরজা ভেজানো।
মুখে হাসির রেখা দেখা দিল সুচির। সাবানটা স্বামীর হাতে দিয়ে বাথরুম থেকে বেরিয়ে গেল সে। স্নান সেরে জয়ন্তের অভ্যাস সকালের কাগজ পড়া দোতলার বারান্দায় বসে। কাচের শেডটা খুলে দিলে বাতাস আসে ওপাশ থেকে। সূচি চা দিয়ে গেছে।
জয়ন্তর চোখ পড়ল প্রতিবেশীর উল্টো দিকের বাড়িতে। এই বাড়িতেই থাকেন নিঃসন্তান ঘোষ দম্পতি। খুব অল্প দিন হল এই দম্পতি এই বাড়িটা ক্রয় করছেন। ওদের কুকুরটাকে নিয়ে জয়ন্তের বিরক্তির শেষ নেই।
ঘোষ জায়া বারান্দায় ভর সন্ধেতে খোলা চুলে দাঁড়িয়ে আছেন। জয়ন্ত এর আগেও লক্ষ্য করেছে বউটাকে। গায়ের রঙ ফর্সা নয়, পাকা গমের মত উজ্জ্বল। টানা টানা দুটো বড় চোখে যেন একটা আবেদন থাকে সর্বদা। শরীরের সর্বত্র যেখানে যেমন মাংসের প্রয়োজন তেমনই। সবচেয়ে নজরকাড়া মহিলার মস্ত উদ্ধত বুক জোড়া।
জয়ন্ত ঠাহর করতে পারে মহিলার বয়স খুব বেশি হলে পঁয়ত্রিশ-ছত্রিশ হবে। সুচির চেয়ে কম করে ছয়-সাত বছরের ছোট। মহিলার স্বামী আসলে কোন পেশার সাথে যুক্ত ছিলেন জানা নেই তার। এখন মিঃ ঘোষ কোমর থেকে প্যারালাইজড। জয়ন্তের মনে হয় তাই বোধ হয় ঘোষ ঘরনীর এমন নীরব চাপা আবেদন। অথচ এই আবেদন অত্যন্ত নিস্পৃহ, যা কেবল জয়ন্তই যেন অনুভব করে।
মাঝে মধ্যে দুঃখ হয় এই রমণীটির জন্য জয়ন্তের। একটি যদি সন্তানও থাকতো হয়ত হেসে খেলে কাটাতে পারতো মহিলা।
স্ট্রিট লাইটের আলোয় স্পষ্ট দেখতে পেল জয়ন্ত মহিলা হাসছেন তার দিকে তাকিয়েই। অস্পষ্টভাবে কানে এলো তার, কিছু একটা বললেন তিনি। জয়ন্ত সাড়া দিয়ে বললে---শুনতে পাচ্ছি না।
মহিলা তাদের বাড়ির ছাদের রেলিং ধরে এগিয়ে এলেন। বললেন---বৌদি বাড়িতে আছে দাদা?
---হ্যা। আছে। ডেকে দেব?
---না থাক। আপনি বরং অংশুকে একটু পাঠিয়ে দিন না। যদি ও পড়ায় ব্যস্ত না থাকে...।
জয়ন্ত ডাক দিল ছেলেকে---অংশু?
অংশু পড়ার ঘর থেকে ছাদ বারান্দায় বাবার কাছে এসে হাজির হল। জয়ন্ত বললে---ঘোষ কাকুর বাড়িতে একটু যা তো। তোর ঘোষ কাকিমা ডাকছেন।
রমণীটি পুনর্বার হাসলো জয়ন্তের দিকে তাকিয়ে। হালকা কলাপাতা রঙা শাড়িতে স্ট্রিট লাইটের আলোয়ও তার লাবণ্য ঠিকরে বেরুচ্ছে।
জয়ন্ত কাগজের পাতা শেষ করে ড্রয়িং রুমে এলো। রান্না সেরে ঘেমেনেয়ে এসে হাজির হয়েছে সুচিত্রা। চোখের চশমার ওপর দিয়ে তাকালো জয়ন্তের দিকে। বলল---অংশু কোথায় গো?
---পাশের বাড়ির ঘোষ গিন্নি ডেকে পাঠিয়েছেন।
পিউর এলোমেলো করে রাখা ড্রয়িং রুমের টেবিল গোছাতে গোছাতে সূচী বলল---ঘোষ বাবুর শরীরটা নাকি ক'দিন হল ভালো নেই। বেচারা একা থাকে মিতা। তাই অংশুকে দিয়ে জরুরী ওষুধপত্র আনায়।
এই প্রতিবেশি দম্পতি এই বাড়ি ক্রয় করে প্রায় ছ' মাস হল এসেছেন। এর মধ্যে বহুবার গোপনে লক্ষ্য করেছে জয়ন্ত এই পরস্ত্রীকে। প্রথমবার আজ জানলো প্রতিবেশীনির নাম মিতা। জয়ন্ত ভাবলো হয়ত সুস্মিতা কিংবা শুভমিতাও হতে পারে। ছোটো করে নাম রেখেছে মিতা। হয়ত মিঃ ঘোষই স্ত্রীয়ের নামটি ছোট করে নিয়েছেন, যেমনটি জয়ন্ত নিজের স্ত্রীয়ের সুচিত্রা নামটি ছোট করে নিয়ে ডাকে 'সূচি' বলে।
***
সামনের ট্রাফিকে যথারীতি আটকা পড়ল সে। ট্রাফিক সার্জেন কোনোভাবেই ফাইন ছাড়া শুনবেন না। অন্যথায় কেস দেবেন। চন্দন তর্ক জুড়ে দিল ট্রাফিক সার্জেনের সাথে। জয়ন্ত এবার কড়া গলায় ধমক দিল চন্দনকে। বললে---চুপ কর, চন্দন।
ট্রাফিক সার্জেনকে চালান দিয়ে সে বললে---চল। কি দরকার ছিল এমন করে গাড়ি চালানোর?
চন্দন বিরক্ত স্বরে বলল---শালা! সিগন্যাল ফেলে রেখেছে এতক্ষন! এটা কোনো নিয়ম হল! বলুন সার?
হাসলো জয়ন্ত। চন্দন অনেকদিন গাড়ি চালাচ্ছে জয়ন্তের। ঠান্ডা মাথার ছেলে। আজ একটু বেশিই মাথা গরম করে ফেলেছে।
জয়ন্তদের বাড়ির গলি মুখে রাস্তাটা বেশ সরু। চন্দন বেশ দক্ষতার সাথে গাড়ি ঢোকায় ওখানে। জয়ন্ত গাড়ির দরজা খুলে নিজেই বাড়ির গ্রিল খুলে দিল। চন্দন গাড়ি গ্যারেজ করে বনেটে ঝাড়পোঁছ করতো লাগলো। গাড়ি গ্যারেজ করেই ও চলে যায় নিজের বাসায়, এখানেই ও তার মোটরবাইক রাখে সকালে।
সামনের বাড়ির কুকুরটা কি জানি জয়ন্তকে দেখে এমন চেঁচায় কেন! জয়ন্ত মনে মনে প্রায়শই ভাবে প্রতিবেশী বাড়িতে এবার জানিয়ে দেবে, আপনার এই বদ কুকুরটিকে সাবধান করুন, না হলে আমি কিন্তু ওকে পুলিশে দেব।
সিঁড়ির কাছে মোজা না খুলে ছাদে ওঠা বারণ। ঐ মোজা পায়ে দেখলেই সুচিত্রা তেড়ে আসে। একবার তো সুচিত্রার বোনপো পল্টু এসেছিল সটান মোজা পায়ে সোফায়। নিজের বোন পো হলেও ছাড় দেয়নি সূচি। খুলিয়ে নিয়েছিল তক্ষুনি ওর পা থেকে মোজা জোড়া।
সূচি রান্না ঘরে। পিউ ইয়ার ফোন এঁটে সোফায় বসে ল্যাপটপ নিয়ে ব্যস্ত। ফিজিক্সের ছাত্রীর আবার ল্যাপটপ কি কাজে লাগে বুঝতে পারে না জয়ন্ত। আসলে আজকালকার দিনে নাকি সবেতেই ল্যাপটপ লাগে। ঐ তো সেদিন মেডিক্যাল সায়েন্সে কি গবেষণা চলছে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ একটা সাইটে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দিল ডঃ মিত্র। সুবিধাই হয়েছে জয়ন্তর। এখন আর লাইব্রেরি ভরা বইয়ের দরকার নেই। অনলাইন লাইব্রেরির সম্ভার কম নয়। আর পিডিএফ, ই-বুক ক্রয় করে দিব্যি বই পত্র পড়া যায়।
বাবাকে দেখে পিউ কান থেকে ইয়ারফোন খুলে বললে---মা, বাবা এসছে।
জয়ন্ত ব্যাগটা নামিয়ে রেখে মেয়েকে বলল---রাঙ্ক কত হল রে?
ল্যাপটপ থেকে চোখ না সরিয়ে পিউ জবাব দিল---৯২। এদিকে সেমিস্টার শুরু আগামী সপ্তাহে।
মেয়ে আইআইটি এর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। জেইই এর পরীক্ষা দিয়েছে সে। আজ তার রেজাল্ট ছিল। তার সাথে তার ফিজিক্সের ফাইনাল ইয়ার চলছে এ বছরই। এসব বিষয় অবশ্য জয়ন্তের খুব একটা মনে থাকে না। তবে আজ সকালে সুচিই বলছিল মেয়ের রেজাল্টের কথা। ৯২ রাঙ্ক অবশ্য বেশ ভালো। পিউ কিংবা অংশু তার দুই ছেলেমেয়েই পড়া লেখায় ভালো।
জয়ন্ত জামার হাতা, বোতাম খুলতে খুলতে পেছন থেকে দেখতে পেল রন্ধনশালায় তার ব্যস্ত স্ত্রীকে। সুতির ফুলছোপ হাউসকোট পরে আছে সূচি।
জয়ন্ত জামা কাপড় বদলে স্নানে গেল। বাথরুমের ভেতর থেকেই সে বলল---পিউ, তোর মাকে ডাক তো।
---মা, বাবা ডাকছে। পুনরায় হাঁক দিল পিউ।
রান্না ঘরে ঘেমেনেয়ে একসা হয়ে আছে সুচিত্রা। তারওপরে মেয়ের এমন রুক্ষ হাঁকডাকে বিরক্ত হল সে। আজ ছবিও আসেনি যে তাকে সাহায্য করবে রান্নায়।
বিরক্ত হয়ে বেরিয়ে এলো সূচি। ঝাঁঝালো স্বরে মেয়েকে বলল---কি হল? চেঁচামেচি করছিস কেন?
---বাবা ডাকছে।
বাথরুম থেকে মুখ বাড়িয়ে জয়ন্ত বলল---কই গো? সাবান কোথায়?
----সাবানটাও খুঁজে নিতে পারো না।
স্বামীকে ঠেলে বাথরুমে ঢুকে পড়ল সুচিত্রা। থাকের আড়ালে নতুন সাবানের প্যাক কেটে বিরক্ত মুখে ধরিয়ে দিতে ঘুরে পড়ল সে জয়ন্তর দিকে। তৎক্ষনাৎ তার মুখে হাসি খেলে গেল। তার একুশ বছরের দাম্পত্য সঙ্গীর নগ্ন পুরুষালি দেহটা, দুই উরুর মাঝে ঝুলছে জয়ন্তের পুরুষাঙ্গ। বাথরুমের দরজা ভেজানো।
মুখে হাসির রেখা দেখা দিল সুচির। সাবানটা স্বামীর হাতে দিয়ে বাথরুম থেকে বেরিয়ে গেল সে। স্নান সেরে জয়ন্তের অভ্যাস সকালের কাগজ পড়া দোতলার বারান্দায় বসে। কাচের শেডটা খুলে দিলে বাতাস আসে ওপাশ থেকে। সূচি চা দিয়ে গেছে।
জয়ন্তর চোখ পড়ল প্রতিবেশীর উল্টো দিকের বাড়িতে। এই বাড়িতেই থাকেন নিঃসন্তান ঘোষ দম্পতি। খুব অল্প দিন হল এই দম্পতি এই বাড়িটা ক্রয় করছেন। ওদের কুকুরটাকে নিয়ে জয়ন্তের বিরক্তির শেষ নেই।
ঘোষ জায়া বারান্দায় ভর সন্ধেতে খোলা চুলে দাঁড়িয়ে আছেন। জয়ন্ত এর আগেও লক্ষ্য করেছে বউটাকে। গায়ের রঙ ফর্সা নয়, পাকা গমের মত উজ্জ্বল। টানা টানা দুটো বড় চোখে যেন একটা আবেদন থাকে সর্বদা। শরীরের সর্বত্র যেখানে যেমন মাংসের প্রয়োজন তেমনই। সবচেয়ে নজরকাড়া মহিলার মস্ত উদ্ধত বুক জোড়া।
জয়ন্ত ঠাহর করতে পারে মহিলার বয়স খুব বেশি হলে পঁয়ত্রিশ-ছত্রিশ হবে। সুচির চেয়ে কম করে ছয়-সাত বছরের ছোট। মহিলার স্বামী আসলে কোন পেশার সাথে যুক্ত ছিলেন জানা নেই তার। এখন মিঃ ঘোষ কোমর থেকে প্যারালাইজড। জয়ন্তের মনে হয় তাই বোধ হয় ঘোষ ঘরনীর এমন নীরব চাপা আবেদন। অথচ এই আবেদন অত্যন্ত নিস্পৃহ, যা কেবল জয়ন্তই যেন অনুভব করে।
মাঝে মধ্যে দুঃখ হয় এই রমণীটির জন্য জয়ন্তের। একটি যদি সন্তানও থাকতো হয়ত হেসে খেলে কাটাতে পারতো মহিলা।
স্ট্রিট লাইটের আলোয় স্পষ্ট দেখতে পেল জয়ন্ত মহিলা হাসছেন তার দিকে তাকিয়েই। অস্পষ্টভাবে কানে এলো তার, কিছু একটা বললেন তিনি। জয়ন্ত সাড়া দিয়ে বললে---শুনতে পাচ্ছি না।
মহিলা তাদের বাড়ির ছাদের রেলিং ধরে এগিয়ে এলেন। বললেন---বৌদি বাড়িতে আছে দাদা?
---হ্যা। আছে। ডেকে দেব?
---না থাক। আপনি বরং অংশুকে একটু পাঠিয়ে দিন না। যদি ও পড়ায় ব্যস্ত না থাকে...।
জয়ন্ত ডাক দিল ছেলেকে---অংশু?
অংশু পড়ার ঘর থেকে ছাদ বারান্দায় বাবার কাছে এসে হাজির হল। জয়ন্ত বললে---ঘোষ কাকুর বাড়িতে একটু যা তো। তোর ঘোষ কাকিমা ডাকছেন।
রমণীটি পুনর্বার হাসলো জয়ন্তের দিকে তাকিয়ে। হালকা কলাপাতা রঙা শাড়িতে স্ট্রিট লাইটের আলোয়ও তার লাবণ্য ঠিকরে বেরুচ্ছে।
জয়ন্ত কাগজের পাতা শেষ করে ড্রয়িং রুমে এলো। রান্না সেরে ঘেমেনেয়ে এসে হাজির হয়েছে সুচিত্রা। চোখের চশমার ওপর দিয়ে তাকালো জয়ন্তের দিকে। বলল---অংশু কোথায় গো?
---পাশের বাড়ির ঘোষ গিন্নি ডেকে পাঠিয়েছেন।
পিউর এলোমেলো করে রাখা ড্রয়িং রুমের টেবিল গোছাতে গোছাতে সূচী বলল---ঘোষ বাবুর শরীরটা নাকি ক'দিন হল ভালো নেই। বেচারা একা থাকে মিতা। তাই অংশুকে দিয়ে জরুরী ওষুধপত্র আনায়।
এই প্রতিবেশি দম্পতি এই বাড়ি ক্রয় করে প্রায় ছ' মাস হল এসেছেন। এর মধ্যে বহুবার গোপনে লক্ষ্য করেছে জয়ন্ত এই পরস্ত্রীকে। প্রথমবার আজ জানলো প্রতিবেশীনির নাম মিতা। জয়ন্ত ভাবলো হয়ত সুস্মিতা কিংবা শুভমিতাও হতে পারে। ছোটো করে নাম রেখেছে মিতা। হয়ত মিঃ ঘোষই স্ত্রীয়ের নামটি ছোট করে নিয়েছেন, যেমনটি জয়ন্ত নিজের স্ত্রীয়ের সুচিত্রা নামটি ছোট করে নিয়ে ডাকে 'সূচি' বলে।
***