Thread Rating:
  • 38 Vote(s) - 3.45 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
বন্ধু (As collected from Net)
#3
#2

আমাদের সিলেটে বেশ ভাল ব্যবসা ছিল। ছিল বলছি কারন বাবা মা ব্যবসার বেশির ভাগ গুটিয়ে নিয়েছেন। বয়স হয়েছে। আমি তাদের শেষ বয়সের সন্তান। তাই বড় ভাই আর বোন থেকে ১৬ আর ১৪ বছরের ব্যবধ। ভাই মাস্টার্স করে পড়তে কানাডা গেল পরে ঐখানেই থিতু। বিয়ে করেছে বাবার এক বন্ধুর মেয়ে কে। বছরে এক বার আসে। বোনের বিয়ে হয়েছিল প্রেমের। বাবা মা প্রথমে রাজি হয় নি পরে এক সময় রাজি হয়ে গেল। চাকরি সূত্রে বোন আর দুলাভাই আজকে এই জেলায় তো আরেকদিন আরেক জেলায় থাকতে হয়। বদলির চাকরি। আর আমি পড়াশুনা করার সূত্রে ঢাকায়। 

বিনোয়গের ব্যাপারে বাবা সব সময় বেশ হিসেবি। তাই অংক কষে হিসেবমত জমি ফ্ল্যাট কিনেছেন। ঢাকায় বাবা চার টা ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। কলাবাগানে দুই টা, ধানমন্ডিতে একটা আর একটা একটু অদ্ভুত জায়গায়। আজিজ মার্কেটের উপরে। আসলে ফ্ল্যাট টা ছিল বাবার এক বন্ধুর। আংকেলের হঠাত টাকার দরকার হলে ফ্ল্যাট টা বিক্রি করার দরকার হয়। ঠিক সেই সময় আমি কোচিং এ ভর্তি হলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য। কোথায় থাকব? বাবা ফ্ল্যাট টা কিনে নিলেন। চার বন্ধু মিলে উঠেছিলাম। প্রথম কিছুদিন মা বাবা এসে থেকে ছিলেন। কিন্তু এই শহরে তাদের মন টিকে না। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার কিছুদিন পরেই চলে গেলন। আর বন্ধুরা কেউ ঢাকায় চান্স পেল না। এক জন রাজশাহী, একজন কুয়েট আর বাকি জন নিজেদের শহর সিলেটের সাস্টে। আর এইভাবে এই অচেনা ঢাকা শহরে আসার মাস সাতেকের মধ্যেই আমি একা হয়ে গেলাম। মাহিদুল আলম মাহি এই শহরে একা হয়ে গেল। 

একা থাকা বেশ কষ্টকর। তাই বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকি। বুয়া কে বলা আছে খাবার রান্না করে যায় সাপ্তাহে চার দিন। বেশির ভাগ দিন বাইরে খাওয়া হয় আসলে। টাকা টা সমস্যা হয় না। ছোট বলে না চাইতেই অনেক কিছু পাই, আর বাজে খরচ বা অভ্যাস না থাকায় বাবা মা বিশ্বাস করে প্রচুর। আর এই সময় কাটাতে গিয়ে আমাদের বন্ধুতের শুরু।

আসলে এইবার বাকি চরিত্রদের সাথে পরিচয় করে দেবার দরকার। 

মিলি 
মিলি হল আমাদের গ্রুপের দ্বিতীয় মফস্বল। আমি হলাম প্রথম মফস্বলের পাবলিক। পাঁচ ফিট এক বা দেড় হবে হয়ত। পড়াশুনায় সিরিয়াস। হলে থাকে। ওজন বড়জোর ৪০ কেজি। চশমা পরে। ছেলেরা মেয়েদের যা যা দেখতে চায় তা হয়ত অতটা দৃশ্যমান নয় বলে ছেলেদের নজরে অতটা পরে না। লাজুক। সালোয়ার কামিজে অভ্যস্ত। গ্রুপের ভিতর মিলির সাথেই প্রথম খাতির। কোচিং এ দেখতাম তাই ক্লাসে এসে প্রথমেই চোখে পরল। তারপর ঢাকার বাইরের বলে নিজেদের ভিতর মিল খুজে পেলাম তাই দেখা হলে নিজে থেকেই গিয়ে কথা বলতাম। আগ বাড়িয়ে যেতাম বলেই বন্ধুত হল। আর মিলির মাধ্যমে বাকিদের সাথে। 

ফারিয়া 
ফারিয়া আর জুলিয়েট কে সবার প্রথমে মানুষের চোখে পরবে যদি কেউ আমাদের দিকে তাকায়। দুই জনেই ঢাকাইয়া, ভিকি। ফ্যাশনে কেতা দুরস্ত। হালের যা ফ্যাশন হয় সব কিছুতেই ফারিয়া কে মানিয়ে যায়। সালোয়ার কামিজ পরে বেশির ভাগ সময়। মাঝে মাঝে জিনস আর ফতুয়া। সালোয়ার কামিজে কোমর পর্যন্ত কাটা। কথা হবার আগেই প্রথম চোখে পরেছিল এক ছেলের মন্তব্যে। ক্লাসের পিছনে বসে ছিলাম। ফারিয়া কে ঢুকতে দেখেই সুজন পাশ থেকে বলছিল দেখ দেখ। কি যায়। বেচারা সুজন একবারে ছেলেদের স্ক্ল কলেজে পরে মেয়েদের ক্লাসে পেয়ে মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। দেখ পিছন টা দেখ। কি উচু। কামিজের কোন পর্যন্ত কাটা দেখছিস। এমনিতেই এইসব কথায় তেমন একটা অভ্যস্ত না তার উপর ক্লাসের মাঝে সুজন রাখঢাক না করেই যেমনে বলছে কে শুনে ফেলে এই ভয়ে আর জড়শড় হয়ে গেলাম। এড়ানোর জন্য বললাম এত কথার দরকার কি যদি ভাল লাগে তাইলে সামনে যা গিয়ে কথা বল। সুজন এইবার বলল এইবার সামনে দেখ। দেখ না, পিছনে যেমন উচু সামনেও তেমন। জামা তো পুরা গায়ের সাথে লেগে আছে। আমি উঠে যাচ্ছি দেখে বলল, আরে কথা বলার চেষ্টা করে লাভ নাই। যেমন উচু তেমন ভাব। এই বলেই একটা পিছলা হাসি দিল।

আসলে ফারিয়া এমন। ফারিয়া চৌধুরী। একটু মুডি তবে খুব ভাল মন টা। একবার ইজি হলে কথা বলা কোন ব্যাপার না। গড়পড়তা বাংগালিরা সুন্দরি বলতে যা বোঝায় ফারিয়া তা। ফর্সা, পাঁচ পাঁচ হবে হাইট। যদিও একটু বাল্কি তবে সেই ফ্যাট মনে হয় আর সৌন্দর্য খুলে দিয়েছে। আর ফিগারের বর্ণনা তো সুজনের মুখে শুনলেন- হট।

#3

সুনিতি
সুনিতি হল বাংলা নারীর প্রতিরূপ। কথা টা জুলিয়েট প্রায় মজা করে বলত। ছায়ানট থেকে গান শেখা, চমতকার আবৃত্তি করে। সব সময় একদম ঠিক উচ্চারণে কথা বলে। মাঝে মাঝেই শাড়ি পরে। শাড়ি পরলে আসলে সুনিতি কে না দেখে উপায় থাকে না। এইসব কারণে জুলিয়েট প্রায় বাংলার বধু বলে ক্ষেপাত। আস্তে আস্তে আমরাও ক্ষেপানো শুরু করলাম এই বলে, বাংলার বধু সুনিতি ব্যানার্জী। 

ঢাকায় বাসা। হলিক্রসের ছাত্রী ছিল। ডিপার্টমেন্টের প্রোগ্রামে গান গাওয়া বা উপস্থাপনা কিছু হলেই ফার্স্ট ইয়ার থেকে সুনিতির ডাক পরে। আমাদের জুনিয়রদের নবীন বরণ প্রোগ্রামে এক বড় ভাই মন্তব্য করেছিল তার এক বন্ধুর উদ্দ্যেশে, এই মেয়ে টা কে দেখ মনে হয় একটা নেশা আছে। আর ঐ বন্ধু মন্তব্য করেছিল পুরা পাওলি দাম ফিগার। পিছন থেকে বসে মন্তব্য শুনে অনুষ্ঠানের আলো আধারিতে মনে হয়েছিল আসলেই খেয়াল করা হয় নি কিন্তু সুনিতির বাংলার বধু আবরণের বাইরে একটা দিক আছে, মাদকতাময়। পাঁচ তিন হবে হাইটে। অনুষ্ঠানেই সুহাস ভাই আর তার বন্ধু সফিক ভাই আলোচনা করছিল সুনিতির ফিগার নিয়ে। দুই জনেই একমত সামনে বড় না হলেও পিছন না যাক্কাস। একদম গুরু নিতম্বনি। ছেলেদের হাত পরলে সামনেও জোয়ার আসবে। হাসতে হাসতে সুহাস ভাই বলছিলেন হাতে পেলে কিছুদিনেই একদম বক্ষ জোয়ার এনে দিবেন। শুনে সফিক ভাই বলছিলেন তাই এখন কি অবস্থা? সুহাস ভাইয়ের উত্তর ছিল, সামনে মরা কাটাল পিছনে ভরা কাটাল জোয়ার। 

জুলিয়েট
জুলিয়েট হল আমাদের গ্রুপের অঘোষিত জ্ঞানদানকারী। হেন কিছু নেই যা তার জানা নেই। কিছু বললেই বলত জুলিয়েট রোজারিও জানে না এমন কিছু আছে নাকি। জিনস টপস বা স্কার্ট টপস হল প্রিয় পোষাক। কাল সৌন্দর্য বলে যদি কিছু থেকে থাকে তাহলে ঠিক তাই হল জুলিয়েট। প্রচলিত অর্থে গায়ের রঙ কাল হলেও জুলিয়েটের দিকে প্রথমেই চোখ না পরে উপায় নেই। অন্য রকম একম সৌন্দর্য এই কাল রঙের। টানা চোখ, ধারাল মুখ। ধারাল মুখ কথা টা আসলে জুলিয়েটের সাথে সবভাবেই যায়। ক্ষেপে গেলে চাবুকের মত কথা বলে। কথা বলে পার পাবার উপায় নেই। হেন কোন সংগঠন নাই যার সাথে সম্ভবত জড়িত না। আর ফারিয়া জুলিয়েটের কথার জন্য জুলিয়েট কে বলত ডার্টি মাউথ। কোন কথায় মুখে আটকায় না, শ্লীল বা অশ্লীল। পরিচয়ের কয়েকদিন পরেই এসে একদিন আমাকে বলে দেখ তো ফতুয়ার ভিতর দিয়ে ব্রা টা দেখা যায় কিনা। মফস্বল থেকে আগত আমার কাছে কোন মেয়ের মুখ থেকে এই কথা শোনা ছিল এক শক। আমার অভিব্যক্তি দেখে সেদিন জুলিয়েটের হাসি থামছিলই না। আরেকদিন আরেক স্যার সম্পর্কে মন্তব্য করছিল যে স্যার নাকি চোখ দিয়ে ফারিয়ার বুকে আর পাছায় হাত দেন। কথা সবার সামনে এভাবে বলায় ফারিয়া ক্ষেপে গেলেও ঐ স্যারের দৃষ্টি নিয়ে ডিপার্টমেন্টে অনেক গল্প প্রচলিত ছিল। 

পাঁচ আট হাইটের জুলিয়েট ছিল আমাদের গ্রুপের সবচেয়ে লম্বা সদস্য। হাইটের কারণে সবসময় বলত বুঝলি আমি হলাম তোদেরে সবার বড় তাই সবাই আমার কথা মেনে চলবি। ড্রেস আর আচরণে আমাদের গ্রুপের টম বয়। 

সাদিয়া
আমাদের মধ্যে একটু অন্যরকম হল সাদিয়া। অলওয়েজ পড়াশুনা আর পড়াশুনা। রেজাল্টও ভাল অনার্সে ক্লাসে ফোর্থ আর মাস্টার্সে থার্ড হয়েছিল। শুধু পড়াশুনা না ড্রেস আপেও অন্যরকম। * পড়ত। লম্বা ঝুল *। ফলে ফিগার বুঝার কোন উপায় ছিল না। চশমার কারণে চোখ আড়াল হয়ে যেত। তবে সুনিতি সব সময় বলে আমাদের গ্রুপের সবচেয়ে সুন্দর চোখ হল সাদিয়ার। সাদিয়া আশরাফি। আমাদের গ্রুপের সাথে কিভাবে বন্ধুত বজায় রাখতে পারল এটা ক্লাসের সবার কাছে এক বিরাট বিস্ময়। কারণ আমাদের উড়াধুড়া নানা কাজ কর্মের সাথে ওর ঠিক যায় না। কিন্তু ঐ যে বলে না সংগ দোষে লোহা ভাসে। সাদিয়ার ছিল ঐ অবস্থা। আর জুলিয়েট প্রায়ই আমার কানে কানে বলত আরে সাদিয়া আমাদের সহ্য করে খালি তোর কারণে, এই বলেই চোখ টিপ দিয়েই প্রতিবার একটা দুষ্ট হাসি দিত। সত্য কথা বলতে কি সাদিয়ার বিভিন্ন খারাপ সময়ে এই গ্রুপের লোক জন যেভাবে পাশে থেকে সাপোর্ট দিয়েছে তা আর কোথাও পেত না সাদিয়া। তাই বন্ধুত্ব না হয়ে উপায় ছিল না।
[+] 1 user Likes dweepto's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: বন্ধু (As collected from Net) - by dweepto - 24-06-2019, 12:39 AM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)