18-08-2024, 12:14 PM
কলিং বেল বাজার সাথে সাথে দরজা খুলে দিল সাদিয়া। ইমতিয়াজ খান এর বড় বোন আর তার ছেলের বউ দাঁড়িয়ে আছে দরজার ওপাশে। সাদিয়া ঝুঁকে পা ধরে সালাম করলো ফুপুর। বেঁচে থাকো মা বেঁচে থাকো। আপা, আপনারা বসুন আমি আসছি…..
আরে বসো, কিছু করতে হবে না…..
না আপা, সব কিছু করাই আছে আমি আনছি শুধু…….
অনন্যা শাওয়ার নিতে যাবে এর আগে সুমন ফোন দিলো….
হ্যালো অনন্যা….
ও আমার কথা মনে পরলো তাহলে সাহেবের……
অনন্যা বিজি ছিলাম, ঢাকা এসেছি আজকেই। আব্বু আর শাওন এসেছে। মিট করতে পারবা আজকে?
কালকে দেখা করি, আজকে রিহার্সেল আছে…..
কিসের রিহার্সেল?
ওই যে তোমায় বলেছিলাম র্যাগ ডের কথা…..
তার মানে নাঁচবেই তুমি অনন্যা! আমার কথার কোনো দাম নেই তোমার কাছে?
এই কথাটা তো আমার জিজ্ঞেস করার কথা সুমন। আমার ইচ্ছের কোনো দাম আছে তোমার কাছে? একটা ড্যান্স করবো সেটার জন্য তুমি পারমিশন দিচ্ছো না। এতটাই অপরাধীনতার শিকলে বাঁধতে চাও আমায়…..
ভালো কাজ করলে না করতাম না, এসব নর্তকীদের মত নাঁচলে সবাই না করবে…..
ছিঃ সুমন, আমার সাথে এমন ভাষা ব্যাবহার করায় তোমার মুখ আটকালো না একটুও….. বলেই ফোন রেখে দিল অনন্যা।
অনন্যা ওর ওয়ারড্রব খুলে একটা লেগিংস আর স্পোর্টস ব্রা নিয়ে নিল ব্যাগে। ব্যাগ গুছাচ্ছে আর বিড়বিড় করছে অনন্যা, কি এক দেশে বাস করি। মেয়েদের কোনো স্বাধীনতা নেই। কম্ফোর্ট কোনো ড্রেস পরা যায় না হায়েনা গুলোর জন্য। রাগে ফুপুর সামনে দিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেল অনন্যা। অনন্যার ফুপু বললো,
সাদিয়া, কোনো সমস্যা হচ্ছে তোমার?
না আপা, সমস্যা কিসের…..
শুনো সাদিয়া, তোমার উপর আমি ভীষণ খুশি। তুমি আমাদের বংশের আশার প্রদীপ এখন। আমার একরোখা ভাইটা কে তুমি মানাতে পেরেছো এটা অনেক বড় পাওয়া। এখন তাড়াতাড়ি করে ভাতিজা, ভাতিজির মুখ দেখার ব্যাবস্থা করো। নাতির মুখ দেখে ফেললাম আর ভাতিজা-ভাতিজির মুখ দেখতে পারলাম না এখনো…..
সাদিয়া বুদ্ধিমতী মেয়ে। এই একটা কথাতেই সে বুঝে গেল অনন্যার ফুপু অনন্যাকে বেশি পছন্দ করে না। আর করার কথাও না, ইমতিয়াজ অনন্যা কে নিয়ে বেশি আদিখ্যেতা করে বলে সবাই করবে তা তো না।
আপা, চেষ্টা করবো আপনাদের খুশি করার…..
তা হানিমুনে কোথায় যাবে ঠিক করেছো?
না, অনন্যার ও ছুটি এখন। তাই সবাই মিলে কক্সবাজার যাওয়ার প্ল্যান…..
কি যে বলো না তোমরা সাদিয়া, নতুন বিয়ে, এর মধ্যে অনন্যা যাবে কি করতে?
না সমস্যা নেই আপা……
সমস্যা আছে। এখন তোমাদের ইনজয় করার সময়। আরেকটা কথা, এই সংসার টা তোমার সাদিয়া। অনন্যা আমাদের সবার আদরের। তাই বলে ইমতিয়াজ যা করে তা কিন্তু ঠিক না। তুমি ওর ওয়াইফ। সবটা দেখা তোমার দায়িত্ব। তোমার বাচ্চা হোক, তারপর উইলের বিষয়টা দেখা যাবে….
কিসের উইল আপা?
আরে বলো না, ইমতিয়াজ বিয়ে করবে না করবে না বলে সব অনন্যার নামে উইল করে রেখেছে……
আচ্ছা আপা, আপনারা যা ভালো মনে করেন, করেন…..
অনন্যা রকির ড্যান্স কলেজে এসে ভিতরে ঢুকলো। রকি বললো, জাস্ট টেন মিনিট। ভিতরে ওয়েট করো……
৭/৮ মিনিট পরই রকি আর আরেকটা মেয়ে অফিস রুমে আসলো। মেয়েটা স্পোর্টস ব্রা আর শর্টস লেগিংস পরা। ব্রা এর ফাঁকে ক্লিভেজ দেখা যাচ্ছে। পাছা উঁচু হয়ে আছে অনেকটা। চিকন কোমরের সাথে বড় পাছা যেন মেয়েটাকে সেক্সি করে তুলেছে বহুগুণ।
মেয়েটা এসে নিজেই হাত বাড়িয়ে দিলো অনন্যার দিকে। হাই, আমি জারা…..
হাই, অনন্যা…. নিজের নাম বলে হ্যান্ডশেক সেরে নিল অনন্যা।
অনন্যা, আজকে যারা তোমাকে কিছু স্টেপ শিখিয়ে দিবে। আগে ওর সাথে করো। পরে আমার সাথে। এখন চেঞ্জ করে আসো….
অনন্যা ট্রায়াল রুমে গিয়ে টিশার্ট খুলে জায়ান্ট মিররের সামনে দাঁড়ালো। অনন্যা নিজের স্তনের দিকে একবার তাকিয়ে ব্রা টা আলগা করে নিল। স্পোর্টস ব্রা পরার পর জিন্স খুলে লেগিংস টা পরে নিল। মিরর জায়ান্টে নিজের অবয়ব পুরোটা দেখে ভাবলো এভাবে রকির সামনে যাওয়া টা ঠিক হবে? সুমন কি মনে করবে? পরে আবার ভাবলো রকি চিপ মাইন্ডের কোনো ছেলে না। সব মেয়েরা তো ক্লাসে এগুলো পরেই ড্যান্স করে। আর দেশের বাহিরে তো বিকিনি পরেও ঘুরা যায়। কারণ তারা বাঙালীর মত নিচু মন মানসিকতার না। এদের জন্য আমরা কেন নিজেদের আটকে রাখবো? বড় করে একটা শ্বাস নিয়ে চেঞ্জ রুম থেকে বের হলো অনন্যা।
রকি জীবনে অনেক মেয়ে দেখেছে। কিন্তু অনন্যা যেন সত্যিই অনন্য। জিম করা ছাড়া কোনো মেয়ের এমন পার্ফেক্ট ফিগার হতে পারে? বলিউড এক্ট্রেসরা জিরো ফিগার মেইনটেইন করার জন্য জীবনের সব খাওয়া দাওয়া বাদ দিয়ে দেয়। আর এ তো জিরো ফিগার এর সাথে মিল্ফ কম্বিনেশন এই বয়সেই।
ইউ লুক গর্জিয়াস অনন্যা…..
থাংক ইউ। অনন্যা ভাবলো অশ্লীল বা নোংরা ভাষার প্রয়োগ না করে কি সুন্দর কমপ্লিমেন্ট দেয়া যায়। অশিক্ষিত গুলো কবে এসব শিখবে।
ওকে গার্লস, শুরু করো। জারা, অনন্যা জাস্ট ইনক্রিডেবল। ওকে তোমার মত করে শিখাও। ও কিছুক্ষণের মধ্যেই শিখে যাবে…..
জারা আর অনন্যা স্টার্ট করলো। অনন্যার প্রতিভা দেখে রকি, জারা দুইজনই হতবাক। জারা ভাবছে যে স্টেপ গুলো সে অনেক দিনে শিখেছে এগুলো অনন্যা একবার দেখেই অনায়েসে করে ফেলছে। জারা একটা স্টেপ করার সময় অনন্যার পেটে হাত রেখে কোমর নাড়িয়েছে। অনন্যাও করতে পেরেছে। তখন পিছনে থাকা জারার সাথে অনন্যার পাছা স্পর্শ করেছে। অনন্যা ভাবছে রকির সাথে যদি এমন হয় এইটা করার সময়? ছিঃ এসব আমি কি ভাবছি। ইন্টেনশন খারাপ না হলে এগুলো কিছু না।
ওয়াও, অনন্যা, তোমাকে আমরা কেউ শিখাতে পারবো না। তুমি জাস্ট ওসাম…. চলো এই স্টেপ গুলোই ট্রাই করি। জারা তুমি আমার ফোনটা দিয়ে একটা রিলস বানিয়ে দাও।
অনন্যা রকির সাথে নাঁচতে একটুও বিব্রতবোধ করলো না। কারণ রকির কোনো স্পর্শেই সে অসভ্যতার লেশ মাত্র পায় নি। রকি ওর কোমর ধরে ওকে শুন্যে তুলে ধরেছে। অনন্যা এক পা গুটিয়ে রেখে অন্য পা মেলে ধরেছে। রকি অনন্যার কোমর ধরে চারদিকে ঘুরিয়েছে চরকির মত। যখন অনন্যা কে নামালো রকি, তখন দুই'জনই হাঁফাচ্ছে। জারা এসে বললো,
তোমার প্রফেশন হিসেবে ড্যান্স বেছে নেয়া উচিত অনন্যা। অনেক কিছু করতে পারবে তুমি…..
অনন্যা শীতেও ঘেমে গিয়েছে। ঘাম গুলো স্পোর্টস ব্রার ফাঁক দিয়ে ক্লিভেজে ঢুকছে। ছেলেদের সামনেও এভাবে কোম্ফোর্ট ভাবে লেগিংস পরে বসা যায় রকি কে না দেখলে বিশ্বাস হতো না অনন্যার। ছেলেটার দৃষ্টিতে কোনো কুনজর নেই।
অনন্যা, জারা, আমার একটা মিটিং আছে। আমার বেরুতে হবে। তোমরা বের হবে নাকি রেস্ট নিবে?
না, না আমরা বের হয়ে যাব……
গাড়িতে বসে ফোন হাতে নিয়ে অনন্যা দেখলো সুমনের অনেকগুলো মিসড কল। বাসায় গিয়ে ব্যাক করবে ঠিক করে রকির ইন্সটা আইডিতে ঢুকলো সে। অনেক মেয়ের সাথেই ভিডিও আছে ড্যান্স এর। পুরোদস্তুর প্রফেশনাল একটা ছেলে। সুমন কেন বুঝতেছে না কে জানে? সুমন কি বুঝে না ও ছাড়া কেউ নেই আমার জীবনে। আর ও আমাকে নর্তকী বলে গালি দিলো আজ!! চোখের পানি মুছে নিলো অনন্যা।
বাসায় ঢুকে সাদিয়া কে জিজ্ঞেস করলো ফুপ্পি চলে গিয়েছে?
হুম, আপা চলে গিয়েছে একটু আগে। তুই বস, আমি খাবার দেই তোকে…..
খেতে বসে সাদিয়া বললো, অনন্যা কক্সবাজার কবে যাবি?
আমি যাব না, তোরা বাসাতেই যা শুরু করেছিস! বাহিরে কি করবি কে জানে???
কালকের জন্য সরি। আসলে তুই হুট করে আসবি বুঝতে পারি নি…..
তো, দরজা তো লক করবি…. আমি না হয়ে অন্য কেউ হলে কেমন হতো……
আচ্ছা প্লিজ এটা মনে রাখিস না…..
আচ্ছা, তবুও আমি যাবো না। তোরা হানিমুন প্ল্যান কর…..
তুই যাবি না?
তোদের হানিমুনে আমি কেন যাব?
আচ্ছা…..
খাওয়া শেষ করে সুমন কে কল করলো অনন্যা।
হ্যালো অনন্যা, আমি সরি। আমি আসলে ওভাবে বলতে চাই নি অনন্যা……
সুমন, তুমি যে ওয়ার্ড ব্যাবহার করেছো, এর পর থেকে মনে হচ্ছে তুমি হয়তো আমাকে সস্তা কিছু মনে করো…..
অনন্যা, আমি সরি। আমি এভাবে বলতে চাই নি। আসলে আমার ভালো লাগে না এসব……
সেটাই সুমন, তোমার ভালো না লাগার গুরুত্ব তুমি দিবে কিন্তু আমারটা দিবে না…..
ঠিক আছে, যা খুশি করো। আমার কিছু বলার নেই অনন্যা…..
ঠিক আছে, আমি টায়ার্ড, মাইগ্রেন বাড়তেছে। রাখলাম….
ফোন কাটতেই ইন্সটা তে রকির মেসেজ…
হাই অনন্যা, আমাদের রিলস টা দেখেছো?
না তো কেন?
একবার ঢুকে ভিউ আর রিয়্যাকশন চেক করো….
অনন্যা রকির আইডিতে ঢুকে শুরুতেই নিজের নাঁচের রিলস টা দেখলো। সুন্দর করে ইডিট করা হয়েছে। ফুটেজ গুলোও প্রফেশনাল ভিডিওগ্রাফারদের মত নিয়েছে জারা। ৫৮ মিনিট আগে আপলোড করা হয়েছে, আর ৮০ হাজার + ভিউ। চোখ কপালে উঠলো অনন্যার। কমেন্ট বক্স চ্যাক করে আরো অবাক অনন্যা। সবাই তাকে নিয়ে কমেন্ট করছে। কেউ বলছে লেডি ড্যান্সারের আইডি লিংক কোথায়, কেউ বলছে কে এই মেয়ে। কোথায় ছিল এতদিন? কেউ কেউ আবার লিখছে, মেয়েটা সেক্সী আছে, হট। এসব দেখে মিশ্র অনুভুতি হচ্ছে অনন্যার।
দেখেছো অনন্যা….?
হু….
তুমি তো আমার একাউন্টের রিচ বাড়িয়ে দিয়েছো বহুগুণ…..
আমি আর কি করলাম….!!
আচ্ছা তোমার একাউন্ট লক করা কেন? পাব্লিক করো। এই এক ভিডিও তে তুমি আমার ফলোয়ার ও ব্রেক করে ফেলবে…..
অনন্যা নিজের একাউন্ট টা পাবলিক করে দিলো। রকি ওই ভিডিও তে অনন্যাকে ট্যাগ করার পর হুহু করে অনন্যার ফলোয়ার বাড়তে শুরু করলো। মানুষের প্রশংসা প্রতিটা মানুষই পছন্দ করে। মানুষের চাওয়া পাওয়াই থাকে সব মানুষের মাঝে নিজেকে পরিচিত করে তোলা, ব্যাতিক্রম ভাবে উপস্থাপন করা। অনন্যা ইন্সটা থেকে বের ই হচ্ছে না। বার বার রিফ্রেশ করে ফলোয়ার, ভিউ আর কমেন্ট চ্যাক করছে।
* লাইক বাটনে ক্লিক করুন
আরে বসো, কিছু করতে হবে না…..
না আপা, সব কিছু করাই আছে আমি আনছি শুধু…….
অনন্যা শাওয়ার নিতে যাবে এর আগে সুমন ফোন দিলো….
হ্যালো অনন্যা….
ও আমার কথা মনে পরলো তাহলে সাহেবের……
অনন্যা বিজি ছিলাম, ঢাকা এসেছি আজকেই। আব্বু আর শাওন এসেছে। মিট করতে পারবা আজকে?
কালকে দেখা করি, আজকে রিহার্সেল আছে…..
কিসের রিহার্সেল?
ওই যে তোমায় বলেছিলাম র্যাগ ডের কথা…..
তার মানে নাঁচবেই তুমি অনন্যা! আমার কথার কোনো দাম নেই তোমার কাছে?
এই কথাটা তো আমার জিজ্ঞেস করার কথা সুমন। আমার ইচ্ছের কোনো দাম আছে তোমার কাছে? একটা ড্যান্স করবো সেটার জন্য তুমি পারমিশন দিচ্ছো না। এতটাই অপরাধীনতার শিকলে বাঁধতে চাও আমায়…..
ভালো কাজ করলে না করতাম না, এসব নর্তকীদের মত নাঁচলে সবাই না করবে…..
ছিঃ সুমন, আমার সাথে এমন ভাষা ব্যাবহার করায় তোমার মুখ আটকালো না একটুও….. বলেই ফোন রেখে দিল অনন্যা।
অনন্যা ওর ওয়ারড্রব খুলে একটা লেগিংস আর স্পোর্টস ব্রা নিয়ে নিল ব্যাগে। ব্যাগ গুছাচ্ছে আর বিড়বিড় করছে অনন্যা, কি এক দেশে বাস করি। মেয়েদের কোনো স্বাধীনতা নেই। কম্ফোর্ট কোনো ড্রেস পরা যায় না হায়েনা গুলোর জন্য। রাগে ফুপুর সামনে দিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেল অনন্যা। অনন্যার ফুপু বললো,
সাদিয়া, কোনো সমস্যা হচ্ছে তোমার?
না আপা, সমস্যা কিসের…..
শুনো সাদিয়া, তোমার উপর আমি ভীষণ খুশি। তুমি আমাদের বংশের আশার প্রদীপ এখন। আমার একরোখা ভাইটা কে তুমি মানাতে পেরেছো এটা অনেক বড় পাওয়া। এখন তাড়াতাড়ি করে ভাতিজা, ভাতিজির মুখ দেখার ব্যাবস্থা করো। নাতির মুখ দেখে ফেললাম আর ভাতিজা-ভাতিজির মুখ দেখতে পারলাম না এখনো…..
সাদিয়া বুদ্ধিমতী মেয়ে। এই একটা কথাতেই সে বুঝে গেল অনন্যার ফুপু অনন্যাকে বেশি পছন্দ করে না। আর করার কথাও না, ইমতিয়াজ অনন্যা কে নিয়ে বেশি আদিখ্যেতা করে বলে সবাই করবে তা তো না।
আপা, চেষ্টা করবো আপনাদের খুশি করার…..
তা হানিমুনে কোথায় যাবে ঠিক করেছো?
না, অনন্যার ও ছুটি এখন। তাই সবাই মিলে কক্সবাজার যাওয়ার প্ল্যান…..
কি যে বলো না তোমরা সাদিয়া, নতুন বিয়ে, এর মধ্যে অনন্যা যাবে কি করতে?
না সমস্যা নেই আপা……
সমস্যা আছে। এখন তোমাদের ইনজয় করার সময়। আরেকটা কথা, এই সংসার টা তোমার সাদিয়া। অনন্যা আমাদের সবার আদরের। তাই বলে ইমতিয়াজ যা করে তা কিন্তু ঠিক না। তুমি ওর ওয়াইফ। সবটা দেখা তোমার দায়িত্ব। তোমার বাচ্চা হোক, তারপর উইলের বিষয়টা দেখা যাবে….
কিসের উইল আপা?
আরে বলো না, ইমতিয়াজ বিয়ে করবে না করবে না বলে সব অনন্যার নামে উইল করে রেখেছে……
আচ্ছা আপা, আপনারা যা ভালো মনে করেন, করেন…..
অনন্যা রকির ড্যান্স কলেজে এসে ভিতরে ঢুকলো। রকি বললো, জাস্ট টেন মিনিট। ভিতরে ওয়েট করো……
৭/৮ মিনিট পরই রকি আর আরেকটা মেয়ে অফিস রুমে আসলো। মেয়েটা স্পোর্টস ব্রা আর শর্টস লেগিংস পরা। ব্রা এর ফাঁকে ক্লিভেজ দেখা যাচ্ছে। পাছা উঁচু হয়ে আছে অনেকটা। চিকন কোমরের সাথে বড় পাছা যেন মেয়েটাকে সেক্সি করে তুলেছে বহুগুণ।
মেয়েটা এসে নিজেই হাত বাড়িয়ে দিলো অনন্যার দিকে। হাই, আমি জারা…..
হাই, অনন্যা…. নিজের নাম বলে হ্যান্ডশেক সেরে নিল অনন্যা।
অনন্যা, আজকে যারা তোমাকে কিছু স্টেপ শিখিয়ে দিবে। আগে ওর সাথে করো। পরে আমার সাথে। এখন চেঞ্জ করে আসো….
অনন্যা ট্রায়াল রুমে গিয়ে টিশার্ট খুলে জায়ান্ট মিররের সামনে দাঁড়ালো। অনন্যা নিজের স্তনের দিকে একবার তাকিয়ে ব্রা টা আলগা করে নিল। স্পোর্টস ব্রা পরার পর জিন্স খুলে লেগিংস টা পরে নিল। মিরর জায়ান্টে নিজের অবয়ব পুরোটা দেখে ভাবলো এভাবে রকির সামনে যাওয়া টা ঠিক হবে? সুমন কি মনে করবে? পরে আবার ভাবলো রকি চিপ মাইন্ডের কোনো ছেলে না। সব মেয়েরা তো ক্লাসে এগুলো পরেই ড্যান্স করে। আর দেশের বাহিরে তো বিকিনি পরেও ঘুরা যায়। কারণ তারা বাঙালীর মত নিচু মন মানসিকতার না। এদের জন্য আমরা কেন নিজেদের আটকে রাখবো? বড় করে একটা শ্বাস নিয়ে চেঞ্জ রুম থেকে বের হলো অনন্যা।
রকি জীবনে অনেক মেয়ে দেখেছে। কিন্তু অনন্যা যেন সত্যিই অনন্য। জিম করা ছাড়া কোনো মেয়ের এমন পার্ফেক্ট ফিগার হতে পারে? বলিউড এক্ট্রেসরা জিরো ফিগার মেইনটেইন করার জন্য জীবনের সব খাওয়া দাওয়া বাদ দিয়ে দেয়। আর এ তো জিরো ফিগার এর সাথে মিল্ফ কম্বিনেশন এই বয়সেই।
ইউ লুক গর্জিয়াস অনন্যা…..
থাংক ইউ। অনন্যা ভাবলো অশ্লীল বা নোংরা ভাষার প্রয়োগ না করে কি সুন্দর কমপ্লিমেন্ট দেয়া যায়। অশিক্ষিত গুলো কবে এসব শিখবে।
ওকে গার্লস, শুরু করো। জারা, অনন্যা জাস্ট ইনক্রিডেবল। ওকে তোমার মত করে শিখাও। ও কিছুক্ষণের মধ্যেই শিখে যাবে…..
জারা আর অনন্যা স্টার্ট করলো। অনন্যার প্রতিভা দেখে রকি, জারা দুইজনই হতবাক। জারা ভাবছে যে স্টেপ গুলো সে অনেক দিনে শিখেছে এগুলো অনন্যা একবার দেখেই অনায়েসে করে ফেলছে। জারা একটা স্টেপ করার সময় অনন্যার পেটে হাত রেখে কোমর নাড়িয়েছে। অনন্যাও করতে পেরেছে। তখন পিছনে থাকা জারার সাথে অনন্যার পাছা স্পর্শ করেছে। অনন্যা ভাবছে রকির সাথে যদি এমন হয় এইটা করার সময়? ছিঃ এসব আমি কি ভাবছি। ইন্টেনশন খারাপ না হলে এগুলো কিছু না।
ওয়াও, অনন্যা, তোমাকে আমরা কেউ শিখাতে পারবো না। তুমি জাস্ট ওসাম…. চলো এই স্টেপ গুলোই ট্রাই করি। জারা তুমি আমার ফোনটা দিয়ে একটা রিলস বানিয়ে দাও।
অনন্যা রকির সাথে নাঁচতে একটুও বিব্রতবোধ করলো না। কারণ রকির কোনো স্পর্শেই সে অসভ্যতার লেশ মাত্র পায় নি। রকি ওর কোমর ধরে ওকে শুন্যে তুলে ধরেছে। অনন্যা এক পা গুটিয়ে রেখে অন্য পা মেলে ধরেছে। রকি অনন্যার কোমর ধরে চারদিকে ঘুরিয়েছে চরকির মত। যখন অনন্যা কে নামালো রকি, তখন দুই'জনই হাঁফাচ্ছে। জারা এসে বললো,
তোমার প্রফেশন হিসেবে ড্যান্স বেছে নেয়া উচিত অনন্যা। অনেক কিছু করতে পারবে তুমি…..
অনন্যা শীতেও ঘেমে গিয়েছে। ঘাম গুলো স্পোর্টস ব্রার ফাঁক দিয়ে ক্লিভেজে ঢুকছে। ছেলেদের সামনেও এভাবে কোম্ফোর্ট ভাবে লেগিংস পরে বসা যায় রকি কে না দেখলে বিশ্বাস হতো না অনন্যার। ছেলেটার দৃষ্টিতে কোনো কুনজর নেই।
অনন্যা, জারা, আমার একটা মিটিং আছে। আমার বেরুতে হবে। তোমরা বের হবে নাকি রেস্ট নিবে?
না, না আমরা বের হয়ে যাব……
গাড়িতে বসে ফোন হাতে নিয়ে অনন্যা দেখলো সুমনের অনেকগুলো মিসড কল। বাসায় গিয়ে ব্যাক করবে ঠিক করে রকির ইন্সটা আইডিতে ঢুকলো সে। অনেক মেয়ের সাথেই ভিডিও আছে ড্যান্স এর। পুরোদস্তুর প্রফেশনাল একটা ছেলে। সুমন কেন বুঝতেছে না কে জানে? সুমন কি বুঝে না ও ছাড়া কেউ নেই আমার জীবনে। আর ও আমাকে নর্তকী বলে গালি দিলো আজ!! চোখের পানি মুছে নিলো অনন্যা।
বাসায় ঢুকে সাদিয়া কে জিজ্ঞেস করলো ফুপ্পি চলে গিয়েছে?
হুম, আপা চলে গিয়েছে একটু আগে। তুই বস, আমি খাবার দেই তোকে…..
খেতে বসে সাদিয়া বললো, অনন্যা কক্সবাজার কবে যাবি?
আমি যাব না, তোরা বাসাতেই যা শুরু করেছিস! বাহিরে কি করবি কে জানে???
কালকের জন্য সরি। আসলে তুই হুট করে আসবি বুঝতে পারি নি…..
তো, দরজা তো লক করবি…. আমি না হয়ে অন্য কেউ হলে কেমন হতো……
আচ্ছা প্লিজ এটা মনে রাখিস না…..
আচ্ছা, তবুও আমি যাবো না। তোরা হানিমুন প্ল্যান কর…..
তুই যাবি না?
তোদের হানিমুনে আমি কেন যাব?
আচ্ছা…..
খাওয়া শেষ করে সুমন কে কল করলো অনন্যা।
হ্যালো অনন্যা, আমি সরি। আমি আসলে ওভাবে বলতে চাই নি অনন্যা……
সুমন, তুমি যে ওয়ার্ড ব্যাবহার করেছো, এর পর থেকে মনে হচ্ছে তুমি হয়তো আমাকে সস্তা কিছু মনে করো…..
অনন্যা, আমি সরি। আমি এভাবে বলতে চাই নি। আসলে আমার ভালো লাগে না এসব……
সেটাই সুমন, তোমার ভালো না লাগার গুরুত্ব তুমি দিবে কিন্তু আমারটা দিবে না…..
ঠিক আছে, যা খুশি করো। আমার কিছু বলার নেই অনন্যা…..
ঠিক আছে, আমি টায়ার্ড, মাইগ্রেন বাড়তেছে। রাখলাম….
ফোন কাটতেই ইন্সটা তে রকির মেসেজ…
হাই অনন্যা, আমাদের রিলস টা দেখেছো?
না তো কেন?
একবার ঢুকে ভিউ আর রিয়্যাকশন চেক করো….
অনন্যা রকির আইডিতে ঢুকে শুরুতেই নিজের নাঁচের রিলস টা দেখলো। সুন্দর করে ইডিট করা হয়েছে। ফুটেজ গুলোও প্রফেশনাল ভিডিওগ্রাফারদের মত নিয়েছে জারা। ৫৮ মিনিট আগে আপলোড করা হয়েছে, আর ৮০ হাজার + ভিউ। চোখ কপালে উঠলো অনন্যার। কমেন্ট বক্স চ্যাক করে আরো অবাক অনন্যা। সবাই তাকে নিয়ে কমেন্ট করছে। কেউ বলছে লেডি ড্যান্সারের আইডি লিংক কোথায়, কেউ বলছে কে এই মেয়ে। কোথায় ছিল এতদিন? কেউ কেউ আবার লিখছে, মেয়েটা সেক্সী আছে, হট। এসব দেখে মিশ্র অনুভুতি হচ্ছে অনন্যার।
দেখেছো অনন্যা….?
হু….
তুমি তো আমার একাউন্টের রিচ বাড়িয়ে দিয়েছো বহুগুণ…..
আমি আর কি করলাম….!!
আচ্ছা তোমার একাউন্ট লক করা কেন? পাব্লিক করো। এই এক ভিডিও তে তুমি আমার ফলোয়ার ও ব্রেক করে ফেলবে…..
অনন্যা নিজের একাউন্ট টা পাবলিক করে দিলো। রকি ওই ভিডিও তে অনন্যাকে ট্যাগ করার পর হুহু করে অনন্যার ফলোয়ার বাড়তে শুরু করলো। মানুষের প্রশংসা প্রতিটা মানুষই পছন্দ করে। মানুষের চাওয়া পাওয়াই থাকে সব মানুষের মাঝে নিজেকে পরিচিত করে তোলা, ব্যাতিক্রম ভাবে উপস্থাপন করা। অনন্যা ইন্সটা থেকে বের ই হচ্ছে না। বার বার রিফ্রেশ করে ফলোয়ার, ভিউ আর কমেন্ট চ্যাক করছে।
* লাইক বাটনে ক্লিক করুন