Thread Rating:
  • 87 Vote(s) - 3.05 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery আগুণের পরশমণি;কামদেব
ঊনত্রিংশতি পরিচ্ছেদ





আরণ্যক গুনে গুনে একজন একজন করে কাগজ বুঝিয়ে থাকে।সবাইকে কাগজ বুঝিয়ে দেবার পর স্বস্তি। মনটা তার সকাল থেকেই উচাটন।সেই আগ বাড়িয়ে বলেছে যাবে। যাব বলেছে যখন যাবে।দেখা যাক না কি হয়।কালকের রহস্যময় ফোনটা ভেবেছিল আবার আসতে পারে,আসেনি।তারমত চালচুলোহীন লোককে কে ফোন করতে পারে আর কেনই বা করবে আরণ্যকের অদ্ভুত লাগে।
রনো আজকের কাগজটা দেতো দেখি কি লিখেছে।সুরেশবাবু এসে বললেন।
বিনি পয়সার পাঠক রনো একটা কাগজ এগিয়ে দিল।
কাগজটা মেলে ধরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পড়তে থাকেন সুরেশবাবু।
কিছুক্ষণ পর দেব বাবু এসে বললেন,কি লিখেছে কাগজে?
মনে হচ্ছে বামেদের সময় ঘনিয়ে এল।
ছাড়ুন তো এসব মিডিয়ার প্রচার।
মিডিয়া আবার কি প্রচার করল?অজিতবাবু এসে যোগ দিলেন।
বামেদের অবস্থা নাকি ভাল না।
ওইসব রাজনীতির কথা বাদ দিন।খেলার পৃষ্ঠাটা দিনতো।দেখি ইস্ট বেঙ্গল কি করল?একটা কথা কি জানেন রাজনীতি  হচ্ছে একটা খেলা।বুদ্ধিমানরা খেলে আর আমাদের মত বোকারা তাই নিয়ে আলোচনা করে।
ঐতো বিনয়দা এসে গেছে।কোনো নতুন খবর?
বিনয় আঢ্য গলা নামিয়ে বললেন,আমাদের অঞ্চলে একজন ফরেনার এসেছে শুনেছেন?
নতুন নতুন ফ্লাট হচ্ছে অনেক নতুন লোক আসছে।আজকাল কেউ আর বাড়ী করছে না সব ফ্লাট কিনছে।
 রাধা গোস্বামী ফ্লাট কিনে এ পাড়ায় এসেছে।অর্ধেক টাকা বাবাই দিয়েছে ফ্লাটটাও তার নামেই কেনা। বিয়ে হয়েছে প্রায় বছর সাতেক হতে চলল কিন্তু তাদের সন্তান হয়নি।এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য।রাম নারায়ন সরাসরি কিছু না বললেও তার ধারণা রাধাই এজন্য দায়ী।রাধার ধারণা বিপরীত।সেটা প্রমাণ করার জন্য মরীয়া। দোকানের ছেলেটা বেশ হৃষ্টপুষ্ট রাধার খুব পছন্দ হলেও বুঝেছে ওকে দিয়ে কাজ হবে না।দোকানে গেছে ক্যালানেটা মুখ তুলে তাকায় না। ফোন নম্বর যোগাড় করে চেষ্টা করেছে তাতেও কাজ হয়নি।রাধা অন্য উপায়ের কথা ভাবছে।কাগজের বিজ্ঞাপনটা মাথার মধ্যে ঘুর ঘুর করে।রাম বেরিয়ে যাবার পর নম্বর মিলিয়ে টিপে মোবাইল কানে লাগায়।
রিং হচ্ছে,বুকের মধ্যে ঢিপ-ঢিপ করে।হ্যালো ফিজিক...কি রকম লাগে...ফুলবডি...আমিই করাবো...নানা প্রেস্ক্রিপশন নেই...শরীরটা ম্যাজ-ম্যাজ করে...মেল হলেই ভালো...রীয়া সেন, সামন্ত জুয়েলার্সের কাছে এসে উল্টোদিকের রাস্তা দিয়ে মিনিট পাচেক...এগারোটা থেকে চারটের মধ্যে...থ্যাঙ্কস। 
ফোন রেখে আচলে ঘাম মোছে।কেমন লোক পাঠাবে কে জানে। 
আরণ্যকের স্নান হয়ে গেছে।বদ্যিনাথের হোটেল হয়ে মেমসাহেবের ফ্লাটে যাবে মনে মনে স্থির করে।এমন সময় সন্তোষ মাইতী এসে হাজির।
কিরে রনো তোর খাওয়া হয়েছে?
না দাদা এই যাচ্ছি।
তাহলে এক কাজ কর বড় রাস্তা দিয়ে না গিয়ে এদিক দিয়ে যা।একটা প্লান হাতে দিয়ে বললেন,এই প্লানটা নিয়ে --কিভেবে প্লানটা ফিরিয়ে নিয়ে বললেন, প্লানের দরকার নেই যাবার পথে  বীরু সামন্তকে বলে যাবি প্লান পাস হয়ে গেছে,আমার সঙ্গে দেখা করে প্লানটা যেন নিয়ে যায়। 
ফোন করে বলে দিন না?
ফোনে পাচ্ছিনা বলেই তো তোকে বলছি। 
সন্তোষদার মুখের উপর কিছু বলা যায়না।বীরু সামন্তের বাড়ীর দিকে রওনা দিল। 
রাধা গোসাই বারান্দায় অপেক্ষায় উদগ্রীব।আরণ্যককে নজরে পড়তে অবাক এদিকে কোথায়?আরণ্যক বাক নিয়ে নজরের বাইরে চলে গেল।
ডাকাডাকিতে সরমা বেরিয়ে এলেন।আরণ্যক জিজ্ঞেস,বীরেন কাকু আছেন?
উনি বাসায় নেই,কি দরকার?
আমাকে সন্তোষদা পাঠিয়েছেন কাকু কোথায় গেছেন?
কলকাতার বাইরে মেদিনীপুর।কিছু বলতে হবে?
একটু ইতস্তত করে আরণ্যক বলল,কাকু ফিরলে বলবেন প্লান পাস হয়ে গেছে।দাদার সঙ্গে দেখা ক্করে যেন প্লানটা নিয়ে আসে।
আসি কাকীমা?
কিছুটা গিয়ে সমাগম।আরণ্যক থমকে দাঁড়িয়ে কয়েক মুহূর্ত ভেবে সিড়ি বেয়ে তিনতলায় উঠে কলিং বেলে চাপ দিল। দরজা খুলতে দেখল মিস ব্রাউন সামনে দাঁড়িয়ে পরণে লুঙ্গি কুর্তা।এই পোশাকে আগে দেখেনি।গা ছমছম করে উঠল।
ভিতরে এসো।মিস ব্রাউন সরে দাঁড়িয়ে বলল।
এখন আর ফিরে যাওয়া যায়না আরণ্যক ভিতরে ঢুকল।একটা ঘরে নিয়ে বসিয়ে মিস ব্রাউন পাখা চালিয়ে দিল। 
দোকান বন্ধ করে এসেছো?
হ্যা বন্ধ করে খেতে যাচ্ছিলাম--।
এখনো খাওয়া হয়নি?
আমার অভ্যেস আছে।আপনি কি বলবেন বলছিলেন?
এক মিনিট তুমি বোসো।ইলিনা চলে গেল।
আরণ্যক ঘরের চারদিক দেখতে থাকে।দু-দিকের দেওয়ালে আলমারি ভর্তি ঠাষা বই।কলেজে পড়ান অনেক পড়াশুনা করতে হয়।পরিপাটি করে সাজানো।কাজের লোক ণেই নিজেই করেন সম্ভবত। কেন ডেকেছে ভেবে নানা চিন্তা মাথায় হামাগুড়ি দিয়ে চলতে থাকে।বসিয়ে রেখে কোথায় গেল।এত দেরীই বা করছে কেন?দাদা যখন বলেছে এদিক দিয়ে যা তখনই বুঝেছে দিনটা ভাল যাবে না।বাইরে থেকে ডাক পেয়ে বেরিয়ে অবাক।একটা টেবিলে দুটো প্লেটে খাবার সাজানো।
আমারও খাওয়া হয়নি।বসে পড়ো।
এরকম সাজানো গোছানো টেবিলে বসে খাওয়া আবার ম্যাডামের সঙ্গে আরণ্যক ইতস্তত করে।
কি হল?বেসিনে হাত ধুয়ে বসে পড়ো।
না মানে আপনার সঙ্গে...।
তাহলে আমি উঠে যাচ্ছি?
না না আপনি বসুন।আরণ্যক আতকে উঠে বলে বেসিনে হাত ধুয়ে বসে পড়ল।
একটা ভাজা ডাল আর পার্সে মাছের ঝাল। ভাতগুলো বেশ সরু চালের।অনেকদিন পর চারামাছ আরণ্যক ডাল দিয়ে ভাত মাখতে থাকে।  বদ্যিনাথের দোকানে চারা মাছ হয়না। আরণ্যক ভাত মেখে গ্রাস মুখে তুলতে যাবে ইলিনা বলল,একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
আরণ্যক ভাতের দলা নামিয়ে রেখে বলল,বলুন আপনার যা ইচ্ছে--।
খেতে খেতে বলো।
আমি খাওয়ার সময় কথা বলিনা।
ঠিক আছে খেয়ে নেও পরে কথা হবে।
আরণ্যক খাওয়া শুরু করে দিল।ইলিনা খেতে খেতে লক্ষ্য করে মনে হয় খুব ক্ষিধে পেয়েছে।কথাবার্তা বেশ স্পষ্ট খেতে খেতে কথা বলিনা।মনোযোগ দিয়ে খেয়ে চলেছে।একবার মুখ তুলে তাকাচ্ছে না।টেবিলে আরেকজন আছে সে খাচ্ছে কি খাচ্ছে না সেদিকে হুশ নেই।ইলিনার ঠোটে মৃদু হাসি।অনুভব করে ল্যাক অফ গাইডেন্স।একটু সহায়তা পেলে জীবনটা বদলে যেতো।দোকানে বসে বই পড়তে দেখেছে কিন্তু লেখাপড়া কতদূর কে জানে।খাওয়া হোক তারপর কথা বলা যাবে।
খাওয়া শেষ হতে আরণ্যক হাত চাটতে চাটতে বলল,রান্নার লোকটা ভালই পেয়েছেন।
মানে?
পার্সের ঝালটা করেছে ফার্স্ট ক্লাস।
ফ্লাটে আমি বাইরের লোক ঢোকাই না। বাইরের লোক তুমিই প্রথম--।
তাহলে এই রান্না আপনি করেছেন?আরণ্যক বিশ্বাস করতে পারেনা।
যাও মুখ ধুয়ে এসো কোনো কথাই তো হলনা।মুখ ধুয়ে ও ঘরে গিয়ে বোসো।
আরণ্যক ফিরে এসে ভাবতে থাকে ম্যাডাম কি কথা বলতে চায়।একবার মনে হল, কোনোভাবে তাকে ব্যবহার করার মতলব নেইতো?সংবাদপত্রে কতরকম খবর বের হয়।অবশ্য ম্যাডামকে দেখে মনে হয় না কোনো অন্ধকার জগতের সঙ্গে যোগাযোগ আছে।অবশ্য বাইরে থেকে দেখে সব সময় বোঝা যায় না।যদি সেরকম কিছু হয় তাহলে ম্যাডাম আরণ্যক সোমকে চিনতে ভুল করেছেন।
ইলিনা ব্রাউন ঢুকতে উঠে দাঁড়ায় আরণ্যক।বোসো বলে তার বিপরীতে সোফায় বসল।পাশে বসেনি আরণ্যক আশ্বস্ত হয়।অকারণ আজেবাজে ভাবছিল।
খাওয়া দাওয়া কেমন হল?
আরণ্যক লাজুক হেসে বলল,হোটেলে খেতে খেত খাওয়ায় অরুচি এসে গেছিল।অনেকদিন পর যেন বাড়ীর খাবার খেলাম। 
বেশ কথা বলো তো তুমি।
শুনুন ম্যাডাম কাউকে তোষামোদ করা আমার ধাতে নেই।যা মনে হল তাই বললাম।
যাক বাদ দাও একটা কথা বলতো,তুমি পড়াশুনা কতদূর করেছো?
আমি গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি।
ভেরি গুড।তাহলে আর পড়োনি কেন?
সে অনেক কথা--।
তুমি বলো আমি শুনতে চাই।
প্রথম কথা বাবা ছিল না।দ্বিতীয় পাস কোর্সে পাস করেছি।তাও হতো না আমার মা অনু পড় অনু পড় বলে আমার পিছনে লেগে ছিল বলে আজ আমি গ্রাজুয়েট।আমি একটু অলস প্রকৃতি।
তোমার নাম অনু?
আমার বাবা-মা আমাকে অনু বলে ডাকতো।আজ আমাকে এই নামে ডাকার কেউ নেই।আরণ্যকের চোখ ছলছল করে। 
ইলিনা উঠে গিয়ে লুঙ্গির খুট দিয়ে চোখ মুছিয়ে দিয়ে বলল,আমি যদি তোমাকে অনু বলে ডাকি?
আপনি?
আজ আর কোনো কথা নয় তুমি বিশ্রাম করো।আমি পাশের ঘরে আছি।
রাধা গোস্বামী অস্থির।ঘড়ি দেখল কাটা চারটে পেরিয়ে গেছে।আর কখন আসবে।রামের ফেরার সময় হয়ে এল।বাটন টিপে ফোন করল।
আরে ম্যাডাম লোক তো ফিরে এসেছে...রিয়া সেন কেউ বলতে পারল না --
আমি নতুন এসেছি সবাই এ নাম জানে না।সামন্ত জুয়েলার্সে এসেছিল?
হ্যা ওখান থেকে ভিতরে ঢুকেছিল
শুনুন রিয়া সেন বলতে হবেনা,আমার বাড়ীওয়ালার নাম রাম নারায়ন গোস্বামী বললেই হবে--কাল আসছে তাহলে?  
Like Reply


Messages In This Thread
RE: আগুণের পরশমণি;কামদেব - by kumdev - 16-08-2024, 05:10 PM



Users browsing this thread: 9 Guest(s)