16-08-2024, 01:36 PM
(This post was last modified: 17-08-2024, 12:20 PM by Godhuli Alo. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
সেদিন হোটেলে ফিরে এসে শুধু মায়ের কথাই মনে পড়তে লাগলো। যতক্ষণ চোখের সামনে ছিল, চোখ দুটো শুধু তার শরীরটাকেই মেপে যাচ্ছিল আনমনে। তবে সেটা বাইরে প্রকাশ হতে দেই নি। শরীরটা আগের চেয়ে বেশ রসালো হয়েছে আর চেহারাতেও তখনকার চেয়ে বেশি লাবণ্যতা এসেছে। কিন্তু মা কি তার জীবনে সুখী? না, কোনোভাবেই না। সেটা তাকে দেখলেও বোঝা যায় আর পারিপার্শ্বিক সবকিছু সম্পর্কে যতটুকু জেনেছি তাতে সেই ধারণাই বদ্ধমূল হয় যে, মা সুখী নেই মঈনের সাথে দাম্পত্য জীবনে। মঈন অন্য একটা মেয়েকে বিয়ে করেছে। ঢাকায় ফ্ল্যাট নিয়ে তার কাছেই থাকছে স্থায়ীভাবে। এখানে মাঝে মাঝে এসে মা আর ছেলেমেয়েকে দেখে যায়। ছোট ছোট দুটো বাচ্চা নিয়ে মা একাই থাকে একটা ফ্ল্যাটে। না, তাকে কোনোভাবেই সুখী বলা যায় না। তাহলে আমি তো একটা সুযোগ নিতেই পারি। বাসা যখন চিনে এসেছি এবং যথেষ্ট অভ্যর্থনাও পেয়েছি প্রথম দিনে তখন আবার যেতে ক্ষতি কি?
কলিংবেল টেপার বেশ কিছুক্ষণ পর সৌমিক এসে দরজা খুলে বলল, আরে চাচ্চু তুমি!
আমি হেসে বললাম, হুম। খুব মনে পড়ছিল তোমার কথা, তাই চলে আসলাম দেখতে।
সৌমিক উৎফুল্ল হয়ে উঠে বলল, আসো আসো ভেতরে আসো।
ভেতরে গিয়ে সোফায় বসতেই মায়ের গলার আওয়াজ পেলাম। 'কে এসেছে রে সৌম?' বলেই তিনি ড্রইংরুমে এসে ঢুকলেন। আমাকে দেখেই থমকে গিয়ে বললেন, ও তুমি!
আমি হেসে বললাম, খুশি হও নি বুঝি দেখে?
মা সৌমিকের দিকে তাকিয়ে বললেন- সৌম, তুমি ভেতরে সেঁজুতির কাছে গিয়ে বসো গে, যাও।
সৌমিক ভেতরে যেতেই মা আমার সামনের সোফাটায় বসতে বসতে বললেন, আমার খুশি হওয়া বা না হওয়ায় কি যায় আসে? বাড়িটা তো আর আমার না। যার বাড়ি তার নিষেধ আছে একা যাতে তুমি এখানে না আসো।
আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম, কিন্তু মঈনের আচরণ তো সেদিন তেমনটা ছিল না।
মা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, দীর্ঘদিন পর ভাইকে দেখে খুশি হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু বাসায় আসতে চাওয়াটা ওর পছন্দ হয় নি। কিন্তু অফিসের ঠিকানা যেহেতু পেয়েই গেছো তাই সেখান থেকে বাসার ঠিকানা পাওয়াটাও কঠিন কিছু না। তাই ঝামেলা এড়াতে নিজেই নিয়ে এসেছিল। কিন্তু আমাকে বলে গিয়েছিল যাতে একা কখনও আসলে তোমাকে ঢুকতে না দেই।
আমি রুষ্টকণ্ঠে বললাম, কেন? সে তো ঠিকই আর একজনের সাথে চুটিয়ে সংসার করছে। তবে তোমার প্রতি কেন এতো অধিকারবোধ?
মা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন, পুরুষ মানুষ একবার কোনো নারীর ওপর অধিকার পেয়ে গেলে সেটা আর ছাড়তে চায় না কোনোভাবেই। তাকে নিজের সম্পত্তি ভাবতে শুরু করে।
আমি বললাম- আচ্ছা, বাদ দাও। আমাকে শুধু বলো, তুমি কি সুখী তোমার জীবনে?
মা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, সেটা কি আর মুখ ফুটে বলতে হয়? স্ত্রীর স্বীকৃতি তো কোনোদিনও ছিল না। তবু একত্রে ছিলাম বলে একটা মর্যাদা ছিল। কিন্তু এখন সেটুকুও নেই। বাচ্চা দুটোকে নিয়ে তার রক্ষিতার মতো পড়ে আছি এখানে। নিজের জন্য কোনো দুঃখ নেই কিন্তু ছেলেমেয়ে দুটোর মুখের দিকে তাকাতে পারি না। আমি না হয় ওর বিয়ে করা বৌ নই। কিন্তু বাচ্চা দুটো তো ওর ঔরসজাত সন্তান।
বলতে বলতেই মা কান্না করে দিলেন। তাই দেখে আমি অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম। কি বলবো ভেবে পেলাম না। মা আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে বললেন, মনের কথা বলে চোখের জল ফেলবার মতো একটা মানুষও নেই। কিভাবে যে বেঁচে আছি! তার ওপর নীলিমা নাকি কনসিভ করেছে। ওর বাচ্চা দুনিয়াতে আসবার পর পরিস্থিতি যে আরো খারাপ হবে তাতে তো কোনো সন্দেহ নেই।
আমি ক্ষুণ্নকণ্ঠে বললাম, তাহলে তোমার ফিউচার প্ল্যান কি?
মা আবারো দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, কোনো প্ল্যান নেই। ভাগ্যে যা আছে হবে।
আমি বললাম, কিন্তু এভাবে তো বাঁচা যায় না।
মা বললেন, অভ্যেস করে নিলেই বাঁচা যায়। কিন্তু তুমি আর বেশিক্ষণ বোসো না এখানে। মঈন কোনোভাবে জানতে পারলে খুব রাগ করবে। চারপাশের অনেককেই লাগিয়ে রেখেছে আমার দেখভাল করার জন্য। কেউ জানতে পেরে ওর কাছে কথা লাগিয়ে দিলে অনর্থ ঘটবে।
আমি তখন বললাম- ঠিক আছে, আমি উঠছি। কিন্তু আমার ঠিকানা দিয়ে যাচ্ছি তোমাকে। সময়-সুযোগ বুঝে একবার এসো আমার কাছে। তোমার সবকিছুর একটা মীমাংসা হওয়াটা খুব দরকার। এমন তো নয় যে মঈন ছাড়া তোমার আর কেউ নেই তাই ওর সবকিছু তোমাকে মুখ বুজে সইতে হবে।
কলিংবেল টেপার বেশ কিছুক্ষণ পর সৌমিক এসে দরজা খুলে বলল, আরে চাচ্চু তুমি!
আমি হেসে বললাম, হুম। খুব মনে পড়ছিল তোমার কথা, তাই চলে আসলাম দেখতে।
সৌমিক উৎফুল্ল হয়ে উঠে বলল, আসো আসো ভেতরে আসো।
ভেতরে গিয়ে সোফায় বসতেই মায়ের গলার আওয়াজ পেলাম। 'কে এসেছে রে সৌম?' বলেই তিনি ড্রইংরুমে এসে ঢুকলেন। আমাকে দেখেই থমকে গিয়ে বললেন, ও তুমি!
আমি হেসে বললাম, খুশি হও নি বুঝি দেখে?
মা সৌমিকের দিকে তাকিয়ে বললেন- সৌম, তুমি ভেতরে সেঁজুতির কাছে গিয়ে বসো গে, যাও।
সৌমিক ভেতরে যেতেই মা আমার সামনের সোফাটায় বসতে বসতে বললেন, আমার খুশি হওয়া বা না হওয়ায় কি যায় আসে? বাড়িটা তো আর আমার না। যার বাড়ি তার নিষেধ আছে একা যাতে তুমি এখানে না আসো।
আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম, কিন্তু মঈনের আচরণ তো সেদিন তেমনটা ছিল না।
মা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, দীর্ঘদিন পর ভাইকে দেখে খুশি হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু বাসায় আসতে চাওয়াটা ওর পছন্দ হয় নি। কিন্তু অফিসের ঠিকানা যেহেতু পেয়েই গেছো তাই সেখান থেকে বাসার ঠিকানা পাওয়াটাও কঠিন কিছু না। তাই ঝামেলা এড়াতে নিজেই নিয়ে এসেছিল। কিন্তু আমাকে বলে গিয়েছিল যাতে একা কখনও আসলে তোমাকে ঢুকতে না দেই।
আমি রুষ্টকণ্ঠে বললাম, কেন? সে তো ঠিকই আর একজনের সাথে চুটিয়ে সংসার করছে। তবে তোমার প্রতি কেন এতো অধিকারবোধ?
মা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন, পুরুষ মানুষ একবার কোনো নারীর ওপর অধিকার পেয়ে গেলে সেটা আর ছাড়তে চায় না কোনোভাবেই। তাকে নিজের সম্পত্তি ভাবতে শুরু করে।
আমি বললাম- আচ্ছা, বাদ দাও। আমাকে শুধু বলো, তুমি কি সুখী তোমার জীবনে?
মা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, সেটা কি আর মুখ ফুটে বলতে হয়? স্ত্রীর স্বীকৃতি তো কোনোদিনও ছিল না। তবু একত্রে ছিলাম বলে একটা মর্যাদা ছিল। কিন্তু এখন সেটুকুও নেই। বাচ্চা দুটোকে নিয়ে তার রক্ষিতার মতো পড়ে আছি এখানে। নিজের জন্য কোনো দুঃখ নেই কিন্তু ছেলেমেয়ে দুটোর মুখের দিকে তাকাতে পারি না। আমি না হয় ওর বিয়ে করা বৌ নই। কিন্তু বাচ্চা দুটো তো ওর ঔরসজাত সন্তান।
বলতে বলতেই মা কান্না করে দিলেন। তাই দেখে আমি অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম। কি বলবো ভেবে পেলাম না। মা আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে বললেন, মনের কথা বলে চোখের জল ফেলবার মতো একটা মানুষও নেই। কিভাবে যে বেঁচে আছি! তার ওপর নীলিমা নাকি কনসিভ করেছে। ওর বাচ্চা দুনিয়াতে আসবার পর পরিস্থিতি যে আরো খারাপ হবে তাতে তো কোনো সন্দেহ নেই।
আমি ক্ষুণ্নকণ্ঠে বললাম, তাহলে তোমার ফিউচার প্ল্যান কি?
মা আবারো দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, কোনো প্ল্যান নেই। ভাগ্যে যা আছে হবে।
আমি বললাম, কিন্তু এভাবে তো বাঁচা যায় না।
মা বললেন, অভ্যেস করে নিলেই বাঁচা যায়। কিন্তু তুমি আর বেশিক্ষণ বোসো না এখানে। মঈন কোনোভাবে জানতে পারলে খুব রাগ করবে। চারপাশের অনেককেই লাগিয়ে রেখেছে আমার দেখভাল করার জন্য। কেউ জানতে পেরে ওর কাছে কথা লাগিয়ে দিলে অনর্থ ঘটবে।
আমি তখন বললাম- ঠিক আছে, আমি উঠছি। কিন্তু আমার ঠিকানা দিয়ে যাচ্ছি তোমাকে। সময়-সুযোগ বুঝে একবার এসো আমার কাছে। তোমার সবকিছুর একটা মীমাংসা হওয়াটা খুব দরকার। এমন তো নয় যে মঈন ছাড়া তোমার আর কেউ নেই তাই ওর সবকিছু তোমাকে মুখ বুজে সইতে হবে।