10-08-2024, 10:01 PM
অষ্টবিংশতি পরিচ্ছেদ
পুজো পুজো পুজো অবশেষে শেষ হল পুজো।প্যাণ্ডেল খা-খা করছে।একুশের পল্লীর ঠাকুর বিসর্জন হয়নি আজ হবে।বিরাট শোভাযাত্রা তাসা ব্যাণ্ডপার্টি তার সঙ্গে ঢাক তো থাকবেই দেখবার মত। আরণ্যক আবার দোকান খুলে বসেছে।পরিচিতদের সঙ্গে দেখা হলেই কোলাকুলি,শুভেচ্ছা বিনিময়।একদিন ঝর্ণা বসুর সঙ্গে দেখা হয়েছিল।কথাবার্তা অদ্ভুত। জিজ্ঞেস করল,কিরে ঠাকুর কেমন দেখলি?
একুশের পল্লীর ঠাকুর দেখেছো,দারুণ করেছে না?
ঠাকুর দেখেছি মানুষ দেখেছি।মানুষ চেনা সহজ নয় রে রনো।
কেমন হেয়ালীর মত শুনতে লাগল।কিছু বলার আগেই বলল,তুই তো আকাআকি করিস মানুষের ভিতরটা আকতে পারবি?
বুঝলাম না।
অত বুঝে দরকার নেই।ভাবছি কবে যে কলেজ খুলবে।আসিরে রনো।
কলেজ খোলার জন্য হাপিয়ে উঠেছে।মানুষ কাজের মধ্যে থাকতে ভালোবাসে।মিস ব্রাউনের কথা মনে পড়ল্,উনিও বলছিলেন দীর্ঘ ছুটিতে সময় কাটতে চায়না। আসলে মানুষ একটা দুঃসহ পরিস্থিতি এড়াতে অন্যকিছুর নিয়ে ডুবে থাকতে চায়।ওনেক করে যেতে বলেছিলেন যাব-যাব করেও যাওয়া হয়নি।মহিলা একা থাকেন ফ্লাটে সেজন্য সংকোচ হয়।অবশ্য মহিলাকে বেশ ভাল লেগেছে।কলেজের লেকচারার কোনো অহঙ্কার নেই সহজ সরল।চমৎকার বাংলা বলেন।একটা ব্যাপার লক্ষ্য করেছে মেয়েদের মধ্যে একটা জায়গাম মিল সে এদেশের হোক কিম্বা বিদেশিনী তাদের ভাব ভঙ্গী আচার আচরণে একটা মমতার স্পর্শ।
মোবাইল বেজে উঠতে বুঝতে পারে বিজয়ার শুভেচ্ছা।কদিন চলবে এরকম।কানে লাগিয়ে বলল,শুভ বিজয়া।
অন্য প্রান্ত হতে মেয়েলী কণ্ঠস্বর ভেসে এল,শুভ বিজয়া।
আরণ্যক চমকে ওঠে এ আবার কে?মনে হয় কিছু ভুল হয়েছে আরণ্যক বলল,আমি আরণ্যক বলছি আপনি?
আহা জানি তো, তোমার গলা আমি চিনবো না?
নারী কণ্ঠকে এড়িয়ে যাওয়া কঠিণ তাও আরণ্যক ফোন কেটে দিল।ঝর্ণাদি সাবধান করেছিল তোকে ফাসাতে পারে।তার নম্বর জানল কি করে আরণ্যক ভেবে পায়না।
এস আই সজল বোস বাসায় ফিরে জামা কাপড় ছেড়ে স্নানে ঢুকল।খাওয়া-দাওয়া করে আবার তাকে ডিউটীতে যেতে হবে।
খাটের উপর জামা কাপড় এলোমেলো পড়ে থাকতে দেখে বিরক্ত ঝর্ণা বোস গুছিয়ে আলনায় রাখতে গিয়ে দেখল প্যাণ্টের পকেটে এক তাড়া নোট।মাস শেষ হতে কদিন বাকী।এখন তো বেতন হবার কথা নয়।কপালে দুশ্চিন্তার ভাজ পড়ে।জামা কাপড় গুছিয়ে আলনায় রেখে দিল।
বাথরুম হতে সজল বেরোতে ঝর্ণা জিজ্ঞেস করল,তোমার পকেটে এত টাকা কিসের?
চমকে গিয়ে গামছা দিয়ে গা মুছতে মুছতে সজল বলল,সে কৈফিয়ত তোমাকে দিতে হবে?
কৈফিয়ত নয় এমনি জানতে চাইছি।
বেশী কৌতূহল ভাল নয়।ভাত দাও আমাকে বেরোতে হবে।
অশান্তির ভয়ে ঝর্ণা কথা বাড়ায় না।রান্না ঘরে গিয়ে কাজে লেগে গেল।থালায় ভাত বাড়তে বাড়তে ভাবে সজলকে নিয়ে এক সময় কত অহঙ্কার ছিল।এখানকার থানার বড়বাবু লোকটা করাপটেড,পার্টির কথায় ওঠে বসে।সজলের সঙ্গে বনিবনা নেই।পুলিশের চাকরি পছন্দ নয়। তার মনে হতো সজল একজন লড়াকু অফিসার।তাকে ভাল লেগেছিল।এখন দেখছে লড়াইটা নীতির নয় বখরার লড়াই।
কি হল ভাত দেবে তো?
এই যাচ্ছি।ঝর্ণা ভাতের থালা নিয়ে টেবিলের উপর রাখল।
সজল ভাত মেখে তৃপ্তি করে খেতে থাকে।ঝর্ণা লক্ষ্য করে চোখে মুখে কোনো গ্লানির ছাপ নেই।
জানো ঝুনু এবার বাছাধন টের পাবে।বড়বাবুর নামে মাস পিটিশন জমা পড়বে।দেখি সন্তোষ মাইতি কিভাবে বাচায়।শালা আমার পিছনে লাগা--।
এসব শুনতে ঝর্ণার গা ঘিনঘিন করে,স্টোভটা বন্ধ করে দিয়ে আসি বলে ঝর্ণা উঠে রান্না ঘরে চলে গেল।
ইলিনা ব্রাউন তরতাজা যুবতী ফ্লাটে একা থাকে।সেখানে ওরকম একটা যোয়ান ছেলেকে ডাকা ঠিক হল কিনা একটা খচখচানি ছিল মনে।ফ্লাটের লোকজন কেউ কারো খবর রাখেনা।আর্ণক আসেনি এটা স্বস্তি।সত্যি কথা বলতে কি পুজোর সময় উপযাচক হয়ে ঠাকুর দেখাতে নিয়ে যাবার কথা বোলেছিল একটু খটকা লেগেছিস।তবে আর পাচটা মেয়ের মত মিস রাউন অবলা নারী নয়।ইলিনা সম্মত হয়েছিল।দেখা যাক না কি করে।তারপর ঘণ্টাখানেকের উপর একসঙ্গে ছিল,পাশাপাশি হেটেছে কোন বেচাল নজরে পড়েনি বরং অন্য কেউ যতে তার গায়ের উপর এসে না সেদিকে ছিল তীক্ষ্ণ দৃষ্টি।যেন তার বডি গার্ড ইলিনা বিষয়টা বেশ উপভোগ করছিল। ছেলেটি একটু সাই ইন্ট্রোভার্ট টাইপ।নিজের কথা বলতে সঙ্কোচ।ইলিনাই বরং খুচিয়ে খুচিয়ে জেনেছে।বাবা-মা নেই সংসারে একা তাহলেও সদা প্রফুল্ল।যত জেনেছে ইলিনার কৌতূহল তত বেড়েছে।শুধু খাওয়ার বিনিময়ে দোকানে,ইলিনা যখন বলল এতো এক্সপ্লয়েট করছে।
আমাকে তো জোর করে ধরে রাখিনি আমিই ইচ্ছে করে রয়েছি।আর্ণক হেসে বলেছিল।
ধরো একজন ক্ষুধাকাতর ব্যক্তিকে বলা হয় কাজটা করে দাও তাহলে খেতে দেব এটা পরোক্ষে চাপ দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া নয়?
আপনি খুব সুন্দর কথা বলেন ভাল লাগে শুনতে।চোখে শিশুর মুগ্ধতা।
ভাবতে অবাক লাগে মস্তানগুলোর বিরুদ্ধে প্রত্যাশা ছাড়াই রুখে দাঁড়িয়েছিল।কিছুটা কৃতজ্ঞতা বোধ আর কিছুটা সহানুভূতিতে ইলিনার ওর জন্য কিছু করার ইচ্ছেতে ওকে আসতে বলেছিল।একজনের ইচ্ছে হলেই তো হবে না।
ইলিনা ব্রাউন রান্না করেনি বেরিয়ে বড় রাস্তায় দোকান থেকে বিরিয়ানি নিয়ে আসলেই হবে।একার জন্য রান্না করতে ইচ্ছে করেনা।দেখতে কলেজ খোলার সময় এগিয়ে আসে।
বেলা বাড়তে থাকে এবার দোকান বন্ধ করে স্নানে যাবার কথা ভাবে আরণ্যক।এমন সময় একজন মহিলা এসে বলল,পুজো সংখ্যা কিছু আছে।
মহিলার গলা শুনে অবাক হয়ে তাকায়।বছর পয়ত্রিশের মধ্যে বয়স হবে।বিবাহিত না অবিবাহিত দেখে বোঝা যায়না আজকাল।
পুজো হয়ে গেল এখন পুজো সংখ্যা--দেখছি।আরণ্যক বইয়ের তাক ঘাটতে থাকে যদি কোনো পত্রিকা থাকে।না পেয়ে বলল,নেই ম্যাম যদি পত্রিকার নামটা বলেন এনে দিতে পারি।আরণ্যকের ইচ্ছে কথা বলুক তাহলে সকালেড় টেলিফোনের গলাটা মিলিয়ে দেখত।
মহিলা কোনো কথা বলেনা।
আপনি ফোন করেছিলেন?আরণ্যক বলেই ফেলল।
মানে?ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করে।
না মানে পত্রিকা আছে কিনা জানার জন্য।
আমি তো আপনাদের নম্বরই জানি না।
আপনি কোন পত্রিকা চাইছেন?
কিছু না বলে মহিলা চলে গেল।
এই মহিলাকে সেরকম প্রগলভ মনে হল না।আরণ্যক দোকান বন্ধ করে বাজারের ভেতর স্নানে গেল।
একটু আগে সুপমা ফোন করে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানালো।জানতে চাইল কবে কলেজ খুলবে।সুপমা মা হতে চলেছে এইজন্য দিদাকে প্রণাম কোরতে আসতে পারেনি।গাড়ী নিয়ে একদিন ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিল।সুপমার কথাবার্তা শুনে মনে হল সংসারে বেশ মানিয়ে নিয়েছে।মেয়েরা মানিয়ে নেওয়ার সহজাত ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়।
ইলিনা ব্রাউন শাড়ী পরতে থাকে।বাস রাস্তায় একটা বিরিয়ানির দোকান দেখেছে।দরজা বন্ধ করে বেরিয়ে পড়ল।
দোকানের সামনে বিশাল পেতলের হাড়ি।মিস ব্রাউন কাছে যেতে বলল,বলিয়ে ম্যাডাম কেয়া চাইয়ে?
তাকে দেখলে সবাই হিন্দি বলে্।মিস ব্রাউন বলল,বিরিয়ানি হবে?
চিকেন একশো বিশ মাটোন একশে পচাশ।
একটা চিকেন বিরিয়ানি দেবেন।
মিস ব্রাউনের চোখ কি দেখে কুচকে যায়।আর্ণক মনে হচ্ছে?তাকে দেখে লজ্জা পেতে পারে সেজন্য মিস ব্রাউন অন্য দিকে তাকাল।
ম্যাডাম ভালো আছেন?
ও তুমি?তুমি এখানে কোথায়?
এইতো এখন দোকান বন্ধ করে খেতে এলাম। সকালে সন্ধ্যয় দোকানে বসতে হয় দুপুরে ছাড়া--।
আমি বলেছি এখন কলেজ ছুটি।এনি টাইম ইউ মে কাম।
দুপুরে গেলে আপনার ঘুমের ডিস্টার্ব হবে তাই।
আমি রাতে ছাড়া ঘুমাই না।
ঠিক আছে কাল যাব।
পুজো পুজো পুজো অবশেষে শেষ হল পুজো।প্যাণ্ডেল খা-খা করছে।একুশের পল্লীর ঠাকুর বিসর্জন হয়নি আজ হবে।বিরাট শোভাযাত্রা তাসা ব্যাণ্ডপার্টি তার সঙ্গে ঢাক তো থাকবেই দেখবার মত। আরণ্যক আবার দোকান খুলে বসেছে।পরিচিতদের সঙ্গে দেখা হলেই কোলাকুলি,শুভেচ্ছা বিনিময়।একদিন ঝর্ণা বসুর সঙ্গে দেখা হয়েছিল।কথাবার্তা অদ্ভুত। জিজ্ঞেস করল,কিরে ঠাকুর কেমন দেখলি?
একুশের পল্লীর ঠাকুর দেখেছো,দারুণ করেছে না?
ঠাকুর দেখেছি মানুষ দেখেছি।মানুষ চেনা সহজ নয় রে রনো।
কেমন হেয়ালীর মত শুনতে লাগল।কিছু বলার আগেই বলল,তুই তো আকাআকি করিস মানুষের ভিতরটা আকতে পারবি?
বুঝলাম না।
অত বুঝে দরকার নেই।ভাবছি কবে যে কলেজ খুলবে।আসিরে রনো।
কলেজ খোলার জন্য হাপিয়ে উঠেছে।মানুষ কাজের মধ্যে থাকতে ভালোবাসে।মিস ব্রাউনের কথা মনে পড়ল্,উনিও বলছিলেন দীর্ঘ ছুটিতে সময় কাটতে চায়না। আসলে মানুষ একটা দুঃসহ পরিস্থিতি এড়াতে অন্যকিছুর নিয়ে ডুবে থাকতে চায়।ওনেক করে যেতে বলেছিলেন যাব-যাব করেও যাওয়া হয়নি।মহিলা একা থাকেন ফ্লাটে সেজন্য সংকোচ হয়।অবশ্য মহিলাকে বেশ ভাল লেগেছে।কলেজের লেকচারার কোনো অহঙ্কার নেই সহজ সরল।চমৎকার বাংলা বলেন।একটা ব্যাপার লক্ষ্য করেছে মেয়েদের মধ্যে একটা জায়গাম মিল সে এদেশের হোক কিম্বা বিদেশিনী তাদের ভাব ভঙ্গী আচার আচরণে একটা মমতার স্পর্শ।
মোবাইল বেজে উঠতে বুঝতে পারে বিজয়ার শুভেচ্ছা।কদিন চলবে এরকম।কানে লাগিয়ে বলল,শুভ বিজয়া।
অন্য প্রান্ত হতে মেয়েলী কণ্ঠস্বর ভেসে এল,শুভ বিজয়া।
আরণ্যক চমকে ওঠে এ আবার কে?মনে হয় কিছু ভুল হয়েছে আরণ্যক বলল,আমি আরণ্যক বলছি আপনি?
আহা জানি তো, তোমার গলা আমি চিনবো না?
নারী কণ্ঠকে এড়িয়ে যাওয়া কঠিণ তাও আরণ্যক ফোন কেটে দিল।ঝর্ণাদি সাবধান করেছিল তোকে ফাসাতে পারে।তার নম্বর জানল কি করে আরণ্যক ভেবে পায়না।
এস আই সজল বোস বাসায় ফিরে জামা কাপড় ছেড়ে স্নানে ঢুকল।খাওয়া-দাওয়া করে আবার তাকে ডিউটীতে যেতে হবে।
খাটের উপর জামা কাপড় এলোমেলো পড়ে থাকতে দেখে বিরক্ত ঝর্ণা বোস গুছিয়ে আলনায় রাখতে গিয়ে দেখল প্যাণ্টের পকেটে এক তাড়া নোট।মাস শেষ হতে কদিন বাকী।এখন তো বেতন হবার কথা নয়।কপালে দুশ্চিন্তার ভাজ পড়ে।জামা কাপড় গুছিয়ে আলনায় রেখে দিল।
বাথরুম হতে সজল বেরোতে ঝর্ণা জিজ্ঞেস করল,তোমার পকেটে এত টাকা কিসের?
চমকে গিয়ে গামছা দিয়ে গা মুছতে মুছতে সজল বলল,সে কৈফিয়ত তোমাকে দিতে হবে?
কৈফিয়ত নয় এমনি জানতে চাইছি।
বেশী কৌতূহল ভাল নয়।ভাত দাও আমাকে বেরোতে হবে।
অশান্তির ভয়ে ঝর্ণা কথা বাড়ায় না।রান্না ঘরে গিয়ে কাজে লেগে গেল।থালায় ভাত বাড়তে বাড়তে ভাবে সজলকে নিয়ে এক সময় কত অহঙ্কার ছিল।এখানকার থানার বড়বাবু লোকটা করাপটেড,পার্টির কথায় ওঠে বসে।সজলের সঙ্গে বনিবনা নেই।পুলিশের চাকরি পছন্দ নয়। তার মনে হতো সজল একজন লড়াকু অফিসার।তাকে ভাল লেগেছিল।এখন দেখছে লড়াইটা নীতির নয় বখরার লড়াই।
কি হল ভাত দেবে তো?
এই যাচ্ছি।ঝর্ণা ভাতের থালা নিয়ে টেবিলের উপর রাখল।
সজল ভাত মেখে তৃপ্তি করে খেতে থাকে।ঝর্ণা লক্ষ্য করে চোখে মুখে কোনো গ্লানির ছাপ নেই।
জানো ঝুনু এবার বাছাধন টের পাবে।বড়বাবুর নামে মাস পিটিশন জমা পড়বে।দেখি সন্তোষ মাইতি কিভাবে বাচায়।শালা আমার পিছনে লাগা--।
এসব শুনতে ঝর্ণার গা ঘিনঘিন করে,স্টোভটা বন্ধ করে দিয়ে আসি বলে ঝর্ণা উঠে রান্না ঘরে চলে গেল।
ইলিনা ব্রাউন তরতাজা যুবতী ফ্লাটে একা থাকে।সেখানে ওরকম একটা যোয়ান ছেলেকে ডাকা ঠিক হল কিনা একটা খচখচানি ছিল মনে।ফ্লাটের লোকজন কেউ কারো খবর রাখেনা।আর্ণক আসেনি এটা স্বস্তি।সত্যি কথা বলতে কি পুজোর সময় উপযাচক হয়ে ঠাকুর দেখাতে নিয়ে যাবার কথা বোলেছিল একটু খটকা লেগেছিস।তবে আর পাচটা মেয়ের মত মিস রাউন অবলা নারী নয়।ইলিনা সম্মত হয়েছিল।দেখা যাক না কি করে।তারপর ঘণ্টাখানেকের উপর একসঙ্গে ছিল,পাশাপাশি হেটেছে কোন বেচাল নজরে পড়েনি বরং অন্য কেউ যতে তার গায়ের উপর এসে না সেদিকে ছিল তীক্ষ্ণ দৃষ্টি।যেন তার বডি গার্ড ইলিনা বিষয়টা বেশ উপভোগ করছিল। ছেলেটি একটু সাই ইন্ট্রোভার্ট টাইপ।নিজের কথা বলতে সঙ্কোচ।ইলিনাই বরং খুচিয়ে খুচিয়ে জেনেছে।বাবা-মা নেই সংসারে একা তাহলেও সদা প্রফুল্ল।যত জেনেছে ইলিনার কৌতূহল তত বেড়েছে।শুধু খাওয়ার বিনিময়ে দোকানে,ইলিনা যখন বলল এতো এক্সপ্লয়েট করছে।
আমাকে তো জোর করে ধরে রাখিনি আমিই ইচ্ছে করে রয়েছি।আর্ণক হেসে বলেছিল।
ধরো একজন ক্ষুধাকাতর ব্যক্তিকে বলা হয় কাজটা করে দাও তাহলে খেতে দেব এটা পরোক্ষে চাপ দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া নয়?
আপনি খুব সুন্দর কথা বলেন ভাল লাগে শুনতে।চোখে শিশুর মুগ্ধতা।
ভাবতে অবাক লাগে মস্তানগুলোর বিরুদ্ধে প্রত্যাশা ছাড়াই রুখে দাঁড়িয়েছিল।কিছুটা কৃতজ্ঞতা বোধ আর কিছুটা সহানুভূতিতে ইলিনার ওর জন্য কিছু করার ইচ্ছেতে ওকে আসতে বলেছিল।একজনের ইচ্ছে হলেই তো হবে না।
ইলিনা ব্রাউন রান্না করেনি বেরিয়ে বড় রাস্তায় দোকান থেকে বিরিয়ানি নিয়ে আসলেই হবে।একার জন্য রান্না করতে ইচ্ছে করেনা।দেখতে কলেজ খোলার সময় এগিয়ে আসে।
বেলা বাড়তে থাকে এবার দোকান বন্ধ করে স্নানে যাবার কথা ভাবে আরণ্যক।এমন সময় একজন মহিলা এসে বলল,পুজো সংখ্যা কিছু আছে।
মহিলার গলা শুনে অবাক হয়ে তাকায়।বছর পয়ত্রিশের মধ্যে বয়স হবে।বিবাহিত না অবিবাহিত দেখে বোঝা যায়না আজকাল।
পুজো হয়ে গেল এখন পুজো সংখ্যা--দেখছি।আরণ্যক বইয়ের তাক ঘাটতে থাকে যদি কোনো পত্রিকা থাকে।না পেয়ে বলল,নেই ম্যাম যদি পত্রিকার নামটা বলেন এনে দিতে পারি।আরণ্যকের ইচ্ছে কথা বলুক তাহলে সকালেড় টেলিফোনের গলাটা মিলিয়ে দেখত।
মহিলা কোনো কথা বলেনা।
আপনি ফোন করেছিলেন?আরণ্যক বলেই ফেলল।
মানে?ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করে।
না মানে পত্রিকা আছে কিনা জানার জন্য।
আমি তো আপনাদের নম্বরই জানি না।
আপনি কোন পত্রিকা চাইছেন?
কিছু না বলে মহিলা চলে গেল।
এই মহিলাকে সেরকম প্রগলভ মনে হল না।আরণ্যক দোকান বন্ধ করে বাজারের ভেতর স্নানে গেল।
একটু আগে সুপমা ফোন করে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানালো।জানতে চাইল কবে কলেজ খুলবে।সুপমা মা হতে চলেছে এইজন্য দিদাকে প্রণাম কোরতে আসতে পারেনি।গাড়ী নিয়ে একদিন ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিল।সুপমার কথাবার্তা শুনে মনে হল সংসারে বেশ মানিয়ে নিয়েছে।মেয়েরা মানিয়ে নেওয়ার সহজাত ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়।
ইলিনা ব্রাউন শাড়ী পরতে থাকে।বাস রাস্তায় একটা বিরিয়ানির দোকান দেখেছে।দরজা বন্ধ করে বেরিয়ে পড়ল।
দোকানের সামনে বিশাল পেতলের হাড়ি।মিস ব্রাউন কাছে যেতে বলল,বলিয়ে ম্যাডাম কেয়া চাইয়ে?
তাকে দেখলে সবাই হিন্দি বলে্।মিস ব্রাউন বলল,বিরিয়ানি হবে?
চিকেন একশো বিশ মাটোন একশে পচাশ।
একটা চিকেন বিরিয়ানি দেবেন।
মিস ব্রাউনের চোখ কি দেখে কুচকে যায়।আর্ণক মনে হচ্ছে?তাকে দেখে লজ্জা পেতে পারে সেজন্য মিস ব্রাউন অন্য দিকে তাকাল।
ম্যাডাম ভালো আছেন?
ও তুমি?তুমি এখানে কোথায়?
এইতো এখন দোকান বন্ধ করে খেতে এলাম। সকালে সন্ধ্যয় দোকানে বসতে হয় দুপুরে ছাড়া--।
আমি বলেছি এখন কলেজ ছুটি।এনি টাইম ইউ মে কাম।
দুপুরে গেলে আপনার ঘুমের ডিস্টার্ব হবে তাই।
আমি রাতে ছাড়া ঘুমাই না।
ঠিক আছে কাল যাব।