Thread Rating:
  • 46 Vote(s) - 3.2 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery আগুণের পরশমণি;কামদেব
  চতুর্বিংশতি পরিচ্ছেদ




কাল রাত করে ঘুমিয়েছে তাই উঠতে একটু দেরী হয়ে গেল।অনিকা এককাপ চা নিয়ে মেমসাবের ঘরে গেল।একী ঘরে তো কেউ ণেই।তাহলে কি বাথরুমে গেছে?বাথরুমের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ।অনিকার কপালে ভাজ পড়ে।চায়ের কাপ নামিয়ে রাখে।নার্সিং হোমে চলে গেল নাতো?অনিকার মনে উষ্মা একবার বলে যাবেনা?এইজন্য ঠিক করেছে এখানে আর থাকবে না।মালকিনকে সঙ্গে করে নিয়ে যাবে কিনা মামন স্পষ্ট করে কিছু না বললেও তাকে নিয়ে যাবে বলেছে।মেমসাব কখন ফিরবে কে জানে।রান্না একটু পরে করলেও হবে।মালকিন ণেই সারা বাড়ী একেবারে ফাকা মনে হয়।
একটু নিরিবিলি হলে মেয়েটার কথা মনে পড়ে।ইতার সঙ্গে দেখা হয়নি কতকাকলেজল।এবার ফিরে নেপালে ইতার কাছে কদিন থাকবে।পুরানো কথা মনে পড়ে।সাদি নিয়ে ইতার বহুৎ ডর ছিল।আনজান লেড়কা কি করবে। সবারই থাকে,এখন আর সে ভয় ণেই।খুব সুখী হয়েছে ফোনে কথা বললে বোঝা যায়। মেমসাবের সাদি নিয়ে কোনো দিলচস্তি ণেই দুসরে কিসিম কে আউরত।পায়চারি কোরতে কোরতে বারান্দায় এসে চমকে উঠল।একী মেমসাব পুরা রাত এখানে ছিল?নীচু হয়ে ডাকল,মেমসাব।
চমকে চোখ মেলে তাকাল ইলিনা।
আমি চা নিয়ে সারা বাড়ী ঘুরছি।
চা হয়ে গেছে?দাও।
অনিকা চা আনতে গেল।মোবাইলে কয়েকটা মিস কল দেখে ভাবে কল ব্যাক করবে?আবার ভাবে আননোন নম্বর কি দরকার।মেয়েদের ফোনে এরকম আসে।অনিকার হাত থেকে কাপ নিয়ে চুমুক দিল।মাম্মীর জীবনটা বেশ ট্র্যজিক আজ অনুভব করছে।চা শেষ করে ইলিনা তোয়ালে নিয়ে বাথরুমে ঢুকে গেল।বলল,
মাম্মীর সঙ্গে ব্যবহারের ধরণটা বদলাতে হবে।আজই ডিসচার্জ করবে মনে হয়না।না করলে ভাল, ওখানে থাকলে নেশা করতে পারবে না।
অনিকার রান্না প্রায় শেষ।মেমসাব খেয়ে দেয়ে বেরোতে পারবে।ভাত একটু বেশীই করেছে মামনদিদি যদি খায়। 
ইলিনা বাথরুম হতে বেরোতে জিজ্ঞেস করল,মেমসাব খেতে দিই?
খেতে ব্রাউনের  দেবে?কয়েক মুহূর্ত ভেবে ইলিনা বলল,আচ্ছা দাও,অল্প করে ভাত দেবে।
পোশাক বদলে খেতে বসল ইলিনা।একজন নারীর সংসার বাধার স্বপ্ন ভেঙ্গে যাওয়া কত বেদনার নিজের সংসার না থাকলেও ইলিনা বুঝতে পারে।বিশেষ করে যার সংসারই একমাত্র অবলম্বন।মাম্মী অবশ্য আগে কিছুকাল চা বাগানে কাজ করেছে।মাম্মীর দিকটা ভেবে দেখেনি নেশা করত বলে বকাবকি করেছে।এখন অনুভব করছে এই নেশা ছিল মাম্মীর যন্ত্রণাময় জীবনে  কিছুটা প্রলেপ।
ইলিনা বেরিয়ে যেতে স্বস্তির শ্বাস ফেলে অনিকা।নিজের জামাকাপড় গোছাতে শুরু করল।মালকিনকে যদি আজ না ছাড়ে?মামনদিদি যা বলবে তাই করবে নিজের জিনিস পত্র গুছিয়ে রাখতে দোষ কি?মেমসাব তার সঙ্গে কখনো খারাপ ব্যবহার করেনি ঠিক তবু এখানে থাকতে হাপিয়ে উঠেছে।একজন সারাক্ষণ নেশায় ডুবে আরেকজন সারাদিন কলেজ বাসায় ফিরে বইয়ে মুখ গুজে কথা বলার একজন লোক ণেই কারও ভাল লাগে।পিতলের বুদ্ধমূর্তিটা হাতে নিয়ে একটু ভাবে তারপর ব্যাগে ভরে নিল।সব গোছগাছ করে অনিকা স্নানে ঢুকে গেল।
অটোর ভাড়া মিটিয়ে ইলিনা নার্সিং হোমে ঢুকতে আগের দিনের নার্সের সঙ্গে দেখা।
এত দেরী করলেন?
নার্সের প্রশ্নে অবাক হয়ে চোখ তুলে তাকাতে নার্স বলল,আপনাকে খবর দেয়নি?
মাম্মী কি ণেই?
সারাদিন ভালই ছিলেন মাঝরাত হতে অবনতি শুরু অক্সিজেন নিতে পারছেন না সিনিয়ার ডাক্তার কেউ নার্সিং হোমে নেই।রাত দু-টো বেজে চল্লিশ নাগাদ হবে...।চলতে চলতে নার্স বলতে থাকে।মাম্মীর কেবিনে ঢুকে দেখল আপাদ মস্তক সাদা কাপড়ে ঢাকা।নার্স মুখের কাপড় সরাতে দেখল যেন নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে মাম্মী।যন্ত্রণাময় জীবনের অবসান।আর এক বিন্দু পানীয় এই শরীরে ঢুকবে না।ইলিনা আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনা আচলে চোখ চেপে বাইরে বেরিয়ে একটা বেঞ্চে বসে কান্নায় ডুকরে উঠল।
সারাদিনে কটা কথাই বা হতো তবু নিজেকে কেমন একা বোধ হয়।সারা দুনিয়ায় তন্ন তন্ন করে খুজলেও মাম্মীকে আর পাওয়া যাবে না।বড় অদ্ভুত এই জীবন।হাতের স্পর্শে পাশ ফিরে দেখল সেই নার্স মহিলা।
ম্যাডাম  কি বডি বাড়ী নিয়ে যাবেন?
বাড়ীতে নিয়ে কি করবে ইলিনা বলল,না সোজাখ বার্নিং ঘাটে যাব।
গাড়ী মানে শব বহনের গাড়ী বলতে হবে?
হ্যা-হ্যা তাহলে খুব ভালই হয়।
ফুল দিয়ে সাজিয়ে আনতে বলব?
অবশ্যই।
ঠিক আছে আপনি ক্যাশ কাউণ্টারে কাজ মিটিয়ে ফেলুন আমি এদিকটা দেখছি।নার্স চলে গেল।    
ইলিনা ব্রাউন নিজেকে সামলে নিয়েছে উঠে ক্যাশ কাউণ্টারে গেল।কোনো টাকা আর লাগেনি বরং কিছু টাকা ফেরৎ দিয়েছে।ইলিনা ব্রাউন ফিরে এসে বেঞ্চে বসে অপেক্ষা করতে থাকে।খবরটা কয়েকজনকে দেওয়ার ছিল কিন্তু কারো হদিশ তার জানা নেই।ড্যাড বোস্টনে থাকে এই অবধি শুনেছ কিন্তু তার কোনো কনট্যাক্ট নম্বর জানা নেই। করিডোরে একজনকে দেখে চমকে উঠল।এ কাকে দেখছে!ঠিক দেখছে ত নিজের চোখকে নিজেই বিশ্বাস কোরতে পারেনা।ইলিনা উঠে এগিয়ে গিয়ে মহিলার সামনে গিয়ে বলল,মম তুমি খবর পেয়েছো? শ্তিমশানম্রো আমা কো হুনুহন্ছ?ম মামন রাই কসৈকো আমা হোইন। ভদ্রমহিলা কঠিন গলায় বলে এগিয়ে যেতে থাকে।
মম কি আমাকে চিনতে পারেনি,নাকি মাতৃত্ব অস্বীকার  কোরতে চাইছে?এখানকার খবর মম জানলই বা কিভাবে?
শববাহনের গাড়ী আসতে ধরাধরি করে মৃতদেহ গাড়ীতে তুলে দেওয়া হল।তাকে ছাড়াই সব কিছু হচ্ছে।একসময় একটি লোককে নিয়ে সেই নার্স মহিলা এল।লোকটি গাড়ীর ড্রাইভার।ইলিনা ব্রাউন তাকে টাকা বুঝিয়ে দিল। মামন এসে বলল,নিশী লাই কিন ছোডের গয়ো?তিমীলাই কসৈলে বিহে গর্দেন। 
তারপর গাড়ী নিয়ে শ্মশানের উদ্দেশ্যে রওনা দিল।পাব্লিক প্লেসে অপ্রীতিকর অবস্থা এড়াতে ইলিনা বাধা দেয়না।অবশ্য সাওনি ব্রাউন ওর জন্মদাত্রী মা।ইলিনা আলাদা অটোয় শ্মশানের পথ ধরল।
একটু আগে নিশীথের কথা,কেন তাকে ছেড়ে এসেছি বলল তার মানে অনেক খবরই জানে।এবার সব জলের মত পরিষ্কার অনিকাই দিনের পর দিন এখানকার সব খবর পৌছে দিয়েছে।অথচ কেমন নিরীহভাব করে থাকত।
সাওনি ব্রাউনের মুখাগ্নি করে মৃতদেহ ঢুকিয়ে দেওয়া হল তার উপস্থিতিকে উপেক্ষা করে।সন্ধ্যে হবার আগেই ওরা বাড়ী ফিরে এল।নার্সিং হোমে যাবার আগে এখানে এসেছিল লগেজ দেখে বুঝতে পারে।ফ্লাটে এসে মাল পত্তর গোছাতে থাকে।মনে হচ্ছে এখনই চলে যাবে।ইলিনা আর চুপ করে থাকতে পারে না বলল,শ্রাদ্ধ অবধি থেকে যাও।
পুজা গর্ণে তিমি কো হৌ?ফোস করে উঠল।
তুমিই করবে আমি কেন করব?
মাটগাড়া গয়ের আমাকো পুজা গরছু।
কোনো বাধা শুনবে না।ইলিনার ক্লান্ত বোধ হয়।সকাল থেকে অনেক ধকল গেছে।একটু বিশ্রাম দরকার।অনিকা এসে বলল,মেমসাব আমিও আসছি।
ওরা চলে যেতে দরজা বন্ধ করে ইলিনা শুয়ে পড়ল।  
Like Reply


Messages In This Thread
RE: আগুণের পরশমণি;কামদেব - by kumdev - 22-07-2024, 01:41 AM



Users browsing this thread: 47 Guest(s)