14-07-2024, 09:17 AM
(This post was last modified: 15-07-2024, 04:01 AM by মাগিখোর. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
মায়ের জবানীতে
আমার বিয়ের পরে শ্বশুর বাড়িতে যখন এলাম তখন পঞ্চদশী কিশোরী। তোদের বাবা ছিলো চার ভাইয়ের মধ্যে ছোট। বড় আর মেজ জ্যাঠা দুজনে কোলকাতায় চাকরি করতো। তোদের বাবা তখনও পড়ছে। একটা বাসা ভাড়া করে তিন ভাই কলকাতায় থাকতো। হপ্তা বাবু, শনিবার বাড়ি আসতো আবার, সোমবার ভোর বেলায় বেরিয়ে যেত। বাড়িতে আমরা চার বৌ, আমাদের শ্বশুর শাশুড়ি মানে তোদের দাদু ঠাকুমা, সেজ জ্যাঠা আর তিন জন মুনিষ (মানে চাষের ক্ষেতে কাজ করার লোক) আর তাদের পরিবার। রোজ চারবেলা, প্রায় কুড়ি জনের রান্না হতো। তোদের বাবা জ্যাঠারা এলে জনা পঁচিশ। তারপরেও আউতি-যাউতি লেগেই ছিলো।
ভরা সংসার, চাষের জমি থেকে ভালোই রোজগার ছিলো। সে জন্যই ছোট দুই ছেলের পড়তে পড়তেই বিয়ে দিয়েছিলেন তোদের দাদু। সেজ ভাসুরের চাকরি করার ইচ্ছে ছিলো না। সেই জন্যে চাষের কাজ দেখাশোনা করতেন। অবশ্য, আরও একটা কারণ ছিলো, পরে বলবো।
অষ্টমঙ্গলা করে ফেরার দুদিন পরেই তোদের বাবা কোলকাতায় চলে গেল। যাবার আগে আমাকে বলে গেল যে, আমি যেন কান্নাকাটি না করি। মা-বাবা মানে শ্বশুর শাশুড়ির কথা শুনে চলি। কোন কিছু বুঝতে না পারলে, তোদের বড় জেঠির কাছে বুঝে নিই। তোদের বড় জেঠি আমার চেয়ে প্রায় দশ বছরের বড়। বয়স তখন পঁচিশ হবে।
সেদিন দুপুরবেলা আমরা মেয়েরা মানে শাশুড়ি মা আর আমরা চার বৌ খেতে বসেছি; আমার বড়জা বলে উঠলো,
- - মা, দেরী করে কি হবে? ছোটোর কটি শোধন আজকেই হয়ে যাক।
- - কেন? তোমার শ্বশুরের কি তর সইছেনা নাকি?
- - শুধু বাবা কেন, ছেলেরাও উদগ্রীব। নতুন ফুলের মধু সবাই খেতে চায়। ছোটো যেদিন অষ্টমঙ্গলা থেকে ফিরলো, সেদিন দুপুরেই খেতে খেতে বায়না করছিলেন বাবা। আমি অনেক করে বুঝিয়ে চুপ করিয়েছিলাম। বলেছিলাম যে, ছোটঠাকুরপো থাকলে একবেলাই পাবেন। ছেলেরা কোলকাতায় চলে যাক, তারপর নেবেন। তাহলে প্রথম কদিন দুবেলাই পাবেন। — হাসতে হাসতে আমার বড়জা বলে উঠলো,
- - ছোটো বৌ এখনো তো ছেলেমানুষ, ও কি পারবে? — শাশুড়ির দ্বিধান্বিত গলা,
- - হ্যাঁ হ্যাঁ পারবে। মেয়েমানুষ তো! সব পারবে। আপনি না হয় পাশে থাকবেন।
- - আমি পারবো না বাপু! ও তোমার ষাঁড়, তুমিই সামলাও।
- - খেয়ে নে। হাঁ করে কথা গিললে পেট ভরবে না। — বলেই, হাতা দিয়ে আরেক টুকরো মাছ আমার পাতে তুলে দিয়ে বললো,
- - গায়ে জোর কর। কুস্তি করতে হবে তো।
- - কটি শোধন যখন করতেই হবে, শুভস্য শীঘ্রম। আজকেই নিয়ে যাও। মিনসের যখন আর তর সইছে না। — বলে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
- - তোমার শ্বশুরের সেবা এতদিন বড় বৌমাই করে এসেছে। মাঝেমধ্যে মুখ বদলাবার জন্যে অন্যরাও যায়। এখন নতুন ফুলের মধু খাওয়ার ইচ্ছে হয়েছে। কদিন শ্বশুরের সেবা করো। অবশ্য, তোমার বড়জা সঙ্গে থাকবে। — বাকিদের উদ্দেশ্যে বললেন, "তোমরা ছোটো বৌকে একটু সাজিয়ে গুছিয়ে দিও। যাতে, মিনসের চোখে ধরে; মনে ধরে কিনা পরে বোঝা যাবে।"
✪✪✪✪✪✪✪✪✪✪