03-07-2024, 12:10 PM
Update :12(A)
শুক্রবার; নিথর ভাবে পরে রয়েছে সম্পূর্ণ বাড়িটা, ঘড়ির কাঁটা টিক টিক করে প্রায় ন'টার দিকে এগোচ্ছে কিন্তু এ বাড়ির ঘুম আর ভুল করেও ভাঙছে না;এরা যেন ভুলে গেছে প্রাত্যহিক জীবনের নিয়ম কানুন,ভুলে গেছে পেটের খিদে, আছে শুধু দুচোখ জুড়ে ঘুম।
ঘুম ভাঙার মধ্যে একমাত্র ভেঙেছে বিনোদবুড়োর,তবুও আজ দেরি করে ফেলেছে সে।সারারাত তারও খুব একটা ঘুম হয়নি,হবেই বা কি করে দু-দুবার পাকা ঘুম ছুটে গিয়েছিল বউমার সেই বিকট চিৎকারে,কারণ জানতে চাওয়াটাই তার আরও সবচেয়ে বড়ো অপরাধ,সে কি তীক্ষ্ণ কর্কশ কন্ঠে বউমার মৃত্যুকামনামূলক জবাব, যা সারারাত বিনোদকে ঘুমতে দেয়নি,কেন তার কন্যাসম বউমা তার সাথে এমন করল এ জবাব সারারাত ভেবেও খুঁজে পায়নি বিনোদ।শেষে গর্তে যাওয়া ফ্যাকাসে দুচোখ অশ্রুতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল,এরপর কখন যে ঘুমিয়ে পরেছে বলতে পারবে না।
ঘুম থেকে উঠেই ভাবল অমরের খোঁজ নিই একবার কেমন আছে ছেলেটা,দরজায় টোকা দিবে দিবে করেও কি ভেবে সরিয়ে নিল হাত দু-দুবার।রাতে এত করে দরজা ধাক্কানোর পরেও বউমা কেন যে দরজা খুলেনি তা এখনো বুজতে পারছে না সে।তাই সাহস কুললো না দরজায় টোকা দেয়-আবার যদি বউমার মুখ থেকে মৃত্যুকামনা শুনতে হয় সক্কাল সক্কাল!শুধু দু-তিনবার জোরে জোরে গলা খেকারি দিল অ্যালার্ম ঘড়ির মতো;তবুও যদি ঘুম ভাঙে এই আশায়।গলা খেকারি দিয়েই বেরিয়ে গেল লাঠির সাহায্যে ঠক ঠক করে রাস্তার দিকে।
শ্বশুর চলে যাবার কিছুক্ষণ পরেই ঊষা উঠেছে, ব্যথাজড়ানো ভারী শরীরটা কোনমতে টেনে টেনে কলতলায় এসে দাঁড়িয়েছে,দুমড়ে-মুচড়ে গেছে যেন শরীরটা।অবশ হাত বাড়িয়ে কলের হাতল চেপে দু-আচলা জল ছিটিয়ে দিলো সারা মুখে,সঙ্গে সঙ্গে ব্যথাজড়ানো চাঁপা 'ইসসস' বেরিয়ে এলো মুখ থেকে।বাঁ-চোখের নিচে ভীষণ ভীষণ জ্বালা করছে, নাকের নিচটাও। নিচের ঠোঁটে এক আঙ্গুলের স্পর্শে বুঝতে পারল ফেঁটে গেছে কিছুটা।রাতের সেই এলোপাথারি চড় ঘুষিই এর কারণ, কি নির্দয় ভাবে তাকে চড়-ঘুষি গুলো মেরেছে। রাগে ঘৃনায় ঊষার মুখ থেকে বেরিয়ে এলো -'বেজন্মা একটা..।'
টায় টায় নেমে এলো ঊষা কলের পাড় থেকে,রান্না ঘরের দিকে যাচ্ছে ঝাড়ু এনে উঠোন ঝাড় দিতে হবে। এর মধ্যে নজরে পড়ল শ্বশুর টুক টুক করে বাড়ির দিকেই আসছে- শ্বশুরকে দেখে লজ্জায় লাল হয়ে উঠল ঊষার সারা মুখ।লজ্জা ঢাকা দেবার জন্য ঘোমটা নাক অবধি টেনে নিল।কি করে শ্বশুরকে মুখ দেখাবে? কত করে কত জোড়ে কত অনুরোধ করা সত্বেও ঊষা দরজা খুলেনি রাতে, দরজা খোলার পরিবর্তে মুখে যা এসেছে তাই বলেছে বাবার মতো আগলে রাখা কানা খুড়ো বড় অসহায় এক বুড়োকে।খুলতই বা কি করে দরজা?তার বউমাকে যে খুবলে খাচ্ছিল এক নরপিশাচ,হয়ত তার সামনেই তার বউমাকে একটু একটু করে রসিয়ে রসিয়ে খেত, বিশ্বাস নেই ওই অধমকে দিয়ে যে এক মাকে বাধ্য করে ছেলের লিঙ্গ নিজের মধ্যে প্রবেশ করাতে তাকে দিয়ে আর বিশ্বাস! ঊষা ভাবল ভালোই করেছি শ্বশুরকে ব্যথা দিয়ে কষ্ট দিয়ে।দরজা না খুলে যে বেদনা দিয়েছি দরজা খুললে হয়ত তার শতগুণ বেশি বেদনা পেত।
বিনোদ পাশ কাটিয়ে সোজা কল পাড়ের দিকে গেল, একদম চুপ,সাধারণত এর আগে এমন হয়নি কোনদিন,কিছু না কিছু একটা কথা বলেই, বউমাকে যে সে খুব খুব ভালোবাসে, স্নেহ করে।
ঊষা ভেবেছিল কিছু একটা ভালো মন্দ জিজ্ঞেস করবেই, বিশেষ করে রাতের দরজা না খোলা প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করবেই তার শ্বশুর,এর জন্যই ঊষা আরও চুপসে গেছে, কি উত্তর দিবে? উত্তর নয় যে কোন একটা অজুহাত খুঁজছিল মনে মনে কিন্তু শ্বশুর যখন কিছুই জিজ্ঞেস করল না, শ্বশুর তাকে পাশ কাটিয়ে চলে গেল, ঊষার মনে হলো নীরবে সপাট করে একটা চাবুক কষিয়ে দিয়ে গেল অন্তরে।এর চেয়ে সামনে দাঁড়িয়ে কড়াভাবে বোকাঝোকা দিতো, দরকার পরলে বাড়ি থেকে বের করে দিতো তবু হয়ত এতটা কষ্ট হতো না।শ্বশুরের নীরবতায় অন্তর ফেটে যাচ্ছে, হাহাকার করে উঠছে বুকের মধ্যে , এই দুঃখ এই কষ্ট সে রাখবে কোথায়?
নাহ, কষ্ট জমিয়ে রাখার মতো ভান্ডার মানুষের মনে না থাকাই ভালো,কষ্ট জমিয়ে না রেখে বরং বের করে দিতে হয় কখনো হাসির মধ্য দিয়ে কখনো কান্নার মধ্য দিয়ে। ঊষা কান্নার মধ্য দিয়েই ঘোমটার তলে টপটপ করে কষ্টগুলো বের করে দিতে লাগল নীরবে।
উঠোন ঝাড় দেওয়া শেষ, তাড়াতাড়ি থালাবাসন গুলো ধুয়ে পরিস্কার করে ঘরে ছুটল চাল আনতে,ভাত বসাতে হবে তাড়াতাড়ি। অসুস্থ ছেলে, এতটা বেলা করা উচিত হয়নি তার,রাতে শুধু দুমুঠো ভাত-জল চেটকিয়ে ছেলেকে খাইয়েছে,নিজে তো সারারাত উপোস করেই কাটালো, তারপর সেই কি ধকল সারারাত ভাবতেই কাঁটা দিয়ে উঠল সারা শরীর।উহহহহ ব্যথায় শেষ হয়ে যাচ্ছে দেহটা।
ঘরে গিয়ে দেখল অমর এখনো উপুর হয়ে পরে পরে ঘুমচ্ছে,ভাবল ডাক দিই অনেক বেলা হলো, আবার ভাবল থাক, যত মুখ লুকিয়ে চলা যায়।রাতে যে কাজ সে মা হয়ে করেছে কোনো মা বোধয় আজ পর্যন্ত করেনি, তাকে জোর করেই হয়ত করানো হয়েছে কিন্তু চাইলেই কি প্রতিরোধ করা সম্ভব ছিল না?এতটাই কি কঠিন ছিল?ভাগ্য ভালো ছেলে জ্বরের ঘোরে ছিল, নয়ত.........তারপর সকাল বেলা শ্বশুরের ঘ্যাড়ঘ্যাড়ানি গলার শব্দে যখন নিজেকে আবিষ্কার করল-- একদম উলঙ্গ সে, ছেলের শার্টটা কোনমতে বুকে ছিল, তবুও বুক খোলা, নিচটা সম্পূর্ণ খোলা।ধচমচিয়ে চৌকি থেকে নেমে নিজেকে ঢেকেছিল শাড়ি ব্লাউজ দিয়ে।
ঊষা ছেলের মুখের দিকে তাকিয়েই দুহাত জোড় করে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানালো ছেলের নজর থেকে তাকে বাঁচিয়েছেন বলে।মেপে মেপে কেজিখানেক চাল নিয়ে ছুটে বেরল ঘর থেকে।আলু সেদ্ধ ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই এখন, অনেকবেলা হয়েছে, রোদও উঠেছে বেমানান, আজ পুড়িয়েই ছাড়বে সব কিছু বোধয়।এদিকে পেটও জ্বলছে সমানে।
এদিকে ঘরে মা আসছে আভাস পেয়েই অমর দম বন্ধ করে উপুর হয়ে পরেছিল। মা বেরিয়ে যেতেই আগের মতো চিত হয়ে আকাশ-পাতাল ভাবতে লাগল। কি করে বাইরে বেরনো যায়, কি করেই বা মায়ের মুখোমুখি দাঁড়াবে সে? এক ছেলে হয়ে মায়ের পবিত্রস্থানকে অপবিত্র করেছে,নরকেও হয়ত জায়গা হবে না তার,এ পাপ কোথায় গেলে ধুয়ে মুছে যাবে?গঙ্গায়? নাহ এপাপের কোন প্রায়শ্চিত্ত নেই, গঙ্গাও হয়ত এ পাপ বহন করতে পারবে না। সারাজীবন তাকেই এপাপ বয়ে চলতে হবে মনের মাঝে।
অনেক সকালে অমরের ঘুম ভেঙেছে, প্রস্রাবে পেট ফুলে উঠেছিল, বাইরে যাই যাই করেও যেতে পারেনি।ঘুম ভেঙেই নজর পরেছিল তার পাশেই পরে থাকা তার উলঙ্গ মায়ের দেহে,তারই শার্ট মায়ের গায়ে,মায়ের বুক দুটো নিশ্বাসের ছন্দে ছন্দে ওঠা-নামা করছে,নিচে তাকিয়ে দেখে উন্মুক্ত মায়ের পবিত্রস্থানে তারই ফেলা বীর্য চটচটে হয়ে চিকচিক করেছে।মুখ ঘুড়িয়ে নিয়েছিল অমর, এদৃশ্য দেখা যায় না।তাই প্রস্রাব পেট ফেটে বেরিয়ে গেলেও সে বাইরে বেরতে পারল না।ঘুনাক্ষরেও মাকে জানান দিতে চায়নি সে জেগে আছে। শেষে ঠাকুরদার গলার স্বর পেয়ে মা যখন ধচমচিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেল, তখন অমর স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল কিন্তু বাইরে যাওয়াটা সমীচীন নয় ভেবেই পরে আছে এতক্ষণ, সে জানে তার মা তাকে নিজে এসেই ডাকবে ততক্ষণ তাকে কষ্টভোগ করতেই হবে।
প্রায় ঘন্টা খানেক পর ঊষা রান্নাবান্না শেষ করে ছেলেকে ডাকতে এলো,দ্বিধা হচ্ছিল ছেলেকে ডাকতে কিন্তু উপায়ও নেই-- 'অমর ও অমর উঠেক বাবা, চল খাইয়া নে...।'মায়ের ডাকে অমর এমন ভাবে আড়মোড়া ভাঙল যেন এই মাত্র ঘুমের দেশ থেকে ফিরে এলো।দুচোখ টান টান করে খুলে ভাঙা সুরে বলল- ' কয়ডা বাজে মা?'
-কয়ডা বাইজব! দুপুর হইয়া গেচে,নে উঠেক বাবা তাড়াতাড়ি বাইরা যাইয়া হাতমুখ ধুইয়া আয়,আমি ভাত বাড়ি।'
-'তুমি যাও আমি আসতেচি।'
ঊষা বাইরে বেরিয়ে গেলো। অমর আরও কিছুক্ষণ পরে থেকে উঠে পরল- ম্যাচম্যাচ করছে শরীর, পেটে গড়গড় আওয়াজ হচ্ছে খিদে পেয়ে,প্রস্রাবের জ্বালায় বাড়া টাটাচ্ছে, আর পরে থেকে লাভ নেই,যা অভিনয় করার ছিল মোটামুটি ভালোই করেছে। মা হয়ত বুঝতে পারেনি রাত থেকে শুরু করে এখন অবধি।
বিনোদ খেতে বসেছে, মুখ একদম গুমরো করে ভাতের দলা মুখে তুলছে,ঊষাই প্রথম কথা বলেছিল লজ্জা শরম রাগ অভিমান ভুলে -এরম মানুষের ওপর রাগ অভিমান করে থাকা চলে? না চলে না, তাই রান্না শেষ করেই শ্বশুরকে বলেছিল - 'বাবা ভাত বারচি আসেন।' বিনোদ প্রথমে এক ইতস্তত করলেও পেটের জ্বালায় টায় টায় এসে বসেছে কিন্তু একটা কথাও বলেনি।ঊষা মনে কষ্ট পেলেও তার ডাকে সাড়া দিয়ে যে খেতে এসেছে তাতেই সে খুশি।
ঊষা ছেলের জন্যও ভাত বাড়ছে।সাথে নিজের জন্যও একটা থালা এগিয়ে নিল, অমর হাত-মুখ ধুয়ে এলে দুজনেই এক সাথে খাবে,বিনোদের প্রায় শেষ, সিদ্ধ দিয়ে ভাত খেতে আর কত সময় লাগে? নিজের জন্য থালা এগিয়ে নিয়েছে এক হাতা ভাত সবে বাড়বে তাতেই হাত কেন জানি না থেমে গেল,চিনচিন করে উঠল বুক,ঘরে যে আরেকজন অনাহারে পরে আছে। ঘৃনাও হচ্ছে রাগও হচ্ছে আবার বুকও চিনচিন করছে,একবার ভাবছে মরুক না খেয়ে অমন পাপীর মরণই ভালো, আবার ভাবছে কাউকে খিদের জ্বালা দেওয়াটা কি ঠিক? খিদে তো তারও লেগেছে, হোক পাপিষ্ঠ-বেজন্মা -নরপিশাচ তবুও তার খিদে পায়।গতকাল সারাদিন প্রায় না খেয়ে ছিল,রাতেও দুমুঠো ভাত দিয়েছিল ঊষা তাও বরাতে জুটেনি হাঙ্গামায়, ঊষার ছেলের জন্য সেই চিৎকারে উঠে এসেছিল ভাতের থালা ফেলে।
ঊষা আর বসে থাকতে পারল না ভাতের থালা উদলা রেখেই দ্রুত গতিতে চলল ঘরের দিকে।
অমর খেতে বসেছে, বাইরের দিকে নজর পরতেই দেখল মায়ের পেছন পেছন পাপিষ্ঠটা উঠে এসেছে।তার মা কোন কথা না বলেই চুপ করে এসে দুই থালায় ভাত বাড়তে লাগল। অমর ভালো করে লক্ষ্য করে দেখল - মায়ের সারা মুখ ফুলে উঠেছে,চোখের নিচটা নীলচে হয়ে আছে, নাকটা লাল হয়ে ফুলে আছে, মনে পরে গেল রাতে কি ভাবে ওই জানোয়ারটা তার মাকে মেরেছিল।গা জ্বলছে অমরের, বিশেষ করে এখন ওই শয়তানটার সাথে বসে তাকে খেতে হবে ভাবতেই জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে ভেতরটা।কি দরকার ছিল পিচাশটাকে ডাকার?যে তাকে এত শাস্তি দিল জুলুম করল তাকেই সেধে খাওয়াচ্ছে! শয়তানটা মাকে দন্ড দিচ্ছে?না মা নিজে দন্ড নিচ্ছে?
গুরুদেব ধীরে ধীরে এসে বসল, প্রায় অমরের পাশের পিড়িতেই,গায়ে গায়ে যেন ঘষা লাগবে,অমর নিজের পিড়ি কিছুটা দূরে সরিয়ে নিল সাথে সাথে। তিনজনই চুপ।ঊষা গুরুদেবের থালা গুরুদেবের সামনে বাড়িয়ে দিয়েই দ্বন্দ্বে পরে গেল, এখন? প্রণাম যে করতে হবে,কিন্তু কোন ইচ্ছেই নেই বেজন্মাটাকে আর ভক্তি-শ্রদ্ধা করার।যে এক মেয়ের মতো শিষ্যাকে মাগিদের মতো নির্দয় ভাবে চুদে তাকে প্রণাম করবে কি ভাবে? এদিকে প্রণাম না করলে ছেলে কি ভাববে? এর আগে যতবার গুরুদেবের সেবা দিয়েছে ভক্তি ভরে উপুর হয়ে প্রণাম করেছে, ছেলে নিজেও দেখেছে,গতকাল মনের অনিচ্ছা সত্ত্বেও শ্বশুরের সামনে গুরুদেবের সামনে মাথা নুইয়ে ভক্তি করতেই হয়েছে।ছেলের সামনে একদম স্বাভাবিক আচরণ করতেই হবে ভেবে - নিচু হয়ে দুহাঁটু ভাঁজ করে প্রণাম করে থালা এগিয়ে দিল গুরুদেবের সেবার জন্য।প্রণাম করে যেই উঠতে যাবে ব্যথায় 'উহহহ' করে উঠল ঊষা। পাছায় ভীষণ ভীষণ লাগছে, হাটু দুটোতেও মারাত্মক ব্যথা।সকালে পায়খানা করতে গিয়ে পরেছিল সবচেয়ে বেশি অসুবিধায়, পাছার ফুটোতে যেন চির ধরেছে ,শক্ত শক্ত নাদা যখন সেই চিরা ফুটো ভেদ করে বেরিয়ে আসছিল চিৎকার করে উঠেছিল ঊষা।ভাগ্য ভালো আশে পাশে কেউ ছিল না,ব্যথা হওয়ারই কথা জীবনে প্রথম কেউ ওপথে প্রবেশ করেছে, তার সাথে সেই ব্যাটারি ওফফ, সে কি অসহ্য বেদনা।
ছেলে ও গুরুদেব দুজনেই তার দিকে তাকিয়ে আছে দেখে লজ্জায় মাথা একদম নিচু করে ফেলল।অমরের প্রায় অর্ধেক খাওয়া হয়েছে,হঠাৎ থালে জল ঢেলে উঠে পরল খাওয়া বাদ দিয়ে,তার খাওয়া শেষ, মায়ের ব্যথার কারণ সে অল্প অল্প আঁচ করতে পেরেছে, এখানে আর বসে থাকা ঠিক নয়।কিন্তু ছেলের উঠে পরা দেখে ঊষা হতবাক হয়ে গেল--' কি রে ভাতে জল ঢাইলা দিলি যে?'
-আর খিদা নাই...। ' বলেই অমর বাইরে বেরিয়ে গেল।গুরুদেব এবং ঊষা দুজনেই সেদিকে তাকিয়ে রইল।
ঘড়ির কাঁটায় প্রায় আড়াইটা,মাটিতে পা ফেলা দায় এতটা রোদ এতটা গরম। যার যার মতো ঘরে পরে আছে একমাত্র ঊষা বাদে,ঊষার সে কপাল নেই,এত দুর্যোগ তার উপর দিয়ে যাচ্ছে তবু্ও তার বিরাম নেই, এ দুঃখ বলার মতো কোন মানুষও নেই তার জীবনে। দুঃখকে সঙ্গী করেই তার জীবন চলে।এই রোদে পুড়ে পুড়েই কিছু শুকনো ডালপালা কাটছে দা দিয়ে বসে বসে।সেই যে ছেলে ভাতের থালায় জল ঢেলে ঘরে গেছে আর বাইরে বেরিয়নি।গুরুদেব খাওয়া দাওয়া করে রাস্তায় বেরিয়েছিল, এখন নিজের রুমে পরে কি করছে কে জানে,কি করছে করুক জানার দরকার নেই,খেতে দিতে হয় দিয়েছে এর বেশি আর কোন খোঁজ রেখে লাভ নেই।শ্বশুর সেই খাওয়া দাওয়া করে এদিক ওদিক কি যেন করল একটু, তারপর হুকো টানছে আর পরে আছে কুমিরের মতো। এদিকে একা ঊষার নাজেহাল অবস্থা। গরুদুটো এত বেলায় সে ওই রাস্তার ধারে গাছের ছায়ায় বেঁধে এলো, এখন রান্নার কাঠ-খড় জোগাতে হচ্ছে, সব দায় কি তার একারই?
ঘামে স্নান করে গেছে,গাল বেয়ে ঘাম বুকে টপ টপ করে পরছে, ব্লাউজ শায়া সব ভিজে একাকার এভাবে আর বেশিক্ষণ থাকা সম্ভব নয়।জ্বালা ধরে গেছে শরীরে, ঊষা দ্রুত গতিতে দা চালাতে লাগল, যত তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করা যায়,তত তাড়াতাড়ি স্নান সেরে পুজো দিতে পারলেই একটু বিশ্রাম পাওয়া যাবে।
ঊষার ডালপালা কাটা শেষ, হাতের দা টা বারান্দায় রাখতে যাবে তখনই বড় ঘরের চালার ওপর দিয়ে উত্তর-পূর্ব আকাশে দেখল কালো মেঘ জমাট বেঁধেছে,কেমন একটা গরম গরম বাতাস,আগুনের ছ্যাঁকা খেয়ে বাতাস গুলো যেন উড়ে বেরাচ্ছে ঠান্ডা হওয়ার জন্য। লক্ষ্মণ বেশি ভালো না।আর দেরি করলে চলবে না,স্নান সেরে তাড়াতাড়ি পুজো শেষ করতে হবে, ওহহহ গরু 'দুটো আনতে হবে, কে জানে কি কপালে আছে।
ঊষা তাড়াতাড়ি স্নানে গেলো।পরনের শায়া ব্লাউজটা খুলে আজ শুধু শাড়িটা কোনমতে বুকে জড়িয়ে নিল, ছেলে বাড়িতে তাই শুধু শায়া পরে স্নান করাটা বিবেকে বাধল, যতই রাতের আঁধারে মাগিদের মতো ছেলের লিঙ্গ চুষুক সে,গুদে ভরুক কিন্তু দিনের বেলা সে শুধুই মা যে।তারপর ওই শয়তানটাও আছে।
একবালতি জল ঢেলেছে ঊষা, হাতে সাবান ঘষে চোখে-মুখে লাগিয়েছে এর মধ্যেই একটা উষ্ণ দমকা হাওয়া গায়ে এসে লাগল, ধুলো-বালি শুকনো পাতা চারিদিক ছড়িয়ে গেল মূহুর্তে, খুব বেশি জায়গায় জুড়ে নয়,কিন্তু তীব্রতা প্রচুর।দেখতে দেখতেই পুরো আকাশটাকে কালো অন্ধকার নিজের দখলে নিয়ে নিয়েছে। ঊষা স্নান বাদ দিয়ে দৌড় লাগালো রাস্তার দিকে। যেতে যেতে চিৎকার করে বলল- ও ওওও অমর রেএএএএ ঝোওওওওওড়ি আসতেছে রেএএএএ জামা-কাপড় গুইনা উউউউঠাআআআ......আ।
মায়ের গলার চিৎকার শুনে ধড়ফড় করে অমর দৌড় লাগাল বাইরে, ক্লান্ত শরীর তবুও যতটা পারে বাতাসের বেগের সাথে পাল্লা দিয়ে দুয়ারের তারে মেলা কাপড়চোপড় তুলতে লাগল।চিৎকার আর সো সো শব্দ শুনে গুরুদেবও বাইরে বেরিয়ে এসেছে, ঊষাকে দেখল এলোপাথারি দৌড়ে যাচ্ছে রাস্তার দিকে,দুটো গরু একসাথে আনবে কি করে? এই চিন্তা মাথায় ঢুকতেই একমুহূর্ত দেরি করলেন না গুরুদেব, বিপদ থেকে রক্ষা করতে ছুটে চললেন শুকনো ঝড়কে উপেক্ষা করে।
গাইটার গলার দড়ি গাছের সাথে প্যাচ খেয়ে গেছে,বিপদের সময় বিপদ, ঊষা কোনভাবেই সেই প্যাচ খুলতে পারছে না, বাছুরটা জোরে জোরে হাম্বা হাম্বা করে চিৎকার করছে,নিরুপায় হয়ে ঊষা বোধয় কেঁদেয় ফেলে।ধুলো বালিতে নাক চোখ ভরে যাচ্ছে,এর মধ্যেই ঊষার কানে গেল -- 'তুই সর তাড়াতাড়ি........। ' গুরুদেবের গলার আওয়াজ পেয়ে ঊষা সরে দাঁড়ালো।
-- 'তুই বাছুরটারে ছাইড়া দে.....।'
ঊষা কিন্তু ছেড়ে দিল না, বলা যায় না এই ঝড়ে আবার কোনদিকে দৌড় দিবে। খুটা উঠিয়ে হুট হুট করে তাড়া দিল। গুরুদেবও গাইটাকে ছাড়িয়ে হুট হুট করে তাড়িয়ে বাড়ির দিকে দৌড় লাগাল।প্রায় পৌচ্ছে গেছে এর মধ্যেই হুস হুস করে বৃস্টি সাথে ঠম ঠম করে বড় বড় পাথর পরতে লাগল আকাশ ফেঁটে ভাঙা চালায়।একটা পাথর ঊষার বুকে এসে লাগল আরেকটা বাঁ-হাতে।গুরুদেবের পায়ের পাতায় আরেকটা কপাল ছুৃঁইয়ে, সঙ্গে সঙ্গে রক্ত জমাট বেঁধে গেল,উহহহহহ করে উঠে ঊষার পিছু পিছু গুরুদেবও গোয়াল ঘরে ঢুকল।
--'রক্ষা কইরা পবনদেব রক্ষা কইরা,নাড়ার কুঁইড়া ভ্যান্নার খাম.....দোহাই লাগে পবনদেব দোহাই লাগে.......ডান দিয়া যাও, বায় যাও পবনদেব.......।' উঠানে একটা পিড়ি ফেঁকে বিনোদ আবার বলল-- পাটে পরো পবনদেব পাটে পরো, শান্ত হও শান্ত হও................। 'এক নাগাড়ে বিনোদ পবনদেবকে অনুরোধ করতে লাগল, বসতে পর্যন্ত দিল কিন্তু পবনদেব অনুরোধ উপেক্ষা করে আরও তীব্রতার সাথে ঝাপটার পর ঝাপটা দিতে লাগলেন, উঁচু উঁচু গাছগুলোকে মাথানত করতে বিবশ করে ছাড়ছেন তিনি।গাছগুলো মুচড়ে মুচড়ে এদিক ওদিক মাথা হেলাচ্ছ। আজ নিস্তার নেই কারও, কাউকে তোয়াক্কা করবেন না আজ পবনদেব, কারও অনুরোধ কান্না ভয় তার মন গলাতে পারবে না, তিনি আজ ক্ষিপ্ত, রুদ্র, ধ্বংস, প্রলয়।
এদিকে খোঁটার সাথে ঊষা গরুদুটোকে বাঁধছে নিচু হয়ে, পরনের শাড়ি যে বেসামাল হয়ে গেছে ঝড়ে সে হুশ নেই,ঝড় যেন ওর শাড়ির ওপর দিয়েই যা যাওয়ার গেছে। আঁচল দুই দুধের ফাঁকে গেথে আছে,খোলা পেয়ে দুধ দুটোও ঝুলে আছে নিচ দিকে। গুরুদেব পাথারের আঘাত পেয়ে কপাল ডলছিল, ঊষার দুধের দিকে নজর পরতেই ব্যথা ভুলে গেল,চোখ আটকে গেল দুধের মাঝে।ঊষা একদম লক্ষ্য করেনি, কারণ তার মন এখন লজ্জায় আটকে নেই, এঘরে থাকা নিরাপদ নয়,একটা খু্ঁটি যদি মজবুত থাকুক,ঝড়ের ঝাপটার সাথে সাথে দুলে উঠছে সম্পূর্ণ ঘর।ভেঙে পড়া অসম্ভব নয়।অমরের কথাও মনে পরছে, ঝড় দেখে ভীষণ ভয় পায়, মাকে জড়িয়ে থাকে ঝড় হলে।তাড়াতাড়ি ছেলের কাছে যেতে হবে,এসব ভাবার সময়ই হাত চলে গেছে ডান দুধের ওপর, পাথর পরে ছিল, তখন ব্যথা অনুভব না করলেও এখন হচ্ছে -মনে ছেলের চিন্তা কিন্তু হাত দুধের ওপর, সমানে ব্যথার জায়গাটা ডলে যাচ্ছে। গুরুদেব এক ভাবে উষার দুধ চটকানো দেখে যাচ্ছে, হঠাৎ বাছুরের হাম্বা আওয়াজে ঊষার হুশ ফিরল, গুরুদেবের দিকেও নজর পরল, দেখল গুরুদেব একভাবে তার খোলা দুধের ওপর চোখ ঘোরাচ্ছে, বাঁ-হাত ধুতির তলে।
তাড়াতাড়ি দুধ দুটোকে আঁচল দিয়ে ঢেকে ফেলল ঊষা।লজ্জায় মুখ ঘুরিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে রইল। এত লজ্জা যে কেন হচ্ছে ঊষা নিজেই বুঝতে পারছে না - ইনি দেখার তো কিছু বাকি রাখেনি--- টিপে চুষে কামড়ে থাবড়ে, লালা ফেলে ফ্যাদা ফেলে সবই তো করে ফেলেছেন তবু লজ্জায় লাল হয়ে উঠছে অমন কামুক ভাবে তার দুধের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে।এখানে এখন কোনভাবেই থাকা সম্ভব নয়,ঝড়ের দাপটে খুঁটি নড়বড়ে কুঁড়ে ঘরটি যেমন কাঁপছে তেমনি কাঁপছে তার ভেতর। যেকোন সময় প্রকৃতির কালবৈশাখীর চেয়েও বড় ঝড় নেমে এসে তছনছ করে দিতে পারে তার জীবন।
সড়সড় করে করে যেই গোয়াল ঘর থেকে বড় ঘরের দিকে যাবার জন্য পা বাড়িয়েছে অমনি ধড়- মড়মড় করে বিকট শব্দে রান্না ঘরের পেছনের গামারি গাছটা উপরে পরে গেল, মাকে এঘরের দিকে আসতে দেখে অমর চিৎকার করে উঠল-- নাহহহহহহ মাআ আ আ না তুমিইইইইইইই ওই ঘরেএএএএএএএই থাকো, বাইর হইও না মাআআআআ....।'
ছেলের চিৎকারে থমকে দাঁড়ালো ঊষা,ছেলে তাকে মানা করছে কিন্তু ওকি জানে এই বাইরের ঝড়ের চেয়েও বড় ঝড় প্রতীক্ষা করছে ঘরে? আবার পা বাড়াবে তখনই শ্বশুরের নিষেধ -- 'আইস না বউমা আইস না, বাইর হইও না........গাছ ভাঙতেছে, বাইর হইও না...।'
ঊষা এক পা বাইরে ফেলবে ফেলবে গুরুদেব পেছন থেকে খফাত করে ডানহাত টেনে ধরলেন,মড়মড়িয়ে কলতলার সদ্য যৌবনে পা দেওয়া ফলে-ফুলে পূর্ণ পেঁপে গাছটা ভেঙে পরল দুয়ারে।
গুরুদেব এক টান মেরে ঊষাকে নিজের দুই-বাহুর মধ্যে গেঁথে নিয়েছেন,প্রায় উন্মুক্ত খোলা দরজার সামনেই, ঝড়-বৃস্টির কারণে খুব স্পষ্টভাবে বিনোদ না দেখতে পেলেও অমরের তাজা চোখে পরল কেমন করে তার মাকে জড়িয়ে ধরেছে বুকে।গুরুদেব সাথে আছেন ঊষার কোন চিন্তা নাই,কোন বিপদ হবে না ভেবে বিনোদ নিশ্চিন্ত হলো, ভীষণ অভিমান করে ছিল বউমার ওপর, এই ঝড় এসে সব অভিমান গুলো যেন উড়িয়ে নিয়ে গেল। বউমার জন্য চিন্তা ছিল এখন তাও নেই,গুরুদেব আছেন আর কিসের চিন্তা, মনে মনে বিনোদ প্রণাম করল গুরুদেবকে।
শুক্রবার; নিথর ভাবে পরে রয়েছে সম্পূর্ণ বাড়িটা, ঘড়ির কাঁটা টিক টিক করে প্রায় ন'টার দিকে এগোচ্ছে কিন্তু এ বাড়ির ঘুম আর ভুল করেও ভাঙছে না;এরা যেন ভুলে গেছে প্রাত্যহিক জীবনের নিয়ম কানুন,ভুলে গেছে পেটের খিদে, আছে শুধু দুচোখ জুড়ে ঘুম।
ঘুম ভাঙার মধ্যে একমাত্র ভেঙেছে বিনোদবুড়োর,তবুও আজ দেরি করে ফেলেছে সে।সারারাত তারও খুব একটা ঘুম হয়নি,হবেই বা কি করে দু-দুবার পাকা ঘুম ছুটে গিয়েছিল বউমার সেই বিকট চিৎকারে,কারণ জানতে চাওয়াটাই তার আরও সবচেয়ে বড়ো অপরাধ,সে কি তীক্ষ্ণ কর্কশ কন্ঠে বউমার মৃত্যুকামনামূলক জবাব, যা সারারাত বিনোদকে ঘুমতে দেয়নি,কেন তার কন্যাসম বউমা তার সাথে এমন করল এ জবাব সারারাত ভেবেও খুঁজে পায়নি বিনোদ।শেষে গর্তে যাওয়া ফ্যাকাসে দুচোখ অশ্রুতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল,এরপর কখন যে ঘুমিয়ে পরেছে বলতে পারবে না।
ঘুম থেকে উঠেই ভাবল অমরের খোঁজ নিই একবার কেমন আছে ছেলেটা,দরজায় টোকা দিবে দিবে করেও কি ভেবে সরিয়ে নিল হাত দু-দুবার।রাতে এত করে দরজা ধাক্কানোর পরেও বউমা কেন যে দরজা খুলেনি তা এখনো বুজতে পারছে না সে।তাই সাহস কুললো না দরজায় টোকা দেয়-আবার যদি বউমার মুখ থেকে মৃত্যুকামনা শুনতে হয় সক্কাল সক্কাল!শুধু দু-তিনবার জোরে জোরে গলা খেকারি দিল অ্যালার্ম ঘড়ির মতো;তবুও যদি ঘুম ভাঙে এই আশায়।গলা খেকারি দিয়েই বেরিয়ে গেল লাঠির সাহায্যে ঠক ঠক করে রাস্তার দিকে।
শ্বশুর চলে যাবার কিছুক্ষণ পরেই ঊষা উঠেছে, ব্যথাজড়ানো ভারী শরীরটা কোনমতে টেনে টেনে কলতলায় এসে দাঁড়িয়েছে,দুমড়ে-মুচড়ে গেছে যেন শরীরটা।অবশ হাত বাড়িয়ে কলের হাতল চেপে দু-আচলা জল ছিটিয়ে দিলো সারা মুখে,সঙ্গে সঙ্গে ব্যথাজড়ানো চাঁপা 'ইসসস' বেরিয়ে এলো মুখ থেকে।বাঁ-চোখের নিচে ভীষণ ভীষণ জ্বালা করছে, নাকের নিচটাও। নিচের ঠোঁটে এক আঙ্গুলের স্পর্শে বুঝতে পারল ফেঁটে গেছে কিছুটা।রাতের সেই এলোপাথারি চড় ঘুষিই এর কারণ, কি নির্দয় ভাবে তাকে চড়-ঘুষি গুলো মেরেছে। রাগে ঘৃনায় ঊষার মুখ থেকে বেরিয়ে এলো -'বেজন্মা একটা..।'
টায় টায় নেমে এলো ঊষা কলের পাড় থেকে,রান্না ঘরের দিকে যাচ্ছে ঝাড়ু এনে উঠোন ঝাড় দিতে হবে। এর মধ্যে নজরে পড়ল শ্বশুর টুক টুক করে বাড়ির দিকেই আসছে- শ্বশুরকে দেখে লজ্জায় লাল হয়ে উঠল ঊষার সারা মুখ।লজ্জা ঢাকা দেবার জন্য ঘোমটা নাক অবধি টেনে নিল।কি করে শ্বশুরকে মুখ দেখাবে? কত করে কত জোড়ে কত অনুরোধ করা সত্বেও ঊষা দরজা খুলেনি রাতে, দরজা খোলার পরিবর্তে মুখে যা এসেছে তাই বলেছে বাবার মতো আগলে রাখা কানা খুড়ো বড় অসহায় এক বুড়োকে।খুলতই বা কি করে দরজা?তার বউমাকে যে খুবলে খাচ্ছিল এক নরপিশাচ,হয়ত তার সামনেই তার বউমাকে একটু একটু করে রসিয়ে রসিয়ে খেত, বিশ্বাস নেই ওই অধমকে দিয়ে যে এক মাকে বাধ্য করে ছেলের লিঙ্গ নিজের মধ্যে প্রবেশ করাতে তাকে দিয়ে আর বিশ্বাস! ঊষা ভাবল ভালোই করেছি শ্বশুরকে ব্যথা দিয়ে কষ্ট দিয়ে।দরজা না খুলে যে বেদনা দিয়েছি দরজা খুললে হয়ত তার শতগুণ বেশি বেদনা পেত।
বিনোদ পাশ কাটিয়ে সোজা কল পাড়ের দিকে গেল, একদম চুপ,সাধারণত এর আগে এমন হয়নি কোনদিন,কিছু না কিছু একটা কথা বলেই, বউমাকে যে সে খুব খুব ভালোবাসে, স্নেহ করে।
ঊষা ভেবেছিল কিছু একটা ভালো মন্দ জিজ্ঞেস করবেই, বিশেষ করে রাতের দরজা না খোলা প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করবেই তার শ্বশুর,এর জন্যই ঊষা আরও চুপসে গেছে, কি উত্তর দিবে? উত্তর নয় যে কোন একটা অজুহাত খুঁজছিল মনে মনে কিন্তু শ্বশুর যখন কিছুই জিজ্ঞেস করল না, শ্বশুর তাকে পাশ কাটিয়ে চলে গেল, ঊষার মনে হলো নীরবে সপাট করে একটা চাবুক কষিয়ে দিয়ে গেল অন্তরে।এর চেয়ে সামনে দাঁড়িয়ে কড়াভাবে বোকাঝোকা দিতো, দরকার পরলে বাড়ি থেকে বের করে দিতো তবু হয়ত এতটা কষ্ট হতো না।শ্বশুরের নীরবতায় অন্তর ফেটে যাচ্ছে, হাহাকার করে উঠছে বুকের মধ্যে , এই দুঃখ এই কষ্ট সে রাখবে কোথায়?
নাহ, কষ্ট জমিয়ে রাখার মতো ভান্ডার মানুষের মনে না থাকাই ভালো,কষ্ট জমিয়ে না রেখে বরং বের করে দিতে হয় কখনো হাসির মধ্য দিয়ে কখনো কান্নার মধ্য দিয়ে। ঊষা কান্নার মধ্য দিয়েই ঘোমটার তলে টপটপ করে কষ্টগুলো বের করে দিতে লাগল নীরবে।
উঠোন ঝাড় দেওয়া শেষ, তাড়াতাড়ি থালাবাসন গুলো ধুয়ে পরিস্কার করে ঘরে ছুটল চাল আনতে,ভাত বসাতে হবে তাড়াতাড়ি। অসুস্থ ছেলে, এতটা বেলা করা উচিত হয়নি তার,রাতে শুধু দুমুঠো ভাত-জল চেটকিয়ে ছেলেকে খাইয়েছে,নিজে তো সারারাত উপোস করেই কাটালো, তারপর সেই কি ধকল সারারাত ভাবতেই কাঁটা দিয়ে উঠল সারা শরীর।উহহহহ ব্যথায় শেষ হয়ে যাচ্ছে দেহটা।
ঘরে গিয়ে দেখল অমর এখনো উপুর হয়ে পরে পরে ঘুমচ্ছে,ভাবল ডাক দিই অনেক বেলা হলো, আবার ভাবল থাক, যত মুখ লুকিয়ে চলা যায়।রাতে যে কাজ সে মা হয়ে করেছে কোনো মা বোধয় আজ পর্যন্ত করেনি, তাকে জোর করেই হয়ত করানো হয়েছে কিন্তু চাইলেই কি প্রতিরোধ করা সম্ভব ছিল না?এতটাই কি কঠিন ছিল?ভাগ্য ভালো ছেলে জ্বরের ঘোরে ছিল, নয়ত.........তারপর সকাল বেলা শ্বশুরের ঘ্যাড়ঘ্যাড়ানি গলার শব্দে যখন নিজেকে আবিষ্কার করল-- একদম উলঙ্গ সে, ছেলের শার্টটা কোনমতে বুকে ছিল, তবুও বুক খোলা, নিচটা সম্পূর্ণ খোলা।ধচমচিয়ে চৌকি থেকে নেমে নিজেকে ঢেকেছিল শাড়ি ব্লাউজ দিয়ে।
ঊষা ছেলের মুখের দিকে তাকিয়েই দুহাত জোড় করে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানালো ছেলের নজর থেকে তাকে বাঁচিয়েছেন বলে।মেপে মেপে কেজিখানেক চাল নিয়ে ছুটে বেরল ঘর থেকে।আলু সেদ্ধ ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই এখন, অনেকবেলা হয়েছে, রোদও উঠেছে বেমানান, আজ পুড়িয়েই ছাড়বে সব কিছু বোধয়।এদিকে পেটও জ্বলছে সমানে।
এদিকে ঘরে মা আসছে আভাস পেয়েই অমর দম বন্ধ করে উপুর হয়ে পরেছিল। মা বেরিয়ে যেতেই আগের মতো চিত হয়ে আকাশ-পাতাল ভাবতে লাগল। কি করে বাইরে বেরনো যায়, কি করেই বা মায়ের মুখোমুখি দাঁড়াবে সে? এক ছেলে হয়ে মায়ের পবিত্রস্থানকে অপবিত্র করেছে,নরকেও হয়ত জায়গা হবে না তার,এ পাপ কোথায় গেলে ধুয়ে মুছে যাবে?গঙ্গায়? নাহ এপাপের কোন প্রায়শ্চিত্ত নেই, গঙ্গাও হয়ত এ পাপ বহন করতে পারবে না। সারাজীবন তাকেই এপাপ বয়ে চলতে হবে মনের মাঝে।
অনেক সকালে অমরের ঘুম ভেঙেছে, প্রস্রাবে পেট ফুলে উঠেছিল, বাইরে যাই যাই করেও যেতে পারেনি।ঘুম ভেঙেই নজর পরেছিল তার পাশেই পরে থাকা তার উলঙ্গ মায়ের দেহে,তারই শার্ট মায়ের গায়ে,মায়ের বুক দুটো নিশ্বাসের ছন্দে ছন্দে ওঠা-নামা করছে,নিচে তাকিয়ে দেখে উন্মুক্ত মায়ের পবিত্রস্থানে তারই ফেলা বীর্য চটচটে হয়ে চিকচিক করেছে।মুখ ঘুড়িয়ে নিয়েছিল অমর, এদৃশ্য দেখা যায় না।তাই প্রস্রাব পেট ফেটে বেরিয়ে গেলেও সে বাইরে বেরতে পারল না।ঘুনাক্ষরেও মাকে জানান দিতে চায়নি সে জেগে আছে। শেষে ঠাকুরদার গলার স্বর পেয়ে মা যখন ধচমচিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেল, তখন অমর স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল কিন্তু বাইরে যাওয়াটা সমীচীন নয় ভেবেই পরে আছে এতক্ষণ, সে জানে তার মা তাকে নিজে এসেই ডাকবে ততক্ষণ তাকে কষ্টভোগ করতেই হবে।
প্রায় ঘন্টা খানেক পর ঊষা রান্নাবান্না শেষ করে ছেলেকে ডাকতে এলো,দ্বিধা হচ্ছিল ছেলেকে ডাকতে কিন্তু উপায়ও নেই-- 'অমর ও অমর উঠেক বাবা, চল খাইয়া নে...।'মায়ের ডাকে অমর এমন ভাবে আড়মোড়া ভাঙল যেন এই মাত্র ঘুমের দেশ থেকে ফিরে এলো।দুচোখ টান টান করে খুলে ভাঙা সুরে বলল- ' কয়ডা বাজে মা?'
-কয়ডা বাইজব! দুপুর হইয়া গেচে,নে উঠেক বাবা তাড়াতাড়ি বাইরা যাইয়া হাতমুখ ধুইয়া আয়,আমি ভাত বাড়ি।'
-'তুমি যাও আমি আসতেচি।'
ঊষা বাইরে বেরিয়ে গেলো। অমর আরও কিছুক্ষণ পরে থেকে উঠে পরল- ম্যাচম্যাচ করছে শরীর, পেটে গড়গড় আওয়াজ হচ্ছে খিদে পেয়ে,প্রস্রাবের জ্বালায় বাড়া টাটাচ্ছে, আর পরে থেকে লাভ নেই,যা অভিনয় করার ছিল মোটামুটি ভালোই করেছে। মা হয়ত বুঝতে পারেনি রাত থেকে শুরু করে এখন অবধি।
বিনোদ খেতে বসেছে, মুখ একদম গুমরো করে ভাতের দলা মুখে তুলছে,ঊষাই প্রথম কথা বলেছিল লজ্জা শরম রাগ অভিমান ভুলে -এরম মানুষের ওপর রাগ অভিমান করে থাকা চলে? না চলে না, তাই রান্না শেষ করেই শ্বশুরকে বলেছিল - 'বাবা ভাত বারচি আসেন।' বিনোদ প্রথমে এক ইতস্তত করলেও পেটের জ্বালায় টায় টায় এসে বসেছে কিন্তু একটা কথাও বলেনি।ঊষা মনে কষ্ট পেলেও তার ডাকে সাড়া দিয়ে যে খেতে এসেছে তাতেই সে খুশি।
ঊষা ছেলের জন্যও ভাত বাড়ছে।সাথে নিজের জন্যও একটা থালা এগিয়ে নিল, অমর হাত-মুখ ধুয়ে এলে দুজনেই এক সাথে খাবে,বিনোদের প্রায় শেষ, সিদ্ধ দিয়ে ভাত খেতে আর কত সময় লাগে? নিজের জন্য থালা এগিয়ে নিয়েছে এক হাতা ভাত সবে বাড়বে তাতেই হাত কেন জানি না থেমে গেল,চিনচিন করে উঠল বুক,ঘরে যে আরেকজন অনাহারে পরে আছে। ঘৃনাও হচ্ছে রাগও হচ্ছে আবার বুকও চিনচিন করছে,একবার ভাবছে মরুক না খেয়ে অমন পাপীর মরণই ভালো, আবার ভাবছে কাউকে খিদের জ্বালা দেওয়াটা কি ঠিক? খিদে তো তারও লেগেছে, হোক পাপিষ্ঠ-বেজন্মা -নরপিশাচ তবুও তার খিদে পায়।গতকাল সারাদিন প্রায় না খেয়ে ছিল,রাতেও দুমুঠো ভাত দিয়েছিল ঊষা তাও বরাতে জুটেনি হাঙ্গামায়, ঊষার ছেলের জন্য সেই চিৎকারে উঠে এসেছিল ভাতের থালা ফেলে।
ঊষা আর বসে থাকতে পারল না ভাতের থালা উদলা রেখেই দ্রুত গতিতে চলল ঘরের দিকে।
অমর খেতে বসেছে, বাইরের দিকে নজর পরতেই দেখল মায়ের পেছন পেছন পাপিষ্ঠটা উঠে এসেছে।তার মা কোন কথা না বলেই চুপ করে এসে দুই থালায় ভাত বাড়তে লাগল। অমর ভালো করে লক্ষ্য করে দেখল - মায়ের সারা মুখ ফুলে উঠেছে,চোখের নিচটা নীলচে হয়ে আছে, নাকটা লাল হয়ে ফুলে আছে, মনে পরে গেল রাতে কি ভাবে ওই জানোয়ারটা তার মাকে মেরেছিল।গা জ্বলছে অমরের, বিশেষ করে এখন ওই শয়তানটার সাথে বসে তাকে খেতে হবে ভাবতেই জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে ভেতরটা।কি দরকার ছিল পিচাশটাকে ডাকার?যে তাকে এত শাস্তি দিল জুলুম করল তাকেই সেধে খাওয়াচ্ছে! শয়তানটা মাকে দন্ড দিচ্ছে?না মা নিজে দন্ড নিচ্ছে?
গুরুদেব ধীরে ধীরে এসে বসল, প্রায় অমরের পাশের পিড়িতেই,গায়ে গায়ে যেন ঘষা লাগবে,অমর নিজের পিড়ি কিছুটা দূরে সরিয়ে নিল সাথে সাথে। তিনজনই চুপ।ঊষা গুরুদেবের থালা গুরুদেবের সামনে বাড়িয়ে দিয়েই দ্বন্দ্বে পরে গেল, এখন? প্রণাম যে করতে হবে,কিন্তু কোন ইচ্ছেই নেই বেজন্মাটাকে আর ভক্তি-শ্রদ্ধা করার।যে এক মেয়ের মতো শিষ্যাকে মাগিদের মতো নির্দয় ভাবে চুদে তাকে প্রণাম করবে কি ভাবে? এদিকে প্রণাম না করলে ছেলে কি ভাববে? এর আগে যতবার গুরুদেবের সেবা দিয়েছে ভক্তি ভরে উপুর হয়ে প্রণাম করেছে, ছেলে নিজেও দেখেছে,গতকাল মনের অনিচ্ছা সত্ত্বেও শ্বশুরের সামনে গুরুদেবের সামনে মাথা নুইয়ে ভক্তি করতেই হয়েছে।ছেলের সামনে একদম স্বাভাবিক আচরণ করতেই হবে ভেবে - নিচু হয়ে দুহাঁটু ভাঁজ করে প্রণাম করে থালা এগিয়ে দিল গুরুদেবের সেবার জন্য।প্রণাম করে যেই উঠতে যাবে ব্যথায় 'উহহহ' করে উঠল ঊষা। পাছায় ভীষণ ভীষণ লাগছে, হাটু দুটোতেও মারাত্মক ব্যথা।সকালে পায়খানা করতে গিয়ে পরেছিল সবচেয়ে বেশি অসুবিধায়, পাছার ফুটোতে যেন চির ধরেছে ,শক্ত শক্ত নাদা যখন সেই চিরা ফুটো ভেদ করে বেরিয়ে আসছিল চিৎকার করে উঠেছিল ঊষা।ভাগ্য ভালো আশে পাশে কেউ ছিল না,ব্যথা হওয়ারই কথা জীবনে প্রথম কেউ ওপথে প্রবেশ করেছে, তার সাথে সেই ব্যাটারি ওফফ, সে কি অসহ্য বেদনা।
ছেলে ও গুরুদেব দুজনেই তার দিকে তাকিয়ে আছে দেখে লজ্জায় মাথা একদম নিচু করে ফেলল।অমরের প্রায় অর্ধেক খাওয়া হয়েছে,হঠাৎ থালে জল ঢেলে উঠে পরল খাওয়া বাদ দিয়ে,তার খাওয়া শেষ, মায়ের ব্যথার কারণ সে অল্প অল্প আঁচ করতে পেরেছে, এখানে আর বসে থাকা ঠিক নয়।কিন্তু ছেলের উঠে পরা দেখে ঊষা হতবাক হয়ে গেল--' কি রে ভাতে জল ঢাইলা দিলি যে?'
-আর খিদা নাই...। ' বলেই অমর বাইরে বেরিয়ে গেল।গুরুদেব এবং ঊষা দুজনেই সেদিকে তাকিয়ে রইল।
ঘড়ির কাঁটায় প্রায় আড়াইটা,মাটিতে পা ফেলা দায় এতটা রোদ এতটা গরম। যার যার মতো ঘরে পরে আছে একমাত্র ঊষা বাদে,ঊষার সে কপাল নেই,এত দুর্যোগ তার উপর দিয়ে যাচ্ছে তবু্ও তার বিরাম নেই, এ দুঃখ বলার মতো কোন মানুষও নেই তার জীবনে। দুঃখকে সঙ্গী করেই তার জীবন চলে।এই রোদে পুড়ে পুড়েই কিছু শুকনো ডালপালা কাটছে দা দিয়ে বসে বসে।সেই যে ছেলে ভাতের থালায় জল ঢেলে ঘরে গেছে আর বাইরে বেরিয়নি।গুরুদেব খাওয়া দাওয়া করে রাস্তায় বেরিয়েছিল, এখন নিজের রুমে পরে কি করছে কে জানে,কি করছে করুক জানার দরকার নেই,খেতে দিতে হয় দিয়েছে এর বেশি আর কোন খোঁজ রেখে লাভ নেই।শ্বশুর সেই খাওয়া দাওয়া করে এদিক ওদিক কি যেন করল একটু, তারপর হুকো টানছে আর পরে আছে কুমিরের মতো। এদিকে একা ঊষার নাজেহাল অবস্থা। গরুদুটো এত বেলায় সে ওই রাস্তার ধারে গাছের ছায়ায় বেঁধে এলো, এখন রান্নার কাঠ-খড় জোগাতে হচ্ছে, সব দায় কি তার একারই?
ঘামে স্নান করে গেছে,গাল বেয়ে ঘাম বুকে টপ টপ করে পরছে, ব্লাউজ শায়া সব ভিজে একাকার এভাবে আর বেশিক্ষণ থাকা সম্ভব নয়।জ্বালা ধরে গেছে শরীরে, ঊষা দ্রুত গতিতে দা চালাতে লাগল, যত তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করা যায়,তত তাড়াতাড়ি স্নান সেরে পুজো দিতে পারলেই একটু বিশ্রাম পাওয়া যাবে।
ঊষার ডালপালা কাটা শেষ, হাতের দা টা বারান্দায় রাখতে যাবে তখনই বড় ঘরের চালার ওপর দিয়ে উত্তর-পূর্ব আকাশে দেখল কালো মেঘ জমাট বেঁধেছে,কেমন একটা গরম গরম বাতাস,আগুনের ছ্যাঁকা খেয়ে বাতাস গুলো যেন উড়ে বেরাচ্ছে ঠান্ডা হওয়ার জন্য। লক্ষ্মণ বেশি ভালো না।আর দেরি করলে চলবে না,স্নান সেরে তাড়াতাড়ি পুজো শেষ করতে হবে, ওহহহ গরু 'দুটো আনতে হবে, কে জানে কি কপালে আছে।
ঊষা তাড়াতাড়ি স্নানে গেলো।পরনের শায়া ব্লাউজটা খুলে আজ শুধু শাড়িটা কোনমতে বুকে জড়িয়ে নিল, ছেলে বাড়িতে তাই শুধু শায়া পরে স্নান করাটা বিবেকে বাধল, যতই রাতের আঁধারে মাগিদের মতো ছেলের লিঙ্গ চুষুক সে,গুদে ভরুক কিন্তু দিনের বেলা সে শুধুই মা যে।তারপর ওই শয়তানটাও আছে।
একবালতি জল ঢেলেছে ঊষা, হাতে সাবান ঘষে চোখে-মুখে লাগিয়েছে এর মধ্যেই একটা উষ্ণ দমকা হাওয়া গায়ে এসে লাগল, ধুলো-বালি শুকনো পাতা চারিদিক ছড়িয়ে গেল মূহুর্তে, খুব বেশি জায়গায় জুড়ে নয়,কিন্তু তীব্রতা প্রচুর।দেখতে দেখতেই পুরো আকাশটাকে কালো অন্ধকার নিজের দখলে নিয়ে নিয়েছে। ঊষা স্নান বাদ দিয়ে দৌড় লাগালো রাস্তার দিকে। যেতে যেতে চিৎকার করে বলল- ও ওওও অমর রেএএএএ ঝোওওওওওড়ি আসতেছে রেএএএএ জামা-কাপড় গুইনা উউউউঠাআআআ......আ।
মায়ের গলার চিৎকার শুনে ধড়ফড় করে অমর দৌড় লাগাল বাইরে, ক্লান্ত শরীর তবুও যতটা পারে বাতাসের বেগের সাথে পাল্লা দিয়ে দুয়ারের তারে মেলা কাপড়চোপড় তুলতে লাগল।চিৎকার আর সো সো শব্দ শুনে গুরুদেবও বাইরে বেরিয়ে এসেছে, ঊষাকে দেখল এলোপাথারি দৌড়ে যাচ্ছে রাস্তার দিকে,দুটো গরু একসাথে আনবে কি করে? এই চিন্তা মাথায় ঢুকতেই একমুহূর্ত দেরি করলেন না গুরুদেব, বিপদ থেকে রক্ষা করতে ছুটে চললেন শুকনো ঝড়কে উপেক্ষা করে।
গাইটার গলার দড়ি গাছের সাথে প্যাচ খেয়ে গেছে,বিপদের সময় বিপদ, ঊষা কোনভাবেই সেই প্যাচ খুলতে পারছে না, বাছুরটা জোরে জোরে হাম্বা হাম্বা করে চিৎকার করছে,নিরুপায় হয়ে ঊষা বোধয় কেঁদেয় ফেলে।ধুলো বালিতে নাক চোখ ভরে যাচ্ছে,এর মধ্যেই ঊষার কানে গেল -- 'তুই সর তাড়াতাড়ি........। ' গুরুদেবের গলার আওয়াজ পেয়ে ঊষা সরে দাঁড়ালো।
-- 'তুই বাছুরটারে ছাইড়া দে.....।'
ঊষা কিন্তু ছেড়ে দিল না, বলা যায় না এই ঝড়ে আবার কোনদিকে দৌড় দিবে। খুটা উঠিয়ে হুট হুট করে তাড়া দিল। গুরুদেবও গাইটাকে ছাড়িয়ে হুট হুট করে তাড়িয়ে বাড়ির দিকে দৌড় লাগাল।প্রায় পৌচ্ছে গেছে এর মধ্যেই হুস হুস করে বৃস্টি সাথে ঠম ঠম করে বড় বড় পাথর পরতে লাগল আকাশ ফেঁটে ভাঙা চালায়।একটা পাথর ঊষার বুকে এসে লাগল আরেকটা বাঁ-হাতে।গুরুদেবের পায়ের পাতায় আরেকটা কপাল ছুৃঁইয়ে, সঙ্গে সঙ্গে রক্ত জমাট বেঁধে গেল,উহহহহহ করে উঠে ঊষার পিছু পিছু গুরুদেবও গোয়াল ঘরে ঢুকল।
--'রক্ষা কইরা পবনদেব রক্ষা কইরা,নাড়ার কুঁইড়া ভ্যান্নার খাম.....দোহাই লাগে পবনদেব দোহাই লাগে.......ডান দিয়া যাও, বায় যাও পবনদেব.......।' উঠানে একটা পিড়ি ফেঁকে বিনোদ আবার বলল-- পাটে পরো পবনদেব পাটে পরো, শান্ত হও শান্ত হও................। 'এক নাগাড়ে বিনোদ পবনদেবকে অনুরোধ করতে লাগল, বসতে পর্যন্ত দিল কিন্তু পবনদেব অনুরোধ উপেক্ষা করে আরও তীব্রতার সাথে ঝাপটার পর ঝাপটা দিতে লাগলেন, উঁচু উঁচু গাছগুলোকে মাথানত করতে বিবশ করে ছাড়ছেন তিনি।গাছগুলো মুচড়ে মুচড়ে এদিক ওদিক মাথা হেলাচ্ছ। আজ নিস্তার নেই কারও, কাউকে তোয়াক্কা করবেন না আজ পবনদেব, কারও অনুরোধ কান্না ভয় তার মন গলাতে পারবে না, তিনি আজ ক্ষিপ্ত, রুদ্র, ধ্বংস, প্রলয়।
এদিকে খোঁটার সাথে ঊষা গরুদুটোকে বাঁধছে নিচু হয়ে, পরনের শাড়ি যে বেসামাল হয়ে গেছে ঝড়ে সে হুশ নেই,ঝড় যেন ওর শাড়ির ওপর দিয়েই যা যাওয়ার গেছে। আঁচল দুই দুধের ফাঁকে গেথে আছে,খোলা পেয়ে দুধ দুটোও ঝুলে আছে নিচ দিকে। গুরুদেব পাথারের আঘাত পেয়ে কপাল ডলছিল, ঊষার দুধের দিকে নজর পরতেই ব্যথা ভুলে গেল,চোখ আটকে গেল দুধের মাঝে।ঊষা একদম লক্ষ্য করেনি, কারণ তার মন এখন লজ্জায় আটকে নেই, এঘরে থাকা নিরাপদ নয়,একটা খু্ঁটি যদি মজবুত থাকুক,ঝড়ের ঝাপটার সাথে সাথে দুলে উঠছে সম্পূর্ণ ঘর।ভেঙে পড়া অসম্ভব নয়।অমরের কথাও মনে পরছে, ঝড় দেখে ভীষণ ভয় পায়, মাকে জড়িয়ে থাকে ঝড় হলে।তাড়াতাড়ি ছেলের কাছে যেতে হবে,এসব ভাবার সময়ই হাত চলে গেছে ডান দুধের ওপর, পাথর পরে ছিল, তখন ব্যথা অনুভব না করলেও এখন হচ্ছে -মনে ছেলের চিন্তা কিন্তু হাত দুধের ওপর, সমানে ব্যথার জায়গাটা ডলে যাচ্ছে। গুরুদেব এক ভাবে উষার দুধ চটকানো দেখে যাচ্ছে, হঠাৎ বাছুরের হাম্বা আওয়াজে ঊষার হুশ ফিরল, গুরুদেবের দিকেও নজর পরল, দেখল গুরুদেব একভাবে তার খোলা দুধের ওপর চোখ ঘোরাচ্ছে, বাঁ-হাত ধুতির তলে।
তাড়াতাড়ি দুধ দুটোকে আঁচল দিয়ে ঢেকে ফেলল ঊষা।লজ্জায় মুখ ঘুরিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে রইল। এত লজ্জা যে কেন হচ্ছে ঊষা নিজেই বুঝতে পারছে না - ইনি দেখার তো কিছু বাকি রাখেনি--- টিপে চুষে কামড়ে থাবড়ে, লালা ফেলে ফ্যাদা ফেলে সবই তো করে ফেলেছেন তবু লজ্জায় লাল হয়ে উঠছে অমন কামুক ভাবে তার দুধের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে।এখানে এখন কোনভাবেই থাকা সম্ভব নয়,ঝড়ের দাপটে খুঁটি নড়বড়ে কুঁড়ে ঘরটি যেমন কাঁপছে তেমনি কাঁপছে তার ভেতর। যেকোন সময় প্রকৃতির কালবৈশাখীর চেয়েও বড় ঝড় নেমে এসে তছনছ করে দিতে পারে তার জীবন।
সড়সড় করে করে যেই গোয়াল ঘর থেকে বড় ঘরের দিকে যাবার জন্য পা বাড়িয়েছে অমনি ধড়- মড়মড় করে বিকট শব্দে রান্না ঘরের পেছনের গামারি গাছটা উপরে পরে গেল, মাকে এঘরের দিকে আসতে দেখে অমর চিৎকার করে উঠল-- নাহহহহহহ মাআ আ আ না তুমিইইইইইইই ওই ঘরেএএএএএএএই থাকো, বাইর হইও না মাআআআআ....।'
ছেলের চিৎকারে থমকে দাঁড়ালো ঊষা,ছেলে তাকে মানা করছে কিন্তু ওকি জানে এই বাইরের ঝড়ের চেয়েও বড় ঝড় প্রতীক্ষা করছে ঘরে? আবার পা বাড়াবে তখনই শ্বশুরের নিষেধ -- 'আইস না বউমা আইস না, বাইর হইও না........গাছ ভাঙতেছে, বাইর হইও না...।'
ঊষা এক পা বাইরে ফেলবে ফেলবে গুরুদেব পেছন থেকে খফাত করে ডানহাত টেনে ধরলেন,মড়মড়িয়ে কলতলার সদ্য যৌবনে পা দেওয়া ফলে-ফুলে পূর্ণ পেঁপে গাছটা ভেঙে পরল দুয়ারে।
গুরুদেব এক টান মেরে ঊষাকে নিজের দুই-বাহুর মধ্যে গেঁথে নিয়েছেন,প্রায় উন্মুক্ত খোলা দরজার সামনেই, ঝড়-বৃস্টির কারণে খুব স্পষ্টভাবে বিনোদ না দেখতে পেলেও অমরের তাজা চোখে পরল কেমন করে তার মাকে জড়িয়ে ধরেছে বুকে।গুরুদেব সাথে আছেন ঊষার কোন চিন্তা নাই,কোন বিপদ হবে না ভেবে বিনোদ নিশ্চিন্ত হলো, ভীষণ অভিমান করে ছিল বউমার ওপর, এই ঝড় এসে সব অভিমান গুলো যেন উড়িয়ে নিয়ে গেল। বউমার জন্য চিন্তা ছিল এখন তাও নেই,গুরুদেব আছেন আর কিসের চিন্তা, মনে মনে বিনোদ প্রণাম করল গুরুদেবকে।
Mrpkk